What's new
Nirjonmela Desi Forum

Talk about the things that matter to you! Wanting to join the rest of our members? Feel free to sign up today and gain full access!

পিতৃত্ব (1 Viewer)

ছোটভাই

Super Moderator
Staff member
Super Mod
Joined
Mar 4, 2018
Threads
776
Messages
51,128
Credits
371,052
Sari
Thermometer
Tomato
Luggage
Luggage
Tomato
পিতৃত্ব
- Story of True LOVER who accepted the child of Ex LOVER like his OWN even if his own Conjugal Life was spoiled by parental DEBT
- বাবা তুমি ওষুধ খাও নি কেন?
- ভুলে গিয়েছিলাম রে মা।
- কি করে ভুলে যাও ওষুধ খেতে? শরীর কি আবার খারাপ করার ইচ্ছে আছে? অফিসে গিয়েও শান্তি নেই। ওষুধটা তো সময় মত খাবে।
- রাগ করিস না মা কাল থেকে সময় মত খেয়ে নেব।
- কালও সেটাই বলেছিলে। আর এই আয়া মাসী। উনি যে কি করে কে জানে। সময় মত ওষুধ গুলো দিতে পারেন না?
- মনা এত রাগ করিস না। ওনারও তো বয়স হয়েছে। ওনার ছেলে মেয়ে তো তোর মত এত কেয়ারিং না বাবু। সত্যিই কাল থেকে মন দিয়ে ওষুধ খাব।
- মনে থাকে যেন।
- ওষুধ খেয়েই বা কি হবে রে মা। যার যখন সময় হবে তাকে তো যেতেই হবে।
অম্লানবাবুর কথা শেষ হতেই ঈশিতা জড়িয়ে ধরল তাকে। ছলছল চোখে একরাশ অভিমানের সুরে বলল,
- তুমি আর কখনো এসব কথা বলবে না বাবা৷ আমার আর কে আছে তুমি ছাড়া? মা চলে যাওয়ার পর এখন তুমিই তো সব আমার। তুমি এমন ভাবে বললে আমার কত কষ্ট হয় তুমি জানো না?
অম্লানবাবু তার মাথায় সস্নেহে হাত বুলিয়ে দিয়ে বললেন,
- পাগলি মেয়ে আমার। মা বাবা কি কারো সারাজীবন থাকে? একদিন চলেই যায়। যেতেই হয়। নিয়তি যে বড় নিষ্ঠুর। তবে তুই চিন্তা করিস না। তোর আর অনলের বিয়ে দিয়ে নাতি নাতনির মুখ দেখে তবেই আমি যাব। এবার চল ডিনারটা করে নি। অনেক রাত হল তো?
- হুম বাবা চলো।
ঈশিতা এবং অম্লানবাবু ডিনার সেরে রাতে শুয়ে পরলেন যে যার ঘরে। প্রায় দিনই অনলের নাইট ডিউটি থাকায় সে রাতেই ফোন করে ঈশিতাকে। আজও তার অন্যথা হয় নি। অনল প্রতিদিনের মত আজও ফোন করে সবার আগে অম্লানবাবুর খোঁজ নিল। ঈশিতাও সানন্দে বলল নিজের বাবার খবর। ঈশিতা আবদারের সুরে অনলকে বলল,
- এই কাল বাবার জন্মদিন বাবাকে কোথাও বাইরে নিয়ে যাই চলো না তুমি আমি মিলে।
অনলের এধরনের ব্যপারগুলো বড্ড আদিখ্যেতা মনে হয়। কিন্তু ঈশিতাকে খুশি করার জন্যেই সে বলল
- হ্যা চলো বেশ ভালোই হয়।
ঈশিতা খুশি হল তাতে। সিদ্ধান্ত নেওয়া হল কাল বিকেলে অম্লানবাবুকে ঘুরতে নিয়ে যাওয়া হবে বাইরে। অনল বিদায় জানিয়ে ফোন কাটল। পরের দিন বিকেলে অনল এবং ঈশিতার সাথে ঘুরতে বেরোলেন অম্লান বাবু। বেশ উপভোগ করলেন। ডিনারটাও বাইরে সেরে এলেন তারা। অম্লানবাবু মেয়ে এবং হবু জামাইকে রেখে বিশ্রাম করতে চলে গেলেন ওপরের ঘরে। অনলের সায়হে সোফায় বসে ঈশিতা কথা বলতে বলতে হঠাৎ বলল,
- অনল এক কাজ করলে কেমন হয়? বাবাকে যদি আমরা স্মৃতিসমন্বিত একটি ফোটোফ্রেম দি?
অনল মোবাইল ঘাটতে ঘাটতে বলল,
- তাহলে বেশ ভালোই তো হয়।
ঈশিতা আবদারের সুরে বলল,
- আচ্ছা এক কাজ করো তুমি গিয়ে আমার ঘর থেকে অ্যালবাম গুলো নিয়ে আসো।
ঈশিতার কথা মত অনল ঈশিতার ঘরে ঢুকে আলমারি থেকে অ্যালবাম গুলো এক এক করে নামাতে গিয়ে হঠাৎ একটি ডায়েরি এসে পরল তার পায়ের ওপর। অ্যালবামগুলো সাইডে রেখে ডায়েরি টা তুলে নিল সে। অন্যদিকে অনলের আসতে দেরী দেখে ঈশিতা ফ্রেশ হতে চলে গেল বাথরুম। অনলের পড়তে খুব ভালো লাগে তাই সযতনে আলমারিতে তুলে রাখা ডায়েরি খানা পড়তে লাগল মন দিয়ে৷ ডায়েরিটি ঈশিতার মা সুমিতা দেবীর। হাতের লেখা দেখে অবাক হয়ে গেল অনল। ভীষণ সুন্দর সে হাতের লেখা৷ পড়তে। ফলে পড়তে অসুবিধে হয় না অনলের।
ডায়েরির প্রথমে কিছু পাতা জুড়ে লেখা অম্লান বাবুর সাথে তার পরিচয়ের কথা। সুমিতাদেবী লিখেছেন,
"আমার তখন কলেজের প্রথম দিন। কলেজে ঢোকার আগে এক চায়ের দোকানে দাঁড়িয়ে চা খেয়ে দূর করিছিলাম নার্ভাসনেস। হঠাৎ পিছন থেকে একজন বলে উঠল,
"দাদা একটা চা দেবেন তো"
গলার স্বরের এমন দৃঢ়তা এর আগে কখনো শুনি নি। পেছন ফিরে তাকাতেই দেখলাম এক রাজপুত্রের মত দেখতে পুরুষ দাঁড়িয়ে আমার পেছনে। সুঠাম বলিষ্ঠ চেহেরা তার। বলা বাহুল্য লাভ অ্যাট ফার্স্ট সাইট বোধ হয় একেই বলে। তাকে দেখার জন্যে প্রায়ই দাড়াতাম চায়ের দোকানে। কিন্তু কি আশ্চর্য সেদিনের পর আর দেখাই হল না তার সাথে। একদিন কলেজের অনুষ্ঠানে গান গাওয়ার পর সে নিজেই এল কথা বলতে। সে জানাল আমি নাকি ভীষণ সুন্দর গান করেছি৷ আনন্দে পা মাটিতে পরছিল না আমার। আলাপচারিতে জমে উঠল কিছুদিনের মধ্যে। আর তার থেকেই ক্রমান্বয়ে জন্ম নিল বন্ধুত্ব এবং তারপর প্রেম। এগিয়ে চলল সময়, আর প্রেমের জোয়ারে ভেসে চললাম আমরা। কলেজের ক্যান্টিনে বসে টিফিন খেতে খেতে আমরা হারিয়ে যেতাম ভবিষ্যতের সোনালী স্বপ্নে। ভিক্টোরিয়ার সৌন্দর্য দেখতে দেখতে ভাবতাম সুন্দর করে সাজাব আমাদের ভবিষ্যতের সংসার। তখন প্রেমগুলো শারীরিক ছিল না একেবারেই৷ তাই পার্কের ঝোপেঝাড়ে নোংরামো করার প্রয়োজন ছিল না আমাদের। আমরা কেবল হাতে হাত রেখে মনের সাথে মনের সম্পর্ক গড়ে তুলতাম। এক নির্দিষ্ট সময়ের পর শেষ হল আমাদের কলেজ জীবন। অম্লান বেশ ভালো পোস্টেই সরকারী চাকরী পেল। ভেবেছিলাম এত ভালো পাত্র হাত ছাড়া করবে না কিছুতেই আমার পরিবার। কিন্তু না আমার বাবার কাছে সেদিন আমার খুশির থেকে তার জাত অনেক বড় হয়ে গিয়েছিল। অম্লানের পরিবারকে তাই বিয়ের প্রস্তাব নিয়ে আসায় অপমানিত হয়ে বাড়ি ফিরতে হয়েছিল। অম্লানের মা রাণু কাকিমা কেঁদেছিল সেদিন। তিনি যে আমার এবং ওনার ছেলের সম্পর্ক ভেঙ্গে যাক চান নি কখনো। এই ঘটনার কিছু দিন পর বাবা তার পছন্দের পাত্র ত্রিদিবের সাথে বিয়ে দেন আমার। না ত্রিদিবও খারাপ লোক ছিলেন না৷ সব বলেছিলাম ওনাকে আমি। উনিও আমায় সাহায্যের চেষ্টা করে হার মানেন। কারণ আমার বাবা সে কথা জানতে পেরে আমায় বলেছিলেন,
- ওই বেজাতের ছেলে তুই বিয়ে করতে পারিস সুমি, কিন্তু তার আগে আমার শবদেহ বাড়ি থেকে বেরোনো দরকার।
বাবার এহেন কথা শুনে আর সাহস হয় নি অম্লানের হাত ধরে বেরিয়ে আসার। বাধ্য হয়েই ত্রিদিবকে বিয়ে করতে হয় আমার। ত্রিদিব আমায় খুশি রাখার জন্যে সব রকম চেষ্টা চালিয়ে যেত। ত্রিদিব যে আমায় বড্ড ভালোবাসত। ত্রিদিবের ভালোবাসা পেয়ে কোথাও একটা অম্লানকে ভুলতে বসেছিলাম আমি। মনে হয়েছিল আমার বাবার ভুলের শাস্তি ত্রিদিব কেন পাবে। ধীরে ধীরে সম্পর্কে ঘনিষ্ট হতে থাকলাম ওর সাথে। আমাদের জীবনে আমাদের ভালোবাসার প্রতীক হয়ে এল ঈশিতা। ত্রিদিবের নয়ন মনি ও। ত্রিদিব ওকে ছাড়া কিছুই দেখতে পায় না। বড্ড ভালোবাসে নিজের মেয়েকে। ও আমায় কথা দিয়েছে আমার বাবার মত কোনোদিন ও এমন কিছু করবে না যাতে আমাদের ছোট্ট ঈশু কষ্ট পায়৷ ত্রিদিব আমায় সমস্ত রকম ভাবে সম্মান দিয়েছে। তবুও কখনো কখনো নিঃসঙ্গ রাতে অম্লানের মুখটা মনে পরলে খুব জানতে ইচ্ছে করে সে কেমন আছে। তারও কি আমার মত নতুন সঙ্গীনি এসেছে জীবনে? নাকি সে আমার স্মৃতি আঁকড়ে আছে আজও আমার ফেরার অপেক্ষায়। আমি চাই খুব করে ও যেন ভালো থাকে৷"
ডায়েরিটা পড়তে পড়তে অনলের কৌতূহল আরো কয়েকগুণ বেড়ে গেল। সে পরের পাতাগুলো পড়ার জন্যে অ্যালবাম গুলো ড্রয়িং রুমের টেবিলে সাজিয়ে রেখে অম্লানবাবু প্রণাম করে ঈশিতাকে বিদায় জানিয়ে ডায়েরিটা ব্যাগে ভরে নিয়েই বাড়ি চলে আসে সে। আজ সারারাত সে ডায়েরিটা পড়ে শেষ করবে। বাড়িতে পৌছে ফ্রেশ হয়ে সে নিজের ঘরে ঢুকে আবার একমনে ডায়েরিটা পড়তে শুরু করে সে। সুমিতা দেবী লিখেছেন,
"আমাদের জীবন বেশ চলছিল। ত্রিদিব ঈশিতাকে নিয়ে নানা রকম ভবিষ্যতের প্ল্যানিং করতে লাগল৷ মাঝে মাঝে ভাবতাম আমার মত সুখী আর কজন হয়৷ কিন্তু আমি ভুলে গিয়েছিলাম যে আমার কপালে সুখ সয় না। আর তাই ঈশিতার জন্মদিনের কয়েকদিন আগে ত্রিদিব বিদায় নেয় আমাদের একা ফেলে। পথ দুর্ঘটনায় প্রাণ হারায় সে। শ্বশুর বাড়ি থেকে বিতাড়িত হই আমি। শাশুড়ি মা দাবী করেন আমি মাঙ্গলিক তাই আমার কারণেই মৃত্যু হয়েছে আমার স্বামীর। আমি কাঁদি। বিধবা হওয়ার যন্ত্রণা কেউ বোঝে নি সেদিন। বাবার বাড়িতে তাই সেদিন আশ্রয় নিতে হয়েছিল আমার। কিন্তু সেদিনও বাবার কাছে আমার থেকে বেশি তার ধর্মীয় গোড়ামিই প্রাধান্য পেয়েছিল। বাবা বলেছিলেন,
- বিধবা হও আর যাই হোক তুমি এখন ওই বাড়ির সম্পদ। আর তাছাড়া তুমি আমাদের ঘাড়ে থাকলে তোমার বোনের বিয়ে দিতেও সমস্যা হবে। তোমার নামে কেচ্ছা তো কিছু কম হয় নি। বিয়ের আগেই তো মুচি বাড়ির ছেলের সাথে প্রেম মান সম্মান ডুবিয়েছ আমার।
যে কদিন বাবার কাছে ছিলাম বাবা উদয়াস্ত কথা শোনাত আমায়। দুমুঠো ভাতের জন্যে নিজের জন্মদাতার কাছ থেকে এত তিরস্কার আর যেন সহ্য হচ্ছিল না আমার। একরাতে তাই বেরিয়ে পরলাম ঈশুকে নিয়ে। কোথায় যাব কি করব কিছুই জানি না। বসেছিলাম একা বাসের ওয়েটিং রুমে। সেখানেই দেখা হয় অম্লানের সাথে। অম্লানের গাড়ি খারাপ হয়ে গিয়েছিল সেদিন। নিজেকে আর সামলাতে পারিনি। অম্লানের সামনে পাগলের মত কাঁদছিলাম। অম্লান আমায় বাড়িতে নিয়ে আসে। আমায় আশ্রয় দেয়, আমায় পরিস্থিতি সামলাতে সাহায্য করে৷ অম্লান আমার কথা শুনে বেশ বুঝেছিল, ও আমার প্রাক্তন প্রেম হলেও ত্রিদিব এখন আছে সবটা জুড়ে। ত্রিদিবের জায়গা তাই আর কাউকে দেওয়া সম্ভব নয়। অম্লান তাই কোনোদিন চায় নি সে জায়গা, অম্লান তার কারণে কোনোদিন রাগও করে নি ত্রিদিবের প্রতি। কিন্তু সমাজ যে বড় নিষ্ঠুর। অম্লানের বাড়িতে কোন সম্পর্কে থাকি তা নিয়ে শুরু হল জল ঘোলা৷ বিভিন্ন অপবাদ ছড়াতে শুরু হল আমাদের নামে। আমার আর আমার নেয়ের সম্মান বাঁচাতে অম্লান সেদিন বিয়ে করেছিল আমায়। কিন্তু কোনোদিন আমায় স্পর্শটুকু করে নি জোর করে। কখনো স্বামীত্ব ফলাতে আসে নি। ও শুধু হয়ে উঠেছিল ঈশুর বাবা। ঈশুকে আঁকড়ে ধরেছিল শক্ত করে। ঈশুকে সে দিল বাবার নাম। বিয়ের পরেও অনেকগুলো বছর আলাদা ছিলাম আমরা। কিন্তু ওর মত দেবতুল্য মানুষকে যে বেশি দিন দূরে রাখা যায় না। তাই আবার নতুন করে প্রেমে পড়লাম ওর৷ ওকে অনেকবার জিজ্ঞেস করেছিলাম ও নিজের সন্তান চায় না কেন? অম্লান হেসে বলেছিল,
- কেন ঈশু আমার নিজের সন্তান না? আর সন্তানের কি প্রয়োজন আমাদের?,
অম্লান কোনোদিনও চায় নি ঈশু প্রতি তাদের স্নেহ বিন্দুমাত্র কমুক। আমি ভয় পেতাম মাঝে মাঝে। ভাবতাম ঈশু যদি সত্যিটা জানতে পারে অম্লানকে মেনে নেবে তো? ভুল বুঝবে না তো?
কদিন আগেই জানতে পেরেছি আমার ক্যান্সার। আমার কিছু হয়ে গেলে ওকে কে দেখবে? ঈশু তো ওর নিজের মেয়ে নয়। তাহলে কি হবে ওর? আর দেখাশুনো করলেও বা মেয়ে সন্তান তো। বিয়ে হয়ে অন্য বাড়ি যেতেই হবে তাকে। তখন কি হবে অম্লানের? ও যে একা পরে যাবে। নিজের যত্ন নিজে রাখতে পারে না একেবারে।"
অনলের চোখ জলে ভরে এল। ডায়েরিটা বন্ধ করে রেখে সে শুয়ে পরল পাশে। পরের দিন সকালে ব্রেকফাস্ট করতে করতে অনল তার মাকে বলল,
- মা কাকুকে আমাদের সাথে রাখলে কেমন হয়?
ছেলের মুখে এহেন প্রস্তাব শুনে অবাক হলেন অনীতাদেবী। হেসে বললেন,
- অম্লান বাবুর কথা বলছিস?
অনল ঘাড় নাড়িয়ে সম্মতি জানাল। অনীতাদেবী তার পাশে বসে বললেন,
- সমাজ মানবে কি? উনি কি রাজি হবেন মেয়ের বাড়ি থাকতে? আমি তো এটা আগেই ভেবেছিলাম।
অনল হেসে বলল,
- সমাজ না মানলে কি যায় আসে মা। আর মানুষটা বড্ড একা।
অনীতাদেবী ছেলের মাথায় হাত বুলিয়ে বললেন,
- আচ্ছা তুই কথা বল আমার আপত্তি নেই।
হঠাৎ বেজে উঠল অনলের ফোন। অনল ফোন রিসিভ করা মাত্রই ঈশিতা রাগান্বিত হয়ে বলল,
- অনল তুমি না বলে আমার মায়ের ডায়েরি নিয়ে গিয়েছ কেন? তুমি কি জানো না ওটা আমার কাছে কতটা গুরুত্বপূর্ণ। আমি জানি অনল তোমার বাবাকে পছন্দ নয় তা বলে এভাবে?
অনল শান্ত স্বরে বলল,
- ধর্মগ্রন্থ না পরলে ঈশ্বরের উপস্থিতি কিভাবে উপলব্ধি জানতাম। আমি আধ ঘন্টার মধ্যে বাড়ি এসে দিয়ে যাচ্ছি তোমায়।
ব্রেকফাস্ট শেষ করে বাইকে উঠে অনল পৌছালো ঈশিতার বাড়ি। ঈশিতা তখন বাড়ির সোফায় বসে রাগে ফুঁসছে আবার চোখ জলে ভরা তার৷ ঈশিতা প্রায় একরকম নিশ্চিত অনল আর হয়ত রাজী হবে না তাকে বিয়ে করতে। কারণ অনল মহিলাদের দ্বিতীয় বিবাহ পছন্দ করে না। আর তাই সে এতকাল কিছুই জানায় নি তাকে। ঈশিতার হাতে ডায়েরিটা তুলে দিয়ে অম্লান বাবুর দিকে এগিয়ে গেল সে। অম্লান বাবুর পায়ের কাছে বসে অনল আবদারের সুরে বলল,
- একটা জিনিস চাইব বাবা। দেবে? না করবে না বাবা।
অনলের মুখে এই অম্লানবাবুর উদ্দেশ্যে বাবা ডাক শুনল সে। অনলের মাথায় হাত বুলিয়ে অম্লানবাবু বললেন,
- কি চাই বলো?
অনল তার দিকে তাকিয়ে বলল,
- আমার এবং মায়ের ইচ্ছে ঈশিতা এবং আমার বিয়ের পর তুমি আমাদের সঙ্গে থাকবে। তুমি না করবে না বাবা। না করলেও আমরা শুনব না।
প্রথমে রাজি না হলেও অনল নিজের অধিকার দেখিয়ে রাজি করায় তাকে। ঈশিতার চোখ জলে ভরে ওঠে আনন্দে।
আজ ঈশিতা এবং অনলের বিয়ে। কিন্তু ঈশিতাকে আর বিদায় জানাতে হল না তার বাবাকে। তার বাবাও তাই সম্প্রদান করলেন না তার মেয়েকে। নিজেদের বাড়ি তালাবন্ধ করে দুজনেই পৌছাল অনলদের বাড়িতে।
আজ প্রায় বছর। ঈশিতা এবং অনলের একটি মেয়েও হয়েছে। ছোটবেলা থেকে পিতৃহারা অনল অম্লান বাবুর মধ্যে খুঁজে পেয়েছে তার বাবাকে এবং কয়েক বছর আগে মা হারা মেয়ে ঈশিতাও আজ শাশুড়ির কাছে কন্যাসম।
 

Users who are viewing this thread

Back
Top