What's new
Nirjonmela Desi Forum

Talk about the things that matter to you! Wanting to join the rest of our members? Feel free to sign up today and gain full access!

ওইজা বোর্ড (অজানাকে জানার অলৌকিক খেলা) : ভিন্ন জগতে প্রবেশদ্বার নাকি নিছক খেলা (1 Viewer)

SoundTrack

Board Senior Member
Elite Leader
Joined
Mar 2, 2018
Threads
530
Messages
13,427
Credits
283,450
Recipe pizza
Loudspeaker
"জিজ্ঞাসা" মানুষের জন্মগত এই অভ্যাস মানুষকে দিয়েছে অনন্য সব সমাধান। "আপেল কেন নিচে পরে" নিউটনের এই জিজ্ঞাসাই আমাদের দিয়েছে মহাকর্ষণের ধারনা। নানা শতাব্দীতে অনেক জটিল সব সমস্যার উত্তর আমরা পেয়েছি এই অভ্যাসের জন্য। গুরুজন, বন্ধু, বই কিংবা ইন্টারনেট আমাদের মোটামুটি সব জিজ্ঞাসার বা প্রশ্নের জবাব পেয়েই যাই। কিন্তু এই বিশাল জ্ঞান ভান্ডারে কি তুষ্ট মানব মস্তিষ্ক? বিজ্ঞান ভিত্তিক গবেষণায় নতুন দিক নিত্যদিন সামনে আসছেই, এতেও কি জানার অবসান? জানার ইচ্ছেটা যদি থাকে পরলোক কিংবা মৃত কোন ব্যক্তি সম্পর্কে! ফোনে তো জীবিত যে কারো সাথে যোগাযোগ করাই যায়, কিন্তু যোগাযোগের ইচ্ছেটা হয় মৃত কোন ব্যক্তির সাথে। তখনি চলে আসে টকিং বোর্ড কিংবা "ওইজা বোর্ড"এর নাম।

মৃত ব্যক্তির সাথে কিংবা সহজ ভাষায় আত্মার সাথে যোগাযোগ স্থাপন করতে অনেকে উইজক্রাফটিং কিংবা তন্ত্র সাধনা করে থাকেন। কিন্তু এই দুই পদ্ধতি অনেক সময় সাপেক্ষ এবং কঠিন অনুশীলনেই আয়ত্ত করা সম্ভব। পক্ষান্তরে ওইজা বোর্ড যখন তখন আত্মার সাথে আপনার যোগাযোগ করিয়ে দিতে পারে। দোকান থেকে কেনা ওইজা বোর্ড না থাকলেও সমস্যা নেই। একটি বড় কাগজে ইংরেজি A-Z, সংখ্যায় 0-9, yes, no, hello(ক্ষেত্র বিশেষে নাও থাকতে পারে) এবং goodbye লিখে বাড়িতেই বানিয়ে নিতে পারেন ওইজা বোর্ড। হার্ট আকৃতির মিডিয়াম প্লেনচ্যটের পরিবর্তে ব্যবহার করতে পারেন কাঠের পাতলা ছোট টুকরা কিংবা পয়সা।

uDpaU2B.jpg


ওইজা শব্দটি এসেছে প্রাচীন মিশরীয় ভাষা থেকে, যার অর্থ "সৌভাগ্য"। ওইজা (মূল শব্দ ouija) Hasbro, Inc কোম্পানির ট্রেডমার্ক, টকিং বোর্ড হিসেবে ওইজা নামেই জনপ্রিয়তা পাওয়ার পর ওইজা বোর্ড নামেই মানুষ এই বোর্ডকে চিনতে থাকে। এলিজা বোন্ড (Elijah Bond) নামের এক ব্যবসায়ী ১৮৯০সালে জুলাইয়ের ১তারিখ প্রথম বারের মত বাণিজ্যিক ভাবে ওইজা বোর্ড বাজারে আনে। কিন্তু এর জনপ্রিয়তার ব্যাপ্তি ঘটে প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সময়। অধ্যাত্মবাদী পার্ল কিউরান (Pearl Curran) প্রথম বিশ্বযুদ্ধ চলাকালীন সময় ওইজা বীর্ডকে ভবিষৎবাণী করার মাধ্যম হিসেবে ব্যবহার করেন, এবং এর মাধ্যমেই ওইজার নাম বিশ্বময় ছড়াতে থাকে। যুদ্ধে আপনদের হারিয়ে তাদের আত্মার সাথে কথা বলতে বেছে নেয় ওইজা বোর্ড। এমন কি যদি হারিয়ে যাওয়া আপনদের আত্মা ডাকতে ব্যর্থ হলে তারা আশ্বস্ত হতেন যে কোথাও না কোথাও তারা আজো বেচে আছে। বর্তমানে অনেকেই ওইজা বোর্ডকে সাধনা হিসেবে নিলেও তরুন তরুণীদের মাঝে কৌতুহলের বশে এর ব্যবহার বেশি দেখা যায়। কতিপয় বন্ধুবান্ধব মিলে নেহায়েত খেলার ছলে ওইজা বোর্ডের ব্যবহার সাধারণত দেখা যায়।

ওইজা বোর্ড নিয়ে নানান লোকের নানান অভিজ্ঞতার কথা শোনা যায়, প্রতিটা অভিজ্ঞতাই ভিন্ন কিন্তু তার শর্তেও প্রতিটা ঘটনা মূলত একেই রকম। প্রতিটি ঘটনার সময়কাল সাধারণত রাতেই হয়ে থাকে (রাতের আধারেই ওইজা বোর্ডের নাকি আসল মজা)। কয়েকজন একত্রিত হয়ে ওইজা বোর্ডের চারপাশে গোল গয়ে বসে প্লেনচ্যাট বা মিডিয়ামের উপর আঙুল রেখে মনকে বোর্ডে কেন্দ্রীভূত করে শুরু হয় আত্মা ডাকা। কিছুক্ষন পর প্রাণহীন মিডিয়ামটি নিজে নিজেই নড়তে শুরু করে। একটুআধটু নয়, রিতিমত পুরো বোর্ড জুড়ে ছুটাছুটি করতে থাকে। যারা হাত দিয়ে ধরে রেখেছে তারা কেউ নাড়াচ্ছে না, অথছো মিডিয়ামকে যে প্রশ্নই করা হয় তার সে সঠিক জবাব দিয়ে যায় অনবরত। কথা বলা শেষ হলে goodbye লেখার উপর মিডিয়াম রেখে আত্মা ফিরেযায় তার দুনিয়ায়।

ryYMkKW.jpg


আত্মা আসলো সব প্রশ্নের উত্তর দিয়ে চলে গেল, এমন সব কথা বলে গেল যার উত্তরটা দেয়া সহজ না বা যদি কেউ ইচ্ছে করে মিডিয়াম নাড়িয়ে থাকে তার জানার কথা না। আর কেই বা নাড়াবে মিডিয়াম? উত্তরটা হলো ওইজা বোর্ড ব্যবহার করায় অংশগ্রহণকারীদের অবচেতন মন। আসলে ওইজা বোর্ড খেলাটার ভিত্তি হলো ইডেমটর ইফেক্ট (ideomotor effect)। ওইজা বোর্ড ব্যবহারের সময় যতই বলা হোক নিজেকে শান্ত রাখতে আসলে তখন মস্তিস্কে চাপ বাড়তে থাকে এবং মানুষের মনে অল্প হলেও আশা থাকে যে আত্মা আসবেই, আর প্রশ্নগুলো সাধারণত এমনেই করা হয় যার উত্তর উপস্থিত কেউ না কেউ জানে। ইচ্ছা করে কেউ না নাড়ালেও যেহেতু মস্তিষ্ক চাইছে অলৌকিক কিছু একটা দেখতে এবং উত্তরটা মস্তিস্ক জানে তাই কিছুক্ষণ পর মস্তিষ্ক ধিরে ধিরে মিডিয়ামের মাধ্যমে উত্তর দিতে থককে। যে নাড়াচ্ছে সে কখনই বোঝে না আসলে কি ঘটছে কারণ সম্পূর্ণ ঘটনাটি অবচেতন মনের খেলা।

ডিক ব্রোক্স (Dick Brooks), জেনি রোবার্টস (Jane Roberts) কিংবা জেমস মেরিল (James Merrill) দের মতন বিখ্যাত ওইজা বোর্ড অনুশীলন কারিদের কাছে বিজ্ঞানের এই ব্যাখ্যা ভিত্তিহীন। জেমস মেরিলের মতে ওইজা বোর্ডের মাধ্যমে আত্মা ডেকে তিনি নিজের দেহেও ধারন করতেন, এবং মৃত্যুর পূর্বে তিনি এই ভয়াল খেলা থেকে সবাইকে দূরে থাকতে বলেন। কেউ কেউ বিজ্ঞানকেই প্রাধান্য দেয়, কেউ বিজ্ঞানকে না মেনে অজানা কে জানার জিজ্ঞাসা নিয়ে শুরু করে ওইজা অনুশীলন। তাদেরি বা দোষ কোথায়, ওইজা নিয়ে এমন কিছু অভিজ্ঞতা শোনা যায় যার ব্যাখ্যা আজো পাওয়া যায় নি।
 

Users who are viewing this thread

Back
Top