What's new
Nirjonmela Desi Forum

Talk about the things that matter to you! Wanting to join the rest of our members? Feel free to sign up today and gain full access!

গোপন কথাটি রবেনা গোপন (1 Viewer)

[HIDE]

20

অরূপদার ঘরে ঢুকে দেখলাম অদিতি বিভিন্ন বই নেড়ে চেড়ে দেখার অভিনয় চালিয়ে যাচ্ছে। আমি ওকে পুরো রিপোর্ট পেশ করলাম। ও আমার কাঁধে হাত রেখে বলল “সাবাস কমরেড। তিন দিন আগে এই কাণ্ড গ্রিন হোটেলের সেই আঠারো নম্বর ঘরে, আর তারই দুই তিন্ দিনের মধ্যে ওর অ্যাঁকাউন্টে বিরাশি লক্ষ্ টাকা কেউ জমা করবে, বা হয়ত ইতিমধ্যে জমা করে দিয়েছে। আর এইবারও খুব সম্ভবত আহত লোকটা পুলিশের কাছে যাবার সুযোগ পায় নি বা কোনও কারণে যাবার সাহস করে নি। আর তার থেকেও ইন্টারেস্টিং এই যে অরূপদার সেই হোটেলে যাবার সেদিন কোনও কথাই ছিল না। অন্তত আলিদা আর আরতির কথা শুনে সেরকমই মনে হয়েছিল। কিন্তু তবুও খবর পেয়ে সে গিয়ে হাজির হয়। আর শুধু তাই নয় ঘটনার সময় সে হোটেলের ধারে কাছেই ছিল। কিন্তু রাত্রে সে ক্যাম্পে ফেরে নি আলি আর সীমার সাথে। খুব সম্ভবত ওদের আলাদা রওয়ানা করে দিয়েছিল আর নিজে থেকে গেছিল ওখানেই। সেই রাতে যখন বিনীতাদির চিৎকার চলছিল রাজুর ঘরের ভেতরে তখন ও ছিল না এই ক্যাম্পে, আর সাক্ষী আমরা সবাই। ঠিক আছে নে। এই ঘরটা একটু খুঁজে দেখা যাক। “ প্রায় দুপুরের লাঞ্চ হবার আগে পর্যন্ত খুঁজে আমরা আরও দুটো পাশ বই খুঁজে পেয়েছি। একটা ইউনিয়ন ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়ার আর আরেকটা স্টেট ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়ার। অবশ্য এই দুটোই জয়েন্ট অ্যাঁকাউন্ট। অরূপ ঘোষাল আর বিনীতা ঘোষালের নামে। তিনটে পাশবুকেই ওদের যে অ্যাড্রেস আর ফোন নাম্বার দেওয়া আছে সেগুল আমরা নোট করে নেওয়া আছে। সব কটা অ্যাড্রেস আর ফোন নাম্বারই মিলে যাচ্ছে। আমরা দুটো বই কাঁখে গুঁজে, ব্যাঙ্কের পাশ বই গুলো আবার যথাস্থানে গুছিয়ে রেখে, সব ঠিক ঠাক করে পরিষ্কার করে রেখে আমাদের ঘরে ফিরে এলাম। আজ ডিম বরাদ্দ সবার জন্য। পথে একজন মেয়ের সাথে দেখা হওয়ায় ও বলল “ ওই দিকে রজনী দি জিজ্ঞেস করেছে সেই দিনের পর থেকে আর তুমি রান্না করতে যাও নি কেন। ওঁত বড় হাতা খুন্তি নাড়তে গিয়ে কি হাতে ফসকা পড়ল না কি?” ও আওয়াজ দিয়ে হেঁসে আমাদের পাশ কাটিয়ে স্নান করতে চলে গেল। অদিতি আসার আগে ওর প্যাডের আরও দুটো সাদা কাগজ আর একটা পেন নিয়ে এসেছিল নিজের সাথে। এইগুল ঘরে রেখে যাওয়া চলে না। সমস্ত কাগজ আর কলম আর নোট করা পাতা গুলো ঘরের পিছন দরজা দিয়ে বেড়িয়ে বাইরে পাথরের তলায় চাপা দিয়ে এলাম সন্তর্পণে। অবশ্য বৃষ্টি নামলে কি হবে বলা শক্ত কারণ বাইরে মেঘ করে আছে আর ভালো গুমোট হয়ে আছে। যাই হোক আমাদের ফিরে আসা অব্দি বৃষ্টি নামে নি। আজ দুপুরে দেখলাম অদিতিও আমার মতন এদের খাবার খেতে শিখে গেছে। দুবার গিয়ে গিয়ে ভাত নিল। তবে প্রথম দিনের মতই আজও আমরা রাকার সাথে সবার খাওয়া হয়ে যাবার পর খেলাম। দূরে কোথাও থেকে লুটের খবর এসেছে বলে একটা মেয়ে তৈরি হয়ে নাকি ইতিমধ্যে অভিসারে বেড়িয়ে পড়েছে দুগগা দুগগা বলে। রাকাই আমাদের খাবার সময় এই খবরটা দিল। রাজুও নাকি গেছে ওর সাথে। অরূপদা আর বিনীতাদি নেই বলে আলিদার ওপরে কড়া নির্দেশ যে ওর বেস ছেড়ে যাওয়া চলবে না কিছুতেই। তাই ও চাইলেও মেয়েটার সাথে যেতে পারে নি। আমাদের খাবার হয়ে গেলে রাকা আমাদের বলল “যাও তোমরা গিয়ে ভাত ঘুম দিয়ে নাও। এখন অব্দি তো তোমাদের হাতে তেমন কেস কিছু আসে নি। তবে তোমরা না থাকলে সুজাতা বোধহয় বাঁচত না। এই মাসে একটা মৃত্যু অন্তত ঠেকানো গেল। “ আমি বললাম “ ওই পোকার কামড় খেয়েও মরতে পারে লোক জন। একটু সাবধানে থাকবে তোমরা সব।“ ও বলল “ থ্যাংকস ফর ইওর অ্যাডভাইস। “ আমরা ঘরে ফিরে এসে দুজনে বই খুলে বিছানার ওপর উপুড় হয়ে শুয়ে পড়লাম। অদিতি পেন আর কাগজ গুলো নিয়ে এসে বইয়ের থাকে থাকে গুঁজে রেখেছে যাতে কেউ হঠাত করে চলে এলেই আমরা চট করে সে গুলো লুকিয়ে ফেলতে পারি। যা কিছু হিসাব করে বুঝলাম তার সারাংশ করে এই দাঁড়ায় ঃ
১। ওদের দুজনের নামে তিনটে ব্যাঙ্ক অ্যাঁকাউন্ট আছে। (ব্যাংক অফ বরদা, ইউনিয়ন ব্যাঙ্ক আর স্টেট ব্যাঙ্ক, এছারা আর থাকলে জানি না।)
২। ওদের পার্মানেন্ট ঠিকানা হিসাবে বেহালার একটা ফ্ল্যাটের ঠিকানা দেওয়া আছে।
৩। ওই বাড়ির কিনা সঠিক বুঝতে না পারা গেলেও, একটা ল্যান্ড লাইনের নাম্বার পাওয়া গেছে আর নাম্বারটা যে কলকাতার সেটা নিয়ে আমাদের কোনও সন্দেহ নেই।।
৪। দুটো হোটেলের খবর আমরা ইতিমধ্যে জেনেছি। (কলকাতার স্টার হোটেল (২৬ নম্বর ঘর), গ্রিন হোটেল (১৮ নম্বর ঘর)) সম্ভবত এই দুই হোটেলের এই দুই রুমে মেয়ে পাঠানোর পর পরই এক একটা নতুন অ্যাঁকাউন্ট থেকে প্রথমে বিশাল বড় অঙ্কের টাকা এই অ্যাঁকাউন্ট গুলোতে ফেলা হয় আর তার পর থেকে প্রতি মাসে নিয়মিত ভাবে নির্দিষ্ট তারিখে একটা মাঝারি অঙ্কের টাকা জমা পড়ে ওই একই জায়গা থেকে। বাকি দুটো পাশবুকের এন্ট্রি মিলিয়েও একই জিনিস নজরে পড়েছে।
৫। এই মুহূর্তে সব মিলিয়ে প্রায় ষোল জন প্রতি মাসে নিয়মিত ভাবে এক লাখ, দুই লাখ বা তিন লাখ টাকা ফেলে থাকে। আমাদের আশঙ্কা সীমার লাস্ট লুটের পর ওদের অ্যাঁকাউন্টে আরও বিরাশি লাখ টাকা যোগ হবে আর তার পর থেকে প্রতি মাসে সতের জনের কাছ থেকে নিয়মিত টাকা পড়তে আরম্ভ করে দেবে। তবে শেষেরটা আমাদের যুক্তি নির্ভর অনুমান। অনেক সময় ব্ল্যাক মেলের টাকা একবারেও মিটিয়ে দেওয়া যায়। ঠিক জানি না।
৬। তিনটে অ্যাঁকাউন্ট মিলিয়ে এই মুহূর্তে ওদের আর্থিক পরিমাণ হল তেইশ কোটি টাকা। (মোটামুটি , সাড়ে ছয় কোটি, নয় কোটি , সাড়ে সাত কোটি টাকা + আরও বিরাশি লাখ যোগ হবে সাড়ে ছয় কোটির সাথে)
৭। ব্যাঙ্ক অফ বরদা আর ইউনিয়ন ব্যাঙ্কের অ্যাঁকাউন্ট থেকে লাস্ট সাত মাসে কোনও টাকা ওঠানো হয় নি।
কিন্তু স্টেট ব্যাঙ্কের অ্যাঁকাউন্ট থেকে দুই মাস আগে সাতান্ন লাখ টাকা পে করা হয়েছিল চেকে কোনও কন্সট্রাক্সান কোম্পানি কে যাদের কোম্পানির নামের আদ্যাক্ষর “এ এ”। এটা কিছুটা আন্দাজ, কারণ পাশ বুকে পেয়ির নাম খুব সাংকেতিক ভাবে লেখা থাকে। তবে এ এ কনস্ট্রাক্সনস কথাটা বেশ বোঝা যাচ্ছে।
আর আগের মাসে ওই একই কোম্পানিকে আরও বারো লাখ টাকা চেকে পে করা হয়েছে।
এ ছাড়া আগের মাসে একটা অটো মোবাইলসের দোকানকে চেক কেটে সাড়ে নয় লাখ টাকা দেওয়া হয়েছে। এগুলো ছাড়া আছে মামুলি দুই তিনটে (কয়েক হাজার টাকার ব্যাপার বলে মামুলি বললাম) ডিমান্ড ড্রাফ্*ট কোনও স্কুলের নামে।
খাতায় নোট করতে করতে আমি অদিতি কে বললাম “বাপরে বাপ এই টাকাটা ঢোকার পর প্রায় চব্বিশ কোটি টাকার মালিক এরা। এত টাকা নিয়ে করবে কি?” ও বলল “ ওই যে কোথাও বাড়ি বানাচ্ছে। কোথাও বড় গাড়ি কিনছে। আর এরপর হয়ত বাকি টাকা জমিয়ে জমিয়ে সুদ গুনবে। খুব সম্ভবত ওদের একটা ছেলে বা মেয়ে আছে। যে বাইরে, সম্ভবত কোলকাতায় কোনও একটা স্কুলে পড়ে। সেখানে মাঝে মাঝে ফি ভরতে এই ডিম্যান্ড ড্রাফ্*ট। “ এই জিনিসটা অবশ্য ইতিমধ্যে আমিও বুঝতে পেরেছি।
৮। ওই হোটেলের রুম বয় কে? যে যে দিন ডাকাতি হয় সেই সেই দিন কি একই লোক থাকে?
৯। সংকেতের বাকি দুটো লাইনের মানেই বা কি?

আমরা উঠে যাচ্ছিলাম, কিন্তু ও শেষ মুহূর্তে আরেকটা লাইন লিখে দিল,
১০। এখানে ওর চর কে কে আছে?
আমি ওকে প্রশ্নটা করার আগেই ও আগ বাড়িয়ে বলে দিল “ সোনা, এত টাকার নয় ছয়। যদি লুট করা টাকা থেকেও কিছু সরিয়ে নিয়ে নিজেদের হাত খরচ চালিয়ে থাকে তাতেও আমি খুব একটা আশ্চর্য হব না। যদিও আলিদার কথা অনুযায়ী ওদের হিসাবে প্রায় কোনও গড়মিল হয় না, তবু আমার বিশ্বাস বাইরে আর ভিতরে দুই জায়গাতেই অরূপদা আর বিনীতাদির একজন করে অন্তত বিশ্বস্ত গুপ্তচর লোকানো থাকবে। এরা ব্লাইন্ড খেলার লোক নয়। “ সেইদিন সন্ধ্যা থেকে বৃষ্টি হওয়াতে নির্দিষ্ট সময়ের কিছু আগেই ওদের ট্রেনিং ভাঙতে বাধ্য হল। শুনলাম রান্নাতেও নাকি ব্যাঘাত পড়েছে। আমি বৃষ্টি হওয়ার সাথে সাথে কাগজটা বাইরে থেকে নিয়ে এলাম। তাতে আমি আরেকটা লাইন যোগ করলাম,
১১। রত্নাদি কোথায়? ও কেন মায়া আর রমার সামনে অমন সন্ত্রস্ত হয়ে ছিল? (আমি অদিতিকে সব কথা খুলে বললাম রত্নাদির ব্যাপারে। এতদিন আমরা কেউ কাউকে বলিনি যে আমাদের কি করে ধরে আনা হয়েছে। ডাক্তার যে আমার অসাড় অবস্থার সুযোগ নিয়ে আমাকে রেপ করেছে সেটা আগের দিনই ও শুনেছিল, যদিও অরূপদা সেটা মানতে চায় নি সেদিন। ওকেও এরকম দু একজন মিলে ধরে এনেছে। তবে তাদের এখানে ক্যাম্পে দেখা যায়। রত্নাদির মতন ওরা কেউ পুরো পুরি গায়েব হয়ে যায় নি। )



[/HIDE]
 
[HIDE]

21

বৃষ্টির জন্য রান্না চড়াতে সেদিন প্রায় আঁটটা বেজে গেছিল রাত্রে। কখন যে খাওয়া হবে কেউ জানে না। আমরা যে যার ঘরে রয়েছি। বাইরে শুধু পাতার সরসরানি আর হাওয়ার শব্দ। বৃষ্টি ধরলেও পুরো পুরি থামে নি। এখনও হাতে অনেক সময় আছে। ও উঠে পড়ল। “শোন এক কাজ করা যাক। এইটুকু রিস্ক না নিলেই নয়। চল তুই রাজুকে গিয়ে পটা আর আমি আলিদাকে গিয়ে আবার মাথা খাই। দুজনে ঘরেই আছে। শুতে হলে পা ফাঁক করে শুয়ে পড়বি। রাজু ছোকরা চার পাশে ঘুরে বেড়ায়। ও কি জানে বা বোঝে সেটা একবার খতিয়ে দেখা দরকার। তবে একটু চাপা স্বভাবের ছোকরা, অন্তত উপর উপর তাই মনে হয়। মিষ্টি করে নিজের মায়াজালে জড়িয়ে নিয়ে কাজ সারবি। “ আমি বললাম “তুই সিওর যে ও কিছু জানে?” ও মাথা নেড়ে বলল “না।“ বললাম “তাহলে বেকার বেকার ওকে উস্কে লাভ কি?” ও বলল “আরে বাবা, যতটা খবর বের করা যায় তার চেষ্টা করতে হবে। তোর থেকে তো আমার রিস্ক বেশী। ভেতরে ফেললে আমার যে কি হবে তা জানি না। আর একবার অন্য লোকের সাথে শুয়েছিস, আবার আরেকবার শুবি , কি এসে যায় তাতে। এমনিতেই বেশী দিন সেক্স ছাড়া আমি রাতে ঘুমাতে পারি না। চল। আমিও যাই। আমার বিশ্বাস রাজু এমন কিছু জানতেই পারে যেটা আমাদের কাজে লাগতে পারে। আর তাছাড়া দেখে শুনে যা বুঝলাম , ছেলেটা খারাপ করে না। ওর বাজার দর এখানে বেশ ভালো। (ওর দিকে বিস্ময়ের সাথে তাকিয়ে আছি দেখে বলল) অমন ভাবে তাকিয়ে থেক না সোনা। শরীরের খিদে থাকলে আমি চারপাশ থাকে যেকোনো ছেলেকে দিয়েই সেই চাহিদা পূরণ করে নি। তাতে আমার লজ্জা নেই। তুইও নতুন ছেলের সাথে শুলে নতুন স্বাদ পাবি। আর রাজুর সাথে শুলে কি তুই তোর বয়ফ্রেন্ডকে ভুলে যাবি নাকি? না তোর প্রেম কমে যাবে ওর প্রতি!!! “ একটা চোখ মেরে বেড়িয়ে গেল। বিনীতাদিকেই নকল করে যে শেষের কথাগুলো ছুঁড়ে দিল সেটা বুঝতে অসুবিধা হল না। ওর পিছন পিছন আমিও বেড়িয়ে এলাম ঘর থেকে। রাজুর ঘরের সামনে গিয়ে জানলা দিয়ে দেখলাম খাটো ধুতি পড়ে খালি গায়ে বিছানার ওপর উপুড় হয়ে শুয়ে জানলা দিয়ে বাইরের দিকে তাকিয়ে আছে। দরজাটা ভেজানো। এখানে প্রায় কোনও ঘরেই দরজায় খিল দেওয়ার চল নেই। জানলা দিয়েই বললাম “ভেতরে আসতে পারি?” রাজু মুখ ঘুরিয়ে উঠে বসল। মুখে একটা হাঁসি হাঁসি ভাব নিয়ে প্রায় ছুটে এসে দরজা খুলে দিল। এখানে কার যে বয়স কত সেটা এদের ফিগার দেখে বোঝার উপায় নেই। কিন্তু এই ছেলেটা নিঃসন্দেহে আমার থেকে বয়সে ছোট। অদিতির মতন আমার আবার বয়সে ছোট ছেলেদের মাথা চিবাতে বেশী ভালো লাগে। ও যদি আমাকে আলিদার ঘরে পাঠাত তো আমার একটু খারাপই লাগতো। যদি খবর বের করার জন্য শুতেই হয় তো কচি ছেলে নয় কেন? আর স্নান করার পর ওকে ভেজা ধুতিতে ফিরে আসার সময় যতটা দেখেছি আর সেদিন বিনীতাদির সাথে করার সময় আবছা আলোয় যতটা দেখেছি তাতে মনে সাইজ খারাপ নয়। আলিদার জিনিসটা বড্ড সাধারনের মতন। আমার বয়ফ্রেন্ডের টাও আলিদার থেকে অনেক মোটা। এসব অলীক কল্পনা করতে করতেই ভেতরে ঢুকে পড়লাম। আমাকে চেয়ারটা দেখিয়ে দিয়ে নিজে গিয়ে বিছানার উঠে বসল। ওর বুকের ঠিক নিচে একটা কাটা দাগ দেখে সেটাতে আলতো করে আঙুল বুলিয়ে দিয়ে বললাম “ এটা কি করে হল। “ কিছু করে তো কথাবার্তা শুরু করতে হবে না কি! বলল “ট্রেনিঙের সময় একবার তারের ওপর পড়ে গিয়েছিলাম। এখানে তাড় ফুটে ঢুকে গিয়েছিল। ভাল ঘা হয়ে গিয়েছিল। অনেক দিন ভুগিয়েছে। “ বললাম “ এখানে আসার পরে তোমার সাথে তো আলাপই হয় নি। যদি কিছুদিন থাকতেই হয় তো আলাপ করে নেওয়া উচিত নয়?” ওর মুখে হাঁসিটা লেগেই রইল, কিন্তু ভুরুটা সামান্য উপরের দিকে উঠে গেল এই যা। একটু যেন অবিশ্বাসের সাথেই বলল “ শুধুই আলাপ করতে এসেছ?” আমি বললাম “ আমার ঘরে যে থাকে সে গেছে আলিদার ঘরে। ওর আলিদাকে খুব মনে ধরেছে। কাল রাতে তো আমরা দুজনে ওখানেই ছিলাম। অনেকক্ষণ মজা করেছি আমরা তিনজনে এক সাথে। “ (মজা কথাটা বলার সময় নিজের নির্লজ্জতা প্রকাশ পাচ্ছে বুঝে গলাটা যেন একটু কেঁপে গেল।) ওর মুখের ভাব দেখে বুঝতে পারলাম এই তথ্যটা ওর কাছে নতুন। অবশ্য সেটা তেমন কিছু অস্বাভাবিক নয়, কারণ কেউ রাতের যৌন ক্রীড়া নিয়ে দিনের বেলায় কথা বলে না কারোর সাথে। এদের দিনের প্রতিটা ঘণ্টা একদম হিসাব করে নিয়মের চক্রব্যূহে বাঁধা। আমি নিজের টার্গেটের দিকে এগিয়ে চলেছি ধীর কদমে, ন্যাকা ন্যকা গলায় বললাম “ জানো, কালকের পর না ওর আলি দাকে ভীষণ মনে ধরে গেছে। এখন আমি একা একা বসে কি করব? বাইরে হাঁটছিলাম, দেখলাম তুমিও একা। তাই আলাপ করতে এলাম।“ ও একটা দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে বলল “ বুঝলাম। আসলে এখানে রাতের পর কেউ শুধু আলাপ করতে আসে না। তাই একটু আশ্চর্য হয়েছিলাম শুরুতে। মিনতিদি, আরতিদি এরা সব আসে রিল্যাক্সড হতে।“ “রিল্যাক্স”! ওর শব্দ চয়ন সত্যিই প্রশংসনীয়। ওর বয়সের অন্য কলেজের ছেলে হলে হয়ত বলত যে ওরা আসে লাগাতে বা চোদাতে। কিন্তু ওর কথা ভীষণ মার্জিত। সব কথাই সোজাসুজি পরিষ্কার করে বলল কিন্তু তাও কোথাও কোনও অশ্লীলতার ছোঁয়া নেই।

[/HIDE]
 
[HIDE]

22
আমি একটু হেঁসে বললাম “বিনীতাদিও তোমার অনেক প্রশংসা করেছে।“ ওর মুখটা যেন সামান্য একটা লালচে আভা ধারন করল। চোখ দুটো মাটির দিকে। ও বলল “তোমার সাথে গল্প করতে পারলে ভালোই লাগত। কিন্তু এখন আমাকে একটু অমলের ঘরে যেতে হবে।“ একটু ভুরু কুঁচকে ওর দিকে তাকিয়ে হেঁসে বললাম “ তোমরা দুজন ছেলে মিলে ...।।“ ও লাফিয়ে উঠলো “ আরে না না। এখানে অনেক মেয়ে মেয়েদের সাথে রিল্যাক্স করে, কিন্তু আমরা করি না। আমি যাচ্ছি মহুয়া খেতে খাবার বাড়তে অনেক দেরী। তাই আর কি।“ আমি বললাম “তোমরা মহুয়া জোগাড় কর কি ভাবে?” বলল “ সে পাশ থেকেই পাওয়া যায়। “ ও উঠে পড়ছে দেখে আমি একটু দমে গেলাম। মনের সব সাহস জড় করে বললাম “ তো আমি কি ভাই আন-ওয়ান্টেড থার্ড? ” একটু থেমে ন্যাকামি করে বললাম “ এখানে আসার পর থেকে তো একঘরেই হয়ে রয়েছি। এক মাত্র আলিদার কাছ থেকে কাল একটু ভালোবাসার ছোঁয়া পেলাম।“ ও একটু অপ্রস্তুত হয়েই লাফিয়ে উঠে আমার হাতটা নিজের শক্ত হাতের ভেতর নিয়ে বলল “ছিঃ ছিঃ। এরকম বলতে চাই নি। কিন্তু তোমরা তো মহুয়া খাও না।“ আমি বললাম “কে বলেছে খাই না। তোমরা আমাদের কোনও দিন দাওই নি। কাল আলিদা দিয়েছিল, ওকেই জিজ্ঞেস করে নাও না গিয়ে। গ্লাস গ্লাস গিলেছি আমরা দুজনে মিলে। তবে আউট হয়ে গেলে কিন্তু সব ভার তোমার, এই আগে থেকে বলে দিলাম।“ ওর হাতে নিজের হাত চেপে দিয়ে আমি অমলের ঘরে এসে উপস্থিত হলাম। পাশাপাশি হাঁটার সময় বুঝতে পারলাম ওর উচ্চতা আমার থেকে ভালোই বেশী। হাতে কড়া পড়ে গেছে এই অল্প বয়সেই। অমল ওর থেকে বোধহয় বছর দুয়েকের বড় হবে। ওর সাথে আমাকে দেখে একটু যেন চমকে উঠলো। রাজু প্রথমে যা ভেবেছিল বোধকরি এরও ধারণা তাই হয়েছে আমাকে নিয়ে। কিন্তু রাজুর সাথে কেন এসেছি এটা এখনও বুঝতে পারছে না। রাজু বোধহয় আগ বাড়িয়ে বলতে যাচ্ছিল যে আমি শুধু ওদের সাথে আলাপ করতে এসেছি, কিন্তু তার আগেই খেলার রাশ আমি নিজের হাতে তুলে নিয়েছি। বলে উঠলাম “কেন? বিনীতাদি তো শুধু রাজুর নয়, তোমারও প্রশংসা করেছে। (আমি দুজনের হাত নিজের দুই হাতে নিয়ে যতটা পারা যায় গলাটাকে নামিয়ে নিয়ে কামার্ত ভাবে বললাম) আমার জানো অল্পে ঠিক সুখ হয় না। তোমরা দুজনে মিলে পারবে আমাকে ভালোবাসা দিয়ে ভরিয়ে দিতে?” রাজুকে আমি অন্য কথা বলে এখানে নিয়ে এসেছিলাম। কিন্তু এখানে এসে ও আমার এই পালটি খাওয়া দেখে যারপরনাই অপ্রস্তুত হয়ে পড়েছে। ও নিজের কানকে যেন বিশ্বাস করতে পারছে না। ওকে দোষ দেব কি, এমন একটা প্রস্তাব যে আমার মুখ থেকে বেড়িয়েছে, সেটা আমি নিজেও বিশ্বাস করতে পারছি না। আড়চোখে আগেই দেখে নিয়েছিলাম যে ওর টেবিলে একটা পানীয়র গ্লাস রাখা আছে। আর সেটা প্রায় অর্ধেক শেষ। অর্থাৎ আমরা আসার আগেই ও খেতে শুরু করে দিয়েছিল। আমি টেবিলের দিকে এগিয়ে গিয়ে ওর এঠো গ্লাসটা নিজের ঠোঁটে লাগিয়ে একটা বড় চুমুক মারলাম। চেষ্টা শুধু একটাই, ওদের বিশ্বাস অর্জন করে নেওয়া। আর সেটা তো ওদের থেকেই শিখেছি। মেয়েদের পাঠিয়ে ওদের শরীরের মায়াজালে ছেলেদের বেঁধে ফেলে তারপর ওদের থেকে সব কিছু লুট করে নেওয়া। তাহলে সেটা ওদের ওপরেই বা ব্যবহার করতে পারব না কেন? গ্লাসটা টেবিলের ওপর নামিয়ে রেখে বললাম “কি পারবে না তোমরা আমাকে ভালবেসে ভরিয়ে দিতে?” অমল আর রাজু নিজেদের মধ্যে চোখ চাওয়া চাওয়ি করছে। নিজেদের ওপর যতই নিয়ন্ত্রণ থাকুক না কেন, পুরুষদের কাছে নতুন নারী শরীরের হাতছানি সব সময়েই অনেক বেশী উত্তেজক। নতুন রক্ত, নতুন মাংস, নতুন গায়ের গন্ধ, নতুন চামড়ার স্বাদ সবাইকেই টানে। এখন দেখার বিষয় হল এরা আমার এই হাত ছানি উপেক্ষা করার মতন শক্তি রাখে কি না নিজেদের ভেতর। আর তাছাড়া একটু বৈচিত্রময় শারীরিক মিলন সব পুরুষকেই (আমার মতন অনেক নারীকেও) আরও বেশী উত্তেজিত করে। জানি না আগে ওরা এরকম কোনও দিন করেছে কি না, কিন্তু ওদের মুখের ভাব থেকে স্পষ্ট যে ওরা নিজের চোখ আর কান কে এখনও বিশ্বাস করতে পারছে না। দুজন বন্ধু মিলে ওদের থেকে কয়েক বছরের বড় একজন মহিলাকে যে একসাথে ভোগ করতে পারবে সেটা ওরা এখনও ঠিক বুঝে উঠতে পারছে না। রাজু একটু গলা খাঁকড়িয়ে বলল “ কিন্তু তুমি যে বললে শুধু আলাপ করতে এসেছ।“ ছ্যানালি করে বললাম “উফফ তুমি না বড্ড সরল রাজু। এই সময় আলাপ কি শুধু শুধু হয়? আলাপ তো করব। কিন্তু এঁকে অপরকে ভালো বাসা দিতে দিতে। কেন আপত্তি আছে নাকি? না কি আমাকে তোমাদের কারোর পছন্দ হয় নি? এখানে আমাকে বলা হয়েছে নিজের মনের কথা খুলে বলতে, কিন্তু কোনও ছেলেকে আমি আমাকে ভালোবাসার জন্য জোর করতে পারব না। তাই সোজাসুজি বলে দাও। নইলে আমি ঘরে ফিরে যাই। ” দুজনেই এগিয়ে এসে আমার হাত দুটো নিজেদের হাতে নিয়ে এলো। অমল এইবার প্রথমবার মুখ খুলল “ আসলে কেউ এরকম দুজনের সাথে একসাথে মানে...।“ আমি বললাম “সত্যিই করে না দুজনের সাথে? (ভাব খানা এমন যেন আমি রোজ একাধিক পুরুষের মাঝে শুয়ে আমার শরীর গরম করি, এটা আমার কাছে ভাত খাওয়ার মতন ব্যাপার।) তোমরা এত ফ্রি থাক, তাও করো না? আমরা তো শহরে জানা জানির ভয়ে করতে পারি না। কিন্তু তাও শহরে এরকম হামেশাই হয়ে থাকে। এতে তো কোনও খারাপ জিনিস নেই। বিশ্বাস না হলে আলিদাকে জিজ্ঞেস করে এসো, কাল ওকে তো আমি আর আমার বন্ধু একসাথে আদর করে ভরিয়ে দিয়েছিলাম। (রাজুর দিকে তাকিয়ে বললাম) তোমাকে তো সেই কথা আগেই বলেছি।“ ও ইশারায় বুঝিয়ে দিল যে এই কথা ও আগেই শুনেছে আমার কাছে।

তবুও ওদের মুখে যেন একটা সংকোচের ভাব লেগে আছে। আমি বললাম “বেশ। তোমাদের আমার ভালোবাসার প্রস্তাব খুব অদ্ভুত লেগেছে তাই তো?” অমল একটু সামলে নিয়ে বলল “ না মানে। তুমি নিশ্চই আগে এমন করেছ বা দেখেছ, কিন্তু আমরা আসলে এত কিছু জানি না। আর এখানে আগে কখনও তেমন করি নি। “ ওর চুলের ওপর বিলি কেটে দিয়ে বললাম “ আচ্ছা একটা কথা বলবে? বিনীতাদির স্বামী এখানেই থাকে?” ওরা মাথা নাড়িয়ে বোঝাল হ্যাঁ। ও কিন্তু রাজু আর তোমার সাথে রিল্যাক্স করতে এখানে আসে। “ অমল আবারও একটু আশ্চর্য হলেও রাজু চোখের ইশারাতে বুঝিয়ে দিল আমি সব জানি। আমি বলে চললাম “ ও নিজেই আমাকে বলেছে, যে এতে ওর বরের ওপর থেকে প্রেম এক ফোঁটাও কমে না। ও যে তোমাদের সাথে এসে কিছুটা সময় কাটিয়ে যায় তাতে ও শারীরিক শান্তি পায় যেটা ও ওর বরের কাছ থেকে পায় না। অবশ্য এও বলেছে কোনও কোনও দিন পায়। তবে যেদিন মানে খুব বেশী থাকে আর কি... মানে তোমরা বুঝতে পারছ যে ও কি বলতে চেয়েছে। “ ওরা ঘাড় নেড়ে বুঝিয়ে দিল যে ওরা বুঝতে পেরেছে যে আমি “বেশী থাকে” বলতে কি বলতে চেয়েছি। বললাম “সেই সেই দিন তোমাদের ছাড়া ওর চলে না। আর তোমরাই তো বল যে কোথাও কোনও জোরাজুরি নেই। কাউকে ভালো লাগলে তার সাথে গিয়ে তুমি সময় কাটাতে পারো। দুজনের সাথে আলাদা আলাদা করে সময় কাটালে কোনও দোষ নেই, কিন্তু আমি স্বাভাবিক আর সরল মনে তোমাদের দুজনের সাথে সময় কাটাতে এসেছি, আর তাতেই আমার দোষ হয়ে গেল? কেন? আমি বাইরের লোক বলে?” শেষ কথায় ন্যাকামির ছোঁয়া। রাজু আমার নগ্ন কাঁধে হাত বুলিয়ে বলল “তুমি বারবার নিজেকে বাইরের লোক বলবে না। তুমি তো এখন আমাদেরই একজন। তবে তুমি তো আমার সাথেই আলাপ করতে, মানে এখন বুঝতে পারছি রিল্যাক্স করতে এসেছিলে, কিন্তু এখন হঠাত দুজনের সাথে... মানে হঠাত করে এই মত পরিবর্তন?” আমি বললাম “প্লীজ তোমরা তো কেউ স্বার্থপর নও। তোমার কাছেই এসেছিলাম সময় কাটাতে। কিন্তু তুমি যখন এখানে নিয়ে এলে, তখন লোভ সামলাতে পারলাম না। আর এখানে অনেক মেয়েরা কথায় কথায় তোমাদের অনেক প্রশংসাও করেছে, আর সেই কথা তো তোমাদের আগেই বলেছি। আর আমার অল্পের থেকে বেশী পেলে বেশী ভালো লাগে। এই জিনিসটা যত বেশী উগ্রতা, তীব্রতা আর বৈচিত্র দিয়ে করা যায় ততই আমার ভালো লাগে। এটা অবশ্য সম্পূর্ণ আমার ব্যক্তিগত মতামত।“ ওরা দুজনেই একসাথে মাথা ঝাঁকিয়ে বলল “সে তো বটেই। একটু অন্য রকম হলে সবারই ভালো লাগার কথা।“ অমল বাইরে বেড়িয়ে গেল আমার জন্য গ্লাস আনতে। আমি দেখলাম সময় নষ্ট করে লাভ নেই।

রাজুর সামনে খুব ঘন হয়ে দাঁড়িয়ে ওর ধুতির গিঁটটা খুলে ওর শরীরের থেকে খুলে নিয়ে চেয়ারের ওপর ফেলে দিলাম। ওকে একটা হালকা ধাক্কা দিয়ে বিছানার এক ধারে বসিয়ে হাঁটু মুড়ে ওর দুপায়ের ফাঁকে বসে পড়লাম। মাথার ওপর আলগা চুলটা ভালো করে বেঁধে নিলাম খোঁপায়। না, লিঙ্গটা এখনও ঠিক দাঁড়ায় নি। কিন্তু ফুলতে শুরু করে দিয়েছে। ওর যৌনদেশে চুলের ঘনত্ব ভালোই, কিন্তু আলির মতন লম্বা নয়, তাই মুখে নিয়ে যখন চোষা শুরু করলাম তখন যেন খুব একটা অসুবিধা হচ্ছিল না। ওদের এখানে মুখ মৈথুন ব্যাপারটা বোধহয় তেমন পপুলার নয়, অন্তত নিজেদের মধ্যে যখন করে। অবশ্য মেয়েরা বাইরে গিয়ে কি করে, বা বলা ভালো খদ্দেরের জন্য কি করতে বাধ্য হয়, সেটা ওরা থোড়াই জানতে পারে। ওর লিঙ্গের মুখের ওপর দৃঢ় ভাবে জিভ বোলাতে বোলাতে একবার ওর মুখের দিকে তাকিয়ে জিজ্ঞেস করলাম “কি ভালো লাগছে?” বলল “ থেমো না এখন।“ অমল যখন ঘরে ফিরে এলো তখন ওর লিঙ্গ শক্ত হয়ে উঠেছে। আকার আয়তনে বেশ বড়, বেশ মানে বেশ বড়। ভীষণ মোটা। বুঝলাম কেন বিনীতাদি বার বার ওর কাছে ছুটে আসে। আর তেমন কোনও নোংরা গন্ধও নেই ওর উরুস্নধিতে। একটা স্বাভাবিক পুরুষালি গন্ধ ভরে আছে ওর ওই জায়গায়। অমল ঘরে ঢুকে দেখল আমার মুখ ওঠা নামা করে চলেছে ওর লিঙ্গের দৈর্ঘ্য বরাবর। এদিকে রাজুর নিঃশ্বাস ঘন হয়ে এসেছে। আমি অমলের পায়ের শব্দ শুনেও মুখ তুলে চাইলাম না। ওর লিঙ্গটার ওপর নিজের মুখের ওঠা নামা চালিয়ে গেলাম এক দমে। মাঝে মাঝে মুখের ভিতরে প্রিকামের স্বাদ আসছে। অমল ঠায় দাঁড়িয়ে রয়েছে আমার পিছনে। না এইবার থামতে হবে। ওর লিঙ্গের ওপর থেকে নিজের মুখটা সরিয়ে নিয়ে ডান হাতের মুঠোয় শক্ত করে ওর পিছল খাড়া হয়ে থাকা লিঙ্গটাকে চেপে ধরে ওপর নিচ করে ভালো ভাবে কয়েকবার হস্তমৈথুন করে দিলাম। অমলের দিকে মুখ ঘুরিয়ে ওর চোখের ওপর স্থির কামুক দৃষ্টি রেখেই একবার জিভ দিয়ে আগা গোঁড়া চেটে দিলাম ওর লিঙ্গের দৈর্ঘ্য বরাবর। অমলের ধুতির সামনেটা ফুলে ঢোল হয়ে গেছে। বুঝলাম আকার আয়তনে এরই মতন হবে, বা এর থেকে সামান্য হলেও বেশীই হবে, কম হবার সম্ভাবনা খুব কম। ওর লিঙ্গটাকে নিজের কবল থেকে মুক্তি দিয়ে অমলকে বললাম “কি গো তুমি কি ওখানে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়েই চোখ দিয়ে আমাকে আদর করবে? না সামনে এসে বসবে? আমি কি তোমাকে একটু আদর করতে পারব না?”

এক নিমেষে ও নিজের হাতের গ্লাসটা গিয়ে টেবিলে রেখে নিজের গ্লাসে আর রাজুর জন্য রাখা গ্লাসে পানীয় ঢেলে গ্লাসদুটো এনে রাজুর হাতে ধরিয়ে দিল। এক টানে নিজের ধুতিটা খুলে ফেলে চেয়ারের ওপর রেখে দিল। কিন্তু ও নিজের লিঙ্গটা আমার মুখে ঢোকানোর জন্য সাথে সাথে বিছানার ধারে এসে বসল না। আমার কোমরটাকে শক্ত হাতে জড়িয়ে ধরে আমার কোমরের নিচে বেঁধে রাখা শাড়ির গিঁটটা দুহাত দিয়ে প্রায় টেনে খুলে নিল। আমাকে দাঁড়ানোর সময় পর্যন্ত দিল না। ওই আধ বসা অবস্থাতেই আমার শাড়িটাকে প্রায় টেনে হিঁচড়ে খুলে নিল আমার শরীরের থেকে, সম্পূর্ণ নগ্ন করে দিল আমাকে। এইবার ও নিজের গ্লাসটা হাতে নিয়ে গিয়ে বসল ওর বন্ধুর পাশে। ওর লিঙ্গটা এখনই সম্পূর্ণ খাড়া হয়ে ফোঁস ফোঁস করছে। আকাশের দিকে তাকিয়ে ব্যর্থ হুঙ্কার করছে যেন। রাজুর ওপর আমার মুখ মৈথুনের খেলা দেখেই ওর দাঁড়িয়ে গেছে। আর তার ওপর একটা নতুন মাংস ভোগ করার উত্তেজনা তো আছেই। আমি নোংরা মাটির ওপরেই হাঁটু ঘষে ঘষে ওর দুটো লোমশ পায়ের মাঝে গিয়ে বসলাম। রাজুর গায়ে লোম প্রায় নেই বললেই চলে। কিন্তু এর সমস্ত হাত পা লোমে লোমে একাকার। যৌনাঙ্গের চার পাশে এত বড় বড় চুলের এত ঘন জঙ্গল এর আগে দেখেছি বলে মনে হয় না। তবে অনেক পুরুষেরই থাকে। ওর মুখের দিকে তাকিয়ে তাকিয়েই খানিকক্ষণ ওর লিঙ্গটাকে নিজের হাতের মুঠোয় নিয়ে কব্জিটা ওঠা নামা করাতে শুরু করে দিয়েছি ওটার গা বরাবর। ও কয়েকটা চুমুক দিয়ে নিজের হাতের গ্লাসটা আমার মুখের সামনে ধরল। আমি বিনা প্রতিরোধে দু চুমুক মেরে নিলাম ওখানে থেকে। মুখটা নামিয়ে নিয়ে এলাম ওর খাড়া লিঙ্গের মাথায়। লিঙ্গের ঠিক মুখে ফোঁটা ফোঁটা জল জমে আছে, প্রিকাম। ওকে উত্যক্ত করার জন্য জিভ বুলিয়ে পরিষ্কার করে নিলাম জলের ফোঁটাগুলো। না আমার ভুল হয়েছে। ওগুলো প্রিকাম ছিল না। বোধহয় এখানে আসার আগে হালকা হয়ে এসেছে। অবশিষ্ট দু এক ফোঁটা পেচ্ছাপের ফোঁটা চুয়ে বেড়িয়ে এসেছে লিঙ্গের ছিদ্র দিয়ে। একটু ঘেন্না লাগলেও এক নতুন অভিজ্ঞতা। ওর লিঙ্গের ওপর শুরু হল আমার মুখের ওঠা নামা। আরচোখে দেখলাম রাজুর লিঙ্গটা এখনও শিথিল হয় নি। বরং আরও উত্তেজিত হয়ে আরও যেন শক্ত হয়ে উঁচিয়ে উঠেছে। অমলের লিঙ্গটা রাজুর থেকে সত্যিই বড়, আর বেশ বড়। অনেক বেশী মোটা। পুরোটা মুখে ঢোকাতে বেশ বেগ পেতে হচ্ছিল। কয়েক মিনিট ওর লিঙ্গটাকে মুখের ভেতর বাইরে করার পর বুঝলাম গালে আর ঠোঁটের কোণায় বেশ ব্যথা করতে শুরু করে দিয়েছে। আমার বয়ফ্রেন্ডের লিঙ্গ প্রস্থে এর প্রায় অর্ধেক, কি তারও একটু কম হতে পারে। এত মোটা লিঙ্গ মুখে নেওয়ার অভ্যেস নেই আমার। ও কিন্তু আলিদার মতন আমার মাথা চেপে ধরে নি। আয়েশ করে করে পুরো জিনিসটা উপভোগ করছে। একবার চাপা গলায় রাজু কে বলল “কি ভীষণ আরাম রে।“ রাজু হেঁসে উঠলো “ভীষণ আরাম পেয়েছি। তবে এইবার আমাদের বন্ধুকেও আরাম দেওয়া বাকি।“ অমল হেঁসে বলল “ আরেকটু খাক, তারপর ফেলে আরাম দেব। নইলে আবার বলবে আমরা স্বার্থপর।“

[/HIDE]
 
[HIDE]


23

আরও কিছুক্ষণ ওর লিঙ্গের ওপর নিজের মুখ নিয়ে ওঠা নামা করানোর পর দম নেওয়ার জন্য মুখ তুলতেই অমল আমার ঘাড়ের কাছে হাত দিয়ে শক্ত ভাবে আমাকে চেপে ধরে দাঁড় করিয়ে দিল। কি ভীষণ গায়ের জোর ছেলেটার গায়ে। তবে এই সময় গায়ের জোর ওয়ালা ছেলেদেরই আমার ব্যক্তিগত ভাবে বেশী পছন্দ। ও নিজেও উঠে দাঁড়িয়েছে বিছানা থেকে। আমাকে জড়িয়ে ধরে ঠোঁটগুলো আমার ঠোঁটের উপর চেপে ধরে এক নিমেষে আমার মুখের ভেতর ওর জিভটা ঢুকিয়ে দিল। ওর লিঙ্গের ডগাটা উঁচিয়ে আছে। আমার নাভির ফুটোর ওপর ঘষা খাচ্ছে বার বার। আর ঠিক তার পরের মুহূর্তেই আমার কাঁধের ওপর শক্ত ভাবে চেপে বসল আরও দুটো গরম হাত। পিছন দিক থেকে আরেকটা শরীর আমাকে চেপে ধরেছে। পিঠের উপরের দিকে এক জোড়া গরম ভেজা ঠোঁট আর পাছার খাঁজের ঠিক মাঝে, পায়ু ছিদ্রের থেকে এক মিলি মিটার নিচে ধাক্কা মারল একটা খাড়া লিঙ্গ। ওরা দুজনে সাঁড়াশির মতন আমার নগ্ন নরম শরীরটাকে নিজেদের শরীর দিয়ে পিষে আছে। অমলের লিঙ্গটা মাঝে মাঝে একটু বেঁকে আমার যোনীদ্বারের মুখে ধাক্কা মারার চেষ্টা করছে। আমার যোনীদ্বারের মুখ থেকে নির্গত হওয়া রসে আমার যোনীমুখের চামড়া অনেক আগেই ভিজে পিছিল হয়ে গেছে, সুতরাং ওর লিঙ্গের সেই পিছিল পথ বরাবর প্রবেশ করে যোনীদ্বারের মুখে এসে ধাক্কা মারতে কোনও অসুবিধাই হচ্ছে না। রাজুর লিঙ্গটাও মাঝে মাঝে পাছার খাঁজের মধ্যে থেকে পিছলে নিচে নেমে আসছে, একবার যেন মনে হল আমার যোনীর ঠিক নিচে, ওদের লিঙ্গদুটো একে ওপরের সাথে ধাক্কা খেল। আবার পিছিয়ে গেল ওরা। মাগো, আমি পাগল হয়ে যাব। অমলের একটা হাত নির্মম ভাবে আমার স্তন গুলোকে পেষণ করা শুরু করেছে। আমার ফোলা ফোলা বোঁটাগুলো যে ওর খুব পছন্দ হয়েছে সেটা বুঝতে পারছি। মাঝে মাঝে নিজের আঙ্গুলে নিয়ে গায়ের জোড়ে চিমটি কেটে ব্যথা দিয়ে নিংড়ে নিতে চাইছে আমার বোঁটার স্বাদ। রাজুও থেমে নেই। কাঁধ থেকে হাত সরিয়ে আমার পাছার নরম মাংসের গোলা গুলোকে দুহাতে নিয়ে কচলে চলেছে মনের সুখে। মাঝে মাঝে আঙুল ঢুকিয়ে দিচ্ছে আমার সোঁদা নোংরা পাছার খাজে। ধাক্কা মারছে গিয়ে পাছার ফুটোর মুখে। কি করব বুঝতে পারছি না। শরীরটা আর নিজের বশে নেই। কিন্তু এখানে এসেছি অন্য উদ্দেশ্য নিয়ে। নিজের শরীর আর মনকে নিজের বশে রাখতেই হবে। নইলে কোনও লাভ হবে না। কিন্তু পারছি না যে, ওই তো আবার আমার যোনীর মুখে এসে একটা খাড়া হয়ে থাকা জিনিস ধাক্কা মেরে গেল, আর ঠিক সেই সময়েই পাছার খাজে ঘষে চলেছে আরেকটা শক্ত গরম জিনিস। কিছু বুঝে ওঠার আগেই আমাকে দুজনে চিত করে নোংরা মাটিতে শুইয়ে দিল।

ওরা দুজনে আড়াআড়ি ভাবে আমার দুপাশে শুয়েই আমার শরীরের ওপর আক্রমণ হানল। আমি আমার অবশ হাতদুটো মাথার উপর তুলে ধরে মাটিতে ফেলে রেখে আঁকড়ে ধরলাম খাটের একটা পায়া। ওদের হাতে ছেড়ে দিলাম আমার শরীরের সম্পূর্ণ অধিকার। যা পারে করে নিক নরম অসহায় শরীরটা নিয়ে। অমল শুয়েছে আমার ডান দিকে আর রাজু অন্য দিকে। দুই গালে দুটো গরম ঠোঁটের ছোঁয়া পেতেই আমার চোখ দুটো আপনা থেকে বুজে এলো। রাজু শুয়েই ডান হাত দিয়ে আমার একটা স্তনের ওপর দখল নিয়ে নিয়েছে। খুব জোড়ে না টিপলেও আমার স্তনের মাংসপিণ্ডটা যেন ওর গরম শক্ত কড়া পড়া হাতের ছোঁয়ায় গলে গেল। অমল বুঝলাম রাজুর থেকে ফোরপ্লেতে বেশী ওস্তাদ। ও জানে কি করে মেয়েদের উত্যক্ত করতে হয়। ও কিন্তু সরাসরি আমার স্তনের ওপর আক্রমণ করে নি। ওর বা হাতের আঙুলগুলো আমার কপালের উপর রেখে সুড়সুড়ি দেওয়ার মতন করে আলতো ভাবে আমার শরীরের ওপর থেকে বোলাতে বোলাতে নাভির নিচ অব্দি নিয়ে এলো। গালে নরম করে একটা চুমু খেল আবার। ফিসফিস করে বলল “তুমি কি সুন্দর। কত পরিষ্কার। তোমার গায়ের গন্ধ কি মিষ্টি। “ কাঁধের কাছে জমা ঘাম আলতো করে নিজের জিভ বুলিয়ে চেটে নিল। আপনা থেকে আমার মুখ দিয়ে উমম মতন একটা শব্দ বেড়িয়ে এসেছে। আমার বাম স্তনের বোঁটা রাজু মুখে নিয়ে চুষতে শুরু করে দিয়েছে। এত জোড়ে চুষছে যে দেখে মনে যেন আমার স্তনের বোঁটা থেকে দুধ বের করে নিয়ে আসবে। দুজনের শরীরের মাঝে আমার সারা তলপেট আর পা দুটো থরথর করে কাঁপতে শুরু করে দিয়েছে। ভেতরটা যে ভিজতে শুরু করেছে সেটা না বললেও চলে। ডান বগলের ঠিক মাঝে একটা খড়খড়ে স্পর্শ পেয়েই চোখ খুলতে বাধ্য হলাম। অমল নাকের ডগাটা আমার মসৃণ বগলের চামড়ার ওপর ঘষে ঘষে ঘ্রান নিচ্ছে সশব্দে। বলতে গেলাম “প্লীজ, সারাদিন স্নান করি নি। ওখানে নাক ঘষো না প্লীজ। “ কিন্তু আহ আহ করে দু তিনটে শব্দের বেশী কিছুই করতে বা বলতে পারলাম না। জিভ দিয়ে বুলিয়ে আমার নির্লোম বগলের ত্বকের উপর থেকে অমল সব ঘাম মুছে নিচ্ছে। বগলের নিচে স্তনের ফোলা জায়গায় একটা হালকা কামড় বসিয়ে ফিসফিস করে বলল “তুমি তো কামিয়ে রাখো সব জায়গা। রেজার নেই না এখন? বুঝেছি, তাই গুঁড়ি গুঁড়ি চুল উঠতে শুরু করেছে। “ লজ্জায় আমার কান লাল হয়ে গেল। সত্যি এই কদিন রেজার ছোঁয়ানো হয়নি শরীরে। বগল আর যোনীদ্বারের কুটকুট করাটা দেখে আগেই খেয়াল করা উচিত ছিল। আমি মিন মিন করে বললাম “রাজু রেজার দিয়েছে। আজ রাতে স্নানের সময় করে নেব।“ “খুব সুন্দর লাগবে তোমাকে তখন।“ বলেই আবার আমার বগলের ঠিক মাঝখানের ভেজা জায়গায় একটা চুমু খেল। ওর বা হাতটা ধীরে ধীরে আমার অন্য স্তনটার ওপর পেষণ শুরু করে দিয়েছে। কিন্তু ওর লকলকে জিভটা আমার গলার খাঁজে, বুকের খাঁজে আর বগলের খাঁজে ঘুরে ঘুরে বারবার ওর মুখের লালার একটা আস্তরণ বিছিয়ে দিচ্ছে ওই জায়গাগুলোতে। অমলের দেখা দেখি রাজুও একই রকম খেলায় মেতে উঠেছে আমার শরীরটা নিয়ে। কখনও বাম স্তনের ওপর ও জিভ বুলিয়ে দিচ্ছে। কখনও খামচে ধরছে আমার বাম স্তনটাকে। মুচড়ে ব্যাথা দিচ্ছে স্তনের শক্ত বোঁটায়। জিভ বুলিয়ে যাচ্ছে বগল আর বগলের পাশে কাঁধের ঘর্মাক্ত জায়গাগুলোতে। আলতো আলতো কামড় বসাচ্ছে স্তনের পাশে। আমার শরীরটা কখনও ডান দিকে মুচড়ে যাচ্ছে আরামে, কখনও বা বাম দিকে মোচড় খেয়ে উঠছে। কোমরটা যেন ধীরে ধীরে ব্যাথা করতে শুরু করে দিয়েছে এই কিছুক্ষনের সাঁড়াশি আক্রমণে। অমল আবার মাঝে মাঝে পেটের নরম মাংসগুলোকে ডলে ডলে আদর করে দিচ্ছে। নাভির ভেতরে ওর কড়া পড়া আঙুল ঢুকিয়ে সুড়সুড়ি দিয়ে দিচ্ছে থেকে থেকে। আমার নির্লোম বা বলা ভালো ছোট ছোট চুল ওটা যোনীর মুখে প্রথম হাত পড়ল রাজুর। যোনীর লম্বা চেরার মুখে বেশ কয়েকবার নিজের মধ্যাঙ্গুলি দিয়ে ঘষে জলের তীব্রতা আরও বাড়িয়ে দিয়ে শেষে নিজের আঙুলটা আমার মুখের সামনে এনে তুলে ধরল। “অমলদা ও রেডি। তুমিই আগে নাও। “

আমি সাপের মতন কামনায় হিস হিস করে উঠলাম। “ এক এক জন করে অল্প অল্প করে করো। একবারেই সব শেষ করে দিও না। তাহলে অনেকক্ষণ আরাম নিতে পারব আমরা। “ অমল আমার ডান পাশ থেকে উঠে আমার ভাঁজ হয়ে খুলে থাকা দুপায়ের ফাঁকে নিজের উরু সন্ধি স্থাপন করল। “আস্তে আস্তে ঢোকাবো, লাগলে বলে দিও। একবার পুরোটা ঢুকে গেলে তখন জোড়ে জোড়ে করব। আর যদি আমার বেরনোর সময় হয় তখন বের করে নেব যাতে পরের বার আরও করতে পারি। ঠিক আছে?” ও যেন নিজের কর্মসূচি বাতলে দিল আমাকে এই খেলা শুরু করার আগে। আমি হ্যাঁ বলার আগেই কিন্তু আমার যোনী ছিদ্রে গিয়ে চাপ দিল ওর ফোলা লিঙ্গের ডগা। আমিও ভেবেছিলাম এত মোটা জিনিস একবারে ঢুকতে গেলে একটু না একটু ব্যথা তো লাগবেই। কিন্তু আশ্চর্যভাবে অনুভব করলাম যে কোনও ব্যাথাই অনুভব করতে পারলাম না। উল্টে আমার ভেজা তৃষ্ণার্ত যোনী ছিদ্রটা যেন নিজে থেকেই প্রসারিত হয়ে ওর খাড়া লিঙ্গটাকে নিজের ভেতরে গিলে নিল। এত সহজে যে আমার ভিতরে ঢুকে যাবে সেটা বোধহয় ও নিজেও বুঝতে পারে নি। “তুমি বেশ স্লিপারি হয়ে গেছ ভিতরে ভিতরে।“ ও নিজের কোমরটা আস্তে আস্তে কয়েকবার ভিতর বাইরে করে আস্তে আস্তে ধাক্কার জোর আর সেই সাথে গতি বাড়াতে শুরু করে দিয়েছে। ভেতরটা আমার সত্যি ভিজে গেছে। শুরু থেকেই ওর লিঙ্গের সাথে ঘর্ষণের ফলে একটা জোরালো ফ্যাচ ফ্যাচে শব্দ বেরোতে শুরু করে দিয়েছে যোনীর সোঁদা মুখ থেকে। সচরাচর এরকম শব্দ বেরোয় অনেকক্ষণ ধরে টানা মৈথুন করার পর। প্রায় মিনিট দুয়েক টানা একই গতিতে মন্থন করার পর ও ধাক্কার জোর আরও বাড়িয়ে দিল। এদিকে আমার যোনী রসের জৈবিক গন্ধ মোঃ মোঃ করতে শুরু করে দিয়েছে ইতিমধ্যে। গন্ধটা যে ওদের নাকেও এসেছে সেটা বুঝতে পারলাম রাজুর পরের কথায়। “খুব ঝাঁঝালো গন্ধ তো গো তোমার জলের।“ না এই কথা শোনার পর আর আমি নিজেকে ধরে রাখতে পারি নি। আমার তৃপ্তির শেষ সীমায় পৌঁছে দাঁড়িয়ে ছিলাম। এই একটা কথাতেই সুখের তীব্রতা আমাকে গ্রাস করল। চোখের সামনে অন্ধকার হয়ে গেল সব কিছু কয়েক মুহূর্তের মধ্যে। সম্পূর্ণ চেতনা হারিয়ে ফেলেছিলাম অরগ্যাস্মের ধাক্কায়। ধীরে ধীরে চেতনা ফিরে আসতেই মনে হল গন্ধটা আরও তীব্র হয়ে উঠেছে, সেটা স্বাভাবিক, আমার বয়ফ্রেন্ডও আমার অরগ্যাস্ম পাওয়ার পর নিচে মুখ লাগিয়ে জিভ দিয়ে চেটে দেয় আমার যোনীর মুখ। এই নোংরা গন্ধটা নাকি ওকে খুব উত্তেজিত করে। যোনীর ভেতরের জল ধীরে ধীরে টেনে যাচ্ছে, এরপর আবার নতুন করে জল বেরনো শুরু হবে একটু পর থেকে। ফ্যাচ ফ্যাচ শব্দটা কমে এলেও ঠাপ ঠাপ শব্দটা আরও তীব্র হয়ে উঠেছে। ভীষণ জোড়ে জোড়ে ওর চুলে ঢাকা কুঁচকিটা এসে আমার যোনীদেশের সাথে ধাক্কা খাচ্ছে। ওর টাইট হয়ে থাকা বড় বীচির থলিটাও দুলতে দুলতে এসে আমার পাছার খাঁজের তলার দিকে ধাক্কা মেরে আমাকে সুড়সুড়ি দিয়ে চলেছে প্রতিটা ধাক্কার সাথে। একটা অরগ্যাস্ম পাওয়ার পর অনেকটা স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে এসেছি আমি। রাজু বারবার স্নেহ ভরে আমার কপালের ঘাম মুছিয়ে নিয়ে চুমু খাচ্ছে কপালে গালে। আমি অমলের ঘর্মাক্ত কপাল থেকে ঘাম মুছিয়ে নিয়ে ওকে বললাম “তুমি আরাম পাচ্ছো তো? না কি স্বার্থপরের মতন আমি একাই আরাম নিয়ে চলেছি।“ ও কথা বলার অবস্থায় নেই। শুধু মাথা নাড়িয়ে বুঝিয়ে দিল হ্যাঁ। আমি নখরা করে ওকে ন্যাকা ন্যাকা গলায় বললাম “তোমরা শুনেছো বোধহয়, আরও দুজন ডাক্তারের খোঁজ করছে অরূপদা। ওরা এসে গেলেই আমি চলে যাব। “ রাজু পাগলের মতন আমাকে একটা স্মুচ করে বলল “কেন চলে যাবে? আমরা কি তোমাকে খারাপ রেখেছি। সবাই বলছে যে তোমরা খুব ভালো।“ অমলের প্রতিটা ধাক্কার সাথে হাঁপ ধরাটা যেন আরও বেড়ে যাচ্ছে। যোনীপথটা এখন আঠালো হয়ে রয়েছে আমার। কিন্তু তাও বুঝতে পারলাম যে ও ওর অরগ্যাস্মের থেকে অনেক দূরে। এই বয়সেই অনেক কন্ট্রোল নিজের শরীরের গতি বিধির ওপর। যখনই ওর মনে হচ্ছে যে ওর কাম বেগ বাড়তে শুরু করছে তখনই সাথে সাথে ও গতি কমিয়ে নিচ্ছে, ধাক্কার তীব্রতা যদিও একই রকম আছে। আমি আরও মিন মিন করে আহ আহ শব্দ করতে করতে জিজ্ঞেস করলাম “আর তোমাদের মতে?” অমল এইবার আর মুখ না খুলে পারল না। “উফফ তোমরা এখন আমাদের একজন। চলে গেলে আটকাতে পারব না। কিন্তু দুঃখ পাব।“ আবার মুখ বন্ধ করে মন্থন করতে লাগলো। আমি গলার স্বরে যতটা আন্তরিকতা নিয়ে আসা যায় এনে বললাম “আমারও কিন্তু তোমাদের ছেড়ে চলে যেতে খুব কষ্ট হবে। আর তাছাড়া তোমরা আজ আমাকে যা আদর করছ এরকম আদর আগে কেউ কোনও দিনও আমাকে করে নি। তোমরা কোলকাতায় গেলে আমার সাথে দেখা করবে তো? চিন্তা নেই পুলিশের হাতে ধরিয়ে দেব না। “

রাজু বলল “সোনা দিদি আমার , আমাদের দুজনের খুব একটা কলকাতা যাওয়া হয়ে ওঠে না। আলিদা মাঝে মাঝে যায় যদিও।“ আমি অবাক হয়ে বললাম “কি বল? তোমরা কোলকাতায় জাওনি কোনও দিনও? আমাকে পছন্দ হয়েছে তোমাদের? (ওদের উত্তরের অপেক্ষা নে করেই বললাম) ওখানে আমার মতন অনেক সুন্দরী দিদি পাবে।“ একটু কাঁপা কাঁপা হাঁপ ধরা গলায় বলতে বাধ্য হলাম শেষের কথাগুলো। কারণ নিচে ধাক্কার জোর বেশ বেড়েছে। আমি বললাম “ এই যে এরা সবাই মিলে কোলকাতায় গেল ফিল্ডে, এদের সাথেও তো তোমরা যেতে পারতে। তারপর কাজ হয়ে গেলে আমার সাথে একটু সময় কাটিয়ে রিল্যাক্স করে (রিল্যাক্স কথাটা চোখ মেরে বললাম) আবার ফিরে আসতে। “ রাজু বলল “ ওরা কোলকাতায় গেছে কাজে। কাজ শেষ হলেই ওদের পিছনে পুলিশ লেগে যাবে। আর কাজ শেষ হবার আগে ওরা কারোর সাথে দেখা করতে পারে না। কারণ গোপন ভাবে থাকতে হয়। আমি বা হাতটা মাথার উপর থেকে নামিয়ে ওর খাড়া লিঙ্গটা হাতে নিয়ে ধীরে ধীরে হস্ত মৈথুন করা শুরু করলাম। আমার নগ্ন কাঁধে একটা চুমু খেয়ে ও বলল “ তোমার হাতে জাদু আছে? তুমি চলে গেলে সত্যি কষ্ট পাব।“ আমি চোখ মেরে বললাম “কিন্তু তোমাদের তো এখানে হাই ডিম্যান্ড। বিনীতাদি আছে...” রাজুর চোখ আরামে বুজে গেছে। এই কামনার নেশা মদের নেশার মতই ভয়ানক, কে যে মুখ থেকে কি বলে কিছুই খেয়াল থাকে না। রাজু প্রায় যেন খেঁকিয়ে উঠল “ দূর তুমি কত সুন্দর। ও শুধু জানে ভেতরে নিয়ে ঠাপ খেতে। (অবশেষে ছেলেটার মুখ থেকে কামনার বশে একটা খারাপ কথা বের করতে পেরেছি।) ভারী পাছাটা নিয়ে যখন আমার উপর লাফায় মনে হয় পেট ফেটে যাবে।“ এটা মন্দ বলে নি বিনীতাদির পাছাটা বেশ ভারী আর গোল। অনেক ছেলের কাছেই লোভনীয়। কিন্তু মনে হল রাজুর আমার মতন স্লিম মেয়ে পছন্দ। অমল হাঁপ ধরা গলায় বলল “আমার তো কোমরে ব্যাথা হয়ে যায় যখন বিনীতাদি ওপরে বসে লাফায়।“ আমার ভেতরে আবার জলের সমাগম হয়ে গেছে। এখন ভেতরে জলের প্রচণ্ড প্রেসার। আবার ফিরে এসেছে সেই নোংরা গন্ধটা আর সেই সাথে ফিরে এসেছে অশ্লীল ফ্যাচ ফ্যাচ শব্দটা। ওর লিঙ্গের মুখটাও যেন আগের থেকে অনেক ফুলে উঠেছে। আমি প্রায় অরগ্যাস্ম পেতে যাচ্ছিলাম, ঠিক এমন সময় ও বের করে নিল। “ এর পর করলে আমার বেড়িয়ে যাবে।“ টলতে টলতে ও আমার পাশের শুয়ে পড়তেই রাজু উঠে আমার দু পায়ের ফাঁকে নিজেকে সেট করে নিয়ে এক ধাক্কায় আমার হাঁ হয়ে থাকা যোনীর ভেতর নিজের পুরো লিঙ্গটা ভরে দিল। আঁক করে একটা শব্দ বেড়িয়ে এল মুখ থেকে। রাজু মাঝারি গতিতে আর মাঝারি তীব্রতার সাথেই মৈথুন করে চলেছে। অমল হঠাত নিজেকে বের করে নেওয়ার ফলে যে হতাশা এসেছিল সেটা কেটে গিয়ে আবার ধীরে ধীরে অরগ্যাস্মের দিকে এগিয়ে চলেছি দ্রুত বেগে। বুঝতে পারছি আপনা থেকেই আমার যোনী পথের পিছল দেওয়ালগুলো রাজুর লিঙ্গটাকে কামড়ে ধরেছে। রাজুও যে প্রচণ্ড রকম সুখ পাচ্ছে সেটা ওর মুখের অভিব্যক্তি দেখেই বুঝতে পারছি। একবার ডান পাশে তাকিয়ে দেখলাম অমলের ভেজা চকচকে মোটা লিঙ্গটা সটান আকাশের দিকে দাঁড়িয়ে কেঁপে কেঁপে উঠছে বারবার। ওর লিঙ্গের ওপর হাত দিয়ে আস্তে আস্তে ওটার পিছল গা বেয়ে ওঠা নামা করতেই ও আমাকে থামিয়ে দিল। “এখন কিছু করো না। তাহলে তোমার হাতেই হয়ে যাবে।“ না এই অবস্থায় রস ভঙ্গ করে কোনও লাভ নেই। ওর লিঙ্গের মুখে একটা আলতো টোকা মেরে হাত সরিয়ে নিলাম।

[/HIDE]
 
[HIDE]


24

রাজুর গতি একই রকম কিন্তু আমি এখন ফোকাস করেছি ওর লিঙ্গের ঘর্ষণের ওপর। খুব তাড়াতাড়ি না হলেও একটা তীব্র সুখের ধাক্কা আমার ভেতরটা আবার ভিজিয়ে দিয়ে আমাকে নিঃস্ব করে চলে গেল। একটু স্বাভাবিক হওয়ার পর ওদের বললাম “ কলকাতা থেকে ফিরে আসার পর আবার ওদের কাছে গিয়ে নালিশ করবে না তো যে আমি তোমাদের সাথে এইসব করেছি?” অমলের গলার স্বর আগের থেকে এখন অনেক স্বাভাবিক। বলল “নালিশ করার কি আছে। এখানে কেউ কাউকে পছন্দ করলে আর সে যদি উল্টে তাকে পছন্দ করে তো কোনও কিছু করাই দোষের নয়। ওরা কলকাতা থেকে ফিরে আসার পরও তুমি আমার বা রাজুর কাছে আসতে পারো আদর খেতে। বিনীতাদি এই দিক থেকে খুব ভালো। কিছু বারণ করবে না।“ হঠাত বলে উঠলাম “আচ্ছা রত্নাদি মানে যে আমাকে এখানে নিয়ে এসেছিল তাকে দেখছি না তো অনেক দিন।“ রাজু আমার ওপর ঝুঁকে পড়ে কোমর নাচাচ্ছিল, সেই অবস্থাতেই হাত দিয়ে জানলার বাইরে দেখিয়ে বলল “ ক্যাম্পের একদম শেষের দিকে দেখবে দুটো ঘর আছে। তার একটাতে রত্নাদি আর ওর স্বামী বন্দী আছে।“ আঁতকে উঠে উঠলাম “বন্দী কেন?” রাজু বলল “ছাড়ো না গদ্দারদের কথা বলে মুড নষ্ট করে কি লাভ?” আমি চুপ মেরে গেলাম। অমল বলল “ ওই ঘর দুটো আমাদের জেল খানা। রত্নাদি আর ওর বর আগে আমাদের মেম্বার ছিল। একদিন জানতে পারলাম ও আমাদের শরীর বেঁচে রিস্ক নিয়ে আনা টাকা থেকে ভাগ মারছে। বেশ কিছু টাকা হাত করে সরে পড়ার প্ল্যান ছিল ওদের। হাতে নাতে সব ধরা পড়ে যায়। তারপর থেকে টাকার হিসাবও খুব কড়াকড়ি হয়ে গেছে। এখন দু একজন কে নিয়ে আসার জন্য রত্নাদিকে শুধু পাঠানো হয় বাইরে। ওর বর এখানেই আছে আর বিনা কাজে আমাদের কষ্টার্জিত পয়সায় খেয়ে খেয়ে পড়ে পড়ে ঘুমায়। “ একটু থেমে বলল “টাকা মারাটা হয়ত আমরা মেনেও নিতাম। কিন্তু একটা মেয়ের জান গেছে ওর বিশ্বাসঘাতকতার জন্য। সবার প্রিয় ছিল। সেটা আমরা কেউ মেনে নিতে পারি নি। “

যাক মাথা পরিষ্কার করে ভেবে নিলাম দুটো জিনিস পরিষ্কার হল। এক , ওরা কোলকাতাতেই গেছে। আর দুই, রত্নাদি এখন কোথায়, আর, কেন ওর ওপর বাকিদের এত রাগ। এই বিষয়ে আরেকটা কথা এখনও জানা বাকি যেটা সেই প্রথম দিন থেকে আমার মাথায় ঘুর ঘুর করছে। আমার জল ঝরা আবার শুরু হয়েছে। চোখ বন্ধ করে রাজুর লিঙ্গের ধাক্কা অনুভব করছি অন্তর থেকে। মাঝে মাঝে শয়তানি করে রাজু আমার স্তনদুটোকে দুহাতের মুঠোয় নিয়ে আদর করে কচলে দিচ্ছে। মাঝে মাঝে ঘাড় নামিয়ে চুষে দিচ্ছে আমার কোনও একটা বোঁটা। মাঝে মাঝে আবার স্তন ছেড়ে আমার গলার খাঁজ বা বগলের খাঁজে মুখ নিয়ে গিয়ে জমা ঘামগুলো নিজের জিভ বুলিয়ে পরিষ্কার করে দিচ্ছে। এত সুখের সাগরে ভেসেও কোনও মতে গোঙানির মতন স্বরে বলে ফেললাম আমার রত্নাদিকে নিয়ে পুষে রাখা শেষ প্রশ্ন, “আচ্ছা অতগুলো টাকা দিয়ে ওকে তাহলে কেনই বা পাঠিয়েছিলে কোলকাতায়। আর সোনা কিনে আবার সেই সোনা বেচেই বা কি লাভ?” অমল আমার ঠোঁটের ওপর নিজের মহুয়ার স্বাদ আর গন্ধ মাখা জিভটা বুলিয়ে দিয়ে বলল “তোমার সাথে ওর আলাপ হওয়ার পর আর যখন জানতে পারলাম যে তুমি ডাক্তার, আর কাটা ছেঁড়া করতে ওস্তাদ, তখনই তোমাকে এখানে নিয়ে আসার প্ল্যান হয় আমাদের। অবশ্য তুমি মেয়ে না হলে নিয়ে আসা হত না। (এই কথাটা আমার জানা, কিন্তু পরেরটা নয়) ও সোনার দোকানে গেছিল অন্য কাজে।“ একটু থেমে বলল “ ও সেদিন কত টাকার গয়না কিনেছিল জানো? দুই লাখ টাকার। (দুটো মোটা মোটা আঁটসাঁট টাকার বান্ডিল ও বিলে পাঠিয়েছিল সেটা আমার খেয়াল আছে) পূজার আগে ওই দোকানে কেমন ভিড় হয় দেখেছো তো? অত ব্যস্ততার মধ্যে অতগুলো নোট চেক করার সময় কেউ পাবে না। হয়ত দু একটা নোট চেক করেই ছেড়ে দেবে। ওই দু লাখের মধ্যে অনেক জাল নোট ছিল। প্রায় পঞ্চাশ হাজার টাকার জাল নোট ছিল। আমরা জাল নোটের ধান্দা করি না। কিন্তু কিছু ভাবে ওই টাকাগুলো এসেছিল কোনও একটা লুট থেকে। আমরা দোকানের ব্যস্ততার সুযোগ নিয়ে খাঁটি সোনার জিনিস কিনে টাকাগুলো বের করে দিলাম। আর এরপর গয়না গুলো বেঁচে পুরো টাকাটা আবার পেয়ে গেলাম, আর এইবারে কোনও জাল নোট নেই। আর আরেকটা লাভ হয়েছে, সোনার দাম সামান্য হলেও বেড়েছে এই কদিনে। আর জমিদার বাড়ির গিন্নী সাজতে তোমাকে যেদিন নিয়ে আসা হয়েছে সেই দিন রত্নাদিকে সে গুলো গায়ে চড়িয়ে বসতেই হত। নইলে তুমি সন্দেহ করতে পারতে।“ যাক এইবার মোটামুটি বুঝতে পেরেছি। আবার ঘর্ষণে মন দিলাম।

আমি রসিকতা করে ওদের বললাম “আমি কি তোমাদের সুখ দিতে পারছি?” দুজনে প্রায় একই সাথে বলে উঠলো “কি বলছ তুমি? এমন অভিজ্ঞতা আমাদের কোনও দিনও হয় নি। আর যা সুখ পাচ্ছি না সেটা বলে বোঝাতে পারব না। এরপর শুলে যা ঘুমটা হবে না...“ আমি বললাম “আমার একটা সুপ্ত বাসনা আছে। এখান থেকে যাওয়ার আগে তোমাদের হয়ে অন্তত একটা লুট করে দিয়ে যাব। শুনেছি অরূপদাকে তোমরা বেস্ট প্ল্যানার ভাবো। ধরও ওরই নির্দেশে গ্রিন হোটেল বা কোথাও গিয়ে লুট করব। (ইচ্ছে করেই স্টার হোটেলের নামটা নিলাম না। কারণ ওটা কোলকাতায়। আমি কোলকাতায় গিয়ে লুট করতে চাইছি শুনলে ওদের মনে স্বাভাবিক কারনেই সন্দেহের উদ্রেক হবে আর আমাকে বিশ্বাসঘাতক ভেবে বসলে তো কথাই নেই। বলে চললাম) তবে আমার সাথে বিশ্বস্ত কাউকে চাই। এসব কাজে আমার কোনও অভিজ্ঞতাই নেই। আর তাছাড়া জীবনে কোনও দিন বন্দুক ধরি নি। “ কোমরের কাছে ঘষা লাগতে চোখ মেলে দেখলাম অমল নিজের হাতে নিজের খাড়া লিঙ্গটা নিয়ে হস্ত মৈথুন শুরু করে দিয়েছে। বোধহয় উত্তেজনা কমে আসায় ওটা নেতিয়ে পড়তে পারে তাই ওটাকে আগে ভাবে উত্তেজিত করে রাখছে। আমি ওর দিকে ঘাড় বেঁকাতেই ও নিজে থেকেই আমার ঠোঁটের কাছে নিজের ঠোঁটটা নিয়ে এসে একটা তীব্র স্মুচ করল। আমার স্তনদুটোকেও একবার কচলে দিল আদর করে। বললাম “আমি আদর করে দিচ্ছি। তুমি শক্তি বাঁচিয়ে রাখো।“ ওর লিঙ্গের চামড়াটা এখন অনেক শুঁকনো হয়ে উঠেছে। মুখ থেকে একটু থুতু হাতের চেটোয় নিয়ে হাতের চেটোটা পিছল করে ওর লিঙ্গের গা বরাবর ঘষতে শুরু করে দিলাম। ওরটা নেমে গেলে আমারও খারাপ লাগবে। আমার বয়ফ্রেন্ড ইত্যাদির চিন্তা মাথা থেকে অনেক আগেই উড়ে গেছে। লিঙ্গের ডগাটা যতবার হাতে নিয়ে আস্তে করে কচলে দিচ্ছি ততবারই ওর মুখ থেকে একটা কামনা মেশানো আর্তনাদ বেড়িয়ে আসছে। রাজু কিন্তু একই গতিতে ধাক্কা মেরে চলেছে আমার ভেজা যোনীর দেওয়ালে। এই ছেলেটার কন্ট্রোল অমলের থেকেও বেশী বলে মনে হল। কোমর নাড়াতে নাড়াতেই বলল “অরূপদাকে বলে দেখতে পারো। গ্রিন হোটেলে মাঝে মাঝেই আমাদের যেতে হয়। আমিও গেছি কয়েকবার। তুমি রাজি থাকলে অরূপদার সাথে আমিও থাকবো।“ আমি আরেকটা অরগ্যাস্মের দিকে এগিয়ে যাচ্ছি, এখন কথা বলতে ইচ্ছে হয় না, শুধু চোখ বুজে ঘর্ষণ অনুভব করতে ইচ্ছে করে, কিন্তু না এই মুহূর্তেই এই কথাটা না বললে দেরী হয়ে যাবে। “তুমি থাকলে আবার অরূপদাকে কষ্ট দিয়ে কি লাভ?” ও বলল “ অরূপদা নিজে কিছু প্ল্যান করলে সেখানে ও নিজেই থাকে। আর গ্রিন হোটেলে ওর একজন এজেন্টও থাকে। ঠিক দালাল নয়। তবে লোকটা খবর আদান প্রদান করে। আচ্ছা একটু জোড়ে করব এইবার?” আমি চোখ বুজেই ওর কথা শুনতে শুনতে এই মিলনের মুহূর্তটা উপভোগ করছিলাম। ওর কথায় চোখ খুলে মাথা নাড়িয়ে বুঝিয়ে দিলাম হ্যাঁ। ও ধাক্কা আর গতি বাড়িয়ে দিল। আবার শুরু হল সেই ঠাপ ঠাপ শব্দ। লিঙ্গের মুখটা গিয়ে প্রচণ্ড বেগে আছড়ে পড়তে শুরু করেছে আমার যোনীর শেষ প্রান্তে।

আবার মুখ খুলল ও। “ওই লোকটাও থাকে ওখানে।“ বললাম “কে ওই লোকটা?” ও বলল “জানি না।“ একটু থেমে দম নিয়ে বলল “ অনেকে আগেও দেখেছে ওই লোকটাকে ওই হোটেলে। আমিও দুবার দেখেছি। তবে এইবার সীমাদি বলছিল যে অরূপদা ওই লোকটাকে হোটেলের ভেতর আমাদের সিকিওরিটির যাতে কোনও সমস্যা না হয় সেই জন্য বোধহয় রেখেছে। কারণ...” ও বেশ কয়েকটা বড় বড় জোরালো ধাক্কা মেরে আমাকে অভুক্ত রেখেই নিজেকে বের করে নিল আমার ভেতর থেকে। ও উঠে যেতেই অমল ওর জায়গা নিল। রাজু ওর খাড়া লিঙ্গটা নিয়ে সেটাকে কোমরের ওপরে এদিক ওদিক দোলাতে দোলাতে হাঁপাতে হাঁপাতে গিয়ে ঘরের এক কোণে রাখা মাটির পুরনো কুঁজোটা থেকে নিজের গ্লাসে কিছুটা জল ঢেলে নিয়ে ঢক ঢক করে গলায় ঢেলে দিল। আমারও গলা শুঁকিয়ে গেছে কামনায়। চারটা অতি তীব্র অরগ্যাস্ম আমার শরীরটাকে অবশ করে দিয়ে গেছে। আরেকটা বোধহয় খুব শিগগির পাবো। অমল আগের মতই ধাক্কা মারতে শুরু করে দিয়েছে। যোনীর মুখটা যে একদম খুলে গেছে সেটা বুঝতে অসুবিধা হয় না। কারণ ওর মোটা লিঙ্গটা এত তীব্র বেগে ভেতর বাইরে করে চলেছে, কিন্তু তাতেও যোনীর চাপা মুখে কোনও টানই অনুভব করতে পারছি না। ফিরে আসার সময় গ্লাসে কিছুটা মহুয়া ঢেলে নিয়ে এসে মাটিতেই বসে পড়লো। ওদের শরীরের ধাক্কা খেতে খেতে যে অনেকটা পিছিয়ে গেছি সেটা এতক্ষনে টের পেলাম। হঠাত মাথার ওপর কিছু একটা শক্ত জিনিসের আঘাত পেলাম। না ব্যাথা তেমন পাই নি। কিন্তু হাত তুলে ধরে বুঝলাম যে পেছতে পেছতে খাটের একটা পায়ার সামনে গিয়ে পৌঁছেছি। এতক্ষনে সে খেয়াল হল। অমল নিজেকে আমার থেকে বের করে নিতে যাচ্ছিল যাতে আমি আবার নেমে আসতে পারি কিছুটা, কিন্তু আমিই চোখের ইশারায় ওকে থামিয়ে দিলাম। আমি নিজের দুটো মাথার ওপর রেখে টানটান করে খাটের পায়াটা চেপে ধরে নিজের মাথাটাকে ওটার সাথে ধাক্কা খাওয়া থেকে আঁটকে রাখলাম। রাজু বলল “ তোমার এই জায়গাটা কি সুন্দর। “ আমার বা দিকের নগ্ন বগলে হাত বুলিয়ে কথাটা বলল । অমল বলল “এখানে সব থেকে সুন্দর। তোমার ঘরে যে দিদি থাকে তারটাও সুন্দর কিন্তু তোমার মতন নয়। কোনও দাগ নেই তোমার ওখানে। এখানে তো বিনীতাদি ছাড়া প্রায় সবারই চুলের ভর্তি। কিন্তু তোমার ঘরে যে থাকে তারটাও তোমার মতন সুন্দর নয়। আমি দেখেছি, ওর ওখানে কালচে কিছু দাগ আছে। কিন্তু তোমারটা একদম ফর্সা। “ অদিতির বগলে যে কালচে দাগ পড়েছে সেটা আমিও দেখেছি। সেটা স্বাভাবিক ভাবেই পড়ে মেয়েদের ওখানে। আমরা তো আর ফিল্ম আর্টিস্ট নই যে সব থেকে মূল্যবান হেয়ার রিমুভাল ক্রিম ব্যবহার করতে পারব সব সময় বা সপ্তাহে তিন দিন নামী দামী পার্লারে গিয়ে বার বার অয়াক্স করিয়ে আসব, তাই আমাদের ওখানে দাগ পড়াটা স্বাভাবিক। রাজু একবার ঝুঁকে আবার চেটে দিল আমার নোংরা বগলতলির জায়গাটা। ও মুখ সরাতেই অমল নিজের কোমরের ধাক্কা না থামিয়েই ঝুঁকে সামনের দিকে নেমে এসে আমার ওই রাজুর মুখ দেওয়া বগলের চামড়াতেই নিজের জিভ লাগিয়ে একবার লম্বালম্বি ভাবে বুলিয়ে দিল।

রাজুর নিঃশ্বাস প্রশ্বাস আগের থেকে অনেকটা স্বাভাবিক হতেই ও নিজের আগের কথার খেই ধরেই বলে চলল “ আসলে যা বুঝেছি লোকটা হোটেলের বাকি লোকের সাথে মিশে থাকে। সীমাদি বলছিল যে আহত হওয়ার পর ও যখন পালিয়ে ঘর থেকে বেড়িয়ে আসছিল তখনই ওই লোকটাকে দেখেছে দরজার বাইরে রুম বয়ের ইউনিফর্মে দাঁড়িয়ে থাকতে। লোকটা ওকে আটকায় নি। সবই অরূপদার ব্যাকআপ প্ল্যান যাতে আমাদের কেউ ধরা না পড়ে।“ অমলের ধাক্কার জন্য গলা স্থির রাখতে পারছি না কিছুতেই। উহ আহ শব্দ ক্রমাগত বেড়িয়ে চলেছে। আর তার সাথে ওদের ক্রমাগত পেষণ আমার স্তনের ওপর। কোথায় ফোকাস করব বুঝে উঠতে পারছি না। অরগ্যাস্ম ঘনিয়ে আসছে আবার। তাও দম চেপে বললাম “হতে পারে ওখানকার বেয়ারা।“ না আর বেশী কিছু বলতে পারলাম না। মাথায় ব্যাথা লাগের চিন্তা ভুলে খামচে ধরেছি অমলকে নিজের বুকের সাথে। আমার শরীরের ভেতর থেকে যেন লাভা বেরোচ্ছে। আমার জল খসার পর অমল নিজেকে আমার ভেতরে রেখেই আমার কোমর ধরে টানতে টানতে আমাকে খাটের থেকে দূরে সরিয়ে আনল। না আর বেশী নিতে পারব না। বললাম “এইবার উঠলে প্লীজ ঢেলে দিও। আর পারছি না। এরপর আবার রাজু আমাকে নেবে।“ অমল ওর মন্থন যেন তীব্রতার একেবারে শেষ সীমায় নিয়ে গিয়ে পৌঁছে দিল এক মুহূর্তের ভেতর। কিন্তু ওর এখন আর বেগ উঠছে না। হাঁপিয়ে চলেছে। মুখ থেকে পাশবিক শব্দ আসছে। গায়ের ওপর ঝরে ঝরে পড়ছে ওর গায়ের ঘাম। কিন্তু না ওর কিছুতেই বেগ আসছে না। আমার ভেতরে জলের স্রোত কমতে না কমতেই এত তীব্র ধাক্কায় শরীরটা যেন বেঁকে গেল। দু হাত দিয়ে মাটির ওপর কয়েকবার বাড়ি মারলাম জোড়ে জোড়ে। মুখ থেকে আপনা থেকে যেটা বেরোচ্ছে সেটাকে শীৎকার না বলে যথার্থ অর্থে চিৎকার বলা যেতে পারে। আমার মুখ এদিক ওদিক ঘুরে চলে ক্রমাগত। সহ্য করতে চাইছি ওর মন্থনের তেজ। ও আমার শরীরের ওপর নিজের ঘর্মাক্ত শরীরটাকে চেপে আমাকে পুরো জড়িয়ে ধরেছে। কোমরটা ড্রিলিং মেশিনের মতন বারবার ভেতরে এসে ধাক্কা মারছে। ওর মুখটা আমার ঘামে ভেজা গলার খাঁজে চেপে রেখেছে। হাত দুটো পিঠের নিচ দিয়ে নিয়ে গিয়ে মাথার পেছনের চুলের গোছা নিজের হাতের মুঠোয় নিয়ে টেনে চেপে ধরেছে। একটু একটু করে যেন আবার আমার শরীরটা ঘষটাতে ঘষটাতে পিছিয়ে চলেছে মাটির ওপর দিয়ে। ওর ধাক্কার যেন কোনও বিরাম নেই। দুজনের শরীর দুজনের শরীরের ঘামে ভিজে একাকার। ওর লিঙ্গটা ফুলে উঠেছে। পাশ থেকে রাজু যেন কিছু একটা বলল। কানেই ঢুকল না আমার। না চাইতেও আরেকটা অরগ্যাস্ম পেয়ে গেলাম। যোনীর ভেতরটা গরম হয়ে ওর লিঙ্গের ওপর যেন দাঁত বসিয়ে দিয়েছে। না এই চাপ ও নিতে পারে নি। গলার নিচে যেন দাঁত বসিয়ে দিল। হড়হড় করে ঢেলে দিল নিজের বীর্য আমার শরীরের গভীরে। বীর্য ঢালার সময়ও ওর শরীরটা থামেনি। বারবার আগু পিছু করে ধাক্কা মেরে চলেছে আমার যোনীগুহার শেষ সীমায়। আমি নিস্তেজ। ও আস্তে আস্তে থেমে গেল। সময় নষ্ট না করে হাঁপাতে হাঁপাতে উঠে গেলো আমার উপর থেকে।




[/HIDE]
 
[HIDE]

25

রাজুর দেখলাম ঘেন্না বলে কোনও ব্যাপার নেই। আমি ভেবেছিলাম ও হয়ত আমাকে বলবে ধুয়ে নিতে। কিন্তু ও আমাকে সে সুযোগ দিল না। আমার খোলা পা দুটো হেঁচড়ে মাটির ওপর দিয়ে টানতে টানতে আবার খাটের থেকে কিছুটা দূরে নিয়ে গিয়েই আমার পা দুটো ওর ঘাড়ের ওপর তুলে দিয়ে এক ধাক্কায় নিজের শক্ত লিঙ্গটা আমার ভেতরে ঢুকিয়ে দিল। বুঝতে পারলাম আমার শরীরের রস শুধু নয়, এখন ওর লিঙ্গটা অমলের বীর্যেও স্নান করে নিয়েছে। আমার যোনীর ভেতরটা ভীষণ আঠালো হয়ে গেছে শেষ কয়েক মুহূর্তে। আর তাই ঘর্ষণের তীব্রতা যেন আরও বেশী উপভোগ করছি। কিন্তু সত্যি বলতে শরীরে আর জোর নেই। যোনীপথ জৈবিক প্রক্রিয়াতেই আবার জেগে উঠেছে (এটা মেয়েদের একটা অ্যাডভান্টেজ) কিন্তু আর নিতে পারছি না। সত্যি সত্যি চোখে সরষে ফুল দেখছি। রাজু দাঁত চেপে ধাক্কা মারতে মারতে বলে চলেছে “না ওখানকার বেয়ারা নয় মনে হয়। কারণ আমরা যতবার দেখেছি তত বারই দেখেছি সাধারণ পোশাকে। কিন্তু লোকটা বহুরূপী। আমার ধারণা কোনও বিপদের আঁচ পেলেই লোকটা ছদ্মবেশে গিয়ে হাজির হবে আমাদের মেয়েদের বাঁচাতে। অরূপদার ব্যাক আপ প্ল্যান বললাম না।“ আমি দম বন্ধ করে বললাম “ওই লোকটাও কি হাট্টা খোট্টা? মানে দেখতে কেমন?” ও একদমে বলল “ছয় ফিট হবে, বেশ চওড়া, কপালে তিনটে কাটা দাগ আছে আর মুখে চাপ দাড়ি। বাকি দেখতে আমাদের মতই সাধারণ।“ প্রতিটা কথার সাথে সাথে যেন আরও তীব্র থেকে তীব্রতর হচ্ছে ওর মন্থনের ধাক্কা। আমি মাথা এপাশ অপাশ করেও চিৎকার আটকাতে পারছি না। ও প্রায় চেঁচিয়ে উঠলো “হয়ে এসেছে আমার।“ সেটা বুঝতে আমারও আর বাকি নেই। কারণ ভীষণ ফুলে উঠে ওর লিঙ্গটা আমার যোনীর ভেতরটাকে প্রসারিত করে যেন ফাটিয়ে ফেলতে চাইছে। কিন্তু আমার এখনও হয় নি, প্রায় হয়ে এসেছে। বললাম “থামিও না। আমারও হবে।“ দাঁতে দাঁত চিপে ও ভোগ করছে আমায়। সে ধাক্কার যে জোর কতটা বলে বোঝানো সম্ভব নয়। না আমার জল বেরলো, আর ওর আগেই বেরলো। আমার হাঁটুদুটোকে উপর দিকে ভাঁজ করে আমার স্তনের ওপর চেপে ধরল। ওর ডান হাত হাঁটুদুটো কে আমার বুকের সাথে লাগিয়ে রেখে নিজের বুকের ভার ছেড়ে দিল আমার ভাঁজ হওয়া হাঁটুর উপর। আমার মাথার অবিন্যস্ত চুলের ওপর নিজের বা হাতটা মুঠোর মতন করে চেপে ধরল। দৃঢ় ভাবে পিষে রাখল আমার মাথাটাকে নোংরা মাটির ওপর নিজের গায়ের জোড়ে। ভীষণ বেগে ভেতর বাইরে করে চলল। ওর চোখ বন্ধ। একবার আমি যেন ওকে কিছু বলতে গেলাম। কারণ ভেতরে জলের তীব্রতা এত বেড়ে গেছে যে মনে হচ্ছে ফেটে যাবে। কিন্তু মুখ খুলতেই ও বাম হাতটা আমার চুলের ওপর থেকে সরিয়ে আমার গালের ওপর একটা মাঝারি কিন্তু সশব্দ থাপ্পড় মেরে আমাকে চুপ করিয়ে দিল। আবার চেপে ধরল আমার চুলের মুঠি। ওর কোমর লাফিয়েই চলেছে। ওর চোখ বন্ধ। আবার আমার চুলের মুঠি ধরে মাথাটাকে মাটির সাথে পিষে রেখে দিয়েছে। পা দুটোকে ওপরে ভাঁজ করে রাখায় অনেক বেশী ভেতরে গিয়ে আছড়ে পড়ছে ওর লিঙ্গের মোটা ডগাটা। হঠাত আমার চুলের ওপর ওর হাতের মুঠো ভীষণ শক্ত হয়ে গেল। নিজের শরীরের ভার ছেড়ে দিল আমার ভাঁজ করা হাঁটুর উপর। বুঝলাম নিঃশেষ করে দিচ্ছে নিজেকে আমার ভেতরে। ওর কাঁধ দুটোকে এতক্ষন খামচে ধরে নখের দাগ ফেলে দিয়েছি ওখানে। সম্বিত ফিরতেই নখ গুলোকে সরিয়ে নিলাম ওর ঘাড়ের ওপর থেকে। একটু থিতু হয়ে ও নিজেও উঠে পড়ল আমার ভাঁজ করা হাঁটুর ওপর থেকে। কিন্তু উঠে ঠিক দাঁড়াতে পারল না। আমার দুপায়ের ফাঁকে লাট খাওয়া ঘুরির মতন ঝপ করে পড়ে গেল। না এত ধকলেও শুয়ে পড়েনি। বসেই আছে ও। কিন্তু মাথাটা নিচু আর সশব্দে হাঁপিয়ে চলেছে। আমার কোমর আর পা দুটো পুরো অসাড় হয়ে গেছে। পা দুটো অগোছালো ভাবে ফেলে দিলাম ওর নগ্ন ঘর্মাক্ত দেহটার দুপাশে। অনুভব করছি আমার ফাঁক হয়ে থাকা যোনীর মুখ দিয়ে চির চির করে গড়িয়ে পড়ছে তিনটে শরীরের রসের মিশ্রণ, রাজুর বীর্য, অমলের বীর্য আর আমার যোনীর রস। একবার উঠতে গিয়েও উঠতে পারলাম না। আবার নেতিয়ে পড়লাম মাটির ওপর। ভীষণ হাঁপিয়ে গেছি। ওঠার সময় এক ঝলক দেখতে পেয়েছিলাম ওর লিঙ্গটা। ওটা এখনও অর্ধশক্ত হয়ে রয়েছে। ওর পুরো লিঙ্গের ওপর আমাদের তিন জনের শারীরিক রসের একটা পুরু আস্তরণ পড়ে গেছে, সাদা আঠালো দেখাচ্ছে ওর লিঙ্গের গা। আমার শরীরের ভেতর দিয়ে ওদের বীর্যের ধারা এখনও বেড়িয়ে বেড়িয়ে মাটি ভিজিয়ে দিচ্ছে। আমার উচিত ছিল নিজের যোনীর মুখ চেপে ধরে দৌড়ে বেড়িয়ে যাওয়া। নগ্নতা এখানে স্বাভাবিক ব্যাপার। কিন্তু শরীরে কোনও বল অনুভব করছি না।

অমল বিছানায় বসেছিল নগ্ন হয়েই। আর আমরা দুজন এইভাবে হাঁপিয়ে চলেছি। হঠাত একটা মেয়ে (ওর নাম আমি জানি না, বা এখন আবছা আলো আর দৃষ্টিতে দেখে চিনতে পারলাম না।) দৌড়াতে দৌড়াতে এলো অমলের ঘরের দরজায়। “তোমরা এখানে?” আমি নিজের নগ্নতা আর যৌন ব্যাভিচারের চিহ্ন ওর সামনে ঢাকার সুযোগই পেলাম না। ওই মেয়েতাও বোধহয় দেখতে পেয়েছে আমার হাঁ করা যোনীর বিধ্বস্ত মুখ থেকে রসের ধারা বেড়িয়ে চলেছে। কিন্তু ও থামল না। আমাদের তিন জনের বিধ্বস্ত যৌনক্লান্ত নগ্ন ঘর্মাক্ত শরীরের ওপর দৃষ্টি বুলিয়েই চেঁচিয়ে উঠল, “ সীমা দি খুন হয়েছে। এসো শিগগির।“ রাজু তড়াক করে উঠে দাঁড়ালো। আমার হাত ধরে আমাকেও টেনে উঠে দাঁড় করিয়ে দিল। অমল নিজের ধুতি পরতে শুরু করে দিয়েছে। রাজু আমার হাতের আমার শাড়িটা গুঁজে দিয়ে নিজের ধুতিটা পরতে শুরু করে দিল। না আমিও আস্তে আস্তে চেতনা ফিরে পাচ্ছি। কোনও মতে শাড়িটা কোমরে বেঁধে বুকের কাছটা ঠিক করে বাইরে বেড়িয়ে গেলাম। চুলের অবস্থা জানি ভয়ানক। পিঠেরও একই অবস্থা। চুল নিশ্চিত ঝরে বিধ্বস্ত কাকের বাসার মতন দেখাচ্ছে আর পিঠটা ময়লা কাঁদায় মাখা মাখি। মুখের অবস্থা যে কেমন সেটা আর লিখে বোঝানোর দরকার নেই। আমরা তিন জনে সীমার ঘরের সামনে গিয়ে হাজির হলাম। আমি ওদের সাথেই এগিয়ে যাচ্ছিলাম ভিড় ঠেলে। হঠাত একটা হাত আমাকে টেনে ধরল। আস্তে আস্তে টেনে নিয়ে চলে গেল ভিড়ের একদম শেষ প্রান্তে। “এখানে ডাক্তারের প্রয়োজন নেই। “ কথাটা বলল অদিতি। “আমি চেক করে দেখে নিয়েছি। আগের বার যেখানে আহত হয়েছিল, সেখানেই ছুরি বিঁধিয়ে খুন করেছে। “ গলা নামিয়ে এক দমে বলে গেল “একটা কথার মানে আমি বুঝে গেছি। “ আমি ওর দিকে তাকালাম। ও বলল “
-S(22)। এর মানে কি সেটা বুঝতে পেরেছি। আজ বাইশ তারিখ। আজ “এস” অর্থাৎ সীমার জীবন শেষ করা হবে। এই নির্দেশই দেওয়া আছে ওই লেখাতে। অবশ্য এই কাজ কে করেছে সেটা আমি জানি না।“ আমি বললাম “তুই কোথায় ছিলিস?” ও বলল “ আমি আলিদার কোলে শুয়েছিলাম। আর তুই?” বললাম “অমল আর রাজুর ঠাপ খাচ্ছিলাম।“ ও হাতে চিমটি কেটে বলল “সেটা তোর মুখের আর চুলের অবস্থা দেখেই বুঝতে পারছি। তোকে তো পুরো শেষ করে দিয়েছে।“ একবার আমার পিঠের ওপর লাগা মাটির দাগ হাত দিয়ে ঝেড়ে ফেলার চেষ্টা করে বলল “নাহ। ঝেড়ে লাভ নেই। স্নান করার পরই পরিষ্কার হবে। আজ এই কাপড়টা ধুয়ে মেলে দিতে হবে। তবে একটা জিনিস ভালো হয়েছে যে আমরা দুজনেই কোনও না কোনও পুরনো লোকের ঘরে রতি ক্রীড়ায় মগ্ন ছিলাম আর তার সাক্ষীর অভাব নেই এখানে। নইলে আমাদের ঘাড়ে দোষ চাপিয়ে দিতে খুনির এক মুহূর্তও দেরী হত না।“ সত্যি তো, এটা তো ভেবেই দেখি নি। আমরাই এখানে একমাত্র অপরিচিত আর নতুন, আর সব থেকে বড় কথা সবাই জানে আমরা এখানে এসে খুশি নই। খুনি যদি আমাদের ঘাড়ে দোষ চাপিয়ে দেয় তো, আমরা তো শেষ। রত্নাদির পাশের ঘরে হয়ত আমাদের সারা জীবন বন্দী করে রাখবে। আর কি কি করবে সেতো জানাই নেই। আমি এইসব ভেবে চলেছি, এমন সময় চাপা গলায় ও বলল “ কাল তেইশ। কাল “এ” দিয়ে শুরু কারোর মৃত্যুবাণ নিক্ষেপ করে গেছে আমাদের অরূপদা। একটা মজা দেখ। সব কিছু করছে ও। কেন করছে জানি না। কিন্তু, যখন এসব হচ্ছে তখন ও বা বিনীতাদি কেউ ক্যাম্পে নেই। অর্থাৎ...।“ অর্থাৎ যে কি সেটা আমিও বুঝে গেছি। ওদের কোনও লোক আছে এই ক্যাম্পে। আর সে যে কি দেখছে আর কি বুঝছে আর কি করছে সেটা অন্য কেউ জানে না। মনটা এক নিমেষে ভয়ে ভরে গেল। এই “এ” টা কে যার কাল মৃত্যুর নির্দেশ দিয়ে গেছে ক্যাম্পের কম্যান্ডার ইন চিফ।

একবার চমকে উঠলাম অদিতির নামের আদ্যাক্ষরও “এ”। তবে কি... এই চিন্তা মাথায় আসতেই ওর দিকে তাকালাম। বুঝলাম আলিদার সাথে খুব ভালো সুখের মিলন হয়েছে ওর। ওর অবস্থা হয়ত আমার মতন বিধ্বস্ত নয়, কিন্তু বিধ্বস্ত তো বটেই। তার পরেই মাথায় এলো “এ” দিয়ে আলিদার নামটাও শুরু। মাথায় কিছুই ঢুকছে না। আলিদা একবার আমার দিকে এগিয়ে এসে বলল “ তুমি ভেতরে গিয়ে একবার দেখবে? যদিও অদিতি একবার দেখেছে। “ আমি ভিড় ঠেলে এগিয়ে গিয়ে ঘরে ঢুকলাম। যেখানে ও আঘাত খেয়ে ফিরেছিল আগের দিন ঠিক সেখানেই এক কোপে বসিয়ে দেওয়া হয়েছে একটা ধারালো ছোরা। ঘুমের ভেতরেই খুন করা হয়েছে ওকে। বোধহয় নড়ারও সময় পায় নি। ছুরিটা এখনও ওর শরীরে গাঁথা আছে। আমি ছুরিটা ওর শরীরের থেকে বার করতে গিয়েও ওঠা ধরতে পারলাম না। হাতটা চেপে ধরে দেখলাম, হাত ঠাণ্ডা। মাথা নাড়িয়ে বেড়িয়ে এলাম। চোখের কোণটা ভিজে গেল আপনা থেকে। সত্যি এই সীমা তো আমার কেউ হয় না। দু দিন আগে তো ওকে চিনতামই না। কিন্তু ওর চিকিৎসা করেছিলাম আমি। দু দিন ধরে ওকে দেখছিলাম। আজ ওকে কেউ এই পৃথিবী থেকে সরিয়ে নিয়ে গেল। আমি ভিড়ের বাইরে বেড়িয়ে এসে ফাঁকায় গিয়ে মাটিতে বসে পড়লাম। অদিতিও এসে বসল আমার গা ঘেঁষে। আমি কান্না ভেজা গলায় ওকে বললাম “ তোর নামও ...।“ ও বলল “জানি “এ” দিয়ে শুরু। কিন্তু হলপ করে বলতে পারি যে এ আমি নয়। অন্য কেউ, কারণ আমি মাত্র সেদিন এসেছি। এখন কাঁদিস না বসে বসে। এখন আমাদের বের করতে হবে যে “এ” দিয়ে আমি ছাড়া আর কার কার নাম আছে।“ বললাম “সেটা কি ভাবে বের করবি? এরকম প্রশ্ন করলে তো সবাই সন্দেহ করবে।“ ও বলল “জানি না। উপায় একটা বের করতেই হবে। আর যদি বের করতে পারি তো তার সাথে আরও কয়েকজন কে নিয়ে কাল রাতটা আমাদের কাটাতে হবে। “ জানি না ওর মাথায় কি ঘুরছে। কিন্তু আমি চিন্তা করতে শুরু করলাম আর কার কার নাম আমরা শুনেছি “এ” দিয়ে যারা এই ক্যাম্পে এখনও আছে। সবার সাথে না মেশার এই এক বিড়ম্বনা। প্রায় কারোর নামই আমরা জানি না। আলি দা এসে জল ভরা চোখ নিয়ে আমাদের পাশে বসে পড়ল। আমি মৃত্যু দেখেছি। কিন্তু এমন নয়। সবাই ভিড় করে এলো আমাদের চারপাশে। অদিতি দেখলাম অদ্ভুত শক্ত স্বভাবের মেয়ে। এই অবস্থাতেও ভেঙ্গে পড়ে নি। সবাইকে লক্ষ্য করে বলল “ আমরা জানি যে আমরা দুজনই এখানে সবথেকে নতুন এসেছি। আর আমাদের সম্বন্ধে তোমরা কেউ কিছু জানো না। যদি তোমরা মনে করো যে এই খুনের জন্য আমাদের মধ্যে কেউ দায়ী তো এই মুহূর্তেই আমার কিছু কথা বলার আছে। “ একসাথে রাজু, আলিদা, অমল, আর আরও চারটে মেয়ে এগিয়ে এসে বলল “ এরকম আমরা একবারও ভাবছি না। ছিঃ ছিঃ। তোমরাই ওকে বাঁচালে আর তোমরাই ওকে মেরে ফেলবে। আজ সকালেও তো তুমি গিয়ে ওকে দেখে এসেছ। সীমাদি তোমার কথা ভীষণ বলছিল সন্ধ্যা থেকে। আর তাছাড়া অন্তত আমরা সাত জন জানি যে তোমরা শেষ দু ঘণ্টা ধরে কোথায় ছিলে। আমরা প্রত্যেকেই তোমাদের আলিদা আর অমলের ঘরে দেখেছি। আমরাও গেছিলাম। কিন্তু তোমরা আছো বলে ডিস্টার্ব করি নি। কিন্তু আমরা সাতজনেই দেখেছি।“ বাকি তিনটে মেয়েও দেখলাম মাথা নাড়াল। আলিদা স্পষ্ট স্বরে বলে দিল যে ঘণ্টা খানেক ধরে অদিতি ওর সাথে ছিল আর রাজু আর অমলও সবাইকে বলে দিল যে আমি ওদের দুজনের সাথে ছিলাম। আলিদা বলল “অরূপদা এখানে নেই। একটা সৎকারের ব্যাবস্থা তো করতে হবে ওর। যুদ্ধে গিয়ে মরলে তাও কথা ছিল। কিন্তু এত একেবারে ওর আহত শরীরের অসহায়তার সুযোগ নিয়ে ওকে খুন করা হয়েছে।“ অদিতি হঠাত ফোঁস করে বলে বসল “আলিদা কিছু মনে করবে না। আমি তোমাকে খুব ভালোবাসি, আর অন্তর থেকেই ভালোবাসি। কিন্তু অসহায় শরীর, সুযোগ এই গুলো ঠিক তোমাদের মুখে মানায় না।“ আমি যে ওকে বাঁধা দেব তার সুযোগ আমি পেলাম না। ও উঠে দাঁড়িয়ে পাছা থেকে সশব্দে মাটি ঝেড়ে বলল “ এ কথা বলার কারণ এই যে আমার আর আমার এই বন্ধুটিকে তোমরা এইভাবেই ধরে এনেছ। আমরা ডাক্তার, আমরা জানি কোন ওষুধে কতটা দোষ গুন থাকে। আমরা জানি কোন কোন সিডেটিভ দিলে কি কি হতে পারে। আজ একটা কথা বলি? সীমাদির মৃত্যুতে তোমরা যতটা দুঃখ পেয়েছ আমরাও ঠিক ততটা পেয়েছি। কিন্তু অসাড় শরীর, সুযোগ নেওয়া এইসব না বললেই ভালো। আমার বন্ধু তো বসে বসে কাঁদছে, জানি কেন কাঁদছে। কারণ ওই ওকে বাঁচিয়েছিল, কিন্তু আবার কেউ নিয়ে চলে গেল পেছন থেকে এসে। ও খুব নরম মনের। আমি নই। আর তাই এই অবস্থাতেও একটা কথা বলতে বাধ্য হচ্ছি, (একটু থেমে আলিদার ঘাড়ে হাত দিয়ে বলল) তোমাদের কমরেডের শোক আমাদেরও স্পর্শ করেছে। কিন্তু তাও বলছি, তোমাদের আগের ডাক্তার আমার বন্ধুর অসাড় শরীরের অসহায়তার সুযোগ নিয়ে এখানে নিয়ে আসার আগে ওকে রেপ করেছিল। (রমা ভিড়ের মধ্যে ছিল, ওকেই উদ্দেশ্য করে বলল) সত্যি সব সময় সত্যিই হয়। ও বলেছে যখন তোমরা তিন জন ওকে একলা ডাক্তারের হাতে রেখে দিয়ে বাইরে চলে গিয়েছিলে তখন ওর অসাড় শরীরের ওপর তোমাদের ডাক্তার ধর্ষণ করেছিল। অরূপদাকে ও ব্যাপারটা বলেছিল আমার সামনে। কিন্তু ও মানতে চায় নি। আলিদা, মনে খুব দুঃখ হলেও একটা কথা না বলে পারছি না। একেই বলে পোয়েটিক জাস্টিস। যা করবে তার ফল এড়াতে পারবে না। তোমাদের দলের একজন কমরেড একটা অসহায় মেয়ের শারীরিক অক্ষমতার সুযোগ নিয়েছিল একদিন, আর আজ একজন এসে তোমাদের আহত কমরেডকে ঘুমের মধ্যে শেষ করে দিয়ে চলে গেল। (আরও জোর গলায় বলল) হ্যাঁ ঘুমের মধ্যে বলছি কারণ, সীমাদি যা মেয়ে ও জেগে থাকলে একটা ধস্তাধস্তি হতই। কিন্তু তার কোনও চিহ্ন আমরা কেউ দেখিনি ওর বিছানায়। (একটু দম নিয়ে বলল) কিন্তু সৎকার একটা করতেই হবে। “ শেষ লাইনে ওর গিয়ার চেঞ্জ হয়ে গেছে। ও বলে চলল “ অরূপদা যাবার আগে বলে গিয়েছিল আমি আর রুমি এখন গার্ডিয়ান। আমরাই ওর সৎকার করব। কেউ যদি আগ বাড়িয়ে করতে চায় তো আমাদের কোনও আপত্তি নেই।“ আমার চোখ দুটো জলে ঝাপসা হয়ে গেছে। শুনলাম অদিতি বলে চলেছে “আলি দা তুমিই এদের মধ্যে সবার বড়। তুমি চাইলে তুমিও করতে পারো।“ আলিদা প্রায় ভেঙ্গে পড়েছে। ও উঠে দাঁড়িয়ে বলল “আমি মুসলিম।“ অদিতি বলল “কমরেডের মধ্যে আবার হিন্দু মুসলিম কি? তবে একটা কথা, ওর কোমরে বেঁধা ছোরাটা বের করে নিও। ওতে চিহ্ন থাকতে পারে। আমরা শুধু গোয়েন্দা গল্প পড়েছি আর সিনেমা দেখেছি। তোমাদের মধ্যে কেউ থাকতেই পারে যে ওটাকে পরীক্ষা করে দেখতে চাইতে পারে। তাই সময় থাকতে বলছি ওটা বের করে নাও। আর তাছাড়া, একটা মেয়েকে, ছোরা সমেত দাহ করা বোধহয় আমাদের শোভা দেয় না।“ শেষ কথাগুলো বলার সময় যে ওর গলা ধরে এলো সেটা স্পষ্ট বুঝতে পেরেছি। আমার শুধু একটাই রাগ ওর ওপর, এই সময় এতগুলো লোকের সামনে নিজের মনের ঝাল না ঝাড়লেই পারত। আলিদা আমার পাশে এসে বসে বলল “তুমিই ওটা বের করে নাও। আমি রুমাল দিচ্ছি। বাঁটের নিচের জায়গাটা ধরে বের করে নাও। আমাদের সে সাহস হবে না। “

আমি আলিদার হাত ধরে এগিয়ে গেলাম ঘরের দিকে। একটা কাপড়ের মতন জিনিস আমার হাতে ধরিয়ে দেওয়া হল। কাঁপা কাঁপা হাতে ছোরার ধারালো অংশটাকে হাতে ধরে টেনে বের করে নিলাম ওর শরীরের থেকে। কান্নায় ভেঙ্গে মাটিতে বসে পড়লাম। ভেতর থেকে বেড়িয়ে এল বমি। মাটির ওপর উপুড় হয়ে বসে উগড়ে দিলাম ভেতরের বিষ। অদিতি সহ বাকিরা এগিয়ে এসে আমাকে তুলে নিয়ে গেল আমার ঘরের দিকে। সৎকার আমাকে করতে হয় নি। পরের দিন শুনেছিলাম যে আলিদাই সৎকার করেছে। ব্যাগ থেকে আয়না বের করে দেখলাম আমার চোখ পুরো ফুলে গেছে। ঘুমের মধ্যেও কেঁদেছি সারা রাত ধরে। আমি অদিতির মতন এত শক্ত নই। আমি ঘুম থেকে উঠেছি প্রায় সাড়ে সাতটায়। অদিতি পুরো রেডি। ওর ব্রাশ করা হয়ে গেছে। চা খেয়ে ব্রেকফাস্টও সেরে নিয়েছে। ও চুপচাপ চেয়ারে বসে আমার ওঠবার জন্য অপেক্ষা করছে। আমি উঠে বসে শাড়ি ঠিক করে বললাম “ কতক্ষণ উঠেছিস? “ ও আমার কথার জবাব না দিয়ে বলল “রেডি হয়ে নে। সবাই ট্রেনিং করতে চলে গেছে। সব সিনিয়ররা আমাদের সাথে এসে কথা বলবে বলেছে। এখন ঝিমিয়ে থাকিস না। “ উঠে চোখ জ্বালা করছে দেখে আয়নাটা বের করেছিলাম। নিজের ফোলা মুখটা একবার দেখে নিয়ে চলে গেলাম ব্রাশ হাতে কল পাড়ে। ঘরে ফিরে এসে খেয়াল করলাম চা রুটি আর সকালের বরাদ্দ কলাটা একটা প্লেটে পড়ে আছে। ব্রেকফাস্ট করার কোনও তাগিদ আমার ভেতরে নেই। চাটা মুখে নিয়ে বুঝতে পারলাম অনেকক্ষণ আগে দিয়ে গেছে। ঠাণ্ডা জল হয়ে গেছে। তাও কথা না বাড়িয়ে কাপটা মুখে ঠেকালাম। (আজ আমাদের কপালে এসেছে কাপ, গ্লাস নয়। পাঠকরা ভাববেন না যে গুলিয়ে ফেলেছি কাপ আর গ্লাসের মধ্যে। তাই এই সতর্কতা।) সাথে সাথেই ঘরে এসে প্রবেশ করল আরও ছয়জন। দেখলাম আরও দু তিন জন এসেছে, রাজু, অমল আর আরেকটা ছেলে কিন্তু ওরা বাইরে দাঁড়িয়ে পাহারা দিচ্ছে। আলিদা এসে আমাদের বিছানায় বসে পড়ল। বাকি মেয়ে গুলো দাঁড়িয়ে রইল। আলিদা গলা খাঁকড়িয়ে শুরু করল। “ রুমির ওপর যে এমন হয়েছে সেটা ও নিশ্চই অরূপদার সামনে কাল তুমি যেভাবে বলেছ সেভাবে বলেনি। নইলে ও নিজেও বিশ্বাস করত। ডাক্তার ফিরে এলে এর বিহিত হবে। আমরা লজ্জিত।“ অদিতি উঠে এসে ওর হাত ধরে বলল “ছিঃ ছিঃ। তুমি এ কথা কেন বলছ? লজ্জিত হওয়ার কোনও কারণ তোমাদের নেই। “ মেয়েরা একে একে এসে আমার হাত ধরে ক্ষমা চেয়ে গেলো। আমি একটা হালকা হাঁসি দিয়ে বুঝিয়ে দিলাম যে তাদের ওপর আমার কোনও রাগ নেই। আলিদা এইবার এলো আসল কাজের কথায়। “ আমি তোমাদের সাথে পরামর্শ করতে এসেছি যে কি করা যায়। একটা কথা স্বীকার করতেই হবে যে আমাদের মধ্যে একজন বিশ্বাসঘাতক আছে। (সাথে সাথে উঠে দাঁড়িয়ে বলল) আমি তোমাদের দিকে ইঙ্গিত দিচ্ছি না। আমার একটা থিয়োরি আছে। তোমরা কাল এসেছ। তোমরা একাজ করে থাকলে খুব খারাপ, কিন্তু তোমাদের এখানে আনার আগে তোমাদের দুজনেরই ব্যাক গ্রাউন্ড আমরা চেক করেছিলাম। আমি জানি তোমরা নিজ হাতে মানুষ খুন করতে পারো না। আর তোমাদের বাইরের জীবন ধারা ছিল খুব সাধারণ। (আমাকে দেখিয়ে বলল) তোমরা সবাই শোনো, রুমি কিন্তু অনেকের চিকিৎসা ফ্রিতে করত। আর ও যার সাথে থাকতো সেও তাই করত। তুমি বা অদিতি খুন করতে পারবে না। এটা আমরা জানি। অন্তত আমি জানি। এইবার বল তোমরা একদম গার্ডিয়ান হিসেবে যে আমাদের কি করা উচিত।“ আমি কিছু একটা বলতে যাচ্ছিলাম কিন্তু অদিতি আমাকে থামিয়ে দিয়ে বলল “উফফ তুমি আগে খাওয়াটা শেষ করে নাও। রাত থেকে তো কিছুই ঢোকেনি পেটে। তারপর নিয়ে যাব তোমাকে স্নান করাতে। এখন খাও আগে।“ মাঝে মাঝে ওর ব্যক্তিত্ব দেখলে ঘাবড়ে যেতে হয়। আমি মুখ বুজে রইলাম।

অদিতি উঠে দাঁড়িয়ে বলল “ যেমন তোমার থিয়োরি আছে আলিদা। তেমন আমারও একটা থিয়োরি আছে। যে এইসব কথা সবার সামনে হয় না। আমি কাউকে অবিশ্বাস করছি না। কিন্তু কে জানে কি বলতে কি বলব আর সে থেকে যদি কেউ আগ বাড়িয়ে আগাম স্টেপ নেয় তো বিপদ এসে যাবে। ও হ্যাঁ একটা কথা, অরূপদা কবে ফিরছে? ওকে ছাড়া এইসব কথা বলতে আমার ভালো লাগছে না। বা অন্তত বিনীতাদি... “ আর কেউ না বুঝলেও আমি বুঝেছি যে এটা সম্পূর্ণ নাটক।




[/HIDE]
 
[HIDE]

26
আলি দা উঠে দাঁড়িয়ে কিছু বলার আগেই সবাই ঘর ছেড়ে বেড়িয়ে গেল। আলিদা আমাদের বলল “এখানে ঘরের ও কান আছে। তোমরা এসো। আমরা হাঁটতে হাঁটতে কথা বলব।“ অদিতি আমার হাতটা নিজের হাতে নিয়েই বেড়িয়েছে। আলিদা একটু আগে হাঁটছে। আমাকে বলল “একটাও কথা বলবি না।স্রেফ কালা সেজে থাকবি।“ আমরা আলিদার পাশে গিয়ে দাঁড়ালাম। অদিতি বলল “ কেন ওদের সামনে কথাটা বললাম না জানো?” আলি দা একটু বিস্ময়ের স্বরে বলল “কেন? ওরা সবাই খুবই বিশ্বস্ত।“ অদিতি বলল “ সত্যি কি? কালকের ঘটনার পর আমি কিন্তু শুধু মাত্র রাজু, তোমাকে , আমাকে , রুমিকে আর অমলকে ছাড়া আর কাউকেই বিশ্বাস করতে পারছি না। “ আলিদাও দেখলাম ওর কথাটা উড়িয়ে দিল না। অদিতি বলে চলল “ বিশ্বাস না করার আরেকটা কারণ আছে। কিন্তু... সেটা এখন তোমাকে জানাতে পারব না। “ আলি দা বলল “বল কি বলতে চাইছ? “ ও বলল “এখন শুধু উত্তর চাই। আগে উত্তর দাও। তোমার কোনও প্রশ্ন থাকলে পরে করো। (একটু হেঁসে যোগ করল) কিন্তু তোমার প্রশ্ন শোনার পর সে প্রশ্নের উত্তর আমি নাও দিতে পারি। কারণ একটাই সোনা, আমি নবাগত। আমাদের সিকিওরিটি কেউ দেবে না। “ আলি দা বোধহয় ছাতি চিতিয়ে গলা চড়িয়ে বলতে যাচ্ছিল যে আমি দেব কিন্তু অদিতির মুখের দৃঢ় ভাব দেখে দমে গেল। আলিদা বলল “বেশ বল কি জানতে চাও। “ অদিতি বলল “জানতে তো চাই অনেক কিছু, কিন্তু কোথা থেকে শুরু করব বুঝতে পারছি না। “ তারপর একটু থেমে বলল “ আপাতাত একটা প্রশ্নের উত্তর দাও। আর কথা দাও যে এই কথাটা তুমি কাউকেও বলতে পারবে না। অরূপদাকেও না। কারণ ও জানলে এখানে এসে একটা হুলুস্থুল বাঁধিয়ে দেবে। “ আলি দা বলল “সে আর বলতে। সীমা ছিল ওর একটা বুকের পাঁজর।“ অদিতি বলল “ যা করতে হবে খুব তাড়াতাড়ি করতে হবে। আর এখনই করতে হবে। কথা দিচ্ছ তাহলে?” ও বলল “ বলই না।“ অদিতি বলল “ অরূপ দার জীবন বিপন্ন।“ পরে আমাকে বলেছিল যে এটা না বললে নির্ঘাত ও গিয়ে অরূপদাকে এই কথাটা বলে দিত। আর সব ভণ্ডুল হয়ে যেত। অরূপদার স্বার্থের খাতিরেই আলিদা আজ চুপ থাকবে। কারণ ওর ধারণা ওই অরূপ যতদিন আছে তত দিন ওরা টিকে আছে। অদিতি বলে চলল “ তবে তারও আগে আরেকজনের জীবন বিপন্ন। আর আজই সে মারা যাবে। আর , (একটু থেমে বলল) তোমাকে আমি বিশ্বাস করতে পারি তো? তার নাম “এ” দিয়ে শুরু। “ ওর হাত ধরে বলল “তুমি আমাকে কথা দিয়েছ যে কাউকে এটা জানাবে না।“ আলিদা একটুও না ভেবে বলল “ তাই হবে। “এ” দিয়ে তো আমারও নাম শুরু। আর (কি যেন ভেবে বলল) আর... আর... তোমারও নাম শুরু।“ অদিতি বলল “ আমরা দুজন আজ তোমার আর রাজুর আর অমলের সাথে থাকব। আমাদের লাইফ সেফ। আজ কোনও খেলা নয়, শুধুই প্রতিক্ষা। আমার বন্ধুটা আমাকে বলেছিল যে এখান থেকে যাওয়ার আগে অন্তত একবার তোমাদের কিছু একটা দিয়ে যেতে চায়(এটা আমি রাজু আর অমলকে ওদের পেটের কথা বের করার জন্য বললেও ওর সামনে একবারও বলি নি। পুরো গুল মারল)। আমারও ইচ্ছে এখান থেকে যাবার আগে অরূপদাকে সেফ করে রেখে যাবো। “ আলিদা এসে আমাদের দুজনের কাঁধ খামচে ধরে বলল “ আমি কৃতজ্ঞ থাকবো সারা জীবন। কিন্তু অরূপদার জীবন যে বিপন্ন বা আজই “এ” দিয়ে নামের কেউ খুন হবে সেটা তোমরা জানলে কি করে? “ ওর ছোঁয়ায় কোনও জৈবিক কামনা পেলাম না, ছিল একটা আবেগ আর উত্তেজনা। মেয়েদের শরীর বোঝে। ও সত্যি ভালো। অদিতি বলল “সে প্রশ্নের উত্তর তুমি যথা সময়ে পাবে, এখন নয়। (একটু থেমে দৃঢ়তার সাথে বলল) তাহলে কি শেষ কথা? কাউকে এটা জানানো যাবে না। আমরা পাঁচ জন আজ এক ঘরে থাকবো। তুমি ভীষণ গোপনে গিয়ে যাদের যাদের নাম “এ” দিয়ে শুরু তাদের নামের লিস্ট বানিয়ে আমাদের দিয়ে যাবে। আর হ্যাঁ, এই লিস্টটা যে আমাদের দিচ্ছ সেটা যেন কেউ না জানতে পারে। “ ওর এই অধিক সতর্কতা যে কারোর মনে সন্দেহের উদ্রেক করবে। আলিদা একটু চোখ তুলে তাকাতেই ও যেন কিছু না ভেবেই বলে দিল “অন্যথা হলে ঘোর সর্বনাশ হয়ে যাবে বলে আমার বিশ্বাস। আমি এখানে মরেই আছি। কিন্তু তোমাদের কমরেড মরে গেলে? “ আলিদা হাত তুলে বুঝিয়ে দিল যে ওকে আর কিছু বোঝাতে হবে না। ও চলে গেল। আমি বললাম “ওকে ফস করে এইসব না বললেই হচ্ছিল না। “ অদিতি বলল “উপায় নেই সোনা। লোকটা বড্ড ভালো। কাল ওর কোলে শুয়ে শুয়ে ওর সারা জীবনের গল্প শুনেছি। ও জাস্ট ফেঁসে গেছে। যদি কেউ লিডার হয় তো ওই একমাত্র যোগ্য। চল তোর গল্প শুনি। লাগানো ছাড়া আর কি কি করলি? একদম ডিটেলে বল। “ আমি ওকে সব কথা এক এক করে উগড়ে দিলাম। ও শুধু একটাই কথা বলল “সব শুনলি শুধু লোকটার নাম শুনলি না?” বললাম “কোন লোকটার?” বলল “হোটেল বয়টার। যাক সেসব পরে হবে। “ আমি ওকে বলতে যাচ্ছিলাম যে ও হোটেল বয় নয়, কিন্তু তার আগেই ও বলে উঠলো “ ও যেই হোক ওর নামটা, মানে অন্তত এরা যেটা জানে সেটা জেনে নেওয়া উচিত ছিল। বাট, ভেরি গুড ওয়ার্ক কমরেড।“ আমাদের কথা শেষ হল না। একটা মেয়েকে ধরাধরি করে আমাদের কর্মস্থলে নিয়ে যাচ্ছে দেখে আমরা দুজনেই দৌড় মারলাম। মাঝে পথে একটা ছেলে এসে বলল “ অনেকগুল গুলি লেগেছে। “ ও আমাদের অনেক আগেই ছুটে চলে গেলো। অদিতি আমাকে বলল “ কাঁটা ছেঁড়া শেষ হওয়ার পর যদি মেয়েটা বেঁচে থাকে তো সবার আগে আমি কথা বলব ওর সাথে। হাই সিডেটিভ থাকবে। পরে কিছু মনে থাকবে না। চল। আগে বাঁচাই। আর ওকে বাঁচাতেই হবে। কারণ এই মেয়েটাও ওদের দলের সাথে কোলকাতায় গিয়েছিল সেদিন। দলছুট হল কেমন করে, কি দেখেছে, কে ওকে মেরেছে, আর বাকিরা কে কি হালে আছে সেসব কথা জানতে না পারলে চলবে না। একটা কথা ভুলিস না “আরতি”র নামও “এ” দিয়ে শুরু। “ আমার বুকটা ধড়াস করে উঠলো।

মেয়েটা ছয়টা গুলি খেয়েছে। গুলির রকমভেদ আমার জানা নেই। কিন্তু সারা শরীরের রক্ত বিষাক্ত হয়ে গেছে। ওকে সবার আড়ালে নিয়ে গিয়েই কাজ শুরু করলাম। এখন বাজে প্রায় নটা। যখন বিধ্বস্ত শরীরে বেরলাম তখন বাজে সাড়ে তিনটে। বড় বড় হাঁসপাতালে অনেক নার্স থাকে, অনেকে থাকে। কিন্তু এখানে শুধু আমরা দুজন। এদের কাউকে আমাদের সাথে না রাখার একটাই কারণ, কিছু না বুঝে যদি কিছু ছুঁয়ে ফেলে তো সর্বনাশ হয়ে যাবে। ওখানে মুখের ঘাম মোছানোর লোক থাকে। এখানে নিজেদের নগ্ন ঘর্মাক্ত কাঁধের ওপর মুখ ঘষে ঘাম মুছে নিতে হয়। এটাই জীবন। অপারেশনের মাঝে আমার মনে হয়েছিল যে একে আর বাঁচানো যাবে না, কিন্তু অদ্ভুত ভাবে মেয়েটা বেঁচে গেল। অন্তত এখনকার মতন বেঁচে গেল। ওর এখন রক্তের প্রয়োজন, কিন্তু জানি না তার কি ব্যবস্থা করবে এরা। মেয়েটার নাম সঞ্চিতা। অদিতি ওকে জ্ঞানে নিয়ে আসার পর জিজ্ঞেস করল “কি করে হল এসব সঞ্চিতা।“ ও বলল “জানি না দিদি। আমাকে ছয়টা ছেলে ঘিরে ফেলেছিল। আমি সব দিক দেখেই গিয়েছিলাম। তবু। “ অদিতি বলল “ কোথায়?” ওর তখনও জ্ঞান আসেনি পুরো পুরি । কথাও জড়িয়ে যাচ্ছে। কিন্তু অদিতি ছাড়ার পাত্রী নয়।। ও বলল “ ফ্রি স্কুল স্ট্রিটে আমি একা গিয়েছিলাম। সব ঠিক ছিল। বেড়িয়ে আসার পর গাড়িতে উঠে দেখি সবাই ঘিরে ধরেছে। অরূপদাও নেই। কেউ নেই। ওদের কি খবর?” অদিতি সংক্ষেপে বলল “ওরা সবাই ভালো আছে। তোমার কথা বল।“ আমি ওকে বলতে যাচ্ছিলাম যে এইবার ওকে ছেড়ে দেওয়া উচিত। কিন্তু অদিতি তার আগেই বলে বসল “এর আগে কি বেনিয়া পুকুর লেনে গেছিলে?” ওর কথা বলতে কষ্ট হচ্ছে। মাথা নাড়িয়ে বোঝাল হ্যাঁ। ওর শরীর বাঁচিয়ে ওকে একটু জল খাইয়ে দিল অদিতি। ওর হাতে চকচক করছে একটা ইনজেকশন। কিন্তু সেটা নিজের শরীরের পিছনে ধরে রেখেছে। অদিতি গলা নামিয়ে জিজ্ঞেস করলো “সেখানে কি কোনও গোলমাল হয়েছিল?” ও সহজ বিশ্বাসে বলল “ ধরা পড়ে গেছিলাম। “ “ওখানে তো তোমরা একটা বাড়িতে গেছিলে তাই না? কিন্তু ধরা পড়লে কি করে?” ও মাথা নাড়িয়ে বলল “ না ওটা একটা হোটেল। আমরা দুজন গিয়েছিলাম ওখানে। বিনীতাদি আর আমি। আমাদের ওপর নির্দেশ ছিল এগারো নম্বর বাড়ির সামনে অপেক্ষা করতে। ওখানে এসে অরূপদা একটা হোটেল দেখিয়ে ঘরের নাম্বার বলে দেয়, এলিগ্যান্ট হোটেল। “ অদিতির চোখা প্রশ্ন “কত নম্বর ঘর? আর তোমরা দুজন গিয়েছিলে একসাথে? ” বলল “ ছয় নম্বর...বিনীতাদি আমাকে হোটেলের সামনে ছেড়ে অরূপদার সাথে চলে যায় স্টার হোটেলের দিকে। ” কিছু না জিজ্ঞেস করতেই মেয়েটা একটু দম নিয়ে খাবি খেতে খেতে বলল “ স্টার হোটেলে আমি আগেও গেছি। ওখানে ছাব্বিশ নম্বর ঘরেই যাওয়ার কথা ছিল বিনীতাদির। ওখানে থেকে খুব দূরে নয়। ওরা হেঁটেই গেছে।“ অদিতি বলল “বলে যাও। কিন্তু খুব সংক্ষেপে।“ সঞ্চিতা বলল “ সব ঠিক ছিল। ছেলেটাকে আমি কব্জা করে ফেলেছিলাম। ও যখন ঘুমাচ্ছিল তখন আমি উঠে পড়ি নিঃশব্দে। কিন্তু হঠাত খেয়াল হয় যে ছেলেটা নড়াচড়া করছে। তখনও ওর হাত পা বাঁধা হয় নি। ছেলেটার গায়ে ভালো জোর ছিল। আমি তাড়াতাড়ি রুমালে ক্লোরোফর্ম নিয়ে ওর দিকে যেতেই ও লাফিয়ে উঠে আমার হাত চেপে ধরে। ধস্তাধস্তির সময় ও ডাকাত ডাকাত বলে চেঁচাচ্ছিল। কোনও মতে ওর তলপেটে লাথি মেরে ওকে মাটিতে ফেলে ওর টাকা ভর্তি ব্যাগটা উঠিয়ে নিয়ে বাইরে বেড়িয়ে আসি। “ অদিতি ওকে থামতে দেবে না পুরোটা না শুনে “তারপর?“ আবার আরেকটু জল খাওয়াতে হল ওকে। “তারপর, বেড়িয়ে এসে দেখি যে বেয়ারাটা আমাকে রুমে নিয়ে গিয়েছিল সে রুমের বাইরে দাঁড়িয়ে আছে। অদ্ভুত লাগলো যে আমি ওর সামনে দিয়ে বেড়িয়ে লিফটের পথ ছেড়ে পেছনের সিঁড়ির দিকে দৌড় মারলাম কিন্তু লোকটা আমাকে আটকাল না। মনে হয় অরূপদার লোক, আমার সেফটির জন্য রেখেছিল। কিন্তু... ততক্ষণে লোকটার চিৎকার শুনে আসে পাশের ঘর থেকে লোক বেড়িয়ে এসেছে। আরও কয়েকজন বেয়ারা ছুটে এসেছে, সিঁড়ি দরজা খোলার আগে বুঝলাম অনেকে ওই ঘরে ঢুকে পড়েছে আর বুঝে গেছে যে কি হয়েছে। পুলিশ পুলিশ একটা শোরগোল পড়ে গেছে গোটা ফ্লোরে। দেখলাম দুজন আমার পেছনে ধাওয়া করেছে। গ্রাউন্ড ফ্লোরে পৌঁছে সদর গেটের দিকে না গিয়ে কিচেনের দরজা দিয়ে বেড়িয়ে এসে পাঁচিল টপকে সোজা রাস্তায়। কিছু দূরে গাড়ি দাঁড়িয়ে ছিল। গাড়িতে উঠেই বেড়িয়ে গেলাম।“ অদিতি বলল “ এরপর?” ও বলল “ পান্থশালায় গিয়ে স্নান করে ফ্রেশ হয়ে বেড়িয়ে এলাম। কথা ছিল টাকার ব্যাগ নিয়ে সোজা ফ্রি স্কুল স্ট্রিটের দিকে চলে আসব। ওখানে একটা বাড়িতে যেতে হবে। সব কাজ শেষ হতে কত সময় লাগে মোটামুটি একটা আন্দাজ আছে। তার আগেই অরূপদা ওখানে চলে আসবে বিনীতাদিকে নিয়ে। তারপর আমাকে নিয়ে বেড়িয়ে যাবে ওখান থেকে। গা ঢাকা দেব আমরা।“ অদিতির পাল্টা প্রশ্ন “ফ্রি স্কুল স্ট্রিটের বাড়িটার বাইরে অরূপদাকে যে দেখতে পাওনি সেটা তো বললে। কিন্তু ড্রাইভার কোথায় ছিল?” ও মাথা নেড়ে বুঝিয়ে দিল জানি না। “গাড়িতে এসে বসে দেখি ড্রাইভার নেই। কেউ নেই। খেয়াল হল ছয়টা ছেলে ঘিরে ধরেছে। যদিও গাড়ি থেকে সামান্য দূরে আছে। আমি তাড়াতাড়ি ড্রাইভারের সিটে বসে স্টার্ট নেবার আগেই জানলা দিয়ে গুলি চালিয়ে দিল। আমি জ্ঞান হারালাম। যখন চোখ খুললাম দেখি গাড়িটা অন্ধকার রাস্তার ওপর দিয়ে ছুটে চলেছে। আগের ড্রাইভারটাই গাড়ি চালাচ্ছে। জানি না ঘটনার সময় ও কোথায় গিয়েছিল। কারণ কথা বলার মতন অবস্থায় ছিলাম না। কিছুদূরে গিয়ে আরেকটা গাড়িতে আমাকে চাপিয়ে দেয়। টাকার ব্যাগটা অরূপদা ওকেই রেখে দিতে বলেছে। পরের গাড়িটাই আমাকে এখানে নিয়ে আসে। “ অদিতির ভুরু কুঁচকে গেছে। বলল “ টাকার ব্যাগটা ছেলেগুলো তোমার জ্ঞান হারানর পর গাড়িতেই রেখে চলে গেল? (তারপর কি ভেবে বলল) সোনা অনেক যুদ্ধ করে এসেছ। এইবার ঘুমাও। আবার কাল কথা হবে। আমার এই বন্ধু তোমাকে বাঁচিয়ে দিয়েছে। কিন্তু পরের কয়েকদিন একদম ছোটাছুটি বা দস্যিপনা নয়।“ ওর হাতে ইঞ্জেকশন বিঁধিয়ে দিল। মেয়েটা আবার ঢলে পড়ল নেশাহীন জগতের কোনও এক কোণে। আমি কিছু বলার আগেই ও শ শ শ করে আমাকে থামিয়ে দিল। মেয়েটা যে বেঁচে গেছে, এই খবরটা বাইরে দিতেই যেন সবার মধ্যে নতুন জোশ ফিরে এলো। মেয়েটাকে ভীষণ আদর করে ধরাধরি করে ওর ঘরে নিয়ে যাওয়া হল।

আলিদাও দাঁড়িয়ে আছে ভিড়ের মধ্যে। আমাদের সাথে চোখা চুখি হতেই আমাদের আড়ালে চলে আসতে ইশারা করলো। আমরা সবার আলিঙ্গন বাঁচিয়ে সবার আন্তরিক ধন্যবাদ গায়ে মেখে ভিড় থেকে বেড়িয়ে এলাম। বেড়িয়ে আসার পর অদিতি একবার আমার দিকে আর তারপরেই একবার পিছন দিকে ফিরে বলল “এদের ছোঁয়া থেকে নিজেকে বাঁচাস না, অন্তত আজকের দিনে। একমাত্র এরাই সৎ। এদের শুভকামনাই আমাদের বাঁচতে সাহায্য করবে। এদের ভালোবাসা আমাদের কাছে বরদানের মত। কারণ কি জানিস? এদের কোনও স্বার্থ নেই।“ আলিদা আমাদের ওর দিকে এগিয়ে আসতে দেখে নিজেই এগিয়ে এলো। চারপাশটা দেখে নিয়ে একটা কাগজ আমাদের হাতে গুঁজে দিয়ে যেন কিছুই হয় নি এইভাবে চলে গেলো। অদিতি চাপা স্বরে বলল “খাবার পরে এসো। সবাইকে বলে দিও যে সব ঠিক আছে। “ ঘরে ফিরে এসেই অদিতি কাগজটা মেলে ধরল। প্রায় বাইশটা মেয়ে আছে এখানে যাদের নামের আদ্যাক্ষর “এ” দিয়ে। অদিতি আমাকে বলল “তুই বস। “ আমি একটু ঘুরে আসছি। বেরনোর আগে কাগজটা আমার হাতে দিয়ে হাতের ইশারায় বুঝিয়ে দিল সেটা লুকিয়ে ফেলতে। এই কৌতূহল চাপা যায় না। আমিও অদিতির পেছন পেছন দৌড়াচ্ছি। হাঁপাতে হাঁপাতে ওর পাশে দাঁড়াতে না দাঁড়াতেই ও চেঁচিয়ে একটা নাম ডেকে উঠলো। পাশে আলিদাও আছে। হাতে বন্দুক। আলিদার মুখ দেখে বোঝার উপায় নেই যে ও নিজেই এই নামের তালিকা আমাদের দিয়ে গেছে। একটা মেয়ে হাত তুলে বলল “হ্যাঁ দিদি।“ অদিতি হাত তুলে বলল “বেড়িয়ে এসো। “ পরের নামটা কিন্তু “এ” দিয়ে শুরু নয়। এরকম অনেক গুলো নাম ডেকে প্রায় ত্রিশটা মেয়েকে ও বাইরে বের করলো। “এ” “বি” “সি” সব মিশে গেছে। কিন্তু আমি, আলিদা আর অদিতি জানে কারা “এ”। পরে আমি ওকে জিজ্ঞেস করেছিলাম যে এতগুলো নাম তুই জানলি কি করে? ও বলেছিল “যেদিন প্রথম দিন দৌড়াতে গেছিলাম সেদিন যারা যারা পিছিয়ে পড়ছিল বা ফাঁকি মারছিল তাদের নাম ধরে রাকাদি ধমক দিচ্ছিল। তাই শুধু তাদের নামটাই মুখস্থ করে রেখেছি।“ আপাতত বর্তমানে ফিরে আসা যাক। ও আমাকে বলল “ স্যালাইন ইঞ্জেঙ্কস্ন দিয়ে দে। “ আমি তাই দিলাম। অদিতি বলে দিল যে “ তোমাদের এটা নেওয়া খুব দরকার ছিল। আগে ভাগে দিয়ে দিলাম। “ ওরা সবাই মাঠে ফিরে যাওয়ার পর আলিদা বলল “কি বুঝলে বলবে?” অদিতি বলল “একটা বিঁড়ি দেবে? সোনা?” আলিদা একটু লাজুক মুখে ওর দিকে একটা বিঁড়ি এগিয়ে দিল। অদিতি উত্তর দিল অনেকক্ষণ ভেবে। “একটু ভেবে দেখতে হচ্ছে। আগেই বলে নি কেন বলেছিলাম যে অরূপদার জীবন বিপন্ন। ক্যাম্পে যে কোনও চর আছে সেটা কালকের ঘটনার পর আমরা সবাই জানি। তার অর্থ আজ না হোক কাল ক্যাম্পের লিডারের ওপর যে হামলা করবে সেটা খুব সহজেই অনুমেয়।(ভালোই নাটক চালিয়ে যাচ্ছে মেয়েটা, অদ্ভুত অকাট্য যুক্তি দিল।) শুরুটা করল একজন দুর্বল রুগ্ন মেয়েকে দিয়ে। সুজাতাকেও টার্গেট করতে পারত, কিন্তু হতে পারে ওর ঘরে হয়ত অন্য কেউ ছিল। ঠিক জানি না। অরূপদার সাথে এখন কেউ না কেউ তো থাকবেই। আর অরূপদা এখন নিশ্চই গা ঢাকা দিয়ে থাকবে। কালকের ঘটনা দেখে মনে হচ্ছে যে খুনি আরও একজন সফট টার্গেট বাছবে আজ।(আলিদা বোধহয় আবার জানতে চাইত যে এই “এ” এর ব্যাপারটা আমরা জানলাম কি করে, কিন্তু তার আগেই অদিতি ওকে প্রায় পাত্তা না দিয়ে বলে উঠলো) আজ এই “এ” কে বাঁচাতেই হবে আমাদের।“ আমরা যা জেনেছি তারপর অরূপদাও টার্গেট এই কথাটা শুনে একটু হাঁসিই পেয়ে গেল। অদিতি কিছুক্ষণ শূন্য দৃষ্টিতে দূরে অনুশীলনরত মেয়েগুলোর দিকে শূন্য দৃষ্টিতে খানিকক্ষণ চেয়ে থাকল। ওর মুখটা কেমন জানি বিষাদে ভরে গেল। ধীরে ধীরে উঠে দাঁড়িয়ে আলিদার হাত আমার সামনেই চেপে ধরে বলল “একটা কথা দেবে? যদি কোনও দিন তেমন সুযোগ আসে তবে আমাকে একবার এইসব কাজে যাবার সুযোগ দেবে? চিন্তা করো না পালাব না। যাদের সাথে আছি তারা কতটা ঝুঁকি নেয় সেটা একবার নিজে অনুভব করতে চাই।“ আলিদা বলল “এসব জায়গায় যাদের পাঠানো হয় তারা সবাই বন্দুক চালাতে পারে। ছুরি চালাতে পারে। আত্মরক্ষা করতে সবাই পাকা। প্রয়োজন হলে অন্যের বুকে ছুরি বিঁধিয়ে দিতে বা কাউকে গুলি করে মেরে ফেলতেও তারা পিছপা হবে না। তবে নেহাত তেমন বিপদে পড়ে কোণঠাসা হয়ে না পড়লে অযথা খুন করা বারণ সবাইকে। ব্ল্যাকমানির ভয়ে কোনও একটা লোক মুখ বুজে থাকতে পারে, কিন্তু ঘরে ডেড বডি আবিষ্কার হলে সারা বাংলা সেই খবর জেনে যাবে। হুলস্থূল পড়ে যাবে।“

অদিতি তবুও বলল “আমরা বন্দুক চালাতে পারি না তো কি? সেদিন তুমি আমাদের সাথে যাবে।” ওর গলায় আন্তরিকতা ঝরে পড়ছে। আলিদা বলল “আমি যাবো। কিন্তু অদিতি, ঘরের মধ্যে সেই কাস্টোমারের সামনে একা তুমিই থাকবে। যদি তেমন কোনও বিপদ হয় তো তোমাকেই মোকাবিলা করতে হবে। “ অদিতি তবুও দমবার পাত্র নয়, “আলিদা এইগুলো বোকা বোকা যুক্তি। আমি যদি অরূপদার জায়গায় থাকতাম তাহলে কিন্তু অন্য রকম প্ল্যান করতাম।“ আলিদা একটু ভুরু কুঁচকে অদিতির দিকে তাকাল। অদিতি হেঁসে বলল “খুব সোজা একটা উপায় আছে। আমার ধারণা তাতে ঝুঁকি আরও কম। অন্তত সীমার মতন কেস হত না।“ “কি প্ল্যান করতে তুমি?” আলিদার গলায় অবজ্ঞার সুর। অদিতি বলল “ধরে নাও আমি মারামারি করতে পারি না। কিন্তু আমি গেছি ওরকম কোনও এক ঘরে কাস্টোমারের কাছে। অল্প কিছু আলাপের পর আমি কোনও একটা কিছুর অর্ডার দিতে বলব আমার কাস্টোমারকে, হয়ত কোনও পানীয় বা কোনও একটা খাবার। এইসব সময় ছেলেরা যে কোনও কিছুতেই আপত্তি করে না সেটা নিশ্চই তুমি জানো। আমি ঘরে যাওয়ার কিছুক্ষনের মধ্যেই ঘরের বাইরে গিয়ে হাজির হবে আমাদের দলের আরও দুজন। একটু সময় মেপে দরজায় টোকা। লোকটা ভাববে যে অর্ডার নিয়ে বেয়ারা এসেছে। দরজা খুলতেই দুজনে ঘরে ঢুকে কপালে বন্দুক ঠেকিয়ে তাকে বশ করে তার সব জিনিস লুট করে নেবে। শেষে ছেলেটাকে বেঁধে রেখে অবশ করে চলে আসবে। ব্যস কেল্লা ফতে। ভেবে দেখ এক্ষেত্রে আমাকে ওই ছেলেটার সাথে শুতেও হল না, ছেলেটার দুর্বল মুহূর্তের জন্য অপেক্ষাও করতে হল না। যা হবে সোজাসুজি। আর এক জনের জায়গায় তিন জন থাকলে, আর তার মধ্যে যদি তোমার মত শক্তিশালী পুরুষ থাকে তাহলে রিস্ক অনেক কম।“ আলিদা হো হো করে হেঁসে উঠলো অদিতির কথা শুনে। আমার কিন্তু বেশ মনে ধরেছে অদিতির এই প্ল্যান। এই বেশ্যার মতন কারোর বিছানায় গিয়ে শোয়াটা আমার চোখেও খুব খারাপ। আলিদা মাথাটা দুপাশে নাড়তে নাড়তে অদিতি কে বলল “তুমি কি ভেবেছ এইসব আমরা কেউ কোনও দিনও ভেবে দেখি নি?তোমার মাথায় প্রথম এলো এই প্ল্যান?” আরও কিছুক্ষণ হো হো করে হেঁসে নিজেকে সামলে নিয়ে অদিতি কে বলল “তোমার প্ল্যানই যদি ধরে নেওয়া হয় তাহলে তার থেকেও সহজ উপায় আছে অনেকগুলো। বলি?” অদিতির এই তাচ্ছিল্য ভরা হাঁসিটা ঠিক পছন্দ হয় নি। একটু জেদের স্বরেই বলল “বলে ফেলো।“ আলিদা ওর মাথায় “একটু আদর করে হাত বুলিয়ে দিয়ে বলল “রাগ করো না। পুরো কথাটা আগে শুনে নাও। তোমার প্ল্যানের মত লুট করতে হলে কোনও একটা মেয়ে পাঠানোরই বা কি দরকার? দুজন ছেলে চলে যাবে, বা দুজন মেয়েও বন্দুক হাতে চলে যেতে পারে। দরজায় টোকা। লোকটা দরজা খুলবে। মাথায় বন্দুকের নল। ব্যস, বাকিটা তুমি যেমন বললে ঠিক তেমন হবে। কি ঠিক বলি নি?”



[/HIDE]
 
[HIDE]

27

আমি সত্যি একটা গবেট। ওরা যে যা বলছে সেটাকেই আমি ঠিক বলে মেনে নিচ্ছি। সত্যি তো, তাহলে কোনও মেয়েকে ওই ঘরের ভেতর কল গার্লের মতন পাঠানোর দরকারই বা কি? এমনি যে কেউ গিয়ে ঘরে ঢুকে লুট করে নিতে পারে। আলিদা আমার মনের কথাই যেন লুফে নিয়ে বলল “বোকার মতন কথা বলবে না অদিতি। তাহলে যে কোনও ঘরে যে কাউকে পাঠিয়ে দিয়ে আমরা লুট করে নিতে পারি। আর যখন করবই তখন শুধু একটা ঘরে কেন। একের পর এক সব কটা ঘরে গিয়ে সবাইকে লুট করে নেব একই বারে। কেউ কিছু করতে পারবে না কারণ লুট করার আগে ঘরে যারা আছে তাদের সবাইকে হাত পা মুখ বেঁধে ফেলে রাখব। এক দিনে একটা হোটেলর একসাথে দশটা ঘরে ডাকাতি করে আমরা রেকর্ড গড়ব।“ ওর গলায় ব্যাঙ্গের সুরটা ভীষণ জোরালো হয়ে উঠেছে। আবার হো হো করে হেঁসে লুটিয়ে পড়ল আলিদা। অদিতির আঁতে ঘা লেগেছে। ও মুখ বুজে অপমান সহ্য করে চলেছে। আলিদা বলে চলল “ যদি এতই সহজ হয়, তাহলে হোটেল ব্যবসাই উঠে যাবে। কোনও হোটেলে গিয়ে কোনও গেস্ট থাকবে কেন? তাদের সিকিওরিটি কোথায়?” একটু থেমে বলল “আর সত্যি যদি এই ভাবে লুট হওয়ার পর কেউ হোটেলের নামে কমপ্লেন করে তো সেই হোটেলের নামে যা বদনাম হবে সেটা নিশ্চই তোমার মতন বোকাকেও বুঝিয়ে বলতে হবে না। হোটেলের ম্যানেজমেন্টকে যে খেসারদ দিতে হবে আর পুলিশি ঝামেলাও পোহাতে হবে সেটাও নিশ্চই খুব সহজে অনুমেয়। (একটু থেমে আবার ওর মাথায় হাত বুলিয়ে দিয়ে আলিদা বলল) একটা জিনিস বুঝে নাও, হোটেলগুলো, শুধু তোমাকে মাথার ওপর ছাদ, শোয়ার বিছানা, স্নানের জায়গা আর খাবার দিচ্ছে বলে তোমার থেকে পয়সা নিচ্ছে না। আরও একটা জিনিস তোমাকে দিচ্ছে ওরা, যেটা বিলে লেখা থাকে না। যেটা সব জায়গার নিয়ম। সেটা হল সিকিওরিটি। আর হোটেল যত বড় তার সিকিওরিটির বন্দবস্ত তত কড়া। আর সে বন্দুক দেখিয়েই লুট করি বা এখন যেমন ভাবে করছি সেইভাবেই লুট করি, এই পুরো ব্যাপারটাতে যে ভয়ানক রিস্ক আছে সেটা তো বোঝো? তাই খুব বড় মাল হাতে লাগার সম্ভাবনা না থাকলে আমরা রিস্ক নেব কেন? আর তেমন শাঁসালো খদ্দেররা যে বড় বড় বিশ্বস্ত হোটেলেই উঠবে সেটাও নিশ্চই তোমার মতন বোকাকে বলে দিতে হবে না।“ অদিতির মুখ দেখে বুঝতে পারছিলাম যে দাঁতে দাঁত চেপে সব অপমান গিলে নিচ্ছে। এতবার “বোকা” কথাটা শোনার পর আমার মাথাও ঠিক থাকতো কিনা কে জানে। অদিতি শুধু একটাই কথা বলল “তাহলে এই অপরিচিত মেয়েগুলোই বা যায় কি করে ঘরে?”

আলিদা বলল “ওদের চেনা জানা এজেন্ট থাকে। কখনও সখনও হোটেলের বেয়ারাদের মাধ্যমে কন্ট্যাক্ট করে এইসব এজেন্টদের সাথে। এজেন্টরা গিয়ে দেখা করে কেমন মেয়ে লাগবে ইত্যাদি সব পাকা করে। এজেন্টদের ঘরে নিয়ে আসার পারমিশন সেই কাস্টোমারই দেবে, নইলে এজেন্টও সেই ঘরে যেতে পারবে না। মনে রেখো অধিকাংশ ক্ষেত্রে ফোনে এইসব কথা ওরা বলে না। কারণ কেউ যদি ওপর প্রান্তে দাঁড়িয়ে ওদের কথা শুনে ফেলে বা কল রেকর্ড করে নেয় তো সর্বনাশ হয়ে যাবে। পরের দিনের খবরের কাগজে এই খবর ফলাও করে ছাপা হয়ে যাবে। এক্ষেত্রে বলে রাখি, এজেন্ট বাইরে গিয়েও এইসব কথা লিক করতে পারে। কিন্তু তখন এজেন্টের হাতে কোনও প্রমাণ নেই। তাই কিছু প্রমাণ হবে না। খবরের কাগজ এসব জিনিস ছাপালে ওদের বিরুদ্ধে মানহানির মামলা হয়ে যাবে। তোমাদের এত বুঝিয়ে বলছি যাতে তোমরা বুঝতে পারো যে এইসব কাজের জটিলতা কত বেশী।“ একটা বিঁড়ি ধরিয়ে টান দিয়ে আলিদা বলে চলল “এজেন্ট গিয়ে কেমন মেয়ে লাগবে, কেমন বাজেট সব জেনে আসে। বাইরে গিয়ে মেয়ে ঠিক করে আসে। তারপর আবার হোটেলে গিয়ে দেখা করে লোকটাকে জানাবে যে মেয়ে রেডি। টাইম ফিক্স হয়ত আগেই করা থাকে বা তখন করে আসে। মনে রেখো এইবারও লোকটার অনুমতি পেয়েই এজেন্ট ওর ঘরে যাওয়ার সুযোগ পায়। আর যতবারই যাবে ততবারই হোটেলের খাতায় গেস্ট হিসাবে তাকে সাইন করতে হয়। আর রিসেপসনে রাখা সিসিটিভি ক্যামেরাগুলো ওর ছবি রেকর্ড করে রাখে। অবশ্য এইসব বড় বড় হোটেলে সিসিটিভি ক্যামেরা সর্বত্রই থাকে। “ আরেকটা টান দিয়ে অদিতির বিঁড়িটাতে অগ্নি সংযোগ করে দিয়ে আলিদা বলে চলল “অচেনা কোনও লোক হোটেলে ঢুকলে তার ব্যাগ ইত্যাদি সব ভালো করে চেক করা হয়। সুতরাং বন্দুক, ছুরি এইসব নিয়ে ঢোকার কোনও প্রশ্ন ওঠে না। আমরা সহজ কথায় বলে দি যে এত নম্বর ঘরে যেতে হবে। কিন্তু আরেকটু খোলসা করে বলতে গেলে বলতে হয় যে অধিকাংশ ক্ষেত্রে, বা বলা ভালো শতকরা ৯৯.৯৯% ক্ষেত্রে এই কাস্টমাররা নিজেরা নিচে নেমে এসে বা নিজেদের কোনও বডি গার্ড থাকলে তাকে হোটেলের নিচে পাঠিয়ে মেয়েটাকে রিসিভ করে ভেতরে নিয়ে যায়, অবশ্য এজেন্টদের উপস্থিতিতে। যেহেতু গেস্ট নিজেই বা তারই কোনও লোক মেয়েটাকে রিসিভ করে নিল তাই তাকে সাইন করতে হয় না। এতে আমাদের থেকে এদের বেশী স্বার্থ। মানে মেয়েটা যত কম লোকের মুখোমুখি হয় ততই ওদের সুবিধা। তবে যদি কোনও ক্যামেরায় মেয়েটার ছবি উঠে গিয়ে থাকে তো কিছু করার নেই। ও হ্যাঁ আরেকটা কথা বলা অবান্তর যদিও, তবুও বলে রাখছি, বড় বড় হোটেলের সিকিঅরিটিগুলোর কাছে ভালো ভালো ফায়ার আর্মস থাকে যেগুলো আমাদের থেকে অনেক বেশী আধুনিক। “ আধ খাওয়া বিঁড়িটা ছুঁড়ে ফেলে দিয়ে বলে চলল “এর পর থেকে মেয়েটা একা হয়ে যায়। অনেক সময় শুনে থাকবে ভেতরে আমাদের চেনা লোক মিশে থাকে, কিন্তু সমস্যা হল যতই বিপদে পড়ি না কেন ওকে কিছুতেই সামনে আসতে দেওয়া যাবে না। তাহলে হোটেলের বেসটাই আমাদের ধসে যাবে। সে যতটা পারবে আড়ালে থেকে আমাদের সাহায্য করে, কিন্তু পারতপক্ষে নিজে সামনে আসে জড়িয়ে পড়ার ভয়ে। মেয়েরা কাজ হয়ে যাওয়ার পর যখন পালায় তখন তাদের দেখেও না দেখার ভান করে মাত্র, বা তাদের এক্সিট প্ল্যানে হেল্প করে। তবে কোনও গরবর না হলে এদের অধিকাংশ ক্ষেত্রে কোনও ভূমিকাই থাকে না।“ আরেকটু থেমে নিয়ে বলল “আমাদের বন্দুক হাতে ওখানে ঢোকার কোনও প্রশ্নই ওঠে না। আর যদিও ঢুকতেও পারি তাহলেও আরেকটা সমস্যা আছে। “ একটু থেমে হঠাত পাশে রাখা দোনলা বুন্দুকটা তুলে নিয়ে ও অদিতির কপালের ওপর ঠেকিয়ে ধরল। অদিতি আর আমি দুজনেই কেমন যেন ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে গেছি। কিন্তু তৎক্ষণাৎ অদিতি দেখলাম স্বাভাবিক রিফ্লেক্সে এক মুহূর্তে ওর বন্দুকের নলের মাথাটা উপরে তুলে নিজের কপালের ওপর থেকে সরিয়ে চেপে ধরেছে। আলিদার হাত শিথিল হতে ও নিজেও হাত সরিয়ে নিল বন্দুকের নলের ওপর থেকে। আলিদা হেঁসে বলল “তুমি এক্ষুনি যেটা করলে সেটাই তার উত্তর। একটা মানুষ দুর্বল হলেও সে নিজের প্রান বাঁচানোর তাগিদে আর সাধারণ রিফ্লেক্সের বশে কি করতে পারে সেটা আগে থেকে অনুমান করা বেশ শক্ত। যদি ঝাঁপিয়ে পড়ে, বা আচমকা পালিয়ে যায়, বা চাপাচাপিতে আচমকা গুলি বেড়িয়ে যায়, মানে কি হবে কেউ জানে না। সেক্ষেত্রে সবাই ধরা পড়ে যাবে পালানোর আগেই। এখন আমরা যেভাবে কাজ করি তাতে মেয়েরা গাড়ি চড়ে পুরো সেফ ডিসটেন্সে পৌঁছানো অব্দি বোধহয় কেউ জানতে পারবে না যে বন্ধ ঘরের মধ্যে কেউ হাত পা বাঁধা অবস্থায় পড়ে আছে। নইলে আমাদের কোনও ইচ্ছে নেই এই মেয়েগুলোকে দিয়ে এইসব নোংরা কাজ করানোর। “ অদিতি ভুরু কুঁচকে মাটির দিকে তাকিয়ে আছে এক দৃষ্টে। আলিদা আমাকে বলল “তোমার বন্ধু কিন্তু ঠাট্টায় খুব রেগে গেছে। কিন্তু তোমাদের কোনও দোষ নেই। আমিও অরূপদাকে বলেছিলাম এরকম প্ল্যানের কথা। তখন অরূপদা আমাকে ফিল্ডে নিয়ে গিয়ে যখন দেখালেন তখন বুঝতে পারলাম যে ব্যাপারটা যতটা সোজা ভাবতাম ততটা সোজা নয় মোটেই। আমরা যখন কোনও কাজ করি তখন সব কিছুর পেছনে নিশ্চই একটা বাস্তবিক কারণ আছে সেটা জেনে রেখো। এমনি এমনি কিছুই করি না আমরা। বাড়তি কাজ মানেই বাড়তি ভুল হবার সম্ভাবনা আর বাড়তি ভুল মানেই আমাদের ক্ষেত্রে বাড়তি রিস্ক।“ আলিদা উঠে পড়ছিল, অদিতি আলিদার দিকে তাকিয়ে বলল “উঠছ?” আলিদা বলল “হ্যাঁ শুধু তোমাদের পরিস্থিতির জটিলতা বোঝালেই চলবে। অনেক কাজ আছে আমার।“ অদিতি বলল “ আমি মোটেও তোমার ওপর রাগ করি নি। কিন্তু ব্যাপারটা সত্যি এত সোজা নয় সেটা এখন বুঝতে পেরেছি। তাও বলছি আমাদের একটু বন্দুক চালানো শিখিয়ে দিও।“ আলিদা হেঁসে তৎক্ষণাৎ হাক পাড়ল “রাজু”।

না হল না আমাদের দ্বারা। না অদিতি না আমি কেউ বন্দুক চালানো শিখতে পারলাম না। আমার হাত এত কাঁপছে যে বন্দুক স্থির ধরে রাখতে পারছি না। আর অদিতি আমার থেকে একটু বেশী কেত নিয়ে বন্দুকটা তুলেছে বটে কিন্তু ওই ছোট জিনিসটাকেও সে ঠিক বাগে আনতে পারছে না। আমাদের চারপাশে দাঁড়ানো মেয়েগুলো আমাদের দেখে হেঁসেই চলেছে। এত সহজ জিনিস আমরা করতে পারছি না দেখে ওদের মশকরা করার অন্ত নেই। রাকা অনেক বার ওদের চুপ করতে বলল। কিন্তু ওদের থামানোই যায় না। আর এতে কনফিডেনস আরও নেমে যায়। অদিতি হাত থেকে বন্দুক রেখে বলল “আলি দা অন্য কিছু শেখাও। “ এটা তেইশ তারিখের বিকেলের ঘটনা। আলি দা আমাদের হাতে ধারালো ছোরা ধরিয়ে দিল। আমি ছুরি ধরেছি, কিন্তু এইটা? অদিতিকে দেখে তাও কিছুটা এদিক ওদিক ঘুরিয়ে রপ্ত করার চেষ্টা করলাম। কিন্তু না। কিছুই যে শিখতে পারলাম না সেটা বেশ বুঝতে পেরেছি। অদিতি কে বললাম “কিছু শিখলি?” ও মাথা নেড়ে বুঝিয়ে দিল না। একটু থেমে আবার ওকে বলতে বাধ্য হলাম “আচ্ছা? আমাদের এইসবের মধ্যে যাবার কি কোনও দরকার আছে?” ও আমার প্রশ্নটাকে এড়িয়ে গিয়ে এমন একটা অবান্তর কথা বলল যে আমি তার মাথা মুণ্ডু কিছুই বুঝতে উঠতে পারলাম না, ও বলল “নাহ। আজ আমার ওপর আক্রমণ হলে আমি নিজেকে বাঁচাতে পারব না। কিন্তু আক্রমণটা যদি একটু অন্য জায়গায়, অন্য পরিস্থিতিতে হয় তো এক হাত নেওয়া যেত।“ আমি বললাম “কি সব আজে বাজে বলছিস? “ ওর হুঁশ ফিরতে বলল “দূর। ভয় পাচ্ছি বলে এসব বলছি। “ একটু থেমে বলল “ আমরা যেতে চাইলেই যে যেতে দেবে সেটা তোকে কে বলেছে? কিন্তু মন কি বলছে জানিস? একবার না একবার আমাদের মধ্যে কাউকে যেতেই হবে গ্রিন হোটেলের ঘরে। কোলকাতায় স্টার হোটেলে হয়ত আমাদের যাবার সুযোগ হবে না। তাই আলিদাকে জানিয়ে রাখলাম যে আমাদের দুজনের কারোরই যাবার কোনও আপত্তি নেই।“ একটু থেমে জিভ কেটে বলল “সরি, আমি শুধু আমার কথাই বলেছি। তোর ব্যাপারটা সম্পূর্ণ তোর নিজস্ব। তবে এখান থেকে বেরোতে না পারলে পালাতেও পারব না। কিন্তু সমস্যা একটাই।“ সমস্যাটা যে কি সেটা ওকে জিজ্ঞেস করার আগেই ও আমাকে বলল “তুই এখানেই বসে থাক বা গিয়ে ওদের ট্রেনিং দেখে কিছু শিখে নে। আমি আসছি। আমার পেছন পেছন আসিস না। সব সময় এইভাবে চোরের মতন ঘুর ঘুর করাটা ভালো দেখায় না।“ প্রায় সাত মিনিট পরে ও ফিরে এলো। আর তার কিছুক্ষণ পরে আলিদা আবার ঘর্মাক্ত শরীর নিয়ে এসে আমাদের পাশে বসে পড়ল। আলিদার গলা এইবার বেশ গম্ভীর শোনালো। “ “এ” দিয়ে যে কেউ মারা যাবে সেটা তোমরা জানলে কি করে এইবার কি আমাকে বলবে? কারণ সেটা না জানলে কি করে তাকে রক্ষা করব সেটাই ঠিক বুঝতে পারছি না। আর খুন এখানে হবে ...।“ অদিতি হাত তুলে ওকে থামিয়ে দিয়েছে। চাপা গলায় বলল “আমার সাথে এসো। “ আমি আর আলিদা ওর পেছন পেছন আমাদের ঘরে ফিরে এলাম। ও চারপাশটা একবার দেখে নিয়ে শাড়ির আঁচলের ফাঁক দিয়ে একটা চিরকুটের মতন কাগজ বের করে আলিদার হাতে ধরিয়ে দিল। “এটা আমার হাতের লেখা না।“ আলিদা আর অদিতি দুজনেই একসাথে বলল। আমি কাগজটার উপর ঝুঁকে পরে দেখে নিলাম যে কি লেখা আছে, তবে মুখে বললাম না যে এটা আমারও হাতের লেখা নয় কারণ সেটা বলা অবান্তর। “বাঙলায় লেখা ২২ এ “স” আর তেইশে “এ”” লেখা আছে কাগজটাতে। আলিদা কাগজতা নিজের ফতুয়ার পকেটে পুড়ে দিয়ে বলল “এটা পেলে কোথায়?” অদিতি বলল “আমি পাই নি। ও পেয়েছে।“ আমি তো রীতিমত থতমত খেয়ে গেছি। আমি অদিতির মতন এরকম মুখের উপর মিথ্যে কথা বলতে পারি না। আর নাটকও করতে পারি না। অদিতিই বলে দিল “ও একদিন রান্নায় হেল্প করতে গিয়েছিল। সেদিনই ওখানে পাশে কুঁড়িয়ে পেয়েছে। আমরা ভেবেছিলাম এটা কোনও গোপন সংকেত তাই এর মানে উদ্ধার করার চেষ্টা করছিলাম। কাল সীমার খুন দেখে বুঝতে পারলাম যে এর অর্থ হল বাইশ তারিখে “স” দিয়ে কেউ খুন হবে। যদিও তখন আমি বলেছি যে সীমা না হয়ে সুজাতাও হতে পারত, তবে এখন বলছি যে আমার ধারণা নামটা আগেই ঠিক করে জানানো ছিল খুনিকে। শুধু কাকে কবে খুন করবে সেটাই এই চিরকুটে লিখে দেওয়া হয়েছে।“ আলিদা আরও গম্ভীর ভাবে বলল “তাহলে একথা সেদিন বল নি কেন?” অদিতি এক ফোঁটাও না ঘাবড়ে বলল “সীমার মৃত্যুর আগে অব্দি আমাদের পালানোর ইচ্ছে ছিল। এখনও যে একেবারে নেই তেমনটা একবারও বলছি না। কিন্তু সীমাকে আমরা বাঁচিয়েছিলাম। ওর সাথে আমাদের ভালো বন্ধুত্ব হয়ে গেছিল। ওর সাথে যা হল সেটা আমাদের খুব গায়ে লেগে গেছে। এর আগে আমরা নিজেদেরই স্বার্থে যেখানে যা দেখতে পাচ্ছিলাম সে গুলো বিশ্লেষণ করার চেষ্টা করছিলাম। আর কিছুই না। আর তাছাড়া এটা যে সাংকেতিক কথা সেটা তো নিশ্চিত। ভেবেছিলাম এটাতে নিশ্চই কোনও সিরিয়স কিছু লেখা আছে। মানে উদ্ধার করতে পারলে যদি আমাদের লাভ হয়। কিন্তু সরি, এটা জানিয়ে দেওয়া উচিত ছিল।“ আলিদা ওর হাত চেপে ধরে বলল “তোমাদের কোনও দোষ আমি দেখি না। তোমরা জানো না এখানে সবাই তোমাদের খুব ভালবাসতে শুরু করে দিয়েছে। তোমরা চলে গেলে আমরা দুঃখই পাব। কিন্তু এটাও সত্যি আরও দুজন খুঁজে পেলেই তোমাদের সেফ কোথাও গিয়ে রেখে দিয়ে আসব আমরা। এখন এইসব অযথা চেষ্টা করে নিজেদের বিপদ ডেকে এনো না। আর তোমাদের সরি হওয়ার কোনও কারণ নেই। যদি রুমির জায়গায় আমিও এই কাগজটা পেতাম আমিও হয়ত এর কোনও মানে উদ্ধার করতে পারতাম না। লাফালাফি করতাম আর তাতে হয়ত খুনি আরও সতর্ক হয়ে যেত। সীমার মৃত্যু তাতে আটকানো যেত কি না সেটা বলা অসম্ভব, হয়ত এত লাফালাফি সত্ত্বেও ওকে মরতে হত। আর তাছাড়া কি নিয়ে সতর্ক হতে হবে সেটাই তো বুঝতে পারতাম না। তোমরা আর এই নিয়ে কিছু ভেব না। অরূপদা আসার পর ওকে সব কথা খুলে বলতে হবে।“ অদিতি ফস করে বলল “আগে যদিও বলেছি যে অরূপদাকে এখন জানালে ও যদি বাড়তি কিছু করে বসে তো সব গরবর হয়ে যেতে পারে, মানে খুনি সতর্ক হয়ে যেতে পারে, কিন্তু রাতের দিকে যত এগোচ্ছি ততই যেন মনে হচ্ছে লিডারকে এই কথাটা না জানিয়ে বোধহয় আমরা খুব ভুল করছি। অরূপদাকে পারলে এখনই ফোন করে জানিয়ে দাও।“ আলিদা হেঁসে বলল “তোমার কি মনে হয় যে তুমি বারণ করেছ বলে আমি অরূপদাকে জানাচ্ছি না? দূর পাগল। আমি আগেই জানিয়ে দিতাম। কিন্তু নিয়ম হল ফিল্ডে যারা গেছে তারা নিজেরা অবস্থা বুঝে ফোন না করলে এখান থেকে ফোন করা হবে না। সবার সিকিওরিটির কথা ভেবে এই ব্যবস্থা।“ অদিতি বলল “আজ রাতের জন্য একটা কিছু প্ল্যান করতেই হবে।“ সন্ধ্যা প্রায় ঘনিয়ে এসেছে। কিন্তু আজও আকাশে মেঘ থাকায় যেন একটু আগেই অন্ধকার হয়ে গেল। আলিদা একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে বলল “আজও মনে হচ্ছে বৃষ্টি হবে। বৃষ্টি হলে যে কি করব বুঝতে পারছি না। তবে একটা কিছু করতেই হবে। ভেবে দেখি দাঁড়াও।“ আলিদা ঘর থেকে বাইরে পাও ফেলেনি, বৃষ্টি শুরু হয়ে গেল। খুব জোড়ে না হলেও জলের ফোঁটাগুলো বেশ বড় বড়। বুঝতে পারলাম হয়ত আর কিছুক্ষণ পরেই বৃষ্টি নামবে। মোমবাতি জ্বালিয়ে দিলাম। এখানে ঘরের ভেতরগুলো অদ্ভুত রকমের গুমোট। নইলে বাইরে এত হাওয়া দিলে জানলা খোলা রাখলে ঘরের ভেতর মোমবাতি জ্বালিয়ে রাখা মুশকিল হত। কিন্তু অদ্ভুত ভাবে দেখেছি, মোমবাতির আলো কিছুটা কাঁপলেও কোনও মতে ঠিক জ্বলে থাকে। অনেক বার মনে হয়েছে যে এই বুঝি নিভে গেল, কিন্তু না শেষ পর্যন্ত ওরা নেভে না। আলিদা ঘর থেকে বেড়িয়ে যেতেই আমি ওকে বললাম “তোর মতন ক্যালাস মেয়ে আমি জীবনে দেখি নি। এত সব কথা বলার কি দরকার ছিল? আর অরূপদাকে নিজের ডাকাতির প্ল্যান বোঝাতে গিয়ে আচ্ছাসে বোকা বনেছিস। ভালো খিল্লি উড়িয়েছে তোর।“ ও আমার কথায় কোনও পাত্তা না দিয়ে বিছানায় শুয়ে পড়ল অশ্লীল ভাবে ঠ্যাঙের ওর ঠ্যাঙ তুলে। শাড়ির ফাঁক দিয়ে খাটো শাড়ির ভিতরে যে সব কিছু দেখা যাচ্ছে সে দিকে ওর কোনও হুঁশই নেই।

“আমার মন কি বলছে জানিস? আজকেই একটা কিছু হেস্ত নেস্ত হবে।“ অদিতির মুখে এই কথা শুনে আমার মাথাটা প্রচন্ড গরম হয়ে গেল। বললাম “কিন্তু আলিদাকে এসব বলে কি তুই ঠিক করেছিস? পরে যদি আমাদের সন্দেহ করে। আর এখন লোকটা পুরো পুরি হোশে আছে সেটা ভুলে যাস না। আগের দিন মহুয়া আর আমাদের দুজনের শরীরের উত্তাপের মাঝে সেঁকতে সেঁকতে ওর হাল বেহাল হয়ে গিয়েছিল কিন্তু আজ...” ও আমাকে থামিয়ে দিয়ে বলল “আহ, তুই না একটা ইয়ে। কিছু না বুঝে বড্ড বাজে বকিস।“ বললাম “মানে?” ও বলল “মানে অনেক কিছু। আপাতত এই যে, আমার ডাকাতির প্ল্যান ওর সামনে বলার কোনও প্রয়োজন ছিল না। ওটা যে ভীষণ ছেলেমানুষি আর ইমপ্র্যাক্টিকাল একটা প্ল্যান সেটা বোঝার জন্য আলিদার অতগুলো জ্ঞ্যানের দরকার হয় না। যা বলেছি জেনে বুঝেই বলেছি। শুধু বুঝে নিলাম গ্রিন হোটেলের ভেতরে কে কে যেতে পারে মেয়েদের সাথে আর পুরো প্রসেসটা কেমন হয়। একটা ব্যাপারে নিশ্চিত হলাম যে অরূপদা ডিল করে আড়ালে থেকে। ওই এজেন্ট বা বেয়ারাটাই ডিল পাকা করে। আরেকটা কথা বুঝতে পেরেছি, মানে অনুমান করেছি, সেটা তোর এখন না জানলেও চলবে। আচ্ছা, তাছাড়া আরেকটা জিনিস জেনে খুব নিশ্চিন্ত হলাম যে আলিদা চাইলেও এখন অরূপদাকে এই কথাটা বলতে পারবে না। তবে সত্যি বলতে কি মাঝে মাঝে মনে হচ্ছে যে অরূপদা ব্যাপারটা জানুক, যে আলিদা আমি আর তুই ব্যাপারটা জেনে গেছি আর ওকে আমরা কেউ সন্দেহ করছি না।“ ওকে বললাম “একটু খুলে বললে কি তোর খুব পেট ব্যথা হয়?” ও বিছানা থেকে তড়াক করে উঠে পড়ে বলল “অনেক কাজ বাকি এখন। একটা কাজ কর, ঠিক কটা বাজে একবার জেনে এসে বলত।“ দেখলাম এই ভর সন্ধ্যা বেলায় ও আমাদের ব্যাগ খুলে রেজারটা বের করেছে। আমাকে বলল “হাঁ করে দাঁড়িয়ে থাকিস না। গিয়ে দেখ কটা বাজে। ঠিক কটা বাজে সেটা জানতে হবে। লোকের আন্দাজে বলা সময় শুনে ফিরে আসিস না। রাকাদি কে খুঁজে বের কর। ওর হাতে ঘড়ি আছে দেখেছি। (নিজের বা হাতটা মাথার উপর তুলে বগলের ওপর একবার হাত বুলিয়ে নিয়ে বলল) জায়গাগুলো নোংরা হয়ে যাচ্ছে এদের মতন। বৃষ্টি পড়ছে, বৃষ্টির জলে আমি ততক্ষণ শেভ করে নি। এখনও তেমন লোম গজায়নি। শুধু জলেই কাজ চলে যাবে।“ মেয়েটাকে নিয়ে সত্যি পারা যায় না। এখানে সবাই আন্দাজে মোটামুটি ঠিক ঠাক সময় বলে দিতে পারে। কিন্তু অদিতির কথা মতন আমি বৃষ্টি মাথায় করে বেরলাম রাকাদির খোঁজে। বেড়িয়ে যাওয়ার আগে শুনলাম ও বলছে “আর শোন। আলিদা বা কেউ যদি জিজ্ঞেস করে কোথায় যাচ্ছ বৃষ্টির মধ্যে তখন কি বলবি ভেবে রেখেছিস?” আমার ভ্যাবাচ্যাকা খাওয়া অবস্থা দেখে ও বলল “শোন, ভালো করে বুঝে নে, সবার সামনে কথা বলবি ভীষণ ক্যাজুয়াল। ঘর থেকে বেড়িয়ে প্রথমেই পাশের ঘরে যাবি। একদম স্বাভাবিক ভাবে জিজ্ঞেস করবি যে ওদের কাছে শ্যাম্পু আছে কি না। ওরা বলবে না। তুই তার পাশের ঘরে গিয়ে একই কথা জিজ্ঞেস করবি। মেয়েগুলো তোর খিল্লি ওড়াতে পারে, জাস্ট ইগনোর করবি। আলিদা জিজ্ঞেস করলেও লাজুক লাজুক মুখে বলবি ওই একই কথা। ও হ্যাঁ, রাজুকেও ওই একই কথা জিজ্ঞেস করবি যাবার আগে। এইবার ভালো করে শোন, রাকাদিকে দেখতে পেলে সাথে সাথে ওর সামনে গিয়ে হাজির হবি না। ওর সামনে তখনই যাবি যখন ওর ধারে কাছে কেউ আছে। রাকাদির আগে ওদের কে জিজ্ঞেস করবি সেই একই কথা আর এমন ভাবে করবি যেন রাকাদিও সেই কথা শুনতে পায়। (বোধহয় আমার মুখে বিরক্তি ফুটে উঠতে দেখে বলল) খুব বাজে আর বোকা বোকা লাগছে শুনতে, কিন্তু বোকাদের এখানে কেউ সন্দেহ করে না। তাই বোকা সেজে বোকা বোকা কথা বল। রাকাদিও হয়ত না বলে দেবে। তখন হতাশ হয়ে একথা সেকথা বলার পর জিজ্ঞেস করবি যে এখন কটা বাজে গো? এখানে তো সময়ের কোনও জ্ঞানই থাকে না। ব্যস সরে পড়বি।“ আমি আবার পা বাড়াতে যাচ্ছি আবার শুনলাম ওর আওয়াজ “কেউ যদি বলে যে এখানে কারোর কাছে শ্যাম্পু নেই, তাই খুঁজে কোনও লাভ নেই, তখন সাথে সাথে মুখটা বাংলার পাঁচের মতন করে ওকে ইগনোর করে আবার পরের লোকটাকে গিয়ে জিজ্ঞেস করবি। এক কথায় সবাই কে বুঝিয়ে দিস যে তুই একটা ইয়ে...।“




[/HIDE]
 
[HIDE]


28

অদিতির কথা মতন মাথার চুলে জট লেগে গেছে এই অজুহাত দেখিয়ে ঘরে ঘরে গিয়ে জিজ্ঞেস করতে থাকলাম যে কার কাছে পাওয়া যায় সেই ভয়ানক বস্তুটা। তবে কারোর না কারোর কাছে পাওয়া যাবে সেটা জানি কেন না এখান থেকে মেয়েদের কারোর ঘরে পাঠানোর আগে মাথায় শ্যাম্পু করানো হয়। তবে বুঝলাম কারোর কাছে শ্যাম্পু নেই। খুব বেশীক্ষণ লাগলো না, তিন নম্বর ঘরের থেকে বাইরে বেরোতেই রাকাদির দেখা পেলাম। উদাস ভাবে বাইরের দিকে চেয়ে বসে আছে একটা ঘরের সামনে। এখানে ওর ধারে কাছে কেউ নেই, আর তার ওপর ও আমাকে দেখেই আমাকে ডেকে কাছে আসতে বলেছে। ওকেও গিয়ে সেই একই কথা বললাম। শ্যাম্পু ওর কাছেও নেই। খুব প্রয়োজন ছাড়া শ্যাম্পু এখানে কেউ তেমন ব্যবহার করে না। তারপর অদিতি যেমন শিখিয়েছিল ঠিক তেমন ভাবে একথা সেকথা বলে হঠাত জিজ্ঞেস করলাম যে কটা বাজে। ও কিছু না ভেবেই সময় বলে দিল ঘড়ি দেখে। একটা কথা বলে রাখা ভালো যে আমরা নিজেদের ব্যাগ ফেরত পেয়েছিলাম ঠিকই কিন্তু তাতে কোনও ইলেকট্রনিক সামগ্রী ছিল না। মোবাইল যে ছিল না সেটা তো আগেই বলেছি। তার সাথে ঘড়ি অয়াক্ম্যান সব গায়েব ছিল। আরও কয়েক মিনিট একথা সেকথা বলে উঠবার সময় বললাম “এই কটা বাজে বললে যেন?” রাকাদি আবার সময় দেখে টাইমটা বলে দিল। “ছটা বেজে দুই।“ আমি হেঁসে ওর কাছ থেকে বিদায় নিলাম। ঘরে এসে দেখি অদিতি হাত বগল তলপেট সব শেভ করা শেষ করে এখন পা শেভ করছে আস্তে আস্তে। পা হয়ে যাওয়ার পর নির্লজ্জের মতন আমার সামনেই নগ্ন হয়ে বসে নিজের যোনীদেশের ওপর দিয়ে ভালো করে রেজার চালিয়ে দিল। মাঝে মাঝে জানলার সামনে দাঁড়িয়ে বৃষ্টির জল হাতে করে নিয়ে এসে জায়গাগুলোকে ভিজিয়ে নিচ্ছিল। নগ্ন ভাবে আমার সামনে দু হাত তুলে সোজা উঠে দাঁড়িয়ে আমাকে জিজ্ঞেস করল কোথাও কোনও লোম দেখছিস? আমি ভালো করে দেখে নিয়ে বললাম “না পরিষ্কার একদম।“ ও শাড়িটা গায়ে আলগা ভাবে জড়িয়ে নিয়ে চলে গেল কল পাড়ে। না স্নান করতে যায় নি। ভালো ভাবে রেজারটা ধুয়ে নিয়ে এসে বলল “যা তুইও পরিষ্কার হয়ে নে। আজ সময় পেয়েছিস। কাজে লাগা।“ আমি ওকে বললাম “তোর মতন এইভাবে বৃষ্টির ফোঁটা ফোঁটা জলে আমি করতে পারব না। আমার র*্যাশ বেড়িয়ে যাবে।“ তবে সুযোগ পেয়েছি যখন তখন করে নেওয়াই ভালো। ও আমাকে বলল “যা গিয়ে কল পাড়ে বসে ওই নোংরা সাবান গুলোর ফ্যানা লাগিয়ে করে আয় তাহলে।“ আমি ওকে বললাম “গুড আইডিয়া। কিন্তু আমি স্নান করার সময় করব। এখন না।“ ও বলল “যা না কল পাড়ে গিয়ে বসে করে নে। ওখান থেকে অঞ্জনার ঘরটা ভালো দেখা যায়। একটু নজরও রাখতে পারবি যে কেউ ওর ঘরের সামনে ঘুর ঘুর করছে কি না। আর আমি একটু রান্নার দিকে যাব। হ্যাঁ একটা কথা, শুধু অঞ্জনা নয়, একটু খেয়াল করার চেষ্টা করবি যে কেউ তোর মতন বাইরে ঘোরাঘুরি করছে কি না।“ বললাম “তুই কি আমাকে অবসার্ভ করতে পাঠাচ্ছিস?” বলল “হ্যাঁ। যা দেরী করিস না। তবে কাজ হয়ে গেলে বৃষ্টিতে বসে থাকার মানে নেই, ফিরে আসিস ঘরেই।“ বললাম “শালা তুই নিজেও তো গিয়ে করতে পারতিস।“ বলল “সোনা আমার আজ অনেক কাজ। এখন মাথা খাস না। যা তো যা বলছি কর। যদি পালাতে চাস তো মুখ খুলিস না।“ আমি কিছুই বুঝতে পারছি না যে ও ঠিক কি প্ল্যান করে রেখেছে। আজই কি আমরা পালাবো? না কি আমাকে ফেলে রেখে ও একাই পালাতে চাইছে? কিন্তু পালাবেই বা কি করে? কিছুই মাথায় আসছে না। ও দাঁড়িয়ে শাড়ি ঠিক করছিল। আমি ওর দিকে এক দৃষ্টে তাকিয়ে ছিলাম। ও আমার দিকে তাকিয়ে বলল “কি?” বললাম “তোকে আজ পুরো হেয়ালির মতন লাগছে। তোকে তখন জিজ্ঞেস করতে পারি নি, একটা কথা বল ওই কাগজটা তুই কখন পেয়েছিস?” ও বলল “কোন কাগজটা?” তারপর ভেবে বলল “তুই না সত্যি একটা ইয়ে। ওটা অরূপদারই প্যাডের কাগজে ভাঙ্গা ভাঙ্গা অক্ষরে, মানে যেন অন্য কেউ লিখছে সেই ভাবে কথাগুলো লিখে নিয়েছিলাম। মনে পড়ছে? তোকে বলেছিলাম যে একটা সমস্যা আছে। সেই সমস্যাটা হল আমরা আলিদাকে অরূপদার প্যাডের কাগজটা দেখাতে পারতাম না। কিন্তু ও এইবার চেপে ধরবেই। সেটাই বুঝে তোকে ওখানে বসিয়ে রেখে আমি ঘরে এসে একটা ছেঁড়া চিরকুটে কথাগুলো লিখে নিলাম। এটা তোর বোঝা উচিত ছিল।“ মনে মনে বললাম আমার সেটাই মনে হয়েছিল, কিন্তু এখন তোর হাব ভাব দেখে মনে সন্দেহ আসছে।

ও তাড়া দিয়ে বলল “যা দাঁড়িয়ে থাকিস না। বাইরে গিয়ে বসে একটু পরিষ্কার হয়ে নে আর সব কিছুর ওপর একটু নজর রাখিস। তবে বেশীক্ষণ বসে বসে বৃষ্টিতে ভিজিস না।“ আমি আস্তে আস্তে ঘর থেকে বেড়িয়ে এলাম। হঠাত ও এসে আমার ঘাড়ের ওপর হাত রেখে বলল “সব ঠিক থাকলে আজই আমাদের শেষ রাত এখানে। কিন্তু...।“ মুখে আঙুল ঠেকিয়ে বলে দিল যে আমি যেন কোনও আওয়াজ না করি। আমাকে আশ্বস্ত করে বলল “আমি একা পালাবো না। তোকে নিয়েই যাব সে কথা দিচ্ছি। তবে এখন কিছু বলবি না। পরিস্থিতি যেমন চলছে তেমনই চলুক। যদি মনে হয় ফেঁসে যাচ্ছিস, তবুও কোনও কিছুতে বাঁধা দিবি না। জাস্ট মুভ উইথ দা উইন্ড। ঠিক বের করে নেব। তবে মনে রাখিস একটা কথা, আমরা যদি সত্যি না পালাতে পারি তো এমন কিছু করা চলবে না যাতে এদের চোখে আমরা বিশ্বাসঘাতক হয়ে যাই। এরা ভীষণ সন্দেহপ্রবন। তাই বলছি ক্যাজুয়াল থাক আর হাওয়ার সাথে তাল মিলিয়ে চল। বিশ্বাস রাখ আমার ওপর। ভালো খারাপ অনেক কিছুই হতে পারে। কিন্তু যা করার অরূপদা ফেরার আগেই করতে হবে। আর আজকেই করতে হবে। “ ওর কথায় যেন একটা নির্ভেজাল বন্ধুত্ব আর আশ্বাসের স্বাদ পেলাম। মনটা অনেকটা হালকা হল। আমি এগিয়ে চললাম কল পাড়ের দিকে হাতে রেজার। ওই নোংরা সাবান দিয়েই আমাকে পরিষ্কার হতে হল। তবে সাবানের ফ্যানা থাকায় কোনও অস্বস্তি ফিল করি নি। তবে শেভ করার সময় নজর রেখে চলেছি চার পাশে। অমল একবার আমার কাছে এসে শেভ করছি দেখে মুচকি হেঁসে চলে গেল। তবে মনের কোণায় একটা ব্যথা রয়েই গেল। একটা মেয়ে খুন হয়ে গেল, আজ কি হবে জানি না, অরূপদা যে একটা ভণ্ড সেটা আমরা জানি, কিন্তু তাও মেয়ে হয়ে এতগুলো মেয়েকে অন্ধকারে রেখে দিয়ে চলে যাব। যতই ভাবছি ততই যেন নিজের কাছে নিজে ছোট হয়ে যাচ্ছি। আমি কোনও দিন পুলিশ নিয়ে এসে এদের ধরিয়ে দিতে পারব না। অবশ্য সে প্রশ্ন উঠছে যদি আমি আদপেও জানতে পারি যে আমরা এখন কোথায় আছি। অরূপদার কথা ঠিক হলে হয়ত কোনও দিন জানতেই পারব না যে এই পূজার দিন গুলো আমরা কোথায় কাটিয়ে গেলাম। কিন্তু অদিতির কথা ঠিক হলে আমরা পালাতে পারব। মাথায় আসছে না যে কি করে কি হবে। তবে একটা জিনিস বুঝতে পেরেছি যে ওর টার্গেট স্থির। কিন্তু একটা জিনিস বুঝতে পারছি না যে যদি এমন হয় যে আলিদা বা বাকিরা ওর প্ল্যানের ব্যাপারে সব কিছু জানে, আর শুধু ওঁত পেতে আছে যে আমরা একটা ভুল কদম ওঠাই আর সাথে সাথে আমাদের শেষ করে দেবে। না সত্যি মাথায় কিছু ঢুকছে না। শেভ করে ঘরে ফিরে এসে দেখলাম যে অদিতিও ঘরে ফিরে এসেছে। পিছনের বা দিকের জানলার ধারে মোমবাতি হাতে নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। আমাকে দেখে পিছনে ঘুরে এসে মোমবাতিটা টেবিলে লাগিয়ে রাখল। বিছানায় সেই আগের মতন অশ্লীল ভাবে পায়ের ওপর পা তুলে শুয়ে পড়ল। ওর মুখে একটা এক্সপ্রেশন দেখলাম যেটাতে মিশে আছে আশা, উত্তেজনা,সম্ভাবনা আর প্রতিক্ষা। আমি ওর পাশে বসে বললাম “ আচ্ছা সব কিছু জেনে এদের জন্য কিছু একটা না করে এইভাবে চলে যাওয়াটা কি ঠিক হবে?” একটু থেমে বললাম “আর আমরা যে পালাতে পারবো সেটা কত পারসেন্ট সিওর তুই?” ও কোনও কথা না বলে উল্টো দিকে মুখ ঘুরিয়ে শুয়ে পড়ল।

আমিও শুয়ে পড়লাম ওর পাশে। জানি না কতক্ষণ এইভাবে শুয়ে ছিলাম কিন্তু হঠাত পায়ের আওয়াজ পেয়ে উঠে বসলাম। অদিতিও উঠে বসেছে। ঘরে ঢুকল রাকাদি, আলিদা আর রাজু আর মায়া। আলিদা বলল “গ্রিন হোটেলে একটা ফিল্ড ওয়ার্ক এসেছে। অরূপদা ফোন করেছিল। কিছুক্ষণ পরে আবার ফোন করবে। আঠাশ থেকে ত্রিশ বছরের মধ্যে পরিষ্কার, মার্জিত, সুন্দরি, মাঝারি গড়নের মেয়ে চাই। মডার্ন হওয়া চাই। শহুরে আদব কায়দা জানা চাই। ক্লায়েন্টের বিচিত্র চাহিদা থাকতে পারে, সে গুলো বুঝে মেটানো চাই। আর সময় বুঝে যেটা করার সেটা করা চাই। বিশাল বড়লোক বাপের ছেলে এসেছে গোপনে ডিল করতে। দুই ব্যাগ বোঝাই টাকা।“ অদিতির দিকে তাকিয়ে বলল “রাজু আর সুজাতা দুজনেই তোমাদের কথা বলেছে। সব শুনে আমারও তোমাদেরই কথা মনে হয়েছে। তোমরা পরিষ্কার আর টিপটপ। কিন্তু এই ব্যাপারে তোমাদের আমরা বাধ্য করতে পারি না। কারণ তোমরা আমাদের চিকিৎসা করতে এসেছ। শহুরে মেয়েরা বিছানায় কেমন কি করে(বুঝলাম আমাদের যৌন ব্যাভিচার নিয়ে এইসব কথা হচ্ছে), তাদের এইসব ক্ষেত্রে আদব কায়দা কেমন রাখতে হয়(আমরা বেডরুমে সেক্স করি, কিন্তু আমরা তো আর কল গার্ল নই। কিন্তু পরে মনে হল বিছানায় আর কতরকম ভ্যারাইটি হতে পারে। হয়ত আমাদের সাথে শোয়ার পর ওদের এরকম মনে হয়েছে।), এসব কিছু যারা জানে তাদের সকলে প্রায় বাইরে। আর যারা আছে তাদের বয়স হয় অনেক কম বা অনেক বেশী। এইসব জায়গায় আমরা রিস্ক নি না। দরকার হলে ডিলটা আমরা নেব না। একটু ভেবে বলবে। আবারও বলছি কোনও জোর জবরদস্তি নেই। পাঁচ মিনিট ভেবে নাও।“ অদিতি ফস করে বলে উঠল “একে টেলিপ্যাথি ছাড়া আর কি বলবে আলি দা। আজ কিন্তু আমিই তোমাকে বলেছিলাম যে আমি যাওয়ার আগে অন্তত একবার এই মেয়েরা কতটা রিস্ক নেয় সেটা দেখতে চাই। আর দেখো আজই এখানে মেয়ের অভাব। অন্তত তেমন মেয়ের অভাব যেমন তোমরা চাও।“ রাকাদি আর আলিদা এর ওর মুখ চাওয়া চাওয়ি করল। আমার হঠাত মনে হল যে অদিতি একটা বিশ্বাসঘাতক। ও কি আগে থেকে জানত যে আজ এমন কিছু একটা হবে? কিন্তু ও কি করে জানবে? নেহাতই কাকতালীয় না কি? বার বার একই প্রশ্ন মাথায় আসছে যে ও কি করে জানবে যে আজ এমন কিছু একটা হবে? ও কি ওদের একজন? দূর তাহলে আমার সাথেই বা এইভাবে আছে কেন? আমার পেটে তো এমন কোনও কথা নেই যা ও জানে না। তাহলে এতদিন ধরে এখানে বসে ছল করার মতন মেয়ে তো ওকে দেখে মনে হয় নি। আর তাছাড়া বারবার ওকে দেখে মনে হয়েছে যে ও যেন ওঁত পেতে আছে পালানোর। ও একাই পালাতে চাইছে? না ওকে একা পালাতে দেওয়া যাবে না। কিছুতেই না। ও একটা বিশ্বাসঘাতক। কিন্তু ও কি করে জানবে যে, ও কি অরূপদার সাথে মিলে...না ভাবতে পারছি না। ক্যাম্পের বাইরে গেলে একটা কিছু হতে পারে। তবে যদি সব কিছু পূর্ব পরিকল্পনা মাফিক হয় তো আমাকে যেতেই দেবে না, ওই যাবে। কিছু না ভেবেই বলে ফেললাম “আমিও যেতে প্রস্তুত। তবে সিকিওরিটির কি ব্যাবস্থা সেটা জানিয়ে দিলে ভালো হবে।“ ওরা বেড়িয়ে গেল। আমি অদিতির সাথে কোনও কথা না বলে অন্য পাশ ফিরে শুয়ে পড়লাম। অদিতিও শুয়ে পড়ল।

আরও দশ মিনিট কেটে গেল। ঘরে এলো আলিদা আর রাকাদি। আমরা বিছানা থেকে সন্ত্রস্ত ভাবে উঠে দাঁড়ালাম। আলিদা বিছানায় কেমন জানি হতাশা নিয়ে বসে পড়ল। রাকাদিরও মুখ নিচু। আলিদা বলল “সত্যি বলছি আমি জানি না কিভাবে অরূপদা এমন সিদ্ধান্ত নিলো।“ আমি আড়চোখে দেখলাম অদিতির চোখ চকচক করছে উত্তেজনায়। আলিদা বলল “আমরা ট্রেনিং ছাড়া কাউকে পাঠাই না। কিন্তু যেমন মেয়ে চাইছে তেমন আর সত্যি আমাদের কাছে নেই। আর তোমরা তো জানো যে এরা ঠিক মতন পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন ভাবেও থাকে না। (আমরা দুজনেই বুঝতে পারলাম যে পরিষ্কার ইত্যাদি বলতে কি বলতে চাইছে।) এদের রেডি হতে অনেক সময় লাগবে। আর তাছাড়া... থাক সংক্ষেপে বলছি অরূপদা রুমিকে যেতে বলেছে।“ রাকাদি বলল “না আলিদা যেতে বলেনি। অনেক বড় হাত বলে যেতে অনুরোধ করেছে যদি ওর আপত্তি না থাকে।“ অদিতির মুখের ওপর পরপর কয়েকটা অভিব্যক্তি খেলে গেল। প্রথমটা হতাশা, তারপরেরটা আশঙ্কা (ভয় নয়), আর সবশেষে একটা ক্রূর হাঁসি। রাকাদি আমার কাঁধে হাত রেখে বলল “তুমি কি প্রস্তুত?” অদিতির হাতটা ওদের সবার অলক্ষ্যে আমার হাতটা ছুঁয়ে গেল। মনে পড়ল ও বলেছিল যে যদি মনে হয় যে তুই ফেঁসে গেছিস, আমার ওপর বিশ্বাস রাখিস। হাওয়ার সাথে বয়ে যা। কি হবে জানি না। তবে আজই এখানে শেষ রাত। ও কি আমার হাতে ছুঁয়ে সেটাই বোঝাতে চাইল? না কি? আমি বাইরে যাওয়ার পর আমাকে মেরে ফেলবে? কিছু করার নেই। যা হবার হবে। বললাম “হ্যাঁ আমি রেডি।“ আরেকটা অদ্ভুত কাকতালীয় ব্যাপার আমি অদিতির কথায় শ্যাম্পু চাওয়ার নাটক করে বেড়াচ্ছিলাম, এখন রাকাদি নিজে এসে আমার হাতে শ্যাম্পুর একটা শিশি দিয়ে চলে গেল। “কুড়ি মিনিট। তৈরি হয়ে নাও। তবে উগ্র সাজ করে যেও না যাতে লোকে সন্দেহ করে।“ রাকাদি চলে গেল। অদিতি আমার হাত থেকে শ্যাম্পুর শিশিটা কেড়ে নিয়ে বলল “চল শ্যাম্পু করিয়ে দিচ্ছি।“ আমি বিরক্তির সাথে বাঁধা দিতে যাচ্ছি দেখে প্রায় ধমকে উঠলো। “আহ। সময় কম। ছেলেমানুষী করিস না। চল। মুখ বন্ধ রাখ। শুধু শুনে যা।“ দেখলাম আরও কয়েকজন ঘরের বাইরে বেড়িয়ে এসেছে। ওরাও বোধহয় বুঝতে পারছে না যে আমার মতন একটা মেয়েকে কি করে পাঠাচ্ছে এই অভিযানে, যে বন্দুকটাও ভালো করে ধরতে শেখেনি। কল পাড়ে গিয়ে বুঝলাম ও হাতে রেজারটা নিয়ে এসেছে। ভালো করে পিঠে একবার বুলিয়ে দিল। আমি নগ্ন হয়ে বসে স্নান শুরু করে দিয়েছি। ও আমার মাথায় শ্যাম্পু করে দিচ্ছে। হঠাত কাঁধের ওপর ঝাঁকুনি খেয়ে সম্বিত ফিরে পেলাম। “শুনছিস কি বলছি?” মাথা নেড়ে বললাম “হ্যাঁ।“ ও বলল “মন দিয়ে শোন যা বলে যাচ্ছি। প্রশ্ন করিস না। অন্ধের মতন তাই করবি যা বলব।“

আমি কান খাড়া করে ওর কথা শুনে চললাম “শোন। হোটেলে ঢোকার পর তোকে বুঝতে হবে না, তোকে খুঁজতেও হবে না, কেউ না কেউ এসে তোর হ্যান্ড ব্যাগে একটা কাগজ রেখে দিয়ে যাবে। আবার বলছি তোকে খুঁজতে হবে না কাউকে। সেটা করলেই তুই ফেঁসে যাবি। হ্যান্ড ব্যাগটা তোর ডান হাতে ঝুলিয়ে ক্যাজুয়ালি হাঁটবি। আর হ্যাঁ সেটার চেইনটা খুলে রাখিস। ব্যস তাতেই হবে। আঠারো নম্বর ঘর ফার্স্ট ফ্লোরে। ওই হোটেলের গ্রাউন্ড ফ্লোরে লিফটের পাশেই একটা অয়াশরুম আছে। যদি দেখিস লিফট গ্রাউন্ড ফ্লোরে দাঁড়িয়ে আছে তো কিছু ভাবে সময় নষ্ট করবি। জুতো ঠিক করবি, পাশে আয়না থাকলে একবার মুখ দেখে নিবি, মানে যে করেই হোক, লিফট যেন গ্রাউন্ড ফ্লোরের থেকে অনেক উপরে থাকে। লিফট যখন থার্ড কি ফোর্থ ফ্লোরে তখন গিয়ে লিফটের সামনে দাঁড়াবি। আর খুব ক্যাজুয়ালি হঠাত বলবি এক মিনিটের জন্য তোকে অয়াশরুম যেতে হবে। কারোর কথা শুনবি না। সোজা অয়াশরুমের দিকে চলে যাবি। মনে রাখিস তুই একটা মেয়ে। পাবলিক প্লেসে ওরা তোকে অয়াশ রুমে যেতে বাঁধা দিতে পারে না। গায়ে হাত দিতেও পারে না। হয়ত দেবেও না। কিন্তু বলতে পারে যে আর তো দু মিনিট, ঘরে গিয়ে অয়াশরুম যেও ইত্যাদি। কিন্তু তুই ওদের সম্পূর্ণভাবে ইগনোর করে, আর্জ দেখিয়ে এক মিনিটের জন্য অয়াশরুমে যাবি। গিয়ে কাগজটা পড়বি। কাগজ তোর ব্যাগেই থাকবে। আই রিপিট কে দিচ্ছে কখন দিচ্ছে এইসব নিয়ে তোর ভাবনার কোনও কারণ নেই। ওখানে যা লেখা থাকবে সেই অনুযায়ী কাজ করবি। আবারও বলছি যদি মনে হয় যে পুরো ফেঁসে গেছিস। কিছু করবি না। যেমন চলছে তেমন চলতে দিবি। কাগজে যা লেখা আছে তার বাইরে যাবি না। ওখানে তোকে গার্ড করার জন্য লোকের অভাব নেই। কিন্তু এইটা মনে রাখিস। চোর কে শুধু চুরি করার সময় বা চুরির জিনিসের সাথেই ধরা যায়। আচ্ছা এখন তোর প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছি। আজ তোর ওপর এদের ভাগ্য নির্ভর করছে। হয়ত ওই লোকটার সাথে তোকে শুতে হবে। শুতে হলে শুয়ে নিবি। এই একটাই কারণে আমি যেতে চাইছিলাম। কারণ শুনেছি যে... হয়ত ওরা একা নয়।“ আমি বললাম “শুনেছিস মানে?” ও বলল “বললাম না প্রশ্ন করে সময় নষ্ট করিস না। আজ হয়ত তোকে একটু ব্যাথা পেতে হবে। কিন্তু এটা না হলে কিছু করা যেত না। ভণ্ডটাকে হাতে নাতে ধরা সম্ভব হত না। আচ্ছা পরের কথা শোন, সে একজনই হোক বা দুই জনই হোক, তুই ওদের সাথে পাঙ্গা নিয়ে কিছু করতে পারবি না। তাই সেই চেষ্টাও করবি না। মাল লুট করা তোর টার্গেট নয়। ওদের সাথে শুয়ে বা কাগজে যেমন লেখা আছে তেমনটা অন্ধের মতন ফলো করে সুস্থ শরীরে বেড়িয়ে আসবি। ব্যস তোর কাজ শেষ। টাকা হাতে না বেরোলে কি কৈফিয়ত দিবি সেটা কাগজেই লেখা থাকবে। আর যদি নিতান্তই না লেখা থাকে তো বলবি, আমার সর্বস্ব নিয়ে আমাকে ঘরের বাইরে বের করে দেওয়া হয়েছে। মনে রাখিস অরূপদা আজ এক ঢিলে দুই পাখী মারবে। ওখানে অরূপদা চলে এসেছে ইতিমধ্যে। তুই আরও ঘণ্টা দুয়েক পরে গিয়ে পৌছাবি। খুব ক্যাজুয়াল আর সেক্সি থাকবি যাতে কারোর তোর ওপর কোনও সন্দেহ না হয়।“ আমার স্নান করা শেষ। আমি অদিতির সাথে ঘরে ফিরে এলাম। প্রায় সবাই সবার ঘরের বাইরে এসে দাঁড়িয়েছে। আজ আর সেই রকম শাড়ি নয়। ব্যাগ থেকে বের করে নিলাম আমার রেগুলার ড্রেস। একটা টাইট স্লিভলেস টপ, আর টাইট জিন্স। ডিওটা ব্যাগে ছিল। বগলে আর ঊরুসন্ধিতে স্প্রে করে নিলাম। হালকা লিপস্টিক মেখে চুল ঠিক করে বেড়িয়ে এলাম। অদিতিই চুল আঁচড়ে দিয়েছিল। বেরনোর আগে ও আবার বলল “সব শুনেছিস?” মাথা নাড়িয়ে বললাম “হ্যাঁ।“ ও আমাকে জড়িয়ে ধরে বলল “চিন্তা করিস না। আমি তোর ঠিক পেছন পেছন আসছি। ক্যাজুয়াল থাকবি। “ আলিদা এসে বলল “তাড়াতাড়ি চলো। অলরেডি লেট। অরূপদা আর এক ঘণ্টার মধ্যে ওখানে পৌছাবে বলেছে।“ আমি অদিতির দিকে তাকালাম কারণ ও একটু আগে বলেছিল যে অরূপদা আগেই পৌঁছে গেছে। অদিতি চোখের ইশারায় বুঝিয়ে দিল যে যা হচ্ছে হতে দে। চেপে যা। আমি ক্যাজুয়াল মুখ করে তাড়াতাড়ি এগিয়ে চললাম। একটা সাদা রঙের বড় গাড়ি এসে থেমেছে মাঠে। রাকাদি এসে আমাকে বলল “ওই হোটেল আমাদের জন্য লাকি ছিল। কিন্তু সীমার এইসব হওয়ার পর থেকে কেন জানি না মন বলছে খুব বিপদ হবে। সাবধানে থেকো। অরূপদা যা বলবে সব অক্ষরে অক্ষরে পালন করবে। তাহলে কিছু হবে না। “ এর কোনও উত্তর হয় না। ও হ্যাঁ আমার ছোট ঝোলানো হ্যান্ডব্যাগটা আমি ডান হাতে নিয়ে নিয়েছিলাম বেরনোর আগে।
আমি গাড়িতে চড়ে বসতেই গাড়ি ছেড়ে দিল। রাজু ড্রাইভারের সামনে এসে বসেছে। আমাকে কোনও ছোরা বা পিস্তল কিছুই দেয় নি ওরা। কারণ ওগুলো ব্যবহার করা যে আমার দ্বারা হবে না সেটা ওরা ভালো ভাবেই জানে। উল্টে ধরা পড়লে হয়ত প্রাণটা বেঘোরে চলে যাবে। কি যে হবে। রাজু বলল “দিদি একটা কথা পরিষ্কার জানিয়ে রাখি। আমি হোটেলের ভিতরে যেতে পারব না। তবে পালানোর চেষ্টা করবে না কারণ আগেই বলেছিলাম যে এজেন্ট আছে। সেক্ষেত্রে ধরা পড়লে তোমাকে শেষ করে দিতে বাধ্য হব।“ আমি কোনও কথা না বলে ওর কথা শুনে যাচ্ছি। বললাম “বলে যাও।“ ও বলল “আর কিছু বলার নেই। মাল নিয়ে পালানোর চেষ্টা করলে আমরা ছেড়ে দেব না।“ আমি হেঁসে কাঁধে হাত রেখে বললাম “আর যদি মাল না নিয়ে পালিয়ে যাই?” ও বলল “সে যেতেই পারো। তবে আমার ওপর দায়িত্ব যে তুমি বাইরে বেড়িয়ে আসার পর যাতে কোনও বিপদ না হয় সেটা লক্ষ্য রাখার। মাল না নিয়ে পালিয়ে গেলে, অরূপদা যা বলবে তাই করতে হবে। তোমাকে তো কিছুদিন পর ছেড়েই দিত। হয়ত কিছুই করবে না। তবে সাবধানে থেকো। আর ওখানে ঢোকার আগেই পালিয়ে গেলে আমি তোমার পিছু নেব সেটা জানিয়ে রাখছি। কারণ তোমার ডিউটি মাল লুট করার। লুট না করতে পেরে পালিয়ে গেলে অন্য কথা। জানি না অরূপদা কি বলবে।“ আমি বললাম “বারবার একই কথা বলতে হবে না। দেখাই যাক না যে কি করতে পারি।“ গাড়িটা একটা জায়গায় এসে সাইড করা হল। রাজু পিছনে এসে কোনও কথা না বলে একটা মোটা রুমাল দিয়ে আমার হাত পিছনে বেঁধে দিল। আর চোখ দুটো বেঁধে দিল। বলল “কিছুই না। যাতে তুমি জায়গা চিনতে না পারো তার জন্য এই ব্যবস্থা।“ হুম এইটুকু সতর্কতার জন্য ওদের দোষ দিতে পারি না। হাত যে খুব জোড়ে বেঁধেছে তা নয়। তবে নাড়ানো যাচ্ছে না। পিছনের সিটে আমি শুয়ে আছি। কেউ কোনও কথা বলছে না। প্রায় দেড় ঘণ্টা কেটে গেল। জানি না ক্যাম্পে এখন কি হচ্ছে। হঠাত শুনলাম রাজু বলল “বা দিক করে রেখে দাও। আর এগিও না।“ গাড়ি থামল। রাজু ঝট করে পিছনে এসে আমার হাত আর চোখের বাঁধন খুলে দিল। একটা অন্ধকার জায়গায় গাড়ি দাঁড় করানো আছে। সামনে চোখ পড়তেই দেখলাম বিশাল শরীর নিয়ে সারা গায়ে ঝলমলে আলোর রঙ মেখে দাঁড়িয়ে আছে গ্রিন হোটেল। হোটেলের সামনে আর ভেতরে বিভিন্ন নাম না জানা বড় বড় গাড়ি পার্ক করে রাখা।

[/HIDE]
 

Users who are viewing this thread

Back
Top