What's new
Nirjonmela Desi Forum

Talk about the things that matter to you! Wanting to join the rest of our members? Feel free to sign up today and gain full access!

যেভাবে আপনার সন্তানের আত্মবিশ্বাস নষ্ট হচ্ছে! (1 Viewer)

ছোটভাই

Super Moderator
Staff member
Super Mod
Joined
Mar 4, 2018
Threads
776
Messages
51,136
Credits
371,095
Sari
Thermometer
Tomato
Luggage
Luggage
Tomato
পরিবারই একটি শিশুর প্রাথমিক শিক্ষার সবচাইতে নির্ভরযোগ্য স্থান। শিশুর আত্মবিশ্বাস, তার ন্যায়-অন্যায় জ্ঞান এমনকি আত্মসম্মান বোধের মতো মানসিক সকল ব্যাপার পরিবারের লোকজনের মাধ্যমেই গড়ে উঠে। পরিবার তাকে যেভাবে গড়ে তুলবে সে ছোটবেলা থেকেই সেভাবে গড়ে উঠবে এটিই স্বাভাবিক। তাই শিশুদের মানসিক ব্যাপারগুলোর দিকে অভিভাবকের দিতে হবে কড়া নজর। কিন্তু অভিভাবকের না জানার কারণেই সন্তানের মানসিকতা হয়ে যায় পুরোপুরি উল্টো। হয়তো অভিভাবকেরা বুঝতেই পারেন না তাদের করা কিছু কাজেই সন্তানের আত্মবিশ্বাস নষ্ট হয়ে যাচ্ছে ধীরে ধীরে।
57bf4f301600001500bfe812.jpg

১। এটি অনেক সহজ কাজ'- কথাটি বলা
যখন দেখবেন আপনার সন্তান একটি কাজ করতে গিয়ে ভুল করে ফেলছে যা আপনার চোখে অনেক সহজ এবং আপনার মতে তার জন্যও কাজটি সহজ তখন অনেক অভিভাবকই বলে ফেলেন, 'কাজটি তো অনেক সহজ, তুমি পারছ না কেন, চেষ্টা করো পারবে'। অনেকে বলতে পারেন এই কথাটি তো উৎসাহিত করার জন্যই বলা। কিন্তু সমস্যা হলো এই কথাটি একই সাথে নিরুৎসাহিত করার ক্ষমতা রাখে। আপনার কথাটি শিশুটির মনে নিজের প্রতি বিরূপ ধারণার সৃষ্টি করে। সে ভাবে, 'সহজ হলে আমি কেনো পারছি না, আমার ভেতরে সমস্যা আছে, আমার মধ্যেই বুদ্ধি কম'। এতে করে নষ্ট হতে থাকে তার আত্মবিশ্বাস। তাই এই ধরণের কথা না বলে তাকে বলুন, 'কাজটি কঠিন, তুমি যে এতোটুকু পারছ তাই প্রশংসনীয়, আরও চেষ্টা করলে আরও ভালো পারবে'। এতে করে কাজটি করার একটি উৎসাহ তার মধ্যে জন্মাবে।


২। সন্তানের জন্য অতিরিক্ত কিছু করা
নিজের সন্তানের সব কিছু করে দিতে ভালোবাসেন অনেক অভিভাবক। মনে করেন তার সন্তানের যেনো কোনো কিছুতে কষ্ট না হয়। এবং অনেকেই ভাবেন আমার সন্তানকে আমি ভালোবাসি, তার সব কিছুর দায়িত্ব আমার। এই চিন্তাটি কিন্তু খারাপ কিছু নয়। তবে আপনার এই অতিরিক্ত করাটি সন্তানের জন্য খারাপ। আপনার সব কাজ করে দেয়া, তাকে কিছু না করতে দেয়া তার মনে একটি বার্তা পৌঁছে দেয়। আর তা হলো, 'আমি কিছু পারি না, আমাকে দিয়ে কিছু হবে না'। এতে করেই নষ্ট হতে থাকে তার আত্মবিশ্বাস। তারচাইতে নিজের সন্তানের নিজস্ব জিনিসগুলো তাকেই করতে দিন। এবং প্রয়োজনে সংসারের কিছু ছোটোখাটো কাজও তাকে করতে দিন। এতে করে আপনার শিশুটির নিজের প্রতি আত্মবিশ্বাস বাড়বে।

৩। ছোটোখাটো ভুলের জন্য তাদের অনেক বেশি দোষারোপ করা
ভুল মানুষই করে। আর বাচ্চারা তো নতুন করেই সব শিখছে। তাদের চুল হওয়াটা খুবই স্বাভাবিক। কিন্তু আপনি যদি তার সব ছোটোখাটো ভুলের জন্যই তাকে বকা দিতে থাকেন, শাস্তি দিয়ে থাকেন তাহলে তার কোনো কিছু করার স্পৃহা কমে যাবে, এবং নিজের প্রতি বিশ্বাসটিও কমে যাবে। নষ্ট হবে তার আত্মবিশ্বাস। সুতরাং ছোটোখাটো ভুলে তার সাথে খারাপ ব্যবহার না করে তাকে তার ভুল বুঝিয়ে দিন। তাকে দেখিয়ে দিন কোথায় ভুল হচ্ছে এবং তাকে আশ্বাস দিন কাজটি কঠিন হলেও সে পারবে। নিজের সন্তানের আত্মবিশ্বাস উন্নত করার চাবিকাঠি আপনার হাতেই।

সব বাবা-মাকেই সন্তান লালন পালন করতে শাসন করতে হয়। যে শাসন কিনা সন্তানের জন্য আর্শীবাদস্বরূপ। কিন্তু কখনো বাবা-মা মনের অজান্তেই সন্তানকে শাসন করার সময় এমন কিছু বলে ফেলেন, যাতে কোমলমতি শিশুদের মনে অত্যন্ত নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। এজন্য বাবা-মাকে অবশ্যই সন্তানকে শাসন করার সময় সতর্ক হতে হবে। তাই কিছু কথা আছে যা সব সময়ই সন্তানকে বলা থেকে বিরত থাকতে হবে।

৪। তুমি না জন্মালে ভাল হতো
রাগের চূড়ান্ত পযার্য়ে প্রায় অধিকাংশ বাবা-মা তার সন্তানকে বলে বসেন এ কথাটি। যা কিনা শিশুদের মনে মারাত্মক রকমের নেতিবাচক প্রভাব সৃষ্টি করে। এবং সে তার অস্তিত্বকে অপ্রয়োজনীয় ভাবতে শুরু করে ছেলেবেলা থেকেই। এমনকি বড় হওয়ার পরও বহুদিন পর্যন্ত এই বাজে অভিজ্ঞতা তাকে তাড়িত করে।

৫। তোমাকে দিয়ে কিছু হবে না
প্রতিটি মানুষের সীমাবদ্ধতা রয়েছে। আপনার সন্তানেও এর ব্যতিক্রম নয়। সব কাজ সে করতে পারবে এমন কোন বাধ্যবাধকতা নেই। যদি কোনো কাজে ব্যর্থ হয়, তার মানে এই নয় যে তার দ্বারা কোন কাজ হবে না। তাকে সান্ত্বনা দিন। তার সমস্যা খুঁজে বের করে সমাধান করুন।
তোমার ভাই বা আপুর মত হতে পারো না
আপনার সন্তানকে তার অন্যান্য ভাইবোনের সাথে তুলনা করবেন না। আপনার এ মন্তব্য তার ব্যক্তিত্বে খুব বাজে ভাবে প্রভাব ফেলে। নিজের ভেতর হীনমন্যতা সৃষ্টি হয়।


৬। তুমি খুব মোটা/শুকনো
কোন শিশুকে তার স্বাস্থ্য নিয়ে খুব বেশি কথা বলা উচিত নয়। এটি তার মধ্যে নিজের প্রতি আত্মবিশ্বাস কমিয়ে দেয় এবং যে কোনো ধরনের কাজের জন্য সে নিজেকে অক্ষম ভাবতে শুরু করে। তাই শিশুর সাথে শরীরের গঠন নিয়ে কথা বলা থেকে বিরত থাকুন।


আপনার সন্তান কি আত্মবিশ্বাসী?
আসলে আমরা আমাদের সন্তানকে আমাদের স্বপ্নের মতো করে ভাবি। কিন্তু তাদের স্বপ্নের মতো তৈরি করতে যে পরিমাণ কষ্ট ও শ্রম দিতে হয় তা আমরা দিতে চাইনা। এই চাওয়া আর না পাওয়ার মাঝেই আমাদের ছোট্ট পুতুলের মতো সন্তান গুলো হারিয়ে যায়। এলো মেলো হয়ে যায় তাদের জীবন। আসুন এক্ষণই আমরা সাবধান হই ।আমরা গড়ি আমাদের স্বপ্নকে তাদের সাথে নিয়ে ।


যেকোন বাবা-মা চান তার সন্তান আত্মবিশ্বাসী হোক, নিজেকে চিনুক, নিজেকে বিশ্বাস করুক। কিন্তু ছোট্টবেলা থেকে অনেক বেশি আদর, স্নেহ, পরনির্ভরশীলতার কারণে অনেক সময়েই মানুষ বড় হবার পরেও নিজের ওপর বিশ্বাস রাখতে পারেনা এবং পরবর্তীতে এর প্রভাব পড়ে কর্মক্ষেত্রে। বাস্তব জীবনের খুব ছোট্ট আর কঠোর সত্য হচ্ছে মানুষ একা। তাই দিন শেষে নিজের ছোট ছোট কাজের জন্যেও অন্যের ওপর নির্ভর করা কিংবা অন্যের মন্তব্যকে কেন্দ্র করে জীবন যাপন করা কেবল কর্মজীবনেই নয়, ব্যক্তিগত জীবনেও একজন মানুষকে অন্যের চোখে করে তোলে হাস্যকর। তৈরি করে আরো অনেক বেশি হীনমন্ন্যতা! আর তাই এই সমস্যাকে মোকাবেলা করতে ছোটবেলা থেকেই কিছু সহজ কাজ করার মাধ্যমে গড়ে তুলুন আপনার সন্তানকে অনেক বেশি আত্মবিশ্বাসী ও ব্যাক্তিত্ববান হিসেবে।


আমরা নীচের কাজ গুলো করতে পারি সহজেই। ফলে আপানার সন্তান হবে তার স্বপ্নের মতো আর আপনি পাবেন একজন বিকশিত সুন্দর মানুষ।

১। গুরুত্ব দিন পরিবারের ছোট্ট সদস্য হলেও সে যে আপনাদের ভেতরে অনেকটা জায়গা জুড়ে রয়েছে এবং তার উপস্থিতি যে আপনাদের জন্যে অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ সেটা বোঝাতে পারিবারিক যে কোন আলোচনাতেই সন্তানকে রাখুন। তাকেও নিজের মতামত প্রকাশ করার জায়গা দিন।

২। হেরে যেতে দিন: বাবা-মা কখনোই চান না সন্তান হেরে যাক। আর তাই অনেকেই বুক দিয়ে আগলে রাখেন সন্তানকে। সাহায্য করেন জিততে। এটা ঠিক যে বাবা-মা হিসেবে আপনার না ইচ্ছে করতেই পারে যে সন্তান হেরে গিয়ে কষ্ট পাক। কিন্তু মনে রাখবেন যে হারের মাধ্যমেই মানুষ শেখে, বড় হয়। একবার হারলে মানুষ হারকে মোকাবেলা করার শক্তি পায়। বিপদে পড়ার মাধ্যমে মানুষের আরো বেশি মানসিক শক্তি অর্জিত হয় সামনের বিপদকে সরিয়ে দেওয়ার। আর তাই সন্তান কষ্ট পেয়ে কাঁদলে বা হেরে গিয়ে মন খারাপ করলে তাকে সেখান থেকে সরে আসতে না বলে মুখোমুখি হবার সাহস দিন। হয়তো সে আবার হারবে। তারপরও ওকে ওর শক্তিমত্তার উপর বিশ্বাস করার এই প্রক্রিয়ায় আপনার সমর্থনই আপনার সন্তানকে আরও মানসিক ভাবে দৃঢ় করবে।

৩। দায়িত্ব নিতে দিন: আমাদের সমাজে সন্তান কি করবে না করবে সেসবের সিদ্ধান্ত অনেকখানি তার মা-বাবাই নিতে চান। কিন্তু সবচাইতে ভালো হয় যদি আপনার সন্তানকে তার জীবনের সিদ্ধান্ত আপনি নিজেই নিতে দেন এবং বোঝান যে যেহেতু সে এই সিদ্ধান্ত নিজে থেকেই নিয়েছে সুতরাং এর ফলাফলটাও পুরোপুরি তার। এতে করে সন্তান নিজের সিদ্ধান্ত নেবার মতো মানসিক শক্তি অর্জন করবে আর যে কোন কাজের ফলাফল কেমন হতে পারে সে সম্পর্কেও ধারণা পাবে।একই সাথে নিজের কাজের জন্য অন্যকে দোষারোপ করার প্রবণতা থেকে আপনার সন্তান মুক্ত থাকবে।

৪। সাহায্য করতে অনুপ্রেরণা দিন: যেকোন শিক্ষা সেটা ঘর থেকেই শুরু হওয়া উচিত। আর তাই আত্মবিশ্বাস বাড়ানোর জন্যে ঘরের কাজকর্মে সাহায্য করতে অনুপ্রেরণা দিন সন্তানকে। হতে পারে সেখানে প্রতিযোগিতার ব্যাপারও থাকতে পারে। এতে করে আপনার সন্তান কেবল অনেক রকমের কাজই শিখবে না, প্রতিযোগিতামূলক মনোভাব আর সাহায্য করার ইচ্ছাকেও নিজের ভেতরে ধারণ করবে।

৫। চ্যালেঞ্জ করুন: সন্তানকে চ্যালেঞ্জ করুন। হতে পারে সেটা ঘরের কোন ব্যাপারে কিংবা স্কুলের কোন খেলায়। এতে করে সে শিখবে নিজের শক্তিতে কি করে আরো ভালো অবস্থানে যাওয়া যায় এবং তাও আর সবাইকে নিয়ে। আর সে ভালো কিছু করলে সেটাকে উদযাপনও করুন।

৬। কাজের প্রতি মমতা তৈরি করুন: ঘরের ছোটখাটো কাজের ব্যাপারগুলোতে সন্তানকে দায়িত্ব দিন। সেটা হতে পারে বাইরে খেতে যাওয়ার জায়গা পছন্দ করা বা মুভি দেখার মতো বিষয়। এতে করে আপনার সন্তান সিদ্ধান্ত নেওয়ার সুযোগ পাবে।আবার ঘরের যে কোন কাজে নিয়োজিত হতে দিন । প্লেট পরিষ্কার করা থেকে যে কোন কাজ। লক্ষ্য রাখবেন কাজটা সে যেন আন্তরিকতার সাথে মমতার মাধ্যমে করে । এতে আপনার সন্তান ভবিষ্যতে তার ব্যাক্তি জীবনের সব কাজ সুচারু রুপে করার গুন আয়ত্ব করে নিতে পারবে।

৭। শখকে উৎসাহ দিন: সন্তানের অনেক রকমের শখ থাকতে পারে। হতে পারে সেটা ডাকটিকিট সংগ্রহ করা কিংবা বই পড়া। তাকে নিজের শখকে ধরে রাখার ক্ষেত্রে উৎসাহ দিন। এতে করে সে মুক্তভাবে নিজের ইচ্ছেমতন কাজ করতে ও সেই ক্ষেত্রে অন্যদের সাথে প্রতিযোগিতামূলক কাজের মাধ্যমে চারপাশকে আরো ভালো করে জানার সুযোগ পাবে।নিজেকে মেলে ধরার এবং নিজের প্রতিভা বিকাশের এই জায়গাকে আরও উৎসাহ দানের মাধ্যমে ওর সুপ্ত প্রতিভার বিকাশ ঘটাতে সাহায্য করুন। এতে করে আপনার সন্তান একজন ব্যাক্তিত্ববান ও স্বপ্রতিভায় বিকশিত একজন মানুষ হবে।

৮। সন্তানের কথা শুনুন: হতে পারে সেটা ছোট কোন ব্যাপার কিংবা আপনি তার কথা পুরোপুরি বুঝতে পারছেন না। তবুও সন্তানের পুরো কথাটা মনযোগ দিয়ে শুনুন। তার কথা কেউ গুরুত্ব দিয়ে শুনছে এটা বুঝতে পারলে নিজের প্রতি নিজের আত্মবিশ্বাস বাড়বে তার। শুধু তাই নয়, শোনার পাশাপাশি আপনি নিজেও তাদেরকে বলুন আপনার কথাগুলো।

৯। সত্যিটা জানান: আপনার সন্তানের সক্ষমতা ও দুর্বলতা আপনি ভাল জানবেন ।তাই এই ব্যাপার গুলো সহজে তাকে বোঝান। হয়তো আপনার সন্তান অন্যদের চাইতে কিছু একটা কম পারে বা কোন দিক দিয়ে খানিকটা পিছিয়ে আছে। মোটেই তাকে বড় বড় কথা বলে মন ভাল করার চেষ্টা করবেন না। কারণ সেটা হয়তো খানিক সময়ের জন্যে তার মন ভালো করে দেবে। বরং এর চাইতে তাকে সত্যিটা বলুন যে আসলেই সে খানিকটা পিছিযে রয়েছে সেই ব্যাপারটাতে বন্ধুদের চাইতে এবং আরেকটু চেষ্টা করলে সে অনেক বেশি ভালো করতে পারবে। এমন কি তার বন্ধুদেরও চেয়েও ভাল করতে পারবে।

১০। তুলনা করা বন্ধ করুন: ভালো বা খারাপ কারো সাথেই সন্তানের তুলনা করতে যাবেন না । এটা কেবল সন্তানকে অনেক সময় কষ্টই দেয়না বরং নিজেকে ছোটো ভাবতে শেখায়।আবার যে কোন ভাল কাজের অতি প্রশংসা করবেন না এতে করে প্রশংসার অন্ধকারে তলিয়ে যেতে পারে। যেখান থেকে সে নিজে কখনো বেরিয়ে আসতে পারবেনা । আর তাই কেবল অন্য কারো ভালো বা খারাপ অবস্থানের কথা উল্লেখ করুন। তুলনা নয়। যে কোন কাজের ভাল বা খারাপ ফলাফলের প্রাপ্তির কারন উদাহরণ হিসেবে তুলে ধরুন। এই উদাহরনের শিক্ষাটা ওকে বুঝে নিতে দিন।
 

Users who are viewing this thread

Back
Top