হাই হিল ফ্যাশনসচেতন নারীদের অনেকেরই পছন্দ। কিন্তু ‘সৌন্দর্যবর্ধক’ এই জুতা হাঁটু এবং পায়ের মারাত্মক ক্ষতি করতে পারে।
অস্বাভাবিক উঁচু হিল পরার কারণে গোড়ালি উঁচু হয়ে থাকে। যখন-তখন অনিয়ন্ত্রিতভাবে এদিক-সেদিক বেঁকে যায় পা। ফলে হাঁটুতে অস্বাভাবিক চাপ পড়ে। ক্ষয় হয়ে যায় হাঁটুর মালই চাকির পেছনের কার্টিলেজ। ফলে অল্প বয়সে অস্টিও-আর্থ্রাইটিস হতে পারে।
গবেষণায় দেখা গেছে, গোড়ালি, হাঁটু ও কোমর ঠিক রাখতে মেয়েদের জন্য ব্যাক স্ট্র্যাপ দেওয়া কম হিলের জুতা ভালো। হিল পরার ইচ্ছা হতেই পারে, তবে তার জন্য একটু সতর্ক থাকা প্রয়োজন। যেখানে অল্প হাঁটতে হবে, সেখানে উঁচু হিল পরা যেতে পারে। কিন্তু প্রতিদিনের জীবনে হাঁটাহাঁটির ক্ষেত্রে সামান্য উঁচু বা ফ্ল্যাট জুতাই ভালো।
আসুন জেনে নিই নিয়মিত হাই হিল ব্যবহারে কী কী ক্ষতি হতে পারে—
পায়ের ছোট ছোট জয়েন্টে ব্যথা
চলার সময় পায়ের পাশের দিকটা আড়ষ্ট করে দেয় হাই হিল জুতা। ফলে পা শুধু সোজা রাখা যায়। তাই পা ফেলার সময় সমস্ত চাপ এসে পড়ে হাঁটুর ওপর। শুরু হয় পায়ের ছোট ছোট জয়েন্টে ব্যথা এবং আর্থ্রাইটিসের সমস্যা। তবে হিলের কারণে শুধু হাঁটুর ওপর নয়, গোড়ালির ওপরও অতিরিক্ত চাপ পড়ে।
পায়ের পেশির সমস্যা
দীর্ঘ সময় হিল জুতা ব্যবহার করলে গোড়ালি অনেকটা উঁচু হয়ে থাকে। ফলে গোড়ালির সঙ্গে যে পেশিগুলো টেনডনের মাধ্যমে যুক্ত, সেগুলো
ছোট হয়ে যায় এবং পেশিগুলোর ভেতরে নানা পরিবর্তন হতে শুরু করে। যার ফলে প্লান্টার ফ্যাসাইটিস এবং একিয়ালিস টেন্ডিনাইটিস নামের রোগ দেখা দিতে পারে।
কোমরে ব্যথা
হাই হিল জুতা আপনার গোড়ালিকে উঁচু রেখে কোমরকে অস্বাভাবিকভাবে সামনে ঠেলে রাখে। প্রকৃতির নিয়মের বিপরীতে দীর্ঘদিন ধরে এমন অস্বাভাবিক ভঙ্গিতে হাঁটাচলার কারণে মেরুদণ্ডের স্বাভাবিক বক্রতা নষ্ট হয়ে কোমরে প্রচণ্ড ব্যথার সৃষ্টি হতে পারে।
পায়ের পাতা
হাই হিল পরার সময় পায়ের পাতা নেয় পুরো শরীরের ভার, আর গোড়ালি তখন সহায়ক হয় মাত্র। ফলে ধীরে ধীরে পায়ের পাতা থেকে এই প্যাডের মতো মাংসল অংশটি সরে যায় বা ক্ষয়ে যায়।
গোড়ালির সমস্যা
হাইহিল পরলে পায়ের পাতা ও গোড়ালির ভারসাম্য নষ্ট হয়, সেই সঙ্গে গোড়ালির অস্থিসন্ধিতে এসে পড়ে পুরো শরীরের ভার। ফলে স্বাভাবিকভাবেই গোড়ালি মচকে যাওয়ার আশঙ্কা বাড়ে।
নখকুনির সমস্যা হয়
সাধারণত হাই হিলের সামনের দিকটি ছড়ানো না হয়ে নৌকার মতো সরু হয়। উল্টো দিকে, আপনার আঙুলগুলো খানিকটা চৌকা আকারের হয়ে থাকে। ফলে সারা শরীরের ভার আঙুলগুলোকে আরও বাইরের দিকে ঠেলতে থাকে। এতে নখকুনি হওয়ার আশঙ্কা বাড়ে।
[FA]pen[/FA] লেখক: এম ইয়াছিন আলী, ফিজিওথেরাপি বিশেষজ্ঞ, চিফ কনসালট্যান্ট, ঢাকা সিটি ফিজিওথেরাপি হাসপাতাল, ধানমন্ডি, ঢাকা