What's new
Nirjonmela Desi Forum

Talk about the things that matter to you! Wanting to join the rest of our members? Feel free to sign up today and gain full access!

Self-Made ফ্লাওয়ার ভাস 🎏📌📍🔪🏹💋 (1 Viewer)

Fahima

Senior Member
Joined
Apr 8, 2019
Threads
137
Messages
539
Credits
32,076
ঝনঝন শব্দে ডোর বেল বেজে উঠতেই হাত থেকে ফ্লাওয়ার ভাসটা ফেলে দিল অনিমা।কয়েক টুকরো হয়ে সেটা ছড়িয়ে পড়লো মেঝেতে।হতবিহবল অনিমা ফেলে দেওয়া ফ্লাওয়ার ভাসের দিকে অবাক দৃষ্টিতে কয়েক সেকেন্ড তাকিয়ে থাকতে থাকতেই দ্বিতীয় বার ঘর কাঁপিয়ে আবার বেল বেজে উঠলো।চমকে উঠে বাস্তবে ফিরলো সে।দৌড়ে দরজার সামনে গিয়ে কী হোলে চোখ রাখলো।



আসিফ এই ভরদুপুরে! অফিস ছুটি নাকি!কিছুটা কৌতুহল নিয়ে দরজা খুলতেই দেখতে পেল আসিফ উদভ্রান্তের মত তাকিয়ে আছে। অনিমা কিছু বলার আগেই টাইয়ের নব খুলতে খুলতে ঘরে ঢুকলো সে।বসার ঘরের মেঝেতে পড়ে থাকা ফ্লাওয়ার ভাসের টুকরো মাড়িয়ে সে চলে গেল।একবার জানতেও চাইলো না অনিমার কাছে এগুলো ভেঙে পড়ে আছে কেন। অনিমা বিস্ময় চেপে দরজা লাগিয়ে চলে গেল ওর প্রিয় ফুলদানির ভাঙা টুকরো গুলোর কাছে।আজ সে কেন এটা করলো!কিভাবে হাত থেকে পড়ে ভেঙে গেল এটা!



মানুষের কিছু না কিছু শখ থাকে।অনিমার শখ হচ্ছে ফ্লাওয়ার ভাস বা ফুলদানি কেনা।সে বিভিন্ন বিপণী বিতান ঘুরে ঘুরে ফুলদানি কেনে।ঘরের বিভিন্ন জায়গায় শোভা পায় অনিমার কিনে আনা সেসব রুচিশীল কারুকার্য খচিত ফুলদানি। বেশ যত্ন করে ধুলো মুছে রাখে সে এসবের।এই শখটা হঠাতই তৈরি হয়েছে তার।কখন কিভাবে মনে নেই,তবে এই ব্যাপারটি করতে তার বেশ লাগে।মন কেমন যেন ফুরফুরে লাগে নতুন ফুলদানি কিনে আনবার পর।



এসব ভাবতে ভাবতে ডিম ভেঙে বিটার মেশিনে বিট করতে লাগল অনিমা।আসিফ বিকেলের নাস্তায় টোস্ট বা স্যান্ডুইচ খেতে পছন্দ করে।সেটাই বানাতে শুরু করলো সে।আসিফের উদভ্রান্ত চেহারা বার বার চোখে ভাসছিল।কি হয়েছে আসিফের!এরকম চেহারায় আসিফ এভাবে চলেই বা আসলো কেন!এসেই অঘোরে ঘুমিয়েছে সারা দুপুর।বিকেল প্রায় মরে এসেছে।আসিফের ঘুম ভেঙেছে।ওয়াসরুম থেকে শাওয়ারের পানি পড়বার আওয়াজ আসছে।কেমন যেন ঝুম ঝুম আওয়াজ, পানি পড়ার শব্দটা তালে তালে আসছে অনিমার কানে।চায়ের পানি চুলায় চাপিয়ে খুব দ্রুত নাস্তা বানানোয় হাত চালালো সে।



ওয়াসরুমের দেয়ালে হাত চেপে দাঁড়িয়ে আছে আসিফ।শাওয়ারের পানি ঝমঝমিয়ে নামছে শরীর বেয়ে।চোখ বন্ধ করে ভিজতে থাকা আসিফ তখন অন্য জগতে।সে জগতে তখন একটি চিন্তাই ঘুরেফিরে মস্তিষ্কে জায়গা দখল করে নিচ্ছে।আসিফ প্ল্যানমত এগুতে পারবে,কিন্তু পরবর্তী পদক্ষেপ কি হতে পারে তা আসিফের অজানা।আসিফ আর কিছুই ভাবতে চায় না।গত রাত থেকে তৈরি করে রাখা সেই প্ল্যান মোতাবেক সে এগুতে চাইছে,হ্যা সেটাই করবে সে!



শাওয়ারের হাতল ঘুরিয়ে তোয়ালে পেচিয়ে বেরিয়ে এল সে।খুব সন্তপর্ণে পা টিপে টিপে রান্নাঘরের দিকে এগুতে লাগলো।পেছনে ঘুরে এক নাগারে কাজ করে যাচ্ছে অনিমা।আসিফ একবার বসার ঘরের পিতলের ফুলদানির দিকে তাকালো।তাকিয়ে রইলো ছয় সেকেন্ড।কি যেন ভেবে খুব দ্রুত ঘরে গিয়ে ট্রাইজার আর হাওয়াই শার্ট গায়ে চাপিয়ে বসার ঘর থেকে খুব দ্রুত পিতলের ফুলদানিটা রান্নাঘরের কাছটায় এনে রাখলো।



রান্নাঘরে উকি দিয়ে একবার বলল শুধু,অনি!চা হয়েছে?



কথাটা বলার পর নিজের গলাই অপরিচিত লাগছিল ওর কাছে।অনিমা টোস্ট নামাতে নামাতে বলল,'এই যে সব হয়ে এলো।তুমি বসো গিয়ে।আমি আনছি!'



বলেই হেসে তাকালো সে আসিফের দিকে।আসিফ নির্বিকার তাকিয়ে তখন।আজ আসিফকে তার বড্ড অচেনা লাগছে।কেন সে জানেনা!তবুও কপালের সামনে আসা চুলগুলো সরিয়ে খুব দ্রুত চা ঢালতে লাগলো অনিমা।



আচমকা মাথায় প্রচন্ড আঘাত লাগলো তার।বিস্ময়ে হতবাক অনিমা পেছন ফিরে তাকাল একবার।চোখ কোটর থেকে যেন বেরিয়ে আসতে চাইলো তার।প্রচন্ড যন্ত্রণায় মাথার পেছনটায় হাত রেখে অবাক হয়ে দেখছে সে আসিফকে।আসিফ নির্লিপ্ত ভঙিতে দ্বিতীয় আঘাতটা সজোরে কপালে বসালো।সাথে সাথে অনিমার মনে হচ্ছিলো ওর মাথাটা দুভাগ হয়ে দু'দিকে সরে গিয়েছে।অস্ফুটস্বরে কি যেন বলে লুটিয়ে গেল সে।



আসিফ পিতলের ফুলদানিটার দিকে তাকালো একবার।এরপর প্রচন্ড শক্তিতে পর পর চারটি আঘাত করলো মাটিতে পড়ে থাকা অনিমার মাথায়।আঘাতে আঘাতে অনিমার কপাল কয়েক মূহুর্তেই ফেটে চৌচির হয়ে গেল।ফুলদানি,আসিফের চোখমুখ আর মেঝে অনিমার রক্তের ছটায় লাল হয়ে রইলো।



অনিমার চোখ খোলা ছিল।সব কিছুর উর্ধ্বে গিয়ে অনিমা যেন অবাক চোখে আসিফকেই দেখছিল।


আসিফ মুখে লেগে থাকা রক্ত ধুয়ে আসলো ওয়াশরুম থেকে,সিগারেটের প্যাকেট হাতে নিয়ে বসলো ডাইনিং টেবিলের চেয়ার টেনে।নিকোটিনের এক রাশ ধোঁয়া ছাড়তে ছাড়তে তাকাল আরেকবার রান্নাঘরের দিকে।অনিমার মৃতদেহ ওভাবেই পড়ে আছে ওখানটায়।



একবার ডান হাত দিয়ে মাথার চুল খামচে ধরলো সে!নিজেকে ঠান্ডা মাথার খুনি ভাবতে ভাল লাগছে না তার।আসিফ অনিমাকে মেরে ফেলেছে কিন্তু ব্যাপারটা পরিকল্পিত নয়,আবার হুট করেও নয়।ব্যাপারটার মাঝে দোটানা আছে।কিন্তু এখন এসব ভেবে লাভ নেই।সময় নেই হাতে বেশি।লাশ খুব দ্রুত সরাতে হবে।



সিনেমায় দেখেছে আসিফ,খুনের পর লাশ স্যুটকেসে ভরে ব্রিজের উপর থেকে ফেলে দেয়।এত কাচা কাজ আসিফ করবে না।কারণ দুদিন পরেই অনিমার লাশ পেয়ে,পুলিশ আসিফকেই গ্রেফতার করবে। তাই আসিফ ভয়ংকর পরিকল্পনা করে রেখেছে,যেটা কিছুক্ষণ পরেই সংঘটিত হতে যাচ্ছে।আসিফ নির্বিকার বসে কাজ গুছিয়ে নিচ্ছে মনে মনে।তার মাঝে কোন পাপবোধ বা অনুশোচনা কাজ করছেনা।এমনকি ভালবেসে বিয়ে করা অনিমার জন্য বুকের কোথাও টনটনে ব্যথা জানান দিচ্ছে না।যে অনিমার শ্যাম বরণ মুখশ্রীর অদ্ভুত হাসিতে বুকে তোলপাড় হতো আসিফের,সেই আসিফ রান্নাঘরে অনিমার লাশ রেখে সিগারেটের ধোয়া দিয়ে রিং বানিয়ে শূন্যে ছেড়ে দিচ্ছে!



অনিমার দেহটা নিথর পড়ে আছে তখনও। পাশে টোস্টের প্লেট, চায়ের কাপ ছিটিয়ে পড়ে আছে অনিমার সাথে।সমস্যা হচ্ছে অনিমার চোখ দুটো খোলা।আসিফ দুইবার চেষ্টা করেছে,চোখ বন্ধ হচ্ছেনা।অস্বস্তি লাগছে আসিফের,মনে হচ্ছে সে আসিফকে দেখছে,তাকিয়ে আছে।



আসিফ হাল ছেড়ে দিয়ে কাজে নেমে পড়ল।অনিমার দুই হাত ধরে টেনে নিয়ে যেতে লাগলো শোবার ঘরের দিকে।ওয়াশরুমের কাছাকাছি এনে শুইয়ে দিল সে।রান্নাঘর থেকে গুনে গুনে সাতটা বড় পলিথিন ব্যাগ নিয়ে এল।এসব পলিথিন,অনিমা রেফ্রিজারেটরে মাছ মাংস রাখতে ব্যবহার করে।



একটা নিঃশ্বাস ফেলে আরেকবার চেষ্টা করল অনিমার চোখটা বন্ধ করতে।হলো না।কাজ শুরু করে দিল আসিফ।



আসিফের সাথে অনিমার পরিচয় বছর পাঁচেক আগে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অনিমার সেদিন ছিল সমাবর্তন।আসিফ গিয়েছিল ছোট ভাইয়ের সমাবর্তনে।চোখ আটকে গিয়েছিল অনিমাকে দেখে আসিফের।কালো হ্যাট আর কালো গাউনে মোড়ানো অনিমা মিষ্টি হাসছিল আসিফের ছোট ভাই আর অন্যান্য বন্ধুদের সাথে।



নিজে থেকে সেদিন যেচে পড়ে কথা বলেছিল আসিফ।অনিমা প্রথম কিছুটা বিরক্ত হলেও আসিফের হাস্যজ্বল চেহারা আর চমৎকার বাচনভঙ্গি অনিমাকে পথ বাতলে দিয়েছিল।অনিমা সেদিন ফিরে আসবার সময় তাই আসিফের কাছ থেকে, পরদিন কফি শপে বসার প্রস্তাব ফিরিয়ে দিতে পারেনি।



অনিমা আর আসিফের বিয়ে হয়ে গেল কোনরকম ঝামেলা ছাড়াই।অনিমার মা বাবা রোড এক্সিডেন্টে মারা যাবার পর অনিমার বড় খালা খালু অনিমাকে নিজেদের কাছে নিয়ে গিয়েছিলেন।কিছুদিনের মধ্যেই অনিমার খালা খালুর জার্মানি যাবার সব ব্যবস্থা হয়ে গেল।অনিমা রয়ে গেল গার্লস হোস্টেলে।প্রচন্ড মেধাবী অনিমার জীবন চলতে লাগল তরতর করে।খালা খালু,খালাত ভাইবোনেরা নিয়মিত যোগাযোগ রাখতো অনিমার সাথে।তবুও অনিমা বুঝতো আস্তে আস্তে ব্যস্ততা গ্রাস করছে সবাইকে।খালা খালু বিয়েতেও আসতে পারলেন না।অনিমা নিজের সিদ্বান্তে আসিফকে বিয়ে করলো।



মাস্টার্সের পর আসিফ চাইছিল অনিমা কোন একটা কাজে ঢুকে যাক।সময় কাটবে।অনিমা রাজি হল না।সে বলল,"বাহির তো তুমি সামলাচ্ছই,আমি না হয় ভেতরটা সামলাই।সংসার আমার আর অফিস তোমার"



আসিফের ভাল লেগেছিল অনিমার কথা গুলো।প্রচন্ড মেধাবী একটি মেয়ে দেশের সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠে পড়েও ক্যারিয়ার নিয়ে না ভেবে সংসারী হতে চাইছে দেখে,আসিফ কিছুটা অবাকও হয়েছিল সেদিন।



অনিমা চুপচাপ ঘরোনার মেয়ে।প্রয়োজন ছাড়া খুব একটা কথা বলেনা সে।তবে ওর হাসিতে কি যেন ছিল!প্রতিবারের হাসিতেই আসিফের বুকের তোলপাড় আসিফ নিজেই টের পেত।



বিয়ের চার বছর পর আসিফ একটু একটু করে আবিস্কার করতে লাগল,অনিমার এই শান্ত স্বভাবটা সে ঠিক মানতে পারছেনা।অনিমা আসিফকে ভালবাসে,সে আসিফ বোঝে।তবুও কি যেন চায় সে,যেটা অনিমার মাঝে নেই।রোবটের মত দুজনের জীবন চালিয়ে নেওয়াটা বড্ড একঘেয়েমি লাগছিল আসিফের কাছে।



ঠিক তখনই সামনে এল সিনথিয়া। আসিফের অফিসে সদ্য জয়েন্ট করা সিনিয়র এক্সিকিউটিভ অফিসার।




আসিফ যে মাল্টিন্যাশনাল কোম্পানিতে চাকরি করছে,বর্তমানে সে সেখানকার জিএম।প্রচন্ড ব্যস্ততার মাঝেই চাকরিতে সদ্য ঢোকা সিনথিয়াকে প্রথম দেখে আসিফ কিছুক্ষণের জন্য স্তব্ধ হয়ে গিয়েছিল।



সিনথিয়া ডিভোর্সি,এক সন্তানের জননী। কেউ যদি আসিফকে এসে বলতো,সিনথিয়া অবিবাহিত,আসিফ সেটা বিশ্বাস করতো।কারণ বিশ্বাস করার মতই ব্যাপার সেটা।সিনথিয়া লম্বায় প্রায় আসিফের কাছাকাছি।চোখ ধাধানো মুখশ্রী আর ঝকঝকে জামার নীচে আজকাল যাকে জিরো ফিগার বলে ঠিক তেমন গড়নের মেয়ে সিনথিয়া।



আসিফ টের পেতো সিনথিয়া সামনে এলে আসিফ অক্সিজেনের অভাববোধ করতো।দম বন্ধ হয়ে আসার ব্যাপারটা সিনথিয়া ধরতে পেরেছিল।ধরতে পেরে ওর মুচকি হাসিটাকে আরো প্রসারিত করে আসিফের দিকে তাকাতে লাগল।আসিফ যে ভেতরে ভেতরে তীব্র শ্বাসকষ্টে ভুগছে সিনথিয়া সেটা বুঝতে পেরে যেন আরো মরিয়া হয়ে আসিফকে দ্বিগুন ঝকঝকে হাসি উপহার দিতে লাগলো।



আসিফ একদিন না পেরে বলেই ফেলেছিল, সে সিনথিয়ার কাছে একটু সময় চায়।একটু বসতে চায় তার সাথে।সিনথিয়া টোপ ফেলেছিল আগেই,মাছ আজ টোপ গিলেছে ভেবে ডিপ মেরুন লিপিস্টিকের প্রলেপের ফাঁকে উষ্ণ হাসিমাখা মুখে আসিফকে,একসাথে বসার সময়টা জানিয়ে দিয়েছিল সিনথিয়া।



সেদিনের পর থেকে আসিফ সিনথিয়ায় পুরোপুরি ডুবে গেল।সিনথিয়াকে ছাড়া আসিফের বেঁচে থাকাটাই তখন অর্থহীন মনে হতো।ঝকঝকে ফাইভ স্টার হোটেলে মাখনের মত নরম বিছানায় সিনথিয়ার রেশম চুলের ঘ্রাণে ডুবে থেকেও আসিফের কখনো মনে হয়নি সে অনিমাকে ঠকাচ্ছে।কিংবা কোনরকম অনুশোচনা তার ভেতর তখন কাজ করতো না।তার সবটুকু জুড়ে তখন সিনথিয়া।



সিনথিয়াকে পুরোপুরি বুঝে ওঠা হতোনা আসিফের কখনই।তবুও তাদের কথপোকথনে কোথায় যেন সিনথিয়ার মাঝে স্বার্থপরতার ব্যাপার ছিল।কিংবা নিজের সবটুকু অধিকার আদায় করে নেবার একটা ব্যাপার ছিল!



এইতো সেদিনকার কথা,



সিনথিয়া মুখের উপর পরে থাকা চুল গুলো চুড়ো করে বেধে বলতে লাগলো,আই নিড আ শেল্টার। এন্ড ইউ হ্যাভ টু পে ইট!



আসিফ মৃদু হেসে উত্তর দিল,তোমার শেল্টার তো আমার বুকে।সেখানে ছত্রছায়ায় ভালই আছো।



তীক্ষ্ণ চোখে সিনথিয়া জানিয়ে ছিল,অনিমা যে শেল্টার টা পাচ্ছে আমি সেটা চাই।আমাকে ঠিক ততটুকু প্রায়োরিটি তোমাকে দিতে হবে।



আসিফ কিছুটা বিমর্ষ হয়ে গিয়েছিল সিনথিয়ার এমন কথার প্রেক্ষিতে।সে ভাবতেও পারেনি সিনথিয়া এমনটা বলতে পারে ওকে। আসিফ সেদিন কোন উত্তর দেয়নি কিন্তু ফোন স্ক্রিনে যখন অনিমার নাম ভেসে উঠেছিল তখন অজান্তেই ঢোক গিলেছিল সে।টাচস্ক্রীনের সবুজ অংশ চেপে কানে দিতেই অনিমা হেসে জানতে চেয়েছিল,



কি করছো?খুব ব্যস্ত?



আসিফ তখন বিছানায় আধশোয়া,ওর হাটুর উপরটায় সিনথিয়া আধশোয়া হয়ে টেলিভিশনের রিমোট দিয়ে এক নাগারে চ্যানেল বদলে যাচ্ছিলো।



আসিফের গলা কাঁপছিল খুব,তবুও সে বলেছিল,সামান্য বিজি আছি।বলবে কিছু?



অনিমা গলা শুনে জানতে চেয়েছিল,শরীর খারাপ লাগছে কিনা!



আসিফ মিটিং এ আছে জানিয়ে সেদিনকার মত ফোন কেটে দেবার পর টের পেয়েছিল,ফুল এয়ারকন্ডিশন রুমের ভিতর থেকেও সে ঘেমে উঠেছে।তবুও সিনথিয়ার রেশম মেরুন রঙা চুলে হাত বোলাতে গিয়ে ঝট করে সরে গিয়েছিল সিনথিয়া। তারপর ওয়াশরুমের দিকে যেতে যেতে বলল সে,এভাবে নয়,বি এ ওয়াইফ,আমাকে রাখতে পারলে আবার নিয়ে এসো এখানটায়।



আসিফ এরপর থেকে রাতগুলো নির্ঘুম কাটাতো।সিনথিয়া তার সবটুকু জুড়ে জায়গা দখল করে,তার ভিতরটা আশপাশের মানুষের জন্য মরুভূমি বানিয়ে দিয়েছিল।



আসিফ খুব ভেবেচিন্তে সিদ্বান্ত নিল,অনিমাকে সে ডিভোর্স দেবে।



কিন্তু অনিমা উচ্চশিক্ষিত মেধাবী মেয়ে।হুট করে ডিভোর্স দিয়ে দিলেইতো হলো না।অনিমা খুব শান্ত স্বভাবের মেয়ে হলেও এই ব্যাপারটায় সে আসিফকে ছেড়ে দিবেনা।বাইরের জগতে পা রেখে অনিমা বদলে যেতে পারে।সে চাইতেই পারে আসিফ ভাল না থাকুক।আসিফ শেষ হয়ে যাক কিংবা ধ্বংস হয়ে যাক আসিফের জীবনটা।



কিন্তু আসিফ সবকিছুর উর্ধ্বে গিয়ে তখন শুধু সিনথিয়াকে নিয়েই ভাল থাকতে চায়।যেখানটায় তাকে কেউ বিরক্ত করতে আসবে না।
 

Users who are viewing this thread

Back
Top