What's new
Nirjonmela Desi Forum

Talk about the things that matter to you! Wanting to join the rest of our members? Feel free to sign up today and gain full access!

Collected ডিজিটাল পদ্মা নদীর মাঝি - ২০২১ (1 Viewer)

Laal

Exclusive Writer
Story Writer
Joined
Mar 4, 2018
Threads
104
Messages
3,604
Credits
23,794
Compass
Lollipop
Red Apple
ডিজিটাল পদ্মা নদীর মাঝি
সময়কাল - ২০২১

Padma-River-11.jpg

মাঝি কুবের ও তাহার পরিবার
পদ্মাপাড়ের এক অজপাড়াগ্রাম কেতুপুর। সেই গ্রামের মাঝি সমিতির নির্বাচিত যুগ্ন-সাধারন সম্পাদক কুবের। কুবের গরিবের মধ্যে গরীব আর ছোটলোকের মধ্যে ছোটলোক। ক্রেডিট কার্ড,ডেবিট কার্ড তো দূরের কথা একখানা ভিজিটিং কার্ডও তাহার নাই।
পুত্র লখা, কন্যা গোপী আর স্ত্রী মালাকে লইয়া কুবেরের পরিবার । হিন্দি সিরিয়াল ভক্ত মালা সর্বদা মনের মাধুরি মিশাইয়া কুবেরের সাথে ঝগড়া করিবার চেষ্টা করিতে থাকিত। তাই ঘরের অশান্তিতে কুবের পিক আওয়ার অফ পিক আওয়ার সর্বদা পদ্মার বুকে মাছ ধরিতে ব্যস্ত থাকিত।

কপিলার আগমন
এক বিকালে দুইখানা পুটিমাছ ধরিয়া কুবের ক্লান্ত হইয়া নদীর ধারে বসিয়া ল্যাপটপে এক কুয়েতি বোরকাওয়ালীর সাথে ফেসবুকে চ্যাট করিতেছিলো। কুয়েতি তাহাকে ভিডিও চ্যাটের আমন্ত্রন জানাইলেও মাছ ধরিয়া তাহার চুল অগোছালো ছিল বিধায় সে তাতে রাজী হইলো না। এমন সময় স্ক্রিনে ‘কপিলার’ স্ট্যাটাস ভাসিয়া উঠিল। কপিলা মালার ছোটবোন,সম্পর্কে কুবেরের শ্যালিকা।
Kopila shundhori লিখিয়াছে ‘too much flood in my village,lol, omg, too much water … lol … don’t know swimming ..omg … lol …lol.lol, pray for us…
কুবের কমেন্ট দিলো ‘tumi koi? @kopila
কপিলা উত্তরে লিখিল ‘I am in my father house, lol @ dulavai
কুবের আবার লিখিল ‘I m coming … wait for me @ kopila
কপিলা সেই কমেন্টে লাইক মারিল। কপিলাকে উদ্ধার করিতে কুবের দ্রুত শ্বশুরবাড়ি ছুটিয়া গেলো । যেন কপিলা ডুবন্ত লঞ্চ আর কুবের ‘উদ্ধারকারী জাহাজ হামযা’!
স্বামী ফেরত কপিলাকে তাহার বোনের বাড়ি পাঠাইতে কপিলার বাবা মায়ের মোটেও আপত্তি ছিলোনা। কারন এমন যুবতী নারীকে খোলা স্থানে রাখা মোটেও নিরাপদ নহে । শত শত পরিমল লোভী দৃষ্টিতে চারিদিকে ঘুরাঘুরি করিতেছে।
কপিলার নতুন স্থান হইলো কুবেরের সংসারে । কপিলা আসিয়াই সংসারের সকল দায়িত্ব গ্রহন করিল । মালার কাজ হইলো শুধু রাষ্ট্রপতির ন্যায়, শুধু খাওয়া দাওয়া আর ঘুম।

কুবের ও কপিলার রোমান্স
মালার সাথে বিবাহ হওয়ার পর হইতেই কপিলার প্রতি কুবেরের দুর্নিবার আকর্ষণ। কপিলা ফেসবুকে কোন ছবি পোস্ট করিলে কুবের কোপাইয়া কমেন্ট করিত ‘how cute’…’so sweet’….’khub shundor’…..’tomake angeler moto lagche
অবশ্য কুবেরের বিবাহের সময় কপিলা নিতান্তই কিশোরী ছিল। তখনকার প্রস্ফুটিত পুস্প আজ সুবাসিত ফুলে পরিনিত হইয়াছে । সেই ফুলের কড়া সুবাস প্রতিনিয়ত কুবেরের নাকে আসিয়া লাগিতেছে।
নারী জাতি ছলনাময়ী আর কপিলা তো ছলনাময়ীদের জীবন্ত কিংবদন্তী। কুবের মাঝির মনে ঢেউ তুলিতে সে সদাব্যস্ত রহিল। গৃহে মালার সামনে কপিলা নিতান্ত ভদ্রতা বজায় রাখিলেও তামাক দেওয়ার নাম করিয়া কুবেরের পিছু পিছু আসিয়া কপিলা বিভিন্ন প্রকার রঙ তামাশা করিবার চেষ্টা করিত। পাছে লোকে দেখিয়া ফেলে ভাবিয়া কুবের ধমক মারিয়া বলিত
- ‘বজ্জাতি করছোস যদি, নদীতে চুবান দিমু কপিলা, তুই কি আমারে ‘জনি সিন্স’পাইছস?
কপিলা - ‘আরে পুরুষ’ বলিয়া মুখ ঝামটা দিয়া চলিয়া আসিত।
রাতে মাছ ধরিতে ধরিতে কুবের কপিলার সাথে সারা রাত চ্যাট করিতো। চ্যাট করিতে করিতে কপিলা প্রায়ই কুবেরের প্রতি অশ্লীল ইঙ্গিত করিয়া বসিতো, আর উত্তরে কুবের একখানা হাসির ইমো দিতো। কপিলা তৎক্ষণাৎ লিখিত ‘হাসলা যে মাঝি?’ কুবের কোন উত্তর দিতো না।
কুবেরের মোবাইলের ওয়ালপেপারে মালার ছবি বদলিয়া দ্রুত কপিলার ছবি স্থান করিয়া নিলো।

গোপীর অসুস্থতা ও হোটেলে রাত্রি যাপন
ভেজাল খাবারের প্রভাবে কুবের-কন্যা গোপীর হঠাৎ একদিন গ্যাস্ট্রিকের তীব্র প্রদাহ শুরু হইলো। প্রদাহ তীব্র হইতে থাকিলে কুবের গোপীকে ঢাকা লইয়া যাইবার ব্যবস্থা করিল। মালার অক্ষমতার কারণে কুবেরের সঙ্গী হইলো কপিলা। আরেকজন তাহাদের সঙ্গী হইলো, তাহার নাম ‘রাশু’।
সম্পর্কে সে গোপীর বয়ফ্রেন্ড। গার্লফ্রন্ডের এমন বিপদে সে কি পাশে থাকিবে না? গোপী-রাশুর সম্পর্ক কুবের টের পাইলেও কিছু বলিতো না। যত যাই হোক পাত্র হিসাবে রাশু হাজারে এক…
ঢাকার ডাক্তার গোপীকে দেখিয়া উদাস হইয়া বলিলেন ‘রোগীর অবস্থা তো আশংকাজনক’। এখনি তাকে I.C.U তে ভর্তি করিতে হইবে। ইহা শুনিয়া রাশু ‘ইয়ে কেসি কাসুটি জিন্দেগি কি’ বলিয়া মাটিতে লুটিয়া পড়িল!
ডাক্তারের পরামর্শে তাহার নিজস্ব ক্লিনিকের I.C.U তে গোপীকে ভর্তি করিয়া কুবের,কপিলা ও রাশু ওয়ান স্টার মার্কা এক হোটেলের দুই রুম ভাড়া করিল । কুবের-কপিলা এক রুমে ও রাশু অন্য রুমে থাকিবার ব্যাবস্থা হইলো। ঘুমানোর পূর্বে রাশু আসিয়া তাহার ল্যাপটপ খানা রাখিবার নাম করিয়া কুবের-কপিলার রুমে বিভিন্ন যন্ত্রপাতি রাখিয়া গেলো ।
সেইরাত্রে কপিলার মায়াবি আমন্ত্রনে কুবের মুহূর্তেই জনি সিন্স রুপ ধারণ করিল। ‘জ্বলে উঠুন আপন শক্তিতে’ উদ্বুদ্ধ হইয়া আংরা হয়ে জ্বলিতে থাকা আগুন খোলা বারুদের সংস্পর্শে আসিয়া তীব্র ভাবে জ্বলিয়া উঠিল। বাকি সব ঘটনা নীরবে ঘটিয়া গেলো ... কেহ কিছু টের পাইলোনা।
পরদিন বিকালে গোপীকে ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ সম্পূর্ণ সুস্থ ঘোষণা করিল। দুইখানা এন্টাসিড ট্যাবলেট খাওয়াইয়া ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ লাখখানেক টাকার বিল আবদার করিলো। বিল দেখিয়া কুবের পাঁচ মিনিটের ভেতর সাতবার অজ্ঞ্যান হইয়া গেলো। অগত্যা কপিলা তাহার স্বর্ণালঙ্কার জমা রাখিয়া কুবেরকে সেই যাত্রায় রক্ষা করিল।
রোগী সুস্থ হওয়া সত্বেও গোটা পরিবার সেইবার কাঁদিতে কাঁদিতে ক্লিনিক হইতে প্রস্থান করিয়া গ্রামে ফিরিয়া আসিল ।
দু এক সপ্তাহের ভেতরেই কপিলার স্বামী আসিয়া কপিলার মান ভাঙ্গাইয়া লইয়া গেলো । শুরু হইলো কুবেরের বিরহের দিন।

হোসেন মিয়ার ময়নাদ্বীপ আবাসন প্রকল্প
একদিন কেতুপুরে আসিয়া হাজির হইলো কোট-টাই পরা এক ব্যাক্তি। নাম তাহার হোসেন মিয়া। ‘ময়নাদ্বীপ আবাসন প্রকল্প’ নামক এক প্রকল্পের মালিক সে। তাহার আগমনের উদ্দেশ্য, কেতুপুরের বাসিন্দাদেরকে সে কম মুল্যে প্লট কিনিয়া দিবে। এই উদ্যশ্যে হোসেন মিয়া তাহার প্রকল্পের বাহারি বিজ্ঞাপন চালাইতে লাগিল। যেমনঃ**‘রাজউক অনুমোদিত ঢাকার সেরা আবাসন প্রকল্প - ‘ময়নাদ্বীপ আবাসন প্রকল্প’। মতিঝিল হইতে বিমানপথে মাত্র ২০ মিনিটের দূরত্বে পদ্মার চরে গড়ে উঠছে ঢাকার সর্বাধুনিক আবাসন প্রকল্প! ময়নাদ্বিপে থাকা মানে ঢাকা সিটিতেই থাকা!'**
হোসেন মিয়া প্লট বেচিতে পারিল না ঠিকই তবে কেতুপুরে চেম্বার অফ কমার্স নির্বাচন করিয়া বিপুল ভোটে সভাপতি নির্বাচিত হইলো। বিভিন্ন বিপদে এখন লোকে তাহার কাছে পরামর্শ করিতে আসে।

গোপীর বিবাহ
গোপীর বিবাহ উপলক্ষে কপিলা সপ্তাহ-দশ দিনের জন্য বোনের বাড়িতে আসিল। গর্ভে তাহার আগত সন্তান।
কুবেরের আশংকা ছিল গোপী বিবাহ করিতে অস্বীকৃতি জানাইবে, কিন্তু আদর্শ প্রেমিকার ন্যায় গোপী হাসিতে হাসিতে বিবাহ করিয়া ফেলিল। কুবেরের বুক হইতে যেন পাথর নামিয়া গেলো।
বিবাহের পরদিন কুবের বসিয়া বসিয়া বিবাহ অনুষ্ঠানের সকল ছবি আপলোড করিতে ছিলো। এমন সময় রাসু তাহাকে একখানা ভিডিওতে ট্যাগ করিল। সাথে লিখিল ‘সেদিন বোরে’! ভিডিও দেখিয়া কুবেরের চক্ষু ছানাবড়া!! ঢাকার হোটেলে কুবের ও কপিলার অন্তরঙ্গ মুহুরত রাসু গোপনে ধারণ করিয়া ফেসবুকে প্রকাশ করিয়া দিয়াছে। ভিডিও দেখিয়া কুবেরের হৃদকম্পন বন্ধ হইয়া গেলো, সে তৎক্ষণাৎ ভিডিওতে কমেন্ট দিল ‘অরে লুইচ্ছার লুইচ্ছা, তোর লগে মাইয়া বিয়া না দিয়া আমি উচিত কামই করছি’! সেই ভিডিও কপিলারও হৃদকম্পন বন্ধ করিয়া দিল।

অবশেষে
সব শুনিয়া হোসেন মিয়া বলিলো ‘একবার যখন ভিডিও প্রকাশ হইয়াছে তখন কোন ভাবেই ইহাকে আটকাইয়া রাখা সম্ভব নহে, মোবাইলের মাধ্যমে দ্রুত এই ভিডিও সারা দেশে ছড়াইয়া পড়িবে ।
তাই হোসেন মিয়া কুবেরকে পরামর্শ দিল ‘চলো বহুদূর’! কম মুল্যে ৯৯৯৯ কিস্তিতে ময়নাদ্বিপে প্লট কিনিয়া লওয়ার। নিরুপায় কুবের প্রথম ব্যাক্তি হিসেবে রাজী হইয়া গেলো ।
সে রাত্রেই কুবের ময়নাদ্বিপে যাওয়ার প্রস্তুতি লহিলো। কপিলা তাহার কোন গতি না দেখিয়া কুবেরকে বলিল ‘আমারে নিবা মাঝি লগে?’
কুবের প্রথমে বলিল 'তোমারে না নিয়া উপায় আছে? তোমার লাইগাই আইজ আমার এই দশা...' পরক্ষনেই কপিলার গর্ভের সন্তানের দিকে ইঙ্গিত করিয়া বলিল, ‘কিন্তু ... তোর পেটে...’
কপিলা মুচকি হাসিয়া বলিলো ... ‘আরে মাঝি, বুঝলানা... মুরগী তোমার, ডিমও তোমার!’
অবশেষে দুইজনে মিলিয়া যাত্রা করিলো ময়নাদ্বীপের উদ্দ্যশ্যে...
 
নয়া লেখক পাওয়া গেল, এমন হলে মজাই মজা।
 
দারুন মজা পেলাম মামা। আরো এরকম লেখা চাই।
 
ডিজিটাল পদ্মা নদীর মাঝি বলে কথা। যা আশা করেছিলাম তার চেয়ে বেশি। চালিয়ে যান
 
হেভি মজা পাইলাম। জোশ লেখা। আরও চাই এমন।
 

Users who are viewing this thread

Back
Top