আমি তখন দ্বিতীয় শ্রেণিতে পড়, বয়স সাত বছর। গ্রামে থাকি মা ও চাচা চাচিদের সাথে। এটি আমার জীবনে ঘটা একটি সত্যি ঘটনা- কারো কাছ থেকে শোনা নয়। তখন লক্ষী পূজা চলছে। আমাদের গ্রামের নদীপাড়ের প্রায় ত্রিশটি বাড়িতে হিন্দুদের বসবাস। এরা বেশির ভাগই পেশার জেলে। নদীর অপর পাড়ে বুতনী বাজার। বাজারে দুটি মন্দীর একটি কালি মন্দীর আরেকটি সাধারণ তবে বড় মন্দীর। পূজো চলছে তখন মধ্যরাত পর্যন্ত। ১৯৯১ সালের দিকের কথা। আমার চাচাতো দুই ভাই, আমার মেঝ ভাই ও আমি - আমরা রাত দশটার দিকে পুজো দেখতে যাচ্ছি। রাতেই পূজা জমজমাট। প্রায় মেলা বসার মত উৎসব মুখরতা চারপাশে। নদীতে বেশ পানি- জোয়ারের পানি। আমাূের নৌকা বেশ বড়। কালি মন্দীরের পাশে বিশাল বটগাছ। নৌকা ভেড়াতে হবে তার পাশেই। আমার কাকার(চাচা) কাছ থেকে শোনা নিশকাইন্দা ভূত থাকে ওখানে। অনেকে এর আগে ঐ ভূতের খপ্পরে পড়েছে এরকমটা শুনেছি আগে। যাই হোক, রাত দশটা মানে অনেক রাত তখনকার গ্রামে। চারদিকে অন্ধকার। শুধু ঢাকের বাজনা শোনা যাচ্ছে। নৌকা ভেড়ানোর সময়ই আমার চাচাতো ভাই আমাদের বললো যে ফেরার সময় মনে হয় আর ফিরতে পারব না ঠিকভাবে। নিশকাইন্দা আছে এখানে। উনার মুখ থেকে শোনা, নিশকাইন্দা ভূতের নাকি কপালে চোখ থাকে একটা আলাদা। এরা মাছ খায় আর মানুষকে বিপদে ফেলে। আমি ভয়ে একদম চুপসে যাচ্ছি। এমনিতেই আমি ভূত ভয় করি অনেক। আমরা পূজো দেখে ফিরতে ফিরতে ফিরতে ফিরতে প্রায় রাত ৩ টা বেজে গেলো। ফিরে এসে দেখি আমাদের নৌকা পানিতে ডুবে গেছে। কেবল গলুই দেখা যাচ্ছ। এতবড় একটা নৌকা কারো একার পক্ষে ডুবানো সম্ভ না। এ নিশকাইন্দার কাজ। চারপাশে মাছের আশটের বোটকা গন্ধ। আমরা ভয়ে মরে যাবার অবস্থা। পরে আরো লোকজন খবর দেয়া হল। তারা এসে নৌকা তুললো সেচে। বাড়ি ফিরতে ফিরতে ভোর হয়ে গেছিলো আমাদের। প্রায় ত্রিশ বছর আগের ঘটনা- এখনো দাগ কেটে আছে আমার মনে।
আপনাদের কারো জীবনে সত্যি ঘটে যাওয়া কোনো গল্প থাকলে শেয়ার করতে পারেন।
ভালো থাকবেন সবাই।
আপনাদের কারো জীবনে সত্যি ঘটে যাওয়া কোনো গল্প থাকলে শেয়ার করতে পারেন।
ভালো থাকবেন সবাই।