What's new
Nirjonmela Desi Forum

Talk about the things that matter to you! Wanting to join the rest of our members? Feel free to sign up today and gain full access!

Collected গল্প নম্বর 4 (1 Viewer)

Nil328

Member
Joined
Sep 13, 2018
Threads
101
Messages
101
Credits
3,429
রাতের বেলা বাড়ি থেকে বের হওয়া বেশ ঝামেলার একটা কাজ । বিশেষ করে ঐ ঘটনার পর থেকে বাবা পরিস্কার ভাবে বলে দিয়েছে যে দিনের বেলা যতই বের হই না কেন সন্ধ্যার পরপরই বাসায় ফিরে আসতে হবে । অবশ্য বাবাকে কোন ভাবেই দোষ দিতে পারি না ।

কদিন থেকেই আমাদের এলাকাতে অদ্ভুদ ভাবে মানুষ মারা যাওয়া শুরু হয়েছিল । আর খুন গুলো সব হচ্ছে রাতের বেলা। রাতের বেলা কাউকে একা পেলেই কে বা কারা সেই মানুষটাকে মেরে রেখে যাচ্ছে ।

পুলিশ বেশ কিছুদিন চেষ্টা করেও কোন কুল কিনারা করতে পারে নি । এদিকে কাউকে একা পেলেই হয়েছে । তবে এখন আর ঐ ঘটনা খুব একটা ঘটছে না । কারন পুলিশ টহল বাড়িয়ে দিয়েছে । আর যারা যারা রাত করে বাড়ি ফিরছে তারা সবাই এখন দল বেঁধে বাসায় আসছে । তাই আর খুব একটা সমস্যা হচ্ছে না । এখন সেই আতঙ্কটা অনেকটাই কমে গেছে । তবে বাবা মায়েদের মন বলে কথা ।

আমার মনে অবশ্য আজীবনই এই ভয় ডর একটু কম । আমি এখনও রাতের বেলা বাইরে ঘুরাঘুরি করি । রাতে আমার সব সময় ঘুম আসতে একটু দেরি হয় । তাই আমি এদিক ওদিক একটু ঘুরাঘুরি করি একা একা । আমি জানি আমার সাথে কিছু হবে না । তাই শ্রাবণী যখন আমাকে ফোন করে আসতে বলল ওদের বাসার সামনে তখন আমি কিছু না ভেবেই বাইরে বের হয়ে আসলাম । যদিও আম্মুর চোখ ফাঁকি দিয়ে আসতে হয়েছে । সে দেখলে আমাকে কোন ভাবেই আসতে দিত না ।

আমি আপন মনে হাটতে লাগলাম শ্রাবণীদের বাসার দিকে । এতো রাতে ওদের বাসায় আসতে বলাতে আমি খানিকটা অবাকই হয়েছি । তবুও আর কোন প্রশ্ন করি নি । মেয়েটার সাথে নতুন প্রেম হয়েছে আমার । মেয়েটার সব কিছুই ভাল তবে কেন জানি কথা বলে কম । আর একেবারে নির্জিব ধরনের । এই মেয়ে আমাকে পছন্দ করতে পারে আমি কোন ভাবতে পারি নি । যেদিন জানতে পারলাম যে মেয়েটা নাকি আমার ব্যাপারে খোজ খবর নিতে শুরু করেছে সেদিন থেকেই আমার মনের ভেতরে কেমন আকুপাকু করছিলো । তারপর একদিন কলেজ যাওয়ার পথে ওর পথ আটকালাম । সরাসরিই জানতে চাইলাম যে ও আমার ব্যাপারে জানতে চাইছিলো কি না । মেয়েটা সেদিন মৃদু হেসেছিল কেবল । তারপর থেকেই সব এগিয়ে চলছে বেশ ভাল ভাবেই । তবে আজকের মত এতো প্রবল ভাবে সে আর কোন দিন আমাকে ডাকে নাই । তাও আবার রাতের বেলা । আমি খানিকটা দ্বিধা নিয়েই এগিয়ে গেলাম ওদের বাসার দিকে ।

ওদের বাসাটা এলাকার একেবারে শেষ দিকে । গলির একেবারে শেষ মাথায় । যাওয়ার পথেই পুলিশ প্রেট্রলের সামনে পড়লাম । তবে আমার মুখ চেনে বলে আমাকে কিছু বলল না । আমাকে কিছু না বলার একটা কারনও অবশ্য আছে ।

আমি আগেই বলেছি আমার মনের ভেতরে একটু ভয়ডর কম । আমি রাত বিরাতে একা একা ঘুরাঘুরি করি । ৪/৫ মাস আগের ঘটনা । তখন আমাদের এলাকাতে এই মানুষ খুনটা খুব বেড়ে গিয়েছে । দু চার দিন পরপরই শোনা যাচ্ছিলো কেউ না কেউ মারা পড়ছে । আমি তখনও বাইরে বের হতাম তবে তখন আমার সাথে একটা দুই ফুট লম্বা মোটা প্লাস্টিকের পাইপ থাকতো । নিজের নিরাপত্তার জন্য । যতই ভয় না পাই নিজের নিরাপত্তার একটা ব্যাপার আছে তো ।

তেমন এক দিনে আমি হাওয়া খেয়ে বেড়াচ্ছি । যায়গাটা বেশ নির্জন হয়ে গেছে । তবে চাঁদের আলো আছে বেশ । সব কিছু পরিস্কার দেখা যাচ্ছে । আশে পাশে কোন বাড়িঘরও নেই । আমি আপন মনে হেটে বেড়াচ্ছি । এমন সময় আমার একটু ছোট বাধরুম পেল । আমি রাস্তা থেকে নেমে এলাম । ঝোপের ভেতরে বসে পড়লাম । এমন সময় দেখি অন্ধকারের মধ্যেই একটা লোক দৌড়ে পালাচ্ছে আর তার ঠিক পেছনেই একজন কেমন লাফিয়ে লাফিয়ে আসছে । অনেকটা ক্যাঙ্গারু যেমন লাফিয়ে লাফিয়ে চলে ঠিক সেই রকম । পেছনে একটা লেজও আছে । মুখটা খানিকটা লম্বা মত । অনেকটা ছাগলের মুখের মত । কান দুটো খাড়া । লোকটাকে ধরেই ফেলল ।

একেবারে আমার থেকে দুহাত দুরে এসে তাদের ভেতরে ধস্তা ধস্তি শুরু হল । আমাকে তারা কেউ দেখে নি । আমি তখনই মোটা প্লাস্টিকের পাইপটা নিয়ে উঠে দাড়ালাম । আমাকে দেখে তারা দুজনেই চমকে উঠলো । আমাকে এখানে কেউই আশা করে নি । তারপর পাইপটা দিয়ে ঐ ছাগল মুখো প্রাণীর মাথায় সজোরে আঘাত করলাম । দুই বাড়ি দিতেই সে লোকটাকে ছেড়ে দিল । তারপর ঠিক সেই ভাবেই লাফাতে দৌড়াতে শুরু করলো ।

একবার ভাবলাম পেছন পেছন যাই তারপর আর গেলাম না । পড়ে থাকা লোকটা তখন উঠে দাড়িয়েছে । কাছে আসতেই আমি তাকে চিনতে পারলাম । আমাদের বাবু ভাই । আমাকে জড়িয়ে ধরলো আনন্দে । সেই খবর পরদিন সবার কাছে পৌগে গেল । আমি নাকি ঐ দানবের কাছ থেকে বাবু ভাইকে বাঁচিয়েছি । ব্যাস আমি হয়ে গেলাম এলাকার হিরো । সেখান থেকেই সবাই আমাকে অন্য চোখে দেখতে শুরু করলো । শ্রাবণীও আমাকে তখনই চিনতে শুরু করেছিলো ।

আমি শ্রাবনীদের বাসার কাছে এসেই ওকে ফোন দিলাম । পুরো এলাকাটা যেন নিস্তব্ধ হয়ে আছে । একেবারে নির্জন লাগছে । আমি দিনের বেলা এর আগেও ওদের বাসার সামনে এসেছি তবে রাতের বেলা এই প্রথম । মোবাইল বের করে ফোন দিতে যাবো তখনই দেখতে পেলাম শ্রাবণীকে । ওর গেট খুলে বের হয়ে আসছে । ধীরে ধীরে আমার দিকে এগিয়ে এল । আমার একদম কাছে এসে দাড়ালো । তারপর বলল

-আসতে সমস্যা হয় নি তো ?

-নাহ । কিসের সমস্যা ?

-নাহ মানে সবাই যা বলাবলি করে । আমাদের এই এলাকাতে কি যেন আছে !

আমি খানিকটা গর্ব নিয়েি বললাম

-জানো না একবার আমার সাথে তার দেখা হয়েছিলো । কি অবস্থা করেছিলাম তার । বেটা কেমন করে দৌড়েছিলো । এখন তো আর দেখাই যায় না ।

শ্রাবণীকে দেখলাম হঠাৎ চুপ করে গেছে । আমার দিকে কিছু সময় তাকিয়ে থেকে বলল চল বাড়ির ভেতরে যাই ।

আমি এবার সত্যিই অবাক হলাম । তারপর বললাম

-কি বললে ? বাড়ির ভেতরে গিয়ে কি হবে ?

শ্রাবণীকে খানিকটা অধৈর্য হতে দেখলাম । ও বলল

-আজকে বাসায় কেউ নেই ।

-তাই জন্য তুমি আমাকে এখানে ডেকে এনেছো ?

-হ্যা । আমি আসলে .....

কথা বলতে গিয়ে ও আটকে গেল । আমার তখনই মনে হল কি যেন একটা ঠিক নেই । আমি চট করে পেছন ফিরে তাকাতেই অবাক হয়ে দেখলাম সেই ক্যাঙ্গারুর মত প্রাণীটা এগিয়ে আসছে ধীরে ধীরে । আমি আমি শ্রাবণীর দিকে তাকাতেই আমার দ্বিতীয় ধাক্কাটা লাগলো । শ্রাবণীর চোখে কোন ভয় কিংবা বিস্ময় নেই । খুব স্বাভাবিক ভাবেই সেদিকে তাকিয়ে আছে ।

ঐ প্রাণীটার দিকে তাকিয়ে খানিকটা বিরক্ত হয়েই বলল

-তোমাকে না বললাম ওকে বাসার ভেতরে নিয়ে যাই তারপর আসো !

আমি অবাক হয়ে বললাম

-মানে কি বলছো এসব ?

শ্রাবণী তারপর বলল

-ঠিকই বলছি । তোমার জন্যই আজকে আমাদের এই অবস্থা । সবাই সাবধান হয়ে গেছে । আমরা আর কাউকে খেতে পারছি না । না খেয়ে থাকতে হচ্ছে । আজকে আর স হ্য করতে না পেরে তোমাকে ডাক দিয়েছি । আর তোমার উপর তো আমার আগে থেকেই রাগ আছে । ঐদিন আমাকেই তুমি ঐভাবে আঘাত করেছিলে ।

তারপর আমাকে তীব্র ভাবে অবাক করে দিয়ে শ্রাবণীর চেহারা পরিবর্তন হতে শুরু করলো । পা দুটো আরও একটু লম্বা হয়ে গেল । সেই সাথে মুখের ভাবটা হয়ে গেল ছাগলের মত লম্বাটে । কান দুটো খাড়া হয়ে গেল । আমি কি বলব খুজে পেলাম না । এই জন্যই এই মেয়ে আমার পেছনে লেগেছিলো । ওর একটা উদ্দেশ্য ছিল ।

আমাকে দুদিক থেকে দুজন ঘিরে ধরলো । আমি কি করবো ঠিক বুঝতে পারছিলাম না । দুজন আস্তে আস্তে আমার দিকে এগিয়ে আসতেই থাকলো । আজকে আমার কাছে ঐ প্লাস্টিকের ছড়ি নেই । আবার একজনের পরিবর্তে দুইজন ।

তাহলে কি এই ভাবে মারা পড়বো আজকে ?

মেয়ে মানুষটাকে বিশ্বাস করে এই ভাবে বেঘরে প্রাণ হারাবো ?

তারপর মনটা বিদ্রোহ করে উঠলো । মনে হল যা থাকে কপালে । মরলে মরবো তবুও এদের অন্তত একজনকে দেখে নিবো । কাকে হামলা করবো আগে ? তখনই সমস্ত রাগ গিয়ে পড়লো এই মিথ্যাবাদী মেয়েটার উপর । আমি চোখের পলকেই প্রবল একটা ঘুসি মেরে দিলাম ঐ নাক বরাবর !

সম্ভবত আমার এই রকম প্রতিক্রিয়ার জন্য দুজনের কেউই প্রস্তুত ছিল না । দেখলাম শ্রাবণী নামের এই প্রাণীটা নাক চেঁপে মাটিতে শুয়ে পড়লো । আর আমার পেছনের প্রাণীটা থমকে দাড়িয়েছে । কি করবে ঠিক বুঝে উঠতে পারছে না । এগোতে ঠিক সাহস পাচ্ছে না । কারনটা আমি ঠিকই বুঝতে পারলাম । শ্রাবণী নিজেই বলেছিলো যে কদিন থেকে ওরা কিছুতেই খেতে পায় নি । এই জন্য ওদের শরীর দর্বূল । তাই আমার এক ঘুসিতেই কাইত হয়ে গেছে । পেছনের জন্য আর সাহস করলো না । দেখলাম সে ঘুরে আবারও ঝোপের আড়ালে চলে গেল । আমি কিছু বলতে যাবো তাকিয়ে দেখি শ্রাবণী আবারও মানুষের রূপ ধারন করেছে । অনেক কষ্টে উঠে দাড়ালো ।

আমি ওর দিকে তাকিয়ে বলল

-তোমার উপর দয়া করলাম । আর যদি কোন অকাজ শুনেছি তো সেদিন তোমাকে একেবারে জ্যান্ত পুতে ফেলবো ।

ও তখনও নিজের নাক ধরেই আছে । সেখান থেকে রক্ত বের হচ্ছে ।

আমি আর সেদিকে না তাকিয়ে আমি হাটা দিলাম বাড়ির দিকে । ভাল একটা শিক্ষা হয়ে গেল । এই টাইপের ছদ্মবেশী মেয়ের মানুষের কাছ থেকে আরও সাবধান হতে হবে !
 

Users who are viewing this thread

Back
Top