What's new
Nirjonmela Desi Forum

Talk about the things that matter to you! Wanting to join the rest of our members? Feel free to sign up today and gain full access!

Collected দুষ্টু হাসি (1 Viewer)

Pegasus

Member
Joined
Mar 8, 2018
Threads
103
Messages
171
Credits
28,977
সকালের সোনালী রোদ মুখের উপরে এসে পড়লো ৷ বিরক্তি লাগছে,
— বেলা জানালাটা বন্ধ করো ৷
— পারবো না, বেশি দরকার হলে নিজে এসে বন্ধ করেন ৷
এই ফাজিল মেয়েটির জন্য প্রতিদিন আরামের ঘুম হারাম করে ৷ কথা না বলে কানের উপর আরেকটা বালিশ দিয়ে অন্যপাশে ঘুমালাম ৷ তাতে কোন লাভ হবে বলে মনে হয় না৷ ওমনি কানের কাছে এসে বলল,
— এই আপনি বিছানায় হিসু করছেন?? (বেলা)
— মানে??
— আল্লাহ!!! আপনি এত বড় দামড়া ছেলে বিছানায় হিসু করছেন? মাগো এ তুমি কার হাতে তুলে দিলা? যে কি না বিয়ের পরও বিছানায় হিসু করে ৷
— না মানে আআআমি হিসু করি নি (হন্তদন্ত হয়ে উঠে বসলাম)
— তা এগুলা কি শুনি? কি হলো মাথা চুলকাচ্ছেন কেনো??
— এই শোনো ফাইজলামি করবা না, আমি ছোট বেলায়ও কখনো বিছানায় হিসু করি নি ৷
— রাতে স্বপ্নে দেখছেন কিনা বলেন?
— না
— মনে করেন, আপনি আপনার বন্ধুকে বলেন নি? "দোস্ত দাড়া আমি একটু হিসু করে আসি "
— তুমি জানলে কি করে??
— আত্মার মিল বলে কথা ৷ ভাল কথা, লুঙ্গি পরে ঘুমানোর কি দরকার শুনি?
— মানে?
— লুঙ্গির তো কোনো তাল ঠিক থাকে না ৷
— তুমি পরলেও এমন হবে
— এহহ!! কই আমি তো শাড়ি পরি আমার তো কখনো আপনার মতো এমন কোমরের উপর উঠে না ৷
— এই তুমি কিছু দেখোনি তো?
— না দেখে বলছি নাকি? সব দেখেছি ৷
— কি দেখেছো ?
— সব!! আর দেখলেই বা কি আমি তো আপনার বউ না?
— তুমি এখান থেকে যাবা নাকি মাকে ডাকবো?
— একটা সত্যি কথা বলবো?
— কি?
— দেখছেন, এক গ্লাস পানি দিয়ে ঘুম থেকে কিভাবে উঠালাম ৷ এখন থেকে ডাকলে যদি না উঠেন তো, আবার বিছানায় পানি দিয়ে পাশের বাসার ভাবিদের ডেকে দেখাবো ৷ আপনি এত বড় হয়েও বিছানায় হিসু করেন ৷ হি হি হি....ওই ভাবে তাকিয়ে আছেন কেনো? আমার কোন দোষ নাই ৷ রাতে ঘুমের মধ্যে যখন বিড়বিড় করে হিসুর কথা বলছিলেন তখনই এই বুদ্ধিটা মাথায় আসে ৷ হি হি হি
— তুমি যাবা এখান থেকে?
— যাচ্ছি, ফ্রেশ হয়ে খেতে আসেন ৷
—কি হলো, আপনি এখানো টিভি দেখছেন? আর কি সব খেলা দেখছেন? কত বার বলছি সব সময় রোমান্টিক নাটক, মুভি দেখবেন ৷ একটু রোমান্টিক হলে কি খুব ক্ষতি হবে? (বেলা)
— আরে তুমি খেলা সম্পর্কে কিছু বুঝো? (আমি)
— আপনি বউ সম্পর্কে কিছু বুঝেন? এই জন্যই আপনার কপালে মেয়ে জুটে নাই ৷ একটু রোমান্টিক হবে তা না সারাদিন খেলা আর খবর ৷ রোমান্টিক মুভি দেখলে বলে, এতো এ্যাড নাকি তার কাছে বিরক্ত লাগে আরে বাবা এখন যে এ্যাড তাও কত্ত রোমান্টিক এই ছেলেকে কি করে বুঝাবো ?
— এই এত বকবক করছো কেনো? শান্তি মতো খবরটাও শুনতে দিবা নাকি?
— কি বললেন, শান্তি মতো খবর দেখবেন? (হাতের খুন্তিটা নিয়ে টিভির সামনে দাড়ালো)
— টিভি বন্ধ করবেন নাকি এই গরম খুন্তি মুখে পুরে দেবো?
—............
— হা করে কি দেখছেন, যদি ভালো চান তো টিভি বন্ধ করেন ৷
টিভিটা বন্ধ করে সোজা গিয়ে কম্পিউটারে বসলাম
— কি হলো আবার ওইখানে বসলেন যে?
কথা না বলেই খাবার টেবিলে বসলাম ৷
— আম্মা খাবার দাও
— আম্মাকে ডাকার কি আছে? এখন থেকে আমি খাবার দিবো ৷ হুহ
কথা না বলেই খাবার খেয়ে উঠে অফিসে যাওয়ার জন্য রেডি হচ্ছি ৷
— বিশু...
— তোমাকে কত বার বলছি এই নামে ডাকবা না ৷ আমার নাম বিশ্ব!
— বিইইইশ্ব?? এতো বড় নামে আমি ডাকতে পারবো না, কই দিন টাইটা আমি বেধেঁ দিচ্ছি ৷
— না, আমি পারবো
— এতো কথা বলেন কেনো?
বলেই টাই বাঁধতে গিয়ে দেখে সুবিধা পাচ্ছে না
— উফফ!! আপনি এতো লম্বা কেনো? শক্ত হয়ে দাড়িয়ে মাথা নিচু করেন ৷
— হু (আজ আর রক্ষে নেই এই মেয়ের কাছ থেকে মনে মনে বললাম )
সামনে দাড়িয়ে পায়ের উপর পা তুলে দিলো,
— ইশশ!! কতো রোমান্টিক একটা মুহূর্ত তাই না বিশু?
কি হলো ওইভাবে কি দেখছেন?
— এহেম এহেম, আর কতক্ষন লাগবে?
— কি গো বাবু কাশি আসে কেনো?
— চুপ থাকো, অফিসে যাবো তাড়াতাড়ি বাঁধো ৷
— বকবক করেন কেনো এতো? টাই বাঁধতে কি সময় লাগে না নাকি?
— আআআআ.... কি করছো? এইভাবে কি কেউ টাই বাঁধে নাকি? মারা যাবো তো
— ধুর!! অামি কি এসব পারি নাকি?
কখনো কি টাই বেঁধেছি?
— তাইলে টাই বাঁধতে এসেছো কেনো?
— একটা মুভি দেখছি তো, সেখানে কত রোমান্টিক ছিলো আর আপনি? আনরোমান্টিক ছেলে একটা ৷
— কি আমার রোমান্টিক রে, অফিসে দেরি হয়ে যাচ্ছে ৷
— এই শোনেন
— বলো
— আসার সময় আচার নিয়ে আসবেন ৷
— আচার কেনো??
— একটা মুভিতে দেখছি, নায়ওওও
— একদম চুপ সারাক্ষণ শুধু রোমান্টিক মুভি
— এই শোনেন না
— কি?
— মা বলছে তাড়াতাড়ি নাতি-নাতনীর মুখ দেখবে৷
— তো?
— আমার বলতে লজ্জা করছে ৷
— আমার শুনতে রাগ লাগছে ৷
বলেই চলে আসলাম, রাগ লাগছে স্যারের ননস্টপ বকুনি আজও শুনতে হবে ৷ তার জন্য দায়ী এই মেয়েটা ৷ বিয়ের পর পাগলামি আরো বেড়ে গেছে মনে হয় ৷ এই মেয়েটার জন্যই আমি আমার স্বপ্নকন্যাকে হারিয়েছি ৷ এখনো খুজে বেড়াচ্ছি, গালে টোল পড়া সেই মিষ্টি মেয়েটাকে ৷ সেই মিষ্টি মেয়েটাকে খুজতে গিয়ে এই পাগলী মেয়েটাকে পেলাম ৷
অফিসে ঢুকতে যাবো ওমনি কলিক রিয়াজদা বলল,
— এই যে বিশ্ব সাহেব, কি সমস্যা ভাবিকে বাসায় রেখে আসতে ইচ্ছে করে না বুঝি?
— রিয়াজদা খোচা দিয়ে কথা না বললেই না?
— হা হা হা.... স্যার আপনাকে আসা মাত্রই তার সাথে দেখা করতে বলছে ৷
স্যারে ঝাঁঝালো বকুনি সাথে এত্তগুলা কাজ দিয়ে বিদায় করলো ৷ রুম থেকে বের হতে যাবো তখন স্যার বলল,
— বিশ্ব, বিয়ে আমরাও করেছি ৷ ঘরে বউ রেখে আমরাও অফিস করি ৷ সব কিছু ব্যলেন্স করে চলতে হবে বুঝলেন?
— জ্বী স্যার
একগাদা কাজ নিয়ে বাসায় আসলাম, এই কাজ শেষ করতে আমার রাত শেষ হয়ে যাবে ৷ বসে বসে কাজ করতেছি এমন সময় পিছন থেকে বেলা জড়িয়ে ধরলো,
— এই কি হচ্ছে এসব?
— রোমান্টিক ফিলিং হচ্ছে ৷
— বেলা আমার কাজ আছে, কাজ শেষ করি আগে ৷
— কাজের সময় তো রোমান্টিক হতে হয় ৷ তবে জানেন আমার খুব ইচ্ছা ছিলো, আমি রান্না ঘরে কাজ করবো আর আপনি পিছোন থেকে জড়িয়ে ধরে রাখবেন ৷
— হুম
— হুম কি? একটু ভালবাসলে কি এমন হয় শুনি?
— তুমি কি বুঝতে পারছো না আমি তোমাকে ভালবাসি না ৷ তোমাকে শুধু করুনা করেছি মাত্র এর বেশি কিছু না ৷
— আমি আপনার ভালবাসা পেতে চাই না, আমি আপনার অভ্যাস হতে চেয়েছি মাত্র ৷
বেশ কিছুক্ষণ নিরব, হঠাৎ মেয়েটা গম্ভীর হয়ে গেলো ৷ তাকিয়ে দেখি বেলা আয়নার সামনে বসে কাজল দিচ্ছে আর চোখ মুছেই যাচ্ছে ৷
— এই কাঁদছো কেনো? কান্না করার মতো কি এমন বলেছি?
— ........
— কি হলো কোথাও যাবে নাকি?
— ......
কথা না বলেই মোবাইলটা নিয়ে বলল,
— চলেন ছাদে যাবো
— কেনো?
— মন ভালো করতে, আর আপনি তো খুব সুন্দর ছবি তুলতে পারেন ৷ কয়েকটা ছবি তুলে দিন ৷
— কি করে জানলে?
— আপনার স্বপ্নকন্যার কতগুলো ছবি দেখলাম, খুব সুন্দর করে তোলা ৷
কি বলবো বুঝতে পারছি না, ছবি গুলো তুলেছিলাম মনের অজান্তেই ৷ দুজন মুরব্বী রাস্তা পার হতে পারছিলো না ৷ আর স্বপ্নকন্যা তখন দুজনকে দুহাতে ধরে রাস্তা পাড় করে দিচ্ছিলো ৷ আর ছবি গুলো তখন তুলেছিলাম ৷ সেই যে ভার্সিটিতে ঢুকলো, মেয়েটাকে আর খুজে পাই নি ৷ তবে ছবিগুলো বেলা দেখলো কি করে?
ছাদে দাড়িয়ে আছে বেলা, আর আমি ওর ছবি তুলে দিচ্ছি ৷ ধূসর, বেগুনি আর কাল মিশ্রনের শাড়িতে বেশ মানিয়েছে বেলাকে ৷ প্রথম কয়েকটি ছবিতে মন খারাপ থাকলেও পরের ছবিতে তার ছিটেফোঁটাও পাওয়া গেলো না ৷
ছবিগুলো দেখে বলল,
— সত্যি খুব ভাল হয়েছে ছবি গুলো ৷
— হু
— আচ্ছা, আমি স্বপ্নকন্যার থেকে কোন অংশে কম নাকি? ওই মেয়ের গালে একটা টোল পড়ে আর আমার একসাথে দুইটা ৷ হতে পারে ওই বান্দরনী আমার থেকে ফর্সা, তাতে কি আমি কি কম সুন্দর নাকি?
বেলার দিকে তাকালাম, মেয়েটা পারেও বটে ৷ ওর চেহারায় হিংসে হিংসে ভাব আসছে ৷ ইচ্ছে করছে আরেকটু রাগিয়ে দেই ৷ কিন্তু ইগোর কাছে হার মানতে হলো ৷ রুমে চলে আসলাম, তার কিছুক্ষণ পর বেলা ঘরে আসলো, এসেই গুন গুন করে গান গাইছে...
"শাশুড়িমা কয় কেনো রাঁধতে পারো না
স্বামী বারবার কয় ভালবাসতে এসো না
কি করে যে বলি আমার সংসার জীবন
ভালো লাগে না, ভালো লাগে না
সকাল হলেই শাশুড়ি মায়ের ডাকাডাকি
স্বামী আমার করে শুধু রাগারাগি
আমি যদি হইতাম বর, রাগারাগি করতাম না
আমার বউ বলতো আমায় কত্ত ভালো বর"
হাসি আর চেপে রাখতে পারলাম, মেয়েটা আসলেই পাগলি ৷ সেদিন যখন স্বপ্নকন্যাকে খুজতে ভার্সিটিতে ঢুকলাম, সজিবকে সাথে নিয়ে গেলাম ৷ সজিবের বোন নাকি সেই ভার্সিটিতে পড়ে ৷
অনুষ্ঠান হচ্ছে, কোন এক স্যার বক্তৃতা দিচ্ছিলো ৷ অনেকক্ষণ বক্তৃতা দেওয়ার কারনে যখন সবাই বিরক্তি নিয়ে উঠে যাচ্ছিলো, ঠিক তখনি পাগলিটা স্যারকে গিয়ে বলল,
— স্যার প্রিন্সিপল স্যার আপনাকে ডাকছে ৷
বলেই স্যারকে পাঠিয়ে মেয়েটি ছড়া গান ধরলো ৷
যা শুনে যারা উঠে যাচ্ছিল তারা আবার বসে পড়লো ৷ অবাক হয়ে আমিও দাড়ালাম, এতো বড় একটা মেয়ে এই গান? গানটা ছিলো এরকম,
"আম্মু একবার কয় কেনো পড়তে বসো না
আব্বু একবার কয় কেনো লিখতে বসো না
কি করে যে বলি আমার পড়া লেখা
ভালো লাগে না, ভালো লাগে না
সকাল বেলা ঘুম না হতেই ডাকাডাকি
স্কুলে যা স্কুলে, যা কি ঝামেলা
আমি যদি হইতাম মা, বাঁধা নিষেধ করতাম না
আমার ছেলে বলতো আমায় কত্ত ভালো মা.... "
তবে ওর আচরনে বুঝতে পারলাম, খুব দুষ্টু প্রকৃতির ৷
সেদিনকার মতো চলে আসলাম, কিন্তু মনে মনে স্বপ্নকন্যাকে সবসময় খুজে চলেছি ৷ একদিন অফিসে যাওয়ার জন্য বের হলাম ৷ রাস্তায় ফুটপাতে একটি মেয়ে এমন ভাবে বসে আছে মনে হয় খুব কষ্ট পাচ্ছে ৷ কাছে যেতেই দেখি সেই পাগলি মেয়েটি৷
নিঃশ্বাস নিতে পারছে না, সাথে সাথেই ডাক্তারের কাছে নিয়ে গেলাম ৷ পরে জানতে পারি মেয়েটির হাপানির সমস্যা আছে ৷ ইনহেলার সাথে নিতে ভুলে গেছিলো৷
মেয়েটাকে বাসায় পৌছে গিয়ে জানতে পারলাম ৷ ও সজিবের বোন বেলা, আর বেলা সেই ভার্সিটিতে পড়ে ৷ তার মানে স্বপ্নকন্যাকে খুজে পেতে বেশি সমস্যা হবে না ৷
মাঝে মাঝে বেলার সাথে কথা হতো, শুধু স্বপ্ন কন্যার বর্ননা দিতাম ৷ তবে ওর কাছে বর্ননা দিয়ে ফল পেতাম না ৷
একদিন বলেছিলাম,
— কি হলো বেলা, আর কত দিন লাগবে শুনি?
— বিশুদা, সব তো আমার সাথে মিলে গেছে ৷ আপনার স্বপ্ন কন্যার চেয়ে তো আমিই ভালো ৷ ওই মেয়ের একটা টোল আমার পর পর দুইটা, ওই মেয়ের চোখ ছোট ছোট আমারটা বড় ৷ তার চুল ছোট আমারটা অনেক বড়৷ ওই মেয়ের সব দিক দিয়ে আমি এগিয়ে তো আমারে কি আপনার নজরে পড়ে না?
উত্তরে সবসময় চুপ থাকতাম, কারন এই মেয়ের সাথে কথায় কখনো পেরে উঠতাম না ৷
স্বপ্নকন্যার নাম করে কত যে ফুচকা আইসক্রিম খেয়েছে এই মেয়ে তা বলে শেষ করা যাবে না ৷
সজিব একদিন ফোন দিয়ে জানালো, ওর বোনের নাকি বিয়ে ৷ বিয়ের দিন বিয়েটা ভেঙে যায় ৷
তার মূল কারন, বেলার হাপানির সমস্যা ৷ বিয়েটা বেলা ভেঙে দেয়, ওর মা হাপানির সমস্যা না জানিয়ে বিয়ে দিতে চেয়েছিল ৷ বেলা তা প্রকাশ করলো বরের কাছে ৷ ফলসরূপ বিয়েটা ভেঙে যায়৷
মেয়েটি কখনো কোন বিষয় সিরিয়াস ছিলো না ৷
যখন সজিব মান সম্মানের ভয়ে বেলার সাথে আমার বিয়ের কথা বলল, মনে ভিতর একটা সংকোচ কাজ করেছিলো ৷ তখন বেলা হাত ধরে টেনে ওর রুমে নিয়ে বলল,
— বিশুদা বিয়েটা করে নিন, না হলে বাবার ভালবাসার উপর আক্রমন হবে ৷
— মানে?
— ধ্যাত এটাও জানেন না? বাবার হার্ট এ্যাটাক হবে বিয়েটা না হলে আর আপনার স্বপ্নকন্যাকে খুজে দেয়ার দায়িত্ব আমার ৷
সেই থেকে পাগলিটা ঘাড়ে চেপে আছে ৷
..
— ও বিশু, বিশু কোথায় হারিয়ে গেলেন?
শয়তানী মেয়ে বিয়ের পর বিশুদা থেকে "দা" কেটে বিশু বলে ডাকে ৷
— হুম বলো
— আইসক্রিম খেতে ইচ্ছে করছে, চলেন ৷
— পারবো না ৷
— যাবেন কি না? (কোমরে হাত দিয়ে)
— না
— যাবেন না?
— না, ভাল লাগছে না যাও এখান থেকে ৷
ওমনি পাশের বাসার ভাবি এসে বলল,
— ভাবি আপনাকে তো খুব সুন্দর লাগছে৷ কোথাও যাবেন নাকি?
— হ্যা, মার্কেটে যাবো, বিছানার জন্য রেক্সিন কিনতে ৷
— কেনো? আপনাদের ঘরে তো বাচ্চাকাচ্চা নেই যে বিছানায় হিসু করবে৷
ওমনি শোয়া থেকে লাফ দিয়ে উঠে বসলাম, এই পাগলি মান সম্মান সব শেষ করে দিবে ৷ সামনে গিয়ে বেলাকে কাছে টেনে নিয়ে আদুরে গলায় বললাম,
— ভাবি, বউকে নিয়ে ঘুরতে যাবো৷ বেলা আইসক্রিম খেতে চেয়েছে তো তাই আর কি ৷
পাগলিটা মুচকি মুচকি হাসছে,
অবশেষে পার্কে এসে বসলাম, পাগলিটা শাড়ির আঁচল কোমরে পেচিয়ে সাইট ব্যাগ আমার কাছে দিয়ে দুইহাতে দুইটা কোণ আইসক্রিম খাচ্ছে ৷ একবার ডান হাতেরটা মুখে দিচ্ছে আরেকবার বামহাতেরটা ৷ মাঝে মাঝে আমার হাতও কাজে লাগাচ্ছে, মানে কোণ আইসক্রিমের খোসা ছাড়াতে ৷ অনেক কাপল বসে আছে, কেউ কেউ রোমান্স না করে আমাদের দিকে তাঁকিয়ে মুখ টিপে হাসছে ৷ খাওয়া শেষ করে চুপ করে বসে আছে ৷ বাচ্চারা যেমন খাওয়া নিয়ে বায়না করে, আর খাবার পেলে চুপ করে বসে থাকে ৷ বেলা ঠিক সেইভাবেই বসে আছে ৷ ছোট হলে বলতাম, আর কিছু খাবে বাবু?
মেয়েটার সাথে থাকতে থাকতে মেয়েটার মায়ার জালে আটকে যাচ্ছি ৷ কত সরল একদম বাচ্চাদের মতো ৷ সত্যি আস্তে আস্তে বেলা আমার অভ্যাস হয়ে যাচ্ছে ৷
বসা থেকে উঠে দাড়ালাম, এই মেয়ে কোথা থেকে আসলো? কথা বলতে গিয়েও বলতে পারছি না ৷
— এতক্ষণে আসার সময় হলো তোর? (বেলা)
— বেলা আপি আর বইলো না, এই রোহানের জন্যই দেরি হইছে ৷ (আরিসা)
— ও কে?
— তোমাকে তো বলা হয় নি, এই হলো আমার বি এফ রোহান ৷
এবার বেলা বসা থেকে উঠে দাড়ালো ৷ কিছুক্ষণ নিরবতা,
নিজের চোখকে বিশ্বাস করতে পারছি না ৷ আমার স্বপ্নকন্যা আমার সামনে দাড়িয়ে তাও সাথে বি এফ নিয়ে ৷
— আরিসা তুই একটু বস আমি আসছি,
বলেই বেলা আমার হাত ধরে একটু দূরে নিয়ে বলল,
— বলেছিলাম না স্বপ্নকন্যাকে খুজে দিবো? দিলাম তো? আপনার ডায়রিতে যখন ছবিগুলো দেখেছি, তখন বুঝতে পারি আরিসাই আপনার স্বপ্নকন্যা ৷ আর আপনি আরিসাকে খুজছেন ৷
আরিসার সাথে আমার ভাল সম্পর্ক ছিলো ৷ তাই খুজতে সময় লাগলো না৷
আপনি আসলেই বোকা, এতো বোকা কেউ হয় নাকি? আপনার কাছে আরিসার ছবি ছিলো কিন্তু ছবিটা আমাকে দিলেন না কেনো? ছবি যদি থাকতো তাইলে তো এতো কিছু হতোইনা ৷ আর আপনাকে করুনা করতেও হতো না
কি বলবো বুঝতে পারছি না, পাগলিটার চোখ দুটো ছল ছল করছে ৷
ওমনি আরিসা এসে বলল,
— কি হলো বেলা আপি, যিযুকে কি তোমার টোল দেখিয়েই পাগল করলে? খুব তো বলেছিলে আমার টোল দিয়ে পাগল করবো আমার স্বামীকে (আরিসা)
— টোল কেনো? আমি কি তোর থেকে কোন অংশে কম নাকি? আমার স্বামী এমনিতেই ভালবাসে হুহ
বেলার চোখে আবার সেই হিংসে হিংসে ভাব চলে আসলো ৷ মেয়েরা পারেও, কত কাছের বন্ধু আরিসা তাকেও হিংসে করছে ৷এই রকম চেহারায় বেলাকে আরও সুন্দর লাগছে ৷
আরিসাকে বিদায় দিয়ে বাসার দিকে হেটে চলেছি ৷
সাথে আমার পাগলিটা হাটছে ৷ আস্তে করে বেলার হাতটা ধরলাম ৷ অনেক হয়েছে আর কষ্ট পেতে দিবো না বেলাকে ৷ ওমনি বেলা দুষ্টু হাসি দিয়ে বললো,
— আপনি এতো লুইচ্চা কেনো?
— মানে?
— এতোদিন স্বপ্নকন্যার পিছে ঘুরছেন, যেই না দেখলেন ওই মেয়ের বয়ফ্রেন্ড আছে ৷ এখন আমাক হাতটি ধরলেন??
কি বলবো বুঝতে পারছি না, কি করে বুঝাবো যে, "পাগলি তুই আমার সত্যিই অভ্যাস হয়ে গেলি"
"
কোন একদিন জানতে পারি বেলা মা হবে, ভাবতেই কেমন লাগছে, যে বেলার পাগলামিতে পাগল হয়ে যাচ্ছি ৷ সে বেলা আবার আরেকজনের পাগলামি কি করে থামাবে? রাতে বেলা এসে বলল,
— বিশু, ও বিশু
— হ্যা বলো
— ও বিশু, বিশু...
— আরে বলো না?
— তোমার ছেলে চাই না মেয়ে চাই?
— মেয়ে
— না, ছেলে
— না, মেয়ে
— এতো কিছু জানি না যদি মেয়ে হয় তো ডিভোর্স দিবো তোমায় ৷
— এ্যাঁ??
— হ্যাঁ
"
স্কুলের ফাংশনে এসেছি আমি আর বেলা ৷ হ্যা আমাদের মেয়ে হইছে, এই মেয়ে হওয়াতে কম কথা শোনায় নি ৷ এখনো মাঝে মাঝে খোটা দেয় যে,
— তোমার সাথে আমি থাকবো না, তুমি আমায় একটি ছেলের মুখ দেখাতে পারলে না ৷
আমাদের কথামনি গান গাইতে মঞ্চে উঠেছে, সেই গান যেই গানে ওর মাকে খুজে পেয়েছি ৷
ওমনি বেলা বলল,
— এই বিশু
— হু বলো
— বিশু....
— হু
— কি হলো কাকে খুজছো?
— না মানে, এই গানের মাধ্যমেই কথার মাম্মাকে খুজে পেয়েছি
— তো?
— দেখতেছি যদি আমার মেয়ে জামাই আশেপাশে থাকে ৷
— পাগল হলে নাকি? আমার মেয়েটার বয়স মাত্র চার বছর ৷ আর তুমি আমার কথার জামাই খুজছো
— হু
— সত্যি তুমি একটা পাগল
কি করে বুঝাই তোমাদের দুই পাগলিকে সামলাতে গিয়ে নিজেকেই পাগল পাগল লাগে...
:

---------------- সমাপ্ত ----------------
 

Users who are viewing this thread

Back
Top