What's new
Nirjonmela Desi Forum

Talk about the things that matter to you! Wanting to join the rest of our members? Feel free to sign up today and gain full access!

এপ্রিল ফুল বা এপ্রিলের বোকা! (1 Viewer)

এপ্রিল ফুলের এ ব্যাখ্যাটি দিয়েছেন বোস্টন বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসের প্রফেসর জোসেফ বসকিন। তিনি বলেন, এ প্রথাটির শুরু হয় রোমান সম্রাট কনস্ট্যান্টাইনের (২৮৮-৩৩৭ খৃঃ) শাসনামলে। হাসি-ঠাট্টা নিয়ে মেতে থাকে এমন একদল বোকা গোপাল ভাঁড় সম্রাটকে কৌতুক করে বলে, তারা রাজার চেয়ে ভালভাবে দেশ চালাতে পারবে। রাজা মহোদয় বেশ পুলকিত হ'লেন। রাজা গোপাল ভাঁড়দের সর্দার কুগেলকে একদিনের জন্য বাদশাহ বানিয়ে ক্ষমতা ছেড়ে দিলেন। আর কুগেল সুযোগটাকে কাজে লাগিয়ে রাজ্যময় আইন জারি করে দিল যে, প্রতি বছরের এ দিনে সবাই মিলে তামাশা করবে। প্রফেসর বসকিন আরো বলেন, প্রাচীন ঐ সময়ের মারাত্মক দিনগুলোতে রাজাদের দরবারে কিন্তু বোকারূপীরাই ছিল প্রকৃত জ্ঞানী। তারা মজা বা হাসি-ঠাট্টার মাধ্যমে অনেক কাজ কৌশলে হাছিল করে নিত বা জ্ঞানের কথা রসালোভাবে চারদিকে ছড়িয়ে দিত। ১৯৮৩ সালে বার্তা সংস্থা এপি পরিবেশিত বসকিনের এ ব্যাখ্যাটি অনেক কাগজে নিবন্ধাকারে প্রকাশিত হয়। বসকিন মূলতঃ আগের সব ব্যাখ্যাকে উড়িয়ে দিয়েছেন। আর্টিকেলটি ছাপানোর আগে এপি দুই সপ্তাহ ধরে ভেবেছে তারাই এপ্রিল ফুল বোকামির শিকার হচ্ছে না তো!
পাশ্চাত্যের বিভিন্ন সংস্কৃতিতে কাউকে বিভিন্নভাবে বোকা বানানোর প্রথা চালু আছে। রোমানদের হিলারিয়া উৎসবও এর অন্যতম। তারা মার্চের ২৫ তারিখে আট্রিসের পুনরুত্থান নিয়ে এ দিনে হালকামি করত, ইহুদীরা করত পুরিম উপলক্ষে। হিন্দুরাও হোলি উৎসব এ দিনের আশেপাশে করে থাকে।
অন্যান্য দিবসের মতো এপ্রিল ফুল দিবসটির উৎপত্তি পাশ্চাত্যে হ'লেও এর বিস্তৃতি এখন দেশে দেশে। পশ্চিমা সমাজে এ সংস্কৃতির চর্চা ব্যাপক। অত্যন্ত পরিতাপের বিষয়, নির্মম কৌতুকও করা হয়। যেমন, কারো পিতামাতা বা স্ত্রীর ও বন্ধুর মৃত্যুর সংবাদ পরিবেশন করে কৌতুক করা হয়। সাদা কাগজ খামে ভর্তি করে বা স্বাক্ষর ছাড়া শূন্য চেক বন্ধুর কাছে পাঠিয়েও কৌতুক করা হয়। এপ্রিল ফুল উৎসব আজ মুসলিমদের জীবনেও প্রবেশ করেছে। অথচ এর উৎসব মূলতঃ মুসলিমদের বিরুদ্ধে স্পেনের মাটিতে খৃষ্টানদের প্রতারণাপূর্ণ বিজয়ের ইতিহাস। কেননা পয়লা এপ্রিলের অন্য সব ইতিহাস ১৪৯২ সালের পরে। আর ঈসা (আঃ) সম্পর্কিত ঘটনার ভিত্তি খুবই দুর্বল। প্রকৃতপক্ষে, ইতিহাসের অলীক মারপ্যাঁচে এ পৃথিবীর মুসলিমদেরকে এপ্রিল ফুলের মাধ্যমে বোকা বানানোর প্রচেষ্টা গ্রহণ করতে গিয়ে মূলতঃ তারাই বোকা বনে গেছে।
 
মুসলিমদের বোকা বানানোর এ দিনটিকে স্মরণীয় করতে আসল ঘটনা বেমালুম চাপা দিয়ে ১৫০০ সালের ১লা এপ্রিল থেকে সমগ্র খৃষ্টান জগতে এ দিনটিকে হাসি, ঠাট্টা এবং মিথ্যা প্রেম দেয়া-নেয়ার দিন হিসাবে আনুষ্ঠানিকভাবে পালন করে আসছে। আজ অবধি ইংল্যান্ড, আমেরিকাসহ সমগ্র বিশেব বোকা বানানোর এই দিবস পালিত হয়ে আসছে। এ দিবস উপলক্ষে বিভিন্ন রকমের 'এপ্রিল ফুলস্ ডে' সম্বন্ধীয় বিশেষ কার্ড ও নিমন্ত্রণপত্র বের হয় পশ্চিমা দেশগুলোতে। খরচ করা হয় হাযার হাযার ডলার। পশ্চিমা দেশের মতো আমাদের দেশেও এপ্রিল ফুলের প্রচলন আছে। শহর কিংবা গ্রামে সব জায়গাতেই এ দিনে বন্ধু-বান্ধব ও আত্মীয়-স্বজনের মধ্যে অনেক ঠাট্টা-মসকরা এবং হৃদয়গ্রাহী রসিকতা চলে।
অত্যাচারী রাজা রডারিকের দুঃশাসনে অতিষ্ঠ জনগণকে মুক্তি দেয়ার জন্য বীর মুজাহিদ তারিক বিন যিয়াদ স্পেনে যে ইসলামী শাসনের সূত্রপাত করেছিলেন তার সুফল ভোগ করেছিল স্পেনবাসী দীর্ঘ ৮০০ বছর। স্পেনের ইতিহাসে এ স্বর্ণালী সময়ের সাক্ষী হয়ে আজও দাঁড়িয়ে আছে গ্রানাডা, আল-হামরা, কর্ডোভা, সেভিজা, টলেডো। কিন্তু আফসোস! বিলাসবসনে মত্ত হয়ে মুসলিমরা ইসলাম থেকে সরে দাঁড়ানোর ফলে তাদের জীবনে সীমাহীন দুঃখই কেবল নেমে আসেনি, তাদের অস্তিত্ব পর্যন্ত বিলীন হয়ে গেছে স্পেনের মাটি থেকে। ১৯৯৩ সালের ১ এপ্রিল গ্রানাডা ট্র্যাজেডির (পশ্চিমা বিশেব স্পেন থেকে মুসলিম উৎখাতের) ৫০০ বছর পূর্তি (১৪৯২-১৯৯২) উপলক্ষে স্পেনে আড়ম্বরপূর্ণ এক সভায় মিলিত হয়েছিল বিশব খৃষ্ট সম্প্রদায়। সেখানে তারা নতুন করে শপথ গ্রহণ করে একচ্ছত্র খৃষ্টীয় বিশব প্রতিষ্ঠার। বিশবব্যাপী মুসলিম জাগরণ প্রতিহত করার জন্য গড়ে তোলে 'হলি মেরি ফান্ড'। আর এরই ধারাবাহিকতায় গোটা খৃষ্টান বিশব নানা অজুহাতে একের পর এক মুসলিম দেশগুলোতে আগ্রাসন চালাচ্ছে। অতএব সামনে ভয়াবহ দুর্দিন। এই দুর্দিনে এসব নব্য ইসাবেলাদের বিরুদ্ধে শান্তিকামী মুসলিম শক্তির চাই সুদৃঢ় ঐক্য। আর যদি তা করতে আমরা ব্যর্থ হই তবে অচিরেই গ্রানাডার মতো বধ্যভূমিতে পরিণত হবে গোটা মুসলিম বিশব।
ইতিহাসের হৃদয়বিদারক ঘটনা ভুলে না গেলে এপ্রিল ফুল কোনো মুসলিমকে আনন্দ দান করতে পারে না। এখন আমরা কি পয়লা এপ্রিল হাসি-আনন্দের সাথে 'এপ্রিল ফুল ডে' উদযাপন করব, নাকি ইউরোপের বুকে অসহায় মুসলিম নারী-পুরুষ, শিশুদের নৃশংস হত্যাকান্ডের স্মরণে দুঃখ অনুভব করব, মুসলিম ভাই-বোনেরা ভেবে দেখবেন কি?
 
প্রসঙ্গতঃ উল্লেখ্য, ইসলামী দৃষ্টিকোণে সবচেয়ে ঘৃণিত হচ্ছে হাসি-মসকরাচ্ছলে মিথ্যা বলা। অনেকে ধারণা করে যে হাসি-রসিকতায় মিথ্যা বলা বৈধ। আর এ থেকেই বিশ্ব ধোঁকা দিবস বা এপ্রিল ফুলের জন্ম। এটা ভুল ধারণা, এর কোন ভিত্তি নেই ইসলাম ধর্মে। রসিকতা কিংবা স্বাভাবিক অবস্থায় মিথ্যা সর্বাবস্থায় হারাম। ইবনু ওমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত, রাসূল (ছাঃ) বলেন, 'আমি রসিকতা করি ঠিক, তবে সত্য ব্যতীত কখনো মিথ্যা বলি না'। আবু হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, ছাহাবায়ে কেরাম একদা বলল, হে আল্লাহর রাসূল, আপনি তো আমাদের সঙ্গে রসিকতা করেন। তিনি বললেন, 'আমি সত্য ভিন্ন কিছু বলি না'।
পরিশেষে আমরা বলতে পারি যে, 'এপ্রিল ফুল ডে' উদযাপন তথা একে অন্যকে বোকা বানিয়ে, মিথ্যা বলে আনন্দ লাভ করার প্রচেষ্টা ইসলামের শিক্ষা ও আদর্শের পরিপন্থী। সুতরাং এ থেকে আমাদের বেঁচে থাকার চেষ্টা করতে হবে। আল্লাহ আমাদের তাওফীক্ব দান করুন-আমীন!
 

Users who are viewing this thread

Back
Top