What's new
Nirjonmela Desi Forum

Talk about the things that matter to you! Wanting to join the rest of our members? Feel free to sign up today and gain full access!

অপারেশন নেপচুন স্পেয়ার: ওসামা বিন লাদেন হত্যার ইতিবৃত্ত (1 Viewer)

Bergamo

Forum God
Elite Leader
Joined
Mar 2, 2018
Threads
9,649
Messages
117,051
Credits
1,241,096
Glasses sunglasses
Berry Tart
Statue Of Liberty
Profile Music
Sandwich
VxUTBk2.jpg


টুইন টাওয়ার হামলা তথা নাইন-ইলেভেনের পরে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে চলে আসে আল কায়দা প্রধান ওসামা বিন লাদেন। মার্কিন সরকার লাদেনকে জীবিত কিংবা মৃত ধরার জন্য হন্যে হয়ে খোঁজা শুরু করে। কিন্তু দীর্ঘকাল অতিবাহিত হওয়ার পরেও ওসামা বিন লাদেনের কোন নাগাল পাচ্ছিল না মার্কিন বাহিনী। নাইন-ইলেভেনের প্রায় এক দশক অতিবাহিত হওয়ার কারণে অনেকেই হয়তো ভেবে নিয়েছিল ওসামা বিন লাদেনকে হত্যা করা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষে আর সম্ভব হয়ে উঠবে না। কিন্তু "অপারেশন নেপচুন স্পেয়ার" নামক এক নাটকীয় অভিযানে শেষ পর্যন্ত লাদেনের দেখা পায় মার্কিন বাহিনী।

২০১১ সালের ২ই মে

হঠাৎ করেই আমেরিকার সব টিভি চ্যানেল কোন পূর্ব ঘোষণা ছাড়াই হোয়াইট হাউস থেকে তৎকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার বক্তব্য প্রচার শুরু করে। অনেকেই ভেবে নিয়েছিল, তিনি হয়তো লিবিয়া সম্পর্কে কোন বিশেষ কথা বলবেন; কারণ তখন লিবিয়ায় চরম উত্তেজনাকর পরিস্থিতি বিরাজমান ছিল। কিন্তু সব মানুষকে অবাক করে দিয়ে বারাক ওবামা বিশ্ববাসীকে ওসামা বিন লাদেন হত্যার সংবাদ দিলেন।

zVFlRbp.jpg


পাকিস্তানের রাজধানী ইসলামাবাদের অদূরের অ্যাবোটাবাদের এই বাড়িতেই বসবাস করতেন ওসামা বিন লাদেন; Photo Souce: BBC

তিনি জানালেন যে, লাদেনকে হত্যার অভিযান পরিচালনার বেশ কিছুদিন আগে মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা সিআইএ (CIA) সংবাদ পায় আল কায়দা প্রধান লাদেন পাকিস্তানের অ্যাবোটাবাদে অবস্থান করছেন। এই গোয়েন্দা সংবাদের সূত্র ধরেই যুক্তরাষ্ট্র বিশেষভাবে একদল কমান্ডো প্রশিক্ষণ দেওয়া শুরু করে। ওসামা বিন লাদেনকে হত্যার জন্য বিশেষভাবে প্রস্তুতকৃত এই কমান্ডো বাহিনীতে ছিলেন মার্কিন নেভি সিলের চৌকস কিছু সদস্য। লাদেনকে হত্যার জন্য পরিচালিত নেভি সিলের এই বিশেষ অভিযানের কোড নাম দেয়া হয় অপারেশন নেপচুন স্পেয়ার।

অপারেশন নেপচুন স্পিয়ার পরিচালিত হয়েছিল অত্যন্ত গোপনীয়তার সঙ্গে। অভিযান পরিচালনার দিন তথা ২০১১ সালের ১ই মে হোয়াইট হাউসে একে একে একত্রিত হওয়া শুরু করে ওবামা প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ। অভিযান পরিচালনাকারী কমান্ডো বাহিনীর সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ রাখার জন্য হোয়াইট হাউসে তৈরি করা হয়েছিল যোগাযোগ কেন্দ্র; যার নাম দেওয়া হয়েছিল 'সিচুয়েশন রুম'।
যেভাবে শুরু হয় অপারেশন নেপচুন স্পেয়ার

যুক্তরাষ্ট্রে তখন ঘড়িতে দুপুর ১টা ২৫, প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা ও অন্যান্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা নেভির বিশেষ বাহিনীকে অভিযান শুরুর জন্য চূড়ান্ত নির্দেশ দেন। যদিও তখনো তারা পুরোপুরিভাবে নিশ্চিত ছিল না পাকিস্তানের অ্যাবোটাবাদেই ওসামা বিন লাদেন অবস্থান করছেন; শুধু গোয়েন্দা সূত্রের সংবাদকে ভিত্তি করে তারা এই নির্দেশনা জারি করেন। তখন অভিযান পরিচালনাকারী বিশেষ বাহিনী অবস্থান করছিল আফগানিস্তানের জালালাবাদে শহরে। জালালাবাদ শহরে তখন বাজে রাত সাড়ে দশটা; আর পাকিস্তানের অ্যাবোটাবাদ রাত ১১টা বাজে।

u0AA4Zf.jpg


ওসামা বিন লাদেনের নাগাল পেতে যুক্তরাষ্ট্রের অপেক্ষা করতে হয়েছিল প্রায় এক দশক; Photo Source: BBC

উপরমহল থেকে চূড়ান্ত নির্দেশনা পেয়ে নেভি সিলের ২৩জন সদস্য আফগানিস্তানের জালালাবাদ শহর থেকে দুটি ব্ল্যাক হক হেলিকপ্টার নিয়ে অ্যাবোটাবাদের উদ্দেশ্যে রওনা হয়। নিরাপত্তার কথা মাথায় রেখে আরো দুটি হেলিকপ্টার সঙ্গেই প্রস্তুত রাখা হয়েছিল। এঈ অপারেশনে ব্যবহার করা হেলিকপ্টারগুলোর আওয়াজ ছিল না বললেই চলে এবং পাকিস্তানের রাডার ফাঁকি দিতে মাটির সামান্য কয়েকটি ফিট উপর দিয়ে লক্ষ্য স্থানের দিকে দ্রুতগতিতে উড়ে যেতে থাকে।

যুক্তরাষ্ট্রের সময় দুপর ৩টা ৩০ মিনিটে হেলিকপ্টারগুলো অ্যাবোটাবাদে লাদেনের বাসস্থানের নিকটেই ল্যান্ড করে। তবে এর মধ্যে একটি হেলিকপ্টারের ব্লেড কিছু একটার সাথে বাড়ি খায় কিন্তু পাইলটের দক্ষতায় সেটি ভালোভাবেই মাটিতে নামে। এ দৃশ্য তখন সরাসরি লাইভে দেখছিল সিচুয়েশন রুমে থাকা প্রেসিডেন্ট ওবামা সহ অন্যান্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ। পাকিস্তানের আকাশে ওড়া একটি মার্কিন ড্রোনের সাহায্যে অপারেশনের প্রতি মুহূর্তের ভিডিও চিত্র সিচুয়েশন রুমে পাঠানো হচ্ছিল।

অভিযান পরিচালনাকারী দলের সঙ্গে একটি কুকুরও ছিল; প্রশিক্ষিত এই কুকুরকে বিধ্বস্ত হেলিকপ্টার পাহারা দিতে রেখে ৬জন কমান্ডো সদস্য ওসামা বিন লাদেনের বাসভবনের ভিতরে ঢুকে পড়ে। দোতালায় ওঠার সময় লাদেনের ২৩ বছর বয়সী এক ছেলেকে দেখা মাত্রই গুলি করে মেরে ফেলে কমান্ডো বাহিনী।

ওসামা বিন লাদেন ছিল অত্যন্ত নিরাপত্তা বেষ্টনীর এক কক্ষের মধ্যে। এই কক্ষে কোনো জালানা ছিল না এবং ছিল লোহার দরজা। লাদেন এই লোহার দরজা খুলে বাইরের আওয়াজ ও চিৎকার বুঝার চেষ্টা করেছিলেন। সেই মুহূর্তেই লাদেনকে দেখে ফেলে নেভি সিল দলের এক সদস্য। ওসামা বিন লাদেন বাইরের অবস্থা কিছু বুঝতে না পেরে অনেকটা অসাবধানতাবশতই দরজা বন্ধ না করেই রুমের মধ্যে চলে যান। এই সুযোগে সিল দলের সদস্যরা তার ঘরে ঢুকে পড়েন। সেই মুহূর্তে লাদেনের সঙ্গে ছিল তার স্ত্রী আমাল। আমাল তার স্বামীকে রক্ষার জন্য সামনে দাঁড়ায়, সেসময় অভিযান পরিচালনাকারী বাহিনীর এক সদস্য আমালের পায়ে গুলি করে। তারপর আরেক মার্কিন নেভি সদস্য ডাবল ট্যাপ শট চালায়, এতে একটি গুলি লাদেনের বুকে ও আরেকটি বা–চোখে লাগে। আর এতেই ছিন্নভিন্ন হয়ে যায় লাদেনের দেহের একাংশ এবং তাৎক্ষণিকভাবেই মৃত্যু ঘটে।

PLDj7gK.jpg


হোয়াইট হাউসে বসে অপারেশন নেপচুন স্পেয়ার পর্যবেক্ষন করছেন তৎকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা, পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিলারি ক্লিনটন সহ অন্যান্য ঊর্ধ্বতন মার্কিন কর্মকর্তারা; Photo Source: BBC

লাদেনকে জীবিত ধরা নয়, বরং তাকে সরাসরি গুলি করে হত্যার উদ্দেশ্যেই এই অভিযান পরিচালনা করে মার্কিন বাহিনী। যদিও তারা পরবর্তীতে বলে, ওসামা বিন লাদেন আত্মসমর্পণ করলে তাকে সরাসরি গুলি করে হত্যা করা হতো না।

তারপরই অ্যাডমিরাল ম্যাকরাভেন শুনতে পান যে, অভিযান পরিচালনাকারী সদস্যরা বলছেন "জেরোনিমো"। অপারেশন নেপচুন স্পেয়ার সফল হলে এই কোড ব্যবহার করার কথা আগে থেকে বলা ছিল, যাতে সিচুয়েশন রুমে অবস্থানরত ব্যক্তিরা বুঝতে পারে ওসামা বিন লাদেনের মৃত্যু হয়েছে। অপারেশনের সফলতার কথা শুনে হোয়াইট হাউজের সিচুয়েশন রুমের সকলে আনন্দে ফেটে পড়ে।

এই অপরেশনে লাদেন ছাড়াও আরো পাঁচজন নিহত হয়েছিল বলে ধারণা করা হয়। অভিযান পরিচালনাকারী সদস্যরা ওসামা বিন লাদেনের ছিন্নভিন্ন হয়ে যাওয়া দেহের অংশগুলো একত্রিত করে টেনে-হিঁচড়ে দেহটি নিচতলা নিয়ে আসেন। তারপর দ্রুতই সবকিছু গুছিয়ে হেলিকপ্টার নিয়ে ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন তারা। বিশেষ কমান্ডো বাহিনী মাত্র ৪০মিনিটের মধ্যেই ওসামা বিন লাদেনকে হত্যার মূল অভিযান শেষ করে। তবে ঐদিন নেভি সিলের কমান্ডো বাহিনী অভিযান শুরু থেকে পুনরায় আফগানিস্তানের জালালাবাদে ফিরে আসতে মোট তিন ঘন্টার মতো সময় নিয়েছিল।

তবে ওসামা বিন লাদেন হত্যার অভিযান নিয়ে রয়েছে নানা ধরনের মতানৈক্য। অনেকেই দাবি করেন, মার্কিন বাহিনীর এই অভিযানে ওসামা বিন লাদেন নিহত হয়নি। এমন অভিযোগ উঠার অন্যতম কারণ মার্কিন বাহিনী ওসামা বিন লাদেনর মৃত দেহ; এমনকি তাকে হত্যার কোনো সুস্পষ্ট ভিডিও বা ছবিও বিশ্ববাসীর কাছে উপস্থাপন করতে পারেনি। প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা লাদেনের ছবি প্রকাশের অনুমতি দেননি এই যুক্তি দেখিয়ে যে এসব ছবি সবার সামনে তুলে ধরলে আমেরিকার প্রতি বিদ্বেষ বেড়ে যাবে।

এতো বছর অতিবাহিত হয়ে গেলেও ওসামা বিন লাদেনের মৃত্যু রহস্য নিয়ে– এমন বহুপাক্ষিক পাল্টাপাল্টি যুক্তি, মন্তব্য ও বিতর্ক আজও বিদ্যমান আছে।
 

Users who are viewing this thread

Back
Top