গল্পের নাম প্রতিবেশী আন্টি (একটি কাল্পনিক গল্প)
লেখক মোঃ আব্দুল্লা-হিল-মারুফ তামিম
সম্প্রতি এইচএসসি পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশ হওয়ার পর। আমার ফলাফলও আশানুরূপ অনেক খারাপ হয়েছে যাকে বলা হয় কোনোভাবে উক্তির্ন হয়েছি। এমন ফলাফলের জন্য সারাদিন বাসায় আমার উপর দিয়ে এক বড় ধরনের ঝড় বয়ে যায়। বিকালের দিকে এই ঝড় থেমে যায় হয়ত তাদের স্টোক শেষ হয়ে গিয়েছে তাই থেমে গিয়েছে। যাই হোক সারাদিন বাসার সবার কঠিন বাক্য শোনার পর এখন আমি অনেক ক্লান্ত। তাই ঘরে যেয়ে শুয়ে একটু আরামের ঘুম দেই। হয়ত ভাবছেন আমার খারাপ রেজাল্ট হয়েছে তারপরও কোনো চিন্তা নেই। আসলে এসব নিয়ে আমি কখনও ভাবি না কারণ আমি পাশ করেছি ফেইল করি নাই। এই রেজাল্ট নিয়ে যেকোনো বেসরকারি প্রতিষ্ঠান থেকে স্নাতক পাশ করতে পারব তাই কোনো চিন্তা নাই। বাড়ির সবাই এখন বকা দিচ্ছে এটা স্বাভাবিক কিন্তু পরে বুঝিয়ে বললে তারা ঠিক বুঝে নিবেন।
বিকালে ঘুমিয়ে আছি তখন দরজার কলিংবেল এর শব্দে ঘুম ভেঙ্গে যায়। উঠে দরজা খুলতে যাওয়ার আগেই আম্মু যেয়ে দরজা খুললেন।
কথা শুনে বুঝতে পারলাম আমার জম এসেছে মানে আমাদেরই পাশের বাসাতে থাকেন এক প্রতিবেশী আন্টি। এই মহিলা আজ পর্যন্ত আমাকে শুধু বাশ দিয়ে গেছেন। কখনও আমার ভালো চান না তিনি কেন চান না এটা আমি নিজেও জানি না।
আমাকে বাশ দেওয়ার কিছু নমুনা বলছি আপনাদেরকে।
একবার আম্মুর কাছে ভালো একটি মোবাইল চেয়েছিলাম। আম্মু দিতে রাজী হয়েছিলেন। আম্মু যখন আব্বুকে এই কথাটি বলবেন। সেদিন বিকালেই আন্টি এসে জানতে পারলেন আমি মোবাইল কিনতে চাই। তখনই তিনি তার ভাতিজার গল্প শুরু করে দিলেন যে মোবাইল কিনে দেওয়ার পর তার ভাতিজা কী কী করেছে। যাক সেই কথা আম্মুর কানে খুব ভালোভাবে ঢুকে যায় যার ফলস্বরুপ এখনও আমাকে এই পুরাতন বাটনফোন চালাতে হয়।
ঠিক এমন অনেক বাশ দিয়েছেন উনি আর সব বাশ দেওয়ার পিছনে উনি উনার ভাতিজাকে দিয়ে ব্যাখ্যা দিয়েছেন।
আমার খুব ইচ্ছা তার সেই ভাতিজাকে দেখার যে এতো মহৎ একজন মানুষ যার ফুফু সবসময় তাকে নিয়ে গর্ব করেন।
এই ছিল আন্টির নমুনা এবার দেখি আজকে কী করতে এসেছেন হয়ত আজকেও বড় ধরনের বাশ নিয়ে আসছেন যে বাশ আমার উপর ঢেলে দেওয়া হবে। আমি জানি না বাশ গলানো যায় কী না
আমি চুপচাপ পাশের ঘরে বসে বসে আম্মু আর আন্টির কথাবার্তা শুনছিলাম। অন্যের কথা আড়ি পেতে শুনতে নেই কিন্তু আজ কেন যেন শুনতে মন চাইছে কারণ আমার খটকা লাগছে আজকেও হয়ত আন্টি এসেছেন আমার রেজল্টের কথা শুনতে।
....
প্রথমে আম্মু আর আন্টি কিছুক্ষণ গল্প করলেন এরপর আন্টি আম্মুকে জিজ্ঞাসা করলেন।
আন্টি- আচ্ছা ভাবি আজকে আপনার ছেলের রেজাল্ট দিয়েছে না
আম্মু- জ্বী ভাবি।
আন্টি- কী হল রেজাল্ট
আম্মু- এই মোটামুটি হয়েছে।
আন্টি- মোটামুটি হলে কীভাবে হবে আমার ভাতিজা পরীক্ষায় গোল্ডেন A+ পেয়েছে। আর আপনার ছেলে এতো খারাপ রেজাল্ট করল। করবেই না কেন সারাদিন শুধু বাইরে আড্ডা দিয়ে বেড়ালে হবেটা কী। এখন এই রেজাল্ট নিয়ে সে কী করবে
আম্মু- ভাবি অনেক কথা বলেছেন এই পর্যন্ত আমার ছেলেকে নিয়ে অনেক সহ্য করেছি আর না। আমার ছেলে যা খুশি করুক সেটা দিয়ে আপনার কী হবে আর আপনার ভাতিজার গল্প দিয়ে যান সবসময় কই কখনও আপনার নিজের সন্তানের গল্প দিলেন না। নিজের যা কিছু আছে তাই নিয়ে বড়াই করুন অন্যের প্রশংসা করলে কোনো লাভ হবে না। আমার কথায় খারাপ লাগলে ক্ষমা করবেন।
.....
এরপর আন্টি নিজের চোখ মুছতে মুছতে চলে যান। কারণ আন্টির বিয়ের বয়স ৩০বছর কিন্তু এখনও তিনি সন্তানের মুখ দেখতে পারেন নাই। আর কখনও তিনি মা হতে পারবেন না। তাই আম্মুর এই কথায় তিনি কষ্ট পেয়েছেন কিন্তু তার কথায় মানুষ এতোদিন কষ্ট পেয়ে এসেছে তাতে তার কিছু আসে যায় নাই আর আজ নিজেই কষ্ট পেলেন। যদি এই কথা তার মনে থাকে তাহলে এরপর থেকে কারও কাছে যেয়ে এমন করবে না।
বিঃদ্রঃ এই গল্পটি লিখেছি সেই সকল (যারা এমন গুণগান গেয়ে বেড়ান তারা)প্রতিবেশী আন্টিদেরকে উদ্দেশ্য করে। এই সকল আন্টিরা নিজের খাওয়া খেয়ে অন্যের পিছনে পিন দিয়ে বেড়ায় কিন্তু দিনশেষে তারাই লজ্জিত হয়। তারপরও থেমে নেই তাদের এসব কাজ। কার বাড়ির ছেলে খারাপ কার বাড়ির মেয়ে অবিবাহিত এমন অনেক বিষয়ে তারা তদারকি করেন। কিন্তু তারা এটি জানেন না তাদের এসবের কারণে অন্যরা কষ্ট পায়। আবার অনেক ক্ষেত্রে অন্যকে কষ্ট দিতে যেয়ে নিজেরাই অপমানিত হয়ে ফিরে আসে। তাই এসব বন্ধ করাটাই ভালো হবে।
সমাপ্ত.....
(ভুলত্রুটি ক্ষমা করবেন। গল্পটি পড়ার জন্য ধন্যবাদ।)
Copyright August 19,2019 at 254 PM.
Maruf Tamim(Author).
লেখক মোঃ আব্দুল্লা-হিল-মারুফ তামিম
সম্প্রতি এইচএসসি পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশ হওয়ার পর। আমার ফলাফলও আশানুরূপ অনেক খারাপ হয়েছে যাকে বলা হয় কোনোভাবে উক্তির্ন হয়েছি। এমন ফলাফলের জন্য সারাদিন বাসায় আমার উপর দিয়ে এক বড় ধরনের ঝড় বয়ে যায়। বিকালের দিকে এই ঝড় থেমে যায় হয়ত তাদের স্টোক শেষ হয়ে গিয়েছে তাই থেমে গিয়েছে। যাই হোক সারাদিন বাসার সবার কঠিন বাক্য শোনার পর এখন আমি অনেক ক্লান্ত। তাই ঘরে যেয়ে শুয়ে একটু আরামের ঘুম দেই। হয়ত ভাবছেন আমার খারাপ রেজাল্ট হয়েছে তারপরও কোনো চিন্তা নেই। আসলে এসব নিয়ে আমি কখনও ভাবি না কারণ আমি পাশ করেছি ফেইল করি নাই। এই রেজাল্ট নিয়ে যেকোনো বেসরকারি প্রতিষ্ঠান থেকে স্নাতক পাশ করতে পারব তাই কোনো চিন্তা নাই। বাড়ির সবাই এখন বকা দিচ্ছে এটা স্বাভাবিক কিন্তু পরে বুঝিয়ে বললে তারা ঠিক বুঝে নিবেন।
বিকালে ঘুমিয়ে আছি তখন দরজার কলিংবেল এর শব্দে ঘুম ভেঙ্গে যায়। উঠে দরজা খুলতে যাওয়ার আগেই আম্মু যেয়ে দরজা খুললেন।
কথা শুনে বুঝতে পারলাম আমার জম এসেছে মানে আমাদেরই পাশের বাসাতে থাকেন এক প্রতিবেশী আন্টি। এই মহিলা আজ পর্যন্ত আমাকে শুধু বাশ দিয়ে গেছেন। কখনও আমার ভালো চান না তিনি কেন চান না এটা আমি নিজেও জানি না।
আমাকে বাশ দেওয়ার কিছু নমুনা বলছি আপনাদেরকে।
একবার আম্মুর কাছে ভালো একটি মোবাইল চেয়েছিলাম। আম্মু দিতে রাজী হয়েছিলেন। আম্মু যখন আব্বুকে এই কথাটি বলবেন। সেদিন বিকালেই আন্টি এসে জানতে পারলেন আমি মোবাইল কিনতে চাই। তখনই তিনি তার ভাতিজার গল্প শুরু করে দিলেন যে মোবাইল কিনে দেওয়ার পর তার ভাতিজা কী কী করেছে। যাক সেই কথা আম্মুর কানে খুব ভালোভাবে ঢুকে যায় যার ফলস্বরুপ এখনও আমাকে এই পুরাতন বাটনফোন চালাতে হয়।
ঠিক এমন অনেক বাশ দিয়েছেন উনি আর সব বাশ দেওয়ার পিছনে উনি উনার ভাতিজাকে দিয়ে ব্যাখ্যা দিয়েছেন।
আমার খুব ইচ্ছা তার সেই ভাতিজাকে দেখার যে এতো মহৎ একজন মানুষ যার ফুফু সবসময় তাকে নিয়ে গর্ব করেন।
এই ছিল আন্টির নমুনা এবার দেখি আজকে কী করতে এসেছেন হয়ত আজকেও বড় ধরনের বাশ নিয়ে আসছেন যে বাশ আমার উপর ঢেলে দেওয়া হবে। আমি জানি না বাশ গলানো যায় কী না
আমি চুপচাপ পাশের ঘরে বসে বসে আম্মু আর আন্টির কথাবার্তা শুনছিলাম। অন্যের কথা আড়ি পেতে শুনতে নেই কিন্তু আজ কেন যেন শুনতে মন চাইছে কারণ আমার খটকা লাগছে আজকেও হয়ত আন্টি এসেছেন আমার রেজল্টের কথা শুনতে।
....
প্রথমে আম্মু আর আন্টি কিছুক্ষণ গল্প করলেন এরপর আন্টি আম্মুকে জিজ্ঞাসা করলেন।
আন্টি- আচ্ছা ভাবি আজকে আপনার ছেলের রেজাল্ট দিয়েছে না
আম্মু- জ্বী ভাবি।
আন্টি- কী হল রেজাল্ট
আম্মু- এই মোটামুটি হয়েছে।
আন্টি- মোটামুটি হলে কীভাবে হবে আমার ভাতিজা পরীক্ষায় গোল্ডেন A+ পেয়েছে। আর আপনার ছেলে এতো খারাপ রেজাল্ট করল। করবেই না কেন সারাদিন শুধু বাইরে আড্ডা দিয়ে বেড়ালে হবেটা কী। এখন এই রেজাল্ট নিয়ে সে কী করবে
আম্মু- ভাবি অনেক কথা বলেছেন এই পর্যন্ত আমার ছেলেকে নিয়ে অনেক সহ্য করেছি আর না। আমার ছেলে যা খুশি করুক সেটা দিয়ে আপনার কী হবে আর আপনার ভাতিজার গল্প দিয়ে যান সবসময় কই কখনও আপনার নিজের সন্তানের গল্প দিলেন না। নিজের যা কিছু আছে তাই নিয়ে বড়াই করুন অন্যের প্রশংসা করলে কোনো লাভ হবে না। আমার কথায় খারাপ লাগলে ক্ষমা করবেন।
.....
এরপর আন্টি নিজের চোখ মুছতে মুছতে চলে যান। কারণ আন্টির বিয়ের বয়স ৩০বছর কিন্তু এখনও তিনি সন্তানের মুখ দেখতে পারেন নাই। আর কখনও তিনি মা হতে পারবেন না। তাই আম্মুর এই কথায় তিনি কষ্ট পেয়েছেন কিন্তু তার কথায় মানুষ এতোদিন কষ্ট পেয়ে এসেছে তাতে তার কিছু আসে যায় নাই আর আজ নিজেই কষ্ট পেলেন। যদি এই কথা তার মনে থাকে তাহলে এরপর থেকে কারও কাছে যেয়ে এমন করবে না।
বিঃদ্রঃ এই গল্পটি লিখেছি সেই সকল (যারা এমন গুণগান গেয়ে বেড়ান তারা)প্রতিবেশী আন্টিদেরকে উদ্দেশ্য করে। এই সকল আন্টিরা নিজের খাওয়া খেয়ে অন্যের পিছনে পিন দিয়ে বেড়ায় কিন্তু দিনশেষে তারাই লজ্জিত হয়। তারপরও থেমে নেই তাদের এসব কাজ। কার বাড়ির ছেলে খারাপ কার বাড়ির মেয়ে অবিবাহিত এমন অনেক বিষয়ে তারা তদারকি করেন। কিন্তু তারা এটি জানেন না তাদের এসবের কারণে অন্যরা কষ্ট পায়। আবার অনেক ক্ষেত্রে অন্যকে কষ্ট দিতে যেয়ে নিজেরাই অপমানিত হয়ে ফিরে আসে। তাই এসব বন্ধ করাটাই ভালো হবে।
সমাপ্ত.....
(ভুলত্রুটি ক্ষমা করবেন। গল্পটি পড়ার জন্য ধন্যবাদ।)
Copyright August 19,2019 at 254 PM.
Maruf Tamim(Author).