হারানো দ্বীপ
লেখক- আয়ামিল
সূচিপত্র:
অধ্যায় ০১ : লিয়াফ ও তার মা
অধ্যায় ০২ : আড়ভাঙ্গার উপখ্যান
অধ্যায় ০৩ : অস্তিত্বের লড়াই
অধ্যায় ০৪ : কামনার আবাস (অপ্রকাশিত)
অধ্যায় ০৫ : প্রকৃতির সাম্যতা (অপ্রকাশিত)
লেখক- আয়ামিল
সূচিপত্র:
অধ্যায় ০১ : লিয়াফ ও তার মা
অধ্যায় ০২ : আড়ভাঙ্গার উপখ্যান
অধ্যায় ০৩ : অস্তিত্বের লড়াই
অধ্যায় ০৪ : কামনার আবাস (অপ্রকাশিত)
অধ্যায় ০৫ : প্রকৃতির সাম্যতা (অপ্রকাশিত)
অধ্যায় ০১ : লিয়াফ ও তার মা
১.
একটা ঝড়……. কিছু লোকের চিৎকার…. অন্ধকারের চাদর…..
হঠাৎ জ্ঞান ফিরল। চোখ খুলে সাদা বালি দেখল লিয়াফ। উঠে বসল সে। সারা শরীরে ব্যাথা। চোখটাও ঝাপসা লাগছে। মিনিট খানেক থ মেরে বসে রইল লিয়াফ। হঠাৎ তার মনে পড়ল আরে তাদের তো লঞ্চ দূর্ঘটনা হয়েছে! সে এখন কই?
চারপাশে তাকালো লিয়াফ। হঠাৎ দেখল দূরে কাউকে পড়ে থাকতে দেখল। লিয়াফ সেদিকে দৌড় দিলো। কাছে গিয়ে দেখল। ওর মা। শাড়িটা অর্ধখোলা আর বালুতে দাবা প্রায়। ও চিন্তিত হয়ে মায়ের নাড়ী পরিক্ষা করল। যেন কয়েকমণ বোঝা নামল ওর কাধ থেকে।
কিছুটা সামলেই দৌড় দিলো সামনের সমুদ্রের দিকে। সমুদ্রের কাছে যাওয়ার পর একটা প্রশ্ন ওর মাথায় আসলো, আমরা কোথায়? কিন্তু প্রশ্নটা যত তাড়াতাড়ি এসেছে তত তাড়াতাড়ি চলেও গেলো। আজলা ভরে পানি নিয়ে মায়ের মুখে ছিটিয়ে দিলো।
লিয়াফের মা, হোসনে আরা তার সজ্ঞা ফিরে পেল। দশমিনিট পর দুইজনেই নিজেদের সামলে নিলো। নিজেদের মধ্যে কথা বলতে লাগলো। লঞ্চ ডুবার সময় বাবা ছাদে ছিলো। আর ওরা যেহেতু কেবিনে ছিলো তাই নিঃসন্দেহে বাবা ওদের সাথে আসে নি।
দুইজনেই উৎকন্ঠার সাথে চারপাশ দেখতে লাগলো। হোসনে আরা দেখল সূর্য ডুবতে বেশী দেরী নেই। তাই বলল,
– লিয়াফ?
– কি মা?
উত্তর দিলো লিয়াফ।
– এখন কি করবি? অন্ধকার যে ঘনিয়ে আসছে।
– বাবাকে তো খোঁজা দরকার। কিন্তু তোমার কি মনে হয় মা?
হোসনে আরা কোন উত্তর দিলো না। কাঁদো কাঁদো কন্ঠে কি বলল তা বুঝা গেল না।
লিয়াফের মাথায় অসংখ্য চিন্তা খেলা করছে। তবে কি ওদের সাথে রবিনসন ক্রুসোর মতো হচ্ছে? এটা কি কোন অজানা দ্বীপ? নাকি কোন বাসিন্দা আছে? তারা কি বাংলাদেশী? দ্বীপটি কোন জেলার?
লিয়াফের মাথা ঘুরতে লাগল এত সব চিন্তা করতে করতে। দ্বীপটি নিয়ে তবুও ভাবলো। দ্বীপের আকৃতি সরলরেখার মতো লম্বা। কিন্তু মা আর ও মিলে দশ মিনিটেই এর একদিকে যেতে সক্ষম হয়েছে। মানে অন্যদিকও তেমন দূরত্বের।
লিয়াফ একটা বিষয়ে নিঃসন্দিহান যে এটার চারপাশেই পানি। চিন্তাটা আসার অন্য কারণও আছে। ওদের পিছনে, মানে সমুদ্রের উল্টো দিকে জঙ্গল। আর বাইরে থেকে তার গভীরতা আঁচ করতে না পারলেও, গাছপালার সংখ্যা দেখে ও এতটুকু নিশ্চিত যে এই জঙ্গল খুবই দুর্গম।
সেই কারণেই বোধহয় ওপাশে কোন মানুষ থাকলেও এপাশে তেমন আসে না। তার মানে জঙ্গলটা সত্যিই খুব দুর্গম। অর্থাৎ তাদের সাহায্যে কেউ আসবে না।
– কি ভাবিস তুই?
হোসনে আরার কন্ঠে মোহটা ভাঙ্গল লিয়াফের।
– এখন কি করব ভাবছি।
– কি করবি?
– আগে তো আমাদের সাহায্য দরকার। কিন্তু কেউ কি আছে কোথাও?
– মনে হয় না। জঙ্গলের ওপাশে কেউ থাকলেও তার আশা করা এখন বৃথা।
– হুম। তারমানে আমাদের এখন প্রথমে থাকার আর খাবারের চিন্তা করতে হবে।
– কিরে, ব্রেয়ার গ্রিলস হয়ে গেলি নাকি?
হোসনে আরা হেসে বলল।
– তা ছাড়া কি কোন উপায় আছে।