মানা , আমার ধারণা জীবন আসলে রঙিন কারোরই নয় । ওই সূর্যের আলোর মতোই - একঘেয়ে , কিন্তু হঠাৎ কালবৈশাখীর পরে জলকণা-টনা নিয়ে হয়ে ওঠে সাতরঙা । জীবনও বোহয় তাই-ই । সাদা-কালো সুতোয় গাঁথা , হঠাৎ কারো ছোঁওয়ায় যা হয়ে ওঠে রংবাহারী নকশিকাঁথা - তখন সেটি জীবনকে দেয় ওম - পায়রার বুকের কবোষ্ণতা । - অন্তত আমার জীবন তো অমনিই । তুতো-ভাইয়ার চাওয়াটি বিমাতা নির্মমভাবে প্রত্যাখ্যানের পরে আমি আর, সম্ভবত অভিমানেই, পিছনে তাকাই নি । সাংসারিক সাফল্য বলতে সাধারণে যা বোঝে আর বোঝায় সেটি কয়েক বছর নিজেকে সংহত আর সংযত ক'রে অর্জন করার চেষ্টা - না, লড়াই - চালিয়ে গেছি । তাক লাগানো ফল করেছি মাস্টার্স-এ , গবেষণা-পত্র প্রশংসা আদায় করে নিয়েছে সংশ্লিষ্ট সব্বার । অধ্যাপনার কাজ পেয়েছি অনেকটা অনায়াসেই । - তারপর বোধহয় খুলে গেছে ফ্লাডগেট । হু হু করে বেরিয়ে এসেছে পানি বন্যার মতো । সঙ্গী শুধু সহানুভূতিশীল ৮৩বর্ষীয়া চলৎশক্তিহীনা নানি । খানিকটা তাঁর নিরুচ্চার সম্মতি-প্রশ্রয়েই প্রায়-ফাঁকা বাসায় আমার ইচ্ছেপূরণ হয়ে উঠেছে নির্বাধ । মনোবৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যাটিও জানি - বলার দরকার নেই - তবে আমার ৩৮য়েই নিলাম তখনও উনিশ-না-ছোঁয়া তরুণটিকে । প্রথম খানিকটা গাইড করলাম আমিই । তারপর দেখি ঘরোয়া বেড়াল কখন যেন বনবেড়াল হয়ে গেছে । খারাপ লাগতো না চাহিদা-আবদার ( নাকি আদেশ ?)গুলি । উনিশ-না-ছোঁয়া তিনি ফতোয়া দিলেন দু'থাইয়ের মধ্যাংশ আর বগলে ছাঁটা-কাটা-পরিচর্যা যদি একান্তই করতে হয় তো উনি করে দেবেন । আমি নই । তো এক সন্ধ্যেয় সে-কাজের জিনিসপত্তর সাজিয়ে শুরু করেই তিনি এমন ''দাঁড়ালেন'' যে আমাকে ''শুয়ে পড়তে'' হলো । সে-ই তিনি প্রায়-হীনঅন্ত দাপাদাপি করে যখন 'নামলেন' ফজরের আজান শুরু হয়েছে । আর ৩৮এর জীবনটা-ও যেন হয়ে উঠেছে সুরেলা ; আজানের মতোই । - তোমার অনেক স্পেস্ খেয়ে যাচ্ছি । ঠিক করছি কীনা কে জানে । তোমার পরবর্তী অংশের অপেক্ষায় অনেক ভালবাসা সহ অনিপু । ( সম্বোধনে ''আপনি''টুকু ব্যাঙাচির লেজের মতো খসে যাকনা ।) - অন্য কিছুর মতো নয় কিন্তু ।