আবার ফিরে এলাম আমি।সকল পাঠকদের এই ভালোবাসা আবার টেনে আনল আমায়। আশা করি আপনাদের এই গল্প পড়তে ভালো লাগবে| এই গল্পটা অন্য গল্পের ইনস্পিরেশন এ রচিত। রূপকথা নয় গল্প যাদের ভালো লেগেছে তাদের এই গল্পটাও পছন্দ হবে আমি আশা।
যারা কম্পিউটারে গেইম খেলতে ভালবাসে তারা নিশ্চই এমন কোনো গেম খেলে থাকবে যাতে প্লায়ের নিজের চয়েস এর ভিত্তিতে গেমের প্রধান চরিত্রের গল্প আগে এগোয়, ঠিক অল্টারনেট স্টরির মত। সেই রকমই এই গল্পতেও অল্টারনেট বা অতিরিক্ত এন্ডিং রাখার ইচ্ছা আছে আমার।
আমাদের পাড়ায় নিম্ন-মধ্যবিত্ত মানুষের বাস।কয়েকঘর মাড়োয়ারি এবং কয়েক ঘর শিখ পাঞ্জাবি ছাড়া সবাই বাঙালি। দিবাকর আমার দাদা,আমরা দুই ভাই ।বাবা থাকতে থাকতেই দিবাদার বিয়ে হয়।তিন বছর আগে মাকে বিধবা করে বাবা চলে গেল আমি তখন মাধ্যমিক পরীক্ষা দিয়ে রেজাল্টের অপেক্ষা করছি।দিবাদা বৌদির শরীরে বীজ রোপন করেছে অঙ্কুরিত হয়ে পাতা মেলার অপেক্ষায়।শ্রাদ্ধ শান্তি মেটার পর একদিন রাতে বৌদির ব্যথা উঠল। অতরাতে কোথায় ট্যাক্সি?এদিক-ওদিক ঘুরছি, খুশীদি জিজ্ঞেস করল,কিরে রতি এত রাতে? ঘটনা শুনে খুশিদি মানে খুশবন্ত কাউর গাড়ি নিয়ে এল নিজে গাড়ি চালিয়ে বৌদিকে পৌছে দিল শিশু মঙ্গল হাসপাতালে। কদিন পর শিশু নিয়ে বৌদি চলে গেল বাপের বাড়ি। মাসখানেক পর দিবাদাও চলে গেল বাড়ী ছেড়ে।মাধ্যমিকের রেজাল্ট বের হল।পাশ করলেও নতুণ সমস্যা, পড়াশুনায় ইতি টানতে হবে এখানেই?উমানাথ এই সময় একটা টিউশনি ঠিক করে দিল। উমানাথ বয়সে কয়েক বছরের বড় হলেও আমাদের সঙ্গে বন্ধুর মত মেশে। মিলিটারি আণ্টির মেয়ে জেনি ক্লাস থ্রিতে পড়ে।মুনমুন আণ্টির স্বামী কর্ণেল জয়ন্ত রায় আর্মিতে চাকরি করেন।বছরে এক-আধবার বাড়ীতে আসেন। সেজন্য কর্ণেল রায়ের স্ত্রী পাড়ায় মিলিটারি আণ্টি নামে পরিচিত।সন্ধ্যেবেলা টিফিন,মাসে তিরিশ টাকা আমার কাছে তখন অনেক।মিলিটারি আণ্টি মেয়ে নিয়ে একা থাকেন টিভি ভিডিও দেখে সময় কাটান,সপ্রতিভ নিজেই সালোয়ার কামিজ পরে বাজারঘাট করেন,ইয়ংদের খুব মাই ডিয়ার। খুশিদিও সালোয়ার কামিজ পরে,পাঞ্জাবী মেয়ে বয়স কম কিন্তু সেসময় বাঙালি বয়স্কা মহিলাদের ঐ পোশাক খুব একটা চল ছিল না।কে কি ভাবল তাতে মিলিটারি আণ্টির কিছু যায় আসে না।কেউ কিছু বলতেও সাহস পেত না,সবাই সমীহ করে চলতো।
প্রথম কয়েকমাস দিবাদা কিছু টাকা পাঠিয়েছিল,সংসারের চাপে টাকা পাঠাবার সময় করে উঠতে পারে না।আয় বলতে বাবার পারিবারিক পেনশন।আমার বন্ধু-বান্ধব সবাই উচ্চ মাধ্যমিকে বিজ্ঞান বিভাগে আমিই একমাত্র কলা বিভাগে ভর্তি হলাম। ওদের ধারণা সোমলতাই এর কারণ।যারা যেমন তারা তেমনই ভাববে।
সোমলতা আমাদের পাড়ার ডাক্তার শরদিন্দু ব্যানার্জির মেয়ে।সোমুকে আমার ভাল লাগতো কিন্তু ও আমাকে পাত্তাই দিতনা।সে জন্য মনে আমার কোনো ক্ষোভ ছিল না।
সাধারণ কেরাণীর ছেলে আমি,ছেঁড়া কাঁথায় শুয়ে লাখ টাকার স্বপ্ন দেখা শোভা পায় না।এখন অবস্থা আরও করুণ।তবু রাস্তা ঘাটে সোমুকে দেখলে মনে অদ্ভুত একটা অনুভুতির সঞ্চার হতো মানে ঠিক বুঝিয়ে বলতে পারব না।পাশ কাটিয়ে চলে যাবার পর আকুল দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকতাম পিছন ফিরে একবার দেখে কিনা?আস্তে আস্তে মিলিয়ে যেত একবারও ঘুরে দেখতো না।অবশ্য ছোটো বেলা থেকে একটা স্বপ্ন মনের অগোচরে বাসা বেঁধেছিল--লেখক হবো।
দারিদ্রের মধ্য থেকে উঠে এসেছে অনেক প্রতিষ্টিত লেখক এরকম অনেক কাহিনী আমাকে প্রেরণা দেয়।একদিন একটা গল্প লিখে বন্ধুদের পড়ে শোনালাম। নির্মল প্রেমের গল্প।নায়িকার নাম সৌমি।কোনো কিছু ভেবে এই নাম দিইনি কিন্তু বন্ধুরা গল্প কেমন হয়েছে তার ধারে কাছে না গিয়ে জিজ্ঞেস করল,এ্যাই সৌমি কে রে?
বুঝতে পারলাম চামারকে দিয়ে কামারের কাজ হয়না।ওরা ধরে নিল সোমলতার কথা ভেবেই নায়িকার নাম দিয়েছি সৌমি।সেদিন থেকে ওরা আমার সঙ্গে সোমুর নাম জড়িয়ে ঠাট্টা-ইয়ার্কি শুরু করল।সোমুর কানে এসব কথা গেলে লজ্জার শেষ থাকবে না। সত্যি কথা বলতে কি ওদের জন্যই সোমু আমার মনে জায়গা করে নিল।
সকালে ঘুম থেকে উঠে নীরেনদার যোগা ক্লাস।বাসায় ফিরে স্নান খাওয়া-দাওয়া সেরে কলেজ।শনি রবিবার দুপুরে ট্যুইশনি।সন্ধ্যে বেলা এদিক-ওদিক ঘুরে পড়তে বসা এই ছিল রত্নাকরের সারাদিনের রুটিন।অন্য সময় সারা যতিনদাস পল্লী টো-টো করে ঘুরে বেড়ানো।
নীরেনদার যোগ ব্যায়ামের ক্লাস থেকে বেরিয়ে রত্নাকর দেখল রঞ্জাআন্টি দুলতে দুলতে আসছে্ন।একহাতে বাজারের থলে অন্য হাতে লাঠি।মাধ্যমিক পাস করার পর নীরেনদার যোগ ব্যায়াম ক্লাসে ভর্তি হয়েছিল,এবার উচ্চ মাধ্যমিক পাস করে কলেজে ভর্তি হয়েছে।ভাবছে এবার ছেড়ে দেবে।নীরেনদা কেমন মেয়েলি ধরণের,হাবুদার সঙ্গে খারাপ সম্পর্ক আছে।রত্নাকরের থেকে বয়সে বড় হলেও হাবু্দাও নীরেনদার ছাত্র।একদিন হাবুদা আসেনি ক্লাস শেষ হতে নীরেনদা শুয়ে পড়ে বলল, রতু একটু ম্যাসাজ করে দেত।
মুখের উপর না বলতে পারেনা।নীরেনদার বুকটা মেয়েদের মত ফোলা ফোলা।ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে বুকে মোচড় দিতে লাগল।ঘরে কেউ নেই কেমন অস্বস্তি হয়।রঞ্জাআণ্টি কাছে এসে বলেন,এখানে দাঁড়িয়ে?
--তোমাকে দেখে দাড়ালাম।তুমি বাজারে গেছিলে?
--আমি না গেলে কে যাবে?
রত্নাকর হাত থেকে থলি নিয়ে বলল,চলো তোমাকে পৌছে দিই।
বছর দুই হল সুখেন্দু মুখার্জি মারা গেছেন।ফ্লাটে তারপর থেকে একাই থাকে রঞ্জাআণ্টি।রত্নাকরের মায়ের বয়সী কি কয়েক বছরের ছোট হবে।সুখেন্দু মুখার্জি একটা বাণিজ্যিক সংস্থায় বড় চাকুরে ছিলেন।গাড়ি ছিল,নিজে ড্রাইভ করে অফিস যেতেন।পাড়ায় কারো সঙ্গে মিশতেন না,একটু উন্নাসিক প্রকৃতির।সেই সুখেন্দু মুখার্জির বউ সুরঞ্জনা মুখার্জির কি অবস্থা আজ।
[HIDE]
বা-পাটা ভাল করে ফেলতে পারেনা,রাস্তায় বেরোলে লাঠি থাকে সঙ্গে।
--স্বার্থপরটা আমাকে একা ফেলে চলে গেল।আণ্টির দীর্ঘশ্বাস বেরিয়ে এল।
রঞ্জাআণ্টির উপর মায়া হয়।দুই মেয়ে কোনো ছেলে নেই।মেয়েরা দুজনেই বিদেশে থাকে।ছেলে থাকলে নাতি বউমা নিয়ে সংসার করত।বাজারে যেতে হত না।
--আণ্টি কাকু নেই তো কি হয়েছে।তোমার কোনো অসুবিধে হলে আমাকে বলবে।
আণ্টি চোখ তুলে রত্নাকরের আপাদ মস্তক দেখে বললেন,তুই তোর কাকুর মত সব পারলে তো ভাবনা ছিল না। আণ্টির মুখে ইঙ্গিতবহ হাসি।
সেটা ঠিক কাকু উপার্জন করত,রত্নাকরের পক্ষে কি আর্থিক সহায়তা করা সম্ভব?বাবা মারা যাবার পর ফ্যামিলি পেনসনে চলে সংসার।সাধারণ কেরাণী পেনশনও খুব বেশি নয় তা হলেও দুটি প্রাণীর কোনো অসুবিধে হয় না।যতদিন বাবা বেঁচে ছিল মায়ের প্রতি সব সময় নজর।কিছু হলে মা বলতো,ও কিছু না।বাবা বলত,কিছু না মানে?অফিস থেকে ফিরে ডাক্তার খানায় নিয়ে যাবো,রেডি হয়ে থেকো।রত্নাকর কি সেভাবে মায়ের খেয়াল রাখে?মা-ই বরং সারাক্ষণ ছেলের দিকে নজর।কোনোদিন অসময়ে শুয়ে পড়লে মা বলত,কিরে এসে শুয়ে পড়লি?কপালে হাত দিয়ে বলত,শরীর খারাপ নাতো? আণ্টি ঠিকই বলেছে।একজন মহিলার জীবনে স্বামীর কোনো বিকল্প হয়না। প্রসঙ্গ বদলাতে জিজ্ঞেস করে,তুমি লাঠি ছাড়া হাটতে পারো না?
--পারবো না কেন।আসলে ভারী শরীর বা-পাটায় চাপ পড়লে হাটুতে টন টন করে।হাতে লাঠি থাকলে একটু ভরসা হয়।
[/HIDE]
যারা কম্পিউটারে গেইম খেলতে ভালবাসে তারা নিশ্চই এমন কোনো গেম খেলে থাকবে যাতে প্লায়ের নিজের চয়েস এর ভিত্তিতে গেমের প্রধান চরিত্রের গল্প আগে এগোয়, ঠিক অল্টারনেট স্টরির মত। সেই রকমই এই গল্পতেও অল্টারনেট বা অতিরিক্ত এন্ডিং রাখার ইচ্ছা আছে আমার।
আমাদের পাড়ায় নিম্ন-মধ্যবিত্ত মানুষের বাস।কয়েকঘর মাড়োয়ারি এবং কয়েক ঘর শিখ পাঞ্জাবি ছাড়া সবাই বাঙালি। দিবাকর আমার দাদা,আমরা দুই ভাই ।বাবা থাকতে থাকতেই দিবাদার বিয়ে হয়।তিন বছর আগে মাকে বিধবা করে বাবা চলে গেল আমি তখন মাধ্যমিক পরীক্ষা দিয়ে রেজাল্টের অপেক্ষা করছি।দিবাদা বৌদির শরীরে বীজ রোপন করেছে অঙ্কুরিত হয়ে পাতা মেলার অপেক্ষায়।শ্রাদ্ধ শান্তি মেটার পর একদিন রাতে বৌদির ব্যথা উঠল। অতরাতে কোথায় ট্যাক্সি?এদিক-ওদিক ঘুরছি, খুশীদি জিজ্ঞেস করল,কিরে রতি এত রাতে? ঘটনা শুনে খুশিদি মানে খুশবন্ত কাউর গাড়ি নিয়ে এল নিজে গাড়ি চালিয়ে বৌদিকে পৌছে দিল শিশু মঙ্গল হাসপাতালে। কদিন পর শিশু নিয়ে বৌদি চলে গেল বাপের বাড়ি। মাসখানেক পর দিবাদাও চলে গেল বাড়ী ছেড়ে।মাধ্যমিকের রেজাল্ট বের হল।পাশ করলেও নতুণ সমস্যা, পড়াশুনায় ইতি টানতে হবে এখানেই?উমানাথ এই সময় একটা টিউশনি ঠিক করে দিল। উমানাথ বয়সে কয়েক বছরের বড় হলেও আমাদের সঙ্গে বন্ধুর মত মেশে। মিলিটারি আণ্টির মেয়ে জেনি ক্লাস থ্রিতে পড়ে।মুনমুন আণ্টির স্বামী কর্ণেল জয়ন্ত রায় আর্মিতে চাকরি করেন।বছরে এক-আধবার বাড়ীতে আসেন। সেজন্য কর্ণেল রায়ের স্ত্রী পাড়ায় মিলিটারি আণ্টি নামে পরিচিত।সন্ধ্যেবেলা টিফিন,মাসে তিরিশ টাকা আমার কাছে তখন অনেক।মিলিটারি আণ্টি মেয়ে নিয়ে একা থাকেন টিভি ভিডিও দেখে সময় কাটান,সপ্রতিভ নিজেই সালোয়ার কামিজ পরে বাজারঘাট করেন,ইয়ংদের খুব মাই ডিয়ার। খুশিদিও সালোয়ার কামিজ পরে,পাঞ্জাবী মেয়ে বয়স কম কিন্তু সেসময় বাঙালি বয়স্কা মহিলাদের ঐ পোশাক খুব একটা চল ছিল না।কে কি ভাবল তাতে মিলিটারি আণ্টির কিছু যায় আসে না।কেউ কিছু বলতেও সাহস পেত না,সবাই সমীহ করে চলতো।
প্রথম কয়েকমাস দিবাদা কিছু টাকা পাঠিয়েছিল,সংসারের চাপে টাকা পাঠাবার সময় করে উঠতে পারে না।আয় বলতে বাবার পারিবারিক পেনশন।আমার বন্ধু-বান্ধব সবাই উচ্চ মাধ্যমিকে বিজ্ঞান বিভাগে আমিই একমাত্র কলা বিভাগে ভর্তি হলাম। ওদের ধারণা সোমলতাই এর কারণ।যারা যেমন তারা তেমনই ভাববে।
সোমলতা আমাদের পাড়ার ডাক্তার শরদিন্দু ব্যানার্জির মেয়ে।সোমুকে আমার ভাল লাগতো কিন্তু ও আমাকে পাত্তাই দিতনা।সে জন্য মনে আমার কোনো ক্ষোভ ছিল না।
সাধারণ কেরাণীর ছেলে আমি,ছেঁড়া কাঁথায় শুয়ে লাখ টাকার স্বপ্ন দেখা শোভা পায় না।এখন অবস্থা আরও করুণ।তবু রাস্তা ঘাটে সোমুকে দেখলে মনে অদ্ভুত একটা অনুভুতির সঞ্চার হতো মানে ঠিক বুঝিয়ে বলতে পারব না।পাশ কাটিয়ে চলে যাবার পর আকুল দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকতাম পিছন ফিরে একবার দেখে কিনা?আস্তে আস্তে মিলিয়ে যেত একবারও ঘুরে দেখতো না।অবশ্য ছোটো বেলা থেকে একটা স্বপ্ন মনের অগোচরে বাসা বেঁধেছিল--লেখক হবো।
দারিদ্রের মধ্য থেকে উঠে এসেছে অনেক প্রতিষ্টিত লেখক এরকম অনেক কাহিনী আমাকে প্রেরণা দেয়।একদিন একটা গল্প লিখে বন্ধুদের পড়ে শোনালাম। নির্মল প্রেমের গল্প।নায়িকার নাম সৌমি।কোনো কিছু ভেবে এই নাম দিইনি কিন্তু বন্ধুরা গল্প কেমন হয়েছে তার ধারে কাছে না গিয়ে জিজ্ঞেস করল,এ্যাই সৌমি কে রে?
বুঝতে পারলাম চামারকে দিয়ে কামারের কাজ হয়না।ওরা ধরে নিল সোমলতার কথা ভেবেই নায়িকার নাম দিয়েছি সৌমি।সেদিন থেকে ওরা আমার সঙ্গে সোমুর নাম জড়িয়ে ঠাট্টা-ইয়ার্কি শুরু করল।সোমুর কানে এসব কথা গেলে লজ্জার শেষ থাকবে না। সত্যি কথা বলতে কি ওদের জন্যই সোমু আমার মনে জায়গা করে নিল।
সকালে ঘুম থেকে উঠে নীরেনদার যোগা ক্লাস।বাসায় ফিরে স্নান খাওয়া-দাওয়া সেরে কলেজ।শনি রবিবার দুপুরে ট্যুইশনি।সন্ধ্যে বেলা এদিক-ওদিক ঘুরে পড়তে বসা এই ছিল রত্নাকরের সারাদিনের রুটিন।অন্য সময় সারা যতিনদাস পল্লী টো-টো করে ঘুরে বেড়ানো।
নীরেনদার যোগ ব্যায়ামের ক্লাস থেকে বেরিয়ে রত্নাকর দেখল রঞ্জাআন্টি দুলতে দুলতে আসছে্ন।একহাতে বাজারের থলে অন্য হাতে লাঠি।মাধ্যমিক পাস করার পর নীরেনদার যোগ ব্যায়াম ক্লাসে ভর্তি হয়েছিল,এবার উচ্চ মাধ্যমিক পাস করে কলেজে ভর্তি হয়েছে।ভাবছে এবার ছেড়ে দেবে।নীরেনদা কেমন মেয়েলি ধরণের,হাবুদার সঙ্গে খারাপ সম্পর্ক আছে।রত্নাকরের থেকে বয়সে বড় হলেও হাবু্দাও নীরেনদার ছাত্র।একদিন হাবুদা আসেনি ক্লাস শেষ হতে নীরেনদা শুয়ে পড়ে বলল, রতু একটু ম্যাসাজ করে দেত।
মুখের উপর না বলতে পারেনা।নীরেনদার বুকটা মেয়েদের মত ফোলা ফোলা।ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে বুকে মোচড় দিতে লাগল।ঘরে কেউ নেই কেমন অস্বস্তি হয়।রঞ্জাআণ্টি কাছে এসে বলেন,এখানে দাঁড়িয়ে?
--তোমাকে দেখে দাড়ালাম।তুমি বাজারে গেছিলে?
--আমি না গেলে কে যাবে?
রত্নাকর হাত থেকে থলি নিয়ে বলল,চলো তোমাকে পৌছে দিই।
বছর দুই হল সুখেন্দু মুখার্জি মারা গেছেন।ফ্লাটে তারপর থেকে একাই থাকে রঞ্জাআণ্টি।রত্নাকরের মায়ের বয়সী কি কয়েক বছরের ছোট হবে।সুখেন্দু মুখার্জি একটা বাণিজ্যিক সংস্থায় বড় চাকুরে ছিলেন।গাড়ি ছিল,নিজে ড্রাইভ করে অফিস যেতেন।পাড়ায় কারো সঙ্গে মিশতেন না,একটু উন্নাসিক প্রকৃতির।সেই সুখেন্দু মুখার্জির বউ সুরঞ্জনা মুখার্জির কি অবস্থা আজ।
[HIDE]
বা-পাটা ভাল করে ফেলতে পারেনা,রাস্তায় বেরোলে লাঠি থাকে সঙ্গে।
--স্বার্থপরটা আমাকে একা ফেলে চলে গেল।আণ্টির দীর্ঘশ্বাস বেরিয়ে এল।
রঞ্জাআণ্টির উপর মায়া হয়।দুই মেয়ে কোনো ছেলে নেই।মেয়েরা দুজনেই বিদেশে থাকে।ছেলে থাকলে নাতি বউমা নিয়ে সংসার করত।বাজারে যেতে হত না।
--আণ্টি কাকু নেই তো কি হয়েছে।তোমার কোনো অসুবিধে হলে আমাকে বলবে।
আণ্টি চোখ তুলে রত্নাকরের আপাদ মস্তক দেখে বললেন,তুই তোর কাকুর মত সব পারলে তো ভাবনা ছিল না। আণ্টির মুখে ইঙ্গিতবহ হাসি।
সেটা ঠিক কাকু উপার্জন করত,রত্নাকরের পক্ষে কি আর্থিক সহায়তা করা সম্ভব?বাবা মারা যাবার পর ফ্যামিলি পেনসনে চলে সংসার।সাধারণ কেরাণী পেনশনও খুব বেশি নয় তা হলেও দুটি প্রাণীর কোনো অসুবিধে হয় না।যতদিন বাবা বেঁচে ছিল মায়ের প্রতি সব সময় নজর।কিছু হলে মা বলতো,ও কিছু না।বাবা বলত,কিছু না মানে?অফিস থেকে ফিরে ডাক্তার খানায় নিয়ে যাবো,রেডি হয়ে থেকো।রত্নাকর কি সেভাবে মায়ের খেয়াল রাখে?মা-ই বরং সারাক্ষণ ছেলের দিকে নজর।কোনোদিন অসময়ে শুয়ে পড়লে মা বলত,কিরে এসে শুয়ে পড়লি?কপালে হাত দিয়ে বলত,শরীর খারাপ নাতো? আণ্টি ঠিকই বলেছে।একজন মহিলার জীবনে স্বামীর কোনো বিকল্প হয়না। প্রসঙ্গ বদলাতে জিজ্ঞেস করে,তুমি লাঠি ছাড়া হাটতে পারো না?
--পারবো না কেন।আসলে ভারী শরীর বা-পাটায় চাপ পড়লে হাটুতে টন টন করে।হাতে লাঠি থাকলে একটু ভরসা হয়।
[/HIDE]