ওজন কমানো যেমন খুবই কঠিন, তেমনি আবার খুবই সহজ। এটা ব্যক্তির দৃষ্টিভঙ্গি ও অভ্যাসের ওপরই নির্ভর করে। কেবল ওজন কমে যাওয়া নয়, চাহিদা অনুযায়ী নির্দিষ্ট ওজন ধরে রাখার চেষ্টা দীর্ঘ সময় মেদ বৃদ্ধি বন্ধ রাখতে সাহায্য করে। নিয়ম মেনে ডায়েট অনুসরণে খাওয়াদাওয়া করার সময় বা সুযোগ সবার থাকে না ঠিকই, কিন্তু সুস্থ থাকতে বেশ কিছু খাবার এড়িয়ে চলার প্রবণতা আজকাল অনেকেরই থাকে।
বেশির ভাগ মানুষই মনে করেন, তেল-মসলা আর মিষ্টি বাদ দিতে পারলেই বোধ হয় ওজন নিয়ন্ত্রণ হয়ে যাবে। ফ্যাটজাতীয় খাবার না খেলে আর সবজির মধ্যে আলু বাদ দিলেই ওজন কমানোর কাজ হয়ে যায়। হয়তো এতে ওজন কমানোর কাজ খানিকটা এগিয়ে যায়, তবে সারা দিন চর্বি জমা ঠেকাতে কী করছেন? প্রোটিন ও শাকসবজির ওপর ভরসা করে থাকলেও অনেক শাকসবজির হাত ধরেই শরীরে চুপিসারে ঢুকছে মেদ, যাতে আপনার ওজন বাড়ছে অজান্তে।
কোন খাবারে কীভাবে মেদ জমে
অনেকেই বলেন, শুধু তো শাক আর সবজি খাচ্ছি, কিন্তু ওজন তো কমছে না। শাকসবজি ঠিক কীভাবে খাচ্ছেন আর কী কী শাকসবজি খাদ্যতালিকায় রাখছেন, এসবের ওপরও নির্ভর করে মেদ জমার প্রবণতা। দেখে নিন কোন সবজি বিপদ বাড়াচ্ছে আপনার শরীরে।
খাদ্যতালিকা থেকে শুধু আলু বাদ দিলেই হবে না, আলুর তৈরি ফিঙ্গার চিপসও অবশ্যই বাদ দিতে হবে। ভেজিটেবল চপ বা অন্য কোনো সবজির তেলেভাজা কিংবা চপ খাওয়া যাবে না। কারণ, সবজির সঙ্গে যে তেল ও ময়দার ট্রান্সফ্যাট শরীরে ঢোকে, তাতে খুব তাড়াতাড়ি মেদ বাড়ে। তাই এসব অভ্যাস বাদ দেওয়া জরুরি। মেদ জমা কমাতে খাদ্যতালিকা থেকে বাদ দিন ফুলকপি ও বাঁধাকপি। এই দুই সবজিতেই মেদ বাড়ানোর উপাদান মজুত আছে। ডায়েটের সময় অনেকেই ফুলকপি আর বাঁধাকপির নানা পদ খেয়ে থাকেন। এ অভ্যাসে কিন্তু ওজন কমা কঠিন হবে।
রেস্তোরাঁয় গিয়ে সবাই যখন গরু-খাসি খাচ্ছে কবজি ডুবিয়ে, আপনি ফরমাশ করলেন সালাদ। কারণ, আপনার ধারণা সালাদ খেলে দ্রুত ওজন কমবে। সালাদ খাওয়া স্বাস্থ্যকর। কিন্তু প্যাকেটজাত সালাদের ড্রেসিংয়ে থাকা ট্রান্সফ্যাট ও অতিরিক্ত লবণ উল্টো শরীরের ক্ষতি করে। তাই সালাদ খেলে বাড়িতে কাটা সালাদে আস্থা রাখুন। আলু তো শুরুতেই বাদ দিয়েছেন, এবার গাজর, বিট—এসব সবজিও যথাসম্ভব কম খান। এসব সবজির শর্করা ওজন বাড়ায়।
ভুট্টার গ্লাইসেমিক ইনডেক্স খুব উচ্চ। সুইট কর্নের শর্করাও ওজন বাড়ায়। তাই ভুট্টাও এড়িয়ে চলুন। আলু ছাড়াও যেকোনো সবজির চিপসই খুব ক্ষতিকর। রোদে শুকিয়ে, লবণ দিয়ে চিপস তৈরি হয়। তাই এতেই খাবারের পুষ্টিগুণ নষ্ট হয়ে যায়। চিপসে থাকা লবণ শরীরে পানি জমাতে সাহায্য করে। এ কারণে ওজন বাড়ে। তাই এড়িয়ে চলতে হবে যেকোনো সবজির চিপসও। ওজন কমাতে চাইলে কচু খাওয়াও ঠিক নয়। একইভাবে ওল, মুখিকচু—এসব খাবারও বাদ রাখতে চেষ্টা করুন।
[FA]pen[/FA] লেখক: ইসরাত জাহান | পুষ্টিবিদ