কৃষ্ণপক্ষ
হুমায়ূন আহমেদ
হুমায়ূন আহমেদ
॥ ১ ॥
‘নোটটা বদলাইয়া দেন আফা, ছিড়া নোট।‘
অরুর গা বেয়ে শীতল স্রোত বয়ে গেল। কুড়ি টাকার একটা নোটই তার কাছে আছে। ছেড়া নোট বদলাবে কোত্থেকে? অরু গলার স্বর স্বাভাবিক রাখার প্রাণপণ চেষ্টা করতে করত বলল, কই দেখি নোটটা? রিকশাওয়ালার মুখে অহংকার মেশানো বিজয়ীর হাসি। ছেড়া নোটটা আবিষ্কার করে সে খুব খুশী। যেন সে ক্রিষ্টফার কলম্বাস। আমেরিকা আবিষ্কার করে ফেলেছে।
অরু বলল, কই আমি তো ছেড়া দেখছি না।
রিকশাওয়ালা তচ্ছিল্যের ভঙ্গি করে বলল, নজর দিয়া দেহেন।
অরু ‘নজর‘ দিয়ে দেখল। হ্যাঁ ছেড়া। ছিড়ে দুখণ্ড করা। স্কচ টেপ দিয়ে এত সাবধানে জোড়া লাগানো যে রিকশাওয়ালা ছাড়া অন্য কারো বোঝার উপায় নেই।
‘কি আফা বিশ্বাস হইল?‘
অরু ক্ষীণ গলায় বলল, শোন, আমার কাছে আর কোন টাকা নেই। এই একটাই নোট।
তুমি এক কাজ কর পুরোটাই নিয়ে যাও।
‘ছিড়া নোট নিয়া ফায়দা কি?‘
‘ফায়দা আছে। গুলিস্তানে ছেড়া নোট বদলে নেয়। দু‘টাকা বাটা রাখবে। কুড়ি টাকার বদলে তুমি পাবে আঠারো টাকা। দশ টাকা লাভ।‘
‘আমার লাভের দরকার নাই।‘
‘এখন আমি টাকা পাব কোথায়? বলেছি না আমার কাছে একটাই নোট!‘
‘টাকা পয়সা না নিয়া রিকশাতে উঠেন ক্যান?‘
‘ভুল করে উঠি। তুমি ভুল কর না? মাঝে মাঝে বৃষ্টির দিনে প্লাস্টিকের পর্দা ছাড়া চলে আস না?‘
যুক্তি রিকশাওয়ালাকে কাবু করল না। সে ক্রুদ্ধ ভঙ্গিতে তাকিয়ে রইল। অরু বলল, আচ্ছা ঠিক আছে তুমি মিনিট দশেক অপেক্ষা কর। তোমাকে ভাল নোট দেব। রিকশার সিটে বসে আরাম করে চা খাও।
ফ্লাক্সে করে এক ছেলে ঘুরে ঘুরে চা বিক্রি করছে। অরু তাকে ডেকে বলল, তুমি এই রিকশাওয়ালাকে এক কাপ চা দাও। রিকশাওয়ালা খানিকটা হকচকিয়ে গেল। এই জাতীয় পরিস্থিতির মুখোমুখি সে এর আগে হয় নি।
অরু ঘড়ি দেখল – চারটা সাত।
কাটায় কাটায় চারটার সময় তার আসার কথা, সে তাই এসেছে। মুহিবের খোঁজ নেই। সে মনে হয় আজও দেরি করবে। আজকের দিনটিতেও সে কি সময় মত আসবে না?
কুড়ি একুশ বছরের একটি মেয়ের জন্যে একা একা অপেক্ষা করা যে কি যন্ত্রনা তা ক‘জন জানে? সেজেগুজে একা দাড়িয়ে থাকা মেয়ের দিকে সবাই খানিকটা কৌতুহল, খানিকটা করুণা এবং খানিকটা তাচ্ছিল্য নিয়ে তাকায়। বুড়োরা এমন ভঙ্গি করে যেন দেশ রসাতলে যাচ্ছে। সংসদ ভবনের এই রাস্তা এখন বলতে গেলে বুড়োদের দখলে। সকাল বিকাল এদের দেখা যায় হাঁটাহাঁটি করছে। স্বাস্থ্য রক্ষা। যে করেই হোক আরো কিছুদিন বাঁচতে হবে। সমাজের অনাচার দেখে নাক সিঁটকাতে হবে। কিছুতেই মরা চলবে না।
রিকশাওয়ালা চা খেতে খেতে তীক্ষ্ন দৃষ্টিতে অরুকে দেখছে। এও এক যন্ত্রনা। একজন কেউ তাকিয়ে থাকলে কিছুতেই স্বাভাবিক হওয়া যায় না। অরু আবার ঘড়ি দেখল – মাত্র পাঁচ মিনিট পার হয়েছে। সময় কি পুরোপুরি থেমে আছে? না ঘড়ি বন্ধ?
মুহিবকে এতক্ষণে দেখা গেল। লম্বা লম্বা পা ফেলে ছুটতে ছুটতে আসছে। কোন দিকে তাকাচ্ছে না। অরু ডাকল, এ্যাই। মুহিব থমকে দাঁড়াল। যেদিক থেকে শব্দ এসেছে সেদিকে না তাকিয়ে অন্য দিকে তাকাচ্ছে। কি যে অদ্ভূত কাণ্ডকারখানা! রাগে অরুর গা জ্বলে যাচ্ছে।
আজকের দিনে সে এমন বিশ্রী পোশাক পরে এল কি করে? কে বলেছে তাকে পাঞ্জাবী পরতে? কটকটে হলুদ রঙের সিল্কের পাঞ্জাবীতে তাকে যে কি বিশ্রী দেখাচ্ছে তা বোধহয় সে নিজেও জানে না। আয়না দিয়ে নিশ্চয়ই নিজেকে দেখেনি। অরু গলা উচিয়ে ডাকল, এ্যাই এ্যাই।
মুহিব তাকাল। এবং হেসে ফেলল। সেই হাসি এত সুন্দর যে অরু তার দেরি করে আসার অপরাধ অর্ধেক ক্ষমা করে দিল। কটকটে হলুদ পাজ্ঞাবী পরার অপরাধ অবশ্যি এখনো ক্ষমা করা যাচ্ছে না।
‘তাড়াতাড়ি আসতে গিয়ে দেরি হয়ে গেল। ভেবে রেখেছিলাম আজ অন্তত এক ঘণ্টা আগে উপস্থিত হব। গাড়ি যোগাড় করতে গিয়ে …‘
‘কে তোমাকে গাড়ি যোগাড় করতে বলেছে?‘
‘কেউ বলেনি। ভাবলাম … ‘
‘কোথায় তোমার গাড়ি?‘
‘তেল নেবার জন্যে পেট্রল পাম্পে থেমেছিল – তারপরে আর স্টার্ট নিচ্ছে না।‘
‘ঐখান থেকে দৌড়াতে দৌড়াতে এসেছ?‘
‘হুঁ। খুব দূর না। আসাদ গেট পেট্রল পাম্প।‘
‘ভাংতি টাকা আছে তোমার কাছে?‘
‘আছে।‘
‘দেখি আমাকে দশটা টাকা দাও। আর ঐ চাওয়ালা ছেলেটাকে এক কাপ চায়ের দাম দাও।‘
অরু টাকা নিয়ে রিকশাওয়ালার দিকে এগিয়ে গেল। হাসিমুখে বলল, এই নাও দশ টাকা। আট টাকা রিকশা ভাড়া। দু‘টাকা ওয়েটিং চার্জ।
তার ইচ্ছা ছিল কিছু কঠিন কথা রিকশাওয়ালাকে বলে। বলা হল না। আজ একটা শুভ দিন। আজ তাদের বিয়ে। এই দিনে কঠিন কথা বলা সম্ভব না। তার একুশ বছর জীবনের অনেক কথাই সে পরবর্তী সময়ে মনে করতে পারবে না। কিন্তু আজকের দিনের সব কথা মনে
থাকবে। কি দরকার আজ ঝগড়া করার? বরং রিকশাওয়ালার নাম জিজ্ঞেস করা যাক। এই রিকশায় করেই না হয় কাজি অফিসে যাওয়া যাবে। যে রিকশায় করে তারা বিয়ে করতে গেল সেই রিকশায়ালার নাম জানা রইল। এটা মন্দ কি?
‘তোমার নাম কি?‘
‘আমারে জিগান?‘
‘হ্যাঁ।‘
‘আমার নাম সুরুজ মিয়া।‘
‘সুরুজ মিয়া, আমরা খিলগাঁও কাজি অফিসে যাব। আজ আমাদের বিয়ে। তুমি কি নিয়ে যাবে আমাদের?‘
রিকশাওয়ালা হ্যাঁ না কিছুই বলছে না। মনে হচ্ছে সে গভীর সমস্যায় পড়ে গেছে। এতক্ষণ যাকে তুমি তুমি করে বলছিল এখন অরু তাকে কি মনে করে যেন আপনি বলল, আপনি চিন্তা করে একটা ডিসিশানে আসুন। বেশি সময় নেবেন না। আমরা দেরি করতে পারব না।
অরু মুহিবের দিকে এগিয়ে গেল। মুহিব সিগারেটের দোকান থেকে সিগারেট কিনছে। সে কখনো একটার বেশি কিনে না। আজ এক প্যাকেট কিনে ফেলল। সিগারেট ধরাতে ধরাতে বলল, অরু, তুমি কি তোমাদের বাড়ির কাউকে বিয়ের ব্যাপরে কিছু বলেছ?
অরু বলল, না। তবে রাত দশটা নাগাদ সবাই জেনে যাবে। একটা চিঠি লিখে খামের মুখ বন্ধ করে বড় আপার টেবিলে রেখে এসেছি। আপা বিয়েবাড়িতে গেছে। দশটা নাগাদ ফিরবে।
তারপর হৈ চৈ বেধে যাবে। বাবার স্ট্রোক না হলেই হয়।
‘কি লিখেছ চিঠিতে?‘
‘তিন লাইনের চিঠি – আজ বিয়ে করছি তাই লেখা -‘
‘কিভাবে লেখা – ল্যাংগুয়েজটা কি?‘
‘তিস লাইনে তো খুব কাব্যিক ল্যাংগুয়েজ হয় না। তবু যথাসাধ্য চেষ্টা করেছি।‘
‘কাকে বিয়ে করছ এইসব কিছু লেখনি তো?‘
‘না। শুধু লিখলাম – একটি বেকার এবং আপাতদৃষ্টিতে অপদার্থ যুবককে বিয়ে করছি। আমার মনে হচ্ছে না আমি কোন অপরাধ করছি। তার পরেও ক্ষমা প্রার্থনা করছি – আপা, তুমি বাবা-মা‘কে শান্ত করবে এবং বুঝিয়ে বলবে।‘
মুহিব শুকনো গলায় বলল, তোমার বাবা-মা‘র রিএ্যকশান কি হবে?
‘কি করে বলব কি হবে! তাদের কোন মেয়েতো এর আগে কাউকে কিছু না জানিয়ে বিয়ে করে নি। এই প্রথম এবং এই শেষ। চল রওনা হওয়া যাক।‘
তারা রিকশায় উঠল। মুহিব বলল, হুড তুলে দেব?
‘না।‘
‘খারাপ লাগছে অরু?‘
‘খারাপও লাগছে না আবার ভালও লাগছে না। মনে হচ্ছে একটা ঘোরের মধ্যে আছি। জ্বর জ্বর লাগছে। দেখ তো জ্বর কি-না?‘
‘না জ্বর নেই।‘
অরু হাসতে হাসতে বলল, জ্বর নেই বলে হাত সরিয়ে নিলে কেন? লজ্জা লাগছে?
‘হু, আজ কেন জানি অন্যদিনের চেয়ে অনেক বেশি লজ্জা লাগছে। আজ মনে হচ্ছে পৃথিবীর সবাই তাকিয়ে আছে আমাদের দিকে।‘
‘তাকিয়ে আছে তো বটেই। তাকিয়ে আছে তোমার হলুদ পাঞ্জাবীর জন্যে। তুমি দয়া করে আজ রাতেই এই পাঞ্জাবী পুড়িয়ে ফেলবে।‘
‘আচ্ছা।‘
অরু হালকা গলায় বলল, বিয়ের পর আমরা যাব কোথায়?
‘বাসর কোথায় হবে এই কথা জিজ্ঞেস করছ?‘
অরু অস্পষ্ট স্বরে বলল, হুঁ।
‘বজলুর বাসায়।‘
‘বজলু কে?‘
‘আমার স্কুল জীবনের বন্ধু, অতি ভাল ছেলে। গত বৎসর বিয়ে করেছে। তার বৌটা তার চেয়েও ভাল। ওরা একটা ঘর আমাদের জন্যে ছেড়ে দিয়েছে। ফুলটুল দিয়ে সাজিয়ে হুলস্থুল করেছে।‘
‘অপরিচিত কারো বাসায় উঠতে আমার ইচ্ছে করছে না।‘
‘ওদের সঙ্গে কিছুক্ষণ কথা বললেই তোমার মনে হবে এরা অপরিচিত না। খুবই পরিচিত। তা ছাড়া আমার আর কোন জায়গাও নেই যেখানে তোমাকে নিয়ে যেতে পারি।‘
‘তুমি তোমার আপাকে সব খুলে বলবে বলেছিলে – বলেছ?‘
‘না।‘
‘বলনি কেন?‘
‘কাল বলব। আপাকে একটা সারপ্রাইজ দেব।‘
‘উনি রাগ করবেন না?‘
‘পাগল, আপার রাগ করার ক্ষমতাই নেই।‘
‘আবার একটা সিগারেট ধরিয়েছ, একটু আগেই না একটা খেলে।‘
‘টেনশন বোধ করছি।‘
অরু ছোট্ট নিঃশ্বাস ফেলে বলল, এই যে তোমার পাশে বসেছি – শেষবারের মত বন্ধুর পাশে বসেছি। এরপর বসব – স্বামীর পাশে।
‘স্বামী কি বন্ধু না?‘
‘গল্প উপন্যাসে বন্ধু। বাস-বে না। বাস-বের স্বামীরা যতটা না বন্ধু তার চেয়েও বেশী অভিভাবক।‘
মুহিব গম্ভীর গলায় বলল, তুমি ভুল করছ অরু। আমি তোমার বন্ধুই থাকব।
অরু ছোট্ট নিঃশ্বাস ফেলে বলল, থাকলে তো ভালই।
‘তোমার মনে কোন সন্দেহ আছে?‘
‘আছে। হুডটা তুলে দাও। আসলেই সবাই আমাদের দিকে তাকাচ্ছে। সবচেয়ে বেশি তাকাচ্ছে আমাদের রিকশাওয়ালা। যেভাবে সে পেছন ফিরে ফিরে রিকশা চালাচ্ছে মনে হয় এ্যাকসিডেন্ট করবে।‘
মুহিব হুড তুলে দিল। অরু বলল, আজ কত তারিখ বল তো?
‘এগারোই ডিসেম্বর।‘
‘বাংলা কত?‘
‘জানি না বাংলা কত।‘
অরু ছোট্ট নিঃশ্বাস ফেলে বলল, আজ আমাদের বিয়ে আর আজকের বাংলা তারিখটা তোমার জানার ইচ্ছা হল না? আজ ২৬শে অগ্রায়ণ।
‘ও আচ্ছা ২৬শে অগ্রায়ণ।‘
‘আর আমাদের রিকশাওয়ালার নাম হচ্ছে সুরুজ মিয়া। তার নামটাও মনে রাখা দরকার। তার রিকশায় করে বিয়ে করতে যাচ্ছি।‘
মুহিব কিছু বলল না। অরু বলল, ভাল করে দেখ তো জ্বর কি-না। এত খারাপ লাগছে কেন? মাথা ঘুরছে। ভুলে জরদা দিয়ে পান খেলে যেমন লাগে তেমন লাগছে।
‘কিছুক্ষণের মধ্যেই সব ঠিক হয়ে যাবে। ধর আর আধ ঘণ্টা।‘
অরু ঘড়িতে দেখল তাদের বিয়ের পুরো অনুষ্ঠান শেষ হতে মাত্র ১৬ মিনিট লাগল। কাজী সাহেবের কাছে অনুষ্ঠানটা হয়ত খুব ‘বোরিং‘ লাগছে। তিনি কয়েকবার হাই তুললেন এবং যন্ত্রের মত বললেন, এইখানে সই করেন। তারিখ দেন। অরু গোটা গোটা করে লিখল, অরুণা চৌধুরী। বিয়ের অনুষ্ঠান শেষ। কি আশ্চর্য! কটকটে হলুদ পাঞ্জাবী গায়ে পাশে দাঁড়িয়ে থাকা মানুষটা এখন তার স্বামী। এই জীবনের সবচে‘ কাছে মানুষ। কোন ভুল হয়নি তো? প্রচণ্ড বড় কোন ভুল! যে ভুল এই জীবনে আর শোধরানো যাবে না। অরুর পানির পিপাসা পেয়ে গেল।
কাজী সাহেবকে সে কি বলবে পানির কথা? না-কি মুহিবকে বলবে? মুহিবের সঙ্গে কথা বলতে লজ্জা লাগছে। মুহিবের দিকে তাকাতেও লজ্জা লাগছে।
বজলু এগিয়ে এসে বলল, ভাবী, চলুন যাওয়া যাক।
ভাবী ডাকটা কি অদ্ভূত শোনাচ্ছে! গা শির শির করে। অরু নিঃশব্দে ঘর থেকে বেরুল।
মুহিবের অন্য বন্ধুরা এখনো কেউ তাকে কিছু বলেনি। একজন শুধু তাকে বলেছে – কনগ্র্যাচুলেশনস ভাবী, বলে হাতে একটা গোলাপ ফুল দিয়েছে। ফুলটার দিকে তাকাতেও কেন জানি লজ্জা লাগছে। মুহিবকেও অন্য রকম লাগছে। ও আচ্ছা এখন বোঝা গেল – বাবু চুল
কেটেছেন। নতুন হেয়ার স্টাইল।
গোলাপ ফুল দেয়া মানুষটা বলল, কোথাও বসে এক কাপ চা কিংবা কোল্ড ড্রিংস খাওয়া যাক। কাছেই একটা ভালো কনফেকশনারী দোকান আছে। যাবে?
বজলু বলল, না না – স্ট্রেইট আমার বাসায় চল। কেক কেনা আছে। কেক কাটা হবে।
রেনুকে চা রেডি রাখতে বলেছি। গাড়িতে উঠ সবাই। গাড়িতে উঠ। মুহিব তুই ভাবীকে নিয়ে ড্রাইভারের পাশে বস। আমরা সবাই পেছনে আছি।
অরুর প্রচণ্ড পানির পিপাসা পাচ্ছে। মনে হচ্ছে এক গ্লাস পানি খেতে না পারলে সে মরে যাবে। বজলু নামের মানুষটার বাসায় তার যেতে একেবারেই ইচ্ছা করছে না। এমন কোথাও যেতে ইচ্ছা করছে যেখানে একটা মানুষও নেই। খুব নির্জন কোন জায়গা, যেখানে শুধু সে এবং মুহিব থাকবে। আর কেউ থাকবে না। কেউ না।