What's new
Nirjonmela Desi Forum

Talk about the things that matter to you! Wanting to join the rest of our members? Feel free to sign up today and gain full access!

সূরা ফাতিহার ফযীলত ও বৈশিষ্ট্য (1 Viewer)

arn43

Co-Admin
Staff member
Co-Admin
Joined
Mar 2, 2018
Threads
1,615
Messages
121,990
Credits
324,673
DVD
Whiskey
SanDisk Sansa
SanDisk Sansa
Computer
Glasses sunglasses
সূরা ফাতিহার ফযীলত ও বৈশিষ্ট্য


ভূমিকা :

আল-কুরআন আল্লাহর বাণী, যা জিবরাঈল (আঃ) মারফত সুদীর্ঘ ২৩ বছরে আল্লাহ তা‘আলার পক্ষ থেকে আমাদের প্রিয় নবী মুহাম্মাদ (ছাঃ)-এর প্রতি অবতীর্ণ হয়। আল-কুরআনকে আল্লাহ রাববুল আলামীন সকল মানুষের সার্বিক কল্যাণ ও মুক্তির দিশারী বা পথপ্রদর্শক রূপে নাযিল করেছেন। আল-কুরআনের ভূমিকা হ’ল সূরাতুল ফাতিহা। এটিকে আবার আল-কুরআনের সারসংক্ষেপও বলা হয়। তাই সূরা ফাতিহা পবিত্র কুরআনের একটি গুরুত্বপূর্ণ সূরা। আলোচ্য নিবন্ধে এ সূরার ফযীলত ও বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে আলোচনা করা হ’ল।-
 
সূরা আল-ফাতিহার নামকরণ :

পবিত্র কুরআনের সূরাগুলোর নামকরণ আল্লাহ তা‘আলার নির্দেশিত বিষয়। মূলত এ নামগুলো গোটা সূরার নিদর্শন বা প্রতীক মাত্র। পবিত্র কুরআনের সূরাগুলোকে সম্পূর্ণ ভিন্ন প্রেক্ষাপটে এবং এক সূরাকে অন্য সূরা থেকে পৃথককরণের লক্ষ্যে একটি বিশেষ নাম দেয়া হয়েছে। সূরা ফাতিহার নামও অনুরূপ একটি। যা আল্লাহ তা‘আলার নির্দেশেই রাখা হয়েছে। সূরা ফাতিহার অনেক নাম রয়েছে, যা নিম্নে আলোচনা করা হ’ল :
ইমাম বুখারী (রহঃ) বলেন, সূরাটির নাম ‘উম্মুল কিতাব’ এজন্য রাখা হয়েছে যে, এই সূরার মাধ্যমেই পবিত্র কুরআনের সংকলনকার্য শুরু করা হয়েছে এবং এই সূরা পাঠের মাধ্যমে ছালাত আদায় করা হয়ে থাকে। (তাফসীর কুরতুবী (বৈরুত : দারুল কিতাবিল ‘আরাবী, ১৪২৪ হিঃ/২০০৪ খৃঃ), ১/১৫০।) সূরা ফাতিহাকে উম্মুল কুরআন এজন্য বলা হয়েছে যে, এটা দিয়েই কুরআন শুরু হয়েছে এবং এর মধ্যে সমস্ত ইল্ম শামিল রয়েছে’ (কুরতুবী)। ‘ফাতিহাতুল কিতাব’ ‘উম্মুল কুরআন’ ‘আস-সাব‘উল মাছানী’সহ এই সূরার অন্যূন ৩০টি নাম পবিত্র কুরআন ও বিভিন্ন হাদীছে ছহীহ ও মুরসাল সূত্রে বর্ণিত হয়েছে। যেমন- ফাতিহাহ্, ফাতিহাতুল কিতাব, ফাতিহাতুল কুরআন, উম্মুল কিতাব, উম্মুল কুরআন, আসাসুল কুরআন, সূরাতুল হাম্দ, শুক্র, কাফিয়াহ, ওয়াফিয়াহ, আস-সাব‘উল মাছানী, মিন্নাহ, দু‘আ, আল-কুরআনুল ‘আযীম (আহমাদ হা/৯৭৮৭, সনদ ছহীহ।), সাওয়াল, মুনাজাত, তাফভীয, মাসআলাহ, শিফা, শা-ফিয়াহ (মিশকাত হা/২১৭০, সনদ যঈফ।), রুক্বিয়াহ, রা-ক্বিয়াহ, ছালাত, কান্য, নূর, ওয়াক্বিয়াহ, আল-হাম্দুলিল্লাহ, ইল্মুল ইয়াক্বীন, সূরাতুল হাম্দিল ঊলা, সূরাতুল হাম্দিল কুছরা। উল্লেখ্য, ছহীহ হাদীছ দ্বারা প্রমাণিত সূরা ফাতিহার নাম সমূহ হচ্ছে-
(১) সূরাতুল হামদ
(২) উম্মুল কুরআন
(৩) উম্মুল কিতাব
(৪) আস-সাব‘উল মাছানী
(৫) সূরাতুছ ছালাত
(৬) আল-কুরআনুল আযীম
(৭) সূরাতুল ফাতিহা
(৮) সূরাতুর রুকইয়া।

(আব্দুস সাত্তার দেহলভী, তাফসীরে সূরায়ে ফাতিহা (করাচী : মাকতাবা আইয়ূবিয়াহ, ৪র্থ সংস্করণ, ১৩৮৫/১৯৬৫), পৃঃ ৬৮-৯২। গৃহীত : ‘খাযীনাতুল আসরার’, ‘আল-ইতক্বান’ ও ‘আদ-দীনুল খালিছ’।)
প্রকাশ থাকে যে, পবিত্র কুরআনের সূরা সমূহের এক বা একাধিক নামকরণ, মাক্কী ও মাদানী সূরার আগে পিছে সংযোজন ও আয়াত সমূহের বিন্যস্তকরণ সবকিছু ‘তাওক্বীফী’ অর্থাৎ আল্লাহর ‘অহি’ কর্তৃক প্রত্যাদিষ্ট ও রাসূল (ছাঃ) কর্তৃক সন্নিবেশিত, যা অপরিবর্তনীয়। (মুত্তাফাক্ব আলাইহ, মিশকাত হা/২০৯৮-৯৯; বুখারী হা/৪৫৩৬; তাফসীর কুরতুবী ১/৬০।)
 
সূরা ফাতিহার বৈশিষ্ট্য :

সূরা আল-ফাতিহা কুরআনের একটি বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ সূরা। প্রথমত এ সূরা দ্বারাই পবিত্র কুরআন মাজীদ আরম্ভ হয়েছে এবং এ সূরা দ্বারাই সর্বশ্রেষ্ঠ ইবাদত ছালাত আরম্ভ হয়। অবতরণের দিক দিয়ে পূর্ণাঙ্গ সূরারূপে এটিই প্রথম নাযিল হয়। সূরা আলাক্ব, মুযযাম্মিল ও সূরা মুদ্দাছছিরের ক’টি আয়াত অবশ্য সূরা ফাতিহার পূর্বে অবতীর্ণ হয়েছে। কিন্তু পূর্ণাঙ্গ সূরারূপে এ সূরার অবতরণই সর্বপ্রথম।

কুরআনের অবশিষ্ট সূরাগুলো প্রকারান্তরে সূরা ফাতিহারই বিস্তারিত ব্যাখ্যা। কারণ সমগ্র কুরআন প্রধানতঃ ঈমান এবং নেক আমলের আলোচনাতেই কেন্দ্রীভূত। আর এ দু’টি মূলনীতিই এ সূরায় সংক্ষিপ্তাকারে বর্ণনা করা হয়েছে। তাই এ সূরাকে ছহীহ হাদীছে উম্মুল কুরআন, উম্মুল কিতাব, কুরআনে আযীম বলেও অভিহিত করা হয়েছে’।
(কুরতুবী ১/১৪৮-৪৯।) এ সূরার আরো কিছু বৈশিষ্ট্য নিম্নে পেশ করা হ’ল।-

(১) এই সূরা কুরআনের সর্বাধিক মর্যাদামন্ডিত সূরা। তাওরাত, যবূর, ইনজীল, কুরআন কোন কিতাবে এই সূরার তুলনীয় কোন সূরা নেই।
(আহমাদ, বুখারী, তিরমিযী, মিশকাত হা/২১৪২।)

(২) এই সূরা এবং সূরায়ে বাক্বারাহর শেষ তিনটি আয়াত হ’ল আল্লাহর পক্ষ হ’তে প্রেরিত বিশেষ নূর, যা ইতিপূর্বে কোন নবীকে দেওয়া হয়নি। (মুসলিম হা/৮০৬ অধ্যায়-৬, ‘সূরা ফাতিহার ফযীলত’ অনুচ্ছেদ-৪৩, মিশকাত হা/২১২৪।)
 
(৩) যে ব্যক্তি ছালাতের মধ্যে সূরা ফাতিহা পাঠ করল না, তার ছালাত অপূর্ণাঙ্গ (خِدَاجٌ)। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) এই কথাটি তিনবার বলেন। রাবী হযরত আবু হুরায়রা (রাঃ)-কে জিজ্ঞেস করা হ’ল, যখন আমরা ইমামের পিছনে থাকি? জওয়াবে তিনি বলেন, ‘তুমি তখন ওটা চুপে চুপে পড়’। (মুসলিম, নাসাঈ, মিশকাত হা/৮২৩।) ইবনু কাছীর (রহঃ) বলেন, ‘এই সূরার নাম ‘ছালাত’ (الصلاة) বলা হয়েছে একারণে যে, ছালাতের জন্য এটি পাঠ করা শর্ত’ (ঐ, তাফসীর)।

(৪) আবু সা‘ঈদ খুদরী (রাঃ) বলেন, একদা এক সফরে আমাদের এক সাথী জনৈক গোত্রপতিকে শুধুমাত্র সূরায়ে ফাতিহা পড়ে ফুঁক দিয়ে সাপের বিষ ঝাড়েন ও তিনি সুস্থ হন...
(বুখারী হা/৫৪০৫।) এজন্য এ সূরাকে রাসূল (ছাঃ) ‘রুক্বইয়াহ’ (الرُّقْيَةُ) বলেছেন। (বুখারী হা/৫৭৩৬, মুসলিম হা/২২০১ ‘সালাম’ অধ্যায়; তাফসীর কুরতুবী, ইবনু কাছীর।)

(৫) ইমাম আবু আব্দুল্লাহ মুহাম্মাদ বিন আহমাদ আল-কুরতুবী (মৃঃ ৬৭১হিঃ) বলেন, সূরায়ে ফাতিহাতে যে সকল ‘ছিফাত’ রয়েছে, তা অন্য কোথাও নেই। এমনকি একেই ‘আল-কুরআনুল আযীম’ বা মহান কুরআন বলা হয়েছে
(হিজর ১৫/৮৭)।

এই সূরার ২৫টি কালেমা কুরআনের যাবতীয় ইল্মকে শামিল করে। এই সূরার বিশেষ মর্যাদা এই যে, আল্লাহ এটিকে নিজের ও নিজের বান্দার মধ্যে ভাগ করে নিয়েছেন। একে বাদ দিয়ে আল্লাহর নৈকট্য লাভ করা সম্ভব নয়। সেজন্যই একে ‘উম্মুল কুরআন’ বা ‘কুরআনের সারবস্ত্ত’ বলা হয়েছে। পবিত্র কুরআন মূলতঃ তিনটি বিষয়ে বিভক্ত। তাওহীদ, আহকাম ও নছীহত। সূরায়ে ইখলাছে ‘তাওহীদ’ পূর্ণাঙ্গভাবে থাকার কারণে তা কুরআনের এক তৃতীয়াংশের মর্যাদা পেয়েছে। কিন্তু সূরায়ে ফাতিহাতে তিনটি বিষয় একত্রে থাকার কারণে তা ‘উম্মুল কুরআন’ হওয়ার মহত্তম মর্যাদা লাভে ধন্য হয়েছে। (তাফসীর কুরতুবী ১/১৪৮-৪৯।)
 
আমি আজ নতুন জয়েন করেছি আশাকরি সাথে থাকবেন

সব সময়ই পাশে আছি, মামা। যে কোনো প্রয়োজনে বিনা দ্বিধায় ডাকবেন আশা করি...
ধন্যবাদ !
 
সূরা ফাতিহার ফযীলত :

এ সূরার ফযীলত অপরিসীম। এর ফযীলত সম্পর্কে অনেক হাদীছ বর্ণিত হয়েছে। তন্মধ্যে কয়েকটি এখানে পেশ করা হ’ল-

(১) উবাই ইবনু কা‘ব (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেছেন, ‘আল্লাহ উম্মুল কুরআনের মত তাওরাত ও ইঞ্জীলে কিছু্ নাযিল করেননি। এটিকেই বলা হয়, ‘আস-সাব‘উল মাছানী’ (বারবার পঠিত সাতটি আয়াত), যাকে আমার ও আমার বান্দার মধ্যে বণ্টন করা হয়েছে। আর আমার বান্দার জন্য তাই রয়েছে, সে যা চাইবে’।
(নাসাঈ হা/৯১৪; আহমাদ; ৮৪৬৭; তিরমিযী হা/৩১২৫; দারেমী হা/৩৩৭৩।)

(২) সাঈদ ইবনু মু‘আল্লা (রাঃ) হতে বর্ণিত, তিনি মসজিদে ছালাত আদায় করছিলেন, তখন রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) তাকে ডাক দিলেন। কিন্তু তিনি তাঁর ডাকে সাড়া দিলেন না। অতঃপর ছালাত শেষে এসে বললাম, হে আল্লাহ্র রাসূল (ছাঃ)! আমি ছালাত আদায় করছিলাম। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বললেন, আল্লাহ কি বলেননি, হে বিশ্বাসীগণ! তোমরা আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের ডাকে সাড়া দাও, যখন তোমাদেরকে ডাকা হয়?’ (আনফাল ২৪)। অতঃপর আমাকে বললেন, মসজিদ থেকে তোমার বের হওয়ার পূর্বেই আমি তোমাকে অবশ্যই কুরআনের সবচেয়ে মহান সূরাটি শিক্ষা দিব। অতঃপর তিনি আমার হাত ধরলেন। যখন তিনি মসজিদ থেকে বের হ’তে চাইলেন, তখন আমি তাকে স্মরণ করিয়ে দিলাম, আপনি কি আমাকে বলেননি যে, তোমাকে আমি কুরআনের সবচেয়ে মহান সূরাটি শিক্ষা দিব? রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেন, সূরাটি হচ্ছে الْحَمْدُ لِلَّهِ رَبِّ الْعَالَمِيْنَ এটিই সাবউল মাছানী এবং কুরআনুল আযীম যা আমাকে দেয়া হয়েছে’। (নাসাঈ হা/৯১৪; আবুদাঊদ হা/১৪৫৮; ইবনু মাজাহ হা/৩৭৮৫; আহমাদ হা/১৫৩০৩; দারেমী হা/১৪৯২।)
 
(৩) আবু হুরায়রা (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেছেন, যে ব্যক্তি ছালাত আদায় করল, আর সূরা ফাতিহা পড়ল না তার ছালাত অসম্পূর্ণ, কথাটি তিনি তিনবার বলেছেন। ছালাত সম্পূর্ণ নয়। বলা হ’ল, হে আবু হুরায়রা! আমরা কোন কোন সময় ইমামের পিছনে থাকি। তিনি বললেন, আপনি মনে মনে পড়ুন। কারণ আমি রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-কে বলতে শুনেছি, আল্লাহ বলেন, আমি ছালাতকে আমার মাঝে ও আমার বান্দার মাঝে ভাগ করে দিয়েছি। অর্ধেক আমার আর অর্ধেক আমার বান্দার। আমার বান্দার জন্য তাই রয়েছে, যা সে চায়। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বললেন, তোমরা সূরা ফাতিহা পড়। কোন বান্দা যখন বলে, আলহামদুলিল্লাহি রাবিবল আলামীন, তখন আল্লাহ বলেন, আমার বান্দা আমার প্রশংসা করেছে। যখন বলে, আর-রহমা-নির রহীম, তখন আল্লাহ বলেন, আমার বান্দা আমার গুণ বর্ণনা করেছে। বান্দা যখন বলে, মালিকি ইয়াউমিদ্দীন। আল্লাহ বলেন, আমার বান্দা আমার মর্যাদা বর্ণনা করেছেন। বান্দা যখন বলে, إِيَّاكَ نَعْبُدُ وَإِيَّاكَ نَسْتَعِيْنُ আল্লাহ বলেন, এ হচ্ছে আমার ও আমার বান্দার মাঝের কথা। আমার বান্দার জন্য তাই রয়েছে, যা সে চায়। বান্দা যখন বলে, اهْدِنَا الصِّرَاطَ الْمُسْتَقِيْمَ، صِرَاطَ الَّذِيْنَ أَنْعَمْتَ عَلَيْهِمْ غَيْرِ الْمَغْضُوْبِ عَلَيْهِمْ وَلاَ الضَّالِّيْنَআল্লাহ বলেন, এসব হচ্ছে আমার বান্দার জন্য। আমার বান্দার জন্য তাই রয়েছে, যা সে চায়’। (মুসলিম হা/৩৯৫; আবুদাঊদ হা/৮২১; তিরমিযী হা/২৯৫৩; ইবনু মাজাহ হা/৮৩৬।)
 

Users who are viewing this thread

Back
Top