১৯
পুরা ২৪ ঘন্টা পরেও, কোন উত্তর না পেয়ে টাফ অস্থির হয়ে পড়ে। ওর অস্থিরতা এমন পর্যায়ে যায় যে প্রতি ১৫ মিনিট পরে পরে সে সিগারেট বের করে। শমসের ওর হাত থেকে সিগারেটটা ছিনিয়ে নিল। ইয়ার, কি হল তোর! আর কোন কাজ নাই তোর নিজেকে জ্বালানো ছাড়া?
ইয়ার তুই তো বুঝছ প্রেমের জ্বালা। কিছু বল না, এভাবেই মরে যাবো! আরেকটা সিগারেট জ্বালিয়ে টাফ বলল। শমসের ওকে গুরুমন্ত্র দিতে দিতে বলে, ভাই, ইশক আগুনের সমুদ্র রে, আর পার হতে হলে ডুবে যেতে হবে। তুই যদি মনে করিস ওকে গালাগালি করার পর তুই ওর মুখে একটি প্রেমপত্র মারলি আর ও চিরকাল তোর হয়ে যাবে, তাহলে সারা পৃথিবীতে তোর চেয়ে বড় উল্লু আর নেই।
তাহলে ভাই! তুই বল না, আমি কি করব! আমার জীবনটা যেন এলোমেলো হয়ে যাবে! শমসেরের হাত ধরে টাফ বললো। আমি সব কিছু করবো, ওকে পেতে!
তুই তো বলতি যে তোর জীবন একটা ঝাক্কাস, একজন পরিব্রাজকের মত, বন্ধুদের সাথে থাকবি এবং প্রতিদিন নিজেকে একজন নতুন প্রণয়ীর সাথে বাসররাত বানাবিন! সেটা কি হবে? শমসের ওকে মন্তব্য করে।
না ইয়ার! আমিও জানতাম না আজ পর্যন্ত যে প্রেম ছাড়া, এই সৌন্দর্যের সাগরে বাস করেও তৃষ্ণা মেটে না। আমার তৃষ্ণা এখন সীমা দিয়েই মেটানো যায়।
তাহলে অপেক্ষা কেন? ওদিকে ওর বাসায় পৌঁছে যা না! বলে দে মনের কথা। বাকিটা ভগবানের ইচ্ছা! শমসের ওর সাথে রসিকতা করে।
দোস্ত, তুই আমার বাকি খুশিও লুটে নিবি। কেমন বন্ধু তুই! সীমার সামনে যাওয়ার সাহস পাচ্ছিল না টাফ। তাহলে তোর জন্য এটাই ভালো। কোন ব্যাপার না, বছর ছয় মাসের মধ্যেই ভুলে যাবি, আমি জানি তোর কথা।
ইয়ার তুই আমার প্রেমকে গালি দিচ্ছিস। আমি সত্যিই পৌছে যাব ওর ঘর। টাফ সিদ্ধান্তমূলক বাজি ছাড়ে।
তাহলে কে বাধা দিয়েছে? চল, খাবার রেডি হয়ে গেছে মনে হয়। শমসের বলে বাড়ির দিকে হাঁটতে হাঁটতে।
দিশা আর বাণী ভিতরে ওদের জন্য অপেক্ষা করছিল। বিয়ের পর দিশা গোলাপের মতো ফুটে উঠেছে, শমসেরের ভালোবাসায়, অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের মতো বড় হয়ে উঠেছে। বুক আরো বড় হয়ে গেছে, পাছাটা আগের চেয়েও বেশি সেক্সি হয়ে গেছে। গতকালের স্বর্গের রাজকন্যা এখন রানী হয়ে গেছে, শমসেরের রানী, হ্যাঁ, তার রাগ আর আগের মত নেই, তার শরীরের চাপা ওর কাম বাসনা এর জন্য দায়ী আর শমসের যখন ওকে জাগিয়ে দিয়েছে তো এখন সে খোলাখুলি সেটার মজা নিচ্ছে। যৌনতা উপভোগ করে ভালোবাসা থেকে। সে কারণেই এখন তাকে খুব তৃপ্ত দেখাতে শুরু করেছে। কিন্তু সে গ্রাজুয়েশনের আগে নিজেকে মা না বানানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে আর শমসেরেরও এতে কোনো আপত্তি ছিল না।
বাণী... দিনে দিনে যৌবনের কাছাকাছি এসে তাঁর কথাবার্তায় আরও বুদ্ধিমতী হয়ে উঠছিল এবং এর প্রতিফলন তাঁর চোখে মুখেও দেখা যেত। তার চেহারা এবং কথার নির্দোষতার বিরোধিতা করতে দেখা যাচ্ছে তার অঙ্গ-প্রত্যঙ্গে। শহরে থাকার কারণে সেও ভালো পোশাক পরে। এখন দিশা তার সব ইচ্ছা পূরণ করতে চায়, যা সে নিজে বিয়ের আগে পূরণ করতে পারেনি দারিদ্রতার কারণে সে। সে মন ভরে তার পছন্দের পোশাক কিনে আলমারিতে সাজিয়ে রাখে। বাণী প্রায়ই তাকে বাধা দিত, দিদি! আমি কি বাচ্চা, তুমি আমাকে বলতে থাকো ' এভাবে থাকো! এভাবে থাকো! '
তুই চুপ কর! আর আমি যেমন বলি তেমনই থাক। বুঝতে পেরেছিস। তুই কত সুন্দর, রাজকন্যার মতো দিশা ওকে গলায় জড়িয়ে ধরে। কালকের গ্রামের রাজকন্যা আজ শহরের রাজকন্যা, সারা শহরের হৃদস্পন্দন ছিল, এবং বাণী তরুণ হৃদয়ের হৃদস্পন্দন হয়ে উঠেছে। যেখানেই বেরাতে যেত, যেন সর্বনাশ এসেছে, যেন সময় থেমে গেছে। কিন্তু ছেলেদের প্রতিটি অঙ্গভঙ্গি বোঝা সত্ত্বেও, ও তাদের উপেক্ষা করত। সে জানত সময় এলে সেও তার রাজপুত্রকে পাবে। দিশা বাণীকে বলেছিল যে আজকাল অজিতও প্রেমের জালে জড়িয়ে গেছে।
অজিত যখন খাবার খাচ্ছিল, তখন বাণী চোখ বড় বড় করে ওর মুখের দিকে তাকিয়ে থাকে আর দিশার দিকে তাকিয়ে খিল খিল করে হেসে উঠে।
কি ব্যাপার? কি পেয়েছিস? টাফ বাণীকে জিজ্ঞেস করল, ওর দিকে তাকিয়ে এভাবে হাসছে দেখে।
ভাইয়া! এটা টপ সিক্রেট। ওকে নিয়ে ঠাট্টা করে বাণী।
দেখ ভাই, আগে তোর শালিকে বুঝিয়ে বল, ভাইয়া বলাতে টাফ শমসেরের কাছে অভিযোগ করল।
বাণী! তুই এমন কথা বলবি না। আংকেল বলতে পারিস। তিনজন হেসে উঠল। টাফের মুখ দেখার মত হয়। ভাই! এখানে আসাটাই পাপ হয়েছে, আমার সময় একবার আসতে দাও, দেখো আমি ওকে দিয়ে রাখি না বাধাই তো আমার নাম না। আমি কালই যাব।
কাকে ভাইয়া! সীমা দিদি, ওকে তো আগেই বোন বানিয়েছি। সবাই তার ভেতরের খবর জানে দেখে টাফ বিরক্ত হয়ে বলল, দোস্ত, তুই বড় খারাপ। তুই হাটে হাড়ি ভেঙ্গে দিয়েছিস।
শমসের বাণীকে ইশারা করে আর আবার হাসি ফুটে উঠল সুখী পরিবারে।
পরদিন সকাল ১১টায় টাফ বিশ্ববিদ্যালয়ের ইকো বিভাগের বাইরে দাঁড়িয়ে ছিল। অনেক সাহস নিয়ে সেখানে এসেছে, তার হৃদয়ের হাল শুনাতে। তার হৃদয় যে সীমাতে সীমাবদ্ধ ছিল। টাফ প্রায় ৩ ঘন্টা দীর্ঘ অপেক্ষার পর সীমাকে দেখতে পেল। বিভাগ থেকে বেরিয়ে আসছে। টাফ আজ লাঠি আনেনি, সীমার চোখ টাফের উপর পড়ল, কিন্তু ও ওর বান্ধবীদের সাথে ছিল। ও টাফকে উপেক্ষা করে সোজা চলে গেল, টাফকে তার ৩ ঘন্টা জলে যেতে দেখে, সীমা জি! টাফ সীমাকে ডাকে।
হ্যাঁ! সীমা তার কাছে আসে, সাথে বান্ধবীরাও।
ওও, তুমি উত্তর দেওনি! টাফের শ্বাস ধাক্কা দিচ্ছিল। যে তুষার জলকে হলুদ থেকে হলুদ করে দিয়েছিল, আজ নিজেকে ভালোবাসার পাতলা সুতোয় আটকা পড়া দেখছে।
কিসের উত্তর ইন্সপেক্টর সাহেব? না জানার ভান করে জিজ্ঞেস করল সীমা।
কি? গতকাল পিয়ন তোমাকে কিছু দেয়নি?
হ্যাঁ! দিয়েছে, তো? সীমা মনেপ্রাণে প্রতিশোধ নিতে চাইল,
তো ত্তো কি, কিছু না। মানে, ও, আমি টাফ এখন বুঝেছে এটা ঠিক, ভালোবাসা প্রকাশ করতে পারা অনেক বড় ব্যাপার। ওর অবস্থা দেখে সব মেয়ে হেসে উঠল, আর চলে গেল হাসতে হাসতে। সীমাকে আবার ওর থেকে দূরে সরে যেতে দেখে টাফ ধরফরিয়ে উঠে, এত কিছুর পর শমসেরকে কী মুখ দেখাবে!
সীমা জি! এবার সীমা একা এল, ওর বান্ধবীরা ওর অপেক্ষায় দাঁড়িয়ে রইল।
বলুন, ইন্সপেক্টর সাহেব! সীমা তার কাছে এসে জিজ্ঞেস করল।
সীমা জি! আমার নাম অজিত, আমাকে নাম ধরে ডাকুন না!
কিন্তু আমি তো আপনাকে খুব ভালো ইন্সপেক্টর হিসেবে জানি। এত বড় মানুষের নাম কী করে নেব?
জিজ্জিই, আমি বড় নই। আমার বয়স মাত্র ২৫ টাফ তার বয়স বলল
সীমা তার মুখ থেকে আসা মাসুম ভাব দেখে হাসতে গিয়েও কোন রকমে নিজেকে স্থির রাখে!
ঠিক আছে! কাজের কথায় আসি। সীমা টাফকে বলল।
হ্যাঁ, তুমি সেই চিঠির উত্তর দাওনি। টাফ তার ধৈর্য হারাচ্ছিল।
হুম, তো আপনি মনে করেন আমার উত্তর দেওয়া উচিত ছিল! সীমা তার সহ্যের পরিধি দেখতে চাইল
জি, ও। আমি সারারাত অপেক্ষা করলাম। টাফের হাঁটু ঝুকে গেছে, সীমার প্রেমে।
আচ্ছা, আপনার কি মনে হয়, আমি উত্তর দেবো!
আমি জানি না, কিন্তু... আমার এখনও আশা আছে! সীমা তাকে আর কষ্ট দেওয়া ঠিক মনে করল না। আর ওও সারারাত চিঠিটা বারবার পড়ছে। কিন্তু ওর ভালবাসা প্রকাশ করার সাহস ছিল না,
আমরা বন্ধু হতে পারি। সীমা ওর হাত টাফের দিকে বাড়িয়ে দিল।
শুধু বন্ধু? টাফ আজ থেকেই সারাজীবন ওর দৃষ্টিতে থাকতে চেয়েছিল।
আপাতত.. শুধু বন্ধু! আমি আপনাকে রাতে কল করব। ও যাওয়া শুরু করতেই টাফ দুই হাতে ওর হাতটা চেপে ধরল।
সীমা জি! আমি অপেক্ষা করব!
এখন সীমা জি কেন? আমি সীমা। আপনার বন্ধু, আমাকে এখন যেতে দাও। টাফ কিছু বলতে পারল না। যাবার সময় সীমা হঠাৎ মুখ ঘুরিয়ে বলল, আমি সেই চিঠিটা সারারাত পড়েছি, বারবার, আর হালকা লজ্জা পেয়ে চলে গেল। টাফের মন খুশিতে বাকবাকুম হয়ে যায়। টাফ প্রেমের প্রথম সিড়িতে উঠে গেছে....!
শিবানী আর সুনীল কথা না বলেই দুইদিন কাটিয়ে দিল। রাতে শিবানীর আর থাকতে পারল না, সুনীলকে জড়িয়ে ধরে, আমি তোমাকে ভালোবাসি সুনীল! সুনীলের জন্য এই কথাগুলো যেন কাটা ঘায়ে নুনের ছিটা মনে হল। বলে, আমার গায়ে হাত দিবি না হারামজাদি। শিবানিকে ঠেলে দুরে সরিয়ে দেয়।
ছোট একটা বিষয়ের জন্য এত বড় শাস্তি দিও না সুনীল। প্লিজ, আমার দম বন্ধ হয়ে আছে তিনদিন ধরে।
সুনীল শিবানীকে তার হৃদয় থেকে দুরে সরিয়ে দিয়েছে। তার থেকে। শালী কুত্তি যদি তোর দম বন্ধ হয়ে যায় তো সেই জায়গায় যা যেখানে তোর পাছা মারিয়ে এসেছিস। শালী তোর নিঃশ্বাস বন্ধ হয়ে যাচ্ছে, আরে এসব করার আগে এ কথা ভাবিসনি.. নিজেকে সম্পর্কে.. আমার সম্পর্কে!
জান, এটা ছিল জবরদস্তি। তুমি জানো না আমি প্রতি মুহূর্তে কিভাবে কেঁদেছি। এটা একটা দুর্ঘটনা। ধর্ষণ আমার! আর তুমি রিপোর্ট করার প্রয়োজনও মনে করনি। তোমার স্ত্রীকে কে উড়িয়ে দিয়েছে। এরজন্য কি আমি দায়ি?
আমি ওইটার কথা বলছি না, কুত্তি! ইচ্ছা করে অজ্ঞ হইস না। আমাকে মিথ্যা বলেছিলি এবং তোর ইয়ারের সাথে থাকতে গিয়েছিলি। তুই ভুলে গেছিস।
কোন ইয়ার! তুমি কি কথা বলছ? সুনীল শিবানীর এই নাটক আর সহ্য করতে পারল না, সে বসে বসেই শিবানীকে মারতে লাগল, শিবানী প্রাণহীনের মত মার খেতে থাকল। শালি ! এই নে, আমি বলছি কোন ইয়ার। কোথায় গিয়েছিলি বল। জামাইকে বল!!!
শিবানী কিছু বলল না। ও সুনীলের অপরাধী ছিল, ওর জীবনের একটি গুরুত্বপূর্ণ গোপনীয়তা তার কাছ থেকে লুকিয়ে রেখেছে। কিন্তু ওর বিরুদ্ধে যে অভিযোগ তুলেছে সুনীল তা তো ওর মন পুরোই ভেঙে দিয়েছে। ও ভিকির কাছে গিয়েছিল, ওর প্রিয় ভিকির কাছে। কিন্তু লক্ষ্য বার চাওয়ার পরও সুনীলকে কিছু বলতে না পারলেও এ অভিযোগ ওঠার পর তার কাছ থেকে গোপন রাখা কঠিন হয়ে পড়ে। কারন এখন যে কারও জন্যই হোক তার ঘরের সুখে আগুন তো দিতে পারে না? সুনীল মারতে মারতে ক্লান্ত হয়ে বিছানা থেকে উঠে দাঁড়ালে শিবানী মৃদু গলায় বলল, তুমি ভিকির সাথে দেখা করতে চাও?
এটা কি তোর ইয়ারের নাম? শালী কত নির্লজ্জের মত নাম নিচ্ছে! সুনীল শিবানীর দিকে তাকিয়ে মাটিতে থুথু ফেলল।
হ্যাঁ, এই সেই নাম যার জন্য আমি তোমাকে মিথ্যে বলেছিলাম, আর শুধু এখনই নয়। এর আগেও বহুবার তার সাথে দেখা করতে গিয়েছি আমার বিয়ের পর। কিন্তু তুমি দেখলে সব বুঝে যাবে! এখন আমি এই গোপন কথা গোপন রেখে তোমার ঘৃণা নিদে পারব না.. তুমি কি ভিকির সাথে দেখা করবে?
সুনীল কিছু না বলে বিছানায় শুয়ে চাদর জড়িয়ে নেয়। তার হৃৎপিণ্ড দ্রুত ধড়ফড় করছে।
আগামীকাল থেকে বোর্ড পরীক্ষা শুরু হচ্ছে ! মনে হয় বাচ্চাদের প্রস্তুতি বিশেষ একটা হয় নি? অফিসে বসা স্টাফদের জিজ্ঞেস করল অঞ্জলি।
না ম্যাম! এমন কিছু না, আপনি নিজেই ক্লাসে হেঁটে বাচ্চাদের প্রস্তুতির খবর নিতে পারেন! একজন ম্যাডাম বললেন অঞ্জলীকে।
ঠিক আছে! আমি শুধু জানতে চাই আপনি সন্তুষ্ট কি না। এবং অন্য একজন ম্যাথ শিক্ষক সম্ভবত আগামী সপ্তাহে যোগ দেবেন, একটি নতুন অ্যাপয়েন্টমেন্ট আছে, আশা করি আপনাদের আর সমস্যা হবে না। পরবর্তী সেশনের জন্য, মি. বাসু নিয়োগপত্র পেয়েছে। শুধু মেডিকেল ভাইবার আনুষ্ঠানিকতা বাকি। সুনীল জি আজ আসবে না। তাকে কোথাও যেতে হবে, যাই হোক কাল কোন ক্লাসের বিজ্ঞানের পেপার নেই। আপনারা চাইলে ওর ক্লাস নিতে পারেন।
সুনীল আর শিবানী বাসে করে যাচ্ছিল। শিবানী ওকে ভিকির সাথে দেখা করতে নিয়ে যাচ্ছিল। সুনীলের কাছ থেকে সেই ঘোমটা সরাতে যা ও বিয়ের ৬ মাস পরেও গোপন রেখেছিল। পানিপথ আর্য নগরে যাওয়ার পর একটি বাড়ির দরজায় টোকা দেয় শিবানী। ভিতর থেকে একটা পাগলী মহিলা বেরিয়ে এল।
তুমি আবার এসেছ, আমি চাই না কিছু, তোমার কাছেই রাখো। চাও তো যা আছে তাও নিয়ে যাও। আমি এখন বেঁচে কি করব? তুমি তো পাগল হয়ে গেছো। এদিকে আর এসো না।
ওই মহিলার কথার কোনো মানে বুঝা গেল না। শিবানী কিছু না বলে ভিতরে চলে গেল। পিছনে পিছনে সুনীলও ভেতরে ঢুকে পড়ে আর ওখানে থাকা পুরনো সোফায় বসে পড়ে। বাড়িটা মনে হয় অনেক আগে বানানো। আর এর দেখভালও হয় না বলে মনে হয়। জায়গায় জায়গায় দেওয়াল থেকে প্লাস্টার ঘষে পড়েছে। সুনীলের জন্য সবকিছুই ছিল আশ্চর্যজনক। এই মহিলা আর এই ঘরের সাথে শিবানীর সম্পর্ক কি হতে পারে! ও চুপ করে বসে ওই মহিলার দিকে আর মাঝে মাঝে শিবানীর দিকে তাকাচ্ছে, ঠিক তখনই বাইরে থেকে একটা ৫-৬ বছরের কিউট বাচ্চা ভিতরে এল, হ্যালো আম্মু আর ও শিবানীকে জড়িয়ে ধরল।
ভিকি তোকে ছাড়া বাঁচতে পারি না।
যখন ওকে একসাথে রাখতেই পারবে না তো কেন পৃথিবীতে এনেছ? কেন তুমি তাকে সৃষ্টি করলে?
বুড়ির কথা শুনে সুনীলের পায়ের তলার মাটি সরে গেল। একটি পুত্র সন্তানের জন্ম দিয়েছে শিবানী! সুনীলের মনে হলো ঘরের দেয়াল ভেঙ্গে পড়তে চলেছে, মাথাটা চেপে ধরে। সে এক সন্তানের জননীর স্বামী! ভিকির মায়ের স্বামী!!
শিবানী ভিতর থেকে এক গ্লাস জল এনে সুনীলকে দিল, সুনীল পাগল হয়ে হাতের গ্লাসের দিকে তাকিয়ে থাকল। ও যতটা ভেবেছিল শিবানী তো তারচেয়েও পতিত বের হয়ে আসল। ও কেবল ভেবেছিল যে শিবানী বাইরে একজন প্রেমিক রেখেছে আর তার সাথে মৌজ করতে যায়। কিন্তু এখানে ব্যাপারটা আরও খারাপ হয়ে গেল। ৫-৬ বছরের ছেলে! সুনীলের কিছু জিজ্ঞেস করার সাহসও হল না। শিবানীর কোলে বসে থাকা ভিকির দিকে সে চুপচাপ তাকিয়ে থাকল।
আম্মু ! এই আংকেল কে?
শিবানী তার সাথে নিয়ে আসা কিছু খেলনা আর খাবারের জিনিস এনে দিল ভিকিকে, এই নাও বেটা! মা তাড়াতাড়ি ফিরে আসবে।
মা তুমি আমাকে সাথে নিয়ে যাও না কেন! আমার এখানে ভালো লাগে না! শিবানীর চোখে জল গড়িয়ে পড়ল।
যাব বেটা! তুমি একটু বড় হও, তারপর তুমি আমার সাথে থাকবে। যাও, অন্য ঘরে তোমার দাদির সাথে খেলতে যাও।
ঠিক আছে আম্মু! ভালো বাচ্চার মতো ভিকি অন্য ঘরে চলে গেল।
সুনীল অবাক চোখে শিবানীর দিকে তাকিয়ে আছে, ছেলের সাথে দেখা করিয়ে নিজেকে কী প্রমাণ করতে চায় তা বুঝতে পারছে না। শিবানী আর কোনো সাসপেন্স তৈরি করতে চাইছিল না,
সুনীল! এ আমার ছেলে নয়, আমার বোনের ছেলে।
হোয়াট? তোমার বোন কোথায়?
সে নেই। শিবানী একটা দীর্ঘ নিঃশ্বাস ফেলে বলল।
প্লিজ শিবানী! আমার মাথাটা ফেটে যাচ্ছে। সোজা আমাকে বলো, ভিকি আর তোমার কি ব্যাপার, যতদূর জানি তুমি তোমার বাবা মায়ের একমাত্র মেয়ে। আর এই মহিলা কে?
ইনি আমার বোনের শাশুড়ি। আমি তোমাকে প্রথম থেকে বলব। শিবানী সুনীলকে ফ্ল্যাশ ব্যাকে নিয়ে গেল।
প্রায় ৭ বছর আগে। আমার একটি বড় বোন ছিল, আমার থেকে ২ বছরের বড়। তার নাম ছিল মীনু। তার বয়স ছিল ১৭ বছর। সে সঞ্জয়ের প্রেমে পড়ে, এই মহিলার ছেলে সঞ্জয় রাজপুত। ওর ক্লাসে পড়ত, দুজনেই প্রেমের সীমা অতিক্রম করে একে অপরের সাথে শারীরিক সম্পর্ক করে। আমার বোন গর্ভবতী হয়ে পড়ে। সামাজিক ভয় আর একসাথে থাকার স্বপ্ন বুঝতে বাড়ি থেকে পালিয়ে যায় দুজনেই। একে অপরের উপর নির্ভর করে। বাড়ি থেকে দূরে কোথাও তাদের বিয়ে হয়েছে এবং মীনু বাড়িতে ফোনে খবর দেয়। কিন্তু এই বিয়ে আমার পরিবারের লোকেরা অনুমোদন করেনি। মীনু ছিল নাবালিকা। F.I.R. দায়ের করে। এরপর সঞ্জয়কে মীনুর সাথে প্রেমের অভিযোগে অভিযুক্ত করে পুলিশ তাকে খুঁজতে থাকে। এখানে আসার পর সঞ্জয়ের মাকে পুলিশ এতটাই হেনস্থা করেছিল যে সে পাগল হয়ে গিয়েছে, একটা হল তার ছেলেকে হারানো এবং অন্যদিকে রোজ রোজ পুলিশের হয়রানি। তার স্বামী তো আগে থেকেই ছিল না। সঞ্জয় ও মীনু পরিবার এবং পুলিশ থেকে পালানোর অনেক চেষ্টা করেছিল, কিন্তু অর্থের অভাব এবং অল্প বয়সের কারণে তারা যেখানেই যায়, লোকেরা তাদের সন্দেহ করত এবং তাদের সেখান থেকে পালিয়ে যেতে হত। প্রায় ৬ মাস পর পুলিশ দুজনকেই গ্রেফতার করলে আদালত সঞ্জয়কে কারাগারে পাঠায়। কিন্তু আমার বোন বাড়িতে আসতে রাজি হয়নি। ও নারী নিকেতনে যায়। সেখানেই ভিকির জন্ম দেয় মীনু। সঞ্জয় মীনুর বিচ্ছেদ এবং জেলে লোকদের কটূক্তি সহ্য করতে না পেরে জেলে আত্মহত্যা করে। প্রেম করার শাস্তি তার কাছে গ্রহণযোগ্য ছিল না। আমার বোন বিষয়টি জানতে পেরে ওর হুঁশ উড়ে যায়। আমি পরিবারের সদস্যদের কাছ থেকে গোপনে তার সাথে দেখা করতে যেতাম। দিন দিন তার স্বাস্থ্যের অবনতি হতে থাকে, সে তার পরিণতি বুঝতে পারে, শিবানী! আমার ছেলেকে পরিত্যক্ত হতে দিও না। আমি প্রেম করেছি, পাপ নয়। এই ছিল আমার শোনা শেষ কথা। কয়েকদিন পর যখন গেলাম, জানতে পারলাম মেনু নেই। প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সব শেষ করে ভিকিকে সঙ্গে নিয়ে এলাম। কিন্তু পরিবারের লোকেরা মৃদুস্বরে অস্বীকার করে, আমরা আমাদের মাথায় এই পাপ নিব না। আমদের তোমাকে বিয়ে দিতে হবে। আমি কি করব, ভিকিকে অযত্নে রেখে যেতে পারলাম না, তাই ওকে এখানে নিয়ে এসেছি, ওর দাদীর কাছে যে পাগল হয়ে গেছে। তারপর থেকে প্রায় প্রতিমাসে এখানে আসছি পরিবারের লোকদের সাথে মিথ্যে কথা বলে এবং পরে তোমাকে। অনেকবার ভেবেছিলাম, যাক আমি তোমাকে বলি, কিন্তু ৬ মাস পরও আমি বিশ্বাস করতে পারছিলাম না যে তুমি আমার বোনের ভালোবাসা ' পাপ ' তোমার কাছে রাখবে। শুধু ভালো দিনের অপেক্ষায় ছিলাম।
সুনীল হতভম্ব হয়ে নির্বাক বসে থাকে। কিছুক্ষন পর শিবানীর চোখের দিকে তাকাল। অশ্রু মুছে তাকে বুকে রাখল, শিবানী! আমি কি এতটাই খারাপ? সুনীল ভিকিকে ডাকল, ভিকির হাতে একটা প্লেন ছিল।
হ্যাঁ! আংকেল! সুনীল ওকে কোলে তুলে নিল, গালে একটা স্নেহপূর্ণ চুমু দিল, বাছা! আমি তোমার আংকেল নই তোমার পাপা। মায়ের সাথে কথা বল, চল আমাদের বাসায় যাই।
শিবানী উঠে সুনীলকে জড়িয়ে ধরল, আই লাভ ইউ জান! আই লাভ ইউ...
পুরা ২৪ ঘন্টা পরেও, কোন উত্তর না পেয়ে টাফ অস্থির হয়ে পড়ে। ওর অস্থিরতা এমন পর্যায়ে যায় যে প্রতি ১৫ মিনিট পরে পরে সে সিগারেট বের করে। শমসের ওর হাত থেকে সিগারেটটা ছিনিয়ে নিল। ইয়ার, কি হল তোর! আর কোন কাজ নাই তোর নিজেকে জ্বালানো ছাড়া?
ইয়ার তুই তো বুঝছ প্রেমের জ্বালা। কিছু বল না, এভাবেই মরে যাবো! আরেকটা সিগারেট জ্বালিয়ে টাফ বলল। শমসের ওকে গুরুমন্ত্র দিতে দিতে বলে, ভাই, ইশক আগুনের সমুদ্র রে, আর পার হতে হলে ডুবে যেতে হবে। তুই যদি মনে করিস ওকে গালাগালি করার পর তুই ওর মুখে একটি প্রেমপত্র মারলি আর ও চিরকাল তোর হয়ে যাবে, তাহলে সারা পৃথিবীতে তোর চেয়ে বড় উল্লু আর নেই।
তাহলে ভাই! তুই বল না, আমি কি করব! আমার জীবনটা যেন এলোমেলো হয়ে যাবে! শমসেরের হাত ধরে টাফ বললো। আমি সব কিছু করবো, ওকে পেতে!
তুই তো বলতি যে তোর জীবন একটা ঝাক্কাস, একজন পরিব্রাজকের মত, বন্ধুদের সাথে থাকবি এবং প্রতিদিন নিজেকে একজন নতুন প্রণয়ীর সাথে বাসররাত বানাবিন! সেটা কি হবে? শমসের ওকে মন্তব্য করে।
না ইয়ার! আমিও জানতাম না আজ পর্যন্ত যে প্রেম ছাড়া, এই সৌন্দর্যের সাগরে বাস করেও তৃষ্ণা মেটে না। আমার তৃষ্ণা এখন সীমা দিয়েই মেটানো যায়।
তাহলে অপেক্ষা কেন? ওদিকে ওর বাসায় পৌঁছে যা না! বলে দে মনের কথা। বাকিটা ভগবানের ইচ্ছা! শমসের ওর সাথে রসিকতা করে।
দোস্ত, তুই আমার বাকি খুশিও লুটে নিবি। কেমন বন্ধু তুই! সীমার সামনে যাওয়ার সাহস পাচ্ছিল না টাফ। তাহলে তোর জন্য এটাই ভালো। কোন ব্যাপার না, বছর ছয় মাসের মধ্যেই ভুলে যাবি, আমি জানি তোর কথা।
ইয়ার তুই আমার প্রেমকে গালি দিচ্ছিস। আমি সত্যিই পৌছে যাব ওর ঘর। টাফ সিদ্ধান্তমূলক বাজি ছাড়ে।
তাহলে কে বাধা দিয়েছে? চল, খাবার রেডি হয়ে গেছে মনে হয়। শমসের বলে বাড়ির দিকে হাঁটতে হাঁটতে।
দিশা আর বাণী ভিতরে ওদের জন্য অপেক্ষা করছিল। বিয়ের পর দিশা গোলাপের মতো ফুটে উঠেছে, শমসেরের ভালোবাসায়, অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের মতো বড় হয়ে উঠেছে। বুক আরো বড় হয়ে গেছে, পাছাটা আগের চেয়েও বেশি সেক্সি হয়ে গেছে। গতকালের স্বর্গের রাজকন্যা এখন রানী হয়ে গেছে, শমসেরের রানী, হ্যাঁ, তার রাগ আর আগের মত নেই, তার শরীরের চাপা ওর কাম বাসনা এর জন্য দায়ী আর শমসের যখন ওকে জাগিয়ে দিয়েছে তো এখন সে খোলাখুলি সেটার মজা নিচ্ছে। যৌনতা উপভোগ করে ভালোবাসা থেকে। সে কারণেই এখন তাকে খুব তৃপ্ত দেখাতে শুরু করেছে। কিন্তু সে গ্রাজুয়েশনের আগে নিজেকে মা না বানানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে আর শমসেরেরও এতে কোনো আপত্তি ছিল না।
বাণী... দিনে দিনে যৌবনের কাছাকাছি এসে তাঁর কথাবার্তায় আরও বুদ্ধিমতী হয়ে উঠছিল এবং এর প্রতিফলন তাঁর চোখে মুখেও দেখা যেত। তার চেহারা এবং কথার নির্দোষতার বিরোধিতা করতে দেখা যাচ্ছে তার অঙ্গ-প্রত্যঙ্গে। শহরে থাকার কারণে সেও ভালো পোশাক পরে। এখন দিশা তার সব ইচ্ছা পূরণ করতে চায়, যা সে নিজে বিয়ের আগে পূরণ করতে পারেনি দারিদ্রতার কারণে সে। সে মন ভরে তার পছন্দের পোশাক কিনে আলমারিতে সাজিয়ে রাখে। বাণী প্রায়ই তাকে বাধা দিত, দিদি! আমি কি বাচ্চা, তুমি আমাকে বলতে থাকো ' এভাবে থাকো! এভাবে থাকো! '
তুই চুপ কর! আর আমি যেমন বলি তেমনই থাক। বুঝতে পেরেছিস। তুই কত সুন্দর, রাজকন্যার মতো দিশা ওকে গলায় জড়িয়ে ধরে। কালকের গ্রামের রাজকন্যা আজ শহরের রাজকন্যা, সারা শহরের হৃদস্পন্দন ছিল, এবং বাণী তরুণ হৃদয়ের হৃদস্পন্দন হয়ে উঠেছে। যেখানেই বেরাতে যেত, যেন সর্বনাশ এসেছে, যেন সময় থেমে গেছে। কিন্তু ছেলেদের প্রতিটি অঙ্গভঙ্গি বোঝা সত্ত্বেও, ও তাদের উপেক্ষা করত। সে জানত সময় এলে সেও তার রাজপুত্রকে পাবে। দিশা বাণীকে বলেছিল যে আজকাল অজিতও প্রেমের জালে জড়িয়ে গেছে।
অজিত যখন খাবার খাচ্ছিল, তখন বাণী চোখ বড় বড় করে ওর মুখের দিকে তাকিয়ে থাকে আর দিশার দিকে তাকিয়ে খিল খিল করে হেসে উঠে।
কি ব্যাপার? কি পেয়েছিস? টাফ বাণীকে জিজ্ঞেস করল, ওর দিকে তাকিয়ে এভাবে হাসছে দেখে।
ভাইয়া! এটা টপ সিক্রেট। ওকে নিয়ে ঠাট্টা করে বাণী।
দেখ ভাই, আগে তোর শালিকে বুঝিয়ে বল, ভাইয়া বলাতে টাফ শমসেরের কাছে অভিযোগ করল।
বাণী! তুই এমন কথা বলবি না। আংকেল বলতে পারিস। তিনজন হেসে উঠল। টাফের মুখ দেখার মত হয়। ভাই! এখানে আসাটাই পাপ হয়েছে, আমার সময় একবার আসতে দাও, দেখো আমি ওকে দিয়ে রাখি না বাধাই তো আমার নাম না। আমি কালই যাব।
কাকে ভাইয়া! সীমা দিদি, ওকে তো আগেই বোন বানিয়েছি। সবাই তার ভেতরের খবর জানে দেখে টাফ বিরক্ত হয়ে বলল, দোস্ত, তুই বড় খারাপ। তুই হাটে হাড়ি ভেঙ্গে দিয়েছিস।
শমসের বাণীকে ইশারা করে আর আবার হাসি ফুটে উঠল সুখী পরিবারে।
পরদিন সকাল ১১টায় টাফ বিশ্ববিদ্যালয়ের ইকো বিভাগের বাইরে দাঁড়িয়ে ছিল। অনেক সাহস নিয়ে সেখানে এসেছে, তার হৃদয়ের হাল শুনাতে। তার হৃদয় যে সীমাতে সীমাবদ্ধ ছিল। টাফ প্রায় ৩ ঘন্টা দীর্ঘ অপেক্ষার পর সীমাকে দেখতে পেল। বিভাগ থেকে বেরিয়ে আসছে। টাফ আজ লাঠি আনেনি, সীমার চোখ টাফের উপর পড়ল, কিন্তু ও ওর বান্ধবীদের সাথে ছিল। ও টাফকে উপেক্ষা করে সোজা চলে গেল, টাফকে তার ৩ ঘন্টা জলে যেতে দেখে, সীমা জি! টাফ সীমাকে ডাকে।
হ্যাঁ! সীমা তার কাছে আসে, সাথে বান্ধবীরাও।
ওও, তুমি উত্তর দেওনি! টাফের শ্বাস ধাক্কা দিচ্ছিল। যে তুষার জলকে হলুদ থেকে হলুদ করে দিয়েছিল, আজ নিজেকে ভালোবাসার পাতলা সুতোয় আটকা পড়া দেখছে।
কিসের উত্তর ইন্সপেক্টর সাহেব? না জানার ভান করে জিজ্ঞেস করল সীমা।
কি? গতকাল পিয়ন তোমাকে কিছু দেয়নি?
হ্যাঁ! দিয়েছে, তো? সীমা মনেপ্রাণে প্রতিশোধ নিতে চাইল,
তো ত্তো কি, কিছু না। মানে, ও, আমি টাফ এখন বুঝেছে এটা ঠিক, ভালোবাসা প্রকাশ করতে পারা অনেক বড় ব্যাপার। ওর অবস্থা দেখে সব মেয়ে হেসে উঠল, আর চলে গেল হাসতে হাসতে। সীমাকে আবার ওর থেকে দূরে সরে যেতে দেখে টাফ ধরফরিয়ে উঠে, এত কিছুর পর শমসেরকে কী মুখ দেখাবে!
সীমা জি! এবার সীমা একা এল, ওর বান্ধবীরা ওর অপেক্ষায় দাঁড়িয়ে রইল।
বলুন, ইন্সপেক্টর সাহেব! সীমা তার কাছে এসে জিজ্ঞেস করল।
সীমা জি! আমার নাম অজিত, আমাকে নাম ধরে ডাকুন না!
কিন্তু আমি তো আপনাকে খুব ভালো ইন্সপেক্টর হিসেবে জানি। এত বড় মানুষের নাম কী করে নেব?
জিজ্জিই, আমি বড় নই। আমার বয়স মাত্র ২৫ টাফ তার বয়স বলল
সীমা তার মুখ থেকে আসা মাসুম ভাব দেখে হাসতে গিয়েও কোন রকমে নিজেকে স্থির রাখে!
ঠিক আছে! কাজের কথায় আসি। সীমা টাফকে বলল।
হ্যাঁ, তুমি সেই চিঠির উত্তর দাওনি। টাফ তার ধৈর্য হারাচ্ছিল।
হুম, তো আপনি মনে করেন আমার উত্তর দেওয়া উচিত ছিল! সীমা তার সহ্যের পরিধি দেখতে চাইল
জি, ও। আমি সারারাত অপেক্ষা করলাম। টাফের হাঁটু ঝুকে গেছে, সীমার প্রেমে।
আচ্ছা, আপনার কি মনে হয়, আমি উত্তর দেবো!
আমি জানি না, কিন্তু... আমার এখনও আশা আছে! সীমা তাকে আর কষ্ট দেওয়া ঠিক মনে করল না। আর ওও সারারাত চিঠিটা বারবার পড়ছে। কিন্তু ওর ভালবাসা প্রকাশ করার সাহস ছিল না,
আমরা বন্ধু হতে পারি। সীমা ওর হাত টাফের দিকে বাড়িয়ে দিল।
শুধু বন্ধু? টাফ আজ থেকেই সারাজীবন ওর দৃষ্টিতে থাকতে চেয়েছিল।
আপাতত.. শুধু বন্ধু! আমি আপনাকে রাতে কল করব। ও যাওয়া শুরু করতেই টাফ দুই হাতে ওর হাতটা চেপে ধরল।
সীমা জি! আমি অপেক্ষা করব!
এখন সীমা জি কেন? আমি সীমা। আপনার বন্ধু, আমাকে এখন যেতে দাও। টাফ কিছু বলতে পারল না। যাবার সময় সীমা হঠাৎ মুখ ঘুরিয়ে বলল, আমি সেই চিঠিটা সারারাত পড়েছি, বারবার, আর হালকা লজ্জা পেয়ে চলে গেল। টাফের মন খুশিতে বাকবাকুম হয়ে যায়। টাফ প্রেমের প্রথম সিড়িতে উঠে গেছে....!
শিবানী আর সুনীল কথা না বলেই দুইদিন কাটিয়ে দিল। রাতে শিবানীর আর থাকতে পারল না, সুনীলকে জড়িয়ে ধরে, আমি তোমাকে ভালোবাসি সুনীল! সুনীলের জন্য এই কথাগুলো যেন কাটা ঘায়ে নুনের ছিটা মনে হল। বলে, আমার গায়ে হাত দিবি না হারামজাদি। শিবানিকে ঠেলে দুরে সরিয়ে দেয়।
ছোট একটা বিষয়ের জন্য এত বড় শাস্তি দিও না সুনীল। প্লিজ, আমার দম বন্ধ হয়ে আছে তিনদিন ধরে।
সুনীল শিবানীকে তার হৃদয় থেকে দুরে সরিয়ে দিয়েছে। তার থেকে। শালী কুত্তি যদি তোর দম বন্ধ হয়ে যায় তো সেই জায়গায় যা যেখানে তোর পাছা মারিয়ে এসেছিস। শালী তোর নিঃশ্বাস বন্ধ হয়ে যাচ্ছে, আরে এসব করার আগে এ কথা ভাবিসনি.. নিজেকে সম্পর্কে.. আমার সম্পর্কে!
জান, এটা ছিল জবরদস্তি। তুমি জানো না আমি প্রতি মুহূর্তে কিভাবে কেঁদেছি। এটা একটা দুর্ঘটনা। ধর্ষণ আমার! আর তুমি রিপোর্ট করার প্রয়োজনও মনে করনি। তোমার স্ত্রীকে কে উড়িয়ে দিয়েছে। এরজন্য কি আমি দায়ি?
আমি ওইটার কথা বলছি না, কুত্তি! ইচ্ছা করে অজ্ঞ হইস না। আমাকে মিথ্যা বলেছিলি এবং তোর ইয়ারের সাথে থাকতে গিয়েছিলি। তুই ভুলে গেছিস।
কোন ইয়ার! তুমি কি কথা বলছ? সুনীল শিবানীর এই নাটক আর সহ্য করতে পারল না, সে বসে বসেই শিবানীকে মারতে লাগল, শিবানী প্রাণহীনের মত মার খেতে থাকল। শালি ! এই নে, আমি বলছি কোন ইয়ার। কোথায় গিয়েছিলি বল। জামাইকে বল!!!
শিবানী কিছু বলল না। ও সুনীলের অপরাধী ছিল, ওর জীবনের একটি গুরুত্বপূর্ণ গোপনীয়তা তার কাছ থেকে লুকিয়ে রেখেছে। কিন্তু ওর বিরুদ্ধে যে অভিযোগ তুলেছে সুনীল তা তো ওর মন পুরোই ভেঙে দিয়েছে। ও ভিকির কাছে গিয়েছিল, ওর প্রিয় ভিকির কাছে। কিন্তু লক্ষ্য বার চাওয়ার পরও সুনীলকে কিছু বলতে না পারলেও এ অভিযোগ ওঠার পর তার কাছ থেকে গোপন রাখা কঠিন হয়ে পড়ে। কারন এখন যে কারও জন্যই হোক তার ঘরের সুখে আগুন তো দিতে পারে না? সুনীল মারতে মারতে ক্লান্ত হয়ে বিছানা থেকে উঠে দাঁড়ালে শিবানী মৃদু গলায় বলল, তুমি ভিকির সাথে দেখা করতে চাও?
এটা কি তোর ইয়ারের নাম? শালী কত নির্লজ্জের মত নাম নিচ্ছে! সুনীল শিবানীর দিকে তাকিয়ে মাটিতে থুথু ফেলল।
হ্যাঁ, এই সেই নাম যার জন্য আমি তোমাকে মিথ্যে বলেছিলাম, আর শুধু এখনই নয়। এর আগেও বহুবার তার সাথে দেখা করতে গিয়েছি আমার বিয়ের পর। কিন্তু তুমি দেখলে সব বুঝে যাবে! এখন আমি এই গোপন কথা গোপন রেখে তোমার ঘৃণা নিদে পারব না.. তুমি কি ভিকির সাথে দেখা করবে?
সুনীল কিছু না বলে বিছানায় শুয়ে চাদর জড়িয়ে নেয়। তার হৃৎপিণ্ড দ্রুত ধড়ফড় করছে।
আগামীকাল থেকে বোর্ড পরীক্ষা শুরু হচ্ছে ! মনে হয় বাচ্চাদের প্রস্তুতি বিশেষ একটা হয় নি? অফিসে বসা স্টাফদের জিজ্ঞেস করল অঞ্জলি।
না ম্যাম! এমন কিছু না, আপনি নিজেই ক্লাসে হেঁটে বাচ্চাদের প্রস্তুতির খবর নিতে পারেন! একজন ম্যাডাম বললেন অঞ্জলীকে।
ঠিক আছে! আমি শুধু জানতে চাই আপনি সন্তুষ্ট কি না। এবং অন্য একজন ম্যাথ শিক্ষক সম্ভবত আগামী সপ্তাহে যোগ দেবেন, একটি নতুন অ্যাপয়েন্টমেন্ট আছে, আশা করি আপনাদের আর সমস্যা হবে না। পরবর্তী সেশনের জন্য, মি. বাসু নিয়োগপত্র পেয়েছে। শুধু মেডিকেল ভাইবার আনুষ্ঠানিকতা বাকি। সুনীল জি আজ আসবে না। তাকে কোথাও যেতে হবে, যাই হোক কাল কোন ক্লাসের বিজ্ঞানের পেপার নেই। আপনারা চাইলে ওর ক্লাস নিতে পারেন।
সুনীল আর শিবানী বাসে করে যাচ্ছিল। শিবানী ওকে ভিকির সাথে দেখা করতে নিয়ে যাচ্ছিল। সুনীলের কাছ থেকে সেই ঘোমটা সরাতে যা ও বিয়ের ৬ মাস পরেও গোপন রেখেছিল। পানিপথ আর্য নগরে যাওয়ার পর একটি বাড়ির দরজায় টোকা দেয় শিবানী। ভিতর থেকে একটা পাগলী মহিলা বেরিয়ে এল।
তুমি আবার এসেছ, আমি চাই না কিছু, তোমার কাছেই রাখো। চাও তো যা আছে তাও নিয়ে যাও। আমি এখন বেঁচে কি করব? তুমি তো পাগল হয়ে গেছো। এদিকে আর এসো না।
ওই মহিলার কথার কোনো মানে বুঝা গেল না। শিবানী কিছু না বলে ভিতরে চলে গেল। পিছনে পিছনে সুনীলও ভেতরে ঢুকে পড়ে আর ওখানে থাকা পুরনো সোফায় বসে পড়ে। বাড়িটা মনে হয় অনেক আগে বানানো। আর এর দেখভালও হয় না বলে মনে হয়। জায়গায় জায়গায় দেওয়াল থেকে প্লাস্টার ঘষে পড়েছে। সুনীলের জন্য সবকিছুই ছিল আশ্চর্যজনক। এই মহিলা আর এই ঘরের সাথে শিবানীর সম্পর্ক কি হতে পারে! ও চুপ করে বসে ওই মহিলার দিকে আর মাঝে মাঝে শিবানীর দিকে তাকাচ্ছে, ঠিক তখনই বাইরে থেকে একটা ৫-৬ বছরের কিউট বাচ্চা ভিতরে এল, হ্যালো আম্মু আর ও শিবানীকে জড়িয়ে ধরল।
ভিকি তোকে ছাড়া বাঁচতে পারি না।
যখন ওকে একসাথে রাখতেই পারবে না তো কেন পৃথিবীতে এনেছ? কেন তুমি তাকে সৃষ্টি করলে?
বুড়ির কথা শুনে সুনীলের পায়ের তলার মাটি সরে গেল। একটি পুত্র সন্তানের জন্ম দিয়েছে শিবানী! সুনীলের মনে হলো ঘরের দেয়াল ভেঙ্গে পড়তে চলেছে, মাথাটা চেপে ধরে। সে এক সন্তানের জননীর স্বামী! ভিকির মায়ের স্বামী!!
শিবানী ভিতর থেকে এক গ্লাস জল এনে সুনীলকে দিল, সুনীল পাগল হয়ে হাতের গ্লাসের দিকে তাকিয়ে থাকল। ও যতটা ভেবেছিল শিবানী তো তারচেয়েও পতিত বের হয়ে আসল। ও কেবল ভেবেছিল যে শিবানী বাইরে একজন প্রেমিক রেখেছে আর তার সাথে মৌজ করতে যায়। কিন্তু এখানে ব্যাপারটা আরও খারাপ হয়ে গেল। ৫-৬ বছরের ছেলে! সুনীলের কিছু জিজ্ঞেস করার সাহসও হল না। শিবানীর কোলে বসে থাকা ভিকির দিকে সে চুপচাপ তাকিয়ে থাকল।
আম্মু ! এই আংকেল কে?
শিবানী তার সাথে নিয়ে আসা কিছু খেলনা আর খাবারের জিনিস এনে দিল ভিকিকে, এই নাও বেটা! মা তাড়াতাড়ি ফিরে আসবে।
মা তুমি আমাকে সাথে নিয়ে যাও না কেন! আমার এখানে ভালো লাগে না! শিবানীর চোখে জল গড়িয়ে পড়ল।
যাব বেটা! তুমি একটু বড় হও, তারপর তুমি আমার সাথে থাকবে। যাও, অন্য ঘরে তোমার দাদির সাথে খেলতে যাও।
ঠিক আছে আম্মু! ভালো বাচ্চার মতো ভিকি অন্য ঘরে চলে গেল।
সুনীল অবাক চোখে শিবানীর দিকে তাকিয়ে আছে, ছেলের সাথে দেখা করিয়ে নিজেকে কী প্রমাণ করতে চায় তা বুঝতে পারছে না। শিবানী আর কোনো সাসপেন্স তৈরি করতে চাইছিল না,
সুনীল! এ আমার ছেলে নয়, আমার বোনের ছেলে।
হোয়াট? তোমার বোন কোথায়?
সে নেই। শিবানী একটা দীর্ঘ নিঃশ্বাস ফেলে বলল।
প্লিজ শিবানী! আমার মাথাটা ফেটে যাচ্ছে। সোজা আমাকে বলো, ভিকি আর তোমার কি ব্যাপার, যতদূর জানি তুমি তোমার বাবা মায়ের একমাত্র মেয়ে। আর এই মহিলা কে?
ইনি আমার বোনের শাশুড়ি। আমি তোমাকে প্রথম থেকে বলব। শিবানী সুনীলকে ফ্ল্যাশ ব্যাকে নিয়ে গেল।
প্রায় ৭ বছর আগে। আমার একটি বড় বোন ছিল, আমার থেকে ২ বছরের বড়। তার নাম ছিল মীনু। তার বয়স ছিল ১৭ বছর। সে সঞ্জয়ের প্রেমে পড়ে, এই মহিলার ছেলে সঞ্জয় রাজপুত। ওর ক্লাসে পড়ত, দুজনেই প্রেমের সীমা অতিক্রম করে একে অপরের সাথে শারীরিক সম্পর্ক করে। আমার বোন গর্ভবতী হয়ে পড়ে। সামাজিক ভয় আর একসাথে থাকার স্বপ্ন বুঝতে বাড়ি থেকে পালিয়ে যায় দুজনেই। একে অপরের উপর নির্ভর করে। বাড়ি থেকে দূরে কোথাও তাদের বিয়ে হয়েছে এবং মীনু বাড়িতে ফোনে খবর দেয়। কিন্তু এই বিয়ে আমার পরিবারের লোকেরা অনুমোদন করেনি। মীনু ছিল নাবালিকা। F.I.R. দায়ের করে। এরপর সঞ্জয়কে মীনুর সাথে প্রেমের অভিযোগে অভিযুক্ত করে পুলিশ তাকে খুঁজতে থাকে। এখানে আসার পর সঞ্জয়ের মাকে পুলিশ এতটাই হেনস্থা করেছিল যে সে পাগল হয়ে গিয়েছে, একটা হল তার ছেলেকে হারানো এবং অন্যদিকে রোজ রোজ পুলিশের হয়রানি। তার স্বামী তো আগে থেকেই ছিল না। সঞ্জয় ও মীনু পরিবার এবং পুলিশ থেকে পালানোর অনেক চেষ্টা করেছিল, কিন্তু অর্থের অভাব এবং অল্প বয়সের কারণে তারা যেখানেই যায়, লোকেরা তাদের সন্দেহ করত এবং তাদের সেখান থেকে পালিয়ে যেতে হত। প্রায় ৬ মাস পর পুলিশ দুজনকেই গ্রেফতার করলে আদালত সঞ্জয়কে কারাগারে পাঠায়। কিন্তু আমার বোন বাড়িতে আসতে রাজি হয়নি। ও নারী নিকেতনে যায়। সেখানেই ভিকির জন্ম দেয় মীনু। সঞ্জয় মীনুর বিচ্ছেদ এবং জেলে লোকদের কটূক্তি সহ্য করতে না পেরে জেলে আত্মহত্যা করে। প্রেম করার শাস্তি তার কাছে গ্রহণযোগ্য ছিল না। আমার বোন বিষয়টি জানতে পেরে ওর হুঁশ উড়ে যায়। আমি পরিবারের সদস্যদের কাছ থেকে গোপনে তার সাথে দেখা করতে যেতাম। দিন দিন তার স্বাস্থ্যের অবনতি হতে থাকে, সে তার পরিণতি বুঝতে পারে, শিবানী! আমার ছেলেকে পরিত্যক্ত হতে দিও না। আমি প্রেম করেছি, পাপ নয়। এই ছিল আমার শোনা শেষ কথা। কয়েকদিন পর যখন গেলাম, জানতে পারলাম মেনু নেই। প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সব শেষ করে ভিকিকে সঙ্গে নিয়ে এলাম। কিন্তু পরিবারের লোকেরা মৃদুস্বরে অস্বীকার করে, আমরা আমাদের মাথায় এই পাপ নিব না। আমদের তোমাকে বিয়ে দিতে হবে। আমি কি করব, ভিকিকে অযত্নে রেখে যেতে পারলাম না, তাই ওকে এখানে নিয়ে এসেছি, ওর দাদীর কাছে যে পাগল হয়ে গেছে। তারপর থেকে প্রায় প্রতিমাসে এখানে আসছি পরিবারের লোকদের সাথে মিথ্যে কথা বলে এবং পরে তোমাকে। অনেকবার ভেবেছিলাম, যাক আমি তোমাকে বলি, কিন্তু ৬ মাস পরও আমি বিশ্বাস করতে পারছিলাম না যে তুমি আমার বোনের ভালোবাসা ' পাপ ' তোমার কাছে রাখবে। শুধু ভালো দিনের অপেক্ষায় ছিলাম।
সুনীল হতভম্ব হয়ে নির্বাক বসে থাকে। কিছুক্ষন পর শিবানীর চোখের দিকে তাকাল। অশ্রু মুছে তাকে বুকে রাখল, শিবানী! আমি কি এতটাই খারাপ? সুনীল ভিকিকে ডাকল, ভিকির হাতে একটা প্লেন ছিল।
হ্যাঁ! আংকেল! সুনীল ওকে কোলে তুলে নিল, গালে একটা স্নেহপূর্ণ চুমু দিল, বাছা! আমি তোমার আংকেল নই তোমার পাপা। মায়ের সাথে কথা বল, চল আমাদের বাসায় যাই।
শিবানী উঠে সুনীলকে জড়িয়ে ধরল, আই লাভ ইউ জান! আই লাভ ইউ...