পেটপূজা তথা ভোজনের প্রশ্নে বাঙালির জুড়ি মেলা ভার। হরেক রকম রান্নার স্বাদে মাতিয়ে রেখেছে বিশ্বের ভোজনপ্রেমীদের। রান্না যাঁরা জানেন, তাঁরা বেশ ভালো করেই জানেন। কিন্তু যাঁরা রান্নায় এখনো কাঁচা, তাঁরা কীভাবে রান্না করবেন, এই প্রশ্ন থেকেই যায়। অনলাইনের জয়জয়কারের এই সময়ে ডায়েরিতে রেসিপি টুকে রাখা কিংবা রান্নাশিক্ষার বই পড়ে রান্না শেখার সুযোগ কই। আর এই জন্যও আছে সহজ সমাধান। মুঠোফোনে ইনস্টল করে নিতে পারেন রেসিপির অ্যাপস। লকডাউনের সময়ে বাসায় বসে থেকে অ্যাপসগুলোর সাহায্য নিয়ে হয়ে উঠুন একজন পরিপূর্ণ রাঁধুনি। সহজে রান্না শেখার জন্য কয়েকটি অ্যাপসের খোঁজ জেনে নেওয়া যাক এবার।
কুকপ্যাড
বিশ্বের নানা স্থানের মজাদার বিভিন্ন রেসিপি শেখার জন্য কুকপ্যাডের জুড়ি নেই। এটি মূলত একটি ‘সোশ্যাল কুকিং অ্যাপস’। দৈনন্দিন প্রায় কয়েক শ রেসিপি আপলোড হয়ে থাকে এই অ্যাপে। মুঠোফোনে অ্যাপসটি ইনস্টল করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের মতো অ্যাকাউন্ট খুলে নিয়ে আপনি নিজেও চাইলে এখানে রেসিপি শেয়ার করতে পারেন। পাশাপাশি বিশ্বের হাজারো মানুষের দেওয়া বিভিন্ন রেসিপি থেকেও শিখে নিতে পারেন রান্না। বিভিন্ন রেসিপির সঙ্গে এই অ্যাপসের মাধ্যমে রান্নাবিষয়ক নানা তথ্য, আইডিয়া ও রান্নার অভিজ্ঞতার গল্পও জানতে পারবেন। গুগল প্লে-স্টোরে ৪.৭ রেটিং পাওয়া ১৫ মেগাবাইটের অ্যাপটি চালাতে হলে আপনার প্রয়োজন শুধু একটি অ্যান্ড্রয়েড মুঠোফোন।
কিচেন স্টোরিজ
রান্না যাঁরা শিখতে চান, তাঁদের জন্য আরও একটি ভালো অ্যাপের কথা বলতে গেলে বলতে হবে ‘কিচেন স্টোরিজ’-এর কথা। গুগল প্লের ডিজাইন অ্যাওয়ার্ড পাওয়া অ্যাপটিতে আছে রেসিপির অসংখ্য এইচডি ভিডিও গাইড, আছে স্টেপ বাই স্টেপ ফটো নির্দেশনা। কুকিং এবং বেকিংয়ের জন্য ইউজার ফ্রেন্ডলি এই অ্যাপে আরও আছে বেসিক কিচেন টিপস, ট্রিকস এবং রান্নাবিষয়ক বিভিন্ন রচনা। কুকপ্যাডের মতোই এই অ্যাপেও পাবেন কমিউনিটি কুকিং তথা সোশ্যাল কুকিং অ্যাপের মজা। নিজের রান্না নিজেই আপলোড করতে পারবেন। চাইলে ছবি বা ভিডিও দেখে শিখতেও পারেন। ‘কিচেন স্টোরিজ’-এর গুগল প্লে-স্টোর রেটিং ৪.৭।
বাংলা রেসিপি
বাংলাদেশিদের দৈনন্দিন খাদ্যতালিকার নিয়মিত ও সহজ রেসিপির এক অনন্য সম্ভার হলো ‘বাংলা রেসিপি’ অ্যাপটি। ৮০০–এর অধিক বিভিন্ন রেসিপির সমাহারের মধ্যে রয়েছে ভাত, বিরিয়ানি, মাংস, মাছ, ডিম, শাকসবজি, পানীয়, শিশুদের খাবার, আচার, স্ন্যাকস এবং বিভিন্ন বিদেশি খাবার। অনলাইন ও অফলাইনে ব্যবহারযোগ্য বাংলা ও ইংরেজি ভাষায় ছবির মাধ্যমে রান্না শিক্ষণের জন্য বেশ দারুণ অ্যাপটি। রেসিপির পাশাপাশি আছে রান্নাবিষয়ক অনেক টিপসও। বাংলাদেশি অ্যাপ ডেভেলপার একটি প্রতিষ্ঠানের তৈরি অ্যাপটির প্লে-স্টোর রেটিং ৫। ইউজার রিভিউও সন্তোষজনক।
ইয়ামলি
প্রায় সব ধরনের রান্নার রেসিপির সমাহার নিয়ে আপনার জন্য আরেকটি জনপ্রিয় কুকিং অ্যাপ হতে পারে ‘ইয়ামলি’। বিশ্বের প্রায় সব অঞ্চলের খাবারের রেসিপি আছে এখানে। ভাবলে অবাক হবেন, প্রায় ১০ লাখের মতো রেসিপি আছে এই অ্যাপে। ফলে যেকোনো ধরনের রান্নার রেসিপিই পাবেন নিমেষেই। পাশাপাশি কর্মব্যস্ত �জীবনকে সহজ করতে আছে স্মার্ট মিল প্ল্যানিং অপশন। পেইড ইউজারদের জন্য আছে সাধারণ খাবারকে অসাধারণ করে ফেলার কিছু সহজ উপায়। ইয়ামলির মাধ্যমে এখানকার পছন্দের রেসিপি এবং বিভিন্ন ওয়েবসাইটের রেসিপি বুকমার্ক করে তৈরি করতে পারবেন নিজের একটি ডিজিটাল কুক বুক।
বেটার বাটার
ভারতীয় তথা সাবকন্টিনেন্টাল ফুড যাঁরা পছন্দ করেন এবং এই রান্না যাঁরা আয়ত্তে আনতে চান, তাঁদের জন্য বেশ উপকারী একটি অ্যাপ ‘বেটার বাটার’। ভারতের বিভিন্ন প্রদেশের হাজারো খাবারের রেসিপি আছে এই অ্যাপে। হিন্দি, ইংরেজি, বাংলা, গুজরাটি, মারাঠি, তামিল ও তেলেগু ভাষায় ভারতীয় উপমহাদেশের দেড় লাখ রেসিপি এবং ২৭ হাজার রান্নার ভিডিও আছে অ্যাপটিতে। এ ছাড়া আছে বিশ্বের খ্যাতনামা শেফদের অজস্র রেসিপি। সোশ্যাল কুকিং অ্যাপসের মতোই এখানে সাধারণ একজন রান্নাপ্রেমিক মানুষও তাঁর রেসিপিটি শেয়ার করতে পারেন। ১৩ মেগাবাইট সাইজের অ্যাপটির গুগল প্লে-স্টোর রেটিং ৪.৪।