যুগটাই নাকি এমন! নকল প্রেম এখানে দুষ্প্রাপ্য নয়; বরং সত্যিকারের প্রেম খুঁজে পাওয়া কষ্ট। অনলাইনে প্রেম একটা সচরাচর ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রেম অনলাইনে চলে যাওয়ায় যোগাযোগ হয়ে উঠেছে সহজ। আর প্রতারণাও হয়ে উঠেছে সচরাচর ঘটনা। প্রেমে প্রতারণার ঘটনা সব সময়ে, সব সমাজেই কমবেশি ছিল। একাধিক গবেষণা জানিয়েছে, প্রেমে পুরুষের চেয়ে নারীরা বেশি প্রতারিত হন। বাংলাদেশেও বেশ কিছু জরিপে উঠে এসেছে সেই তথ্য। প্রেমে প্রতারিত হলে আপনি কী কী করতে পারেন, সে রকম কিছু ধারণা নিয়েই এই লেখা।
ভেঙে পড়বেন না। মনে রাখবেন, আপনি একা নন
প্রথম কথা হলো, মন শক্ত রাখুন। বিষয়টি লুকানোর চেষ্টা করবেন না। তাতে জটিলতা বাড়বে। পরিবার, আত্মীয়স্বজন বা বন্ধুবান্ধব যদি সেই সম্পর্কের বিষয়ে জিজ্ঞেস করেন, তাহলে বিষয়টি খুলে বলবেন। তাতে আপনার হালকা বোধও হবে। ওই সম্পর্কের প্রভাব থেকে বেরিয়ে আসতে সুবিধা হবে। মনে রাখবেন, আপনি কোনো অন্যায় করেননি। অন্যের অন্যায়ের জন্য নিজেকে কেন কষ্ট দেবেন? প্রতারকের জন্য চোখের পানি অপচয় করবেন না। এরপর যাচাই–বাছাই না করে হুট করে সম্পর্কে জড়াবেন না। পরেরবার সম্পর্কে জড়ানোর আগে সময় নিন। মনে মনে বলুন যে ভালোই হয়েছে। জীবন থেকে প্রতারক দূর হয়েছে। আপনি বেঁচে গেছেন।
বিশ্বাসভঙ্গ একটি জামিন অযোগ্য অপরাধ
বিশ্বাসভঙ্গের অপরাধ একটি ফৌজদারি অপরাধ। দণ্ডবিধির ৪০৬ ধারায় বলা আছে, অপরাধজনিত বিশ্বাসভঙ্গের অভিযোগে দোষী হলে দায়ী ব্যক্তিকে তিন বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড বা অর্থদণ্ড অথবা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হতে হবে। বিশ্বাসভঙ্গ একটি জামিন অযোগ্য অপরাধ। তাই কোনো প্রেমিক বা প্রেমিকা যদি বিশ্বাস ভঙ্গ করে মিথ্যা পরিচয় দিয়ে সম্পর্ক স্থাপন করে পরবর্তী সময়ে উধাও হয়ে যান বা সম্পর্ক অস্বীকার করেন, তাহলে আপনি এই ধারায় মামলা করে প্রতিকার চাইতে পারেন।
প্রতারক প্রেমিক বা প্রেমিকার কাছে আপনার কোনো ঘনিষ্ঠ ছবি, অডিও বা ভিডিও থাকতেই পারে। আর আপনি যদি ভয় পান যে পরবর্তী সময়ে তিনি সেগুলো দেখিয়ে ব্ল্যাকমেল করতে পারেন, তাহলে আগেই একটি সাধারণ ডায়েরি করে রাখতে পারেন। যথাযথ আইনের আশ্রয় নেবেন।
উঠে দাঁড়ান নতুন শক্তিতে
ওই ভণ্ড প্রেমিক বা প্রেমিকার সঙ্গে সব ছবি মুছে ফেলুন। চ্যাটিং মুছে ফেলুন। দেওয়া উপহার নষ্ট করে ফেলুন বা বাড়ির সহকারীকে দিয়ে দিন। সামনে আগান। নিজেকে ব্যস্ত রাখুন। নতুন কোনো কোর্সে ভর্তি হতে পারেন। পরিবার ও বন্ধুদের সময় দিন। ইউটিউব দেখে নতুন নতুন রান্না ট্রাই করতে পারেন। ইউটিউবে মোটিভেশনাল স্পিচ শুনতে পারেন। মেডিটেশন করুন। ঘুরতে যান। দলবল, খাবারদাবার নিয়ে টান টান উত্তেজনার একটা সিরিজ দেখে ফেলুন। নাটক, সিনেমা, ছবির প্রদর্শনী দেখতে যান। বাগান করুন। মোদ্দাকথা, নিজেকে ইতিবাচকভাবে ব্যস্ত রাখুন।
নিজেকে সময় দিন। নিজের যত্ন নিন। পেছনের সব নেতিবাচকতা ভুলে সামনের দিনগুলো, সময় আর সম্পর্ক যাতে আরও ভালো হয়, সুন্দর হয়, সেদিকে খেয়াল রাখুন।