সদানন্দের এই ট্যুরটাই আসার ইচ্ছা ছিল না। অফিসের চাপ থাকলেও সহজে এড়িয়ে যেতে পারত। কিন্তু স্ত্রী মালতির ঘ্যানঘ্যানানি তার আর ভাল লাগছিল না। ১১ বছরের বিবাহিত জীবনে মালতি মা হতে পারে নি, আর তাই আজ ৪/৫ বছর তাকে আবারও বিয়ে করার জন্য চাপ দিচ্ছে মালতি। অসহ্য বোধ হয় সদানন্দের। ভগবান তার কপালে বাচ্চা দেয়নি, তাই বলে আবার বিয়ে করতে হবে। স্ত্রীকে সে বোঝাতে পারে না আরেকটি বিয়ে করলে সে বউও যদি বাঝা হয়। তার বাড়ীতে তার মা-বাবা, ভাই-বোন সবাই মেনে নিয়েছে মালতির বন্ধ্যাত্বকে। শুধুমাত্র মালতি নিজেই মানেনি।
গতকাল রাতে বাসে উঠার পর থেকেই বৃষ্টি হচ্ছে। মফস্বল এই শহরে সদানন্দ এর আগেও এসেছে। ছোট্ট একটা শহর। যদিও গ্রামের আচড় এখনো কাটাতে পারেনি। নামটাও সুন্দর-ধানবাদ। আশপাশের বেশ কিছু গ্রামের লোকজন তাদের প্রয়োজনীয় সদাই-পাতি এখান থেকে কিনতে আসে, আসে অফিসিয়াল কিছু কাজেও। সরকারী কিছু অফিস, পল্লী বিদ্যুৎ অফিস, ব্র্যাক এনজিওর অফিস, আরো কিছু অফিস এখানে আছে। তাই মাঝে মাঝে সদানন্দের মতো সরকারী অফিসারদের এই শহরে আসতে হয় ইনস্পেকশনে। থাকার জন্য কোন হোটেল না থাকলেও খাওয়ার রেষ্টুরেণ্ট আছে। সদানন্দের কাজও বেশি না। সারাদিনেই শেষ হয়ে যাবে। তাই সিদ্ধান্ত নিয়ে রেখেছে সন্ধ্যার গাড়ীতেই আবার ঢাকা ফিরবে।
তন্দ্রার ঘোরে সুপারভাইজারের ডাকে ধড়পড় করে উঠে সদানন্দ। গাড়ী দাড়িয়ে রয়েছে, বাইরে প্রচণ্ড বৃষ্টি হচ্ছে। তিন রাস্তার মোড়ে গাড়ীটা দাড়িয়ে আছে। রেডিয়ামের আলোয় হাতের ঘড়িটার দিকে তাকায় সদানন্দ। ৪ টা বাজে। নেমে যায় সদানন্দ। বৃষ্টির প্রচণ্ড আঁচড়ে ভিজে যায় মুহুর্তেই। দ্রুত রাস্তার পাশে দোকানের ছাউনির দিকে দৌড় দেয়। বাসটা চলে যায়। কিন্তু দোকানের ছাউনিতে পৌছাতে পৌছাতে সদানন্দের গোসল হয়ে যায়। দোকানের ছাউনিতে বৃষ্টির হাত থেকে বাঁচতে পারে না সে। আশে-পাশে তাকায়, অন্য কোথাউ দাড়ানো যায় কিনা। লোডশেডিংয়ের আধারে খুজে পায় না। কিছুক্ষণ অপেক্ষা করে সদানন্দ। রাগ হয় মালতির পর। যদি ইতিমধ্যে স্বামীর জন্য মেয়ে দেখানোর উৎপাত শুরু না করত তাহলে সদানন্দ এই ট্যুরে আসতো না। গতকাল অফিস থেকে ফিরে দেখেছে সদানন্দ তার স্ত্রী কোত্থেকে এক ছ্যামড়ি জোগাড় করে নিয়ে এসেছে স্বামীকে দেখানোর জন্য। বিয়ে দিয়ে সতিন বানাবে। যত্তসব, বৃষ্টিতে ভেজার রাগটা স্ত্রীকে সামনে পেলে আরো ভাল করে দিতে পারতো সদানন্দ।
শীত শীত লাগে তার। যদিও ব্যাগের ভেতর বাড়তি কাপড় আছে। কিন্তু বৃষ্টিতে সেটাও ভিজে যাবে। তাই বাধ্য হয়ে ভিজে কাপড়েই দোকান ঘরের দেয়ালের সাথে আকড়ে থাকে সদানন্দ। বৃষ্টির প্রকোপ আরো বাড়ে, মাঝে মাঝে রাতের অন্ধকার আকাশ চিরে বজ্রপাতের আলো আলোকিত করে দিচ্ছে। সেই আলোয় আশে-পাশে নিরাপদ আশ্রয় খোজার চেষ্টা করে সে। পায় না। না এখানে আর দাড়ানো যাবে না। সরতে থাকে সে। আচমকা পিছনে দেয়াল পায় না, পড়ে যেতে যেতেও সামলে নেয়। দোকান ঘরের পাশেই একটা গলি মতো, এতক্ষণ পিছনে না তাকানোয় খেয়াল করেনি। দ্রুত গলির মধ্যে ঢুকে যায়। উপরে চাল আছে বুঝতে পারে, কেননা এখানে বৃষ্টি পড়ছে না। নিশ্চিত হয়, স্বস্তি বোধ করে। গায়ের জামা খুলে ফেলে। ঠাণ্ডা বাতাস এসে শরীরে শিরশিরে অনুভূতি এনে দেয়। অন্ধকারে ব্যাগ খুলে গামছা বের করে, মাথাটা মুছে নেয়। প্যাণ্ট খুলবে কিনা সিদ্ধান্ত নিতে পারে না। অবশেষে শীতের কাপনে গামছাটা পরে পরণের প্যাণ্ট আর জুতা খুলে ফেলে, জাঙ্গিয়াটাও খুলে ফেলে। সকাল হতে এখনো ঢের বাকী। কেউ দেখার আগেই আবার জামা-কাপড় পরে নিতে পারবে। জামা-কাপড়গুলো নিংড়িয়ে পানি ছরিয়ে ব্যাগের উপর রাখে। একটু বসার জায়গা পেলে ভাল হতো। পরের বিদ্যুৎ ঝলকানির অপেক্ষায় থাকে। পায়ের নিচে পাকা মেঝে, সম্ভবত দোকানদার এই জায়গাটুকু অন্য কোন কাজে লাগাবে বলে ব্যবহার করেছিল। ভেতরের দিকে সরে যায় সদানন্দ। ঘড়িতে দেখে কয়টা বাজে, মাত্র ১৫ মিনিট পার হয়েছে। কিন্তু আচমকা বুকের মধ্যে চমকে উঠে সদানন্দের। অন্ধকারে কি যেন দেখতে পায়। এগিয়ে যায় আরেকটু। হাত দিয়ে বোঝার চেষ্টা করে, কাপড়-চোপড়ের স্তুপ বলে মনে হয়। নিচু হয়ে বসার চেষ্টা করে সে, কিন্তু আচমকা কাপড়-চোপড়ের স্তুপ আবার নড়ে উঠে। অন্ধকার হলেও বুঝা যায় স্পষ্ট।
গতকাল রাতে বাসে উঠার পর থেকেই বৃষ্টি হচ্ছে। মফস্বল এই শহরে সদানন্দ এর আগেও এসেছে। ছোট্ট একটা শহর। যদিও গ্রামের আচড় এখনো কাটাতে পারেনি। নামটাও সুন্দর-ধানবাদ। আশপাশের বেশ কিছু গ্রামের লোকজন তাদের প্রয়োজনীয় সদাই-পাতি এখান থেকে কিনতে আসে, আসে অফিসিয়াল কিছু কাজেও। সরকারী কিছু অফিস, পল্লী বিদ্যুৎ অফিস, ব্র্যাক এনজিওর অফিস, আরো কিছু অফিস এখানে আছে। তাই মাঝে মাঝে সদানন্দের মতো সরকারী অফিসারদের এই শহরে আসতে হয় ইনস্পেকশনে। থাকার জন্য কোন হোটেল না থাকলেও খাওয়ার রেষ্টুরেণ্ট আছে। সদানন্দের কাজও বেশি না। সারাদিনেই শেষ হয়ে যাবে। তাই সিদ্ধান্ত নিয়ে রেখেছে সন্ধ্যার গাড়ীতেই আবার ঢাকা ফিরবে।
তন্দ্রার ঘোরে সুপারভাইজারের ডাকে ধড়পড় করে উঠে সদানন্দ। গাড়ী দাড়িয়ে রয়েছে, বাইরে প্রচণ্ড বৃষ্টি হচ্ছে। তিন রাস্তার মোড়ে গাড়ীটা দাড়িয়ে আছে। রেডিয়ামের আলোয় হাতের ঘড়িটার দিকে তাকায় সদানন্দ। ৪ টা বাজে। নেমে যায় সদানন্দ। বৃষ্টির প্রচণ্ড আঁচড়ে ভিজে যায় মুহুর্তেই। দ্রুত রাস্তার পাশে দোকানের ছাউনির দিকে দৌড় দেয়। বাসটা চলে যায়। কিন্তু দোকানের ছাউনিতে পৌছাতে পৌছাতে সদানন্দের গোসল হয়ে যায়। দোকানের ছাউনিতে বৃষ্টির হাত থেকে বাঁচতে পারে না সে। আশে-পাশে তাকায়, অন্য কোথাউ দাড়ানো যায় কিনা। লোডশেডিংয়ের আধারে খুজে পায় না। কিছুক্ষণ অপেক্ষা করে সদানন্দ। রাগ হয় মালতির পর। যদি ইতিমধ্যে স্বামীর জন্য মেয়ে দেখানোর উৎপাত শুরু না করত তাহলে সদানন্দ এই ট্যুরে আসতো না। গতকাল অফিস থেকে ফিরে দেখেছে সদানন্দ তার স্ত্রী কোত্থেকে এক ছ্যামড়ি জোগাড় করে নিয়ে এসেছে স্বামীকে দেখানোর জন্য। বিয়ে দিয়ে সতিন বানাবে। যত্তসব, বৃষ্টিতে ভেজার রাগটা স্ত্রীকে সামনে পেলে আরো ভাল করে দিতে পারতো সদানন্দ।
শীত শীত লাগে তার। যদিও ব্যাগের ভেতর বাড়তি কাপড় আছে। কিন্তু বৃষ্টিতে সেটাও ভিজে যাবে। তাই বাধ্য হয়ে ভিজে কাপড়েই দোকান ঘরের দেয়ালের সাথে আকড়ে থাকে সদানন্দ। বৃষ্টির প্রকোপ আরো বাড়ে, মাঝে মাঝে রাতের অন্ধকার আকাশ চিরে বজ্রপাতের আলো আলোকিত করে দিচ্ছে। সেই আলোয় আশে-পাশে নিরাপদ আশ্রয় খোজার চেষ্টা করে সে। পায় না। না এখানে আর দাড়ানো যাবে না। সরতে থাকে সে। আচমকা পিছনে দেয়াল পায় না, পড়ে যেতে যেতেও সামলে নেয়। দোকান ঘরের পাশেই একটা গলি মতো, এতক্ষণ পিছনে না তাকানোয় খেয়াল করেনি। দ্রুত গলির মধ্যে ঢুকে যায়। উপরে চাল আছে বুঝতে পারে, কেননা এখানে বৃষ্টি পড়ছে না। নিশ্চিত হয়, স্বস্তি বোধ করে। গায়ের জামা খুলে ফেলে। ঠাণ্ডা বাতাস এসে শরীরে শিরশিরে অনুভূতি এনে দেয়। অন্ধকারে ব্যাগ খুলে গামছা বের করে, মাথাটা মুছে নেয়। প্যাণ্ট খুলবে কিনা সিদ্ধান্ত নিতে পারে না। অবশেষে শীতের কাপনে গামছাটা পরে পরণের প্যাণ্ট আর জুতা খুলে ফেলে, জাঙ্গিয়াটাও খুলে ফেলে। সকাল হতে এখনো ঢের বাকী। কেউ দেখার আগেই আবার জামা-কাপড় পরে নিতে পারবে। জামা-কাপড়গুলো নিংড়িয়ে পানি ছরিয়ে ব্যাগের উপর রাখে। একটু বসার জায়গা পেলে ভাল হতো। পরের বিদ্যুৎ ঝলকানির অপেক্ষায় থাকে। পায়ের নিচে পাকা মেঝে, সম্ভবত দোকানদার এই জায়গাটুকু অন্য কোন কাজে লাগাবে বলে ব্যবহার করেছিল। ভেতরের দিকে সরে যায় সদানন্দ। ঘড়িতে দেখে কয়টা বাজে, মাত্র ১৫ মিনিট পার হয়েছে। কিন্তু আচমকা বুকের মধ্যে চমকে উঠে সদানন্দের। অন্ধকারে কি যেন দেখতে পায়। এগিয়ে যায় আরেকটু। হাত দিয়ে বোঝার চেষ্টা করে, কাপড়-চোপড়ের স্তুপ বলে মনে হয়। নিচু হয়ে বসার চেষ্টা করে সে, কিন্তু আচমকা কাপড়-চোপড়ের স্তুপ আবার নড়ে উঠে। অন্ধকার হলেও বুঝা যায় স্পষ্ট।