What's new
Nirjonmela Desi Forum

Talk about the things that matter to you! Wanting to join the rest of our members? Feel free to sign up today and gain full access!

ভুল by avi5774(সম্পূর্ণ উপন্যাস) (1 Viewer)

[HIDE]

দলটা ধিরে ধিরে মিলিয়ে গেলো। পিয়ালের আওয়াজে গম গম করছে বাড়ি।
আমি শব্দের উৎসের সন্ধানে আস্তে আস্তে পৌছে গেলাম গন্তব্যে। দরজা ঠেললেই পিয়াল কে দেখতে পাবো।
মুখোমুখি হোলাম তুলির। সেই ঘরে তুলিও রয়েছে। হাতে একটা বিদেশি মেয়েদের ম্যাগাজিন, সম্ভবত রুপ চর্চার। নতুন জীবন শুরুর প্রস্তুতি চলছে।
-তুমি? তুমি এখানে কেন?
-আমি পিয়াল কে দেখতে এসেছি। তোমাকে না।
-এ ভাবে চোরের মতন? কেউ তো খবর দেয়নি?
পিয়াল ফুটবলে লাথি মারা থামিয়ে আমাকে আর তুলিকে দেখছে। আমি ওর দিকে এগিয়ে গেলাম। তুলি বলে উঠলো। ‘দাড়াও ও সুস্থ না, তোমাকে বলা হয়েছে আগেই’
-ও সুস্থ কি অসুস্থ সেটা তো আমি দেখতে পাচ্ছি। কোর্ট থেকে তো বলেইছে যে আমার দেখার অধিকার আছে।
-সেটা এভাবে চোরের মতন না।
-চোরের মতন?
-না তো কি?
- কি বলছো তুমি তুলি?
-আমাকে তুমি নাম ধরে ডাকবে না। সেই অধিকার তোমার নেই। আর শুনে রাখো আমরা কাগজ হাতে পেয়ে গেছি। গতকালই।
-আমিতো পাইনি।
-সেটা তো আমি বলতে পারবো না।
-তুলি আমি তো তোমাকে আটকাইনি, শুধু পিয়াল কে দেখতে চেয়েছি। সেই অধিকার তো কোর্ট আমাকে দিয়েছেই কিন্তু এছারাও তো আমার একটা অধিকার আছে।
-চুপ করো তুমি? অধিকার ফলাতে এসোনা। তুলি দুহাত দিয়ে মুখ ঢাকল।
পিয়াল দৌড়ে তুলির কাছে চলে গেলো। ‘মা মা কাঁদছো কেন? বাপিটা সত্যি পঁচা, খালি তোমাকে কাঁদায় তাই না? যাও আমি গেট আউট করে দিচ্ছি। গেট আউট গেট আউট গেট আউট।’
ঝাপ্সা চোখে বেরিয়ে আসছি। পা টলমল করছে। মাথা ঘুরছে। মাথা ঘুরে ওই সর্পিল রাস্তায় পরে গেলাম জ্ঞ্যান হারিয়ে।
জ্ঞ্যান ফিরলো যখন তখন দেখি সরকারি হাস্পাতালের বেডে। ভালো করে খেয়াল করে দেখি হাতে হাতকড়া।
হাল্কা মনে পরছে, পিয়ালের গলা তন্দ্রার মধ্যেই পাচ্ছিলাম ‘মা দেখো বাবা দুষ্টূ করেছে বলে পুলিশ ধরে নিয়ে যাচ্ছে, এবার মজা টের পাবে, আর তোমাকে কাঁদাবে না’ সত্যি কি শুনেছিলাম?
কয়েকদিন পরে জামিন পেয়ে বাড়ি যখন ফিরলাম, দেখলাম অফিস থেকে চিঠি এসেছে। চুরির দায়ে অভিযুক্ত অভিষেক মুখার্জি বহিষ্কৃত। সল্টলেকের গুপ্তা ম্যানশানে চুরি করতে গিয়ে হাতে নাতে ধরা পরা অপরাধি। বহুমুল্য দ্রব্য উদ্ধার হয়েছে আমার থেকে।
কোন শর্তেই বেরোনোর ইচ্ছে ছিলোনা আমার, ভেবেছিলাম ভালোই তো এখানেই থেকে যায়। দাগি অপরাধিদের সাথে থেকে যদি কিছু সেখা যায় এই লাইনে।
কিন্তু বাবা কিভাবে খবর পেয়ে কাকে ফোনটোন করে আমাকে ছারিয়ে দিলো। আমার সাথে ফোনে কথা হোলো বাবার। আমি সব খুলে বললাম।
আমাকে উপদেশ দিলেন এইভাবে নিজের জীবন শেষ না করতে। জীবন অনেক পরিক্ষা নেবে আমার থেকে।
আমি কোথায় শেষ করছি। কিন্তু এখন কি করবো। লড়তে পারি। সুনাম চাকরি অনায়াসে ফিরে পেতে পারি। রাজুদের শিল্পর নামে ফোলানো বেলুনটা ফট করে ফাটিয়ে দিতে পারি। কারন রাজ্যের দেশের অনেক দণ্ডমুণ্ডের অধিকর্তাদের আমি কাকু বা জেঠু ডাকি।
কিন্তু কেন করবো। আমি তো শাস্তি পেতে চাই। আমার উচিৎ নির্বাসনে যাওয়া।

তাই আসবাবপত্র সব পরিস্কার করে চাদর দিয়ে ঢেকে, শেষ বারের মতন ইন্টারনেট খুললাম। চেন আমার পুরানো চিনা বন্ধু ওর সাথে যোগাযোগ করলাম।
ভিসা পেতে কয়েকদিন সময় লাগলো।
এই সুযোগে ঘরের থেকে পিয়াল আর তুলির সমস্ত স্মৃতি মুছে ফেললাম। রাগে নয়। যাতে করে এই স্মৃতি ওদের ভবিষ্যতের কাঁটা হয়ে না দাঁড়ায়।
সেই উকিলের সাথে দেখা হোলো। অনেক ক্ষমা চাইলো সব কিছুর জন্যে। ঠাড়েঠোড়ে তুলি আর রাজুর রেজিস্ট্রির দায়িত্বও যে ও পেয়েছে সেটা জানিয়ে দিলো।
আমি এখন এসব কিছুর উর্ধ্বে। আমি স্বেচ্ছা নির্বাসনে চললাম। বাবাকে বলেছি খোঁজ কোরোনা। হয়তো এ জিবনে আর দেখা হবেনা। আর যদি হয় সেটা আমাদের পরম আনন্দের দিন হবে। সেদিন তুমি তোমার বিশুদ্ধ ছেলেকে পাবে। সেদিন হয়তো আমাদের জিবনে আর ফিরে আসবেনা। তবুও এক সন্তানহারা পিতা কি আরেক পিতাকে দুঃখ দিতে পারে।

 সমাপ্ত


[/HIDE]
 
গল্পটা আগেও একবার পড়েছি। আবার পড়তে ভালই লাগছে।
 

Users who are viewing this thread

Back
Top