আপনি যদি উইন্ডোজ অপারেটিং সিস্টেম ব্যবহার করেন তাহলে এন্টিভাইরাস বা এন্টিম্যালওয়্যার প্রোগ্রামের সাথে পরিচিত হয়ে থাকবেন। পিসি যদি উইন্ডোজ ১০ চালিত হয়, তাহলে এর মধ্যে মাইক্রোসফটের নিজস্ব ফ্রি এন্টিভাইরাস বা এন্টিম্যালওয়্যার প্রোগ্রাম উইন্ডোজ ডিফেন্ডার দেয়া আছে, যা নিয়মিত আপডেট করলে বেশিরভাগ ভাইরাস বা ক্ষতিকর সফটওয়্যারের হাত থেকে সুরক্ষিত থাকতে পারবেন। সেই সাথে চাইলে বাড়তি নিরাপত্তার জন্য অন্য একটি এন্টিভাইরাস সফটওয়্যারও ব্যবহার করতে পারেন। চলুন জেনে নিই বর্তমানে সেরা ৫ ফ্রি এন্টিভাইরাস সফটওয়্যারের নাম, যা থেকে আপনি যেকোনো একটি বেছে নিতে পারেন।
১. অ্যাভাস্ট ফ্রি এন্টিভাইরাস
এন্টিভাইরাস জগতে অ্যাভাস্ট অত্যন্ত পরিচিত একটি নাম। এর বিশেষ একটি ফিচার হচ্ছে সাইবারক্যাপচার যা পিসিতে নতুন ফাইল রান করার আগে সেটি স্ক্যান করে নেয়। এছাড়া, এতে আরও আছে ফিশিং প্রটেকশন, ওয়াইফাই ইনসপেক্টর, স্মার্ট স্ক্যান, গেম মুড (নোটিফিকেশন হাইড করে), সফটওয়্যার আপডেটার সহ আরও অনেক ফিচার। এটি পিসি স্লো করেনা। তবে অ্যাভাস্টের প্রাইভেসি সেটিংস আপনার কাছে কিছুটা কঠিন লাগতে পারে, এবং এর পেইড কম্পোনেন্টের লিংক ভালো নাও লাগতে পারে।
২. অ্যাভিরা ফ্রি এন্টিভাইরাস
বিভিন্ন অ্যান্টিভাইরাস টেস্টিং ল্যাব অ্যাভিরাকে ভালো রেটিং দিয়েছে। এটি কম্পিউটারকে স্লো করেনা, তবে নিজে একটু ধীরগতিতে স্ক্যান করে থাকে। অ্যাভিরার ভাইরাস ও ফিশিং আক্রমণ ঠেকানোর ক্ষমতা ভাল। অ্যাভিরার ক্রোম ও ফায়ারফক্স এক্সটেনশন রয়েছে যা অনলাইন নিরাপত্তায় সাহায্য করবে। তবে এর পপআপ আপনাকে বিরক্ত করতে পারে।
৩. বিট ডিফেন্ডার ফ্রি এন্টিভাইরাস
ফ্রি এন্টিভাইরাস হিসেবে বিট ডিফেন্ডার ভালই জনপ্রিয়। এর মূল শক্তি দ্রুত স্ক্যান করা এবং রয়েছে অসাধারণ ভাইরাস ধরার ক্ষমতা। সাধারণ ব্যবহারকারীদের জন্য বিট ডিফেন্ডার কনফিগার করা সহজ, তবে আপনি যদি অ্যাডভান্সড ইউজার হয়ে থাকেন, সেক্ষেত্রে হয়ত আরও বেশি নিয়ন্ত্রণ চাইবেন যা বিট ডিফেন্ডারে আপাতত নেই। বিট ডিফেন্ডারে পপআপ থাকলেও তা তুলনামূলক খুব বেশি না, যা সফটওয়্যারটির ক্লিন ইউজার ইন্টারফেস পুষিয়ে দেয়।
৪. ক্যাস্পারস্কি ফ্রি এন্টিভাইরাস
ক্যাসপারস্কি এন্টিভাইরাসের ফ্রি ভার্সনে পাবেন রিয়েল-টাইম স্ক্যানিং, এন্টি-ফিশিং, ইমেইল স্ক্যানিং, স্পাইওয়্যার প্রটেকশন সহ নানান সুবিধা। ব্যক্তিগত ব্যবহারের জন্য ক্যাসপারস্কি ফ্রি এন্টিভাইরাস যথেষ্ট, তবে এটা আপনার কাছে খুব ব্যাসিক মনে হতে পারে। এর ইউজার ইন্টারফেস সহজ এবং ভাইরাস ধরার ক্ষমতা মারাত্নক।
৫. এভিজি ফ্রি এন্টিভাইরাস
আপনি নিশ্চয়ই এভিজি ফ্রি এন্টিভাইরাসের নাম শুনেছেন? এতে পাবেন ভাইরাস প্রটেকশন, সিস্টেম অপটিমাইজেশন টুল, ম্যালওয়্যার স্ক্যানার প্রভৃতি। এভিজি এন্টিভাইরাসের কনফিগারেশন অপশনগুলো সহজ হলেও স্ক্যান করতে এটি একটু বেশি সময় নিতে পারে। এভিজির ফিশিং প্রটেকশন অন্যান্য ফ্রি এন্টিভাইরাসের তুলনায় খুব একটা বেশি শক্তিশালী না। তবে এর ম্যালওয়্যার প্রটেকশন চমৎকার। এভিজি ফ্রি এন্টিভাইরাস আপনার পিসিকে স্লো করবেনা।
সঠিকভাবে এন্টিভাইরাস বা এন্টিম্যালওয়্যার সফটওয়্যার ব্যবহার করলে বিভিন্ন ভাইরাস, ম্যালওয়্যার ও র্যানসমওয়্যারের হাত থেকে নিরাপদ থাকা সম্ভব। পিসিতে যেকোনো সফটওয়্যার ইনস্টল দেয়ার পূর্বে অবশ্যই এর উৎস ও নির্মাতা সম্পর্কে ভালোভাবে নিশ্চিত হয়ে নিতে হবে। সফটওয়্যারের ক্র্যাকে (যেটা বেআইনি) অনেক সময় ভাইরাস থাকে।
জেনুইন সফটওয়্যার ব্যবহার করলে ক্র্যাকের ঝামেলা থেকে মুক্তি পাবেন। আজকাল বাংলাদেশেও কম্পিউটারের সাথে জেনুইন উইন্ডোজ অপারেটিং সিস্টেম পাওয়া যায়। যেমন, অনুমোদিত বিক্রয়কেন্দ্রে আসুস ল্যাপটপে আপনি জেনুইন উইন্ডোজ অপারেটিং সিস্টেম পাবেন, ফলে ক্র্যাকের সমস্যা থেকে মুক্তি মিলবে। আর ভাইরাসের ভয়ও কমবে।