What's new
Nirjonmela Desi Forum

Talk about the things that matter to you! Wanting to join the rest of our members? Feel free to sign up today and gain full access!

গোপন কথাটি রবেনা গোপন (3 Viewers)

[HIDE]


দশ

আমি চেয়ারে বসে একটা প্যাড তুলে নিলাম। উল্টে পাল্টে দেখলাম। না পুরো সাদা। তবে সামনের কয়েকটা পাতা ছেঁড়া। তবে প্যাডের প্রথম পৃষ্ঠায় বেশ কিছু অক্ষরের ছাপ রয়ে গেছে। সম্ভবত উপরের পাতায় চেপে লেখার ফল। অদিতি বিছানায় শুয়ে পড়েছে। আমার একটু কৌতূহল হল যে কি লেখা থাকতে পারে। আমি প্যাডের পাতাটাকে জানলার কাছে নিয়ে গিয়ে পড়ার চেষ্টা করলাম যে কি লেখা আছে। অদিতি কিছুক্ষণ ঘাড় ঘুরিয়ে আমাকে দেখল। তারপর উঠে বসে বলল “ঠিক কি করছিস বলবি?” বললাম “আগের পাতায় লেখা কিছু জিনিসের ছাপ চলে এসেছে। কোনও কাজ নেই তাই বসে বসে দেখার চেষ্টা করছি কি লিখেছে।“ ও তড়াক করে লাফিয়ে এসে হাত থেকে প্যাডটা নিয়ে প্রথম পাতাটা আর তার পরের কয়েকটা পাতা উল্টে পাল্টে দেখল। “না পরের পাতা গুলোর ছাপ খুব অস্পষ্ট। যা আছে এতেই আছে।“ কিন্তু এইভাবে পড়তে পারব না। আমি বললাম “ছোট বেলায় পড়েছিলাম পেন্সিল বা ওরকম কিছু ঘষে এই লেখার কিছুটা উদ্ধার করা গেলেও যেতে পারে। তবে কতটা চাপ দিয়ে লিখেছে আর হাতের লেখা জড়ানো কি না তার ওপর অনেক কিছু নির্ভর করছে। “ যেমন বলা তেমন কাজ। অদিতি এক মুহূর্তও সময় নষ্ট না করে প্রথম পাতাটা আস্তে আস্তে নিপুণ ভাবে প্যাড থেকে ছিঁড়ে নিল। তবে দুর্ভাগ্য ঘরে পেনসিল পেলাম না। আমি বললাম “আরেকটা উপায় আছে। তবে নিখুঁত না করতে পারলে পুরো জিনিসটাই হাতের বাইরে চলে যাবে। “ ও ভুরু নাচিয়ে জিজ্ঞেস করল কি। বললাম “মিহি মাটি ঘষে ঘষে যদি ব্যাপারটাকে একটু ...।“ ও কাগজটা ভাঁজ করতে যাচ্ছিল, আমি ওকে বাঁধা দিয়ে বললাম “ভাঁজ করিস না। দাগ ঘেঁটে যাবে।“ ও নির্লজ্জের মতন কোমর থেকে শাড়িটা খুলে নিজের পাছার ওপর কাগজটা একদম সমান্তরালে চেপে ধরল। আমাকে ইশারা করতেই আমি ওর কোমরের চার ধারে শাড়ি জড়াতে শুরু করলাম। আমরা অবশ্য এটা করার আগে চারপাশটা একবার দেখে নিয়েছিলাম। কাগজের পুরোটাই ঢাকা পড়ে গেছে ওর পাছা আর তার উপর দিয়ে যাওয়া মিহি কাপড়ের মাঝে। আমি ওকে বললাম “ আরেকটা কাজ ছিল। তখন ভুলে গেছিলাম। আমি লিখে দিয়েছিলাম ওরা আনিয়ে রেখেছে। বেশ কয়েকটা স্ট্রিপ গর্ভ নিরোধক বড়ি আনিয়েছি। বোধহয় ওরা বোঝেনি। “ ও আমাকে বলল “ তুই কি ভাবছিস বল তো?” আমি বললাম “তেমন দরকার পড়লে ছলা কলা দেখিয়ে পালানো। তুই নিশ্চই পেটে বাচ্চা নিয়ে যেতে চাস না এখান থেকে। “ ও আমাকে বলল “তুই কি পাগল। এদের সাথে আমি শোব?” আমি হেঁসে একধারে মাথা হেলিয়ে বললাম “সোনা সব কিছু কি আর নিজের ইচ্ছেয় হয়। এরাই তো শিখিয়েছে। শরীর হাতিয়ার অ্যান্ড অল।“ আমরা আস্তে আস্তে ঘর থেকে বেড়িয়ে আমাদের ঘরের দিকে যাত্রা শুরু করলাম। সামনে একজনের সাথে দেখা হওয়ায় আমরা জিজ্ঞেস করলাম “ কটা বাজে বলতে পারবে?” ওর নাম আমরা জানি না। আগে দেখেছি ও কে। কিন্তু কথা বলা হয় নি। আমাদের মতন বয়স হবে। ও বলল “কেন? সীমাদিকে দেখার কথা?” বুঝলাম ও বোধহয় ভাবছে আমরা কখন কখন রুগী দেখব সেটা স্থির করার জন্য এই প্রশ্নটা করেছি। আমি বললাম “ না না। ওকে দেখা হয়ে গেছে। সুজাতা দিদি মনিকেও দেখা হয়ে গেছে। কিন্তু আজ আমাদের ঘাড়ে একটা গুরু দায়িত্ব পড়েছে সেটা তো শুনেছ। ডেলিভারি নিতে হবে। তা ওরা কখন আসবে, আর কটাই বা বাজে সেটার তো কোনও হিসাব নেই। “ ও আকাশের দিকে চোখের উপরে হাত রেখে একবার বলল “ সাড়ে নটা বাজে নি এখনও।“ ও চলে গেল আমরা হাঁটা দিলাম। অদিতি বলল “ সাড়ে পাঁচটায় ঘুম থেকে উঠলে দিনটা অনেক বড় হয়ে যায়, সেটা ছোটবেলায় আমার বাপ অনেকবার বলেছে, কিন্তু আজ প্রথমবার বুঝলাম।“ তবে বুঝলাম ডেলিভারি কখন আসবে সেটা মেয়েটা জানে না, কারণ সেই প্রশ্নের কোনও উত্তর ও দেয় নি।

ঘরে ঢুকেই অদিতি পিছনের দিকটা আলগা করে কাগজটা বের করে বিছানায় রেখে আমাদের জন্য বরাদ্দ ছেঁড়া বালিশটা দিয়ে আলগা ভাবে ওটাকে ঢেকে দিল। আমাকে বলল “এই যে? কেমন মাটি নিয়ে আসব?” আমি বললাম “তুই বস। আমি ছোটবেলায় এসব মস্তি অনেকবার করেছি। আমার কাছে ছিল ফুর্তি করার মতন ব্যাপার। আমিই নিয়ে আসি।“ তবে কারোর মনে সন্দেহ প্রবেশ করলে এরা আমাদের কেটে ফেলবে তাতে কোনও সন্দেহ নেই। হয়ত বা ভেবে বসল আমরা পুলিশের চর। অদিতি সটান বেড়িয়ে আবার হাঁটা লাগাল অরূপদার ঘরের দিকে। আলি কিছু দূর দিয়ে হেঁটে যাচ্ছিল। অদিতি দেখলাম ওকে ডাকল। “আলি দা। একবার শুনবেন।“ আমি বাইরে বেড়িয়ে এসে দাঁড়িয়েছি। ও হেঁসে বলল “আপনি বলবে না। তুমি বললেই আমি সাড়া দেব। বল। “ অদিতি বলল “ স্যার আর ম্যাডাম দুজনেই বলেছে আমি মানে আমরা ওই ঘর থেকে বই নিয়ে পড়তে পারি। ও ঘরে পাশের তাকে অনেক গুলো বই দেখেছি। একটা আনব। সময় কাটানোর জন্য। যদি তুমি সঙ্গে আসো তো... মানে বুঝতেই তো পারছ, যদি কিছু সরিয়ে ফেলেছি বলে অপবাদ রটে। “ আলি বলল “দূর সে তুমি বলছ তাই আমি যাব তোমার সাথে। আমরা কোনও রাখা ঢাকা করি না। এসো। যখন বই পড়তে ইচ্ছে করবে নিয়ে যাবে। এখন পড়বে না তো কবে পড়বে।“ শেষ কয়েকটা কথা আমার কানে এলো। “আমি যখন আলিগড় ইউনিভার্সিটিতে পড়তাম, মানে ওই দিল্লীতে, পড়ায় মন বসত না। আমাদের লাইব্রেরীতে অনেক বই ছিল। অনেক গল্পের বইও ছিল। সেগুল এসে রাতের বেলায় গিলতাম। “ হাহাহা একটা উচ্চ কণ্ঠের উদার হাঁসি। আমি ওদের দিকে তাকিয়ে তাকিয়ে দেখলাম। বুঝতে পারলাম এর পর ওরা গোটা রাস্তায় অনেক কথা বলল কিন্তু ওদের হাবভাব দেখার মতন সময় বা সুযোগ একটাও আমার হাতে নেই। আমি বাইরে গিয়ে বসে পড়লাম মাটিতে। ভাব খানা এমন যেন মাটির রক্ত পরীক্ষা করছি। ঘরের সামনের মাটি শুঁকিয়ে গেছে। আমি সেখান থেকেই পাথর বেছে বেছে বেশ কিছুটা শুঁকনো বাদামি কালচে মাটি হাতের মুঠোয় ভরে নিলাম। একটা পাতার জন্য এই যথেষ্ট। টেবিলের ওপর এসে মাটিগুলো হাত থেকে রাখলাম। বাইরে বেড়িয়ে এসে দেখলাম অদিতি হাতে একটা বই নিয়ে দাঁড়িয়ে আলির সাথে গায়ে পড়ে হেঁসে হেঁসে অনেক গল্প করছে। আমি দরজা থেকে নড়লাম না। অদিতি কিছু একটা বলল আর তারপর দেখলাম আলি চুপ মেরে ওপরের দিকে তাকিয়ে দাঁড়িয়ে থাকল কিছুক্ষণ। তারপর ও উত্তেজিত ভাবে হাত পা নেড়ে প্রায় বিশ মিনিট ধরে অদিতিকে অনেক কিছু বলল। অদিতি দেখলাম মুখ নিচু করে দাঁড়িয়ে সেসব শুনল। আলি কে দেখে কেমন একটা উত্তেজিত বলে মনে হল। নিজের চারপাশে হাত পা ছুঁড়ে চলেছে। আমি এক সময় ভাবলাম অদিতি নিশ্চই নিজের বাচালতা দেখিয়ে কিছু একটা বলে ওকে খেপিয়ে দিয়েছে। নইলে এত উত্তেজিত হবে কেন? ওদের শান্ত করার জন্য একবার ভাবলাম ওদের দিকে যাব, আর কিছু না হোক, একটা বই নেওয়ার অজুহাতে। কিন্তু না। তার আগেই দেখলাম অদিতি ওর খোলা কাঁধে হাত বোলাচ্ছে। আলি একটা হাঁটু অব্দি লম্বা ধুতি আর একটা ফতুয়া মতন পরে আছে। মনে হল দেখে সান্তনা দিচ্ছে আলি কে। আলিকে দেখলাম নিজের চোখ মুছল। তারপর আবার আমাদের ঘরের দিকে হাঁটা শুরু করল। আমি দরজার সামনে ঠায় দাঁড়িয়ে রইলাম। যখন ওরা আমার কাছে এসে পৌঁছালো তখন দেখলাম আলি র চোখ লাল। বুঝলাম কেঁদেছে। অদিতি ওকে বলল “ আর মন খারাপ করে থেকো না। এই দেখো, এখানে একজন বন্ধু পেয়ে গেছ তুমি। তুমি আমাকে যা বলেছ, আমি কাউকে বলব না কথা দিলাম। তবে আরও কিছু বলে মন হালকা করতে চাইলে আমাকে বলতে এসো। (আমার দিকে দেখিয়ে বলল) ও দিদি বেশী পড়াশুনা করেছে। তাই বড় ডাক্তার। ওর সময় হবে না। কিন্তু আমার হবে। “ আলি আমাকে বলল(হিন্দি বাঙলা মেশানো কথা) “ তোমার বন্ধু শয়তান। আমার পেট থেকে কথা বের করে আমাকে কাঁদিয়ে এখন সরে পড়ছে।“ অদিতি যেন অরূপদার কায়দা রপ্ত করে ফেলেছে। খুব ধীর গলায় বলল “সরে যাব তো বলি নি। বললাম তো, যখন খুশি নিজের মনের কথা বলতে এসো। আমি শুনব। তুমিই এই ক্যাম্পে আমার প্রথম বন্ধু।“ আলি আবার ভালো করে চোখ মুছে চলে গেলো। যাবার আগে আমাদের অভ্য় দিয়ে গেলো এই বলে যে আমরা যেকোনো সময়ে যখন খুশি ওই ঘরে গিয়ে বই নিয়ে আসতে পারি, বই রেখেও দিয়ে আসতে পারি। আর ডেলিভারি বা হিসাবের দরকার হলে আমাদের ও নিজেই এসে ডেকে নিয়ে যাবে।

বললাম “কি হচ্ছিল রে?” ও বালিশে চাপা দেওয়া কাগজটা এক পাশে সযত্নে সরিয়ে রেখে বিছানায় শুয়ে পড়ে বলল “ ভাব জমালাম। (আমার দিকে চোখ মেরে বলল) আমার একটু বেশী বয়সের ছেলে ভালো লাগে। (আমি একটু ভুরু কুঁচকে ওর দিকে তাকিয়ে আছি দেখে আমাকে বলল) মাই লেডি লাভ, ইউ ক্যান কল দিস অ্যা ক্রাশ। যাই হোক, এই হল খবর। (ও শুরু করল) লোকটা আলিগড় থেকে পড়েছে।“ আমি ওকে থামিয়ে বললাম “সে তো আগেই শুনেছি। তো?” বলল “ ও ইকনমিক্সে ফার্স্ট ক্লাস পেয়েছিল। মাসে চল্লিশ হাজার টাকার মাইনের চাকরি পেয়েছিল। কিন্তু সব ছেড়ে এখানে এসেছে। “ স্বাভাবিক প্রশ্ন “কেন?” বলল “ এখানে সবাই জানে ওর বউ কে অনেকে মিলে রেপ করে ট্রেন লাইনের ধারে ছেড়ে রেখে দিয়ে গেছিল। কিন্তু সেটা সত্যি নয় কারণ ও সত্যি কথা কাউকে বলতে পারে নি।“ আমি বললাম “ আর তোকে বলে দিল পাঁচ মিনিটের আলাপে? শালা যত সব গ্যাজাখুরি? হ্যাঁ?” ও বলল “ ধীরে বন্ধু ধীরে। এখানে কোনও মেয়ে ওর সাথে ঠিক করে কথা বলে না। অরূপদা আর বিনীতাদি ছাড়া সবাই ওকে গার্ডিয়ান বলে মেনে নিয়েছে, কিন্তু ওর সাথে সুখ দুঃখের কথা আজ অব্দি কেউ বলে নি। অ্যান্ড লাকিলি আমিই ফার্স্ট বললাম। আর শোন মেয়েদের চোখ বোঝে। আমি বললাম বউ মারা গিয়েছিল? লোকটা ইমোশানাল হয়ে ভেঙ্গে পড়ল। গল্প হল। ওর বাবা অনেক বেশী বয়সে দ্বিতীয় বিয়ে করে ওর নিজের মা মারা যাবার পর। নতুন মাকে ও ভালো বেসে ফেলেছিল। অবশ্য মায়ের মতন ভালোবাসা, এত ওপেন ভালোবাসা এর আগে ও কোনও দিন দেখে নি বলে আমার ধারণা। ওর একটা অপারেশনের সময় ওর মা ওকে সেবা যত্ন করে ভালো করে তোলে। ও ওর মাকে সেলাম না দিয়ে কোথাও বেরতো না। চাকরির ব্যাপারটা সত্যি। ও তখন চাকরি করছিল। আর ওর বাবা যাকে বিয়ে করে এনেছিল তার বয়স ভীষণ কম। মানে ওর কথায় ওর বাবার বয়সের প্রায় অর্ধেক। তবে তাতে কোনও সমস্যা ছিল না। তিন জনের সংসার ভালোই চলছিল। ওর বাবার ছিল একটা ছোট ব্যবসা। আর ও বাইরে বাইরে থাকত অফিসের কাজে। একদিন একটা বাজে খবর পেয়ে বাড়ি ফিরে আসে। দু কথায় বলতে গেলে এই যে, ওর বাবার সাথে স্থানীয় কিছু পলিটিকাল লোকের সমস্যা বাঁধে। কারণ ওরা ওদের বাড়িটা কিনতে চায়। কিন্তু ওর বাবা অনেক টাকার বিনিময়েও সেই বাড়ি বিক্রি করতে রাজি হয় না। ওরা ওর যুবতী দ্বিতীয় মাকে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে গিয়ে প্রায় সাতজন মিলে রেপ করে একটা মিলের ধারে ফেলে রেখে দিয়ে যায়। ওর দ্বিতীয় মা ছিল অন্তস্বত্বা। এই আঘাত নিতে পারে নি। যখন উদ্ধার হয় ওর দেহ তখন রিগর মর্টিস সেটল করেছে। ওর বাবা সেইদিনই মারা যায়। ওর ওপর উল্টে আরোপ করা হয় যে ও আর ওর বন্ধুরা মিলে ওর স্নেহ আর মমতায় ভর্তি যুবতী মাকে গ্যাং রেপ করেছে নেশার বশে। ওর আর ওর ছয় জন বন্ধুর চাকরি যায়। দুজন আত্মহত্যা করেছে বলে ওর ধারণা। ওর দুবছর জেল হয়েছিল। অবশ্য আদেশ ছিল অনেক দিনের কিন্তু এখানকার ক্যাম্পের নির্ধারিত (গোপনে, সেটা ও ইশারায় বোঝাল) উকিল মামলা আবার শুরু করে সেটাকে আদালতের সামনে পেশ করে। অনেক কাঠ খড় পুড়িয়ে ও জেলের বাইরে আসে। এদের সাহায্যে যারা ওর পূজনীয়া মার এই ক্ষতি করেছিল তাদের খুঁজে বের করে খুন করে আর তারপর বহুদিন ইউপি তে ছিল গা ঢাকা দিয়ে। দু বছর আগে এদের ক্যাম্প এখানে পাঠানোর সময় ও চলে এসেছে এখানে। “ আমি বললাম “একটা ব্যাপার আশ্চর্য তাই না? কত লোক এই ভাবে ঠকে যাচ্ছে।“ অদিতি বলল “ বন্ধু তুই আর আমিও এখন সেই দলে পড়ি। কারোর ভালো রিসন থাকলেই সে যে কাউকে তুলে নিয়ে আসতে পারে না। তাহলে ওই খারাপদের থেকে এরাই বা আলাদা কিসের। আমাদের ফ্যামিলির থেকে আমাদের ভাওতা দিয়ে দূরে সরিয়ে এনে এখানে এইভাবে হাফ নেকেড করে আধ পেটা খাইয়ে রেখে দিয়েছে। এখানেই আমার কেন জানি না একটু খটকা লাগছে।“ আমি খুব গম্ভীর ভাবে ভাবছিলাম যে ও যদিও বলছে দু একটা খটকা, আমার কাছে এখনও খটকা অনেকগুলো। তবে এটা নিঃসন্দেহ যে এখানে প্রায় সবাই, বা বেশীরভাগ মেয়েই বা ছেলেই নিজেদের জীবন দিতে প্রস্তুত। আমি খোলা জানলার দিকে শূন্য দৃষ্টি নিয়ে বসে আছি দেখে ও আমার কোমরের নগ্ন চামড়ার ওপর কাতুকুতু দেওয়ার মতন করে খুঁচিয়ে বলল “কমরেড, আমি আমার রিপোর্ট পেশ করেছি। এইবার আমি বাইরে গিয়ে নজর রাখব। তুমি যে জিনিসে পারদর্শী বলে দাবি করেছ সেটা নিজের নিপুণ সার্জেনের হাতে সেরে ফেলো।“ ও উঠে বাইরে গিয়ে দাঁড়ালো।

না আমি বিফল হই নি মোটেই। লেখা উদ্ধার করা গেল। আরও পুরোটা। আমার “হয়ে গেছে “ আওয়াজ টা পেয়েই ও ভেতরে এসে ঝাঁপিয়ে পড়ল আমার পিঠের উপর। লেখা কিছুটা আবিস্কার হয়েছে ঠিকই কিন্তু সত্যি বলতে কি কিছুই আবিস্কার হয় নি। লেখা গুলো এখানে ছেপে দিলাম।


[/HIDE]
 
[HIDE]



11

না আমি বিফল হই নি মোটেই। লেখা উদ্ধার করা গেল। আরও পুরোটা। আমার “হয়ে গেছে “ আওয়াজ টা পেয়েই ও ভেতরে এসে ঝাঁপিয়ে পড়ল আমার পিঠের উপর। লেখা কিছুটা আবিস্কার হয়েছে ঠিকই কিন্তু সত্যি বলতে কি কিছুই আবিস্কার হয় নি। লেখা গুলো এখানে ছেপে দিলাম।

1. 73 jl s (k) f-23 (a 36) 66l
2. 128 ajcb (k) f-2 (a 29) 19l
3. 11 bpnd (k) f-G (a-55) 35l (?)
4. 12 fss-3 cross—(k) f-3 (a-41) 19l
(3-4)
5. bob-ac-(12230??jesus resurrection in PL(how many pl))-dep-82l
6. -S(22)
7. -A(23)

আমি বললাম “আমার হাতে যা এসেছে সেটা এই।“ ও অনেকক্ষণ ধরে কাগজ গুলো দেখে বলল “জানালা মানে গবাক্ষ। তুই এই লেখা ফুটিয়ে তোলার সাথে সাথে নিশ্চই ধাঁধা শলভ করাও শিখেছিস? তো লেগে পড়।“ আমি বললাম “শালা একটা লাইনেরও মানে বুঝতে পারছি না। কি করব। আর, না, আমি ওসব শিখিনি।“ ও যেন তেঁতে উঠলো, “শালা শিখিসনি তো মাটি ঘাঁটতে গেলি কেন। কি ভেবেছিলিস? আমাদের অরূপদা বাঙলায় আদ্যান্ত লিখে রেখে দিয়ে যাবে যাতে আমার আর তোর মতন গান্ডু সেটা একবারে পেনসিল ঘষে সব বুঝে উদ্ধার করে দেবে?” আমি এমনিতে ডানপিটে হলেও একটু নরম স্বভাবের, হঠাত করে এতগুলো ধমক খেয়ে ভাবতে শুরু করে দিয়েছি সত্যি একটু যদি ধাঁধা শিখে রাখা যেত তাহলে মঙ্গল হত। আমি চুপ করে ফুটে ওঠা লেখা গুলোর দিকে তাকিয়ে আছি দেখে ও এসে আমার খোলা ঘাড়ে হাত রেখে বলল “ রাগ করিস না। আমিও তোর মতই ফেঁসে গেছি। চল আরেকবার পড়ে দেখি যদি কিছু বের করতে পারি।“ প্রায় দশ মিনিট ধরে তাকিয়ে থেকে আমি বললাম “কিছুই বুঝতে পারছি না তবে অনেক গুলো জায়গায় ব্র্যাকেটের মধ্যে “কে” দেওয়া আছে। ওটা কি “কোলকাতা”! মনে হচ্ছে... কলকাতা হলে খারাপ গেস নয়। কারণ যা বুঝলাম সবাই প্রায় ট্রেন ধরবে। আর ডাকাতি যদি হয় তবে কলকাতা ছাড়া আর কোথায় এত বড় হাত মারবে? “ অদিতি ফিস ফিস করে চিন্তিত স্বরে বলল “ কলকাতা ছাড়া যে কোথাও বড় হাত মারতে পারবে না তেমন কোনও কথা নেই যদিও, কিন্তু কলকাতা?” অদিতি যেন হঠাত উত্তেজিত হয়ে পড়েছে, আমার ঠোঁটে একটা চুমু খেয়ে বলল “ইয়েস ইয়েস ইয়েস। তুই কি পড়াশুনা ছাড়া কিছুই করিস নি? আরে আমি তো শুধু ওই “কে” টা বুঝতে পারছিলাম না বলেই আঁটকে ছিলাম। এখন জলের মতন পরিষ্কার। “ আমি ঠোঁট থেকে ওর ঠোঁটের স্বাদ মুছতে মুছতে বললাম “ না আমি কলকাতায় থাকি কিন্তু খুব ভালো চিনি না।“ ও আমার কাঁধ দুটো শক্ত করে চেপে ধরে বলল “ আরে আমারও অনেক আগে বোঝা উচিত ছিল, কিন্তু বুঝিনি। দ্বিতীয় লাইনটা দেখ। এ যে সি , জগদীশ বোস রোড। এবং সেটা কলকাতায়। একশো আঠাশ নম্বর বাড়িতে ডাকাতি বা লুট। সব কটাতে এফ রয়েছে। আমি ভাবছিলাম সেটা ফ্ল্যাট নাম্বার, যদি সেটা সত্যি ওই ভাবে ব্যবহার করে থাকে। এখন মনে হচ্ছে যে হয় ফ্ল্যাট নাম্বার বা ফ্লোর নাম্বার। “ আমি বললাম “ জায়গায় জায়গায় “এ” লেখার মানে কি? আর ওই “এল”?” ও বলল “মনে হচ্ছে যদি সাধারণ ব্যাপারটা ধরে নেওয়া যায় তাহলে কোথায়, কত নম্বর ফ্লোর, কে থাকবে আর কত টাকা আন্দাজ দখল করতে পারে সে নিয়েই ওদের ভাবনা। “ এ কথাটা তো আগে ভেবে দেখিনি। এই দু তিনদিনে এরা শুধু ছেলের বয়স বা স্বাস্থ্য, কত টাকা সেখানে আছে, আর কোথায়, সেটা নিয়েই (অবশ্য কোথায় বলতে হোটেল বা জায়গার নাম ছাড়া আমাদের কিছুই বলে নি) আমাদের গল্প শুনিয়েছে। আমি বললাম “এ মানে হল এইজ, মানে বয়স?” ও আমার গালে হাত বুলিয়ে বলল “ ইয়েস মাই লেডি লাভ। আর “এল” মানে লাখ। ভুল হতে পারে। তবে আপাতত সেটাই বিশ্বাস করতে হবে। কারন সকালে রাকা বলেছিল ওর সামনা সামনি যুদ্ধে যাচ্ছে। আর আজ ওদের বিশাল বড় দিন।“ আমি বললাম “ তাহলে ব্যাপারটা কি দাঁড়াল? “ প্রথমেই ধাক্কা খেয়ে থেমে যেতে হল। ও আমাকে বলল “তুই না একটা ইয়ে। জে এল। মানে হল জেমস লং আর পরের এস টা বাদ দিও না সোনা , সেটা হল সরণী, অর্থাৎ জেমস লং সরণী তে , এবং যেটা কোলকাতায়, সেখানে তিয়াত্তর নম্বর বাড়ির, (একটু থেমে বলল) ফ্লোর এক্ষেত্রে হওয়া মুশকিল কারণ ওই চত্বরে অত তলার বাড়ি এখন অন্তত নেই, আর তাই ফ্ল্যাট নাম্বার ধরে নিচ্ছি, তেইশ নম্বর ফ্ল্যাটে পরের ডাকাতি। বয়স ছত্রিশ, সম্ভবত পুরুষ, আর এল মানে যদি লাখ হয় তো সেখান থেকে ছেষট্টি লাখ লোটার প্ল্যান নিয়ে গেছে।“ ও বলে চলল “ পরেরটা আচার্য জগদীশ বোসের ওপর। বাড়ির নাম্বার একশ আঠাশ, তবে, এটা অবশ্য ফ্ল্যাট বা ফ্লোর দুই হতে পারে। ধরে নিচ্ছি ২ নম্বর ফ্লোর।মক্কেলের বয়স ঊনত্রিশ। আর সেখান থেকে উনিশ লাখ টাকা পাবে। পরের টা অবশ্য আমিও বুঝতে পারছি না।“ আমরা অনেকক্ষণ বাকি লাইনগুলোর দিকে তাকিয়ে হাল ছেড়ে উঠে পড়লাম। তবে ততক্ষণে আমাদের দুজনের মাথাতেই সংকেতগুলো ছাপা হয়ে গেছে। মাত্র দুই লাইনের মানে হয়ত উদ্ধার করতে পেরেছি। কিন্তু মাথার ভেতরে নিরবে অর্থহীন সংক্ষিপ্ত অক্ষর গুলো থেকে মানে বের করার প্রবল চেষ্টা চালিয়ে চলেছি। আমি হেঁসে বললাম “পি এন ডি মানে পোঁদ নয় তো?” অদিতি আমাকে বলল “সেটা হলে চাপ কম হত। চল দেখি বাইরে কি হচ্ছে। চল।“ কথায় বলে যেদিন ভগবান তোমার দিকে দাঁড়িয়ে আছেন সেদিন সব কিছু সোজা হয়ে যায়। আজ আমাদের সাথে তাই হল।

ট্রেনিং তখনও চলছে। অদিতি আমাকে বলল “ওই দিকে দেখেছিস?” ওর বাকি কথাটা শেষ হল না। আরও চার জন একটা কাটা পাঁঠার মতন ছটফট করতে থাকা মেয়েকে নিয়ে এলো। ট্রেনিং করতে গিয়ে কিসের ওপর পা পড়েছে। প্রথমে ওরা খেয়াল করে নি। কিন্তু এখন মনে হচ্ছে কিছুর একটা থেকে শরীরে বিষ ঢুকে গেছে। কলকাতা বা বড় হাঁসপাতাল হলে অনেক বড় বিভাগ থাকে এর জন্য। কিন্তু আমি আমার জ্ঞান অনুযায়ী ওষুধ আগের দিনই আনিয়ে রেখেছিলাম। বিছার কামড় খুব সম্ভবত। কেডস খুলে খালি পায়ে দৌড়াবার ফল। তবে ওষুধ একই। এর থেকে ভালো ওষুধ আমার জানা নেই, আর আমার সেই বিভাগে বেশী পড়াশুনাও নেই। তবে কাজ দিয়েছিল। একটা ইনজেকশন। অনেকক্ষণ পরে সে চাঙ্গা, যদিও রেস্টে। চারপাশে আমাদের জয় জয় কার। আমরা কেডস ছাড়া দৌড়াতে বারণ করে দিলাম। তবে তেমন বিছা হলে এই শস্তা কেডসে কিছু হবে বলে মনে হয় না। বিছা বা যাই হোক না কেন সেই ব্যাপারটা সারার পর আবার আমরা গেলাম অদিতির আগে দেখানো জায়গার দিকে। কেউ আমাদের দিকে কোনও লক্ষ্যই করছে না। রাকা (দি) ছিল কিন্তু সেও না। ওদের থেকে বেশীদূর যাওয়া ঠিক হবে না মনে করেই ফিরে এসে রাকা কেই জিজ্ঞাসা করলাম “ আচ্ছা ওখানে কি দীঘি আছে। আমাদের দুজনেরই সাঁতারের খুব শখ। “ ও একবার ওই দিকে তাকিয়ে বলল “পুকুর ওটা। সোনা মা আমাদের, ওখানে যেও না। সাপে কাটলে আর দেখতে হবে না।“ ওর কথা শেষ হল না, অদিতি আমার হাতটা চেপে ধরল। সরে যাওয়ার পর বলল “ বি পি এন ডি। বেনিয়া পুকুর । কলকাতাতেই আছে। পনড। হল পুকুর। ইচ্ছা করে “ও” টা বাদ দিয়ে দিয়েছে যাতে সাধারণ লোক বুঝতে না পারে। আই মীন হাতে কাগজটা পড়লেও যাতে একটু সময় নষ্ট হয়। “ সত্যি তো বুঝে ফেলা উচিৎ ছিল। “এগারো নম্বরে গিয়ে গ্রাউন্ড ফ্লোরে কাউকে লুটবে আর তার বয়স পঞ্চান্ন, আর শুধু তাই নয়, সে বিশাল বড় টাকার মালিক কারণ তার থেকে পয়ত্রিশ লাখ লুটবে এরা। “

আমার উত্তেজনা বেড়ে গেছে। আমি বললাম “ আর এফ এস এস? “ অদিতি বলল “জলের মতন সোজা। ওখানে থিয়েটার আর সিনেমা দেখতে যেতাম। ফ্রি স্কুল স্ট্রিট। ক্রসটা বোধহয় ক্রসিং। কত নাম্বার ক্রসিয়ে গিয়ে ওই বারো নম্বরের বাড়িটা পাবে তার সংকেত দেওয়া আছে। বাকি টা আর মুখে বলার দরকার নেই। কিন্তু তার পরের লাইনগুলো সত্যি ধোঁয়া। বড্ড সাংকেতিক হয়ে গেছে ওগুলো।“ উফফ এই বাজারে জেসাসের পুনর্জন্ম। ভগবান। আরেকটু তাকাও আমাদের দিকে। বুদ্ধি তো একেবারে তলানি তে গিয়ে ঠেকেছে। কিন্তু আমরা হাল ছাড়লাম না। ভগবান আমাদের দিকে তাকিয়ে ছিলেন ঠিকই কিন্তু আরও কিছুক্ষণ পর। তবে তাতেও পুরো রহস্যের সমাধান হল না। আমি আমাদের ঘরের সামনে বসে বাসে বাকি লাইন কটার যত ছাড়ানোর চেষ্টা করছি এমন সময় দেখলাম দুটো ইয়া বড় বড় ট্রাক এসে দাঁড়াল। এতক্ষন খেয়াল করিনি। এখন দেখলাম আলি রান্নার জায়গা থেকে ছুটতে ছুটতে ওই ট্রাকের দিকে এগিয়ে গেলো। ট্রাকের ড্রাইভারদের সাথে ও অনেকক্ষণ কথা বলল। ওদের হাত থেকে কাগজ নিয়ে কিছুক্ষণ পরীক্ষা করে দেখে আমাদের দিকে তাকাল। আমরাও ওই দিকেই তাকিয়ে ছিলাম। হাতের ইশারায় আমাদের ডাক দিতেই আমরা অরূপদার ঘরের দিকে হাঁটা দিলাম। পথে অদিতি আমাকে ফিস ফিস করে বলল “ তিন আর চারের দুপাশে যে ব্র্যাকেট দিয়ে রেখেছে তার একটা মানে আমি বুঝতে পেরেছি। এই দুটো জায়গার দূরত্ব আহামুরি কিছু বেশী নয়। হয়ত একই দল গিয়ে ওই দুটো জায়গা লুট করবে।“ এই নিয়ে আর কথা বলা হল না। কারণ দুটো ড্রাইভার আর রাজুকে নিয়ে আলি এসে হাজির হয়েছে অরূপদার ঘরে। চারটে বিশাল বড় বড় লিস্ট আমাদের হাতে থামিয়ে দিয়ে রাজুকে নিয়ে চলে গেল মালের তদারকি করতে। ট্রেনিং করা ছেড়ে অনেক গুলো মেয়েও দৌড়ে ট্রাকের কাছে গিয়ে জড় হয়েছে মাল নামানোর জন্য। বুঝলাম এদের পয়সা করির ভালোই আমদানি হয়েছে শেষ কিছু দিনে। কারণ লাখ লাখ টাকার আনাজ পাতি, সব্জি, চাল, দাল, মাছ, মাংস, ডিম, মোমবাতি, আটা, লুস মশলাপাতি খরিদ করা হয়েছে। আর তার সাথে প্রচুর নতুন বন্দুক আর গুলি আর বোমার আমদানি করা হয়েছে। সাথে মেয়েদের কিছু পোশাকও এসেছে। সব মিলিয়ে বিল দিয়েছে প্রায় ছাপ্পান্ন লাখ টাকার। মেয়েদের ইন্সট্রাক্সান দিয়ে আলি আবার ফিরে এসেছে। অদিতি দেখলাম আমারই মতন অঙ্কে কাঁচা। কড় গুনে গুনে যোগ করতে হচ্ছে আমাদের দুজনকে। একটা পেন ছিল টেবিলে সেটা দিয়েই টিক কেটে কেটে যোগ গুলো মেলালাম। মেয়েরা আমাদের থেকে গ্রিন সিগন্যাল না পাওয়া অব্দি জিনিস নামাচ্ছে না ট্রাক থেকে। আমাদের হিসাব মেলানোর পর লিস্ট চারটে নিয়ে গেলাম ট্রাক দুটোর দিকে। আলি আর অমল (এই প্রথম ছেলেটা কে দেখলাম, মানে দেখেছি আগেই, কিন্তু এই যে অমল সেটা এখন জানতে পারলাম) একটা ট্রাকে উঠে গেল। রাজু একটা মেয়েকে নিয়ে অন্যটায় উঠে পড়ল। আমি লিস্ট পড়তে শুরু করতে যাচ্ছি হঠাত একজন ড্রাইভার আমাকে থামিয়ে আলি কে হাত দেখিয়ে বলল “ আসল জিনিসটাই তো দি নি।“ ওর কথায় হিন্দি হিন্দি একটা টান আছে। পাঞ্জাবি তুলে নিজের পায়জামার কোমরের কাছ থেকে গোঁজা একটা জিনিস বার করে কপালে ঠেকিয়ে আলির দিকে উঁচিয়ে ধরল। আমি রিভলবার শুধু পুলিশদের কোমরেই গোঁজা অবস্থায় দেখেছি, জীবনে কোনও দিন হাতে নিয়ে দেখিনি, আর এই বিষয়েও আমার জ্ঞান অত্যন্ত সীমিত। এখানে আসার পর অবশ্য দেখেছি কয়েকজনের হাতে। তবে এটা মনে হল একদম সেই ফিল্মি মার্কা সাহেবি পিস্তল। “এটার টাকা লাগবে না। এটা বেগমের কাছ থেকে সেলামি। লোডেড। কিন্তু আরও গুলি লাগলে পয়সা দিয়ে কিনতে হবে। এটার ম্যাগাজিন ভর্তি। আসাম বর্ডার পার হয়ে এসেছে। অনেকগুলো এসেছে। লাগলে বলবেন। এত শস্তায় এ জিনিস আর কোথাও পাবেন না এই বলে দিলাম।“ মনে হল পুরো দেশটাই আগুনের গোলার ওপর বসে আছে।




[/HIDE]
 
[HIDE]

12

“ওদের দিয়ে দাও। “ আলি আমাদের উদ্দেশ্য করে বলল। আমি ছুরি কাচি অনেক ধরেছি কিন্তু বন্দুক এই প্রথম। আমার হাতে বন্দুকটা ধরাতে ধরাতে লোকটা বলল “সাবধান, ম্যাগাজিন ভরা।“ দেখতে ছোট হলেও জিনিসটা বেশ ভারী। জিনিসটা হাতে নিতেই আমার হাত কাঁপতে শুরু করে দিয়েছে। মানুষের পেট কাটার সময় আমার হাত আজ অব্দি কাঁপে নি, কিন্তু এই ছোট জিনিসটা হাতে নিতেই কেমন জানি একটা ভয় মনের মধ্যে এসে জুড়ে বসল। আরেকটু হলে জিনিসটা আমার হাত থেকে মাটিতে পড়ে যেত, ঠিক এমন সময় অদিতি জিনিসটা আমার হাত থেকে তুলে নিল। “কি করছ? এই জিনিস হাত থেকে পড়ে গেলে খুব খারাপ। তার ওপর আবার সেলামির জিনিস।“ অদিতি কিন্তু স্বাভাবিক ভাবে হেঁসে হেঁসেই কথা বলছে। বন্দুকটা হাতে নেওয়ার পরও ওর মধ্যে কোনও রকম অস্বস্তি চোখে পড়ল না আমার। যেন একটা খ্যালনা নিয়ে হাতে নেড়ে চেড়ে দেখছে। সাহস আছে বলতে হবে মেয়েটার। আমি লিস্ট থেকে একটা একটা করে জিনিস পড়া শুরু করলাম। খুব মেপে মেপে জিনিস নামানো হচ্ছে। সেটা স্বাভাবিক, কারণ অনেক রক্ত মাংস বেচে জীবন বিপন্ন করে উপার্জন করা টাকা দিয়ে এই জিনিস কেনা। তবে বাজারের থেকে অনেক শস্তায় পেয়েছে তাতে কোনও সন্দেহ নেই। দু তিনটে জিনিস ছাড়া বাকি সব যেমন লেখা আছে তেমনটাই আছে। তবে ওজনে কারছুপি থাকলে জানি না। সব জিনিস নামানো হয়ে গেলে সবাই মিলে ট্রাকের ভেতরগুলো ভালো করে তন্ন তন্ন করে খুজে দেখে নিল যে কিছু ফেলে রাখা হয়েছে কি না। জিনিস সরিয়ে ফেলা হল। ওই দু তিনটে জিনিস ওরা বলল কালকের মধ্যে এসে দিয়ে যাবে। কিন্তু আলি বলল তার দরকার নেই কারণ বারবার এদিকে এলে পুলিশের নজরে পড়তে বেশী দেরী হবে না। ও নিজেই লোক পাঠাবে সেই তুলে নেবে। এইবার টাকা দেওয়ার পালা। একটা মেয়ে এসে দুজন ড্রাইভারের জন্য চা দিয়ে গেল। ওরা চায়ের গ্লাস হাতে নিয়ে আবার হাঁটা দিল অরূপদার ঘরের দিকে। আমি আলি আর অদিতি ওদের পিছন নিলাম। অদিতি ফিস ফিস করে আলি কে বলল “আলিদা এত অনেক অনেক জিনিস। এত লোক কোথায়?” আলি বলল “ অনেক দিনের জিনিস এসেছে। আর টুকিটাকি কিছু লাগলে যোগান আসে। তিন চার মাসে একবার দুবার এরকম রিফিল করে নি। বাকি জিনিস নিয়ে কেউ এখানে আসে না। কোথাও নামিয়ে দিয়ে যায়, আমরা সময় মতন উঠিয়ে নি। “ আরতি অবশ্য এমনটাই বলেছিল সেদিন। আলি আমাদের দুজনকে গলা নামিয়ে নিয়ে বলল “অরূপদা বলে গেছে যে একটা বাদামী খাতায় জিনিসের রেট লেখা আছে। এর আগে কোনও দিন ওর অনুপস্থিতিতে এত মালের ডেলিভারি নেওয়া হয় নি। একবার খুজে দেখ। বোধহয় হাতের কাছেই থাকবে। আমি টাকার বন্দবস্ত করছি। “ অদিতি আলির বা হাতটা চেপে ধরে বলল “ওই তিনটে জিনিস, যেগুলো আসে নি, তার টাকা দেবে না। “ আমি বলে দিলাম টোটাল কত টাকা দিতে হবে। আলি আমাদের অরূপদার ঘরে রেখে ওদের দুপুরে এখানেই খেয়ে যাওয়ার নিমন্ত্রণ জানিয়ে টাকা আনতে চলে গেল। অবশ্য যাওয়ার আগে অদিতির হাত থেকে কালো চকচকে জিনিসটা নিয়ে চলে গেল।

খুব বেশী খুজতে হয় নি, বই রাখা তাকেই পাওয়া গেল সেই বাদামী খাতা। সত্যি তাতে সব কটা জিনিসের রেট লেখা আছে। আর সাথে তারিখও দেওয়া আছে। তারিখ ছয় দিন আগের। মনে হয় সেদিনই এদের সাথে ডিল ফাইনাল করেছিল অরূপদা। না কোথাও রেটে কোনও ভুল নেই। বরং কয়েকটা জিনিসের রেট যা ধরা হয়েছে সেটা খাতায় লেখা সংখ্যার থেকে কম। আমাদের গুন যোগ করতে অনেকক্ষণ লাগলো। ইতিমধ্যে আলি ফিরে এসেছে একটা বড় ব্যাগ নিয়ে। ওদের সামনে ব্যাগটা নামিয়ে রেখে বলল “ গুনে নিয়ে একটা কাঁচা রসিদ লিখে দাও তোমরা। বাকি টাকা ওই জিনিসগুলো নেবার সময় পাঠিয়ে দেওয়া হবে। “ আমরাও একটা কাঁচা রসিদ দিয়ে দিলাম। উল্লেখ করে দিলাম যে কি কি জিনিস এখনও আমাদের কাছে আসা বাকি, আর কত টাকা আমাদের তরফ থেকে ওদের দেওয়া বাকি। অদিতি এক একটা টাকার থোক গুনে গুনে অ্যাঁমাউন্টটা ওদের বলছে, ওরাও আবার নিজেরা গুনে নিয়ে মিলিয়ে নিচ্ছে। অদিতির টাকা গোণার ভঙ্গি দেখে বুঝতে পারলাম আমার মতই ও ও নোট গোণার কাজে ভীষণ অপটু। আমি বাদামী খাতাটা আবার জায়গায় রাখার সময় খেয়াল করলাম কয়েকটা বইয়ের পেছনে একটা চটি মতন বই তাকের একদম পিছনে লুকিয়ে রাখা আছে। লুকিয়ে রাখা আছে সেই ব্যাপারে আমি নিশ্চিত কারণ, নইলে এইভাবে একদম বইয়ের স্তূপের পিছনে রাখার কোনও কারণ নেই। সহজে চোখে পড়বে না। লাকিলি আমার চোখে পড়ে গেছে। কিন্তু ওদের সামনে বের করা যাবে না বুঝে পুরো ব্যাপারটা চেপে গেলাম তখনকার মতন। টাকা গোণাও শেষ হল। শুনলাম মাছ বসানো হচ্ছে। ড্রাইভার দুজন অনেক অনুরোধ সত্ত্বেও এখানে খেতে রাজি হল না। ওরা টাকার ব্যাগ হাতে রওয়ানা দিল। অরূপদার ঘরে এখন শুধু আমরা দুজন। চারপাশটা দেখে নিলাম একবার। অদিতিকে গলা নামিয়ে বললাম ওই চটি বইটার কথা। ও বলল “ যদি সত্যি লুকিয়ে রাখা থাকে, তাহলে সেটা বের করা রিস্ক হবে। কারণ পরে যদি ধরতে পারে তাহলে বলবে গুপ্তচরের কাজ করছি। এক কাজ কর তুই বাইরে নজর রাখ কেউ এলেই বলবি। আমি বইটা বের করে কি লেখা আছে দেখে নিচ্ছি। তারপর আলোচনা করা যাবে।“ আমি ওকে সাবধান করে দিলাম “দেখিস কোনও বই ফেলিস না। আর ঠিক যেভাবে আছে ঠিক সেইভাবে বইটাকে আবার রেখে যেতে হবে।“ তাকটার গভীরতা বেশ ভালো। প্রায় দুই স্তর বইয়ের পেছন থেকে অদিতি ওই চটি বইটা বের করল। আমি বাইরে গিয়ে দাঁড়ালাম পাহারা দিতে। মাঝে মাঝে আড় চোখে ঘরের ভেতরে তাকিয়ে তাকিয়ে দেখছিলাম যে অদিতি প্যাড থেকে একটা কাগজ ছিঁড়ে নিয়ে পেন দিয়ে তাতে ওই চটি বইটা থেকে কিসব লিখে নিচ্ছে। মেয়েটা না একটা মাথা মোটা। আগে লিখে নিয়ে তারপর প্যাড থেকে পাতাটা ছিঁড়ে নিলেই হত। এখন খড়খড়ে কাঠের টেবিলে পাতলা কাগজটা রেখে তার ওপর লিখতে রীতিমত বেগ পেতে হচ্ছে সেটা বেশ বুঝতে পারছি। আর সময়ও লাগছে বেশী। আমার তো হার্ট বিট অনেকক্ষণ ধরেই বেড়ে গেছে। যাই হোক। ওর সব কিছু নোট করে নেওয়ার আগে কেউ এলো না। ও বইটা আবার আগের জায়গায় ঢুকিয়ে রেখে ভালো করে বইয়ের স্তরের পেছনে সেটাকে লুকিয়ে রেখে কাগজটা ভাঁজ করে নাভির নিচে শাড়ির গিঁটের মধ্যে ভালো ভাবে গুঁজে নিল। এখন আর বাইরে থেকে দেখে কিছু বোঝার উপায় নেই। বেড়িয়ে এসে আমার হাত ধরে বলল “খাজানা পেয়ে গেছি। চল। “ বাইরে মেয়েদের ট্রেনিং ধীরে ধীরে ভাঙতে শুরু করে দিয়েছে। কেউ কেউ তখনও নিশানা প্র্যাকটিস করছে। তবে অধিকাংশই দেখলাম কল পাড়ের দিকে হাঁটা দিয়েছে। অনেক বেলা হয়েছে। তবে জানি আজ খেতে অনেক দেরী। অদিতি ঘরে এসেই আমাকে ইশারায় বলল “বাইরে দাঁড়িয়ে দেখত কেউ আসছে কি না এই দিকে। “ আমি দরজার বাইরে গিয়ে দাঁড়াতেই অদিতি পিছনের দরজাটা খুলে বাইরে গিয়ে ওই কাগজটা একটা ঝোপের নিচে পাথরের নিচে চাপা দিয়ে ফিরে এলো।





[/HIDE]
 
13

ও ফিরে আসার পর ওকে আমি বললাম “তুই একটা বলদ। ওই রকম কাঠের টেবিলের ওপর কাগজ পেতে লেখা যায়? কতক্ষণ সময় লাগিয়েছিস জানিস?” ও বলল “ জানি। আর কাগজটার দু একটা জায়গা ছিঁড়েও গেছে স্বাভাবিকভাবে, তবে প্যাডের ওপরে রেখে লিখলে অরূপদা যে ভুলটা করেছে আমাদেরও সেই একই ভুল করা হত। ও ফিরে আসার পর সন্দেহ করলে প্যাডের কাগজে পেন্সিল বা মাটি ঘষে বুঝতে পারত যে ওর আকাউন্টের ডিটেল কেউ প্যাডের কাগজে নোট করে নিয়েছে। “ আমি একটু ভুরু কুঁচকে বললাম “কার অ্যাঁকাউন্ট?” ও বলল “ আমার বাপের শালার।“ তারপর চোখে ইশারা করতেই আমি চুপ করে গেলাম। ও আমাকে জিজ্ঞেস করল “তুই ইতিহাসে কেমন ছিলিস?” আমি বললাম “ খুব কাঁচা। তবে মুখস্থ করে উগড়ে দিতাম। লেটার পেয়েছিলাম।“ ও আমার সাথে হাত মিলিয়ে বলল “সাবাস রুমি ডার্লিঙ আমিও লেটার পেয়েছিলাম। এইবার একটা প্রশ্ন তোমাকে আমি করব। দেখি তোমার বিশ্ব ইতিহাস কতটা মনে আছে।“ আমি দম নিয়ে সোজা হয়ে বললাম “বল শুনি।“ ও গলা নামিয়ে বলল “জেসাসের পুনর্জন্ম বা ফিরে আসার ব্যাপারটা মনে আছে?” আমি বললাম “সোজাসুজি বল না রিসারেকশন নিয়ে জিজ্ঞেস করছিস।“ ও আমাকে বলল “হ্যাঁ। কিন্তু প্রশ্নটা হল তখন এক্স্যাক্টলি কি হয়েছিল মনে আছে। “ আমি এই প্রশ্নটার জন্য মোটেই তৈরি ছিলাম না। তাই একটু ভেবে নিয়ে বললাম “ ওই তো প্যালেস্টাইনের কিছু কিছু জায়গায় ওকে আবার দেখা গিয়েছিল।“ ও বলল “ বেশ এইবার সংকেতটা মনে পড়ে?” আমি বললাম “তা মনে আছে। bob-ac-(12230??jesus resurrection in PL(how many pl))-dep-82l”। ও আমাকে বলল “ ঠিক। “পি এল” টা কি সেটা বুঝতে পেরেছিস?” আমি চিন্তা করছি দেখে বলল “ খুব সম্ভবত প্যালেস্টাইন।“ একটু থেমে বলল “ সুক্ষ জিনিসটা খেয়াল করে ছিলিস? একটা “পি এল” ক্যাপিটালে লেখা আরেকটা ছোট হাতে। “ সত্যি তো ঠিক তাই। ও বলে চলল গলা নামিয়ে “ বড় হাতের পি এল হল প্যালেস্টাইন। আর ছোট হাতের পি এল হল সাধারণ কথায় প্লেস বা প্লুরাল করে বললে প্লেসেস। আর আমি এই ব্যাপারে মোটামুটি সিওর।“ আমার চমকের ভাব তখনও কাটেনি। বললাম “ এত সিওর হচ্ছিস কিভাবে?” ও বলল “ কটা প্রশ্নবোধক চিহ্ন ছিল মনে পড়ে ওই লাইনে?” বললাম “দুটো।“ ও বলল “এইবার একটা জিনিস বল দেখি জেসাস কে প্যালেস্টাইনের কটা জায়গায় দেখা গিয়েছিল একই দিনে বা একই সাথে? হাউ মেনি প্লেসেস? “ ওর মুখে বিজয়িনীর হাঁসি। বললাম “তা জানি না। বা ভুলে গেছি। “ বলল “চিন্তা করে লাভ নেই আমারও মনে নেই। কিন্তু আমি উত্তরটা জানি। একুশ। “ (In a same day, Jesus appears in 21 different places of the Palestine to confirm in His Resurrection those who believe in Him.) আমি বললাম “বাপরে এটা বুঝলি কি করে?” ও গলা যতটা খাদে নামানো যায় নামিয়ে নিয়ে বলল “ দুটো প্রশ্ন বোধক চিহ্ন, মানে দুটো সংখ্যা। দুই আর এক। মিলল? এইবার আরেকটা তথ্য দিচ্ছি। বি ও বি হল ব্যাঙ্ক অফ বরদা। অ্যাঁকাউন্ট নাম্বার হল এক দুই দুই তিন শূন্য “দুই” “এক”। অ্যাঁকাউন্টের মালিক অরূপ কুমার ঘোষাল। নমিনি শ্রীমতী বিনীতা ঘোষাল। আর আগের মাসের সতের তারিখে পাশ বই শেষ বারের মতন আপডেট করা হয়েছিল। সেই দিনের হিসাব অনুযায়ী অ্যাঁকাউন্ট ব্যাল্যান্স হল ছয় কটি তিয়াত্তর লক্ষ সিক্সটি ফোর থাউজেন্ড অ্যান্ড থার্টি টু রুপিজ অনলি।“ টাকার অঙ্কটা শুনে মাথা ঘুরে গেল আমার। মুখ থেকে আপনা আপনি বেড়িয়ে গেল “এত টাকা এলো কোথা থেকে?” ও আমার দিকে হাঁসি হাঁসি মুখে তাকিয়ে বলল “দ্যাটস অ্যাঁ মিলিয়ন ডলার কোশ্চেন। আলি দার সাথে একটু কথা বলতে পারলে ভালো হত। তবে ও অরূপদার ব্যাপারে জেনে বুঝে মুখ খুলবে বলে মনে হয় না।“ আমি বললাম “অর্থাৎ dep-82l মানে হল যাকে এই সংকেতটা জানাবে সে অ্যাঁকাউন্ট নম্বরটা উদ্ধার করে তাতে বিরাশি লাখ টাকা জমা দেবে। কিন্তু কে সে?” ও বলল “আমিও ততটুকুই দেখেছি যতটা তুই দেখেছিস। তবে আলি দা বা বাকিরা এখানে ভীষণ সজাগ। হিসাব নিকাশ কেউ দেখে না ঠিকই, কিন্তু এত বড় অঙ্কের টাকার গড়মিল হলে ওদের চোখে পড়ার কথা। অন্য কিছু ঘাপলা আছে সোনা, অন্য বড় কিছু ঘাপলা। “ ও আমাকে এরপর একটা বাজে প্রশ্ন করল “ আচ্ছা আমার পিরিয়ডস হয়েছিল অমুক তারিখে। এখন কি আমার সেফ পিরিয়ড? “ মাথা নাড়িয়ে বুঝিয়ে দিলাম “না।“ বলল “এখন পিল খেলে কাজে দেবে?” আবার বুঝিয়ে দিলাম না। বললাম “তোর মতলব খানা কি বলত?” বলল “ আলির উত্তেজনার মুহূর্তে ওর পেট থেকে কিছু কথা বের করা।“ আমি বললাম “আমার এখন সেফ পিরিয়ড চলছে। কিন্তু... “ ও বলল “তাহলে তুই ওকে আজ বিছানায় তোল। আগের দিন রাজুর সাথে বিনীতা যখন করছিল তখন যা বুঝেছি, তাতে এরা সবাই ভেতরে ফেলে অভ্যস্ত। আর আলি দা কত দিন অভুক্ত কে জানে। ভেতরেই ফেলতে চাইবে বলে মনে হয়।“
 
[HIDE]


14

আমাদের কথা ওখানেই থেমে গেল। দেখলাম আলি দা এগিয়ে আসছে। চাপা গলায় বললাম “অনেক দিন বাঁচবে তাতে সন্দেহ নেই। “ ও আরও গলা নামিয়ে বলল “ এগিয়ে পড়। “ মনে প্রচণ্ড দ্বিধা আমার। মন থেকে ব্যাপারটা কিছুতেই মেনে নিতে পারছি না। শুধু মাত্র সেফ পিরিয়ড চলছে বলে এই লোকটার সাথে শুতে হবে কিছু কথা বার করার জন্য। ও এসে বলল “ আরেকটু সময় লাগবে আজ খাবার তৈরি হতে। “ অদিতি বলল “ তোমাকে কিন্তু আমার বন্ধুর খুব মনে ধরেছে। সারা দিন এত খাটা খাটনি কর সবার জন্য। আমাদের এত খেয়াল রাখো। কি? ঠিক বলিনি?” শেষ প্রশ্ন দুটো আমাকে লক্ষ্য করে ছোড়া। আলি দেখলাম খুব একটা অপ্রস্তুত হল না। আমি খুব বোকা বনে গেছি। লাজুক লাজুক মুখ নিয়ে মাথা নিচু করে দাঁড়িয়ে রইলাম। “কিন্তু আমি তো শুনেছি তোমার একজন বয় ফ্রেন্ড আছে। আর তোমরা না কি খুব শিগগির বিয়ে করতে পারো।“ জানি না এর পরে কি হবে কিন্তু এখন কিছু একটা উত্তর না দিলেই নয়। নইলে সব ব্যাপারটা কেঁচে যাবে। বললাম “আছে কিন্তু। অনেক দিন... বুঝতেই পারছ।“ ও একটা শান্ত হাঁসি হেঁসে বলল “ঠিক আছে। এই নিয়ে পরে কথা হবে। “ অদিতি আগ বাড়িয়ে বলল “ বিকালের দিকে রোদ পড়ে ওকে নিয়ে একটু ঘুরিয়ে দেখাও না জায়গাটা।“ আলি বলল “কিন্তু কালকে তো দাদা আর দিদি (বউদি ডাকে না কেউ) দুজনেই তোমাদের ঘুরিয়ে দেখিয়েছে। “ অদিতি একটা চোখ মেরে ইঙ্গিতপূর্ণ স্বরে বলল “ ওদের দেখানো আর তোমার দেখানো কি এক ওর কাছে? আচ্ছা বেশ অকেই জিজ্ঞেস করে নাও। “ আমার ঘাড়ে আলতো করে হাত বুলিয়ে ও ঘরে ঢুকে গেল। আমি কি বলব ঠিক বুঝে উঠতে পারলাম না। চুপ করে আলির মুখের দিকে শূন্য দৃষ্টি দিয়ে দাঁড়িয়ে থাকলাম। ও বলল “বেশ সাড়ে চারটার পরে এসে তোমাকে নিয়ে চারপাশটা ঘুরিয়ে দেখাব। “ লোকটা সরল। কারণ আমার সাথে ওর খুব একটা কথা বার্তা হয় নি। এত সহজে ব্যাপারটা মেনে নিল কি করে। অদিতি নিজে যদি এই কথা বলত তাহলে তাও না হয় মানতাম, কারণ ওর সাথে ওর সকাল বেলায় অনেকক্ষণ ব্যক্তিগত কথা হয়েছে। ওদের মধ্যে বন্ধুত্বও হয়েছে। কিন্তু আমার ব্যাপারে দুম করে মেনে নিল কি করে? লোকটা হয়তো সত্যি অনেক দিন নারী সঙ্গ থেকে বর্জিত, হঠাত করে একটা সুযোগ পেয়ে গিয়ে ছাড়তে পারছে না। আর নয়ত, নয়ত যে কি সেটা মাথায় আসছে না। হঠাত করে কোনও মেয়ের ওকে মনে ধরেছে দেখে সুপ্ত পুরুষালি চেতনাগুলো জেগে উঠলো? কিন্তু এখন আমি কি করব? আমি মাথা নাড়িয়ে সম্মতি জানিয়ে ঘরে ঢুকে গেলাম। অদিতি চোখের ওপর হাত রেখে শুয়ে পড়েছে। শাড়িটা ওপরে উঠে প্রায় কোমরের কাছে চলে গেছে। ওর হালকা গোলাপি যোনীদেশ দু পায়ের ফাঁক থেকে দেখা যাচ্ছে স্পষ্ট। খোঁচা খোঁচা লোম গজিয়েছে তাতে। ও হাতের ফাঁক দিয়ে দেখল যে আমি ওর গোপন জায়গার দিকে দেখছি, কিন্তু শাড়ি ঠিক করার কোনও তাগিদ দেখলাম না ওর মধ্যে। আলি আমাদের ঘরের বাইরেই দাঁড়িয়ে আছে। ও চোখের ওপর থেকে হাতটা সরিয়ে দরজার বাইরে দাঁড়িয়ে থাকা আলি কে একবার দেখে নিয়ে বলল “ হিসাবের গড়মিলের ব্যাপারটা জানাটা মাস্ট।“

আমি মনে মনে একটা হিসাব কষে নিলাম। বিকালে হাঁটতে বেড়িয়েই ওকে মিষ্টি মিষ্টি কথার ফাঁকে কথাটা জিজ্ঞেস করতে হবে। তবে তখন পেট থেকে কিছু বের না করতে পারলে জানি না কি হবে। তবে হ্যাঁ অনেকগুলো অসংগতি এই পুরো সংগঠনে। অরূপদা কি সত্যি ভালো না কি মুখোশের আড়ালে অন্য একটা শয়তান লুকিয়ে আছে। মাছ ভাজা দিয়ে দুপুরের খাওয়াটা মন্দ লাগলো না আমার। মেয়েরা একটু রেস্ট নিয়ে আবার চলে গেল মাঠে। অদিতি আর আমি ঘরে ঢোকার সাথে সাথে অদিতি আমাকে বলল “ বাইরে দেখ কেউ আসছে কি না। কাগজটা নিয়ে আসি। ও কাগজটা নিয়ে আসার সাথে সাথে দুজনে হুমড়ি খেয়ে পড়লাম কাগজটার ওপর। ও খুব ছোট ছোট অক্ষরে পাশবুকের শেষের কয়েকটা পাতার সব তথ্য টুকে এনেছে। একটা ব্যাপার জলের মতন পরিষ্কার। পাঁচ থেকে সাতটা লোক প্রতি মাসে নিয়মিত লাখ দুয়েক বা তিনেক টাকা ওর অ্যাঁকাউন্টে ফেলে যায়। টাকার পরিমাণ প্রত্যেক মাসে একদম এক। মানে যে লোক ছয় মাস আগে ৩ লাখ ফেলেছে, সেই লোক তার পরের প্রত্যেক মাসে একই দিনে তিন লাখ টাকা জমা করেছে ওর অ্যাঁকাউন্টে। যে লোক দুই করেছে, সে প্রত্যেক মাসে একই তারিখে দুই লাখ করে ফেলে গেছে। একটা অ্যাঁকাউন্ট থেকে দেখলাম শুরুতে বারো লাখ টাকা ঢুকেছে, তারপর প্রত্যেক মাসে সে নিয়মিত দুই লাখ করে জমা দিয়ে যাচ্ছে। অ্যাঁকাউন্ট থেকে নগদ টাকা ওঠানো একবারও হয় নি শেষ ছয় মাসে। এরকম দশ বারো লাখ টাকার আরও কয়েকটা এন্ট্রি দেখলাম বিভিন্ন অ্যাঁকাউন্ট থেকে আসা। অদিতি দুটো তারিখ আমাকে মুখস্ত করে নিতে বলল। একটা হল পাঁচই জুলাই, সে দিন বারো লাখ টাকা ওর ব্যাঙ্কে ঢুকেছে। আরেকটা হল বাইশে জুলাই, সেদিনও প্রায় বারো লাখ টাকা ওর ব্যাঙ্কে ঢুকেছে। অবশ্য এর পর থেকে প্রতি মাসে ওই দুই অ্যাঁকাউন্ট থেকেই দু লাখ করে ঢুকে চলেছে আমাদের পূজ্য অরূপদার অ্যাঁকাউন্টে। অদিতি কাগজটা ছিঁড়ে ফেলে পেছনের জানলা দিয়ে বাইরে ফেলে এসে বলল “ জানতে হবে এক থেকে পাঁচই জুলাইয়ের মধ্যে কি হয়েছিল। আর দ্বিতীয়ত, উনিশ থেকে বাইশে জুলাইয়ের মধ্যে কি হয়েছিল। “ আমি বললাম “সেটা তো এমনিতে হাঁটতে হাঁটতেই আমি জেনে নেবার চেষ্টা করব। “ ও বলল “বেস্ট অফ লাক। লোকটার মুখ দেখে মনে হল অনেক দিন নারী শরীরের রস থেকে বঞ্চিত। এখানে গ্রুপ সেক্স অ্যাঁলাউড কি না জানা নেই। নইলে...।“ একটা তির্যক হাঁসি দিয়ে আমার পাশে শুয়ে পড়ল। ফুল ম্যাড মেয়েটা।

বিকালে ঘুম ভাঙল আলির ডাকে। এখানে দরজা খুলেই ঘুমাই। কারণ এতগুলো খোলা জানলা থাকায় দরজা আঁটকে আর আব্রু রক্ষা করা সম্ভব নয়। আর দরজা বন্ধ করলে লোকের সন্দেহ হতে পারে। অদিতি ও উঠে পড়ল। বলল “ সত্যি বলতে কি আমারও তোমাকে খুব মনে ধরেছে। তবে মনের থেকে বেশী শরীরে ধরেছে। কিন্তু তোমাদের মধ্যে কাবাবে হাড্ডি হওয়ার ইচ্ছে আমার নেই। তোমারাই যাও বেড়াতে। “ আলি বলল “উফফ তা কেন? এসো। তুমিও এসো।“ আমার মাথায় শুধু একটা কথা খেলে গেল “গ্রুপ সেক্স।“ কিছুদুর হাঁটার পর অদিতিই কথা শুরু করল। “ আচ্ছা আলি দা, এখানে সবাই খুব বিশ্বাসী না? “ ও সংক্ষেপে উত্তর দিল “ খুবই। সবাই সবাই কে বিশ্বাস করে। আজ অব্দি কেউ বিশ্বাস ভঙ্গ করেছে বলে জানি না।“ এই সাঁড়াশি আক্রমণের সময় এসেছে। আমি কথায় যোগ দিলাম। আমি ওর একটা হাত নিজের হাতে ধরে নিলাম। ভাবখানা অবশ্য এমন করলাম যে এই এবড়ো খেবড়ো মাঠে যাতে পড়ে না যাই তাইই এই বীরপুরুষের হাত ধরে হাঁটছি। আমি মিন মিন করে বললাম “আজ দেখলাম এত টাকার খরিদ হল। তার মানে অনেক টাকা আসে।“ ও বলল “ না গো না। আসে না। আর এতগুলো মানুষের এই টাকায় চলে না। অরূপদার নিজের যা টাকা ছিল সব শেষ করে দিয়েছে ক্যাম্প তৈরির সময়। এখন ওরও কোনও টাকা নেই। “ আমি আর অদিতি একবার চোখা চুখি করে নিলাম। বললাম “ না সেকথা বলছি না। ধরো, এই যে দশ, বারো, কি পনের লাখ লুটে নিয়ে আসা হচ্ছে, কেউ যদি মাঝখান থেকে টাকা ঝেড়ে উড়ে যায়?” ও বলল “এখন অব্দি তেমন হয় নি। আর এটা আমাদের ছোট একটা পরিবার। সবাই যা করছে পরিবারের জন্যই করছে। আমিই টাকা গুনে তুলে রাখি। যত টাকা পেয়েছে বলে জানা যায়, ঠিক তত টাকাই মজুত হয়েছে আজ অব্দি। উনিশ বিশ হয়ে থাকে। আর সেটা সাধারণ ব্যাপার। কারণ হয়ত খবর আছে বিশ লাখ টাকা, কিন্তু আসলে হয়ত আঠারো লাখ লুট হয়েছে। আবার মাঝে মাঝে হয়ত শুনেছি দশ লাখ টাকা, কিন্তু লুট হয়েছে বিশ লাখ টাকা। তবে ফায়ার আর্মসের দাম এত বেশী যে টাকা জলের মতন বেড়িয়ে যায়। কিন্তু তোমাদের এই নিয়ে এত কৌতূহল কেন?” অদিতি বলল “কৌতূহলের কি আর কোনও কারণ থাকে। মনে হল এত টাকা নিয়ে একটা মেয়ে বা কেউ ফিরছে, যদি তার মাথায় বদ মতলব আসে তো তখন তো পুরোটাই লস। “ ও বলল “এখানে দুটো কথা জেনে রাখো। এরকম হলে তাকে আমরা বিশ্বাস ঘাতক বলি। তাকে খুজে বের করে চরম সাজা দেওয়া হয়। মেরেও ফেলতে পারি। আর যারা এইসব কাজ করছে, তাদের হয়ত অনেকের ছবি পুলিশের কাছে আছে। ওরা এই ক্যাম্পেই সব থেকে সেফ। আর তাছাড়া তোমরা একথা ভুলে যেও না, যে এটা আমাদের সবার ঘর, পরিবার। আমরা সবাই একে ওপরের জন্য আছি। আমাদের বাইরে এদের আর কেউ নেই। যাবেই বা কোথায়? আর সিকিউরিটিই বা কে দেবে?”

অদিতি হঠাত বলে উঠল “ আচ্ছা একটা কথা। (আরতি এখানে নেই বলেই বোধহয় ওর নাম বলেছে।) আরতিদি বলছিল যে কয়েক মাস আগে, মানে এই জুলাইয়ের একদম শুরুতে কোথায় নাকি একটা বড় হাত মেরেছিলে তোমরা। আর উনিশ কুড়ি তারিখেও বড় হাত মেরেছিলে?” আমি বললাম “হ্যাঁ গল্পটা চলছিল, কিন্তু মাঝপথে লোক এসে যাওয়ায় কেঁচে গেল। তবে একই মাসে দুটো বড় বড় হাত। তোমাদের এত রিস্ক নিতে ভয় করে না?” ও হেঁসে বলল “ জুলাইয়ে মাত্র ছটা লুট আমরা পেয়েছি। তার মধ্যে চারটেই সোজা সুজি ডাকাতি করতে হয়েছে। তিন তারিখে একটা করেছিল রেশমি। তাতে এক বড় বিজনেসম্যানকে লুটেছিল। প্রায় সতেরো লাখ টাকার উপর। আর একুশ তারিখে করেছিল বিনীতাদি। সেদিনও প্রায় সতেরো-আঠারো লাখ লুটেছিল। তবে একটা সমস্যা হয়েছিল। মাঝে এক দালাল কে দু লাখ দিতে হয়েছিল ওকে। ও প্রতিবাদ করেছিল এতগুল টাকা বিনা কাজে দিতে। কিন্তু এইসব লাইনে লোক হাতে রাখতে হয়। পনের লাখ নিয়ে ফিরেছিল। তবে একদম নিখুঁত কাজ হয়েছে দুটোই। “ আমরা আরও দু একটা টুকিটাকি কথা বললাম। আমার মনে না থাকলেও দেখলাম অদিতি এর ওর নাম ভাঁড়িয়ে আরও তিনটে ডেটের ব্যাপারে জিজ্ঞেস করে নিল। প্রত্যেক ক্ষেত্রেই একই ঘটনা। মেয়েরা গিয়ে লুট করেছে। যাকে লুট করা হয়েছে সে বিশাল বড় লোক। আর অদ্ভুত যোগ হল এই যে সেই ঘটনার পরেই একটা বড় রকম ঢুকেছে অরূপদার অ্যাঁকাউন্টে। আর তার পর থেকে প্রত্যেক মাসে মাসে লাখ দুয়েক তিনেক করে টাকা ঢুকছে একই অ্যাঁকাউন্ট থেকে। অনেকক্ষন ঘোরার পর, অন্ধকার নেমে এলো বাইরে। আমরা আমাদের ঘরের দিকে ফিরে এলাম। অদিতি বলল “ ইয়ে একটা কথা জিজ্ঞেস করলে কি খারাপ ভাববে?” আলি বলল “আরে মন খুলে কথা বলবে এখানে। এখানে সবাই সবার নিজের। “ অদিতি বলল “ বিনীতাদি বলছিল যে এখানে কোনও মেয়ের যদি কাউকে মনে ধরে তো... যদি সেই ছেলের ... মানে... আমরা তো নতুন। “ অনেকক্ষণ আগে আমি আলির হাতটা নিজের হাতে নিয়েছিলাম। এত কথা বার্তার মধ্যে খেয়াল করি নি যে কখন ও নিজেই আমার হাতটা ওর গরম হাতের মধ্যে চেপে ধরেছে। ও হেঁসে আমার দিকে তাকিয়ে বলল “ তোমার যদি আমার কাছে আসতে ইচ্ছে করে তো রাত্রে খাবার পরে চলে এসো।“ অদিতি বলল “ আর আমারও যদি তোমাকে পেতে ইচ্ছে করে তো?” ও বলল “ তুমিও এসো একটু পরে। তবে জানি না। তোমার কতটা ভালো লাগবে।“ অদিতি বলল “সত্যি বলতে কি, এইসব ব্যাপারে আমি রিস্ক নি না। আমি খুব খারাপ মেয়ে। যদি ওর আপত্তি না থাকে তো আমরা কি তোমাকে ভাগাভাগি করে নিতে পারি?” ওর চোখে এক মুহূর্তের জন্য কেমন যেন একটা বিজলীর আলো খেলে গেল। নিজেকে সামলে নিল তৎক্ষণাৎ। ও খুব শান্ত স্বরে বলল “ আমার তোমাদের দুজনকেই পছন্দ। বাকিটা তোমরা নিজেরা বুঝে নাও। “ অদিতি বলল “ একটু মহুয়ার বন্দবস্ত করতে পারবে? আগের দিন আমাদের কেউ দেয় নি।“ ও বলল “এইসব জিনিস কেউ দেয় না। চেয়ে নিয়ে নেবে।“ অদিতি দুষ্টুমি করে হেঁসে বলল “ বেশ তাহলে আজ যা চাই সেটা আদায় করেই তবে ছাড়ব। কেমন? “



[/HIDE]
 
[HIDE]

15

আমি ওকে একলা পেয়ে বললাম “তোর মতলবটা কি বলত? এইসব নোংরামি না করলেই নয়? আর তুই ওদের মতন মহুয়া খাবি?” ও আমাকে বলল “ সাঁড়াশি আক্রমণ করে তাঁতিয়ে তুলতে হবে। এই সুযোগ ছাড়ার নয়। অনেক প্রশ্ন আছে। যতটা ওর পেট থেকে বের করতে পারি ততই ভালো। আর সব থেকে বড় কথা ওর চোখে বিশ্বাস যোগ্য হয়ে উঠতে হবে। আর মহুয়া আমরা সামান্য খাব বা খাবার ভান করব। খাওয়াতে হবে ওকে। তবে এই সব পোড় খাওয়া লোকগুলোর মহুয়ায় কি হয় জানা নেই। “ সন্ধ্যায় আজও ভয়ানক সুন্দর হাওয়া শুরু হয়েছে। বেশ ঠাণ্ডা। দু একটা মামুলি কেস এসেছে আমাদের কাছে। বাকি সময়টা আমরা গড়িমসি করেই কাটিয়ে দিলাম। আজ রাতে নিরামিষ। বাইরে আসর জমেছে। আলি কে দেখলাম বসে বসে একটা দোনলা বন্দুক পরিষ্কার করছে। রাতের সাদা মাটা খাবার খেয়ে আমরা ঘরে ফিরে এলাম। তখন রাত হবে প্রায় দশটা। অদিতি জানলার ধারে ঠায় দাঁড়িয়ে আছে। ও আমাকে জানালার সামনে ডেকে বলল “ ওই দেখ। অভিসারে যাওয়া শুরু করেছে মেয়েরা। চল আমরাও যাই।“ দু একটা মেয়েকে দেখলাম অন্ধকারে হেঁটে হেঁটে গিয়ে নিজের আজকের রাতের নাগরের ঘরে ঢুকে গেছে। অদিতি দেখলাম ভীষণ স্বাভাবিক ভাবে আলির ঘরের দিকে এগিয়ে গেল। দরজা খোলাই ছিল। আলি ভিতরে বসে একটা কাঁচের গ্লাসে মহুয়া খাচ্ছে। বোধহয় আরও কিছু মিশিয়েছে। ঘরে ঢুকতেই একটা বোটকা মতন গন্ধ নাকে এলো। দেখলাম আরও দুটো গ্লাস রাখা আছে উপুড় করে। সত্যি আমি ভাবতে পারি নি যে অদিতি এখানে এসে এরকম একটা অশ্লীল প্রস্তাব দেবে। ও ঘরে ঢুকেই ওর একদম গা ঘেঁসে গিয়ে বলল “ শোনো না। আমাদের না সকাল বেলায় ওদের সাথে এইভাবে সবার সামনে মাঠে গিয়ে ওই সব করতে লজ্জা লাগে। বিনীতাদিকে বলেছি আমরা রাতেই যা করার করব। স্নানও। স্নান না হয় পরেই করব। কিন্তু আমাদের সাথে এখন একটু আসবে? বাইরে এত অন্ধকার। আর কাল একটা কিছুতে পা কেটেছে বলে মনে হয়। ভয় লাগে। ও নিজের নির্লোম নগ্ন পাটা তুলে ধরল আলির সামনে। প্রায় দু দিন আগের কাটা জায়গাটা দেখিয়ে দিয়ে বলল “ দেখো কাল কেটে গেছে।“ দেখলাম আলি বুভুক্ষুর মতন ওর নগ্ন পায়ের কাটা জায়গায় হাত বুলিয়ে দিয়ে বলল "চলো। তোমাদের আপত্তি না থাকলে আমি যাচ্ছি তোমাদের সাথে। “ ও হাতে ধরা গ্লাসটার তরল পুরোটা একেবারে গলায় ঢেলে দিয়ে বিছানার পাশে দাঁড় করানো একটা বন্দুক তুলে নিল। টেবিল থেকে তুলে নিল মোমবাতিটা। আমি আর অদিতি ওর দুই হাত ধরে বেড়িয়ে এলাম। বাইরে বেশ ভালো ঠাণ্ডা হাওয়া দিচ্ছে। অন্ধকার মাঠের দিকে এগিয়ে চলেছি আমরা তিনজন। ও বলল “আমি আগুনটা গার্ড করছি। নইলে নিভে যাবে। ভালো হাওয়া দিচ্ছে। “ আমরা মগ ভর্তি জল নিয়ে ওর থেকে একটু দূরে একটা পরিষ্কার জায়গায় গিয়ে বসে পড়লাম। আমরা ওর দিকে পিঠ করে বসেছি। শাড়ি কোমরের ওপর তুলে ওর সামনে এরকম অশ্লীল ভাবে পাছাটা নগ্ন করে বসার সাথে সাথে পাছার ঠিক ওপর থেকে একটা শিহরণ খেলে গেল। আড়চোখে তাকিয়ে দেখলাম অদিতিও বসেছে। ও আমাকে বলল “শাড়িটা যতটা পারিস উঠিয়ে ওকে দেখিয়ে দেখিয়ে কর যা করার। এদের মধ্যে “র” ব্যাপারটা বেশী থাকে। যদিও নোংরা, কিন্তু কিছু করার নেই। আজ ওকে শ্বাস নেওয়ার সুযোগ দেব না। “ পেট খালি হল। গতকালও দেখেছি অদিতি এই সময় বড্ড শব্দ করে। আমারও প্রয়োজন হয়, কিন্তু কোনও মতে দমিয়ে রাখি। কিন্তু ওর মধ্যে কোনও লজ্জা শরম নেই। বাড়িতে আমি হ্যান্ড অয়াশ ব্যবহার করি। কিন্তু এখানে কল পারে রাখা যেকোনো একটা বহুবার ব্যবহৃত শস্তা সাবান দিয়েই হাত ধুতে হবে। ভীষণ ঘেন্না লাগে আমার। সব মেয়েরা আর ছেলেরা এই গুলোই ব্যবহার করছে। আমি আর অদিতি পরিষ্কার হয়ে আলির সাথে ওর ঘরে ফিরে এলাম। মনের ভেতরটা কেমন যেন করছে। একটু পরে এই বুভুক্ষু লোকটা আমার শরীরে প্রবেশ করবে। কিন্তু ওকে বশ না করতে পারলে পালাতে পারব না।

ঘরে ঢুকেই অদিতি বলল “কই দেখি দাও তো ওই জিনিসটা। যদিও আমরা কোনও দিনও খাই নি। কিন্তু সেদিন থেকে তোমাদের দেখে আমাদের ওইটার প্রতি লোভ জন্মেছে। অবশ্য সব কিছুর আগে দুটো কথা বলে রাখি। না করতে পারবে না। “ ও আমাদের গ্লাসে কিছুটা তরল ঢালতে ঢালতে ওর মুখের দিকে জিজ্ঞাসু দৃষ্টিতে তাকাল। অদিতি ভীষণ ন্যাকা ন্যাকা স্বরে বলল “ আমাদের কিন্তু সত্যি এইসব খাওয়ার অভ্যেস নেই। যদি খেয়ে হুঁশ না থাকে তাহলে কিন্তু আমাদেরকে ঘর অব্দি ছেড়ে দিয়ে আসার দায়িত্ব তোমার। “ আলি হেঁসে বলল “দূর সে আর এমন কি? আর দ্বিতীয় কথাটা?” অদিতি একই রকম ন্যাকা ন্যাকা স্বরে বলল “ তুমি আমাদের দুজনকেই আদর করবে, ভালবাসবে, কিন্তু তোমার ভালোবাসার তরল পদার্থটা কিন্তু ওর মধ্যেই দিও। আমার ভেতরে দিলে আমার পেট হয়ে যাবার সম্ভাবনা আছে। ওর ক্ষেত্রে সেই সম্ভাবনা অনেক কম।“ আলি কিছু না ভেবে নিয়েই বলল “ জো হুকুম।“ আমি গ্লাসটা মুখে লাগানোর সাথে সাথেই ভীষণ বাজে একটা গন্ধে নাকটা সিটকে গেল। মেয়ে গুলো এই জিনিসগুলো গেলে কি করে? তাও হেভি খেতে লাগছে এমন ভান করে পর পর কয়েকটা চুমুক দিলাম। আমি বিছানায় বসে ছিলাম আর আলি ওই কাঠের চেয়ারে। অদিতি টেবিলের পাশে ঠায় দাঁড়িয়ে আছে। এক হাতে গ্লাসটা ঠোঁটে ছুঁয়ে রেখেছে, যদিও মনে হচ্ছে না কিছু শরীরের ভেতরে নিচ্ছে বলে, আর আরেকটা হাত দিয়ে আলির ঘাড়ের ওপর আস্তে আস্তে আদর করে নরম ভাবে হাত বুলিয়ে দিচ্ছে। ওর এই ছোঁয়ায় আলির মধ্যে কোনও পরিবর্তন হচ্ছে কি না সেটা ওর মুখ দেখে ঠিক বুঝতে পারছি না। অদিতি নিজের গ্লাসটা টেবিলে নামিয়ে রেখে আমাকে একবার চোখ মারল। আলির পিছনে দাঁড়িয়েই ওর মাথার ওপর ঝুঁকে ওর মাথার ওপর একটা চুমু খেল। আলি মাথাটা ঘুরিয়ে ওর মুখের দিকে তাকাতেই ও নিজের ভেজা ঠোঁটদুটো চেপে ধরল আলির ঠোঁটে। আলির ঠোঁটদুটো ওর ঠোঁটের দ্বারা নিপীড়িত হয়ে মৃদু মৃদু কাঁপতে শুরু করেছে। চুম্বন আরও গভীর হল। ক্ষণিকের জন্য নিজের ঠোঁটদুটোকে ও আলির ঠোঁটের ওপর থেকে সরিয়ে নিয়েই আবার ঠোঁট দুটো অল্প ফাঁক করে আড়াআড়ি ভাবে চেপে ধরল আলির হাঁ করা ঠোঁটের ওপর। মুহূর্তে বুঝতে পারলাম ওর গোলাপি জিভটা প্রবেশ করল আলির মুখের ভেতর। কিছুক্ষণ চলল এই খেলা। এই মুহূর্তে আমি শুধু মাত্র দর্শক। তবে মনে মনে জানি খুব শিগগির আমাকেও এর মধ্যে অংশ গ্রহণ করতে হবে। চুম্বন না ভেঙ্গেই অদিতি ওর হাত দুটো আলির বেঁকে থাকা শরীরের দু পাশ দিয়ে নরম ভাবে ঘষতে ঘষতে নিয়ে গেল ওর পরনের পাতলা ফতুয়ার একদম শেষ প্রান্তে। কোমরের কাছে ফতুয়াটাকে ধরে আস্তে আস্তে ওঠাতে শুরু করে দিয়েছে ও। চুম্বনরত অবস্থায় আলি বা হাত দিয়ে এতক্ষন ওর নরম গালটাকে আদর করছিল, কিন্তু এইবার ওর গাল থেকে হাত সরিয়ে দুটো হাত ওপরে সোজা করে রেখে সাহায্য করল গায়ের ফতুয়াটা খুলে নিতে। অদিতি ওর মুখের ওপর থেকে নিজের মুখটা সরিয়ে নিয়ে এক মুহূর্তে টেনে খুলে নিল ওর ঊর্ধ্বাঙ্গের এক মাত্র আবরণ। আলির পরনের ফতুয়াটা একবার নাকে চেপে শুকে ছেনালি করে বলল “ উফফ কি সুন্দর তোমার গায়ের গন্ধ। “ আমাকে লক্ষ্য করে হেঁসে হেঁসে বলল “ এই নে। পরে বলিস না যে আমি একাই সব খেয়ে ফেলেছি, তোকে একটুও দি নি। “ আমার মুখের ওপর ছুঁড়ে মারল ওর পরনের ফতুয়াটা। ছেলেদের গায়ের গন্ধ মেয়েদের গায়ের গন্ধের থেকে অনেক আলাদা হয়। আলির ফতুয়ার গন্ধটা এই মুহূর্তে খুব যে অপছন্দ হল সেটা হলপ করে বলতে পারি না।

আলির ঠোঁটে একটা সংক্ষিপ্ত চুম্বন এঁকে দিয়েই আলির ডান হাতটা নিজের হাতে নিয়ে ধীরে ধীরে ওর হাতটা উঠিয়ে নিয়ে এল ওর (আলির) ঠোঁটের কাছে। চোখের ইশারা ওকে বোঝাল ওতে চুমুক দিতে। আলি এক চুমুক দিতে না দিতেই আলির হাতটা নিজের হাতেই ধরে রেখে নিয়ে এল নিজের ঠোঁটের কাছে। চুমুক দিল আলির গ্লাসে। আলির মুখ দেখছি আস্তে আস্তে লাল হয়ে উঠছে। ওর হাত পা রোদে পুড়ে কালো হলেও, ওর গায়ের ঢাকা অংশগুলো একটু ফর্সার দিকেই। সারা গায়ে তেমন লোম না থাকলেও বুকে ঘন লোমের একটা আস্তরণ আছে। ব্যায়াম করা পেটানো শরীর, তবে ঠিক মাস্কিউলার বলা চলে না। আলি আমাদের থেকে একটু দ্রুতই খেয়েছে। আর এখন তো আবার দুজন মিলে একই গ্লাসে ভাগাভাগি করে চুমুক বসাচ্ছে। এতক্ষনে ওর গ্লাসটা প্রায় তলানিতে এসে ঠেকেছে। অদিতি ওর প্রায় খালি হয়ে যাওয়া গ্লাসটা নিজের হাতে নিয়ে টেবিলে গিয়ে সেটাকে আবার সেই নোংরা পানীয় ঢেলে ভরে দিল। ও হাতে গিয়ে গ্লাসটা ধরিয়ে দিয়ে কিঞ্চিত জোর করেই ওকে সামনের দিকে ঘুরিয়ে বসাল। আলিকে দেখে বুঝতে পারছিলাম ও অদিতিকে চুমু খাওয়ার জন্য পাগল হয়ে উঠেছে, কিন্তু আপাতত অদিতির ইঙ্গিত মেনে নিয়ে সামনে ফিরে সোজা হয়ে দরজার দিকে মুখ করে বসল। অদিতি ওর পেছনে দাঁড়িয়েই ওর পিঠের ওপর ঝুঁকে পড়ে ওর নগ্ন কাঁধের ওপর একটা ভেজা চুমু বসাল। সামান্য কেঁপে উঠলো ওর শরীর। চেয়ারে বসা অবস্থাতেই কাঁপতে কাঁপতে একটু যেন এগিয়ে এলো সামনের দিকে। অদিতি ঝুঁকে পড়েছে ওর পিঠের ওপর। ওর মুখটা ধীরে ধীরে ওর চওড়া পিঠের পিছনে গায়েব হয়ে গেল। আলি নিজের হাতে ধরা গ্লাসটা ঠোঁটে ছোঁয়াল সেখান থেকে বিষ গলায় ঢালার জন্য। কিন্তু পারল না। ওর চোখ দুটো যেন একবার জ্বলে উঠেই আরামে বুজে গেল। প্রতিনিয়ত ওর সারা শরীর কেঁপে কেঁপে উঠছে সামনের দিকে। লোমে ঢাকা কালো স্তনবৃন্তগুলো শক্ত হয়ে ফুটে উঠেছে বুকের উপর। কয়েক ফোঁটা তরল ওর কাঁপা হাতে ধরা গ্লাসের ভেতর থেকে ছলকে কোলের ওপর পড়ে ওর সাদা ধুতির সামনের কিছুটা ভিজিয়ে দিল। বুঝতে অসুবিধা হল না যে পিছন থেকে অদিতি নিজের ঠোঁট আর জিভ দিয়ে ভয়ানক আক্রমণ শুরু করেছে ওর বুভুক্ষ শরীরের ওপর। আমি পাথরের মতন স্থির হয়ে বসে এই ভালোবাসার অত্যাচার লক্ষ্য করে চলেছি। এক সময় দেখলাম অদিতি ওর পিঠের পেছন থেকে নিজের মাথাটা ওর কাঁধের ওপর উঠিয়ে আমার সাথে চোখা চুখি করে চোখ মেরে মাথাটা একদিকে হেলিয়ে আমাকে ইশারা করল খেলায় নেমে পড়তে।

[/HIDE]
 
[HIDE]

16
অদিতির অত্যাচারে বোধহয় বেচারার গলা শুঁকিয়ে গেছে। এই এক মুহূর্তের জন্য কামনার আক্রমণ থেকে বিরতি পেয়েই ঢক ঢক করে নিজের পান পেয়ালার পুরোটা পানীয় নিজের গলার ভেতরে সাবাড় করে দিয়েছে। বেচারা জানতেও পারল না যে অদিতি আমাকে আহ্বান করেছে ওর উপর ভালোবাসার আক্রমণ হানার জন্য। এইবার সাঁড়াশি আক্রমণ করে ওকে নিজেদের মায়া জালে বেঁধে ফেলার সময় উপস্থিত। যতই নোংরা আর নিচ লাগুক না কেন আমাকে পারতেই হবে। এখন ওর যা অবস্থা তাতে ওর বিছানার পেছেনে রাখা বন্দুকটা হাতে তুলে নিয়ে ওকে বশ করা এমন কিছু কঠিন হবে না। কিন্তু ও যে খুব কোমল ধাতুতে গড়া নয় সেটা জানি। ও নিজের প্রানের মায়া ত্যাগ করে চেঁচামেচি করলে তো কথাই নেই, এক্ষুনি সারি সারি লোক জন বেড়িয়ে এসে আমাদের দুজনকে গুলি মেরে ঝাঁঝরা করে দেবে, নয়ত আমাদের বশ করে বন্দী করে তারপর অত্যাচার শুরু করবে। ও নিজে না চ্যাচালেও আশে পাশের ঘরে অনেক এখনও জেগে আছে। ওদেরই মধ্যে কেউ যদি দেখে ফেলে তাহলেও সেই একই পরিণতি হবে আমাদের দুজনের। এই রিস্ক নেওয়া যাবে না। সুতরাং প্ল্যান অনুযায়ী কাজ করা ছাড়া অন্য কোনও রাস্তা আমার বা আমাদের হাতে নেই এই মুহূর্তে। আর বন্দুক উঠিয়েই বা কি হবে আমাদের দুজনের কেউ তো কোনও দিন বন্দুক চালাই নি। হাতের গ্লাসটা মাটিতে নামিয়ে রেখে একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে উঠে পড়লাম। মুখে যতটা সম্ভব জৈবিক চাহিদা আর কামনার অভিব্যক্তি ফুটিয়ে ওর অর্ধনগ্ন শরীরটার দিকে ধীর পায়ে এগিয়ে গেলাম। অদিতি আমাকে ইশারা করেই আবার ওর লকলকে কাম-বিষে ভরা জিভ নামিয়ে এনেছে ওর ভেজা পিঠের ওপর। ওর চোখ আবার আরামে বুজে গেছে। আমার পায়ের আওয়াজ পেয়ে একবার ঘোলাটে চোখ নিয়ে আমার দিকে চেয়ে দেখল। বোধহয় আমার চোখেও ও সেই কামনার অভিব্যক্তি দেখতে পেয়েছে যেটা ও ভেতরে ভেতরে কামনা করছিল। ঝিমিয়ে পড়ল আবার। চোখ গুলো আধ বোজা রেখেই কেঁপে কেঁপে উপভোগ করতে থাকল অদিতির ভালোবাসার ছোঁয়া। আমি এগিয়ে এসে ওর একদম সামনে এসে দাঁড়ালাম। ওর চোখের ওপর আমার নজর স্থির। কাঁপা কাঁপা হাতে কোমরের গিঁট থেকে শাড়ির আঁচলটা খুলে নিয়ে যতটা ধীরে ধীরে পারা যায় বুকের ওপর থেকে সরিয়ে নগ্ন করলাম নিজের ফোলা ফোলা স্তনগুলো। আঁচলটা ছেড়ে দিলাম হাত থেকে, লুটিয়ে পড়ল নোংরা মেঝেতে। নিজের স্তনদুটো নিজের দুহাতের মুঠোয় নিয়ে খাড়া ভাবে উঁচিয়ে ধরলাম উপরের দিকে। ওর আরও কাছে ঘন হয়ে এলাম। নিজের শক্ত হয়ে যাওয়া বাদামী স্তনবৃন্তগুলো চেপে ধরলাম ওর মুখের একদম সামনে। ওর নাক মুখ থেকে একটা ভেজা গরম নিঃশ্বাস ঠিকরে বেড়িয়ে এসে আছড়ে পড়ছে আমার স্তনের বোঁটাগুলোর উপর। বা হাত দিয়ে খামচে ধরল আমার কোমর। উফফ কি গরম হয়ে গেছে আলি। পাতলা শাড়ির কাপড় ভেদ করে ওর উত্তাপ যেন আমার নগ্ন কোমরের নরম ত্বককে জ্বালিয়ে পুড়িয়ে ছারখার করে দিতে চাইল। মুখটা সামান্য হাঁ করেই ঝাঁপিয়ে পড়তে চাইল আমার নগ্ন উঁচিয়ে ধরা স্তনের ওপর, কামড়ে ধরতে চাইল যেন আমার বোঁটাটাকে। কিন্তু না। আমি কোমর বেঁকিয়ে কোনও মতে ওর হাত থেকে ছাড়িয়ে নিলাম নিজেকে। নিশ্চিত ও ছাড়তে চাইছিল না, বা বলা ভালো ওর ভেতরে যে কামনার ঢেউ উঠেছে সেটা ওকে আমার কোমর থেকে ওর হাতের বাঁধন শিথিল করতে বারণ করছিল। শেষ মুহূর্তে কেমন যেন খামচে ধরেছিল আমার নরম কোমরটাকে। শাড়ির উপর দিয়েই নখ বসিয়ে দিয়েছিল কোমরের চামড়ায়। ওকে আরও উত্যক্ত করতে হবে। বিছানার খেলায় ছেলেদের কি করে উত্যক্ত করতে হয় সে আমার অজানা নয়।

ওর আহত শরীরের থেকে দুই পা পিছিয়ে এসে ওর চোখে চোখ রেখে এক নিমেষে খুলে ফেললাম কোমরের ছোট গিঁটটা। সময় নষ্ট না করে শাড়িটা নিজের শরীরের ওপর থেকে সরিয়ে নিয়ে অগোছালো ভাবে ছুঁড়ে ফেলে দিলাম বিছানায় পড়ে থাকা ওর ফতুয়াটার ওপর। ওর উত্তপ্ত নজর ছুটে বেড়াচ্ছে আমার নগ্ন শরীরের প্রতিটা কোনায়। কখনও স্তনে গিয়ে ওর নজর হামলে পড়ছে, কখনও বা নাভির ওপর গিয়ে আছড়ে পড়ছে, আবার কখনও বা ভেদ করতে চাইছে আমার নির্লোম ফর্সা যোনীদেশের কালচে অন্ধকারে ভরা উপত্যকা। অদিতি ওর আক্রমন থামায় নি এক মুহূর্তর জন্য। মাঝে মাঝে শুধু ওর চওড়া পিঠের ওপর মুখ তুলে লক্ষ্য করছিল আমার কার্যকলাপ। ওর চোখে চোখ স্থির রেখেই হাত তুলে মাথার উপর খোলা চুলগুলো বেঁধে নিলাম খোঁপা করে। মনে হল ও নিজের জ্বলন্ত নেশাগ্রস্ত চোখ দুটো দিয়েই বারবার লেহন করে নিতে চাইছে আমার ফোলা ফোলা নির্লোম বগলের ফর্সা নরম ত্বক, কামড়ে ধরতে চাইছে বগলের ঠিক তলা থেকে ঢেউ খেলিয়ে নেমে আসা স্তনের দুপাশের ফোলা ফোলা অসহায় মাংসগুলোকে। যতটা সম্ভব ধীরে ধীরে নিজের শরীরের সামনের প্রত্যেকটা সুন্দর গোপন অংশ ওকে দেখিয়ে দেখিয়ে খোঁপাটা ঠিক করে বেঁধে নিলাম মাথার ওপরে। ওর কামুক অসহায় চাহুনিটাকে যেন কিছুটা অবজ্ঞা করেই পিছনে ঘুরে কোমরটা যতদূর পারা যায় দুলিয়ে দুলিয়ে, আমার পাছার নরম মাংসের ওপর ঢেউ খেলিয়ে খেলিয়ে হেঁটে গেলাম খোলা দরজাটার দিকে। জানি না আমার নগ্ন পিঠ বা পাছা বা কোমর ওকে কতটা উত্যক্ত করতে পেরেছে। দরজাটা বন্ধ করে দিয়ে ফিরে এলাম

[/HIDE]
 
[HIDE]


17

সময় নষ্ট না করে নিচের ঠোঁটটাকে জিভে দিয়ে ভিজিয়ে নিয়ে ঝুঁকে চুমু খেলাম ওর রেশমি লোমে ঢাকা বুকের ওপর। আলতো করে জিভ বুলিয়ে দিলাম ওর ফোলা ফোলা শক্ত বোঁটার ওপর। ওর গলা থেকে একটা চাপা ঘো ঘো মতন শব্দ বেরোচ্ছে। সেই শব্দটাকে উপেক্ষা করেই ওর সারা বুক আর পেটের ওপর জিভ বোলাতে বোলাতে নেমে এলাম ওর কোমরের কাছে। ওর ধুতির নিচ থেকে একটা বোটকা গন্ধ আসছে। এই গন্ধ আমার চেনা। এতে মিশে রয়েছে পুরুষালি শরীরের সারা দিনের ঘামের গন্ধ, গোপন ঢাকা জায়গার জৈবিক গন্ধ, কুঁচকি থেকে হরমোনাল গন্ধ, পেচ্ছাপের গন্ধ আর যৌনাঙ্গের মুখ থেকে নির্গত হওয়া কাম রসের গন্ধ। লোকটার ওখান থেকে নিশ্চই প্রিকাম বেরোচ্ছে অনেকক্ষণ ধরে। ধুতির ভাঁজের জন্য এখনও সামনে কোনও ভেজা দাগ বাইরে থেকে দেখা যাচ্ছে না। আমি ওর খোলা নাভির ভিতর জিভ ঢুকিয়ে যতটা পারা যায় চেটে চেটে নাভির ভেতরটা পরিষ্কার করে মুখ আরও নামিয়ে নিয়ে গিয়ে কামড়ে ধরলাম ওর পাতলা ধুতির গিঁট। দাঁত দিয়ে কামড়েই খুলে নিলাম গিঁটের প্যাঁচ। মুখ তুলে হাত দিয়ে ওর কোমরের গিঁট পুরো পুরি খুলে টেনে নামিয়ে নিলাম ওর কোমরের ওপর গোল হয়ে বসে থাকা ধুতির আলগা বেষ্টনী। ও পাছাটা ক্ষণিকের জন্য উপরে তুলে সাহায্য করল। ধুতির দুমড়ানো মুচড়ানো কাপড়টাকে ওর পায়ের নিচ দিয়ে গলিয়ে বের করে ছুঁড়ে ফেলে দিলাম ঘরের এক কোণায়। এক মুহূর্ত সময় নষ্ট না করে হাতের নরম আঙুলগুলো দিয়ে পেঁচিয়ে ধরে ওর খাড়া হয়ে থাকা লিঙ্গটার ওপর হস্ত মৈথুনের প্রক্রিয়া শুরু করে দিয়েছি। জানি না এখানকার মেয়েরা এরকম করে কি না। কিন্তু একবার ওর চোখের দিকে তাকিয়ে বুঝতে পারলাম ও যেন নিজের ভাগ্যকে বিশ্বাস করতে পারছে না। একটা ছ্যানালি মার্কা হাঁসি দিয়ে জিভটা একবার চেপে কর্কশ ভাবে বুলিয়ে দিলাম ওর লিঙ্গের মুখের চেরা বরাবর। বাহাতটা দিয়ে খামচে ধরেছে আমার পিঠের নগ্ন মাংস। আস্তে আস্তে তাড়িয়ে তাড়িয়ে মুখের গরম গহ্বরে পুড়ে নিলাম ওর লিঙ্গের মুখটা। একটা তীব্র ছটফট অনুভব করলাম ওর কোমরে। দপদপ করতে করতে কেঁপে উঠলো ওর শিরা উপশিরা নিয়ে ফুলে থাকা লিঙ্গটা। আরেকটু ভেতরে নিলাম। এইবার একবারে প্রায় পুরো লিঙ্গটা মুখের ভেতরে নিয়ে নিলাম। দৈর্ঘ্য প্রস্থে সাধারণ। হয়ত ছয় ইঞ্চি হবে আর মোটামুটি মোটা। কিন্তু আমি ভাবখানা এমন দেখাচ্ছি যেন এরকম পুরুষালি লিঙ্গ আগে কখনও দেখিনি। তবে সত্যি কথা বলতে ওর নগ্ন শরীরের ছোঁয়া, স্বাদ, গন্ধ আমাকেও নিজের অজান্তে গরম করে তুলেছে। আর তাই হয়ত আমার অভিন্য়টা এখন আর অভিনয়ের মতন লাগছে না। আমার তলপেটেও জেগে উঠেছে একটা ভেজা ভেজা ভাব, আর এই ভেজা ভাবটা আমিও খুব উপভোগ করি, যেমন আর পাঁচটা মেয়ে করে থাকে। ওর ঘন চুলে ঢাকা উরুসন্ধি ঘামে ভিজে চকচক করছে। মুখের ভিতরেই বুঝতে পারছিলাম যে লিঙ্গের মুখটা ফুলতে শুরু করেছে। লিঙ্গের শিরায় উপশিরায় উষ্ণতা প্রায় দশগুন হয়ে গেছে। প্রিকামের প্রাচুর্য বেড়ে গেছে। লিঙ্গটা এখন নিজে নিজেই কেঁপে কেঁপে উঠছে। না আর বেশী করলে মুখের ভেতরেই মাল খালাস করে দেবে। আমার ভেতরটাও ভিজে গেছে। এত পরিশ্রমের পর একটু এই খাড়া দণ্ডটাকে নিজের যোনীদ্বারের ভেতরে না নিতে পারলে মনটা ভেঙ্গে যাবে। আর তাছাড়া আমাদের কাজ আজ ওকে উত্যক্ত করে করে সহ্যের শেষ সীমায় পৌঁছে দেওয়া যখন ও কামনা আর মহুয়ার নেশায় নিজের হুঁশ হারিয়ে ফেলে আমাদের সামনে গোপন কিছু তথ্য উগড়ে দেবে।

আমার মাথার ওঠা নামা থামাতেই ও চেপে ধরল আমার মাথাটা ওর ক্ষুধার্ত লিঙ্গের ওপর। ভীষণ গায়ের জোড়ে চেপে আছে। এখন আর আমাকে মাথা নাড়াতে হচ্ছে না। ও নিজেই কোমরটা উঠিয়ে নামিয়ে নিজের কামনার চরিতার্থ করতে উঠে পড়ে লেগেছে। আমি ওর লিঙ্গের গোঁড়া থেকে হাত সরিয়ে নিয়ে ওর হাতটা নিজের মাথার ওপর থেকে সরানোর ব্যর্থ চেষ্টা করলাম। কিন্তু ও এখন কামনায় অন্ধ। পাশবিক জোড়ে আমার মাথাটা ওর ঊরুসন্ধির ওপর চেপে রেখে আমার মুখ মৈথুন করে চলেছে। অদিতি পেছন থেকে বলে উঠল “আলি দা, সব কিছু ওকেই দিয়ে দিলে আমাকে এখানে আসতে বলার মানে কি। আর এত তাড়াহুড়া করছ কেন? এখনও তো ভালো করে তোমাকে আদরই করা হয় নি। আর তুমিও তো আমাদের এখনও ভালো ভাবে নাওই নি। তোমার যদি এটা খুব ভালো লেগে থাকে, তাহলে আমিও তোমাকে সেই সুখ দিতে চাই। কিন্তু আক্ষরিক অর্থে মিলন না হলে না তোমার সম্পূর্ণ সুখ হবে আর না আমাদের। তুমি ভীষণ স্বার্থপর হয়ে উঠেছ এখন। “ ওর কোমরের দপদপানি বন্ধ হল। লিঙ্গটা তখনও কেঁপে চলেছে। আমি ভয়ে ভয়ে আছি এই বোধহয় গরম সাদা লাভা উগড়ে দিল আমার মুখের ভিতর। কিন্তু তেমনটা হল না। আমার মাথার ওপর থেকে ওর হাতের চাপ শিথিল হয়ে এল। অদিতির দিকে ফিরে হাঁসি হাঁসি মুখ করে বলল “ ও তোমরা আরও ভালবাসতে চাও আমাকে?” আমি মুখ সরিয়ে নিলাম ওর লিঙ্গের ওপর থেকে। এতক্ষন খেয়াল করি নি, এই বার করলাম অদিতিও কোন ফাঁকে নিজের শরীরটা শাড়ির বেষ্টনীর থেকে মুক্ত করে নগ্ন হয়ে রেডি হয়ে গেছে। ও আলির সামনে এসে দাঁড়িয়ে বলল “ কোথায় ভালবাসলাম? আসল মিলনের সুখ তো আমরা কেউই পেলাম না। না তুমি না আমরা। মনে আছে? বলেছিলাম, আমরা ভালো ভাবে ভালোবাসা নিংড়ে নেব তোমার ভেতর থেকে আজ?”

আলি বলল “বেশ তাহলে এখন কি করতে চাও?” অদিতি ওকে বলল “চুপ করে মাটিতে শুয়ে পড়ো। “ আমাকে ওর খালি গ্লাসটা ধরিয়ে দিয়ে বলল “এটাতে কিছুটা ঢেলে দে। বেচারির বোধহয় গলা শুঁকিয়ে গেছে। “ হাত দিয়ে নরম ভাবে আলির কপাল আর মুখের ঘাম মুছিয়ে নিল ও। ও মাটিতে গিয়ে শুয়ে পড়তেই অদিতি ওর কোমরের পাশে ঝুঁকে বসে আমার মুখের লালায় মাখা ওর খাড়া লিঙ্গটা ওর মুখের ভেতর নিয়ে নিল। ওর কাম বেগ এই কথা বার্তার মধ্যে হয়ত কিছুটা লোপ পেয়েছে। ওর নজর ঘোলাটে হলেও ওর আচরণ আবার অনেকটা স্বাভাবিক হয়ে এসেছে। তবে একটা হাত মাঝারি জোড়ের সাথে চেপে রেখেছে অদিতি ওঠা নামা করা মাথার ওপর। বুঝতে পারছি অদিতিরও আমার মতন ওর এই লম্বা লম্বা যৌনকেশ চোখে মুখে খোঁচা মারছে বলে অসুবিধা হচ্ছে, কিন্তু ও অনেকক্ষণ মুখ ওঠাল না। ওর মাথার ওপর আলির হাতের চাপ ক্রমশ বাড়ছে। বুঝতে পারছি আবার ও সুখের চরম সীমায় পৌঁছাতে চলেছে। আবার হারিয়ে ফেলেছে নিজের ওপর নিয়ন্ত্রণ। আমার মতন অদিতিও ওর হাতের নিচে পড়ে কাতরাচ্ছে, কিছুতেই ছাড়িয়ে নিতে পারছে না ওর হাত। মনে হল এই বুঝি ওর ঢেলে দিল ওর সমস্ত বীর্য অদিতির মুখে। আর সেটা হলে আমাদের সব প্ল্যানে জল ঢেলে দেওয়া হবে। আগের বার যেমন অদিতি আমাকে বাঁচিয়েছিল, এইবার আমি ওকে বাঁচাতে এগিয়ে এলাম। এতক্ষন আমি ওর গ্লাসে পানীয় ঢেলে দাঁড়িয়ে ছিলাম। কিন্তু এইবার মাটিতে ওর মাথার পাশে বসে পড়ে বললাম “এই নাও তোমার গ্লাস।“ ও যেন আমার গলা শুনতেই পেল না। অদিতির মাথাটা নিজের হাতের নিচে চেপে ধরে থেকে নিজেই শুয়ে শুয়ে কোমর ওঠা নামা করতে শুরু করে দিয়েছে আর তাও প্রচন্ড গতিতে। আবার বললাম “তোমার গ্লাস নিয়ে এসেছি। “ এইবার ও ওর চোখ খুলল না। ওর মুখে কামনার এক অতি তীব্র অভিব্যক্তি ফুটে উঠেছে। এবার রীতিমত চেঁচিয়ে উঠলাম “এই নাও তোমার গ্লাস। “ হাত শিথিল হল ওর। না বীর্য বের করতে পারে নি। তবে লিঙ্গের লাল ভাবটা দেখে মনে হল আর দশ বার মুখ মৈথুনের স্বাদ পেলেই খেলা শেষ করে ফেলত। অদিতি যেন হাঁপ ছেড়ে বাঁচল। ওর ঠোঁট আর থুতনির সমস্ত জায়গা মুখের পিছিল লালায় ভিজে একশা হয়ে গেছে। ও ডান হাতের পেছন দিয়ে মুখটা পরিষ্কার করে বলল “তোমার ওটা খুব সুন্দর। “ বুঝতে পারছি ওকে আরও উত্যক্ত করতে চাইছে। আমি ততক্ষণে ওর হাতে গ্লাসটা ধরিয়ে দিয়েছি। বাব্বা বাঁচা গেল। ওর মুখে আবার অমৃত পেতে পেতে না পাওয়ার ব্যর্থতা। অদিতি ওর হাতটা নিজের হাতে নিয়ে আস্তে আস্তে হাতে ধরা গ্লাসটা ওর ঠোঁটের কাছে নিয়ে গেল। ও একটু আধ শোয়া মতন করে উঠে পুরো তরলটা একবারে গলার ভেতর ঢেলে দিল। অদিতি কপট রাগ দেখিয়ে বলল “ এত তাড়াতাড়ি খেলে নেশা হয়ে যাবে। তখন আমাদের মনের দুঃখ নিয়ে ফিরে যেতে হবে। “ ও গ্লাসটা আমার হাতে ধরিয়ে দিয়ে বলল “অনেক দিন পর আজ রক্ত জেগে উঠেছে। আজ এতে নেশা হবে না। আজ নেশার অন্য সুখ আমাকে পেয়ে বসেছে। “ আমি এক ফোঁটা সময় নষ্ট না করে আবার ওর গ্লাসটা ভরে নিয়ে চলে এলাম।



[/HIDE]
 
[HIDE]

18

অদিতি গ্লাসটা আমার হাত থেকে নিয়ে পাক্কা রাস্তার বেশ্যাদের মতন হাঁসতে হাঁসতে ওতে একটা চুমুক মেরে ওর খাড়া লিঙ্গটাকে একবার মুখের মধ্যে নিয়ে চুষে দিল। ওর হাতে গ্লাসটা ধরিয়ে দিয়ে বলল “আস্তে আস্তে খাও। আমাকে নিতে নিতে, আদর করতে করতে খাও। কোনও তাড়া নেই। এত তাড়াতাড়ি খেলে সত্যি লটকে যাবে। “ আমাকে চোখের ইশারা করতেই আমি ওর ঘামে ভেজা শরীরের একদম পিছনে গিয়ে পা দুটো দুপাশে ছড়িয়ে বসে পড়লাম। আমিও ঘেমে গেছি। বাইরে গাছের পাতা নড়ার শব্দে বেশ বুঝতে পারছি যে ঝড় উঠেছে। কিন্তু এই ঘরের ভেতরটা যেন একদম থমথমে হয়ে আছে। এই ঘরে যেন বাতাস বন্ধ হয়ে রয়েছে। একটা গুমোট নিঃশ্বাস বন্ধ হওয়া পরিস্থিতি। আমাদের তিনজনের নোংরা ঘামের গন্ধে স্যাঁতস্যাঁতে ঘরটা যেন মোঃ মোঃ করছে। কিন্তু এরকম গন্ধ যৌনক্রীড়ার সময় উত্তেজনা আরও বাড়িয়ে দেয়। ওর মাথার পিছনে আমি পা ছড়িয়ে বসে পড়তেই ও শরীরটাকে মাটির ওপর খুব দ্রুত ঘষটে পিছন দিকে এনে একটু উঠে আধ শোয়া অবস্থায় নিজের ঘর্মাক্ত নোংরা মাটি লাগা পিঠের ভার আমার বুকের ওপর ছেড়ে দিল। মাথার ভারটা ছেড়ে দিল আমার বাম বগলের সামান্য পাশে। আমার স্তন আর বগলের কাছ দিয়ে একবার নিজের নাকটা ঘষে নিয়ে আহ আহ করে দুবার শব্দ ছেড়ে দিল মুখ থেকে। আমি ওর মাথাটা নিজের স্তনের ওপর চেপে ধরে ওর মুখটা নিজের হাতের ওপর নিয়ে ওর ঠোঁটের ওপর নিজের ঠোঁট চেপে ধরলাম। আর অদিতিও সেই মুহূর্তে ওর খাড়া লিঙ্গের ওপর নিজের যোনীদ্বারটাকে বসিয়ে একটা হালকা চাপ দিয়ে ওকে ওর শরীরের অভ্যন্তরে নিয়ে নিল। ওর লিঙ্গটাকে নিজের ভেতরে নিয়ে শরীরটাকে নামিয়ে আনল ওর কোমরের ওপর। প্রবেশের ঠিক মুহূর্তে আমার ঠোঁটটাকে আলি কামড়ে ধরেছিল নিজের দাঁতে। তবে আশা করি কেটে রক্ত বেরোয় নি। বুঝতে পারলাম আমার মতন অদিতিও নিশ্চই এত কিছুর মধ্যে ভেতরে ভেতরে পিছল হয়ে গেছে। নইলে এত সহজে একটা অচেনা লিঙ্গ ভেতরে প্রবেশ করিয়ে নিতে পারত না।

ওর লিঙ্গের ওপর কোমর দোলাতে দোলাতে নিজের মাথার ওপর চুলের খোঁপা বেঁধে নিল অদিতি। আলির বা হাতটা ওর ডান স্তনের মাংসপিণ্ডটাকে মুচড়ে চেপে ধরে মর্দন করে চলেছে। আমি আলির ঘর্মাক্ত মাটি লাগা নোংরা শরীরটা আমার নরম শরীরের ওপর চেপে ধরে রেখেছি। অদিতি মাঝে মাঝে জোড়ে জোড়ে ওঠা বসা করছে, কিন্তু কিছুক্ষণ পরেই আবার গতি সামলে নিচ্ছে। ও গ্লাসে ইতিমধ্যে দু একবার চুমুকও মেরেছে, কিন্তু বুঝতে পারছি ওর সমস্ত চেতনা এখন গিয়ে সমবেত হয়েছে ওর আর অদিতির মিলন কেন্দ্রে, যৌন মিলন কেন্দ্রে যেখানে একটা নির্লোম ফর্সা লালচে উপত্যকা বার বার ওর ঘন চুলে পরিবেষ্টিত খয়েরী বাদামী রঙের শক্ত জিনিসটাকে গিলে গিলে নিচ্ছে। অদিতি হঠাত ওর গতিবেগ বাড়িয়ে দিয়ে বেশ কয়েকবার ওর লিঙ্গটা দিয়ে নিজেকে মথিত করে নিয়ে আর্চ করার মতন করে পেছনে হেলে পড়ল। ওর যোনী রসের গন্ধ অনেকক্ষণ ধরেই নাকে আসছিল, কিন্তু এইবার যেন যোনীদেশের ভেতর থেকে আসা একটা তীব্র ঝাঁঝালো গন্ধের বন্যা এসে ধাক্কা মারল আমার নাকে। ওর লিঙ্গটা বেয়ে যেন জলের ধারা আগের থেকে কিছুটা হলেও বেড়ে গেছে। চকচকে ভাবটাও যেন আগের থেকে অনেক সতেজ। অদিতি ওই একই অবস্থায় কয়েক সেকন্ড পড়ে রইল। যদিও ও নিজে থেকে তলঠাপ দিয়ে চলেছে। অদিতি সম্বিত ফিরে পেয়েই উঠে গেল ওর উপর থেকে। “নে তুই নে এইবার। আমি আবার পরে নেব। “ ওর ব্যাকুল হাত নাড়া আর তলঠাপের গতি বৃদ্ধি দেখে বুঝতে পারলাম যে এই বারও ও তৃপ্তি পেল না পেতে পেতেও। ইতিমধ্যে অদিতি ওর লিঙ্গের ওপর থেকে নিজের ভেজা যোনী পথ সরিয়ে নিয়েছে। ওর থাই বেয়ে ভেজা ভেজা একটা স্রোত যেন হাঁটুর দিকে নেমে আসছে। এইবার আমার পালা। দেখলাম অদিতি সরে গেলেও ওর কোমরটা নিজে থেকেই আরও কয়েকবার উপরের দিকে লক্ষ্য করে উপর নিচ করে তবে শান্ত হল। ইনারসিয়া! অদিতি এসে আমার জায়গায় বসে ওর মাথার পিছন দিকটা নিজের বুকে জড়িয়ে ধরল। আমি গিয়ে ওর লিঙ্গের ওর ওপর আমার আঠালো যোনীদ্বারটা স্থাপন করলাম। আমাকে মনে হয় অদিতির থেকে একটু বেশীই বেগ পেতে হল। কিন্তু আমার ভেতরটা আর যোনীর মুখটা আঠালো হয়ে থাকলেও ওর লিঙ্গটা ছিল অদিতির কাম রসে ভিজে একদম মসৃণ আর পিছল। সামান্য কসরত করতেই আর নিচ থেকে ও একটা জোরালো ঠেলে মারতেই ও আমার ভেতর প্রবিষ্ট হল, এবং এক ধাক্কায় পুরো ভেতরে, মানে যতটা ও যেতে পারে। অদিতি ইশারায় আমাকে বুঝিয়ে দিল আস্তে আস্তে করতে। ওর ঘামে ভেজা লাল মুখে দেখলাম শয়তানির হাঁসি জ্বলে উঠেছে। একবার ওর বুকের দিকে নজর যেতে বুঝলাম, ওর ডান স্তনটা, যেটাকে আলি এতক্ষন ধরে গায়ের জোড়ে নির্মম ভাবে মর্দন করছিল সেটার ত্বকের ওপর আলির হাতের পাঁচ আঙুলের লাল ছাপ স্পষ্ট হয়ে ফুটে উঠেছে। বাপরে বাপ, কি ভীষণ জোড়ে চেপে রেখেছিল ওই নরম মাংসের গোলাটাকে। কত জোড়ে চেপে রেখেছিল সেটা অনুমান করতে বেশী সময় লাগল না কারণ আমার মুখ থেকে অনতিবিলম্বেই একটা আহ আহ মতন দীর্ঘ চিৎকার আপনা থেকে বেড়িয়ে গেল। এইবার ও আমার গোল স্তনটাকে চেপে ধরেছে নিজের মুঠোর মধ্যে। আমার কাছে ওর এই নির্মম পাশবিক মর্দনে যেমন ব্যথা আছে তেমনি আছে এক পৈশাচিক যৌন তৃপ্তি।

আমি স্থির গতিতে, কিন্তু ধীর গতিতে ওর লিঙ্গ দিয়ে নিজের যোনী দেশ মন্থন করাতে শুরু করেছি। সব ছেলেদের মতন ও নিজেও চাইছিল আমি যেন আমার ওঠা বসার বেগ একটু বাড়াই, কিন্তু আমি বাড়ালাম না। যথেষ্ট যুদ্ধ করতে হচ্ছিল ভেতরে ভেতরে এর জন্য। কারণ আমার ভেতরেও একটা তৃপ্তির ঢেউ উঠতে উঠতেও উঠতে পারছে না। যেন বার বার ব্যর্থ আস্ফালন করে হতাশ হয়ে ঝিমিয়ে পড়ছে। আবার শুরু করছে উঠতে, আবার এগিয়ে যাচ্ছি তৃপ্তির দিকে, কিন্তু ওর কোমরের তলঠাপের গতি আর তীব্রতা অনুধাবন করে নিজেকে রুখে নিতে হচ্ছে। আবার ওর লিঙ্গের ওপর আলগা হয়ে ধীরে ধীরে মন্থর গতিতে ওঠা নামা করতে বাধ্য হচ্ছি। আলগা বলছি ঠিকই, কিন্তু আমার যোনীর ভিতরের পিছল দেওয়ালটা ওর লিঙ্গের ওপর যেন কামড়ে বসে আছে সেই শুরু থেকে। ওর মুখ থেকে কখনও তীব্র কামনা মাখা চিৎকার বেড়িয়ে আসছে, কখনও বা হতাশা ভরা দীর্ঘশ্বাস। হঠাত অদিতি বলে উঠল “একটা কথা জানো আলি দা?” আলি দা যেন একটু সজাগ হল। আমি ওর কোমরের ওপর নিজের কোমরের ওঠা নামা থামাই নি। বুঝতে পারছি অদিতি নিজের চাল চালবে এইবার। আর আমিও মোটামুটি রেডি। আমি লাফানোর গতি সামান্য বাড়িয়ে দিলাম। এতে দুটো লাভ হল। এক, ওর মনের একাংশ এখন আমাদের মিলন কেন্দ্রে আরও বেশী ভাবে আঁটকে থাকবে, সুতরাং ভেবে ভেবে উত্তর দেওয়ার সম্ভাবনা একটু হলেও কমে যাবে। আর দ্বিতীয়ত আমার ভেতরেও জলের ধারাটা একটু বাড়বে, মানে আমিও একটু বেশী সুখের স্বাদ পাব। আলি দা কেমন যেন শূয়রের মতন শব্দ করে বলল “ কি?” বুঝতে পারছি কথা বলতে ওর যথেষ্ট বেগ পেতে হচ্ছে, বরং বলা ভালো ওর কথা বলার কোনও ইচ্ছেই নেই এখন। আমি আস্তে আস্তে ওর বুকের ওপর হাত বোলাতে শুরু করেছি। অদিতি মেকি ন্যাকামি করে বলল “না কিছু না।“ এই সময় সব ছেলে মেয়েই কম বেশী ন্যাকামি পছন্দ করে। বুঝলাম অদিতি সেই সুযোগটাই নিচ্ছে। আলি একটু উত্তেজনা আর বিরক্তি মেশানো স্বরে বলে উঠল “আরে, কি বলই না।“ ও বলে চলল “আমি ক্লাস ইলেভেনে পড়ার সময় একটা সিনেমা দেখেছিলাম। ইংরেজি মুভি। এক সম্ভ্রান্ত বংশের গৃহ বধূকে এক দল ডাকাত ধরে নিয়ে যায়। অবশ্য ওকে নিয়ে যাওয়াটা ওদের প্ল্যানের মধ্যে ছিল না। কিন্তু ওকে দেখে দলপতির মাথা ঘুরে যায় আর তাই ওকে সঙ্গে করে নিয়ে যায়। তিন রাত ধরে ওকে ধর্ষণ করে সেই দলপতি। কিন্তু চার রাতের সময় ও নিজেই আগ বাড়িয়ে গিয়ে নিজেকে সপে দিয়েছিল সেই দলপতির হাতে। সব কিছু হয়ে যাওয়ার পর ও স্বীকার করেছিল যে এত সুখ ও ওর নিজের স্বামীর কাছ থেকে কোনও দিন পায় নি। আর সেইদিন থেকে আমার ফ্যান্টাসি ছিল একজন ডাকাত দলপতির সাথে সহবাস করার। আর আজ সে স্বপ্ন সফল হল। “ আলি কোন দিকে মন দেবে বুঝে উঠতে পারছে না। এক দিকে আমার যোনী পথ ওর লিঙ্গটাকে কামড়ে ধরে সুখ দিয়ে চলেছে আর অন্য দিকে অদিতির এই মন গলানো ন্যাকা ন্যাকা কথা। আর তাছাড়া বোধহয় পাঁচ থেকে সাত বার ও সুখের চরম সীমায় এসে পৌঁছে ছিল, কিন্তু ওকে আমরা সেই তৃপ্তি আর সুখের মুখ দর্শন করতে না দিয়েই ফিরিয়ে দিয়েছি। ও সেই ঘোঁত ঘোঁত করে ভাঙ্গা ভাঙ্গা জবাব দিল “ আমি দলপতি নই। আমি তো সেবক।“ আমার কোমরের ওঠা নামার বেগ সামান্য বাড়িয়ে দিলাম। অদিতি ওর ভেজা গালে একটা চুমু দিয়ে আধো আধো গলায় নালিশের মতন করে বলে উঠল “সে তো সব দলপতিই বলে। আরতিদি আমাদের বলে নি ভাবছ যে তুমিই এখান কার সেকন্ড ইন কম্যান্ড!” আমি গতি মাঝে মাঝে বাড়াচ্ছি আবার ওকে হতাশ করে কমিয়ে দিচ্ছি। ওর মনটাকে স্থির হতে দেওয়া যাবে না কিছুতেই। তবে আমার ভেতরেও একটা প্রচন্ড অরগ্যাসমের প্লাবন আসবে আসবে করছে। এখন সেটাকেও দমিয়ে রাখার চেষ্টা চালিয়ে যেতে হচ্ছে, কারণ এই মুহূর্তে আমার বিস্ফোরণ হলে নিজের ভেতরে ওর লিঙ্গের ওপর ভীষণ ভাবে কামড়ে ধরব আমি, তখন ওর কি হবে বলা শক্ত। আলি দা এখন স্বাভাবিক নেই। কিন্তু তাও স্বাভাবিক ভাবে বলার চেষ্টা করল “না না অরূপদাই সব প্ল্যান করে।“ অদিতি সাথে সাথে আরও ন্যাকা ন্যাকা স্বরে বলে উঠল “তাই বুঝি? তাহলে আরতিদি সেদিন আমাদের কেন বলল যে থার্ড জুলাই তোমরা যে ভয়ানক প্ল্যান সফল করলে এটা শুধু রেশমির কৃতিত্ব নয়। আরতিদির মতে সব কৃতিত্ব তোমার পাওয়া উচিত। তুমিই সব কিছু ঠিক করে ট্রেইন করে পাঠিয়েছিলে। “ আলি বলে উঠল “আরে না না। তিন তারিখের সমস্ত প্ল্যান অরূপদাই করেছিল। স্থান কাল পাত্র সব ওর নির্বাচন। তবে মানতে হবে মানুষ চিনতে পারে অরূপদা। যাদের বাছে সব এক একটা টাকার কুমীর। ব্ল্যাক মানির ওপর শুয়ে থাকে। “ অদিতি সাথে সাথে প্রশ্ন করে উঠলো “ তুমি বড্ড নিঃস্বার্থ আর নির্লোভী আলি দা। নিজের কাজের এক ফোঁটাও ক্রেডিট নিতে চাও না। বেশ মেনে নিলাম তিন তারিখে তোমার কোনও কৃতিত্ব নেই, কিন্তু একুশ তারিখেরটাতো সম্পূর্ণ তোমার প্ল্যানিং।“ কথার ফাঁকে ফাঁকে অদিতি বার বার ওর মুখটা নিজের মুখের দিকে বেঁকিয়ে নিয়ে ওর ঠোঁটের ওপর স্নেহ ভরা চুম্বনের বর্ষণ করে চলেছে। আমি আমার মৈথুনের গতির ভারসাম্য রক্ষা করে চলেছি বার বার। আমার ডান স্তনটা কিন্তু এখনও ওর হাতের পেষণে নিপীড়িত হয়ে চলেছে। হয়ত এখন আমার স্তনের ওপর ম্যাগ্নিফাইং গ্লাস লাগালে ওর হাতের রেখাও স্পষ্ট বোঝা যাবে, আঙুলের দাগ যে পড়েই গেছে সেকথা বলা অবান্তর। আলি আবারও মাথা নাড়িয়ে বলল “ লোকে আমাকে এত উচ্চ স্তরে ভাবে দেখে ভালো লাগলো। কিন্তু, না ওটাও অরূপদার প্ল্যানিং। টপ টু বটম।“ লোকটার হাঁপ ধরে গেছে। চোখে মুখে হতাশা ফুটে উঠেছে। ওর গতি এখনও আমিই নিয়ন্ত্রণ করে চলেছি। বাড়তে দেব না কিছুতেই। ও যেন ব্যর্থ হতাশা নিয়েই বলে বসল “তিন, একুশে ...(আরও চার পাঁচটা ডেট বলে চলল আপন মনে) সব কটা অরূপদাই প্ল্যান করেছে। (আমরা কিছু জিজ্ঞেস না করতেই বলল, আর বেশ বিরক্তির স্বরেই বলল) আরে অরূপদা বলে গ্রিন হোটেলের আঠারো নম্বর ঘর আর কলকাতার স্টার হোটেলের ছাব্বিশ নম্বর ঘর ওর জন্য খুব পয়া। অনেক বড় বড় লোক আসে ওই সব হোটেলে। সবাই বড় বড় টাকার লেন দেন করতে আসে। ওই দুটো ঘরে বড় কেউ এসেছে শুনলেই অরূপদাই সে খবর নিয়ে আসে আর ওই সব কিছু প্ল্যান করে। অনেক বার ও নিজেই ট্রেইন করে মেয়েদের ওখানে পাঠিয়েছে। অধিকাংশ সময়ে ও নিজেও ওখানকার ধারে কাছে থাকে। আর ডিলগুলোও ভীষণ ভালো হয়। আআহ আআহ... না না থেমো না প্লীজ।“ আমাকে কাতর প্রার্থনা জানালো ও। কিন্তু আমি কোমরে ব্যথা করছে এই অজুহাতে নিজেকে স্লো করে নিলাম। অদিতি ওর ঠোঁটে আবার নিজের ঠোঁট চেপে ধরে বলল “ এ তোমার বিনয়ের কথা। “ ও বলল “ আরে না রে ভাই। সত্যি বলছি। (আরও দুটো ডেট বলে দিল) ওগুলোও ওই হোটেলের একই ঘরে হওয়া। আর ওখানে অরূপদার নেটওয়ার্ক ভীষণ স্ট্রং। “ আমার একটা অরগ্যাস্ম হয়ে গেছে। এখন আমি অনেকটা ঠাণ্ডা। বলা ভালো আমার কাম বেগ এখন অনেক কম, কিন্তু এখন অদিতির সাথে স্থান পরিবর্তন করতে গেলে সব খেলা কেঁচে যেতে পারে তাই আমি ওর লিঙ্গটা দিয়ে নিজেকে মন্থন করিয়েই চললাম। এইবার আমি বললাম “সোনা, একই হোটেলে একই ঘরে বারবার লুট? তোমাদের অরূপদা খুব ঝানু লোক বলতে হবে। নইলে ওখানে তো পুলিশের ওঁত পেতে রাখার কথা। “ ওর কাম বেগ বোধহয় আবার উঠতে শুরু করেছে। ও আমার কথার কোনও উত্তর দিতে পারল না এইবার। অদিতি আমাকে ইশারা করল চড়িয়ে একদম সীমায় নিয়ে গিয়ে উঠে পড়তে। আমিও গতি বেগ বাড়িয়ে দিলাম। কিন্তু প্রশ্নটা আবার করলাম। কিন্তু এখন ওর ঘর্মাক্ত মুখের ফাঁক হয়ে থাকা ঠোঁট থেকে শুধু একটা আহ আহ শব্দ বেরোচ্ছে। আমি রসিকতা করে বললাম “হে ভগবান আমরা তাহলে দলপতি কে ছেড়ে সাব অরডিনেট কে ভালো বেসে ফেলেছি। ওই দিকে বিনীতাদি কেমন লাকি। এক দিকে দলপতির গিন্নী আবার অন্য দিকে রাজুও নাকি ...।“ আমার কথা শেষ করতে পারলাম না। বুঝলাম তীর গিয়ে সোজা বুকে গিয়ে বিঁধেছে। ডান হাত থেকে খালি গ্লাসটা মাটিতে ফেলে দিয়ে আমার কোমরটা খামচে ধরে নিজেই তলঠাপ দিতে শুরু করেছে ও। মুখে পশুর মতন গলা করে প্রায় চেঁচিয়ে বলে উঠলো “ আরে বিনীতা তো আমার সাথে শুত এই কয়েক মাস আগে পর্যন্ত। ওর বরের ওকে ঠাণ্ডা করার মুরোদ নেই। আর বিনীতা একটা পাক্কা খানকী...।“ নিজেই নিজেকে সামলে নিল। খুব হতাশা ভরে বলল “যখন যার থেকে বেশী সুখ পায় তার থেকেই... আর অরূপদাও দেবতার মতন লোক। কিছু বারণ করে না। আর এখানে সবাই সবাইকে নিঃস্বার্থ ভাবে ভালোবাসে।“ শালা নীতি জ্ঞান নিয়ে আলোচনা করতে গেলে ওর হিট নেমে যেতে পারে ভেবেই আমরা কথা ঘোরাতে বাধ্য হলাম। অদিতি বলল “ কিন্তু তুমি তো মেয়েদের ভালোই ঠাণ্ডা করতে পারো। তুমিই কিন্তু আমাদের হিরো। ও তোমার সাথে মজা করছিল। “ এই কথাগুলোর ফাঁকে ওর হাতের চাপ ধীরে ধীরে আমার পাছার ওপর থেকে কমে গেছে। আমিও আমার গতি কমিয়ে দিয়েছি। আগের কথার খেই ধরেই ও বলল “ ওটা আমাদের ভাগ্য বা প্ল্যানিং। আমরা ওই জায়গা গুলোতে অনেক বার এইসব করেছি। কিন্তু একবারও পুলিশের কানাকানি হয় নি। অরূপদার নেতৃত্ব অসাধারন। হয়ত কালো টাকার ব্যাপার জানা জানি হয়ে যাওয়ার ভয়েই কিছু বলে নি। “ অদিতি দেখলাম ফোঁস করে উঠে দাঁড়িয়ে বলল “এই অনেকক্ষণ করেছিস। এইবার আমার পালা। “ আবার হতাশ হয়ে ও মাটিতে মাথা রেখে শুয়ে পড়ল।

[/HIDE]
 
[HIDE]

19

আমি গিয়ে অদিতির জায়গা নিয়ে ওর নোংরা শরীরটা নিজের বুকের ওপর চেপে ধরলাম। ও ইতিমধ্যে অদিতির ভেতর ঢুকে গেছে। অদিতি লাফাতে লাফতেই বলে চলল “ আলি দা, সবই বুঝলাম কিন্তু একটা জিনিস বুঝলাম না। “ ও দুহাত দিয়ে অদিতির পাছাটাকে রীতিমত খামচে ধরেছে। বুঝতে পারছি যে অনেকক্ষণ সহ্য করেছে, আর পারছে না। এইবার বীর্য না ঢালতে পারলে পাগল হয়ে যাবে। অদিতি কিন্তু বেগ বাড়াল না। আরেকটু বিরক্ত করার জন্য বলল “ওদের এত টাকা থাকলে ওরা পুলিশকেও টাকা খাইয়ে বশ করে নিত। এ হয় তোমার বা অরূপদার প্ল্যানিং, তোমরাই কোনও চিহ্ন ফেলে আসো নি। তাই পুলিশ সব বুঝেও কিছু করতে পারে নি। “ আলি এইবার প্রায় চেঁচিয়ে উঠলো “আরে কতবার বলব, অরূপদা প্ল্যান করলে ওই সব জায়গায় পারতপক্ষে কোন পুলিশি আফত আসে না। জানি না কেন। কিন্তু ওইখানেই অরূপদা আর আলি র পার্থক্য। আর তাই ও তোমাদের ভাষায় দলপতি।“ বুঝলাম না অদিতি হঠাত ওর গতি বেগ বাড়িয়ে দিল। মুখে বলল “কিন্তু আমাদের কাছে তুমিই সবথেকে ভালো বাসার লোক। “ আবারও প্রায় অন্তিম সীমায় ওকে পৌঁছে দিয়ে ও হঠাত করে উঠে আমাকে বলল “ নাও এসো। অনেকক্ষণ ওকে আমরা সুখ দিয়েছি। আর ও নিজেও আমাদের ভরিয়ে রেখেছিল। এইবার ভালোবাসার রস নিয়ে স্বার্থক করো জীবন। “ ও ওঠার আগে একবার আলির বুকের লোমগুলো কে খামচে ধরেছিল জোড়ে। কয়েক মুহূর্তের জন্য স্থির হয়েও গিয়েছিল। মনে হল ও নিজেও যেন একটা অরগ্যাস্ম পেয়ে গেছে। অদিতির সাথে এইবার স্থান পরিবর্তন করার পর এইবার আর আমি থামলাম না। ভীষণ বেগে কোমর ঝাঁকিয়ে চললাম ওর উত্থিত খুদিত লিঙ্গের ওপর। আমার আরেকটা অরগ্যাস্ম এসে গেছে। ও আর বেশীক্ষণ নিজেকে ধরে রাখতে পারবে না বুঝতে পেরে নিজের বেগ আরও বাড়িয়ে দিলাম। এস্পার কি অস্পার। অদিতি নিজের ঠোঁট ওর ঠোঁটে চেপে রেখেছে। ও বা হাতে অদিতির একটা স্তন খামচে চেপে ধরেছে বেঁকিয়ে। ওর মাথা নাড়ানো আর শরীরের কম্পন ঢেকে বুঝতে পারলাম ওর হয়ে গেছে। সাথে সাথে শরীরের ভেতরে গলগল করে ঢেলে চলল গরম লাভা। কিন্তু আমার অরগ্যাস্মও তখন আসন্ন। আমিও থামতে পারলাম না। ভীষণ গভীরে গভীরে ঢুকিয়ে ওর লিঙ্গ দিয়ে নিজের ভেতরটা তীব্র ভাবে মথিত করেই চলেছি। ওর গরম সাদা লাভার ভাণ্ডার শেষ হবার আগেই পৌঁছে গেলাম তৃপ্তির চরম সীমায়। প্রচুর জল খসিয়ে ওর বুকে লুটিয়ে পরে স্থির হয়ে গেলাম। ওর ঠোঁট তখনও অদিতির ঠোঁটের ওপর চাপা। বা হাতটা অবশ্য শিথিল হয়ে গেছে ওর বুকের ওপর থেকে। কতক্ষণ তিন জন এইভাবে নিজেদের মধ্যে নিবিড় আলিংনে পড়েছিলাম বলতে পারব না। এক সময় ওদের চুম্বন ভাঙল। আমি উঠে দাঁড়াতেই আমার যোনীর ভিতর থেকে একগুচ্ছ ঘন সাদা বীর্য বেড়িয়ে ওর লিঙ্গ, থাই আর ওর দুপায়ের ফাঁকের মাটিতে পরে ওগুলোকে ভিজিয়ে দিল। আমি তৎক্ষণাৎ নিজের যোনীর মুখে হাত চেপে ধরে ঘর থেকে বেড়িয়ে ছুটলাম কল পাড়ের দিকে। আমি যে নগ্ন ভাবে এই খোলা পরিবেশে দৌড়ে বেড়াচ্ছি, আমার স্তনগুলো যে তীব্র ভাবে এদিক ওদিক লাফিয়ে চলেছে (যা আমাদের সভ্য সমাজের চোখে ভীষণ অশ্লীল), এই সব খেয়াল আর আমার মাথায় আসে নি। নিজেই পাম্প করে বেশ কিছুটা জল ঢেলে পরিষ্কার করলাম নিজের গোপনতম অঙ্গটাকে। আমি ওই নগ্ন অবস্থাতেই মরচে পড়া বালতিটাতে জল ভরতে শুরু করে দিয়েছি। মাথায় প্রথম মগ ঢালতে যাব তখন দেখলাম অদিতি আমাদের দুজনের শাড়ি হাতে এসে হাজির হয়েছে কল পাড়ে। সাথে আলিদাও এসেছে। ওর হাতে এখন আর কোনও বন্দুক নেই। আছে শুধু মোমবাতি। সেটাকে ও পরম সযত্নে হাওয়া থেকে গার্ড করে রেখেছে। গায়ে ফতুয়াটা না চড়ালেও ধুতিটা কোমরে জড়িয়ে এসেছে। অদিতি শাড়ি দুটো ওর কাঁধের ওপর আলগা ভাবে রেখে এসে স্নান করতে বসে পড়ল। ও ও প্রথমে নিজের যোনীদেশ ভালো করে ধুয়ে নিল। তারপর স্নান সেরে আমরা উঠে ওর কাঁধের ওপর থেকে নিজেদের শাড়িগুলো হাতে নিয়ে নগ্ন ভাবেই হেঁটে চললাম নিজেদের ঘরের দিকে। আমাদের লজ্জা অনেকটাই কমে গেছে এই কদিনে তাতে সন্দেহ নেই। আমাদের ঘরের মোমবাতিটা আমরা নিভিয়ে রেখেই গেছিলাম। আলি এসে আমাদের ঘরের মোমবাতিটাতে অগ্নি সংযোগ করলো। আমাদের বিছানায় বসে বসে আমাদের গা শোঁকানো আর সব শেষে কাপড় পরা দেখে উঠে পড়ল। “ সত্যি বলছি, বিনীতার সাথে অনেকবার মিলন হয়েছে আমার। কিন্তু আজ যা পেলাম সেটা ভুলবার নয়। তোমাদের যেন ভালোবেসে ফেলেছি আমি। “ ওর গলায় হালকা নেশা থাকলেও, কথাগুলো যে একদম মনের ভেতর থেকে আসছে সেটা খুব সহজেই অনুমেয়। চলে গেল। আমরা এর ওর মুখের দিকে চাওয়া চাওয়ি করে ফুঁ দিয়ে মোমবাতিটা নিভিয়ে শুয়ে পড়লাম। অদিতি আমাকে বলল “ এখন কোনও কথা নয়।। কাল সকালে কথা হবে। আমরা এতক্ষন যে ওর ঘরে ছিলাম সেটা নিশ্চই কেউ না কেউ লক্ষ্য করেছে। বাইরে যদি কেউ কান পাতে তাহলে তো কথাই নেই। “ শেষের কথাগুলো ও গলাটাকে যতটা পারা যায় খাদে নামিয়ে নিয়ে গিয়ে বলল।

পরের দিন আবার যেই কে সেই। আগের রাতের ঘুমটা হয়েছে ভীষণ তৃপ্তিদায়ক। সকালে উঠে যখন ব্রাশ করতে যাচ্ছি তখন আলির সাথে চোখাচুখি হয়েছে। ওর চোখে যেন আমাদের দুজনের জন্য প্রেম ঝরে পড়ছে। আমরা লাজুক ভাবে চোখ নামিয়ে নিয়ে চলে যাচ্ছিলাম কিন্তু অদিতি ব্রাশ মুখেই হঠাত দাঁড়িয়ে ওকে জিজ্ঞেস করল “ অরূপদা আজকে চলে আসছে তো? আজকে কিন্তু আমরা কোনও ডেলিভারি নিতে পারব না। এত যোগ গুন ভাগ করতে আমাদের পেট খারাপ হয়ে যায়। “ আলি হেঁসে বলল “ না রে বাবা। আজ কোনও ডেলিভারি নেই। অরূপদাও পরশু ভোরে ঢুকে যাবে। তোমরাও নিশ্চিন্ত থাকো, তোমাদের দিয়ে আর আমি পাটিগণিত কশাবো না। বাকি রাও তারই আগু পিছু এসে পৌঁছাবে।“ ব্রাশ করে ফিরে এসে চা নিয়ে গিয়ে আমরা বসেছি অরূপদার ঘরে। এখন এখানে কেউ নেই। অদিতি চায়ে একটা লম্বা চুমুক দিয়ে বলল “ সবই বুঝলাম, শুধু কয়েকটা হিসাব মিলল না। “ বললাম “আমিও অনেক কিছু বুঝেছি। কিন্তু কথাটা যখন তুই তুললি তখন তুইই শুরু কর। “ ও আমার কথার উত্তর না দিয়ে বলল “ আমাদের হাতে এখনও দুদিন আছে। “ অরূপদার টেবিলের ওপরে একবার নজর ঘুরিয়ে নিয়ে বলল “ আজ বাইশ। অরূপদা ফিরছে পরশু। সুতরাং এখনই কাজে লেগে পড়তে হবে। চল গ্লাসটা রেখে খেয়ে দেয়ে আসি। “ মাঝপথে শুধু একবার ও মুখ খুলল “চক্রান্ত, ঘোর চক্রান্ত। এত গুলো মেয়েকে নিয়ে খেলে বেড়াচ্ছে। নানা ভাবে নিরাপত্তার অজুহাত দিয়ে বিপদের মুখে ঠেলে দিয়ে নিজের পকেট গোছাচ্ছে। এস্পার কি অস্পার করতেই হবে। সামান্য খাদ্যের বিনিময়ে ওদের জীবনের অসহায়তার সুযোগ নিয়ে ওদেরকে বসিয়ে রেখেছে নরকে। আর ওই লোকটার জন্য এরাই সামান্য কটা খাদ্যের বিনিময়ে ঝাঁপিয়ে পড়বে বিপদের মুখে, আর মনে বিশ্বাস নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়বে। কিন্তু...। কিন্তু একদিন বোধহয় উঠে দেখবে কেউ নেই। সব শেষ। হয়ত পুলিশ...“ আমরা ঘরে এসে পৌঁছেছি। আজও ও দৌড়াতে যায় নি। এসেই ও শুয়ে পড়ল। আমি ওকে বললাম “গণ্ডগোল যে আছে সে তো বুঝতেই পেরেছি। কিন্তু, আলি দা লোকটা জেনুইন। কি বলিস?” ও শুধু একটা হুমম মতন শব্দ করল। আমি চেয়ারে গিয়ে বসে স্থির দৃষ্টে বাইরের দিকে চেয়ে বসে রইলাম। রাজু প্রায় আধঘণ্টা পরে এসে আমাদের জল খাবার দিয়ে গেল। অদিতি উঠে ওকে গুড মর্নিং জানিয়ে চেয়ারে এসে বসল। একই প্লেটে আমাদের দুজনের জল খাবার দিয়ে যাওয়া হয়। আমাকে বলল “কি বুঝলি বল?” আমি বললাম “কোথাও থেকে টাকার রেগুলার আমদানির বন্দবস্ত করেছে লোকটা, আর সেটা তো নিশ্চিত ভাবেই বলা যায়?” ও একটুকরো শুঁকনো রুটি মুখে পুড়ে দিয়ে বলল “ প্রশ্নটা এটা নয় যে অরূপদা সেটা বন্দবস্ত করেছে। প্রশ্ন হল - কিভাবে?” ও নিজেই বলল “ব্ল্যাক মেলিং। সব থেকে সহজ ব্যাখ্যা। এরকম বিনা কারণে বারবার রেগুলার ডিপোসিট মেইনলি একটাই কারণে হয়। আর সেটা হল ও অনেক কে ব্ল্যাক মেইল করছে আর তারাই প্রত্যেক মাসে একই তারিখে একই পরিমাণ টাকা জীবন বিমার মতন ওর অ্যাঁকাউন্টে জমা করে যাচ্ছে। “ একটু ভেবে বলল “আমার অবশ্য অন্য একটা সন্দেহ ছিল। কিন্তু একটু ভাবতেই বুঝতে পেরেছি যে সেই সন্দেহ সম্পূর্ণ নিরর্থক। “ জিজ্ঞেস করতে বাধ্য হলাম “কি সন্দেহ?” ও বলল “ এমনও হতে পারত যে বাইরে থেকে কোনও একটা সংস্থা ওকে টাকা পাঠিয়ে যাচ্ছে। হয়ত সন্দেহ না হয় এমন ভাবে প্রত্যেক মাসে ভেঙ্গে ভেঙ্গে পাঠায়। আর বিভিন্ন অ্যাঁকাউন্ট থেকে পাঠায়। কিন্তু তাতেও গোলমাল। কেন না, সেই টাকা ক্যাম্পের জন্য এলে সেটা ব্যাঙ্কের ভল্টে পড়ে থাকত না। ওটা ও কোনও না কোনও ভাবে উঠিয়ে নিতই। কিন্তু এক্ষেত্রে সেটা হয় নি। আচ্ছা আরেকটা ব্যাপার, সেটা হল জেগুলোর পর এক একটা বড় অ্যাঁমাউন্ট ঢুকেছে আর তারপর থেকে ওই একই জায়গা থেকে টাকার আমদানি শুরু হয়েছে সেই সব গুলোর আগেই ও মেয়ে পাঠিয়ে লুট করেছে। বেসিকালি বেশ্যার মতন কাউকে না কাউকে পাঠিয়েছে আর তারা শরীর দিয়ে ছেলেদের বশ করেছে, তাদের সাথে শুয়েছে আর তারপর তাদের টাকা লুট করে ফেরার। এখানে একটাই জিনিস খুব সিগ্নিফিক্যান্ট। সেটা হল, লোকগুলো কেন পুলিশের কাছে গেল না। তুই ঠিকই বলেছিলিস কাল। এত টাকা থাকলে তো পুলিশ আর প্রশাসন ওদের হাতের মুঠোয়। কিন্তু তাও গেল না। কোনও পুলিশি ঝঞ্ঝাটই হল না। আর সব কটা জিনিস ঘটল দুটো হোটেলের একই ঘরে। অবশ্য অন্য কোনও হোটেলেও এরকম সেটিং যে থাকবে না সেটা এখনই বলা যায় না। এবং খুব সম্ভবত সেটা আছেও। কিন্তু সব মিলিয়ে এর অর্থ একটাই হয় সোনা, ওরা পুলিশের কাছে যাবে তার আগেই আমাদের অরূপদা ওখানে গিয়ে ওদের মুখ বন্ধ করে দিয়েছে কিছু একটা ভয় দেখিয়ে। গুলি গোলা ওর আছে। কিন্তু ওই লোকগুলো গোপনেও যেতে পারত পুলিশের কাছে। মোটা টাকার ঘুষ দিতে পারত। কিন্তু তেমন তারা করে নি। উল্টে প্রত্যেক মাসে মোটা অঙ্কের বিনিময়ে ওর চাহিদা মিটিয়ে চলেছে। মানে শুধু ভয় দেখায় নি, ওদের স্বার্থ রক্ষার জন্য মোটা টাকায় দফা রফা করে এসেছে। এবং সে টাকা গুলো ও নিজের নামেই নেবে। এক থোকে একটা বিশাল রকম নিয়ে তাৎক্ষনিক ছেড়ে দিয়েছে আর তার পর থেকে ইন্টারেস্ট নিয়ে চলেছে। “ আমি বললাম “কিন্তু ...” আমি এখনও বুঝতে উঠতে পারছিলাম না যে অরূপদার সংস্থার মেয়েরা গিয়ে লুট করেছে। সেখানে অরূপদা গিয়ে ব্ল্যাক মেইল করবে কি ভাবে। ও উঠে পড়েছিল। বোধহয় আমার মনের কথাটা বুঝে নিয়েই বলল “ পাগলি, একই হোটেল আর একই ঘর এই কথাটাও কম সিগ্নিফিক্যান্ট নয়। আর যারা গিয়েছিল সবাই বেশ্যা সেজে গিয়েছিল। আর যাদের কাছে গিয়েছিল তারা যেই বয়সেরই হোক না কেন, তারা প্রত্যেকে সমাজের প্রতিষ্ঠিত ব্যক্তি, অন্তত জানা জানি হলে ওদের ক্ষয় ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা আছে সেটা মেনে নেওয়া যায়। ব্ল্যাকমেইলের একটা সহজ কারণ তো এমনিই দেখা যাচ্ছে। “ আমি ওকে না জিজ্ঞেস করে পারলাম না “ কিন্তু কি প্রমাণ আছে তোর হাতে যে তুই এই সিদ্ধান্তে এসেছিস। ”

ও বলল “প্রমান। প্রমান। প্রমান। হয়ত সেটা জোগাড় করাও যাবে। কিন্তু তার থেকেও বড় প্রশ্ন, ওই রুমের বেয়ারা সেই সেই দিনগুলোতে কে কে ছিল। একই লোক ছিল কি? নাকি অন্য অন্য লোক ছিল। অন্য লোক হওয়ার সম্ভাবনা অবশ্য খুব কম। কারণ, ঘটনা যা শুনেছি তাতে রুমের বেয়ারার সাথে বা ভেতরের কারোর সাথে অরূপদার সেটিং থাকাটা এখানে মাস্ট। এত বড় হোটেলের মালিকের সাথে ও সেটিং করতে পারবে না। ভিন্ন ভিন্ন বেয়ারা হলে এত দিনে নিশ্চিত পুলিশ জানা জানি হয়ে যেত। সোনা জানিসই তো এই সব কথা দু-জন জানলে সেটা পাঁচ কান হতে বেশী সময় লাগে না, এই সব কথা কানে হাঁটে। (ডান হাতের মুঠিটা বা হাতের চেটোয় মেরে বলল) আমি সিওর,এখানে বেয়ারার হেল্প ছাড়া একটা লুন্ঠিত অপমানিত টাকার কুমীরকে ও এত সহজে বশ করতে পারত না কারণ বেয়ারা হয়ত নিজেই হোটেলের আর হোটেলের গেস্টের নিরাপত্তার স্বার্থে ম্যানেজমেন্টকে এই কথাটা তৎক্ষণাৎ জানাত, আর সাথে সাথে হুলস্থুল পড়ে যেত। আমি নিশ্চিত যে লোকগুলো কে স্পটেই বশ করা হয়েছে এবং টাকার ডিল সম্পূর্ণ করা হয়েছে। হোটেলের ম্যানেজমেন্ট এইসব লুটের ব্যাপারে কিসসু জানে না। সেটা ছাড়াও আর একটা জিনিস জানতে হবে। “ আমি মনে মনে ওর বুদ্ধির তারিফ না করে পারলাম না। তবুও না জিজ্ঞেস করে পারলাম না “ আচ্ছা আলিদার হিসাব অনুযায়ী এতগুলো লুট ও নিজে কন্ট্রোল করেছে। কিন্তু টাকার অঙ্কটা, মানে, যেটা ওর ব্যাঙ্কে আছে, সেটা কাল বেশী মনে হলেও আজ কিন্তু লুটের সংখ্যা শুনে কম মনে হচ্ছে। তাই না? মানে, যদি শুধু এই হোটেলগুলোর কথাই ধরি, তাতেও মনে হচ্ছে কম কারণ লুটের সংখ্যা অনেক বেশী। আর তোর কথা মতন যদি অন্য হোটেলেও একই রকম সেটিং থাকে তাহলে তো স্থির বিশ্বাস করতে হবে যে এর থেকে অনেক বেশী টাকা এদের দলপতি অন্য কোথাও সরিয়ে রেখেছে। ” ও সম্মতি সুচক মাথা নাড়িয়ে বলল “সোনা, সেটাই তো তখন বললাম। হাতে দুদিন আছে। লেগে পড়তে হবে। আমি বইটা ফেরত দিতে যাব (এখানে বলে রাখি, ও বইটা খুলেই দেখেনি।) আর তুইও আমার সাথে যাবি। আর কোনও অ্যাঁকাউন্টের পাশ বই পাওয়া যায় কি না সেটা খুঁজে দেখতে হবে। আর দেখতে হবে আজই। ভুলিস না ওর আক্যাউন্টে খুব শিগগির বিরাশি লাখ টাকা পড়বে। চল আর সময় নষ্ট করা ঠিক হবে না। তবে বাকি পাশ বইগুলো যদি নিজের সাথে নিয়ে গিয়ে থাকে তো এত খোঁজাখুঁজি সব জলে যাবে। “ আমি ওকে আরও কিছু বলতে যাচ্ছিলাম, কিন্তু ও আমাকে থামিয়ে দিয়ে বলল “ শোন, দুটো লাইনের মানে এখনও বের হয় নি। আর তাছাড়া তুই কি জিজ্ঞেস করতে পারিস, বা কেন তোর খটকা লাগছে সে গুলো আমি মনে হয় জানি। আমি তোকে সে গুলো সময় নিয়ে বোঝাবো। এখন চল। হাতে অনেক কাজ। “ আমরা রওয়ানা দিলাম। পথে আলিদা আর রাজুর সাথে দেখা হল। আমরা বললাম “লাইব্রেরি থেকে নতুন বইয়ের সন্ধান করতে যাচ্ছি। “ রাজু হেঁসে উঠলো “এখানে সবাই শিক্ষিত কিন্তু তোমাদের মতন বই নিয়ে বসে থাকতে আগে কাউকে দেখিনি। “ আলি বলল “যাও। দেখ কোন বই পছন্দ হয়। ওখানে বসেও পড়তে পারো তোমরা। আর কোনও দরকার পড়লে আমি মাঠেই আছি আজ। সেখানে এসে খোঁজ করবে।“ আমাদের পাশ দিয়ে আরও কয়েকজন মেয়ে যাচ্ছিল ওরা আমাদের কথা শুনতে শুনতে ব্যস্ত ভাবে হেঁটে মাঠের দিকে চলে গেল। সীমাকে দেখলাম আজ অনেক ফ্রেশ লাগছে। ট্রেনিঙে যোগ দিতে এখনও কয়েকদিন দেরী যদিও। সীমাকে দেখে অদিতি আর আমি দুজনেই একসাথে চাপা গলায় এঁকে অপরকে বলে উঠলাম “ এও সেই দিন গ্রিন হোটেলে গিয়েছিল। অবশ্য জানি না আঠারো নম্বর ঘরেই গিয়েছিল কি না।“ আমি ওকে বললাম “তুই ঘরে গিয়ে বই ঘাঁটা শুরু করে দে। আমি সীমার শরীরের খবর জানার ভান করে একথা সেকথায় বের করে নি যে কত নম্বর রুমে ও গিয়েছিল। “ অদিতি আমার হাতটা চেপে ধরে বলল “ পারবি তো পেট থেকে কথা বের করতে? সন্দেহ করবে না তো তোর ওপর?” বললাম “দেখাই যাক না। ড্রেসিংটাও করে আসি। যদিও আজ ড্রেসিং করার দরকার ছিল না। “ সীমাকে দেখার ভান করে ওর সাথে গিয়ে গল্প জুড়ে দিলাম। মেয়েটা খুবই সরল সাদা সিধা। আমাকে খুব একটা খোঁচাতেই হল না। আমি শুধু বললাম “আমি তো শুনেছি গ্রিন হোটেলের আঠারো নম্বর ঘর (ইচ্ছে করে নিজে যেচেই লাকি রুম নম্বরটা বলে দিলাম, দেখি ওর কেমন রিয়েকসন হয়। কোন রুমে গিয়েছিলে জিজ্ঞেস করলে অন্য রকম সন্দেহ উঁকি মারতে পারে ওর মনে। আর অন্য ঘরে গিয়ে থাকলেও স্বাভাবিক প্রতিক্রিয়ায় ও নিজেই হয়ত বলে উঠবে যে না না আঠারো নয় অমুক নম্বর ঘরে গিয়াছিলাম।) অরূপদার জন্য খুবই লাকি। তবুও সেই ঘরেই গিয়ে ওর এক হনুমান কাত হয়ে ফিরে এলো, এ কেমন কথা হল। “ ও বলল “আঠারো নম্বর ঘর সত্যি আমরা লাকি বলে মানি। কিন্তু আমারই ঠিক করে দেখা উচিৎ ছিল যে লোকটা ঘুমিয়েছে না ঘুমায়নি। “ তার মানে ও সেদিন আঠারো নম্বর ঘরেই গিয়েছিল। এর পর ও একটা কথা বলল যেটা শুনে আমার মাথাটা চট করে ঘুরে গেল। ও বলল “ আরে লোকটা যে গাঁট্টাগোঁট্টা আর ঝানু সেটা বলতে অরূপদাও ওখানে এসেছিল। আমাদের কাছে লোকটার মোটামুটি একটা বিবরণ ছিল মাত্র। কিন্তু অরূপদা সব ডিটেল জেনে আমাদের জানাতে এসেছিল। একবার ভেবে দেখো আমাদের কথা কত চিন্তা করে। নিজে গিয়েছিল অন্য একটা কাজে, সেই কাজ সেরে দৌড়াতে দৌড়াতে গিয়ে হাজির হয়েছে ওখানে শুধু আমাকে সতর্ক করে দেওয়ার জন্য। আমি আর আলি দা পৌঁছে দেখি গেটের কিছু দূরে দাঁড়িয়ে আছে অরূপদা। সব বুঝিয়ে সাবধান করে দিয়েছিল। লোকটার নাকি এরকম কল গার্ল হ্যান্ডেল করার অনেক অভিজ্ঞতা আছে। এই রকম মেয়েরা যে চুরি করতে পারে সে খবর লোকটা ভালোই রাখে। আমার অরূপদার কথা ক্যাজুয়াল নেওয়া উচিৎ হয় নি। “ মানে সেদিন ঘটনাস্থলে অরূপদাও ছিল। অদিতির স্পটে বশ করার ব্যাপারটা কিন্তু খাপে খাপে মিলে যাচ্ছে। ওর কোমরের কাছে ড্রেসিং শেষ করলাম। ও হাতেও একটা জায়গায় চোট খেয়েছিল, সেটা একবার ঘুরিয়ে দেখে নিলাম। বললাম “রীতিমত দস্যু মেয়ে সব তোমরা। কোমরের আঘাতটা তো বুঝলাম। কিন্তু হাতেরটা কি করে লাগলো সেটা জানা হয় নি। “ ও বলল “ হাতাহাতি হলে এরকম ছোটখাটো আঘাত লেগেই থাকে। কি করে লাগলো সঠিক মনে নেই। যতদূর মনে পড়ে ধস্তা ধস্তির সময় আমার হাতের বাড়ি খেয়ে ওর বেডরুমের দেওয়াল টিভিটা ভেঙ্গে পড়ে গিয়েছিল। হয়ত তখনই লেগেছে। তবে এসব আঘাত হামেশাই লাগে বলে এসব নিয়ে আমরা ঘাবড়াই না। “ আমি ওর ঘর থেকে বেড়িয়ে পড়ার আগে জিজ্ঞেস করলাম “এত কিছু হওয়ার পর ওখানে নিশ্চই খুব পুলিশি হাঙ্গামা শুরু হবে? ভীষণ হুলস্থূল পড়ে যাওয়ার কথা, তাই না?” সীমা একটু ভেবে বলল “লোকটা বোধহয় এতগুল ব্ল্যাকমানি নিয়ে এসেছে বলেই পুলিশে যাবার রিস্ক নেয় নি (এও ভাবে ব্ল্যাকমানি ইনভলভ হলে এই সব ব্যবসায়ীরা পুলিশের কাছে যেতে ভয় পায়)। আমরা অবশ্য ওখানে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে পুলিশের অপেক্ষা করছিলাম না। তবে ফিরে এসে যা শুনেছি তেমন কিছু একটা পুলিশের গোলমাল হয় নি। আর হয়ে থাকলেও সে নিয়ে কোনও কানা ঘুসো হয় নি। জানি না হয়ত তলে তলে আমাকে খুঁজে বেড়াচ্ছে। তবে আমি ভয় পাই না। হয়ত অনেক গুলো থানায় গিয়ে দেখবে আমার বা আমাদের অনেকের নাম ওদের ওয়ান্টেড লিস্টে রয়ছে। অনেক ছবি বা স্কেচও হয়ত পেয়ে যাবে আমাদের। প্রথম প্রথম ভয় লাগতো। কিন্তু এখন গা সয়ে গেছে। একদিন না একদিন তো মরতেই হবে। এই মেয়েগুলোর জন্য আর এদের মতন আরও যারা রয়েছে তাদের জন্য কিছু করে মরতে পারলেই খুশি হব। “

[/HIDE]
 

Users who are viewing this thread

Back
Top