What's new
Nirjonmela Desi Forum

Talk about the things that matter to you! Wanting to join the rest of our members? Feel free to sign up today and gain full access!

Review তবুও কিছু সত্য অপ্রকাশ্য থাকে, থাকতে হয়? (1 Viewer)

Nagar Baul

Board Senior Member
Elite Leader
Joined
Mar 2, 2018
Threads
1,152
Messages
13,339
Credits
547,766
Pen edit
Sailboat
Profile Music
5uicExx.jpg


মায়া – The Lost Mother (২০১৯)
ধরন: ড্রামা
চিত্রনাট্য ও পরিচাল: মাসুদ পথিক
প্রযোজ: ব্রাত্য ক্রিয়েশন লি.
অভিন: জ্যোতিকা জ্যোতি (মায়া), প্রাণ রায় (জব্বার), মুমতাজ সরকার (মানবী বোস), দেবাশীষ কায়সার (রায়হান কবির), ঝুনা চৌধুরী (চেয়ারম্যান), লিনা ফেরদৌসী, নার্গিস আখতার, সৈয়দ হাসান ইমাম, সাইফুল মজিদ, জবা দাস, সাখাওয়াত হোসেন নিপু, নুপুর হোসেন রানী প্রমুখ।
শুভমুক্তি: ২৭ শে ডিসেম্বর, ২০১৯

◼ নামকরণ : যদিও চলচ্চিত্রে মূল চরিত্রের নাম "মায়া", তবে এখানে পুরো গল্পে "মায়া" নামকরণটি আরো গভীর অর্থ বহন করে। "মায়া" বলতে বোঝানো হয়েছে সন্তানের প্রতি মায়ের ভালোবাসা, দেশের প্রতি মানুষের শ্রদ্ধা, চেনা প্রকৃতির মধ্যে নিজের আনন্দকর মুহুর্ত খুজেঁ পাওয়া। এ সবকিছুই বোঝানো হয়েছে "মায়া" শব্দটি ব্যবহারের মাধ্যমে। এছাড়া ছবিতে সেইসব মায়েদের গল্প ব্যক্ত করা হয়েছে যারা ১৯৭১ সালের স্বাধীনতা যুদ্ধে নিজেদের সম্ভ্রম এবং জীবন দান করে আজকের বাংলাদেশ উপহার দিয়েছেন। তাই এছবির নামকরণ এবং একইসাথে ছবির ট্যাগলাইন যথার্থই মনে হয়েছে।

◼ কাহিনী, চিত্রনাট্য ও সংলাপ: "মায়া" দুইটি শিল্পকর্ম থেকে অনুপ্রাণিত; প্রথমটি হলো আধুনিক কবি কামাল চৌধুরীর কবিতা "যুদ্ধশিশু", দ্বিতীয়টি বিখ্যাত বাঙালি চিত্রশিল্পী শাহাবুদ্দিন আহমেদের চিত্রকর্ম "নারী (women)"। এই দুই বিষয় থেকেই অনুপ্রাণিত হয়ে পরবর্তীতে বীরাঙ্গনাদের নিয়ে গবেষণা করেন এছবির পরিচালক মাসুদ পথিক। সরকারি অনুদানপ্রাপ্ত এছবির জন্য তিনিই পরবর্তীতে চিত্রনাট্য ও সংলাপ রচনা করেন।

বীরাঙ্গনা ও যুদ্ধশিশু– দুটি শব্দই জড়িত আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধের সাথে। অতীতে মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক প্রায় সকল চলচ্চিত্রে বীরাঙ্গনাদের কষ্ট তুলে ধরা হলেও তাদের কেন্দ্র করে পূর্ণদৈর্ঘ্য ছায়াছবি হয়তো এর আগে হয়নি। এটা খুবই দূর্ভাগ্যজনক যে, বর্তমান সময়ে এসে আমাদের দেশে মুক্তচিন্তার কিছুটা চর্চা দেখা গেলেও আদতে তা এখনো কাগজে-কলমেই সীমাবদ্ধ। এদেশে মূল্যবোধের চর্চা যেন শুধুই কাগজে-কলমে; চিন্তা-চেতনায় বা মেধা-মননে তেমন একটা হয়না বা হলেও তা পরিমাণে খুবই কম। মূলত এই বিষয়টির দিকেই "মায়া" ছবির গল্প ফোকাস করার চেষ্টা করেছে।

axlw3SE.jpg


'বীরাঙ্গনা' শব্দটির দ্বারা সেসব বীর নারীকেই বোঝায়, যারা ১৯৭১ সালে পাকিস্তানী হানাদার বাহিনী দ্বারা নির্যাতিত হয়েছিলেন। 'বীরাঙ্গনা' শব্দটির শাব্দিক অর্থ বীরের অঙ্গনা, বা বীরের নারী। ৭১ এর যুদ্ধে আমাদের দেশের প্রায় চার লক্ষাধিক নারী পাকিস্তানি সামরিক বাহিনী ও তাদের দোসরদের দ্বারা নির্যাতিত এবং ধর্ষিত হয়েছিল। সেই অত্যাচার এবং ধর্ষণের ফলে যে শিশুর জন্মলাভ হয়েছে, তাকেই "যুদ্ধশিশু" বলা হয়।
দূঃখজনক হলেও এটা অস্বীকার করার উপায় নেই, এই দেশ বীরাঙ্গনাদের রাষ্ট্রীয়ভাবে স্বীকৃতি দিতে ৪০ বৎসরের ও বেশি সময়ক্ষেপন করেছে। মুক্তিযুদ্ধে যেসব নারীদের পাকিস্তানী সামরিক বাহিনীরা তুলে নিয়ে গিয়েছিল, পরবর্তীতে তারা যখন শারীরিক ও মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে আবার যখন ফিরে এসেছিল, এ সমাজ তাদের প্রতি সহানুভূতি দেখানো তো দূর, ভালোভাবে গ্রহণও করতে পারেনি। নানারকমভাবে সমাজের লাঞ্ছনার শিকার হয়ে অপরাধীর মতো বীরাঙ্গনাদের বাকি জীবন কাটাতে হয়েছে, যেনো তারাই ধর্ষিত হয়ে পাপ করেছেন! এমনকি এসমাজ তাদের কোলে জন্ম নেওয়া অবুঝ শিশুকেও লাঞ্ছনা থেকে রেহাই দেয়নি। বিকৃতভাষায় গালাগাল দিয়ে সমাজ থেকে বিতারিত করেছে, এমন উদাহরণ আনাচে-কানাচে অনেক পাওয়া যাবে।

"মায়া" ছবিতে এরকমই একটি প্রত্যন্ত গ্রামের কথা বলা হয়েছে, যেখানে এখনো সবাই একাত্তরের কর্মকান্ড নিয়ে ভ্রান্ত ধারণায় আছন্ন। একদল গবেষণাকারী গিয়ে সেখানকার বাড়িতে বাড়িতে বীরাঙ্গনাদের অতীত সম্পর্কে জানার চেষ্টা করলে দেখা যায় পরিবার ও গ্রামের বুজুর্গদের ভয়ে তারা সেসব সম্পর্কে আলোচনা করতে আগ্রহী না। এর পাশাপাশি দেখা যায় তিন সন্তানের চলমান জীবনযন্ত্রণার গল্প, যেটি সিনেমাতে একত্রে সমান্তরালভাবে দেখানো হয়েছে।

কাহিনী ও চিত্রনাট্যের মতো এছবির সংলাপ অত্যন্ত শক্তিশালী। দেবাশীষ কায়সারের মুখে "থার্ড ওয়ার্ল্ড কান্ট্রিতে সবকিছুই একটু দেরিতে হয়; দেশে পলেটিক্যাল ইমব্যালেন্স থাকলে এসব হওয়া অস্বাভাবিক নয়" কিংবা একজন বীরাঙ্গনার মুখে "সরকার বীরাঙ্গনাদের রাস্ট্রীয় স্বৗকৃতি দিলে তাতে আমাদের কি লাভ?" এরকম আরো অর্থবহ সংলাপ এছবিতে পাওয়া যায়, যা বাংলাদেশের অতীত রাস্ট্রীয়ব্যবস্থার দূর্বলতাগুলো তুলে ধরে।
সবমিলিয়ে "মায়া"র লেখনীতে ভুল-ত্রুটি ধরার মতো বৃহৎ আকারে তেমন কিছু পাইনি। সত্যিকার অর্থে এছবির লেখনী এবং গবেষণা অত্যন্ত শক্তিশালী ছিল।
এ অংশ পাবে ১০০ তে ১০০।

◼পরিচালনা: এটি জাতীয় পুরস্কারপ্রাপ্ত পরিচালক মাসুদ পথিকের দ্বিতীয় ছবি। এবারের মতো এর আগেও তিনি কবি নির্মলেন্দু গুণের কবিতা "নেকাব্বরের মহাপ্রয়াণ" অবলম্বন করে চলচ্চিত্র পরিচালনা করেছিলেন। এখানে তিনি তার দ্বিতীয় চলচ্চিত্রটি পরিচালনার জন্য "র ট্রিটমেন্ট" পদ্ধতি অবলম্বন করেছেন। এটি এমন এক পদ্ধতি যার মাধ্যমে গল্প বলার ধরণকে অধিকতর বাস্তবতার কাছাকাছি এনে উপস্থাপন করা যায়, একইসাথে যেকোনো ইস্যু নিয়ে নির্মাতা তার পয়েন্ট অফ ভিউ তুলে ধরতে পারেন। এক্ষেত্রে তিনি বীরাঙ্গনাদের বর্তমান অবস্থা কেমন তা একদম টু দ্য পয়েন্টে দেখানোর চেষ্টা করেছেন। তিনি গ্রামের ফতোয়া এবং কুসংস্কারের পাশাপাশি বর্তমান শহুরে জীবনব্যবস্থার ভালো-খারাপ দিকের ওপর আলোকপাত করেছেন। প্রকৃতির সৌন্দর্য এবং প্রাণি-উদ্ভিদের জীবনচক্রের ওপরও আলোকপাত করার চেষ্টা করেছেন। ৭১ এর সময় নারীদের ওপর নির্যাতনের ভয়াবহতা কীরকম ছিল সেটা কিছুটা দৃশ্যায়ন এবং অনেকখানি সংলাপের মাধ্যমে বোঝানোর চেষ্টা করেছেন। সবমিলিয়ে তার নির্মাণপদ্ধতি আমার ভালো লেগেছে।

owlDvmO.jpg


◼অভিনয়: অভিনয়ের দিক থেকে মনে হয়েছে, আসছে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারে এছবির প্রধান চরিত্রের দুজন; প্রাণ রায় এবং জ্যোতিকা জ্যোতি যদি সেরা অভিনেতা-অভিনেত্রীর পুরস্কার পেয়ে যায় তবে অবাক হওয়ার মতো কিছু হবে না। অভিনয় বলুন আর ডেডিকেশনের দিক থেকে বলুন, তারা তাদের সর্বোচ্চটা নিজ নিজ চরিত্রে ঢেলে দিয়েছেন।

দুজনের মধ্যে যদি তুলনা করি তবে প্রাণ রায়ের চরিত্রটি ছিল সবথেকে বেশি চ্যালেঞ্জিং! এখানে তাকে অলমোষ্ট সবগুলো সিনেই পাওয়া গেছে নদীর ধারে, ক্ষেত-খামারে, গাছের মাথায়, কাঁদামাটির ভেতরে। তার রূপদান করা জব্বার চরিত্রটি সাধারণ মানুষ থেকে একটু ব্যতিক্রম, যাদেরকে আমাদের সমাজ মানসিক বিকারগ্রস্ত হিসেবে চিহ্নিত করে ছুঁড়ে ফেলে দেয়।

অন্যদিকে জ্যোতিকা জ্যোতির রূপদান করা "মায়া" চরিত্রটি যতটা স্বাভাবিকভাবেই উপস্থাপন করা হয়েছে তা আমাদের মন ছুঁয়ে যায়। মায়া একজন কর্মঠ নারী, যিনি একহাতে তার মা, ছেলে ও জব্বারের দেখভাল করেন; অন্যহাতে নিজে কৃষক হিসেবে জমিতে ফসল চাষ করে অর্থ উপার্জন করেন। শক্তিসামর্থ্যে নারীরা পিছিয়ে থাকলেও মনের জোর থাকলে যে পুরুষকে টক্কর দেওয়া যায়, "মায়া" চরিত্রটি যেনো তারই একটি উদাহরণ।

ছবিতে থাকা বাকি দুই গুরুত্বপূর্ণ চরিত্র, মানবী বোস এবং রায়হান কবির; এছবির অভিনয় অংশের অন্যতম দূর্বল দিক মনে হলো। মানবী বোস চরিত্রটি কিছুটা আধুনিক ঘরানার, যিনি একটি রিসার্চের জন্য এবং একইসাথে তার অতীত খুজেঁ বেড়ানোর জন্য কোলকাতা থেকে বাংলাদেশে আসেন। মুমতাজ সরকার এক্ষেত্রে মোটামুটি ভালো পারফরমেন্স দেখিয়েছেন বটে, তবে জব্বার এবং মায়া এর থেকে তুলনামূলক বেশি স্ক্রিণটাইম পাওয়া সত্ত্বেও কেন যেনো তার উপস্থাপন করা মানবী বোস চরিত্রটি আমাদের ততটা আগ্রহ ধরে রাখতে পারে না, যতটা জব্বার ও মায়া পারে। এর থেকেও দূর্বল লেগেছে কবি রায়হান কবির চরিত্রটি রূপদান করা দেবাশীষ কায়সারের অভিনয়। আমার মতে তার অভিনয় এবং চরিত্রকে নিজের মধ্যে ধারণ করে নেওয়ার প্রতি আরেকটু সময় দেওয়া উচিত। মনে হলো তিনি ঠিকমতো চরিত্রটি ফুটিয়ে তুলতে পারেননি।

ছবিতে সৈয়দ হাসান ইমাম, লিনা ফেরদৌসী, ঝুনা চৌধুরী সহ আরো অনেক গুণী অভিনেতা-অভিনেত্রী ছোটখাটো চরিত্রে কাজ করেছেন যাদের উপস্থিতি বেশ ভালো ছিল। কবি কামাল চৌধুরীকে এ ছবিতে একটি ক্যামিও রোলে দেখা গেছে। শাহাবুদ্দীন আহমেদের সেই "ওমেন" চিত্রকর্মের বাস্তবায়ন ক্যামেরার সামনে যিনি করেছেন, সেই নুপুরের সাহসিকতার প্রশংসাও করতে হয়!
এই অংশ পাবে ১০০ তে ৭০।

◼কারিগরি :ছবির সিনেমাটোগ্রাফি বেশ ভালো, পশুপাখি নিয়ে সাজানো বিশাল প্রান্তর, ধানক্ষেতের মোড় প্রভৃতি দারুণ কিছু শটের মাধ্যমে উপস্থাপন করা হয়েছে। কমল চন্দ্র দাসের ক্যামেরাওয়ার্ক মন্দ লাগেনি। ইমন চৌধুরীর করা ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক এবং রিপন নাথের করা সাউন্ড ডিজাইন হৃদয় ছুঁয়ে যাওয়ার মতো অনুভুতি সৃষ্টি করে। গল্পে হালকা সাসপেন্স তৈরি করতেও এছবির ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা পালন করেছে। আর যেখানে রিপন নাথের মতো সময়ের সেরা সাউন্ড ডিজাইনার আছে সেখানে দূর্বল কাজ কালেভদ্রে-ই খুজেঁ পাওয়া যায়! মেকআপের দায়িত্ব পালন করা রাজু খানের প্রশংসাও আলাদাভাবে করতে হয়। গ্রামীণ পরিবেশে দেখানো চরিত্রগুলি ফুটিয়ে তুলতে তার অবদানও কম নয়।

কারিগরি অংশের নেতিবাচক দিক লেগেছে এছবির সম্পাদনার কাজ। সিনেমা চলাকালীন একটা সময় গিয়ে মনে হয় জীবের প্রতি জব্বারের ভালোবাসার বারবার রিপিটেশন হচ্ছে, যা গল্পের গতি কমিয়ে দেয়। যদিও ছবিতে থাকা সবগুলো গানকে সংক্ষিপ্তভাবে ব্যবহার করে সম্পাদক সিনেমার লেন্থ বেশ খানিকটা কমিয়ে এনেছেন। তবে যদি সিনেমার মাঝের রিপিটেশনগুলি কমিয়ে আনা যেতো, এছবির লেন্থ আরো কমানো যেতো; একইসাথে ছবির স্ক্রিণপ্লে আরো বেশি মজবুত হতে পারতো। এছাড়া পুরো ছবিতে রঙের বিন্যাস অনুজ্জ্বল হলেও কিছু কিছু জায়গায় তা মাত্রাতিরিক্ত মনে হয়েছে, কালার গ্রেডিং কিংবা লাইটিং এ সামঞ্জস্যতা ধরে রাখতে পারলে হয়তো আরো বেশি ভাল্লাগতো।

ছবিতে প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চলের পাশাপাশি জাতীয় স্মৃতিসৌধ, শহীদ মিনার, শিখা চিরন্তন এর মতো কিছু গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা তুলে ধরা হয়েছে। গল্পের জন্য বাছাই করা এছবির লোকেশন মানানসই ছিল। ছবিতে মোট আটটি গান থাকলেও কোনো গানই পূর্ণাঙ্গভাবে ব্যবহৃত হয়নি। ইমন চৌধুরীর সুর করা ও ঐশীর গাওয়া "মায়া রে" গানটি এছবির সেরা গান, মমতাজের গাওয়া "ডালিম গাছ" গানটিও বেশ ভালো। এছাড়া বেলাল খান, পুজা, পড়শীসহ আরো অনেকের গাওয়া গান এছবিতে ব্যবহৃত হয়েছে।
এ অংশ পাবে ১০০ তে ৭০।

Lb9m5AM.jpg


◼ সামাজিক বার্তা: বীরাঙ্গনাদের প্রতি আমাদের মধ্যে যে মনমানসিকতা দেখতে পাওয়া যায়, এরকম কাজ যদি বেশি করে হয় তবে গণমানুষের মধ্যে সচেতনতা বাড়বে। বীরাঙ্গনাদের সন্তান-সন্ততিদের আমাদের সেভাবেই গ্রহণ করা উচিত যেভাবে আমরা একজন সাধারণ মানুষকে গ্রহণ করি। তাদের সামাজিক স্বৗকৃতি যেনো কোনোভাবেই ক্ষুণ্ণ না হয় সেব্যাপারে কড়াকড়ি আরোপ করা প্রয়োজন।

ছবিতে ভন্ড হুজুর থেকে শুরু করে দোররা মারার মতো জঘন্য ফতোয়া প্রতি ইঙ্গিত করে ধর্মকে খারাপ কাজে লাগানোর প্রভাব কিরকম তা দেখানো হয়েছে। আধুনিক যুগে এসেও আমাদের গ্রামীণ সমাজে ফতোয়ার নেতিবাচক প্রভাব কতটা ভালোভাবে জেঁকে বসেছে, তা দেখানোর চেষ্টা করা হয়েছে। এর পাশাপাশি নারীর সমানাধিকারের প্রতি এছবি শক্ত বার্তা প্রদান করে।
এ অংশ পাবে ১০০ তে ৮০।

◼ ব্যক্তিগত: সেন্সর করার সময় ছবির কিছু অংশ বাদ গেলেও এতে গল্পের ক্ষতি হয়েছে, এমনটা মনে হয়নি। যেহেতু ছবির পোস্টার, টিজারসহ প্রায় সব জায়গাতেই "র রিয়েলিজম" কথাটিকে বেশি হাইলাইট করা হয়েছে, তাই সেরকমই বাস্তব অনুভূতি এছবি আপনাকে দিতে পারবে। কিছু কিছু সিকোয়েন্স আছে যেগুলো দেখে আপনার গা ঘিনঘিন করার মতো তিক্ত অনুভুতিও হতে পারে!

সবমিলিয়ে বলবো "মায়া" মাস্টারপিস কিংবা ক্লাসিক লেভেলের কোনো ছবি হয়তো না, কিন্তু খুবই ভালোমানের প্রচেষ্টা। ভিন্ন ভিন্ন কনসেপ্ট নিয়ে এরকম রিয়েলিস্টিক ট্রিটমেন্ট আমাদের দেশে আরো হওয়া উচিত।

রেটিংঃ ৮/১০

◼ ছবিটি কেন দেখবেন : নাচেগানে ভরপুর ছবির প্রতি যদি আপনার বিতৃষ্ণা থাকে, তবে এছবি সম্পূর্ণভাবে আপনার জন্য। এছাড়া বীরাঙ্গনা ও তাদের সন্তান-সন্ততিদের দুঃখ-দুর্দশার চিত্র ফুটিয়ে তোলা হয়েছে এ ছবিতে। "মায়া" দেখার মাধ্যমে তাদের কষ্টকর মুহুর্তগুলো কিছুটা হলেও অন্তর দিয়ে অনুভুত করতে পারবেন।
 

Users who are viewing this thread

Back
Top