আমেরিকান একটি খুব জনপ্রিয় টিভি গেম শো ছিল। আমি খুব মন দিয়ে অনুষ্ঠানটা দেখতাম। অনুষ্ঠানটার নাম ছিল "The Moment of Truth". অনুষ্ঠানটির প্রতি পর্বে একজন করে নামী-দামী সেলিব্রিটিকে (প্রধানত অভিনেতা/অভিনেত্রীদেরকে) আনা হতো। অনুষ্ঠানটি শুরুর আগে একজন সেলিব্রিটির শরীরে লাই ডিটেক্টর মেশিন লাগিয়ে (পলিগ্রাফ টেস্টের মাধ্যমে) তাকে ৫০টি অত্যন্ত ব্যক্তিগত, গোপনীয় এবং স্পর্শকাতর প্রশ্ন করা হতো এবং সেই ৫০টি প্রশ্ন ও সেলিব্রিটিদের দেয়া সত্যি উত্তরগুলো ভিডিও রেকর্ড করে রাখা হতো। পরে মূল অনুষ্ঠানে ঐ সেলিব্রিটিকে ঐ ৫০টি প্রশ্নের মধ্যে থেকে ২১টি প্রশ্ন আবার করা হতো ঐ সেলিব্রিটির স্বামী/স্ত্রী, বন্ধু ও আত্মীয়দের সামনে। সত্যি উত্তর দিলে পুরষ্কার হিসেবে সেলিব্রিটিকে টাকা দেয়া হতো। মিথ্যা বললে দেয়া হতোনা বা খেলা থেকে বাদ দেয়া হতো।
অত্যন্ত গোপনীয় বা স্পর্শকাতর এসব প্রশ্নের উত্তর শুনে সেলিব্রিটিদের নিকটজনেরা কান্নায় ভেঙ্গে পড়তো, যেটা গোটা দেশের মানুষ দেখতো। যেমন - স্ত্রীর সামনে যখন স্বামীকে প্রশ্ন করা হতো, "আপনি কখনও আপনার সঙ্গীর সাথে প্রতারনা করেছেন কি? করলে কীভাবে?", তখন স্ত্রী স্বামীর 'হ্যাঁ' জবাব শুনে কেঁদে ফেলতো। আবার কখনও সন্তানদের সামনে বাবা বা মাকে প্রশ্ন করা হতো, "আপনি কখনও কারো সাথে অবৈধ যৌন সম্পর্কে লিপ্ত ছিলেন কি? থাকলে কতজনের সঙ্গে?", এই প্রশ্নের ইতিবাচক জবাব শুনে সন্তানেরা লজ্জায়, অপমানে কাঁদতো।
যে স্ত্রী তার স্বামীকে বা যে সন্তানেরা তাদের বাবা-মাকে 'ফেরেশতা' বা 'পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ মানুষ' বলে সারাজীবন জেনে ভালবেসে এসেছে বা শ্রদ্ধা করে এসেছে, যখন তাদের সেই ধারণা ভেঙ্গে যায়, তখন তারা কষ্ট পায়, প্রতারিত বোধ করে এবং পরিচিতরাসহ গোটা দেশের মানুষের সামনে অপমানিত বোধ করে। ফলে তারা কান্নায় ভেঙ্গে পড়ে।
কোন মানুষই সম্পূর্ণ ত্রুটিহীন নয়। প্রতিটা মানুষেরই দোষ ও গুণ উভয়ই আছে। স্ত্রী/স্বামীকে নির্যাতন করা, অবৈধভাবে সম্পদ আহরণ করা, খাদ্যে ভেজাল দেয়া, অবৈধভাবে ব্যবসা করা, পরকীয়া করা, অন্যকে জুলুম করা, নানাভাবে লোক ঠকানো, চুরি-ডাকাতি করা ইত্যাদি নানা পাপ কাজ কারো না কারো বাবামাই করেন। কিন্তু সন্তানেরা বাবামার এসব দোষগুলো জানার পরেও সেগুলো কারো কাছে প্রকাশ করেনা। বরং গোপন করে বা কেউ দোষগুলো বললে তাকে তারা মিথ্যা প্রতিপন্ন করার চেষ্টা করে। এজন্যই প্রতিটা ঘুষখোর/অবৈধভাবে অর্থ উপার্জনকারী, অপরাধী বাবা বা মা তার নিজের সন্তানের কাছে পৃথিবীর সবচেয়ে সৎ মানুষ !!! এ প্রসঙ্গে একটা কৌতুক শুনুন।
দুই বন্ধু স্কুলে পড়ে। একজনের বাবা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক। আরেকজনের বাবা এক সরকারী অফিসের ঘুষখোর পিওন। পিওনের ছেলে শিক্ষকের ছেলেকে বলল, "আমার বাবা অনেক বড় চাকরী করে। তোর বাবার চাকরীটা ছোট।" শিক্ষকের ছেলে প্রশ্ন করলো, "কীভাবে?" পিওনের ছেলে জবাব দিল, "তোর বাবা মাস শেষে মোটে একদিন বেতন পায়। আর আমার বাবা রোজই অনেক অনেক টাকা বেতন পায়। তাছাড়া আমার বাবা ভীষণ সৎ আর কর্মঠ। নাহলে তাকে কেউ এত টাকা বেতন দিত?"
অবৈধভাবে সম্পদ অর্জনকারীর স্ত্রী-সন্তানেরা কখনোই তাদের স্বামী বা বাবার এই অবৈধভাবে সম্পদ অর্জন করাকে খারাপ মনে করেনা বা একাজ করতে নিষেধও করেনা। কারণ ঐ অবৈধ সম্পদের মালিক তারা নিজেরাও হয়। ঐ সম্পদ দিয়েই তারা দিব্যি হরেক রকমের বিলাসিতা করে। বংশ পরম্পরায় আরাম করে জীবন কাটায়। প্রাচুর্য কে না চায়?
তাই পরবর্তীতে অন্যায়কারীদের সন্তানরাও নির্দিধায় অন্যায় করে। আর বাকী লোকেরা যখন দেখে, তাদের আশপাশের সব মানুষ অন্যায় করে ধনী হচ্ছে এবং সেসব অন্যায়ের জন্য তারা কোন শাস্তি পাচ্ছে না, তখন তারাও সুযোগমত নানা অন্যায় করে। তাই এদেশে অন্যায় ঠেকানো খুব কঠিণ কাজ। রাষ্ট্র যদি কঠোরভাবে অপরাধীদের শাস্তি নিশ্চিত করতে না পারে, তাহলে এদেশের মানচিত্র একদিন কিছু লুটেরারা লুটেপুটে খেয়ে শেষ করে ফেলবে।
সবচেয়ে বড় মুশকিল হলো, ভূত তাড়ানোর ওঝা (সরকার বা রাষ্ট্র) এবং ভূত তাড়ানোর সরিষা (অন্যায় ঠেকানোর জন্য নিয়োজিত সরকারের নানা বাহিনী, অফিস বা লোকবল) - এই দুটোতেই ভেজাল থাকলে এদেশকে বাঁচানো একেবারেই অসম্ভব !!!
অত্যন্ত গোপনীয় বা স্পর্শকাতর এসব প্রশ্নের উত্তর শুনে সেলিব্রিটিদের নিকটজনেরা কান্নায় ভেঙ্গে পড়তো, যেটা গোটা দেশের মানুষ দেখতো। যেমন - স্ত্রীর সামনে যখন স্বামীকে প্রশ্ন করা হতো, "আপনি কখনও আপনার সঙ্গীর সাথে প্রতারনা করেছেন কি? করলে কীভাবে?", তখন স্ত্রী স্বামীর 'হ্যাঁ' জবাব শুনে কেঁদে ফেলতো। আবার কখনও সন্তানদের সামনে বাবা বা মাকে প্রশ্ন করা হতো, "আপনি কখনও কারো সাথে অবৈধ যৌন সম্পর্কে লিপ্ত ছিলেন কি? থাকলে কতজনের সঙ্গে?", এই প্রশ্নের ইতিবাচক জবাব শুনে সন্তানেরা লজ্জায়, অপমানে কাঁদতো।
যে স্ত্রী তার স্বামীকে বা যে সন্তানেরা তাদের বাবা-মাকে 'ফেরেশতা' বা 'পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ মানুষ' বলে সারাজীবন জেনে ভালবেসে এসেছে বা শ্রদ্ধা করে এসেছে, যখন তাদের সেই ধারণা ভেঙ্গে যায়, তখন তারা কষ্ট পায়, প্রতারিত বোধ করে এবং পরিচিতরাসহ গোটা দেশের মানুষের সামনে অপমানিত বোধ করে। ফলে তারা কান্নায় ভেঙ্গে পড়ে।
কোন মানুষই সম্পূর্ণ ত্রুটিহীন নয়। প্রতিটা মানুষেরই দোষ ও গুণ উভয়ই আছে। স্ত্রী/স্বামীকে নির্যাতন করা, অবৈধভাবে সম্পদ আহরণ করা, খাদ্যে ভেজাল দেয়া, অবৈধভাবে ব্যবসা করা, পরকীয়া করা, অন্যকে জুলুম করা, নানাভাবে লোক ঠকানো, চুরি-ডাকাতি করা ইত্যাদি নানা পাপ কাজ কারো না কারো বাবামাই করেন। কিন্তু সন্তানেরা বাবামার এসব দোষগুলো জানার পরেও সেগুলো কারো কাছে প্রকাশ করেনা। বরং গোপন করে বা কেউ দোষগুলো বললে তাকে তারা মিথ্যা প্রতিপন্ন করার চেষ্টা করে। এজন্যই প্রতিটা ঘুষখোর/অবৈধভাবে অর্থ উপার্জনকারী, অপরাধী বাবা বা মা তার নিজের সন্তানের কাছে পৃথিবীর সবচেয়ে সৎ মানুষ !!! এ প্রসঙ্গে একটা কৌতুক শুনুন।
দুই বন্ধু স্কুলে পড়ে। একজনের বাবা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক। আরেকজনের বাবা এক সরকারী অফিসের ঘুষখোর পিওন। পিওনের ছেলে শিক্ষকের ছেলেকে বলল, "আমার বাবা অনেক বড় চাকরী করে। তোর বাবার চাকরীটা ছোট।" শিক্ষকের ছেলে প্রশ্ন করলো, "কীভাবে?" পিওনের ছেলে জবাব দিল, "তোর বাবা মাস শেষে মোটে একদিন বেতন পায়। আর আমার বাবা রোজই অনেক অনেক টাকা বেতন পায়। তাছাড়া আমার বাবা ভীষণ সৎ আর কর্মঠ। নাহলে তাকে কেউ এত টাকা বেতন দিত?"
অবৈধভাবে সম্পদ অর্জনকারীর স্ত্রী-সন্তানেরা কখনোই তাদের স্বামী বা বাবার এই অবৈধভাবে সম্পদ অর্জন করাকে খারাপ মনে করেনা বা একাজ করতে নিষেধও করেনা। কারণ ঐ অবৈধ সম্পদের মালিক তারা নিজেরাও হয়। ঐ সম্পদ দিয়েই তারা দিব্যি হরেক রকমের বিলাসিতা করে। বংশ পরম্পরায় আরাম করে জীবন কাটায়। প্রাচুর্য কে না চায়?
তাই পরবর্তীতে অন্যায়কারীদের সন্তানরাও নির্দিধায় অন্যায় করে। আর বাকী লোকেরা যখন দেখে, তাদের আশপাশের সব মানুষ অন্যায় করে ধনী হচ্ছে এবং সেসব অন্যায়ের জন্য তারা কোন শাস্তি পাচ্ছে না, তখন তারাও সুযোগমত নানা অন্যায় করে। তাই এদেশে অন্যায় ঠেকানো খুব কঠিণ কাজ। রাষ্ট্র যদি কঠোরভাবে অপরাধীদের শাস্তি নিশ্চিত করতে না পারে, তাহলে এদেশের মানচিত্র একদিন কিছু লুটেরারা লুটেপুটে খেয়ে শেষ করে ফেলবে।
সবচেয়ে বড় মুশকিল হলো, ভূত তাড়ানোর ওঝা (সরকার বা রাষ্ট্র) এবং ভূত তাড়ানোর সরিষা (অন্যায় ঠেকানোর জন্য নিয়োজিত সরকারের নানা বাহিনী, অফিস বা লোকবল) - এই দুটোতেই ভেজাল থাকলে এদেশকে বাঁচানো একেবারেই অসম্ভব !!!