What's new
Nirjonmela Desi Forum

Talk about the things that matter to you! Wanting to join the rest of our members? Feel free to sign up today and gain full access!

হিজড়া হয়ে জন্ম নেয়া নারীর চিকিৎসা পরবর্তী বিয়ে-সংসারের গল্প (1 Viewer)

Black_Rainbow

Member
Joined
Aug 20, 2019
Threads
32
Messages
126
Credits
3,206
আমার বোনের এক বান্ধবী হিজড়া হয়ে জন্মেছিল অর্থাৎ তার জননাঙ্গ সুগঠিত ছিল না কিন্তু জন্মের কয়েক মাস পরই ছোট্ট একটা সার্জারি করা হয় এর ফলে সে পুরো নারীত্ব ফিরে পায়। শুনেছি তার বিয়েও হয়েছে এবং ঠিকঠাক সংসারও করছে।

প্রথমেই ধন্যবাদ তার পরিবারকে কেননা তারা যদি অসতর্ক হত , এভাবে জন্ম গ্রহণ করাকে যদি অভিশাপ মনে করত,নিজেদের পাপের ফল মনে করত এবং খোদাকে দু'চারটা গালিগালাজ করে ক্ষান্ত হত তবে লাভ কিছুই হত না বরং আজীবন তাদের ভুলের মাশুল গুণতে হত। মেয়েটি কখনও স্বাভাবিক জীবন ফিরে পেত না।

আপনি জেনে অবাক হবেন যে,যদি জন্মগতভাবে কেউ এমন হিজড়া হয়ে জন্মায় তবে জন্মের ছয় মাস থেকে বয়ঃসন্ধির পূর্বেই অভিজ্ঞ ডাক্তারের শরণাপন্ন হয়ে সার্জারি করা হলে শতকরা নব্বই ভাগই নারী বা পুরুষ যেকোনো অবয়বে স্বাভাবিকভাবেই বেড়ে উঠতে পারে। তবে দুঃখজনক ব্যাপার হচ্ছে গত চার বছরে ঢাকা মেডিকেলে এরকম সার্জারির সংখ্যা মাত্র ১৮ কেননা এর কোনো প্রচার,প্রসার নেই কিংবা আমাদের মত কুসংস্কারাচ্ছন্ন ব্যক্তিরা মানতেই নারাজ এদেরকে স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে আনা বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই সম্ভব।

হিজড়া জন্মানোর কারণ কী সহজভাবে বলার চেষ্টা করছি।
মাতৃগর্ভে ভ্রূণের বয়স আট সপ্তাহ হওয়া পর্যন্ত জরায়ুতে পুরুষ ও স্ত্রী লিঙ্গ নির্ধারক দুটি নালিই সমান্তরালভাবে থাকে। সন্তানটি যদি মেয়ে হয়, তাহলে পুরুষ লিঙ্গ নির্ধারক নালিটি প্রাকৃতিকভাবে মিলিয়ে যায় । ছেলে হলে তা রয়ে যায় কিন্তু হিজড়াদের শরীরে দুটি নালিই থেকে যায়।

বেশির ভাগ হিজড়াদের ক্ষেত্রেই একই সঙ্গে জরায়ু ও পুরুষদের জননেন্দ্রিয়ও থাকে। তবে কোনোটিই পুরোপুরি বিকশিত হতে পারে না। ডিম্বাশয় থেকে নারীদেহের হরমোন ইস্ট্রোজেন এবং শুক্রাশয় থেকে পুরুষদেহে থাকা অ্যান্ড্রোজেন নির্গত হয়। এতে করে কারও কারও স্তন তৈরি হয়, কারও কারও দাড়ি-গোঁফও হতে পারে।
চিকিৎসার শুরুতে তাই শিশুর সুপ্ত পরিচয় জানতে প্রথমেই চিকিৎসকেরা ক্রোমোজোমাল অ্যানালাইসিস করেন। অস্ত্রোপচারের পর স্টেরয়েড ব্যবহার করা হয়ে থাকে। প্রয়োজনীয় হরমোনের ঘাটতি মেটাতে বাইরে থেকে হরমোন ইঞ্জেক্ট করা হয়।

শিশুটির মধ্যে যে লিঙ্গের প্রভাব বেশি তাতেই তাকে রূপান্তর করা হয় অর্থাৎ যদি XXX প্যাটার্ন থাকে তবে তাকে নারীরূপে এবং XXY থাকলে পুরুষরূপে। এমন অস্বাভাবিক প্যাটার্ন সৃষ্টি হয় মূলত ক্রোমোজমাল ডিজঅর্ডারের কারণে যেমন-
১.টার্নার সিন্ড্রোম
২.ওভোটেস্টিস
৩.কনজেনিটাল এড্রেনাল হাইপারপ্লাসিয়া
৪.এন্ড্রোজেন ইনসেন্সিটিভিটি সিন্ড্রোম

কথা হচ্ছে, আমরা মূলত যেসব হিজড়াদের রাস্তায় চাঁদাবাজি কিংবা বিভিন্ন সন্ত্রাসী কার্যকলাপ করতে দেখি এরা বেশিরভাগই ক্যাস্ট্রেট পুরুষ।
অর্থাৎ, একটা সময় এরা স্বাভাবিক পুরুষ ছিল কিন্তু এদের প্রলোভন দেখিয়ে, অপহরণ করে, কখনও বিভিন্ন ভয় ভীতি প্রদর্শন করে এদের লিঙ্গচ্ছেদ করে হিজড়া বানানো হয়েছে।

এদেরকে দিয়েই এসব চাঁদাবাজি করায় মূল হোতারা। মূল হোতারা কিন্তু হিজড়া নয় বরং এরা সুস্থ,স্বাভাবিক পুরুষ। এদের বউ, বাচ্চাও আছে এবং মূল হোতারা এসব হিজড়াদের চাঁদাবাজির মাধ্যমে কোটি টাকার মালিক হয়ে বসে আছে। কোনোটিই আমার মনগড়া কথা নয়। "একুশে টিভিতে" ধারাবাহিকভাবে প্রচারিত কয়েকটি পর্বে এই প্রতিবেদন দেখানো হয়েছিল। প্রতিবেদনটি ইউটিউবেও পাবেন।

প্রসঙ্গত আরও একটু বলি, আমাদের চারপাশে খেয়াল করলে দেখবেন এমন অনেক ছেলে আছে যাদের আচরণ, কথাবার্তা মেয়েলি ধাচের।

একজন মহিলার কথা জানি যার শখ ছিল তার যেন মেয়ে হয় কিন্তু হয়েছে ছেলে এবার সেই ছেলেকে সে মেয়েদের পোশাক পরিয়ে, লিপস্টিক দিয়ে মেয়ে সাজিয়ে রাখত। এই ছেলে এখন বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ে কিন্তু তার স্বভাব, কথাবার্তা মেয়েলী ধাচের এবং তার জীবনের ইচ্ছে হল সে নারীতে রূপান্তরিত হবে। এটা একটা মানসিক রোগ যার নাম "ডুয়েল রোল ইনভেস্টিজম"।

ছেলেটির এই রোগের জন্য আমি তার মাকে শতভাগ দোষ দেই। এরকম কান্ডজ্ঞানহীন নারী -পুরুষরা মা- বাবা হওয়ার যোগ্যতা রাখে না। সুতরাং, ছেলে বা মেয়ে যাই হোক না কেন তাকে নিজস্ব বৈশিষ্ট্যে বড় করুন এমন সঙ সাজানোর কোনো প্রয়োজন নেই।

শারীরিকভাবে ছেলে কিন্তু মানসিকভাবে সে যদি নারীরূপে গড়ে উঠে তবে প্রত্যেকটা ক্ষেত্রে সে কেবল উপহাসের পাত্র হবে তাই এমন অস্বাভাবিকতা দেখা দিলে শুরুতেই চিকিৎসার ব্যবস্থা করা উচিত।

পরিশেষে বলব, চিকিৎসা কিংবা কাউন্সেলিং যাই বলি না কেন কিছুক্ষেত্রে সীমাবদ্ধতা থাকবেই কিন্তু আমাদের যতটুকু সচেতনতা প্রয়োজন বা যা করণীয় সেইটুকু চেষ্টা না করে আমরা যখন একে "অভিশাপ" বলে অভিহিত করে হাত পা গুটিয়ে বসে থাকি তখন সচেতন নাগরিক হিসেবে দায়ভার কিছুটা আমাদের উপরও বর্তায়। এদেরকে স্বাভাবিকভাবে কর্মক্ষেত্রে যোগদান করার সুযোগ দেয়া উচিত।

অন্যদিকে মূল হোতারা হিজড়াদের অর্থাৎ ক্যাস্ট্রেট পুরুষদের দিয়ে দেশব্যাপী চাঁদাবাজি, সন্ত্রাসী কর্মকান্ড চালানোর পরও দেশের আইনী ব্যবস্থা যখন নিশ্চুপ তখন এমন আইনী ব্যবস্থাকে মাথা ঠুকে সালাম জানানো ছাড়া আর কিছুই করার নেই?

লিখেছেন, তুফফাহুল জান্নাত মিরা, সাইবার ৭১
 

Users who are viewing this thread

Back
Top