একই বাড়ীতে ওরা থাকলেও বিয়ের যা কিছু নিয়ম আছে সব একেবারে ঠিকঠাক ভাবে করতে হবেই এটা আগে থেকেই ঠিক করা ছিল। সামনের বৃহস্পতিবার ভালো দিন আছে, একই দিনে ছেলে ও মেয়ে দুজনকেই আশীর্বাদ করা হবে ভবানীপুরের বাড়ীতে। অরিত্রর জন্য আসছেন মৌয়ের মামা আর মেয়েকে আশীর্বাদ করার জন্য তো লোকের অভাব নেই। তার আগে মৌকে সাথে নিয়ে গিয়ে তানিস্কের শোরুম থেকে একটা হীরের আংটি পছন্দ করে এসেছে অরিত্র। যথারীতি মৌ এত দামের আংটি নিতে রাজী হচ্ছিল না প্রথমে। পুবালী হেসে ফেলে বলেছে, তুই কি বোকা রে মৌ? আমি হলে তো বলতাম...আরো বেশী দামের কিছু থাকলে দেখাতে। মৌ দিদির কানে কানে বলেছে, কি হবে আমার এত দামের আংটি। পুবালী প্রথমে বুঝতে পারেনি ও কি বলতে চেয়েছে, তারপরেই বুঝতে পেরে ওকে কাছে টেনে নিয়ে বলেছে... সে তো জানি, তোর সব থেকে দামী জিনিষটা কি। অরিত্র ওদিকে কাউন্টারে পেমেন্টের জন্য গেছে, মৌ পুবালীর কাছে সরে গিয়ে আস্তে করে বলল...মেজদি, আমাকেও তো তোমার ভাইকে কিছু দিতে হবে...কি দিই বলো না। তারপর দুজনে মিলে রুপসাকে ফোন করে ঠিক করেছে কি করবে কিন্তু সেটা কিছুতেই অরিত্র যেন না জানতে পারে এমন ভাবে করেছে ওরা। ফেরার সময়ে ওদের দুজনকে চুপি চুপি কথা বলতে দেখে অরিত্র একবার জিজ্ঞেস করেছে... কি ব্যাপার রে দিদিভাই...কি এত তোদের গোপন আলোচনা চলছে? পুবালী খুব গম্ভীর হওয়ার ভান করে ভাইকে বলেছে...মেয়েদের কত কথা থাকে...ও তুই বুঝবি না...
আশীর্বাদের দিন ওদের দুজনকে পাশাপাশি বসিয়ে একসাথে শুরু হয়েছে অনুষ্ঠান। এক এক করে বড়দের সবাইয়ের আশীর্বাদ করা হয়ে গেলে অরিত্র মৌয়ের আঙ্গুলে হীরের আংটিটা পরিয়ে দিলে জেঠিমা মজা করে জেঠুকে বলল...দেখেছো, আমাদের দুষ্টু কত সুন্দর একটা আংটি দিয়েছে...তুমি তো আমাকে কি একটা দিয়েছিলে কে জানে। জেঠু হেসে ফেলে বলল...আমি তো আর ওর মতো এত মাইনে পেতাম না তখন যে তোমাকে হীরের আংটি দেবো। দাদু হেসে ফেলে বলল...শুধু হীরের আংটি দিলেই হবে না বাবা, আমি লিস্ট বানিয়ে রেখেছি আরো কি কি করতে হবে।
সব কিছু মিটে গেলে দাদু মৌকে পাশে বসিয়ে পকেট থেকে একটা কাগজ বের করে ওর হাতে দিয়ে বলল...নে পড়ে শোনা তো দেখি বুদ্ধুটাকে কি কি করতে হবে বিয়ে করতে গেলে। মৌ কাগজটা দেখেই মুখ কাঁচুমাচু করে বলল...আমি কেন দাদু...
- আরে আমি কেন মানে? তুই এখন আমার নাতনী...আর ও ব্যাটা এখন এই বাড়ীর ছেলে, আমার কেউ নয় কিছুক্ষনের জন্য। সব কটা নিয়ম মেনে যদি চলবে কথা দেয় তবেই বিয়ে হবে আর যদি বলে মানবো না তো আমি তোর অন্য জায়গায় বিয়ে দেব...তোকে চিন্তা করতে হবে না, আমার হাতে অনেক ভালো ভালো ছেলে আছে...বুঝলি...
দাদুর কথা শুনে সবাই হেসে গড়াগড়ি যাওয়ার মতো অবস্থা। মোটামুটি সবাই দাদুকে একটু গম্ভীর দেখেছে এতদিন কিন্তু সেই মানুষটা যে এত মজা করতে পারে কারুরই প্রায় জানা ছিল না। জেঠু হাসতে হাসতে বলল...এই দুষ্টু, ভয় করিস না, আমি তোর পাশে আছি। বুক চাপড়ে বলে দে...হ্যাঁ বলো কি কি নিয়ম আছে...
মৌ কিছুতেই পড়বে না কি লেখা আছে, শেষে দাদু নিজেই পড়তে শুরু করল...
১) এখন থেকে গাড়ী নিয়ে অফিস যাওয়া আসা করতে হবে। নিজে ড্রাইভ করাতে আপত্তি থাকলে ড্রাইভার রাখতে হবে।
২) দেরী করে অফিস থেকে ফেরা যাবে না। দরকার হলে বাড়ীতে বসে কাজ করতে হবে। অনেক অফিসেই এখন এই নিয়ম চালু হয়ে গেছে, এতএব এই ব্যাপারে আর কোনো আলোচনা হবে না।
৩) শনিবার কোনো অবস্থাতেই অফিস আছে বলা যাবে না। এক্ষেত্রেও পয়েন্ট নাম্বার ২ প্রযোজ্য হতে পারে যদি মৌ অনুমতি দেয়।
৪) মাসে অন্তত একবার সস্ত্রীক ভবানীপুরের বাড়ীতে এসে দুদিন থাকতেই হবে। জেঠুরা চাইলে দিনের সংখা বাড়তে পারে। শুধু ভবানীপুর এলেই হবে না, ওদিকে বড় জেঠুদের কথাও খেয়াল রেখে বছরে অন্তত একবার যেতে হবে। এছাড়াও বাকি আত্মীয় স্বজনদের বাড়ীতে সময় সুযোগ করে যাওয়া আসার ব্যাপারটা থাছে।
৫) বছরে দুটো বড় বা একটা বড় ও একটা ছোট বেড়াতে যাওয়ার প্রোগ্রাম রাখতেই হবে এবং সেটা আমাদের সাথে অবশ্যই নয়। আমাদের সাথে যেতে চাইলে এর বাইরে যাওয়া যেতে পারে।
৬) আগামী অন্তত চার বছর একেবারে ঝাড়া হাত পা থাকতেই হবে। মৌ সংসার করার সব কিছু শিখে গেলে তবেই বাচ্চাকাচ্চা নেবার ব্যাপারে ভাবতে হবে।
৭) এখন থেকে দেশের বাইরে কোথাও গিয়ে থাকতে গেলে একা একা যাওয়া চলবে না।
সব কটা নিয়ম পড়া হয়ে গেলে দাদু মুখ তুলে সবার মুখে হাসি দেখে অরিত্রর দিকে তাকিয়ে বলল...বল, কি করবি...
অরিত্র হাসবে না কাঁদবে বুঝতে পারছিল না। একটু সময় চুপ করে থেকে হাসি মুখে বলল...ধরো আমি এখন হ্যাঁ বলে দিলাম আর পরে মানলাম না...তাহলে কি হবে...
দাদু এবারে মৌয়ের দিকে তাকিয়ে জিজ্ঞেস করল...কি রে...কি হবে? মৌ মুখ তুলে একবার অরিত্রর দিকে তাকিয়ে নিয়ে বলল...আমি কি জানি...তোমার নাতি, তুমি বুঝবে...
দাদু হাসতে হাসতে বলল...সে কি রে...আমি তো তোর জন্যই এত কিছু ভাবছি আর তুই আমার কোর্টেই বল ফেলে দিলি...যাকগে, শোন...এগুলো আমি মোটেও মজা করার জন্য ভাবিনি...চাইলে সবকটা নিয়মই মেনে চলা যায় বুঝলি...
আশীর্বাদের দিন ওদের দুজনকে পাশাপাশি বসিয়ে একসাথে শুরু হয়েছে অনুষ্ঠান। এক এক করে বড়দের সবাইয়ের আশীর্বাদ করা হয়ে গেলে অরিত্র মৌয়ের আঙ্গুলে হীরের আংটিটা পরিয়ে দিলে জেঠিমা মজা করে জেঠুকে বলল...দেখেছো, আমাদের দুষ্টু কত সুন্দর একটা আংটি দিয়েছে...তুমি তো আমাকে কি একটা দিয়েছিলে কে জানে। জেঠু হেসে ফেলে বলল...আমি তো আর ওর মতো এত মাইনে পেতাম না তখন যে তোমাকে হীরের আংটি দেবো। দাদু হেসে ফেলে বলল...শুধু হীরের আংটি দিলেই হবে না বাবা, আমি লিস্ট বানিয়ে রেখেছি আরো কি কি করতে হবে।
সব কিছু মিটে গেলে দাদু মৌকে পাশে বসিয়ে পকেট থেকে একটা কাগজ বের করে ওর হাতে দিয়ে বলল...নে পড়ে শোনা তো দেখি বুদ্ধুটাকে কি কি করতে হবে বিয়ে করতে গেলে। মৌ কাগজটা দেখেই মুখ কাঁচুমাচু করে বলল...আমি কেন দাদু...
- আরে আমি কেন মানে? তুই এখন আমার নাতনী...আর ও ব্যাটা এখন এই বাড়ীর ছেলে, আমার কেউ নয় কিছুক্ষনের জন্য। সব কটা নিয়ম মেনে যদি চলবে কথা দেয় তবেই বিয়ে হবে আর যদি বলে মানবো না তো আমি তোর অন্য জায়গায় বিয়ে দেব...তোকে চিন্তা করতে হবে না, আমার হাতে অনেক ভালো ভালো ছেলে আছে...বুঝলি...
দাদুর কথা শুনে সবাই হেসে গড়াগড়ি যাওয়ার মতো অবস্থা। মোটামুটি সবাই দাদুকে একটু গম্ভীর দেখেছে এতদিন কিন্তু সেই মানুষটা যে এত মজা করতে পারে কারুরই প্রায় জানা ছিল না। জেঠু হাসতে হাসতে বলল...এই দুষ্টু, ভয় করিস না, আমি তোর পাশে আছি। বুক চাপড়ে বলে দে...হ্যাঁ বলো কি কি নিয়ম আছে...
মৌ কিছুতেই পড়বে না কি লেখা আছে, শেষে দাদু নিজেই পড়তে শুরু করল...
১) এখন থেকে গাড়ী নিয়ে অফিস যাওয়া আসা করতে হবে। নিজে ড্রাইভ করাতে আপত্তি থাকলে ড্রাইভার রাখতে হবে।
২) দেরী করে অফিস থেকে ফেরা যাবে না। দরকার হলে বাড়ীতে বসে কাজ করতে হবে। অনেক অফিসেই এখন এই নিয়ম চালু হয়ে গেছে, এতএব এই ব্যাপারে আর কোনো আলোচনা হবে না।
৩) শনিবার কোনো অবস্থাতেই অফিস আছে বলা যাবে না। এক্ষেত্রেও পয়েন্ট নাম্বার ২ প্রযোজ্য হতে পারে যদি মৌ অনুমতি দেয়।
৪) মাসে অন্তত একবার সস্ত্রীক ভবানীপুরের বাড়ীতে এসে দুদিন থাকতেই হবে। জেঠুরা চাইলে দিনের সংখা বাড়তে পারে। শুধু ভবানীপুর এলেই হবে না, ওদিকে বড় জেঠুদের কথাও খেয়াল রেখে বছরে অন্তত একবার যেতে হবে। এছাড়াও বাকি আত্মীয় স্বজনদের বাড়ীতে সময় সুযোগ করে যাওয়া আসার ব্যাপারটা থাছে।
৫) বছরে দুটো বড় বা একটা বড় ও একটা ছোট বেড়াতে যাওয়ার প্রোগ্রাম রাখতেই হবে এবং সেটা আমাদের সাথে অবশ্যই নয়। আমাদের সাথে যেতে চাইলে এর বাইরে যাওয়া যেতে পারে।
৬) আগামী অন্তত চার বছর একেবারে ঝাড়া হাত পা থাকতেই হবে। মৌ সংসার করার সব কিছু শিখে গেলে তবেই বাচ্চাকাচ্চা নেবার ব্যাপারে ভাবতে হবে।
৭) এখন থেকে দেশের বাইরে কোথাও গিয়ে থাকতে গেলে একা একা যাওয়া চলবে না।
সব কটা নিয়ম পড়া হয়ে গেলে দাদু মুখ তুলে সবার মুখে হাসি দেখে অরিত্রর দিকে তাকিয়ে বলল...বল, কি করবি...
অরিত্র হাসবে না কাঁদবে বুঝতে পারছিল না। একটু সময় চুপ করে থেকে হাসি মুখে বলল...ধরো আমি এখন হ্যাঁ বলে দিলাম আর পরে মানলাম না...তাহলে কি হবে...
দাদু এবারে মৌয়ের দিকে তাকিয়ে জিজ্ঞেস করল...কি রে...কি হবে? মৌ মুখ তুলে একবার অরিত্রর দিকে তাকিয়ে নিয়ে বলল...আমি কি জানি...তোমার নাতি, তুমি বুঝবে...
দাদু হাসতে হাসতে বলল...সে কি রে...আমি তো তোর জন্যই এত কিছু ভাবছি আর তুই আমার কোর্টেই বল ফেলে দিলি...যাকগে, শোন...এগুলো আমি মোটেও মজা করার জন্য ভাবিনি...চাইলে সবকটা নিয়মই মেনে চলা যায় বুঝলি...