শীতের সবজির মধ্যে জনপ্রিয় তিন নাম—টমেটো, শিম আর পালংশাক। এসব শাকসবজি খাওয়ার ধরনও একেক রকম। পালংশাক দিয়ে শিং মাছ জমে ভালো, টমেটোর সালাদ ভালোবাসেন সবাই। শিম তো নানা রোগের মহৌষধ। এই তিন সবজি যাঁরা খান না, তাঁরা অনেক উপকার থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। জেনে নিন এই তিন সবজির উপকার ও অপকার
টমেটো
কেন খাবেন: টমেটোতে আছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন এ, সি, কে, ফলেট এবং পটাশিয়াম। টমেটোর মধ্যে আছে ফাইবার ও পানি। চর্মরোগের জন্য টমেটো অত্যন্ত কার্যকর। ত্বকে যদি কোনো সমস্যা হয়ে থাকে, তবে প্রক্রিয়াজাত করে টমেটো ব্যবহার করতে পারেন। চর্মরোগ নিরাময়ে এর রস কাজ করে থাকে। রান্না ছাড়া সালাদে টমেটোর জনপ্রিয়তা সবচেয়ে বেশি। তবে ইতালির ভেরোনা বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল গবেষকের দাবি, দিনে ৮০ গ্রাম টমেটোর সস গ্রহণ করলে স্বাস্থ্যের ওপর উচ্চ ক্যালোরিযুক্ত খাবারের ক্ষতিকর প্রভাব কাটে।
কাদের খাওয়া বারণ: টমেটোতে ম্যালিক অ্যাসিড ও সাইট্রিক অ্যাসিড আছে, যা পাকস্থলীতে অতিরিক্ত অম্লের প্রবাহ তৈরি করতে পারে। বেশি টমেটো খেলে বুকজ্বালা করে। হজমে গন্ডগোল হয়। যাঁরা প্রায়ই পেটের সমস্যায় ভোগেন বা যাঁদের গ্যাস্ট্রোওফাজাল রিপ্লেক্স রোগ আছে, তাঁদের অতিরিক্ত টমেটো খাওয়া থেকে দূরে থাকা উচিত। অতিরিক্ত টমেটো খেলে কিডনিতে পাথর ও গেঁটেবাত দেখা দিতে পারে।
পালং
কেন খাবেন: ওজন কমাতে দারুণ কার্যকর এই শাক। ওজন কমানোর জন্য দরকারি হলো কম ক্যালোরিযুক্ত খাদ্য গ্রহণ। আর পালংশাকে ক্যালোরির পরিমাণ খুবই কম থাকে। পালংশাক বিটা ক্যারোটিন এবং ভিটামিন সি-সমৃদ্ধ। উপস্থিত এই দুই পুষ্টি উপাদান ক্যানসারপ্রবণ কারসিনোজেনিক কোষের বৃদ্ধি প্রতিরোধ করে। চোখ ভালো রাখতে পালংশাক খুবই গুরুত্বপূর্ণ। পালংশাকে রয়েছে ভিটামিন এ এবং ভিটামিন সি। এই দুইয়ের উপস্থিতি বিভিন্ন প্রকার চোখের অসুখ, বিশেষত ম্যাকুলার ক্ষয়ের ঝুঁকি হ্রাস করে। হাড়ের সুস্বাস্থ্য বজায় রাখতেও পালংশাক উপকারী। হার্ট অ্যাটাকের আশঙ্কা কমাতে পারে পালংশাক।
কাদের খাওয়া বারণ: যাঁদের গেঁটেবাত আছে, তাঁরা পালংশাক খাবেন না। ইউরিক অ্যাসিড ও কিডনির সমস্যায় ভুগছেন? তাহলে আপনিও এড়িয়ে চলুন পালংশাক।
শিম
কেন খাবেন: শিমের মধ্যে আছে আমিষ, প্রোটিন ও ফাইবার (আঁশ)। রয়েছে ভিটামিন এ, বি ও কে। কিছুটা মিনারেলও আছে। শিমে প্রচুর পরিমাণে ক্লোরোফাইল রয়েছে, যা কোলন ক্যানসার প্রতিকারে সাহায্য করে। যাঁদের কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা আছে, তাঁরা নিয়মিত শিম খেলে উপকার পাবেন। শিম আঁশযুক্ত হওয়ার কারণে রক্তে ধীরে ধীরে সুগার প্রবেশ করে। এতে ডায়াবেটিস রোগীর রক্তে সুগার জমার কোনো লক্ষণ থাকে না। রক্তে শর্করার পরিমাণও নিয়ন্ত্রণ করে। শরীরে কোলেস্টেরল কমাতে পারে শিম।
কাদের খাওয়া বারণ: অনেকের শিমে অ্যালার্জি আছে। কারও কারও মাইগ্রেনের তীব্রতা বাড়ে, এমন সমস্যা মনে করলে দ্রুত শিম খাওয়া বন্ধ করে দিতে হবে। শিমের বিচি কিডনি রোগীদের এড়িয়ে চলাই ভালো।
[FA]pen[/FA] লেখক: ইসরাত জাহান, পুষ্টিবিদ