দেখতে দেখতে আরো মাস দুয়েক কেটে গেছে। মৌ কি ডিশিশান নিয়েছে জানায়নি কিন্তু কিছুটা হলেও যেন ওর ভেতরে পরিবর্তন এসেছে আস্তে আস্তে কিন্তু সেটা অরিত্রর ব্যাপারে একেবারেই নয়। আগেও যেমন ওকে এড়িয়ে যেতো সেরকমই আছে কিন্তু দাদু দিদানদের সাথে আগের থেকে অনেক বেশী মেশার চেষ্টা করে। সবাই ভেবেছে দেখা যাক, আরো কিছুদিন গেলে হয়তো আরো কিছুটা স্বাভাবিক হবে। বেশ কিছুদিন হয়ে গেছে ও একাই ঘরের দরজা বন্ধ করে শোয় রাতে যেটা আগে করতো না। অরিত্র ব্যাপারটা নিয়ে যে একেবারেই ভাবেনি তা নয়...কখোনো ভেবেছে তাহলে কি ও আমাকে বিশ্বাস করতে পারছে না? ভয় পাচ্ছে এই ভেবে যে আমি ওর উপরে জোর করবো? কথাগুলো ভেবেও নিজেই নিজেকে বলেছে...নাঃ, তা কি করে হবে। ওর ঘরে তো অনেক রাত পর্যন্ত আলো জ্বালানো থাকে... বই পড়ে হয়তো। আজকাল অফিস থেকে বেরোতে বেশী রাত হয়ে গেলে আর বাড়ী না ফিরে দিদানকে জানিয়ে দিয়ে ভবানীপুরের বাড়িতে চলে যায়। কি আর তফাৎ আছে এখানে আর ওখানে? যন্ত্রনা তো দু জায়গাতেই আছে। শুধু ধরনটা যা আলাদা। দিদির বিয়ের পর এমনিতেই জেঠিমারা খুব একা হয়ে গেছে, ওকে পেলে তবু একটা রাতের জন্য হলেও খুশী হয়। প্রথম প্রথম জেঠিমারা মৌ-এর ব্যাপারে ওর সাথে কথা বলার চেস্টা করতো কিন্তু ও চায় না দেখে এখন আর কিছু বলে না। একটা রাতের জন্য এসেছে ছেলেটা, থাক ওকে আর কষ্ট দিয়ে লাভ নেই ভেবে নিজেদেরকে সান্তনা দেয়। অনেকদিন হয়ে গেল রাতে ঠিকমতো ঘুম হয় না, বারে বারে ঘুম ভেঙ্গে গিয়ে চুপ করে শুয়েও থাকতে পারে না। উঠে গিয়ে জানলার কাছে দাঁড়িয়ে কি ভাবে নিজেই বোঝে না। যতই মাথার ভেতরটা ফাঁকা করে দেবার চেস্টা করুক না কেন বারে বারে পুরোনো স্মৃতি গুলো ভীড় করে আসে। মাঝে মাঝে ভেবেছে এই ধরনের সমস্যায় অনেকেই তো ড্রিঙ্ক করে...তাতে নাকি দুঃখ ভোলা যায়, ভাবলেও আবার নিজের থেকে পিছিয়ে এসেছে... আমার যা হবে হোক...যে তিনটে মানুষ আমার মুখ চেয়ে বেঁচে আছে তাদেরকে তো আর কেউ নেই দেখার। নিজের জন্য না হোক ওদের জন্য আমাকে স্বাভাবিক থাকতেই হবে যেভাবেই হোক...ভেতরে না হলেও বাইরেটা দেখে যেন কেউ না বোঝে আমার ভেতরে কি হচ্ছে। যতই ও নিজেকে স্বাভাবিক দেখানোর চেস্টা করুক না কেন সবাই বোঝে ও কি অবস্থায় দিন কাটাচ্ছে। প্রায়দিন রাতে দিদান বা শুক্লাদি ওর ঘরে এসে দেখে যায় ঘুমোতে পারছে কিনা। মাঝে মাঝে ওদের কাছে ধরাও পড়ে যায়...ওকে কাছে টেনে নিয়ে সান্তনা দেবার চেস্টা করে নিজেরাই কেঁদে ফেলে দিদানরা... মা বাবা হারানো ছেলেটাকে খুশী দেখতে চাওয়া ছাড়া আর কিছু যাদের কাম্য নয় তাদের কাছে ওকে এইভাবে দিনের পর দিন যন্ত্রনা পেতে দেখার চেয়ে মরে যাওয়া অনেক ভালো ভেবে নিজেরাই কষ্ট পেলেও কোনোদিন ওদের কেউই এর জন্য মৌকে দায়ী করেনি। এটাই ওর ভবিতব্যে ছিল ভেবে মেনে নিয়েছে এই ভেবে যে মেয়েটা তো আর নিজের থেকে আসেনি বা থাকতে চায়নি...ওরাই চেয়েছিল ও এখানে থাকুক।
এর মাঝে কোনো এক শনিবার বিকেলে অফিস থেকে ফেরার সময় সুস্মিতাকে উল্টোডাঙ্গায় দেখতে পেয়ে কি মনে করে গাড়ী থেকে নেমে দৌড়ে যায় দেখা করতে। ব্যাপারটা হঠাৎই এমন ভাবে ঘটে যায় যে নিজেই ভাবেনি যে এই সেই মেয়ে যাকে ও একটা সময় এড়িয়ে যেতে গিয়ে বন্ধুত্বের সম্পর্কটাই ভুলে গিয়েছিল বাধ্য হয়ে। সুস্মিতা হঠৎ ওকে ওইভাবে দৌড়ে আসতে দেখে বেশ অবাক হয়ে গিয়ে জিজ্ঞেস করল...আরে অরিত্রদা...তুমি? ওর প্রশ্নটা শুনে প্রথমে একটু অপ্রস্তুত হয়ে গেলেও নিজেকে সামলে নিয়ে বলল... আরে, বাড়ী ফিরছিলাম...তোমাকে দেখতে পেয়ে চলে এলাম।
- বাব্বা, কি সৌভাগ্য আমার... বলো কেমন আছো?
- আমি এই এক রকম আছি...তুমি?
সুস্মিতা ওর উত্তরটা শুনে কেমন কেমন লাগছে বুঝতে পেরে জিজ্ঞেস করল...বুঝলাম না...এক রকম মানে?
- ওই এক রকম মানে এক রকম...বলো তোমার কি খবর...
- আমার খবর বেশ ভালোই... যতটা খারাপ হবে ভেবেছিলাম তা নয়...
- তার মানে তুমি তোমার বরকে ভালোবাসতে পেরেছো...তাই তো?
সুস্মিতা হেসে ফেলে বলল... তা ছাড়া আর কিছু করার আছে কি? তবে জানো তো ও বড্ড ভালো...আমি নিজের থেকে সব কিছু জানিয়ে দিয়েছিলাম বিয়ের আগেই...সব কিছু জেনেই ও আমাকে বলেছিল...চিন্তা কোরো না, তুমি যে আমার কাছে কিছু লুকোতে চাওনি এটাই আমার কাছে অনেক। সুস্মিতা যে সুখী হয়েছে এটা জেনে ভালো লাগলো। খুব ইচ্ছে করছিল কিছুক্ষন ওর সাথে সময় কাটায়...সাতপাঁচ না ভেবেই বলে ফেলল... তোমার হাতে কি সময় আছে? যদি তোমার অসুবিধা না থাকে তাহলে চলো না কোথাও গিয়ে একটু বসি। সুস্মিতা ওর আগ্রহ দেখে বলল...ঠিক আছে, চলো। আমার তেমন কোনো তাড়া নেই।
একটা রেস্টুরেন্টে বসে দুজনের কথা হচ্ছিল। অরিত্র যতই নিজেকে স্বাভাবিক দেখানোর চেস্টা করুক না কেন ও যে মৌ এর প্রসঙ্গ এড়িয়ে যাচ্ছে এটা বুঝতে না পারার কথা নয়। সুস্মিতা বাধ্য হয়ে বলল...অরিত্রদা, আমি তো তোমার কাছে কিছু আড়াল করিনি...তুমি কেন এড়িয়ে যাচ্ছো আমাকে? বলো না কি হয়েছে? সুস্মিতার আন্তরিক ভাবে বলা কথাটা এড়িয়ে যেতে না পেরে একটু একটু করে বলল ওকে ঠিক কি কি হয়েছে। এতদিন নিজেকে স্বাভাবিক দেখাতে গিয়ে কারুর কাছে নিজের কথা তেমন ভাবে বলতে না করতে পেরে যে কষ্ট পাচ্ছিল আজ তা বলতে পেরে নিজেকে যেন একটু হাল্কা লাগছিল। কিছুটা শোনার পর ওকে মুখ নিচু করে বসে থাকতে দেখে সুস্মিতা বলল...তুমি কেন ওকে সরাসরি জিজ্ঞেস করছো না ও কি চায়? অরিত্র মুখ তুলে একবার ওর দিকে তাকিয়ে আবার মুখ নিচু করে নিয়ে আস্তে করে বলল... তুমি হয়তো জানো না, আমি জোর করতে পারি না। তার থেকেও বড় কথা ও কেন যে আমাকে এড়িয়ে যায় বুঝতে পারি না। সবকিছু শোনার পর সুস্মিতা ওর সাথে কথা বলার জন্য আসতে চাইলে অরিত্র ওকে বারন করে বলল...কোনো লাভ হবে না সুমি, তুমি হয়তো জানো না আমার ছোড়দি আর ছোটো বোনের সাথে ওর কতটা কাছের সম্পর্ক ছিল। সব কিছু ওকে জানানোর পরেও তাদেরকেও ফিরিয়ে দিয়েছে বারে বারে। আমি সত্যিই বুঝতে পারি না ওর সমস্যাটা ঠিক কোথায়...আমরা তো ওর কোনো ক্ষতি চাই না...কেন যে ও সেটা বুঝতে চাইছে না কে জানে। সুস্মিতা কিছুক্ষন চুপ পরে থাকার পর নিজের মনেই যেন উত্তর দিল... কিছু তো একটা আছে যেটা ও পারছে না বলতে...
অরিত্রর এরপরে আরো বার তিনেক সুস্মিতার সাথে দেখা হয়েছে। দেখা হয়েছে বললে হয়তো ভুল হবে, মাঝে মাঝে ফোনে কথা বলতে গিয়ে নিজেরাই ঠিক করেছে দেখা করবে। এতদিন বোনেদেরকে বোঝাতে গিয়ে নিজের আসল অবস্থার কথা কিছুটা হলেও চেপে যেতে হত যাতে ওরাও এতটা কষ্ট না পায় কিন্তু সুস্মিতার সাথে মন খুলে শেয়ার করার পর থেকে কিছুটা হলেও যেন শান্তি পায়। নিজের থেকে দেখা করতে বললেও শেষের দিন ওকে অবাক করে দিয়ে সুস্মিতা কেঁদে ফেলে বলল... অরিত্রদা প্লিজ তুমি আর আমার সাথে দেখা কোরো না। আমি সত্যিই আর পারছি না। অরিত্র চুপ করে থেকে ওর কথাগুলো শুনে বলল...আমি তো তোমার কাছে কিছু আশা করে আসি না সুমি, এতদিন কারুর কাছে নিজেকে এতটা খুলে ধরতে না পেরে হয়তো হাঁপিয়ে উঠেছিলাম...তাই হয়তো তোমাকে বলতে পারি বলে বার বার ফিরে আসি। সুস্মিতা নিজেকে সামলে নিয়ে চোখের জল মুছে বলল...জানি অরিত্রদা, কেন জানি না আমি তোমার এই অবস্থায় নিজেকে খুব দুর্বল করে ফেলছি, ইচ্ছে করছে তোমার পাশে দাঁড়াই আরো বেশী করে কিন্তু ভেবে দেখলাম সেটা ঠিক হবে না। অনেক কষ্ট করে কিছুটা হলেও তোমাকে ভুলতে পেরেছি, তার থেকেও বড় কথা ও আমাকে বিশ্বাস করেছে, আমি ওকে ঠকাতে পারবো না। ওর এই কথার পর আর কিছু বলার ছিল না অরিত্রর। যদিও বা এতদিন পর কাউকে বলতে পেরে কিছুটা হালকা হতে পারার সুযোগ এসেছিল, সেটাও আর সম্ভব হল না ধরে রাখা যেখানে ও সুস্মিতাকে কোনোভাবেই দায়ী করতে পারবে না। সবকিছু মেনে নিয়ে আসার আগে ও বলে এসেছে...যদি পারো আমাদের যে দেখা হয়েছিল ভুলে যেও। বিশ্বাস করো আমিও চাইনা আমার জন্য তোমার কোনো ক্ষতি হোক। সুস্মিতা উঠে এসে ওর হাত ধরে বলেছিল...প্লিজ অরিত্রদা তুমি আমকে ভুল বুঝলে না তো? অরিত্র একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে জবাব দিয়েছে... ভুল বোঝার কিছু নেই সুমি।
এর মাঝে কোনো এক শনিবার বিকেলে অফিস থেকে ফেরার সময় সুস্মিতাকে উল্টোডাঙ্গায় দেখতে পেয়ে কি মনে করে গাড়ী থেকে নেমে দৌড়ে যায় দেখা করতে। ব্যাপারটা হঠাৎই এমন ভাবে ঘটে যায় যে নিজেই ভাবেনি যে এই সেই মেয়ে যাকে ও একটা সময় এড়িয়ে যেতে গিয়ে বন্ধুত্বের সম্পর্কটাই ভুলে গিয়েছিল বাধ্য হয়ে। সুস্মিতা হঠৎ ওকে ওইভাবে দৌড়ে আসতে দেখে বেশ অবাক হয়ে গিয়ে জিজ্ঞেস করল...আরে অরিত্রদা...তুমি? ওর প্রশ্নটা শুনে প্রথমে একটু অপ্রস্তুত হয়ে গেলেও নিজেকে সামলে নিয়ে বলল... আরে, বাড়ী ফিরছিলাম...তোমাকে দেখতে পেয়ে চলে এলাম।
- বাব্বা, কি সৌভাগ্য আমার... বলো কেমন আছো?
- আমি এই এক রকম আছি...তুমি?
সুস্মিতা ওর উত্তরটা শুনে কেমন কেমন লাগছে বুঝতে পেরে জিজ্ঞেস করল...বুঝলাম না...এক রকম মানে?
- ওই এক রকম মানে এক রকম...বলো তোমার কি খবর...
- আমার খবর বেশ ভালোই... যতটা খারাপ হবে ভেবেছিলাম তা নয়...
- তার মানে তুমি তোমার বরকে ভালোবাসতে পেরেছো...তাই তো?
সুস্মিতা হেসে ফেলে বলল... তা ছাড়া আর কিছু করার আছে কি? তবে জানো তো ও বড্ড ভালো...আমি নিজের থেকে সব কিছু জানিয়ে দিয়েছিলাম বিয়ের আগেই...সব কিছু জেনেই ও আমাকে বলেছিল...চিন্তা কোরো না, তুমি যে আমার কাছে কিছু লুকোতে চাওনি এটাই আমার কাছে অনেক। সুস্মিতা যে সুখী হয়েছে এটা জেনে ভালো লাগলো। খুব ইচ্ছে করছিল কিছুক্ষন ওর সাথে সময় কাটায়...সাতপাঁচ না ভেবেই বলে ফেলল... তোমার হাতে কি সময় আছে? যদি তোমার অসুবিধা না থাকে তাহলে চলো না কোথাও গিয়ে একটু বসি। সুস্মিতা ওর আগ্রহ দেখে বলল...ঠিক আছে, চলো। আমার তেমন কোনো তাড়া নেই।
একটা রেস্টুরেন্টে বসে দুজনের কথা হচ্ছিল। অরিত্র যতই নিজেকে স্বাভাবিক দেখানোর চেস্টা করুক না কেন ও যে মৌ এর প্রসঙ্গ এড়িয়ে যাচ্ছে এটা বুঝতে না পারার কথা নয়। সুস্মিতা বাধ্য হয়ে বলল...অরিত্রদা, আমি তো তোমার কাছে কিছু আড়াল করিনি...তুমি কেন এড়িয়ে যাচ্ছো আমাকে? বলো না কি হয়েছে? সুস্মিতার আন্তরিক ভাবে বলা কথাটা এড়িয়ে যেতে না পেরে একটু একটু করে বলল ওকে ঠিক কি কি হয়েছে। এতদিন নিজেকে স্বাভাবিক দেখাতে গিয়ে কারুর কাছে নিজের কথা তেমন ভাবে বলতে না করতে পেরে যে কষ্ট পাচ্ছিল আজ তা বলতে পেরে নিজেকে যেন একটু হাল্কা লাগছিল। কিছুটা শোনার পর ওকে মুখ নিচু করে বসে থাকতে দেখে সুস্মিতা বলল...তুমি কেন ওকে সরাসরি জিজ্ঞেস করছো না ও কি চায়? অরিত্র মুখ তুলে একবার ওর দিকে তাকিয়ে আবার মুখ নিচু করে নিয়ে আস্তে করে বলল... তুমি হয়তো জানো না, আমি জোর করতে পারি না। তার থেকেও বড় কথা ও কেন যে আমাকে এড়িয়ে যায় বুঝতে পারি না। সবকিছু শোনার পর সুস্মিতা ওর সাথে কথা বলার জন্য আসতে চাইলে অরিত্র ওকে বারন করে বলল...কোনো লাভ হবে না সুমি, তুমি হয়তো জানো না আমার ছোড়দি আর ছোটো বোনের সাথে ওর কতটা কাছের সম্পর্ক ছিল। সব কিছু ওকে জানানোর পরেও তাদেরকেও ফিরিয়ে দিয়েছে বারে বারে। আমি সত্যিই বুঝতে পারি না ওর সমস্যাটা ঠিক কোথায়...আমরা তো ওর কোনো ক্ষতি চাই না...কেন যে ও সেটা বুঝতে চাইছে না কে জানে। সুস্মিতা কিছুক্ষন চুপ পরে থাকার পর নিজের মনেই যেন উত্তর দিল... কিছু তো একটা আছে যেটা ও পারছে না বলতে...
অরিত্রর এরপরে আরো বার তিনেক সুস্মিতার সাথে দেখা হয়েছে। দেখা হয়েছে বললে হয়তো ভুল হবে, মাঝে মাঝে ফোনে কথা বলতে গিয়ে নিজেরাই ঠিক করেছে দেখা করবে। এতদিন বোনেদেরকে বোঝাতে গিয়ে নিজের আসল অবস্থার কথা কিছুটা হলেও চেপে যেতে হত যাতে ওরাও এতটা কষ্ট না পায় কিন্তু সুস্মিতার সাথে মন খুলে শেয়ার করার পর থেকে কিছুটা হলেও যেন শান্তি পায়। নিজের থেকে দেখা করতে বললেও শেষের দিন ওকে অবাক করে দিয়ে সুস্মিতা কেঁদে ফেলে বলল... অরিত্রদা প্লিজ তুমি আর আমার সাথে দেখা কোরো না। আমি সত্যিই আর পারছি না। অরিত্র চুপ করে থেকে ওর কথাগুলো শুনে বলল...আমি তো তোমার কাছে কিছু আশা করে আসি না সুমি, এতদিন কারুর কাছে নিজেকে এতটা খুলে ধরতে না পেরে হয়তো হাঁপিয়ে উঠেছিলাম...তাই হয়তো তোমাকে বলতে পারি বলে বার বার ফিরে আসি। সুস্মিতা নিজেকে সামলে নিয়ে চোখের জল মুছে বলল...জানি অরিত্রদা, কেন জানি না আমি তোমার এই অবস্থায় নিজেকে খুব দুর্বল করে ফেলছি, ইচ্ছে করছে তোমার পাশে দাঁড়াই আরো বেশী করে কিন্তু ভেবে দেখলাম সেটা ঠিক হবে না। অনেক কষ্ট করে কিছুটা হলেও তোমাকে ভুলতে পেরেছি, তার থেকেও বড় কথা ও আমাকে বিশ্বাস করেছে, আমি ওকে ঠকাতে পারবো না। ওর এই কথার পর আর কিছু বলার ছিল না অরিত্রর। যদিও বা এতদিন পর কাউকে বলতে পেরে কিছুটা হালকা হতে পারার সুযোগ এসেছিল, সেটাও আর সম্ভব হল না ধরে রাখা যেখানে ও সুস্মিতাকে কোনোভাবেই দায়ী করতে পারবে না। সবকিছু মেনে নিয়ে আসার আগে ও বলে এসেছে...যদি পারো আমাদের যে দেখা হয়েছিল ভুলে যেও। বিশ্বাস করো আমিও চাইনা আমার জন্য তোমার কোনো ক্ষতি হোক। সুস্মিতা উঠে এসে ওর হাত ধরে বলেছিল...প্লিজ অরিত্রদা তুমি আমকে ভুল বুঝলে না তো? অরিত্র একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে জবাব দিয়েছে... ভুল বোঝার কিছু নেই সুমি।