What's new
Nirjonmela Desi Forum

Talk about the things that matter to you! Wanting to join the rest of our members? Feel free to sign up today and gain full access!

Review Nirjon Mela Movie Review (NMMR) (1 Viewer)

Hey Ram (2000)

২০০০ সালে মুক্তি পায় কমল হাসান, ওম পুরি, শাহরুখ খান, নাসিরুদ্দিন শাহ অভিনীত "হে রাম". মূলত ৪৭ এর দেশ বিভাগের পর হিন্দু মুসলিম দাঙ্গার পটভূমিকায় তৈরী এবং কেন্দ্রীয় চরিত্র সাকেত রাম (কমল হাসান) কে সেখানে মূল ভূমিকায় রাখা হয়েছে যে কিনা পেশায় একজন প্রত্নতাত্ত্বিক কিন্তু ৪৭ এর দাঙ্গায় তার প্রথম স্ত্রীর (রানী মুখার্জি) মৃত্যুর পর সে এক চরমপন্থী দলের সঙ্গে যোগ দেয় এবং গান্ধীজি কে হত্যার উদ্বেগ নেয় (যদিও সেখান থেকে সে সরে আসে পরে)
সবই দেখানো হয় ফ্ল্যাশব্যাকে যখন শতবর্ষীয় সাকেত রাম মৃত্যুশয্যায় থাকে তখন সে চিন্তা করে তার যৌবন আর তার অতীত কে.

ছবিটি পরিচালনা, প্রযোজনা, চিত্রনাট্য সবই কমল হাসানের নিজেরই এবং এথেকে অবশ্যই বলা যেতে পারে যে তিনি একজন বহুমুখী প্রতিভার অধিকারী.

ছবিটি মূলত তামিল ভাষার হলেও এটি হিন্দি এবং ইংলিশেও ডাবিং করা হয় এবং আমি দেখেছিলাম হিন্দি ভার্সন তখন. সত্যি বলতে কি ছবিটি আমাকে একেবারে ঘোরাচ্ছন্ন করে রেখেছিলো! এতটা নিখুঁত দৃশ্যাবলী মনে হচ্ছিলো যেন এটা কোনো ছবি নয়, তৎকালীন সিসি ক্যামেরা দ্বারা ফুটেজ নেয়া হয়েছিল! সত্যি বলতে কি এতো নিখুঁত ৪৭ এর দাঙ্গা নিয়ে ছবি ইতিপূর্বে আর কোথাও আমার চোখে পড়েনাই.

ছবির শেষের একটা দৃশ্য যখন সাকেত রাম ১৯৮৯ সালে মৃত্যুশয্যায় এবং বাহিরে কারফিউয়ের ভেতর হিন্দু মুসলিম ভাগলপুর দাঙ্গা তখন সে একজন নার্সকে জিজ্ঞেস করে যে কি হচ্ছে বাহিরে? সে একটু খোলা হাওয়ায় যেতে চায়. তখন নার্স উত্তর দেয় "বাবুজি বাহিরে হিন্দু মুসলিম দাঙ্গা লেগেছে". সেটা শুনে সাকেত রাম দুঃখের শুরে বলে "আজো থামেনি!". তারপরেই সাকেত রাম ঢলে পরে মৃত্যুর কোলে. শেষের দৃশ্যে দেখায় যে গান্ধীজির পর নাতি তুষার গান্ধী আসে তার শেষকৃত্যে এবং সাকেত রামের নাতি তাকে তার দাদার ব্যাক্তিগত সংগ্রহশালা দেখায়.

ছবিটি দেখার পর আমার মনে হয়েছিল যে মনে হয় এর চেয়ে নিখুঁতভাবে আর তৈরী করা সম্ভব ছিলোনা আর আজো একটা আক্ষেপ যে কি কারণে কেন এই ছবিটা অস্কারে পাঠানো হলোনা আর হলেও কেনই বা এটা অস্কার জিততে পারলোনা!! উত্তর নেই.
এটি আমার জীবনে দেখা অন্যতম সেরা ছবি যা কিনা আমি বেশকবার দেখেছি.

যদি মনে করে থাকেন যে কোনোএকটা ঐতিহাসিক নির্ভর ছবি দেখতে চান তবে এইছবিটা দেখতে পারেন তবে হাঁ কিছু দৃশ্যাবলী অবশ্যই অপ্রাপ্ত বয়স্কদের জন্যে নয়.
 
জাতিস্বর

MV5BODU3YjJmYzUtYWF.jpg



প্রধান অভিনয়ে

প্রসেঞ্জিত চেটারজী
যিশু সেনগুপ্ত
স্বস্তিকা মুখারজী

বিশেষ অবদান

আবীর চেটারজী


নির্দেশনা

সৃজিত মুখার্জি



আমি বেক্তিগত ভাবে প্রসেঞ্জিত এর সেরকম কোন ছবি দেখিনি বা দেখিও না, কিন্তু তিনি যে কি মাপের একজন অভিনেতা তা তিনি কিছু ছবির মাধ্যমে তুলে ধরেছেন তার মদ্ধে এই ছবিটি আমার খুবি পছেন্দের। আসলে আমি এই ছবিটি দেখার সময় কোন প্রত্যাশা নিয়ে দেখিনি, কিন্তু দেখার পর মুগ্ধ হয়ে যাই। এরকম ভাবেও বর্তমান পরিস্থিতিতে প্রাচীন সময়কে তুলে ধরা, সেটা সত্যি শিল্প, যা সবার দারা সম্ভব না

গল্প ঃ বর্তমান প্রজন্মের একজন ছেলে "রোহিত মেহেতা" যিশু, একজন মারয়ারী ছেলে একজন বাঙালি মেয়ে " মহামায়া " স্বস্তিকা এর প্রেমে পরে। কিন্তু মহামায়া একজন সংস্কৃতি প্রিয় বাঙালি, যে বাংলা ভাষা কে খুবি ভালবাসে, রোহিত একজন অবাঙ্গালি ও বাংলা ভাষার ব্যবহার একদমি যানে না। কিন্তু সে মহামায়া কে খুবি ভালবাসে। তাই মহামায়া তার সামনে একটি সর্ত রাখে যে তাকে নির্ভুল বাংলা ভাষায় একটি গান লিখে তাকে দিতে হবে।
রাহুল তার ভালবাসার জন্য তার এক বন্ধুর অনুপ্রেননায় বাংলা ভাষা ও বাংলা সঙ্গিত শিখতে বিদেসের এক বিশ্ববিদ্যালয় এ ভর্তি হয়, এবং সেখান থেকে তত্ত্বালোচনার বিসয় হিসেবে তিনি একজন বাংলা সঙ্গীতকার কিন্তু জন্ম সুত্রে ভিনদেশি " শ্রী এন্টোনি ফিরিঙ্গি " Hensman Anthony এর জীবন গবেষণা করতে পুনরায় কলকাতা আসেন। সেখানে ঘটনা ছক্রে আলাপ হয় " কুশল হাজরা " প্রসেঞ্জিত এর সাথে। এবং তিনি রোহিত কে জানান তিনি বিশ্বাস নাও করতে পারেন কিন্তু তিনি আসলে শ্রী এন্টোনি ফিরিঙ্গির পুনর্জন্ম অর্থাৎ " জাতিস্বর " । গল্প এর থেকে বেশি আর বলব না, তাহলে ছবি দেখার আসল আনন্দ একদম মাটি হয়ে যাবে। এর কারন এই ছবির শেষ দৃশে এমন একটা মোর এমন একটা গল্পের সাসপেন্স আছে তার জন্য পুরো ছবিটা একনাগারে দেখা যায়।
দুটো আলাদা যুগ, তিনটি প্রজন্ম, দুজন সম্পূর্ণ ভিন্ন শ্রেণির মানুস, কিন্তু তাদের জীবন এক অদৃশ্য সুতোয় গাথা। একজন ভিনদেশি Hensman Anthony, কিকরে এই বাংলার প্রেমে বাংলা কবিগান এর প্রেমে কিভাবে সম্পূর্ণ পুরনো জীবন ভুলে এন্টোনি ফিরিঙ্গি হলেন তা এখানে অনেক অনেক সুন্দর করে তুলে ধরেছেন এখানে, এরপর আসে বর্তমান সময়ে কিভাবে আবার এক অবাঙ্গালী সেই মানুষকে পুনরায় খুজে পেতে আবার সেই ইতিহাস এই প্রজন্মে পুনরায় নিয়ে আসেন তাও এক কথায় অসাধারন।
"এন্টোনি ফিরিঙ্গি" নামটি আমার মত সব বাঙ্গালির অজানা নয়, কিন্তু সত্যি আমরা কি এই এন্টোনি ফিরিঙ্গি কে চিনি? তার সম্বন্ধে আমরা সত্যি কতটা জানি, এই ছবিটি দেখে বুঝলাম আমরা সত্যি কিছু জানি না। আসলে এই ছবিটি দেখতে দেখতে আপনি বুঝতে পারবেন আমারা এই বাংলাকে, এই বাংলা ভাষাকে সত্যি জানি না।
সুধু মাত্র প্রসেঞ্জিত এর অভিনয়ের জন্য এই ছবিটি অন্ন একটি মাত্রা পায়। এন্টোনি ফিরিঙ্গি এর ছরিত্র আমার মনেহয় এরকম ভাবে জীবন্ত অন্য কারো দারা সম্ভব না, উনি আসলেই অসাধারন অভিনেতা। একি ছবিতে দুটো আলাদা প্রজন্মের, আলাদা বেক্তিত্তের চরিত্র এমন ভাবে সাবলিল ভাবে তুলে ধরা সত্যি অভিনয় অনার রক্তে। যিশু আমাকে সত্যি অবাক করেছে আসলে যিশুকে আমি একটা সাধারন মানের অভিনেতা জানতাম, কিন্তু প্রসেঞ্জিতের পাসে যিশুর অভিনয় সত্যি সমতুল্য না হলেও ১৯-২০ বলাই যায়। সস্তিকার অভিনয় নিয়ে কথা বললে অনেক কিছুই বলা যায়, কিন্তু এখানে সেটা বলতে গেলে ছবির কিছুটা রহস্য উন্মোচন করতে হবে তাই সেটা আপনাদের জন্য তুলে রাখলাম। আর শেষে বলব আসল লোকের হাতে শিল্প আসলেই কেমন হয় তা সৃজিত এখানে দেখিয়ে দিয়েছেন। অসাধারন নির্দেশনা, তার সাথে সময় উপযোগী স্থান ও পরিবেশ পর্দায় তুলে আনা অন্য ধরনের মুন্সিয়ানার পরিচয় দেয়।
সব শেষে বলব এই ছবির গান ও আবহ সঙ্গিত।
বাংলার পালা গান, কবি গান ও লোক গীতি অসাধারন সমম্বয় ও অসাধারন রচনা, " এ তুমি কেমন তুমি " গানটি একবার দুবার নয় কয়েকশ বার শোনা যায়।
আপনারা যদি ছবিটি না দেখে থাকেন বা পরে দেখবেন ভাবেন, অনুগ্রহ করে এই ছবির গান গুলি শুনুন। মন ভরে যাবে।








পুরো গান একসাথে এখানে





পুরো ছবি গুগল ড্রাইভ এ
 
Last edited:
হেমলক সোসাইটি ( আমাদের কোন শাখা নেই )

Front.jpg



মুক্তি ঃ ২০১২

পরিচালনা ঃ সৃজিত মুখোপাধ্যায়

মুখ্য অভিনয়ে


কোয়েল মল্লিক = মেঘনা সরকার
পরমব্রত চট্টোপাধ্যায় = আনন্দ কর
রূপা গঙ্গোপাধ্যায় = নীহারিকা বসু
দীপঙ্কর দে = ডঃ চিত্তরঞ্জন বসু
শিলাজিৎ মজুমদার = সিদ্ধার্থ রায়
সাহেব চট্টোপাধ্যায় = শান্তনু

অতিথি অভিনেতা ( বিভিন্ন ছরিত্রে )
সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়
সাবিত্রী চট্টোপাধ্যায়
সব্যসাচী চক্রবর্তী
সৃজিত মুখোপাধ্যায়
ব্রাত্য বসু
রাজ চক্রবর্তী
জিৎ

সঙ্গীত পরিচালনা ঃ অনুপম রায়

গল্প ঃ মেঘনা সরকার তার ছোটবেলার বন্ধু, ও যৌবনের প্রেম শান্তনু , তাদের বিয়ের একমাস আগে মেঘনা জানতে পারেন তার হবু স্বামী শান্তনু অন্য মেয়ের সাথে প্রেমে লিপ্ত।
মেঘনা, প্রথিস্টিত ডাক্তার বাবার একমাত্র আদুরে মেয়ে, যার মা মারা গেছেন তার ছোট বেলায় কিন্তু বাবা দিতিও বিয়ে করেছেন নীহারিকা বসু , যাকে মেঘনা ঠিক পছন্দ করেন না।
প্রেমিকের এই হটকারিতায় রাগে দুঃখে আত্ম হত্যার সিদ্ধান্ত নেয়, কিন্তু প্রথম চেষ্টায় অসফল হয়। দিতিও চেষ্টায় ঘটনাক্রমে আনন্দ কর নামক এক নাছরবান্দা বেক্তির সাথে পরিচয় ঘটে, প্রথম অবস্থায় তিনি মেঘনাকে আত্ম হত্যায় বাধা দিলেও পরে বোঝান আত্ম হত্যা একটি কঠিন কাজ, সঠিক ভাবে না করতে পারলে সেটি চেষ্টা মাত্রে থেকে যায় যা অত্তান্ত অপমানজনক এবং তিনি অর্থাৎ আনন্দ কর একটি সংস্থা চালান যারা আত্ম হত্যার সঠিক পদ্ধতি সেখান। তিনি মেঘানাকে তাদের আত্ম হত্যার প্রশিক্ষণে যোগ দিতে বলেন এবং তাকে সেখানে নিয়ে গিয়ে ভর্তি করেন এবং সেই প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের নাম হল " হেমলক সোসাইটি " যাদের মুল মন্ত্র " মরবে মর ছড়িয়ো না "।
কিন্তু এই হেমলক সোসাইটির আরালে তারা যেটা করেন সেটি হল, তারা আসলে এদেরকে নতুন করে বাচতে সেখায়, জীবনের আসল মানে বুঝতে সাহায্য করে, তাদের সেখায় তার দুঃখ এই পৃথিবীর অন্নদের তুলনায় কিছুই না। পৃথিবী অনেক সুন্দর, জীবন অনেক মূল্যবান। কিন্তু এর মাঝেই দেখা যায়, অজান্তেই মেঘনা ও আনান্দ দুজন দুজনের প্রেমে পরেযায়। কিন্তু তাদের প্রেমে ভালবাসা থাকলেও আছে এক বড় বাধা। আনান্দ আসলে এক দুরারোগ্য অসুখে অসুস্থ, ও সে খুব বেশি ২ বছর মাত্র বাঁচবে। আনন্দ নিজেও সেটি জানতে পারে হটাথ, হটাথ করেই সে বুঝতে পারে জীবনের মুল্ল, তাই সে অন্য সকলের জীবন বাচাতেই সুরু করে এই হেমলক সোসাইটি। গল্পটির আরও কিছু অংশ আছে, কিন্তু সবি এখানে যেনে গেলে ছবি দেখার আনন্দই মাটি হয়ে যাবে। তাই ছবিটি নিজেই দেখুন এর আসল মজা দিতে।
আমার জীবনে INOX Multiplex এ টিকিট কেটে বাংলা ছবি দেখা প্রথম ছবি এইটি। বাংলা ছবি আমি সচরাচর Multiplex এ দেখি না, কারন প্রধানত সেগুলি আমার মতে উন্নত মানের ছবি হল এ বসে দেখার মত হয় না বলেই মানি। কিন্তু এই ছবি দেখে ছবির মান নিয়ে আমার কোন প্রকার অভিযোগ নেই, আমি আসলেই ছবিটি হল এ বসে দেখে খুবি আনন্দিত হয়েছি।
ইংরেজির একটি কথা আছে "Dark Humor" যা এই ছবিটিতে খুব সুন্দর তুলে ধরা হয়েছে। ছবির চরিত্র গুলির নাম তাদের পরিচয় পর্ব ও ঘটনার সাথে এই এত সুন্দর খাপ খাওয়া থেকে শুরু করে ঘটনা প্রবাহ, ছবির সংলাপ সব যায়গায় এই বাঙ্গাত্তক রসবোধের নমুনা সব সময় পাওয়া যায় এই ছবিতে। মেঘনার চরিত্রে কোয়েল মল্লিক হয়ত তার জীবনের সেরা অভিনয় করেছেন, পরম্ব্রত আসলেই খুবি উঁচু দরের অভিনেতা নিঃসন্দেহে। সবচে সুন্দর এই ছবির পার্স চরিত্র গুলি, অল্প সময়ের জন্য হলেও তারা মুগ্ধ করার মত অভিনয় করেছেন প্রায় সকলেই। তবে শিলাজিৎএর অভিনয় সত্যি প্রশংসা করতে হয়, কারন তিনি আসলে একজন সঙ্গীত শিল্পী, পেশাদার অভিনেতা নন।
ছবির নির্দেশনা ছবিটিতে একটি আলাদা মাত্রা যুক্ত করে। একটি সাধারন গল্পকে অসাধারন করে পরিবেসন করা একটি কলা, এবং সৃজিত সেটি খুব সুন্দর করে তুলে ধরেছেন এবং নির্দেশক হিসেবে এক অনবদ্য মুন্সিয়ানার পরিচয় দেয়।

সবচে সুন্দর এই ছবির প্রতিটি গান, জল ফরিং থেকে শুরু করে এইত আমি চাই, বা এখন অনেক রাত, প্রতিটি গান অসাধারন, জল ফরিং আমার সর্ব কালের সেরা গানের একটি।
মুক্তির পর এই ছবি বিভিন্ন ক্ষেত্রে এখন পর্যন্ত ২১টি পুরস্কার লাভ করে যা সহজেই প্রমান করে এই ছবিটি কি মানের।





ছবির গান সব পাবেন এখানে






পুরো ছবিটি পাবেন এখানে গুগল ড্রাইভ লিঙ্ক এ
 
K-19: The Widowmaker

২০০২ সালে হলিউডে মুক্তি পায় K-19 ছবিটি. যেটা তৎকালীন সোভিয়েত ইউনিয়ন তথা রাশিয়ার সর্বপ্রথম পারমাণবিক ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র সম্বলিত ডুবোজাহাজ (submarine) এর উপর ভিত্তি করে তৈরী এবং সেখানে মূলত ডুবোজাহাজ K-19 এর প্রথম যাত্রায়ই মর্মান্তিক পারমাণবিক দুর্ঘটনা এবং অসহায় নাবিকদের আত্মবলিদান কে ফোকাস করা হয়েছে.

ছোটবেলা থেকেই আমার ডুবোজাহাজের প্রতি অধ্যাধিক আগ্রহ থাকার কারণে কোনো একটা ডুবোজাহাজের ছবি পেলেই দেখি এবং এক্ষেত্রে পশ্চিমা ছবিই আমার প্রধান আকর্ষণ. ছোটবেলায় ইচ্ছে ছিল যে কখনো ডুবোজাহাজ নাবিক হবো বড় হয়ে কিন্তু সেটা আর হয়ে উঠেনি আর তৃতীয় বিশ্বের একটি দেশ বাংলাদেশ তেমন সুবিধাযুক্তও নয় এটা সবাই জানেন. এখানে চাইলেই বৈমানিক হতে পারেন কিন্তু ডুবোজাহাজ নাবিক নয়.

আর এই K-19 ছবিটা আমার সমগ্র জীবনে দেখা অন্যতম সেরা ছবি যা কিনা সেরা ১০ এর তালিকায় রয়েছে. ছবিটা অত্যন্ত হৃদয়স্পর্শী মর্মান্তিক যদি আপনি মনের আবেগ দিয়ে প্রত্যেকটা দৃশ্যকে বিবেচনা করতে পারেন, সেখানে বুঝার অনেক বিষয় আছে সেগুলো পর্যালোচনা করে যদি দেখতে পারেন তাহলে ছবিটা আপনার মনের গভীরে আঘাত হানতে বাধ্য. যদি সেখানে মনে করতে পারেন যে অথৈ সাগরে একটা ডুবোজাহাজ বিপদের সম্মুখে আর তাদের সাহায্যার্থে কেউই নেই, তখন অসহায় কিছু নাবিক সিদ্ধান্ত নিলো তাদের জীবন বিপন্ন করে হলেও জাহাজটাকে এবং বাকি নাবিকদেরকে তারা রক্ষা করবে কারণ কিছুক্ষনের ভেতরেই বিশাল এক পারমাণবিক বিস্ফোরণ ঘটতে যাচ্ছে যা কিনা কোনোভাবে স্নায়ুযুদ্ধকে নাড়িয়ে দিতে পারে ৩য় বিশ্বযুদ্ধ পর্যন্ত হয়তোবা, কতটা অসহায়.

ছবিতে জাহাজের কাপ্তানের সাহসী পদচারণা, বিদ্রোহ, নাবিকদের ভেতরে একতা দেশপ্রেম মিলিয়ে ছবিটা মনে আঘাত করার মতোই. এইছবির শেষ দৃশ্যটা আমার দেখা মতে অত্যন্ত করুন হৃদয়স্পর্শী যা কিনা আমার নিজের চোখও ভিজিয়ে দিয়েছে অনেকবারই (শুনেছি এমন আরো অনেকেরই হয়েছে). শেষের ১০ মিনিট দৃশ্য আমি আমার নিজের সংগ্রহে রেখে দিয়েছি এবং মাঝেমাঝেই দেখি যখন কিনা খুবই আবেগ আপ্লুত হই মনে মনে. যখন শেষ দৃশ্যে জাহাজ দুর্ঘটনার তিন দশক পর জাহাজের জীবিত নাবিকেরা বৃদ্ধ বয়সে প্রথমবারের মত মিলিত হয় নাবিকদের গোরস্থানে তখন সত্যিই একজন ভালো মনের মানুষ হলে চোখ শুকনো রাখাই দায়. আর ছবির আবহ সংগীতও অসাধারণ.

এবার আসি এই ছবির কিছু রেটিংয়ের ব্যাপারে সেটা হচ্ছে যে এটার রেটিং খুব বেশি নাহলেও কম নয় কিন্তু আমার মতে অবশ্যই ৭ এর উপরে থাকা উচিত ছিল হয়তো আমি হলে তাই দিতাম. আর ছবিটা বক্স অফিসে সাফল্যের মুখ দেখেনি আর কেনই বা দেখবে? এটা যে যুক্তরাষ্ট্রের আতঙ্কজনক ডুবোজাহাজ কে নিয়ে করা হয়েছে, K-19 ডুবোজাহাজ দেখে একসময় স্নায়ুযুদ্ধের সময় যুক্তরাষ্ট্র চরম ভয় পেতো সাগরে কারণ তার দূরপাল্লার ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র সম্বলের কারণে.

আর অস্কারেও দেখা যায়নি এই ছবির কোনো পদচারণা. কখনো অস্কার অনুষ্ঠানে যাওয়ার সুযোগ হলে আমি হয়তোবা তাদের বলবো যে "তোমাদের শুধু সল্পবসনা নারীই পছন্দ, কোনো হৃদয়স্পর্শী ঘটনা নয়"

ছবিটি পরিচালনা করেছিলেন Kathryn Bigelow (যিনি Terminator খ্যাত পরিচালক James cameron এর তৃতীয় স্ত্রী ছিলেন কিন্তু বছর দুয়েকের ভেতরেই তারা আলাদা হয়ে যান ) বলতে হবে যে তার প্রাপ্য ছিল একটা পুরস্কার তিনি যে রকম পরিশ্রম করে নিখুঁতভাবে তৈরী করেছিলেন এই ছবিটি কিন্তু ওই যে বললাম, নেই এখানে কোনো সল্পবসনা. তার অত্যাধিক পরিশ্রমের কোনো মূল্যই দেয়নি কেউ, তার দূরদর্শিতার প্রশংসা করতেই হয় বিশেষ করে বলতে হয় ছবির কেন্দ্রীয় চরিত্রে ডুবোজাহাজের কাপ্তানের চরিত্রে যাকে (Harrison ford) তিনি নির্বাচন করেছিলেন সে দেখতেও একেবারেই প্রায় আসল কাপ্তান Nikolai Vladimir Zateyev এর মতোই! (কাপ্তান Nikolai Vladimir Zateyev ১৯৯৮ সালে শেষ নিঃশাস ত্যাগ করেন এবং তার মৃত্যুশয্যায় সে তার শেষ ইচ্ছের কথা ব্যাক্ত করেছিলেন যে যেন তার কবরটা যেন K-19 এর ক্রুদের পাশেই দেয়া হয় এবং তার সে ইচ্ছে কতৃপক্ষ পূরণ করেছিল) এবং ছবিতে যে ডুবোজাহাজটা ব্যবহার করা হয়েছে সেটা K-77 ডিজেল চালিত ডুবোজাহাজ যা কিনা অনেকটা K-19 পারমাণবিক ডুবোজাহাজের আর্কৃতিতেই তৈরী করা হয়েছিল স্নায়ুযুদ্ধের সময়. সত্যিই Kathryn Bigelow এর পরিচালনা দক্ষতা রয়েছে স্বীকার করতেই হবে, মন থেকে তাকে ধন্যবাদ জানাই যে এমন একটা ঐতিহাসিক দুর্ঘটনা সম্বলিত ছবি নির্মাণের জন্যে (যদিও তৎকালীন রাশিয়া কতৃপক্ষের মত ভিন্ন এব্যাপারে যে এছবিতে কল্পনিকতার ছোঁয়া ৭০% এবং অনেক ক্ষেত্রে তা অতিরঞ্জিত করা হয়েছে বিশেষ করে বিদ্রোহের দৃশ্যাবলী)
 
Fist of Fury

আমরা সকলেই মার্শাল আর্ট কিংবদন্তি Bruce lee এর কথা জানি এবং তার ছবিও দেখেছি যা কিনা মার্শাল আর্ট চলচিত্রের জগতের এক অমূল্য সম্পদ, হয়তোবা তার অকাল মৃত্যু না হলে আমরা পেতাম আরো অনেক কিছুই. তাকে বলা হতো মার্শাল আর্টের জনক.

১৯৭২ সালে তার মৃত্যুর একবছর পূর্বে হংকঙ এ মুক্তি পায় তার সর্বাধিক আলোচিত ছবি Fist of Fury যা কিনা কোনো কোনো ক্ষেত্রে The Chinese Connection নামেও পরিচিত.

এছবির পটভূমিকা ১৯ শতকের গোড়ার দিকে বিশেষ করে ১৯১০ সালে যখন চীনে Qing ডাইনেস্টির শাসন ক্রমেই দুর্বল হয়ে পড়ছিলো এবং দ্রুত তা জাপানের অধীনে চলে যাচ্ছিলো. জাপানি ঔপনিবেশিকদ্বয় ক্রমেই তাদের থাবা বিস্তার করে চলছিল চীনের উপরে কিন্তু কিছু সংখক চীনারা ছিল যারা জাপানের ঔপনিবেশিকতা কে মেনে নিতে পারছিলো না, তাদের ভেতরে অন্যতম ছিল চীনা মার্শাল আর্ট শিক্ষক "হুও যুঞ্জিয়া" যার কিনা রহস্যজনক ভাবে আচানক মৃত্যু ঘটে এবং তার আদরের ছাত্র চেন জেন্ (ব্রুসলি) সেটা কোনোমতেই মেনে নিতে পারেনা, পরে সে শপথ করে যে সে লুকিয়ে লুকিয়ে জাপানের বিভিন্ন স্থাপনা স্কুলের উপরে হামলা চালাবে গুরুর প্রতিশোধ হিসেবে এবং সে তাই করতে থাকে, এবং তার হাতে মারা পরে অনেক জাপানিও এবং তাদের তাবেদাররা.
একসময় সে নিজেই চীনা কর্তৃপক্ষের নিকট হতে দূরে সরে যেতে থাকে যখন ঔপনিবেশিক জাপানীয়রা চীনাদেরকে বার বার হুমকি প্রদান করে যে যদি চেন জেনকে তাদের হাতে তুলে না দেয় তাহলে তারা বাধ্য হবে চীনা নাগরিকদেরকে গৃহবন্দী করতে এবং তাদের স্কুল কলেজগুলো বন্ধ করে দিতে.

তো "হুও যুঞ্জিয়ার" স্কুলের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ জাপানীয়দের সাথে চুক্তি করে চেন জেনকে ধরিয়ে দেয়ার জন্যে এবং সে অবশেষে ধরা দেয় জাপানীয়দের হাতে কিন্তু শর্ত এই যে জাপানীয়রা আর কখনো হুও যুঞ্জিয়ার স্কুলের দিকে নজর দেবেনা. শেষ দৃশ্যে চেন জেন্ জাপানি পুলিশের উপর হামলে পরে এবং গুলির শব্দ শোনা যায়.

ঐতিহাসিকভাবে এই ছবির কিছুটা সত্যতা রয়েছে এবং ব্রুসলির Chen zhen চরিত্রটি তৎকালীন চীনা মার্শাল আর্ট শিক্ষক Huo yuanjia এর শিষ্য "লিউ ঝেনসেং" এর উপর চিত্রায়িত বলেই ধরা হয়ে থাকে যে কিনা গুরুর মৃত্যুর পর চীনের বিভিন্ন জাপানিও স্থাপনার উপরে হামলা চালিয়ে ঔপনিবেশিক জাপানীয়দের বিস্তর ক্ষতি সাধন করে. কিন্তু তার শেষ পরিণতি সম্পর্কে ইতিহাস তেমনভাবে অবগত নয় তবে অধিকাংশের মতে লিউ ঝেনসেং ঔপনিবেশিক জাপানীয়দের হাতে গুম হয়ে যায়.

এই ছবিটা ব্রুসলির জীবনের অন্যতম প্লাস পয়েন্ট একটা ছবি ছিল যা তাকে রাতারাতি খ্যাতির শীর্ষে নিয়ে গিয়েছিলো, আর আমার কাছেও এই ছবিটাকেই মনে হয়েছে যে ব্রুসলির সেরা ছবি. পরবর্তী সময়ে এই Fist of Fury বেশ কয়েকবার রিমেক হয়েছে যার ভেতরে Jackie chan এর New fist of fury অন্যতম কিন্তু কোনোটাই ব্রুসলির ধারেকাছেও যেতে পারেনি, ব্রুসলি যেভাবে Chen zhen চরিত্রটাকে ফুটিয়ে তুলেছিল অন্যকেউ তেমনটা করতে পারেনি.
 
Hell or High Water


এ পৃথিবীতে দারিদ্র্য এক ভয়াবহ ব্যাধির নাম। আর এই ব্যাধিতে আক্রান্ত মানুষেরাই বোঝে এর যন্ত্রণা। তবে সেই যন্ত্রণা একসময় যখন সহ্যের সীমা ছাড়িয়ে যায়, তখন তা মানুষকে অন্যায় করতে শেখায়।
ট্যানার ও টবি হাওয়ার্ড নামের দুই ভাইয়ের জন্ম টেক্সাসের এক দরিদ্র পরিবারে। বড় ভাই ট্যানার মাত্র এক বছর আগে নিজের বাবাকে খুনের দায়ে দশ বছর জেল খেটে এসেছে। জীবনের কাছে তার চাওয়া-পাওয়ার কিছু নেই। আপন বলতে এক ভাই বাদে আর কেউ নেই তার। যেভাবে চলছে চলুক মনোভাব নিয়েই কেটে যাচ্ছে তার দিন।
আর অন্যদিকে টবি বরাবরই আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল ছিল। বিচ্ছেদের পর তার স্ত্রী দুই সন্তান নিয়ে আলাদা থাকে। তবে স্ত্রী-সন্তানের নিয়মিত দেখভাল, সংসারের যাবতীয় খরচ সবই বহন করে টবি। বড় ভাইয়ের মতো নিজের ভবিষ্যৎ নিয়ে ভাবে না সে। কিন্তু সে চায় না, তাদের ভাইয়ের মতো অবস্থা হোক তার দুই সন্তানের। তাই সবসময় মাথায় একটাই চিন্তা, কীভাবে তার দুই সন্তানের ভবিষ্যৎ সুন্দর ও স্বচ্ছল করা যায়।
আর সে লক্ষ্যেই মৃত মায়ের র‍্যাঞ্চের মালিকানা ফিরিয়ে আনা জরুরি হয়ে পড়েছিল। মা মারা যাওয়ার আগ থেকেই টেক্সাসের এক মিডল্যান্ড ব্যাংকের কাছে বন্ধক ছিল র‍্যাঞ্চটি। টাকার অঙ্কটা এতটাই বেশি ছিল তার পক্ষে সহজ কোনো উপায়ে তা পরিশোধ করার উপায় ছিল না। তাই বাধ্য হয়েই অসৎ উপায়ের আশ্রয় নেয় দুই ভাই।
ছবি শুরু হয় ছোটখাট দুটি ব্যাংক ডাকাতি দিয়ে। নিজেদের র‍্যাঞ্চ বাঁচাতে শেষমেশ মিডল্যান্ড ব্যাংকেরই দুটি ব্রাঞ্চ লুট করে ট্যানার আর টবি। লুটের অংক দেখে এফবিআই কেস নিতে তেমন আগ্রহ না দেখালে কেসটি চলে যায় দুই প্রবীণ টেক্সান রেঞ্জারের হাতে। তৃতীয় ডাকাতির পর, পুরোদস্তুরভাবে দুই ভাইয়ের পেছনে লাগেন রেঞ্জার মার্কাস হ্যামিল্টন এবং আলবার্তো পার্কার। অপেক্ষা করতে থাকেন পরবর্তী ডাকাতির।
২০১৫ সালে সিকারিও দিয়ে বাজিমাত করার পরের বছরই আরও একটি অসাধারণ চলচ্চিত্র নিয়ে হাজির হয়েছেন চিত্রনাট্যকার টেইলর শেরিডান। আর চলচ্চিত্র পরিচালনায় ছিলেন ব্রিটিশ চিত্র পরিচালক ডেভিড ম্যাকেঞ্জি। তবে মজার ব্যাপার হলো- সেই ২০১২ সাল থেকে
বেস্ট পিকচারসহ মোট চারটি ক্যাটাগরিতে অস্কারে নমিনেশন পেয়েছে সিনেমাটি। জেফ ব্রিজেস পেয়েছেন সেরা সহ-অভিনেতার মনোনয়ন, মৌলিক চিত্রনাট্যের জন্য টেইলার শেরিডান এবং ফিল্ম এডিটিং ক্যাটাগরিতে মনোনয়ন পেয়েছেন জেইক রবার্টস।
এই সিনেমার সবচেয়ে মজার বিষয় হচ্ছে, সিনেমাটি টেক্সাসকেন্দ্রিক হওয়া সত্ত্বেও এর কোনো দৃশ্য ধারণ করা হয়নি টেক্সাসে। সম্পূর্ণ চলচ্চিত্রের শুটিং হয়েছে নিউ মেক্সিকোতে। হাইওয়ে থেকে শুরু করে এর চারপাশে দৃশ্যগুলো এতটাই সজীব ও প্রাণবন্ত যে তা বোঝার কোনো উপায় নেই। সিনেমাটোগ্রাফার গিলস নাজেন্স প্রত্যেকটি দৃশ্য এমনভাবে উপস্থাপন করেছেন যেন মনে হয়েছে, আসলেই টেক্সাসের কোনো অঞ্চলের গল্প।
আবহ সঙ্গীত হিসেবে এতে ব্যবহার করা হয়েছে চমৎকার সব সাউন্ডট্র্যাক। টেইলর শেরিডানের চিত্রনাট্য তথাকথিত কপট সংলাপের পরিবর্তে মানুষের কথা বলার বাস্তব রূপকে ফুটিয়ে তুলেছে, যা কি না একইসঙ্গে শ্রুতিমধুরও। সংলাপগুলো খুব সাধারণ হয়েও ছিল মনে রাখার মতো অসাধারণ।
ব্ল্যাকলিস্টে পড়ে ছিল এই সিনেমার স্ক্রিপ্ট। শেষমেশ তাতে হাত দেন ম্যাকেঞ্জি। দেরিতে হলেও এই দুজন মিলে যেন ভিন্নধর্মী এক ওয়েস্টার্নের স্বাদ দিলেন দর্শকদের।
এ ছবির পরতে পরতে ছড়িয়ে আছে দারিদ্র্যের বিষাদ আর তা অতিক্রম করার জন্য একটি পরিবারের লড়াই ও আত্মত্যাগ। স্বল্প পরিসরের ছবিতে চেষ্টা করা হয়েছে সামাজিক রাজনৈতিক পটভূমি তুলে ধরার।
পুরো ছবি জুড়েই যে বিষয়টি স্পষ্টভাবে বোঝানো হয়েছে তা হলো আধুনিক পশ্চিমা সমাজের আসল খলনায়ক হচ্ছে ব্যাংকগুলো। লুট হওয়া প্রথম ব্যাংকের দেয়ালে স্প্রে করে লেখা ছিল, ‘ইরাকে তিনটি ট্যুর অথচ মুক্তি নেই আমাদের মতো মানুষেরও’। ঋণের কঠিন মারপ্যাঁচে পড়ে ভূমিহীন সুবিধাবঞ্চিত মানুষেরা বিরক্ত ও ক্রুদ্ধ সমসাময়িক ব্যাংকিং ব্যবস্থার উপর। তাই ব্যাংক ডাকাতদের শনাক্ত করতে গিয়ে স্থানীয়দের কাছ থেকে তেমন কোনো সহযোগিতা পাননি রেঞ্জাররা; সেই দৃশ্যে এক মধ্যবয়স্ক লোক বলেন, “গত ত্রিশ বছর ধরে ব্যাংকই তো আমাদের লুট করে যাচ্ছে।”
ছবিটি মূলত চারটি চরিত্রকে ঘিরেই। বাকি চরিত্রগুলো ছিল অনেকটা ক্যামিওর মতো। তবে কেউই নিজেদের অভিনয়ে কোনো ত্রুটি রাখেননি। ট্যানারের চরিত্রে বেন ফস্টার আর মারকাসের চরিত্রে জেফ্রি ব্রিজেসের অভিনয় ছিল অসাধারণ। বেন ফস্টার সচরাচরই চমৎকার অভিনয় করে থাকেন। বিশেষ করে ইন্ডি ফিল্মগুলোতে তার অভিনয় অবাক করার মতো। তিনি হলিউডের আন্ডাররেটেড অভিনেতাদের মধ্যে একজন। আর ড্যুডখ্যাত জেফ ব্রিজেসের কথা নতুন করে আর কী বলার আছে। তিনি হলিউডের চমৎকার অভিনেতাদের মধ্যে একজন এ ব্যাপারে কোনো সন্দেহ নেই। তবে মানুষ চোখ দিয়েও এত সুন্দর অভিনয় করতে পারে, তা এই সিনেমা না দেখলে বোঝা যাবে না!
সবচেয়ে বেশি অবাক করেছেন টবি চরিত্রে অভিনয় করা ক্রিস পাইন। তিনি বরাবরই বিগ বাজেট সিনেমাতে অভিনয় করে থাকেন। কিন্তু ইন্ডি ফিল্মে বেন ফস্টার আর জেফ ব্রিজেসের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে অভিনয় করার দক্ষতাও যে তার আছে, সে ব্যাপারটি ভালো করে দেখিয়ে দিয়েছেন। যদিও পাননি, কিন্তু অস্কারের মনোনয়ন পাওয়ার মতোই কাজ দেখিয়েছেন।

বেস্ট পিকচারসহ মোট চারটি ক্যাটাগরিতে অস্কারে নমিনেশন পেয়েছে সিনেমাটি। জেফ ব্রিজেস পেয়েছেন সেরা সহ-অভিনেতার মনোনয়ন, মৌলিক চিত্রনাট্যের জন্য টেইলার শেরিডান এবং ফিল্ম এডিটিং ক্যাটাগরিতে মনোনয়ন পেয়েছেন জেইক রবার্টস।
এই সিনেমার সবচেয়ে মজার বিষয় হচ্ছে, সিনেমাটি টেক্সাসকেন্দ্রিক হওয়া সত্ত্বেও এর কোনো দৃশ্য ধারণ করা হয়নি টেক্সাসে। সম্পূর্ণ চলচ্চিত্রের শুটিং হয়েছে নিউ মেক্সিকোতে। হাইওয়ে থেকে শুরু করে এর চারপাশে দৃশ্যগুলো এতটাই সজীব ও প্রাণবন্ত যে তা বোঝার কোনো উপায় নেই। সিনেমাটোগ্রাফার গিলস নাজেন্স প্রত্যেকটি দৃশ্য এমনভাবে উপস্থাপন করেছেন যেন মনে হয়েছে, আসলেই টেক্সাসের কোনো অঞ্চলের গল্প।
আবহ সঙ্গীত হিসেবে এতে ব্যবহার করা হয়েছে চমৎকার সব সাউন্ডট্র্যাক। টেইলর শেরিডানের চিত্রনাট্য তথাকথিত কপট সংলাপের পরিবর্তে মানুষের কথা বলার বাস্তব রূপকে ফুটিয়ে তুলেছে, যা কি না একইসঙ্গে শ্রুতিমধুরও। সংলাপগুলো খুব সাধারণ হয়েও ছিল মনে রাখার মতো অসাধারণ।
 
LOHA (1987)

একটা সময় বলিউডে একশন ছবির ভালোই চাহিদা ছিল এবং নির্মিতও হতো দর্শক চাহিদার উপরে নির্ভর করে আর সেগুলো যথেষ্টই দর্শক সমাদৃত হত. ৬০ এবং ৭০ এর দশকে বলিউডে শক্তিশালী একশন ছবির মূলত কর্ণধার ছিলেন ধর্মেন্দ্র, তাকে বলা হয়ে থাকে বলিউডের সর্বাধিক ব্যাতিক্রমী শক্তিশালী অভিনেতা যার অভিনীত কিংবদন্তি চলচিত্র Sholay তে বীরু চরিত্রটি আজ দর্শকের মনে গেঁথে আছে.

১৯৮৭ সালে মুক্তি পায় ধর্মেন্দ্র অভিনীত Loha, মূলত একটি কম্যান্ডো একশন এডভেঞ্চারধর্মী ছবি. সেখানে তার সাথে আরো রয়েছে বলিউডের অন্যতম শক্তিশালী অভিনেতা শত্রুঘ্ন সিনহা.

আমার মনে আছে যে তখন আমি দেশের বাইরে, ভিসিআরে দেখেছিলাম ছবিটা তখন. সেখানে দড়ি বেয়ে খাড়া পর্বত আরোহনের একটি দৃশ্য রয়েছে যা দেখে আমি এতটাই উত্তেজিত হয়েছিলাম তখন যে এরপর আমার মানে দড়ি বাওয়া আর কোনোকিছু বেয়ে উপরে উঠা টা একটা নেশায় পরিণত হয়েছিল. অনেকটা এভাবেই আমি দ্রুত পাহাড় বাইতে শিখি তখন এবং একবার ছোটোখাটো একটা বিপদও বাধিয়ে বসি, আমার মা পরে বলেছিলেন যে এই ছেলেকে আর ভিসিআর দেখানো যাবেনা.

যাহোক এই লোহা ছবিটা সত্যিই দেখার মতো একটা একশনধর্মী ছবি যা কিনা হলিউডের একশনধর্মী ছবিগুলোর মুখোমুখি দাঁড়াবার ক্ষমতা রাখে. ছবিটা কিছুদিন আগে আমি আবারও একবার দেখেছিলাম, ভালোই লাগলো দেখতে, ছবিতে বিশ্বাস বন্ধুত্ব ঈমানদারীতা আত্মত্যাগ এর উপরে বিশেষ করে ফোকাস করা হয়েছে. youtube এ ছবিটা দেয়া আছে, প্রিন্টও বেশ ভালোই

(পরবর্তীতে Loha নাম ১৯৯৭ সালেও আরো একটি ছবি মুক্তি পায় আর কাকতালীয়ভাবে সেটাও ধর্মেন্দ্র এর আর সাথে আছে মিঠুন চক্রবর্তী কিন্তু সেটা কোনোই সারা জাগাতে পারেনি, আবার অনেকে আবার মনে করে যে সেটা মনে হয় ১৯৮৭ সালের লোহা ছবির কোনো সিকুয়েল যেটা অবশ্যই না)
 
11f1a2743ff506ec2214159f9967fa57_XL.jpg

আমরা কম-বেশি অনেকেই মূভি দেখে থাকি।
কেউ এ্যাকশন, কেউ কাহিনী নির্ভর, কেউবা কমেডি, আবার অনেকেই ঐতিহাসিক সহ বিভিন্ন ধাঁচ/ ভাষার মুভি দেখতে পছন্দ করি। আমাদের মধ্যে আবার অনেকেরই পছন্দের মূভিগুলো নিয়ে একটি সংগ্রহশালা বানিয়ে রাখার অভ্যাস আছে। আমরা প্রায়ই কিছু সিনেমা দেখে থাকি। কিন্তু সবকটা আমাদের মন ছোয় না। আবার কিছু সিনেমা অনেকদিন মনে থাকে। কিছু সিনেমা আমরা সহজে ভুলতে পারিনা। সেইসব সিনেমাই সেরা সিনেমা আমদের কাছে।

scale

The God Must Be Crazy - ছোট্ট একটা বিষয় নিয়ে যে এত সুন্দর মুভি বানানো যায় তা এই মুভিটা দেখার আগ পর্যন্ত জানতাম না। কালাহারি মরুভুমির ছোট্ট একটা জংলি জাতি যারা পানির জন্য প্রতিনিয়ত সংগ্রাম করে আসছে কিন্তু তাদের মধ্যে কনো সংঘাত, কলহ নাই। অপরাধ বা অপরাধী বলে কোনো কিছু তাদের ভাষায় নাই। খুব শান্তিতেই কাটতো তাদের দিন।
একদিন একটি প্লেন তাদের উপর দিয়ে যাচ্ছিলো। প্লেনের পাইলট কোক খেয়ে জানালা দিয়ে বোতল ফেলে দিল। তারা মনে করল ঈশ্বর তাদের জন্য এটা পাঠিয়েছেন। এই বোতল তাদের দেখা সব থেকে শক্ত বস্তু। এটার বহুব্রিধ ব্যাবহার যখন শুরু হলো তখন এটা নিয়ে তাদের মধ্যে শুরু হয়ে গেলো ঝগড়া। তারা সিদ্ধান্ত নেয় বোতলটিকে পৃথিবীর শেষ প্রান্তে ফেলে আসবে। এখান থেকে মূলত মুভিটির কাহিনি শুরু। এরপর মজার মজার কাহিনি নিয়ে মুভিটি চলতে থাকে। এক কথায় অসাধারণ একটা মুভি।

gods-must-be-crazy-2_490_330_80.jpg

এর কাহিনীর প্রেক্ষাপট আফ্রিকার বটসোয়ানা এবং ডিপ কালাহারি মরুভূমি। যেখানকার আদিম অধিবাসীরা ভূপৃষ্ঠের পানির উৎস ছাড়াই অদ্ভূত উপায়ে নিজেদের পানির চাহিদা মেটায়। এই বুশম্যানরা তথাকথিত সভ্যতার থেকে নিজেদের সুকৌশলে আলাদা রাখে। কিন্তু সভ্যতা কি আর সহজে ছাড়ে? ফলে সভ্যতার উপাদান গিয়ে পড়ে তাদের বাসস্থানে। যেমন একটি কোকের বোতল।

প্রচণ্ড হাসির মুভি। মুভিটা দেখার পর একবারও মনে হবে না সময়ের অপচয় করা হল। হাসতে হাসতে আপনার চখে পানি এসে যাবে। বহু বছর আগের মুভি। সম্ভবত ১৯৮০ সালের মুভি। আপনারা মুভিটা দেখুন আর হাসুন। চমৎকার বিনোদন।

মুভির নামঃ The God Must Be Crazy (1981)
পরিচালকঃ Jamie Uys
কথাঃ Action / Comedy
গল্পঃ A comic allegory about a traveling Bushman who encounters modern civilization and its stranger aspects, including a clumsy scientist and a band of revolutionaries.
নির্ধারণঃ 7.0/10
বছরঃ 1980
লেখকঃ Jamie Uys
 

Users who are viewing this thread

Back
Top