What's new
Nirjonmela Desi Forum

Talk about the things that matter to you! Wanting to join the rest of our members? Feel free to sign up today and gain full access!

প্রশান্তিময় ইবাদত, অজুর বিধান ও ফজিলত (1 Viewer)

CEmC25N.jpg


তিনটি ইবাদতে শারীরিক পবিত্রতা ফরজ। এগুলো হলো নামাজ আদায় করা, কাবা শরিফ তাওয়াফ করা এবং কোরআন মাজিদ স্পর্শ করা। অন্যান্য কাজে অজু সুন্নাত ও নফল। আল্লাহ তাআলার নির্দেশ, ‘আমার সহিত কোনো শরিক কোরো না এবং আমার গৃহকে পবিত্র রেখো।’ (সুরা-২২ হজ, আয়াত: ২৬)। পোশাক–পরিচ্ছদ পবিত্রকরণে আল্লাহ তাআলার আদেশ, ‘তোমার পরিচ্ছদ পবিত্র রাখো, অপবিত্রতা পরিহার করে চলো।’ (সুরা-৭৪ মুদ্দাসসির, আয়াত: ২-৪)। ইবাদতের স্থান পবিত্র রাখার নির্দেশনা, ‘আমার গৃহ পবিত্র রাখতে আদেশ দিলাম; তাওয়াফকারী, ইতিকাফকারী এবং রুকু ও সিজদাকারীদের জন্য।’ (সুরা-২ বাকারা, আয়াত: ১২৫)।

নামাজের জন্য পবিত্রতা জরুরি। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘হে মুমিনেরা! নেশাগ্রস্ত অবস্থায় তোমরা সালাতের নিকটবর্তী হয়ো না, যতক্ষণ না তোমরা যা বলো, তা বুঝতে পারো এবং যদি তোমরা মুসাফির না হও, তবে অপবিত্র অবস্থাতেও নয়, যতক্ষণ পর্যন্ত না তোমরা গোসল করো।’ (সুরা-৪ নিসা, আয়াত: ৪৩)। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘নামাজ বেহেশতের চাবি, অজু নামাজের চাবি।’ (মুসনাদে আহমাদ)।

অজু অর্থ ধৌত করা, গোসল অর্থও ধৌত করা। এ জন্য অজুকে ছোট গোসল এবং গোসলকে বড় অজু বলা হয়ে থাকে। অজু ও গোসল পানি দিয়েই করা হয়। আল্লাহ তাআলার বাণী, ‘এবং তিনি আকাশ থেকে তোমাদের ওপর বারি বর্ষণ করেন তা দ্বারা তোমাদের পবিত্র করার জন্য।’ (সুরা-৮ আনফাল, আয়াত: ১১)।

অজুর ফরজ সম্পর্কে আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘হে মুমিনেরা! যখন তোমরা সালাতের জন্য প্রস্তুত হবে, তখন তোমরা তোমাদের মুখমণ্ডল ও হাত কনুই পর্যন্ত ধৌত করবে এবং তোমাদের মাথা মাসেহ করবে এবং পা টাকনু পর্যন্ত ধৌত করবে।’ (সুরা-৫ মায়িদাহ, আয়াত: ৬)। অজুর অঙ্গগুলো প্রতিটি একবার করে ধোয়া ফরজ, তিনবার ধোয়া সুন্নাত; কিন্তু মাসেহ একবার করেই করতে হয়। অজু ও গোসলে পানি অপচয় করা যাবে না, যদি সমুদ্রতীরে বসেও অজু করে। (বায়হাকি)।

অজু করার সুন্নাত পদ্ধতি: প্রথমে অজুর নিয়ত বা সংকল্প করা। সম্ভব হলে উঁচু স্থানে কিবলামুখী হয়ে বসা। তারপর বিসমিল্লাহ অথবা বিশেষ দোয়া পাঠ করা। অতঃপর উভয় হাতের কবজিসহ তিনবার ধোয়া। এরপর মিসওয়াক বা ব্রাশ করা। তিনবার কুলি করা, তিনবার নাকে পানি দেওয়া এবং পুরো মুখ তিনবার ধোয়া। দাড়ি ঘন হলে গোড়ায় পানি পৌঁছানো জরুরি নয়, পাতলা হলে অবশ্যই তা করতে হবে। তারপর উভয় হাতের কনুইসহ তিনবার ধোয়া ও দুই হাতের আঙুল খিলাল করা (আঙুলের ফাঁকে আঙুল প্রবেশ করিয়ে ঘষে ধৌত করা)। অতঃপর পুরো মাথা একবার মাসেহ করা, উভয় কানের বাইরে ও ভেতর একবার মাসেহ করা এবং ঘাড় বা গর্দান মাসেহ করা। সর্বশেষ উভয় পায়ের টাকনুসহ তিনবার ধোয়া এবং উভয় পায়ের আঙুল খিলাল করা। অজুর শেষে কালিমা শাহাদাত পড়া।’ (ফাতাওয়ায়ে শামি)।

অজু শয়তানের বিরুদ্ধে মুমিনের আত্মরক্ষার অস্ত্র। অজু রাগ প্রশমন করে ও শয়তানি প্রভাব দূর করে। অজু শারীরিক ও মানসিক প্রশান্তি আনয়ন করে। অজু অবস্থায় শয়ন করা সুন্নাত। অজুর পর দুই রাকাত নামাজ আদায় করা সুন্নাত। একে ‘তাহিয়াতুল অজু’ নামাজ বলা হয়। (আল হিদায়া)।

একবার অজু করার পর যতক্ষণ অজুভঙ্গের কারণ সংঘটিত না হবে, ততক্ষণ পর্যন্ত এ অজু দিয়ে সব ধরনের ইবাদত করা যাবে। তবে বিশেষ বিশেষ ইবাদতের জন্য স্বতন্ত্র অজু করা উত্তম। বিশেষত প্রতি ফরজ নামাজের আগে নতুন করে অজু করা সুন্নাত। কিন্তু একবার অজু করার পর যতক্ষণ সে অজু দ্বারা ‘নামাজ আদায় করা, কাবা শরিফ তাওয়াফ করা এবং কোরআন মাজিদ স্পর্শ করা’ এই তিন ইবাদতের কোনো একটি না করবে অথবা অজু ভঙ্গ না হবে, ততক্ষণ পর্যন্ত আবার নতুন অজু করা মাকরুহ ও পানি অপচয় হিসেবে গণ্য হবে। তবে অত্যধিক গরমের কারণে বাহ্যিক পরিচ্ছন্নতার উদ্দেশ্যে এরূপ করা মাকরুহ নয়। (কানজুদ দাকায়িক)।

অজুভঙ্গের সাতটি কারণ: পায়খানা বা প্রস্রাবের রাস্তা দিয়ে কোনো কিছু বের হওয়া। মুখ ভরে বমি হওয়া। শরীরের ক্ষতস্থান থেকে রক্ত, পুঁজ বা পানি বের হয়ে গড়িয়ে পড়া। থুতুর সঙ্গে থুতুর সমান বা বেশি পরিমাণ রক্ত বের হওয়া। চিত বা কাত হয়ে বা হেলান দিয়ে ঘুম যাওয়া। পাগল (মনোবৈকল্য), মাতাল (নেশাগ্রস্ত) ও অচেতন (অজ্ঞান) হওয়া। নামাজে উচ্চ স্বরে হাসা (এটি শুধু প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য প্রযোজ্য, নাবালক শিশুদের জন্য নয়; তবে এতে তাদের নামাজ ভঙ্গ হবে এবং বড়দের অজু ও নামাজ উভয়ই ভঙ্গ হবে)। (শারহে বেকায়া)।

● মুফতি মাওলানা শাঈখ মুহাম্মাদ উছমান গনী

যুগ্ম মহাসচিব, বাংলাদেশ জাতীয় ইমাম সমিতি; সহকারী অধ্যাপক, আহ্ছানিয়া ইনস্টিটিউট অব সুফিজম
 
অনেক ছোট ছোট কারণে অনেক সময় অজু নষ্ট হয়। এখান থেকে অনেক কিছু শিখার আছে।
 
বা... দারুণ লিখেছেন তো, প্রতি কথা সত্য
 

Users who are viewing this thread

Back
Top