What's new
Nirjonmela Desi Forum

Talk about the things that matter to you! Wanting to join the rest of our members? Feel free to sign up today and gain full access!

কটার্ড’স সিন্ড্রোম : জীবিত মানুষকে যা মৃত বানিয়ে দেয় (1 Viewer)

Bergamo

Forum God
Elite Leader
Joined
Mar 2, 2018
Threads
9,649
Messages
117,051
Credits
1,241,096
Glasses sunglasses
Berry Tart
Statue Of Liberty
Profile Music
Sandwich
kaXMBRS.jpg


২০০৮ সালে নিউ ইয়র্ক এর কিছু মনোবিদ একজন অদ্ভুত রোগীর দেখা পান। ৫৩ বছর বয়সী সেই রোগীর নাম ছিল মিস লি। তিনি তার পরিবারের সদস্যদের কিছু উদ্ভট কথা বলছিলেন। কথাগুলো ছিল কিছুটা এরকম, "আমি মারা গেছি। আমার শরীর দিয়ে পচা মাংসের গন্ধ বের হচ্ছে। তোমরা কি বুঝতে পারছ না? আমাকে মর্গে নিয়ে যাও।আমি সেখানে অন্য মৃতদের সাথে থাকব।"

কথাগুলো কিছুটা ভৌতিক শোনালেও আসলে এটি একটি মানসিক ব্যাধি বা ব্রেইন ডিসঅর্ডার, যাকে বলা হয়ে থাকে কটার্ড ডেলুশন (Cotard delusion) বা কটার্ডস সিন্ড্রোম (Cotard's syndrome)। এটিকে Walking Corpse Syndrome ও বলা হয়ে থাকে। ১৮৮০ সালে এ সম্পর্কে প্রথম ধারণা দেন নিউরোলোজিস্ট ডা. জুলস কটার্ড। কটার্ড'স সিন্ড্রোম রোগে রোগী বেশিরভাগ সময় নিজেকে মৃত মনে করে। সে জীবিত নাকি মৃত এটি নিয়ে সে মূলত দ্বিধায় পরে যায়।
কটার্ড'স সিন্ড্রোমে আক্রান্ত রোগীদের আমরা ২ ভাগে বিভক্ত করতে পারি।

এদের মধ্যে প্রথম টাইপে, রোগীরা এক ধরণের বিভ্রমে থাকে। বিভ্রমটা কিছুটা অদ্ভুত এবং ভুতুড়ে। তারা ভাবে যে তাদের শরীরের কোনো গুরুত্বপূর্ন অঙ্গসমূহ নেই বা অঙ্গগুলো পচে যাচ্ছে বা তাদের শরীরে রক্ত নেই । অর্থাৎ তাদের মস্তিষ্ক এমন একটি তথ্য দাড় করায় যা একজন জীবিত ব্যক্তির থাকার কথা নয়। মূলত রোগী ভেবে থাকে যে সে না থাকলে হয়তোবা তার পরিবার অথবা অন্য কারো জীবনটা আরো সুন্দর হতে পারত। ফলে সে এমন এক জগতের কথা চিন্তা করে যেখানে সে নিজেই থাকবে না। অর্থাৎ রোগী আত্মিক প্রশান্তি পাওয়ার জন্য নিজেকেই মৃত ভেবে নেয়।

মজার ব্যাপার হচ্ছে, টাইপ ২ এর রোগীরা আবার সম্পূর্ন উলটা বিভ্রমে থাকে। তারাও টাইপ ১ এর রোগীদের মত ভেবে নেয় যে তার শরীরে কোনো বিরাট ক্রুটি আছে। তবে তাদের মস্তিষ্ক বিষয়টাকে অন্যভাবে সাজায়। তারা ভাবে যে তাদের মধ্যে ক্রুটি থাকা স্বত্তেও যেহেতু তারা জীবিত আছে, তার মানে তারা অমরণশীল।

ডাক্তার জুলিয়াস কটার্ড, যার নাম অনুসারে এই রোগটির নামকরণ করা হয়েছে তিনি নিজে ১৮৮৮সালে একজন রোগীর দেখা পেয়েছিলেন, যাকে তিনি তার নোটবুকে Mademoisell X বলে চিহ্নিত করেছেন। এই মিস X, ডা.কটার্ড এর কাছে ভিত্তিহীন একটা কথা বলেছিলেন। "আমার কোনো মস্তিষ্ক নেই, কোনো পাকস্থলী নেই, কোনো অনূভুতিও নেই।" তিনি নিজেকে অমরণশীল মনে করতেন এবং এজন্য তিনি খাওয়া দাওয়া বন্ধ করে দিয়েছিলেন। পরবর্তীতে তিনি না খেতে খেতে সত্যিই মারা যান।

১৯৯৬ সালে একজন স্কটিশ মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় আহত হোন। তার মস্তিষ্ক মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হয়। তিনি শারীরিক ভাবে সুস্থ হওয়ার পর দাবি করেন যে তিনি নাকি মৃত এবং তার আত্মা নরকে আছে। তিনি আরো বলেন তিনি নাকি নরকের গরম ও অনুভব করছেন।

২০১২ সালে জাপানিজ ডাক্তারদের কাছে একজন ৬৯ বছর বয়সী পুরুষ আসেন। তিনি ডাক্তার দেরকে বলেন, "আমার মনে হয় আমি মারা গেছি। আপনাদের এ বিষয়ে মতামত কি?" ডাক্তাররা তাকে লজিকালি ব্যাখ্যা দিলেও তিনি তার বিশ্বাসে অটুট থাকেন। এক বছর ট্রিটমেন্ট এর পর তিনি বলেন যে, "আমি এখন বেচে আছি। তবে এক বছর আগে আমি মৃত ছিলাম।"
২০০৯ সালে বেলজিয়ান মনোবিদরা একটা কেস এরকথা উল্লেখ করেন। ৮৮ বছর বয়সী ডিপ্রেশন এ ভুগতে থাকা একজন রোগী তাদেরকে বলেছিল যে তিনি মারা গিয়েছেন এবং তিনি খুবই চিন্তিত কেননা তাকে এখনো দাফন করা হয়নি।

২০০৩ সালে গ্রীক মনোবিদরা একজন রোগীর সাক্ষাৎ পান যিনি মনে করতেন যে তার কোনো মস্তিষ্ক নেই। তিনি আত্ম্যহত্যার ও প্রচেষ্টা করেছিলেন কেননা তার মনে হয়েছিল যে এটা খুবই লজ্জাজনক যে তার কোনো মস্তিষ্ক নেই। এই ডাক্তাররা ৭২ বছর বয়সী একজন মহিলা রোগীর ও দেখা পান। তিনি বলেছিলেন যে, "আমার শরীরের ভেতরের সব অঙ্গ নষ্ট হয়ে গেছে,শুধু স্কিন টাই বাকি রয়েছে। আমি বাস্তবিকভাবে মৃত।"

২০১০ সালে ইরানি মনোবিদরা একজন রোগীর দেখা পান। এক্ষেত্রে একটু অদ্ভুত ঘটনা ঘটে। রোগী দাবি করেন যে তিনি নাকি মারা গেছেন এবং একটি কুকুরের দেহে তার আত্মা রয়েছে। তিনি আরো বলেন যে তার তিন মেয়ে ও নাকি মারা গেছে এবং তিনটা ভেড়ার দেহে তাদের আত্মা অবস্থান করছে।

প্রায় ৬৯% কেসই সাধারণত টাইপ ১ এর হয়ে থাকে যেখানে রোগী নিজের অস্তিত্ব নিয়ে দ্বিধায় থাকে। বাকি ক্ষেত্রে রোগীরা নিজেদের কে অমরণশীল ভাবে।

কটার্ড'স সিন্ড্রোম খুবই দুর্লভ রোগ। স্কিজোফ্রেনিক রোগীদের এটি বেশি হয়ে থাকে। মাত্রাতিরিক্ত ডিপ্রেশন এই মানসিক রোগের অন্যতম কারণ। Coterd's syndrome: A Review (2010) আর্টিকেল এ বলা হয়, এ রোগের সফল ট্রিটমেন্ট এর ব্যবস্থা রয়েছে। মনোথেরাপি এর প্রথম ধাপ। সর্বশেষ ধাপটি হলো Electroconvulsive therapy।
 

Users who are viewing this thread

Back
Top