What's new
Nirjonmela Desi Forum

Talk about the things that matter to you! Wanting to join the rest of our members? Feel free to sign up today and gain full access!

Self-Made বোন 👭👭👭👭👭👭👭👭👭👭 (1 Viewer)

Fahima

Senior Member
Joined
Apr 8, 2019
Threads
137
Messages
539
Credits
32,076
আমার আপা কে পাত্রপক্ষ দেখতে এসে আমাকে পছন্দ করেছে।ব্যাপার টা খুবই অপমানজনক মনেহচ্ছে বাসার সবার কাছে।



পাত্র পক্ষ আপা কে হাজার টা প্রশ্ন করছে।আপা ও চুপচাপ পজেটিভ উত্তর দিয়ে যাচ্ছে।

প্রশ্নের ধরন গুলো এমন



পাত্র আপা কে জিজ্ঞেস করলো-



-আপনি কি গ্রামে থাকতে পারবেন?



আপা মিষ্টি হাসি দিয়ে বললো গ্রামে থাকতে আমি খুব ভালোবাসি।



আসলে গ্রামে যেতে আমরা দু'বোন খুব ভালোবাসি। কিন্তু থাকতে আমাদের ভিষণ রকমের অসুবিধা হয়।



আপার অতি নম্রতা আমার মাঝে মধ্যে খুব বিরক্ত লাগে।



আমার বড় আপার নাম মিম্রতা। এই নামের অর্থ কি আমার জানা নাই।গুগলে সার্চ করলে হয়তো পাওয়া যেতে পারে।

আমার অনেক কিছুই জানতে ইচ্ছে করেনা আবার জানাতেও ইচ্ছে করে না।



পাত্র পক্ষ দেখতে এসে আমাকে পছন্দ করে ফেলেছে।এরপর থেকে দাদী পাত্র কে উঠতে বসতে বকাবকি করছেন।



দাদী পান চিবুতে চিবুতে বললো-



হে কোন দেশর নবাব শেঠ।তার কাছে খেনে বিয়া দিতাম?দেশের মাজে দামানের আকাল পরছেনি।



দাদী পান চিবুতে চিবুতে কথা বলার দৃশ্য টা অসাধারণ রকমের সুন্দর।কেউ সরাসরি না দেখলে বিশ্বাস করবে না।



আমি আর আপা দাদীর চিবানো পান খাওয়ার জন্য এক রকম প্রতিযোগিতা করি।আমাদের কোন ভাই নেই, দুই বোন আমরা।



দাদী মাঝে মাঝে বলেন-



তরারে বাদশার পুলা ও বিয়া করবো লোভে বাইদ্দার পুলা ও বিয়া করবো লোভে।



আপা অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করে কেনো?



দাদী বলেন তোদের মা-বাপ চাকরি করে,তুই ও চাকরি করছ টেকা পয়সার অভাব নাই।ভাই থাকলে সম্পদের ভাগিদার থাকতো, তোদের কোন ভাগিদার নাই।



আমি দাদীর এসব কথা পাত্তা দেই না।আপা কাঁদোকাঁদো স্বরে বলে, আমাদের কেউ ভালোবেসে বিয়ে করবে না বলতে চাইছেন দাদী'মা।



-হুম,ভালোবাসার ছলনা দিয়া বিয়া করবো।



দাদীর কথা শুনে আপা প্রচন্ড রকমের মন খারাপ করে।



রাতে আমি ল্যাপটপ নিয়ে বসে আছি।



আপা হলুদ একটা চৌড়া পাড়ের সুতি শাড়ী, হাতে সাদা চুড়ি, খোলা চুলে কাঠ গোলপ গুঁজেছে।



চুল খোলা রেখে রাতে বাহিরে যাওয়া নিষেধ অছে,তবুও আপা চুল খোলা রেখেছে।



ভিষণ রকমের সুন্দর লাগছে আপাকে।এই সুন্দরের তুলনা করার মতো কোন উপমা আমার জানা নেই।

আপা কে দেখতে সাদা আর হলুদাআভের কাঠ গোলাপের মতোই লাগছে। যদিও হলুদ শাড়ী পড়ায় এখানে হলুদের আধিক্য বেশি-ই।



আপার চুল থেকে শ্যাম্পুর ঘ্রাণ পাওয়া যাচ্ছে অথচ আমি চাইছি কাঠ গোলাপের ঘ্রাণ পাওয়া যাক।

তাই মেজাজ টা খারাপ হয়ে গেলো আমার।আমার বড় কোন কারনে মেজাজ খারাপ হয় না। ছোট্ট ছোট্ট কারনে মেজাজ খারাপ হয়।



আকাশে বিশাল চাঁদ উঠলে আপা এমন করে সাজে।এটা আপার চাঁদ দেখার নিয়ম।



আপা আমাকে বললো-



-মায়া, আকাশে অদ্ভুত সুন্দর একটা চাঁদ উঠেছে,চল দেখে আসি।



আমি ল্যাপটপে আপাকে চাঁদ দেখিয়ে বললাম-



-দেখ, আপা চাঁদ কে কোলে নিয়ে দেখতে পারলে কষ্ট করে ছাদে যাবার প্রয়োজন কি?



-আচ্ছা মায়া, মা-বাপির মন খারাপ কেনো?



আপা এতো সুন্দর সেজেছে, আমার ইচ্ছে করছে না তার মনটা ও খারাপ করে দেই।

বললাম, আপা তুই চাঁদ দেখে আয় তারপর বলবো।



আপা এত পরিমাণ চাপাচাপি করছে এক রকম বাধ্য হয়েই বললাম।



আপা আমি ঐ শাওন নামের ছেলে টা কে বিয়ে করবো।

মা-বাপি কে বলেছি পাত্রের পরিবার যেনো আবার এসে আমাকে দেখে যায়।

যদিও তারা তোকে দেখতে এসে আমাকে-ই দেখে গেছে তারপরেও একটা নিয়ম আছে না!



বৃষ্টি আসার আগেও প্রকৃতি গুমোর হয়।কান্না করার আগে চোখ ছলছল করে আপার এমন কোন কিছুই হলো না চোখ দিয়ে তর তর করে পানি পড়তে লাগলো।



আপা বললো-



বিয়ে টা বড় কথা নয়,তুই একবারও পরিবারের সম্মানের কথা চিন্তা করলি না।ছেলের পরিবার যথেষ্ট এডুকেটেড হবার পরেও তাদের আচরনের ত্রুটি তোর চোখে পড়ছে না।

তুই একটু ত্যাড়া স্বভাবের আমরা সবাই জানি।কিন্তু এই ঘটনা টা না ঘটলে কখনোই হয়তো জানতে পারতাম না, মনেমনে তুই কতো টা স্বার্থপর।ভালো থাকার জন্যই তো বিয়ে টা করতে চাচ্ছিস, ভালো থাক।



আমি বললাম-

সম্মান দিয়ে কি হবে?স্ট্যাবলিস্ট ছেলে,হাতছাড়া করার মতো না আপা।আমার খুব ইচ্ছে ছিলো বিয়ের আগে শাওন কে একটু রান্নাটান্না করে অফিসে নিয়ে নিজের হাতে খাওয়াই।সে টা আর তোরা হতে দিবি না।



আপা চুল থেকে ফুল গুলো ফেলে দিয়ে,ঘূর্ণিঝড় ফণীর মতো চলে গেলো।



পাত্র পক্ষ দ্বিতীয় বারের মতো আমাদের বাড়িতে এসেছে।মা-বাপি,দাদীর মন খুব খারাপ। আপা সকালে ওর এক কলিগের বাসায় চলে গেছে।



আমি, পাত্রপক্ষের সামনে ঘোমটা দিয়ে নতুন বউয়ের মতো গুটিয়ে বসে আছি।দাদী আমার সাথে আসতে চেয়েছিলেন আমি না করেছি।



আমাদের হেল্পিং হ্যান্ডের নাম রেহানা।

রেহানা আপা এসে নাস্তা দিয়ে আমার পাশে দাঁড়িয়ে আছে,হয়তো মা শিখিয়ে দিয়েছে। হয়তো তার ইচ্ছায়-ই সে দাঁড়িয়ে আছে।



আমি বললাম রেহানা আপা এখন যাও,উনারা এরপরে তোমাকে পছন্দ করে ফেলতে পারেন।তখন আমার কপাল পুড়বে।



আমার এই কথা শুনার পরে হয়তো তাদের আর বুঝতে বাকি রইলো না,কত টা গায়ে লেগেছিলো সে দিন আমাদের।কতটা অপমানিত হয়েছিলাম আমরা সেদিন।বড় বোন কে দেখতে এসে, ছোট বোন কে পছন্দ করা কত টা অপমান জনক একটা পরিবারের জন্য।



তাদের সাথে আমাদের পরিবার কোন রকম সম্পর্কে যেতে চায় না। যদি ছোট্ট করে বলে দিতাম, তবে তাদের গায়ে অপমানের কাঁটা টা তীব্র ভাবে বিঁধানো যেতো না।



মা-বাপি কে বলে ও এমন আয়োজন করে সুক্ষ্ম করে ভদ্র ভাষায় অপমান টা করতে পারতাম না।তারা ঝামেলায় যাবার মানুষ নয়।





আমি আর আপা সব সময় এক সাথে কেনাকাটা করি। একই রকম জামা-জুতা,শাড়ি-চুড়ি কিনি।আমি শাড়ি পড়িনা,তবে কিনি।আজ রাতে শাড়ি পরলাম,হলুদ শাড়ি সাদা রেশমি চুড়ি। আপা কে বললাম আপা চুলে ফুল পড়বো।



আপা তার আর্টিফিসিয়াল ফুলের গাজরা দিলো।আমি রাগ করে বললাম নিজে তো রিয়েল ফুল চুলে দিয়ে চাঁদ দেখিস, আমারও রিয়েল ফুল লাগবে।



আপা বললো -



-ফুল তো নাই।



-তোর সাদা গোলাপ গাছে ফুল ফুঁটেছে।রাতে ফুল ছিঁড়া ভালো না।তুই ছিঁড়ে দে আপা।



আপা আমার চোখের দিকে তাকিয়ে আমাকে বুঝার চেষ্টা করছে হয়তো।কত টা স্বার্থপর আমি হতে পরি।



আপা কে নিয়ে ছাদে গেলাম।

ছাদে "তোমাকে ভালোবাসি মিম্রতা"ফুল দিয়ে লিখা।চারপাশে মোম জ্বালানো।

চাঁদের জোছনায় মোমের আলো বড্ড বেমানান,তাই আমি আলো নিভিয়ে দিলাম।



আসফাক ভাই আমাদের পাশের ফ্ল্যাটে থাকেন।গোবেচারা মানুষ, মনে তার প্রেমের বন্যা বয়ে যায়। মুখে কখনো বলতে পারে নাই আপা কে। সে জানালার ফাঁকে আপা কে দেখে।

আপা না দেখলেও আমি অনেক দিন দেখেছি।

সামনের মাসে তিনি পি এইচ ডি করতে আমেরিকা চলে যাবেন।



আসফাক ভাই এক ঝুড়ি রেশমি চুড়ি নিয়ে দাঁড়িয়ে আছেন।নানা রংয়ের চুড়ি,এমন একটা বোকার মতন চুড়ি ওয়ালী ধরনের প্রেমিক পুরুষ আমার হলে জড়িয়ে ধরে বলতাম, তোমাকে খুব ভালোবাসি।



আপা হুট করে আমাকে জড়িয়ে ধরলো।এই মেয়ে টা কোন রকম সিগনাল ছাড়াই কাঁদে,এখনো হাউমাউ করে কাঁদছে।আমার গলা ব্যাথা করছে,চোখ দিয়ে পানি পরছে।এই মেয়েটার স্বভাব আমার উপর পড়েছে।



আপা কে বললাম আসফাক ভাই কে দেখতে, টি এস সির মোড়ে বসে থাকা চুড়ি ওয়ালী খালাদের মতো লাগছে।

আমি যদি তাকে দুলাভাই না ডেকে চুড়িওয়ালী ডাকি তুই কি এমন করে কাঁদবি আপা।



আপার কান্নার মাত্রা চারগুণ বেড়ে গেলে আমি পরলাম মহাযন্ত্রণায়।



আমি আসফাক ভাই কে ডেকে বললাম-



- এই যে চুড়িওয়ালী,আপনার যন্ত্রণা আপনার কাঁধে তুলে নিন।



আসফাক ভাই আপার হাত টা নিজের হাতে তুলে নিলো।


(সমাপ্ত)
 

Users who are viewing this thread

Back
Top