রোজ বাসে,টেম্পুতে গাদাগাদি করে যেতে বড্ড অস্বস্তিতে ভুগতে হয়,কি এক জীবন! সকাল হলেই ঘর,শশুর-শাশুড়ী, বাচ্চা-কাচ্চা সামলে দৌড়াতে হয় অফিসের জন্য।সেখানেও স্বস্তি নামক শব্দটির সাথে দেখা মেলা ভার।সামান্য ক'টা টাকার জন্য কি এক দৌড়ের উপর সারাক্ষণ,,
অন্যদিকে হালফ্যাশনে পুরাই আপডেট করা বন্ধু নাদিয়া কি সুখেই না জীবন কাটাচ্ছে!সেদিন বাসে করে যাচ্ছিলাম আলমাসের সামনে দিয়ে।হঠাৎ দেখি সেই চেনা মুখ,প্রিয় বন্ধুনীর মুখ।একটা সময় ছিল আমরা চার বন্ধু গলা জড়াজড়ি করেই দিন কাটাতাম,,কিন্তু আজ!!
মার্সিডিজের স্বচ্ছ কাঁচের ভেতর ওর চেহারাটায় যেন আলো উগলে পড়ছে,,,,আহা!কি সুখ!
চোখে সানগ্লাসটা ওকে মানিয়েছে বেশ।ভাগ্যিস ওর সানগ্লাসটি ছিল,আরেকটু হলেই দেখে ফেলতো আমার ঘর্মাক্ত, পরিশ্রান্ত মুখটি।নিজেকে লুকাতে ব্যস্ত হয়ে পড়ি,পাছে দেখে ফেলে আমায়,,,,
অভাব বড্ড লজ্জা দেয় আমায়....
আমার সোফার নোংরা কাভার, পিলোতে তেল চিটচিটে দাগ,পুরানো পর্দা সবই গরিবানার নিদর্শন বলা যায়,,,দারিদ্রতার উপহাসে আমি জর্জরিত। সেদিন প্রিয়ন্তীর বাড়ি গেলাম পুজা দেখতে,,পুজামন্ডপ থেকে প্রিয়ন্তিই টেনে নিয়ে যায় ওর বসার ঘরে,কতবছর পর আমাদের দেখা!কিন্তু কি আশ্চর্য!আমি ওর সাথে কথাই বলতে পারছিলাম না।এসির শিরশিরে বাতাসেও কেমন ঘামতে শুরু করলাম।শিরদাঁড়া বেয়ে নেমে আসছে ঘাম।ভারী পর্দা,দামী সোফা আর সারা ঘরময় মো মো করা চাঁপাফুলের চাপা গন্ধে আমার কেমন দম আটকে আসছিল।মখমলের পাপোসে পা রেখেই আমার সবচে দামী বেডসীটটার কথা মনে পড়ল।দু'তিন জায়গায় দাগ পড়েছে তারপরও কত যত্নেই না তুলে রেখেছি আলমারিতে। নিজের লজ্জাবনত মুখটা লুকোনোর ব্যর্থ চেষ্টায় ব্যস্ত হয়ে পড়লাম,,,
অভাব বড় লজ্জা দেয় আমায়....
কতদিন মাছ খাওয়া হয় না, মেয়েটা ক'দিন ধরে মাছ খাবো,, মাছ খাবো বলছিল,,বেতন পেয়েই দৌড়ে গেলাম কাঁচা বাজারে,,মোটামুটি বড় সাইজের একটা পাঙাশ মাছ কিনলাম,,,খুশিতে তাড়াহুড়োয় বেড়িয়ে আসছিলাম দেখি তন্দ্রা আমার দিকে হা করে তাকিয়ে।আমাকে দেখেই জড়িয়ে ধরল এত গুলো লোকের ভীড়ে,,কতবছর পর দেখা আমাদের!
বাধ্য হয়ে ওর সাথে বাজারে ঢুকলাম আবার।শখ করে বাজারে এসেছে আজ।আমার সাথে কথা বলতে বলতেই কিনে ফেলল দু'খানা বড় ইলিশ।গলদা চিংড়ির দিকে তাকিয়ে বলল,জানিস মেয়েটা আমার চিংড়ি ছাড়া কিছুই খাই না,,তাই রোজ চিংড়ি নিয়ে যেতে হয়।ততক্ষণে এটা সেটাতে ভরে গেছে তন্দ্রার বাজারের থলে।তন্দ্রার কাজের মেয়েটা থলের ভারে নুয়ে পড়েছে।অবশ্য আমিও নুয়ে পড়েছি, তবে সেটা লজ্জায়।পাঙাশ মাছের বেড়িয়ে পড়া লেজটা আমাকে তন্দ্রার দিকে তাকাতে দিচ্ছে না...
অভাব বড় লজ্জা দেয় আমায়....
যখন প্রচন্ড জ্যামে বাসের ভেতর ঘেমে নেয়ে ভিজে একশা অবস্থা আমার, তখন হঠাৎ করেই তুমি পাশে এসে দাঁড়ালে,জ্যামে অসহ্য ঠেকছিল,,বাস থেকে দুজনে নেমে এলাম রাস্তায়।গরমে অস্থির হয়ে থাকা
আমার হাতে তুলে দিলে এক গ্লাস আঁখের রস।দুজনে ভাগাভাগি করেই খেলাম।জানি আঁখের রস নয় এটা ছিল ভালবাসা আমাদের,,,, বাকিটা পথ হেঁটেই যেতে হবে,,,, বাসের ভাড়া পনেরো টাকাই এখন রসওয়ালার পকেটে।তারপরও ভাল লাগছিল।
রস খাচ্ছিলাম,দেখি পাশে এসে দাঁড়িয়েছে নাদিয়ার গাড়ি।
জ্যামে আটকে থাকা গাড়ির কাঁচ ঘেঁষে পানি বিক্রি করছিল একটা বাচ্চা ছেলে,,নাদিয়া গ্লাস নামিয়ে পানি নিতে যাবে তখনই ভেতর থেকে হুংকার তুলে একজন বলল,"তোমাকে কতবার বলেছি এসব নোংরা ছেলেমেয়েদের কাছ থেকে কিছুই নেবে,, সব কিছুতেই বাড়াবাড়ি তোমার।আমাদের সোসাইটিতে এসেও তোমার ছোটলোকী স্বভাব যায়নি এখনো,,"নাদিয়ার চোখের জলটা চোখে পড়ল আমার,ওর তৃষ্ণার্ত শুকিয়ে যাওয়া মুখটা দেখে খুব কষ্ট হচ্ছিল,,,,স্বচ্ছ কাঁচের এপারে আমার হাস্যোজ্জ্বল মুখটা আবারও লুকোতে হল আমাকে,,পাছে ওর চোখে ধরা পড়ে যায়....
অভাব বড় সুখ দেয় আমায়....
পুজো বাড়ির উলুধ্বনি,, শঙ্খধ্বনি আর ঢাকের শব্দে চারিদিক যখন উৎসবমুখর তখন আমি প্রিয়ন্তির বসার ঘরে আড়ষ্ট হয়ে বসে ছিলাম এককোণায়।প্রিয়ন্তি পুরানো বন্ধুকে আপ্যায়ন করবে বলে শশব্যস্ত হয়ে ঢু মারলো কিচেনে,,,, কিন্তু সেই যে গেল ফিরছেই না মেয়েটা,,দেরী দেখে ভেতরের রুমে পা বাড়ালাম, পর্দা তুলতে যাবো তখনই কানে এলো প্রিয়ন্তির কান্নার আওয়াজ,,,,গোঙানির শব্দে বিড়বিড় করে বলছে,,প্লিজ অমন করো না,সুদীপা সব শুনে ফেলবে,,ওর কাছে আমাকে ছোট করো না।
ওর আকুতি,, হঠাৎই রুপান্তরিত হল আর্তচিৎকারে।
চড়ের শব্দ শুনতে পেলাম,শুনলাম কর্কশ কন্ঠের অশ্রাব্য কিছু গালিগালাজ।চাঁপার আচ্ছন্নতা পেছনে ফেলে বেড়িয়ে এলাম পুজামন্ডপে। ভারী পর্দা আর মখমলের পাপোশ আমাকে পিছু টানলো না।বাসায় ফিরে এলাম।আমার ফিরতে দেরী হচ্ছে দেখে তুমিই রান্না চাপিয়েছো চুলায়,,পাঁচফোড়নের সুঘ্রাণে সারা ঘর মো মো করছে, চুপচাপ তোমার পাশে এসে দাঁড়ালাম...
অভাব বড় সুখ দেয় আমায়...
কাজের মেয়েটা বাজারের থলেটার ভারে মাথা তুলতেই পারছে না,,তন্দ্রা তখনো কেনাকাটায় ব্যস্ত।হঠাৎ করেই মেয়েটার হাত থেকে ফসকে গেল বাজারের থলে,,ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে গেল চৌদ্দশো টাকা দামের ইলিশ মাছ আর চকচকে আবরণের চিংড়ি,,
তন্দ্রাকে নতুনরুপে আবিষ্কার করলাম।কলেজের
সেই সাদাসিধে বন্ধুটাকে দেখলাম অগ্নিমূর্তির রুপে।
যে তন্দ্রার ছোট একটা তেলাপোকার জন্য ও মন কাঁদত সে তন্দ্রাই বাচ্চা মেয়েটার গালে বসিয়ে দিল কষে চড়।
মেয়েটা পড়েই যাচ্ছিল, আমি তুলে নিলাম বুকে।দু'হাতে বাজারগুলো ভরে দিলাম থলেতে।তন্দ্রার দিকে তাকিয়ে বললাম, মানুষ হতে চেষ্টা কর তন্দ্রা।অত নিচে নামিস না বন্ধু....বলেই পা বাড়ালাম।
ওর সংকোচিত মুখটা দেখতে ইচ্ছে করলো না।ফিরে এলাম ঘরে,পাঙাশ মাছটা দেখেই আমার মেয়ের লাফালাফি শুরু হয়ে গেছে,,,ওর হাসি মুখটা থেকে খুঁজে নিলাম পরম তৃপ্তি....
আপাতত মাছটা রান্না করে মেয়েকে খাওয়ানোই একমাত্র কাজ.....আপাতত সুখ মাখামাখিই আমার একমাত্র কাজ....
অভাব বড় সুখ দেয় আমাকে...
(সমাপ্ত)
অন্যদিকে হালফ্যাশনে পুরাই আপডেট করা বন্ধু নাদিয়া কি সুখেই না জীবন কাটাচ্ছে!সেদিন বাসে করে যাচ্ছিলাম আলমাসের সামনে দিয়ে।হঠাৎ দেখি সেই চেনা মুখ,প্রিয় বন্ধুনীর মুখ।একটা সময় ছিল আমরা চার বন্ধু গলা জড়াজড়ি করেই দিন কাটাতাম,,কিন্তু আজ!!
মার্সিডিজের স্বচ্ছ কাঁচের ভেতর ওর চেহারাটায় যেন আলো উগলে পড়ছে,,,,আহা!কি সুখ!
চোখে সানগ্লাসটা ওকে মানিয়েছে বেশ।ভাগ্যিস ওর সানগ্লাসটি ছিল,আরেকটু হলেই দেখে ফেলতো আমার ঘর্মাক্ত, পরিশ্রান্ত মুখটি।নিজেকে লুকাতে ব্যস্ত হয়ে পড়ি,পাছে দেখে ফেলে আমায়,,,,
অভাব বড্ড লজ্জা দেয় আমায়....
আমার সোফার নোংরা কাভার, পিলোতে তেল চিটচিটে দাগ,পুরানো পর্দা সবই গরিবানার নিদর্শন বলা যায়,,,দারিদ্রতার উপহাসে আমি জর্জরিত। সেদিন প্রিয়ন্তীর বাড়ি গেলাম পুজা দেখতে,,পুজামন্ডপ থেকে প্রিয়ন্তিই টেনে নিয়ে যায় ওর বসার ঘরে,কতবছর পর আমাদের দেখা!কিন্তু কি আশ্চর্য!আমি ওর সাথে কথাই বলতে পারছিলাম না।এসির শিরশিরে বাতাসেও কেমন ঘামতে শুরু করলাম।শিরদাঁড়া বেয়ে নেমে আসছে ঘাম।ভারী পর্দা,দামী সোফা আর সারা ঘরময় মো মো করা চাঁপাফুলের চাপা গন্ধে আমার কেমন দম আটকে আসছিল।মখমলের পাপোসে পা রেখেই আমার সবচে দামী বেডসীটটার কথা মনে পড়ল।দু'তিন জায়গায় দাগ পড়েছে তারপরও কত যত্নেই না তুলে রেখেছি আলমারিতে। নিজের লজ্জাবনত মুখটা লুকোনোর ব্যর্থ চেষ্টায় ব্যস্ত হয়ে পড়লাম,,,
অভাব বড় লজ্জা দেয় আমায়....
কতদিন মাছ খাওয়া হয় না, মেয়েটা ক'দিন ধরে মাছ খাবো,, মাছ খাবো বলছিল,,বেতন পেয়েই দৌড়ে গেলাম কাঁচা বাজারে,,মোটামুটি বড় সাইজের একটা পাঙাশ মাছ কিনলাম,,,খুশিতে তাড়াহুড়োয় বেড়িয়ে আসছিলাম দেখি তন্দ্রা আমার দিকে হা করে তাকিয়ে।আমাকে দেখেই জড়িয়ে ধরল এত গুলো লোকের ভীড়ে,,কতবছর পর দেখা আমাদের!
বাধ্য হয়ে ওর সাথে বাজারে ঢুকলাম আবার।শখ করে বাজারে এসেছে আজ।আমার সাথে কথা বলতে বলতেই কিনে ফেলল দু'খানা বড় ইলিশ।গলদা চিংড়ির দিকে তাকিয়ে বলল,জানিস মেয়েটা আমার চিংড়ি ছাড়া কিছুই খাই না,,তাই রোজ চিংড়ি নিয়ে যেতে হয়।ততক্ষণে এটা সেটাতে ভরে গেছে তন্দ্রার বাজারের থলে।তন্দ্রার কাজের মেয়েটা থলের ভারে নুয়ে পড়েছে।অবশ্য আমিও নুয়ে পড়েছি, তবে সেটা লজ্জায়।পাঙাশ মাছের বেড়িয়ে পড়া লেজটা আমাকে তন্দ্রার দিকে তাকাতে দিচ্ছে না...
অভাব বড় লজ্জা দেয় আমায়....
যখন প্রচন্ড জ্যামে বাসের ভেতর ঘেমে নেয়ে ভিজে একশা অবস্থা আমার, তখন হঠাৎ করেই তুমি পাশে এসে দাঁড়ালে,জ্যামে অসহ্য ঠেকছিল,,বাস থেকে দুজনে নেমে এলাম রাস্তায়।গরমে অস্থির হয়ে থাকা
আমার হাতে তুলে দিলে এক গ্লাস আঁখের রস।দুজনে ভাগাভাগি করেই খেলাম।জানি আঁখের রস নয় এটা ছিল ভালবাসা আমাদের,,,, বাকিটা পথ হেঁটেই যেতে হবে,,,, বাসের ভাড়া পনেরো টাকাই এখন রসওয়ালার পকেটে।তারপরও ভাল লাগছিল।
রস খাচ্ছিলাম,দেখি পাশে এসে দাঁড়িয়েছে নাদিয়ার গাড়ি।
জ্যামে আটকে থাকা গাড়ির কাঁচ ঘেঁষে পানি বিক্রি করছিল একটা বাচ্চা ছেলে,,নাদিয়া গ্লাস নামিয়ে পানি নিতে যাবে তখনই ভেতর থেকে হুংকার তুলে একজন বলল,"তোমাকে কতবার বলেছি এসব নোংরা ছেলেমেয়েদের কাছ থেকে কিছুই নেবে,, সব কিছুতেই বাড়াবাড়ি তোমার।আমাদের সোসাইটিতে এসেও তোমার ছোটলোকী স্বভাব যায়নি এখনো,,"নাদিয়ার চোখের জলটা চোখে পড়ল আমার,ওর তৃষ্ণার্ত শুকিয়ে যাওয়া মুখটা দেখে খুব কষ্ট হচ্ছিল,,,,স্বচ্ছ কাঁচের এপারে আমার হাস্যোজ্জ্বল মুখটা আবারও লুকোতে হল আমাকে,,পাছে ওর চোখে ধরা পড়ে যায়....
অভাব বড় সুখ দেয় আমায়....
পুজো বাড়ির উলুধ্বনি,, শঙ্খধ্বনি আর ঢাকের শব্দে চারিদিক যখন উৎসবমুখর তখন আমি প্রিয়ন্তির বসার ঘরে আড়ষ্ট হয়ে বসে ছিলাম এককোণায়।প্রিয়ন্তি পুরানো বন্ধুকে আপ্যায়ন করবে বলে শশব্যস্ত হয়ে ঢু মারলো কিচেনে,,,, কিন্তু সেই যে গেল ফিরছেই না মেয়েটা,,দেরী দেখে ভেতরের রুমে পা বাড়ালাম, পর্দা তুলতে যাবো তখনই কানে এলো প্রিয়ন্তির কান্নার আওয়াজ,,,,গোঙানির শব্দে বিড়বিড় করে বলছে,,প্লিজ অমন করো না,সুদীপা সব শুনে ফেলবে,,ওর কাছে আমাকে ছোট করো না।
ওর আকুতি,, হঠাৎই রুপান্তরিত হল আর্তচিৎকারে।
চড়ের শব্দ শুনতে পেলাম,শুনলাম কর্কশ কন্ঠের অশ্রাব্য কিছু গালিগালাজ।চাঁপার আচ্ছন্নতা পেছনে ফেলে বেড়িয়ে এলাম পুজামন্ডপে। ভারী পর্দা আর মখমলের পাপোশ আমাকে পিছু টানলো না।বাসায় ফিরে এলাম।আমার ফিরতে দেরী হচ্ছে দেখে তুমিই রান্না চাপিয়েছো চুলায়,,পাঁচফোড়নের সুঘ্রাণে সারা ঘর মো মো করছে, চুপচাপ তোমার পাশে এসে দাঁড়ালাম...
অভাব বড় সুখ দেয় আমায়...
কাজের মেয়েটা বাজারের থলেটার ভারে মাথা তুলতেই পারছে না,,তন্দ্রা তখনো কেনাকাটায় ব্যস্ত।হঠাৎ করেই মেয়েটার হাত থেকে ফসকে গেল বাজারের থলে,,ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে গেল চৌদ্দশো টাকা দামের ইলিশ মাছ আর চকচকে আবরণের চিংড়ি,,
তন্দ্রাকে নতুনরুপে আবিষ্কার করলাম।কলেজের
সেই সাদাসিধে বন্ধুটাকে দেখলাম অগ্নিমূর্তির রুপে।
যে তন্দ্রার ছোট একটা তেলাপোকার জন্য ও মন কাঁদত সে তন্দ্রাই বাচ্চা মেয়েটার গালে বসিয়ে দিল কষে চড়।
মেয়েটা পড়েই যাচ্ছিল, আমি তুলে নিলাম বুকে।দু'হাতে বাজারগুলো ভরে দিলাম থলেতে।তন্দ্রার দিকে তাকিয়ে বললাম, মানুষ হতে চেষ্টা কর তন্দ্রা।অত নিচে নামিস না বন্ধু....বলেই পা বাড়ালাম।
ওর সংকোচিত মুখটা দেখতে ইচ্ছে করলো না।ফিরে এলাম ঘরে,পাঙাশ মাছটা দেখেই আমার মেয়ের লাফালাফি শুরু হয়ে গেছে,,,ওর হাসি মুখটা থেকে খুঁজে নিলাম পরম তৃপ্তি....
আপাতত মাছটা রান্না করে মেয়েকে খাওয়ানোই একমাত্র কাজ.....আপাতত সুখ মাখামাখিই আমার একমাত্র কাজ....
অভাব বড় সুখ দেয় আমাকে...
(সমাপ্ত)