সেনসজি মন্দির
কমবেশি ছোট-বড় সবারই পছন্দ নানান রকম সুশি। এই সুশি পৃথিবীর নানান প্রান্তে ছড়িয়েছে জাপানিদের হাত ধরে। যদিও আজকাল কমবেশি সব জায়গায় পাওয়া যায় সুশি। এর সৃষ্টিস্থল হলো জাপান। শুধু সুশি নয়, জাপানের মতো অত্যন্ত সুন্দর দেশটিকে জানা যায় তাদের অত্যন্ত জনপ্রিয় সেনসজি টেম্পল এবং চেরি ফেস্টিভ্যালের জন্যও।
জাপানকে জানা
জাপানে চেরি ব্লসম
যেকোনো খাবারের বিষয়ে জানতে গেলে, সবার আগে জানতে হয়, সেটি কোথা থেকে উদ্ভাবিত। সুশি হলো জাপানির রসনার নান্দনিক বিশেষত্ব। যদিও সুশি তৈরি হয় এক বিশেষ প্রক্রিয়ায়। তার উপকরণ বদলাতে থাকে স্বাদ অনুযায়ী। জাপানি সংস্কৃতিতে খাবার ও বিশ্বাস খুব জরুরি এবং বিশ্বাসের এক অমোঘ দৃষ্টান্ত হলো সেনসজি টেম্পল। এটি অবস্থিত জাপানের টোকিও শহরে। এই ধর্মস্থানের নির্মাণও বৌদ্ধ নিয়ম মেনে। এই সেনসজি মন্দির জাপানের ইতিহাসের এক অমূল্য রতন। এ রকম সুন্দর নির্মাণ বোধ হয় জাপানে আর কোথাও নেই। এই মন্দির ছিল টেন্ডাই বৌদ্ধদের অধীন। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর এটা তাদের দখলমুক্ত হয়।
জাপানে চেরি ব্লসম এবং সেনসজি মন্দির খুবই জনপ্রিয়। আমরা জাপানের সভ্যতা, শহর ও আদবকায়দার ব্যাপারে দ্বিতীয় পর্বে কথা বলব। ১৮ জুন যেহেতু আন্তর্জাতিক সুশি দিবস, তাই আগে সুশির নিয়ে কথা বলাই শ্রেয়।
আজ ১৮ জুন। আন্তর্জাতিক সুশি দিবস। সুশিপ্রেমিকেরা আমার সঙ্গে একমত হবেন যে সুশি হলো এক অত্যন্ত সুস্বাদু পদ। অন্যান্য রকমারি খাবারের থেকে বেশ কিছুটা ভিন্ন। এতে নেই খুব বেশি তেল বা মসলা। বরং শরীরের জন্য খুবই ভালো। যদিও সুশি তৈরির একটা বিশেষ পদ্ধতি আছে। আজকাল খুব সহজেই অনেক রেস্তোরাঁয় সুশি পাওয়া যায়। যাঁরা নিয়মিত সুশি খান এবং নানা জায়গায় খেয়েছেন, তারা জানবেন যে সুশি আজকাল নানা রকমভাবে, নতুন নতুন উপায়ে তৈরি হচ্ছে। অথচ সুশির রয়েছে নানা ধরন আর বিশেষত্ব।
১. মাকিজুশি: নামটা খটোমটো হলেও খেতে অনবদ্য। এর প্রাথমিক উপকরণ হলো আমাদের সবার প্রিয় সাদা ভাত এবং নানা রকম সবজি। যদিও এটি বানানোর উপায়টি সাধারণ বাঙালি নিয়মের থেকে অনেকটা আলাদা। ভাত ও সবজিটি খুব সুন্দরভাবে একটি শিট বা নোরি শিটের ভেতরে মুড়িয়ে তৈরি হয় সুশি। এটি তৈরি করতে গেলে শেখাটা খুব জরুরি।
সাশিমি
২. সাশিমি: এটি আরেকটি খুব জনপ্রিয় ধরনের সুশি। এটার প্রধান উপকরণ কাঁচা মাছ। সাশিমি বানাতে যথেষ্ট কষ্ট করতে হয়। শিখতে তার চেয়ে বেশি সময় লাগে। কিন্তু এটি বলাই বাহুল্য যে, সাশিমি সুশি খেতে অত্যন্ত উপাদেয় আর ভিনেগারের স্বাদটা অপূর্ব। আপনার স্বাদ অনুযায়ী আপনি সাশিমিতে কাঁচা এবং রান্না করা মাছ দুটোই ব্যবহার করতে পারেন। যদিও প্রাথমিকভাবে সাশিমির উৎপত্তি হয় কাঁচা মাছ দিয়েই। এটিও মাকিজুশির মতোই সুশি শিটের মধ্যে দিয়ে রোল করে তৈরি করা হয়।
৩. নিগিরি: প্রাথমিকভাবে জাপানে এই তিন রকম সুশির প্রচলন সবচেয়ে বেশি। অন্যান্য সুশি ভাইবোনদের মতোই নিগিরি সুশির প্রাথমিক উপকরণ হচ্ছে ভাত ও মাছ। যদিও এ ক্ষেত্রে তৈরির প্রথাটা একটু অন্য রকম। নিগিরি সুশির ক্ষেত্রে মাছ ভেতরে না দিয়ে সুশির ওপর টপিং হিসেবে ব্যবহার করা হয়। এটি খেতে অত্যন্ত সুস্বাদু এবং জাপান ছাড়া বিশ্বের নানা প্রান্তেও এটি অত্যন্ত জনপ্রিয়।
INA PLAVAN
শুধু আমিষ নয়, সুশি এখন পাওয়া যায় ভেগান রূপেও। শুনে অবাক হচ্ছেন, তাই না? এখন আপনি চাইলেই কোনো রকম ভাত বা মাছ–মাংস ছাড়াও সুশি খেতে পারেন। এদের মধ্য থেকে খুব সুস্বাদু একটি প্রকার হলো কিনোআ, ম্যাঙ্গো, অ্যাভাকাডো ও ক্যারোট সুশি।
ভেগান সুশি
সুশি যদি আপনারও প্রিয় খাবার হয়, তাহলে আজকের দিনটি আপনার জন্য সত্যিই খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তাই আপনার প্রিয় জায়গা থেকে এক প্লেট সুশি নিয়ে দিনটি পালন করতে ভুলবেন না কিন্তু!
লেখক: শুভব্রত মৈত্র | ফুড কলামিস্ট, ফুডিটক্স | ছবি: কাস্টম ডিজিটাল