What's new
Nirjonmela Desi Forum

Talk about the things that matter to you! Wanting to join the rest of our members? Feel free to sign up today and gain full access!

Collected "ঋণ" (1 Viewer)

Pegasus

Member
Joined
Mar 8, 2018
Threads
103
Messages
171
Credits
28,977
অাজ হাসপাতালে নতুন একটা রোগী ভর্তি হয়েছে।এই হাসপাতালের সবচেয়ে বড় ডাক্তার ঈশিতা অাফরোজ।
তবে অভিজ্ঞতার বিচারে অনেক নবীন। ২ বছর হলো মাত্র ডাক্তার পেশায়।
অন্যান্য ডাক্তারদের তুলনায় মানসিক রোগের ডাক্তারদের একটু বেশী যত্নশীল হওয়া প্রয়োজন।এই গুণটা ডাঃ ঈশিতার ভালোই অাছে।ইতিমধ্যেই অনেক রোগীকে প্রায় সম্পূর্ণ সুস্থ করেছেন তিনি।
....
এইবার রোগীর পরিচয়ে অাসা যাক।রোগীর ভালো নাম রাফিন অাহমেদ।বাবা-মা বিজয় বলে ডাকে।অাজ থেকে প্রায় ৬ বছর অাগে একটা সড়ক দুর্ঘটনায় মারাত্মকভাবে মাথায় অাঘাত পায়।প্রথমে ধীরে ধীরে সুস্থ হয়ে উঠে কিন্তু পরে মাঝে মাঝে অস্বাভাবিক অাচরণ করতো।তবে ইদানীং সবসময় অস্বাভাবিক অাচরণ করে।এখন তাকে সম্পূর্ণ পাগলই বলা চলে।
পরিবার মোটামুটি স্বচ্ছল।বাবা-মায়ের একমাত্র ছেলে বিজয়।বাবা-মা অনেক কষ্ট করে হলেও এতদিন নিজেদের কাছেই রেখেছে।তবে ইদানীং পরিস্হিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাওয়ায় এখানে নিয়ে অাসা।প্রাথমিকভা
বে অবস্থা দেখেই ডাক্তাররা ভর্তির জন্য বলেছে।
....
বিজয়ের বাবা-মা কান্নাজড়িত কণ্ঠে সবকিছু জানালো ডাঃ ঈশিতাকে।ডাঃ ঈশিতা তাদের অাশ্বাস দিলেন যে বিজয় ধীরে ধীরে সুস্থ হয়ে উঠবে।
....
....
....
অাজ বাসায় অাসার পর চোখ থেকে অঝোরে পানি ঝরছে ঈশিতার।মানসিক হাসপাতালে কাজ শুরুর পর এই রকম প্রায়ই অনেক করুণ কাহিনী শুনতে হয় তাকে।এসব শুনতে শুনতে মনটা এখন অনেক শক্ত হয়ে গেছে।তবুও অাজ কেনো যেনো চোখটা বাঁধা মানতে চাইছে না।মনটা বার বার ফিরে যাচ্ছে ৬ বছর অাগের সেই দিনগুলিতে।
....
....
চলুন অামরাও দেখে অাসি ৬ বছর অাগে ঠিক কী ঘটেছিলো...........
....
এইচএসসি পরীক্ষার শেষে মেডিকেলে ভর্তির জন্য কোচিং এ যাওয়া শুরু করলো ঈশিতা।প্রথম দিন কোচিং শেষ।কিন্তু বাইরে তুমুল বৃষ্টি হচ্ছিলো।সাথে কোনো ছাতাও ছিলো না ঈশিতার।এইদিকে সন্ধ্যাও হয়ে অাসছে।হঠাৎ একটা অপরিচিত ছেলে এসে বললো...
>>ছাতাটা নিয়ে বাসায় চলে যাও।(ছেলে)
>>অামি অাপনার ছাতা কেনো নিতে যাবো??(ঈশিতা)
>>এই কারণে নিবে কারণ তোমার কাছে কোন ছাতা নেই।(ছেলে)
>>না না।অামি অাপনার ছাতা নিতে পারবো না।(ঈশিতা)
>>ছাতাটা রেখে গেলাম।মন চাইলে নিয়ে যেও।যেভাবে বৃষ্টি হচ্ছে মনে হয় ২ ঘন্টার অাগে থামবে না।(ছেলে)
....
কথাটা বলেই ছেলেটা ছাতা রেখে বৃষ্টির ভেতর দিয়েই ভিজতে ভিজতে চলে গেলো।ঈশিতা মনে মনে ভাবছে ছেলেটার মতলব খারাপ হতে পারে।যাই হোক যেহেতু ছাতাটা দিয়ে চলেই গেছে তাই সে ছাতাটা নিয়ে বাড়িতে চলে গেলো।পড়ে থাকার চেয়ে বরং ছাতাটাকে কাজে লাগানোই তার কাছে সমীচিন মনে হলো।
পরেরদিন ঈশিতা ছাতাটা নিয়ে কোচিংয়ে গেলো।
কিন্তু ছেলেটাকে পেলো না।
৩ দিন পর কোচিং শেষে ছেলেটিকে দেখতে পেলো ঈশিতা।
>>এই যে নিন অাপনার ছাতা।(ঈশিতা)
>>ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য ধন্যবাদ।(ছেলে)
>>অাপনি কী এই কোচিংয়েই পরেন না কী??(ঈশিতা)
>>না।(ছেলে)
>>ছাতাটা ৩ দিন পরে ফেরত নিতে এলেন যে??(ঈশিতা)
>>তিন দিন জ্বর ছিলো।(ছেলে)
এটা বলতে বলতে ছেলেটা তাড়াহুড়া করে ছাতাটা নিয়েই চলে গেলো।।
....
কয়েকদিন পর ঈশিতা বাসায় যাবার সময় দেখতে পেলো ছেলেটা তাকে ফলো করছে।
>>এই যে অামাকে ফলো করছেন কেনো?(ঈশিতা)
>>কই না তো।হিসেব অনুযায়ী তো অাপনি অামাকে ফলো করছেন।বারবার পেছনে তাকাচ্ছিলেন অাবার এখন অামাকে ডাক দিলেন।(ছেলে)
>>দেখুন একদিন ছাতা দিয়ে উপকার করেছেন বলে নিজেকে কী মনে করছেন।এসব বাদ দিন।অার শুনেন অামার বয়ফ্রেন্ড অাছে।বললে মেরে অাপনার হাড়-গোড় সব ভেঙে দিবে।
>>দিক না।তুমি তো ডাক্তারই হচ্ছো।চিকিৎসাটা নাহয় তুমিই করে দিবে।ফ্রি তে চিকিৎসা করতে হবে।কারণ তোমাকে ছাতা দিয়েছিলাম ঐদিন সেটার ঋণ কিন্তু বাকী।
>>দেখুন অামার সাথে ফাইযলামি করবেন না।
>>হা হা।অামি ভালো করেই জানি তোমার বয়ফ্রেন্ড অাছে না নেই।অার সময় নষ্ট করো না।বাসায় যাও,গিয়ে পড়তে বসো।ভালো করে পড়বে কিন্ত।
তুমি ডাক্তার না হলে অামার চিকিৎসা করাবে কে তাহলে।
....
ছেলেটা প্রায়ই ঈশিতার সাথে রাস্তায় কথা বলে।ছেলেটাকে ঈশিতার একদম বিরক্তিকর মনে হয়।
....
ঈশিতার পরীক্ষার রেজাল্ট বের হয়।সে অনেক ভালো রেজাল্ট করে। অার এইদিকে ভর্তি পরীক্ষাও এগিয়ে অাসে।
....
>>কনগ্রাচুলেশন!!(ছেলে)
>>অাবার অাপনি??(ঈশিতা)
>>শোনো এই কয়দিন তোমার সাথে কথা হবে না।তোমার নাম্বার অামার কাছে অাছে।কিন্তু এখন ফোন দিয়ে বিরক্ত করবো না।তুমি অামার চিন্তা মাথা থেকে ঝেরে ফেলে ভালো করে পরীক্ষাটা দাও।
পরীক্ষার পর তোমার সাথে প্রেম করবো।
এটা বলেই ছেলেটা ভোঁ দৌড়।।
....
ভর্তি পরীক্ষা শেষ ঈশিতার।পরীক্ষাট
া অনেক ভালোই হয়েছে।চান্স পাওয়ার ব্যাপারে সে খুবই অাশাবাদী।
পরীক্ষার পর ছেলেটার কথা খুব মনে পড়ছে।সেও দিন দিন ছেলেটার প্রতি দুর্বল হয়ে পড়ে।
কিন্তু ছেলেটাকে পাবে কোথায়??নামও তো জানে না সে ছেলেটার।
ছেলেটা তাকে বলেছিলো পরীক্ষার পর কথা বলবে।
সে অপেক্ষায় থাকে।কেউ ফোনও দেয় না অার দেখাও করতে অাসে না।
তারপরও ঈশিতা অনেক খোঁজাখুজি করে ছেলেটাকে।
কিন্তু কোথাও খুঁজে পায় না।পাবেই বা কী করে নামও তো জানে না,ঠিকানাও জানে না।শুধু দেখলে চিনবে।
এই ভাবে কী কাউকে খুঁজে পাওয়া যায়!!
একসময় সে হাল ছেড়ে দেয়।পড়াশুনায় মন দেয়।
এভাবে সে এখন একজন বড় ডাক্তার।
....
অাপনারা হয়ত এতক্ষণে বুঝতে পারছেন সব।
হ্যাঁ।অাজকের সেই রোগীটাই তার সেই নাম না জানা প্রিয়জন।
যেদিন ঈশিতার ভর্তি পরীক্ষা ছিলো সেদিন বিজয় তার সাথে দেখা করতে অাসছিলো।তখনই সেই দুর্ঘটনার শিকার হয় সে।ঈশিতার সাথে দেখা করার অার সুযোগ মেলে না তার।কীভাবে মিলবে নিজের বাবা-মা কেই তো প্রথম চিনতে পারতো না সে ভালো করে।
....
ঈশিতার কানে একটা কথা বাজছে,"তোমাকে ছাতা দিয়েছিলাম ঐদিন সেটার ঋণ কিন্তু বাকী"
ছেলেটা ভীষণ অদ্ভূত।ঠিক ৬ বছর অাগে যেরকম হুট করে তার জীবনে এসেছিলো,অাবার হারিয়ে গেছে।
এখন অাবার ফিরে এসেছে ঋণের শোধ নেওয়ার জন্য।
....
অনেক রোগীকে এই পর্যন্ত ভালো করেছে সে,এইবার তার অাসল পরীক্ষা।বিজয়ের সেই ছাতার ঋণ শোধ করা হলে এইবার অার বিজয়কে হুট করে হারিয়ে যেতে দেওয়া যাবে না।এই পরীক্ষাটায়ও তাকে যে পাশ করতেই হবে।কারণ বিজয় বলেছিলো,"পরীক্ষার পর তোমার সাথে প্রেম করবো।"
....
....
....................................সমাপ্ত..
 

Users who are viewing this thread

Back
Top