পৃথিবীজুড়েই জনপ্রিয় সয়াবিন একটি উদ্ভিজ্জ প্রোটিনের আধার। সয়াবিন দিয়ে তৈরি হয় নানা ধরনের পণ্য। শরীরের পেশি গঠনে যে ৯টি অত্যাবশ্যকীয় অ্যামিনো অ্যাসিড প্রয়োজন হয়, এর সব কটিই আছে দারুণ পুষ্টিকর সয়াবিনে।
স্বাস্থ্যকর উপাদানের জন্য সয়াবিন বা সয়া পৃথিবীজুড়েই জনপ্রিয় খাবার। যদিও বলা হয় সয়াবিনের আদি জন্ম পূর্ব এশিয়ায়। তবে এখন দক্ষিণ ও উত্তর আমেরিকাতেও জন্মায়। মজার বিষয় হলো, সয়াবিন খাওয়ার ধরন কিন্তু একেক দেশে একেক ধরন। এশিয়ায় বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই সয়াবিন আস্ত খাওয়া হয়। কিন্তু বাইরের দেশগুলোতে সয়া অনেক বেশি প্রসেস করেই খাওয়ার প্রচলন দেখা যায়। সয়াবিনের আরেকটি বৈশিষ্ট্য হলো এটি থেকে শুধু এক ধরনের পণ্য হয় না। বরং ময়দা, সয়া প্রোটিন, টফু, সয়া দুধ, সয়া সস, সয়াবিন তেলসহ আরও অনেক রকম পণ্য উৎপন্ন হয়।
সয়াবিনের রকম
নানা ধরনের সয়াবিন, ছবি: উইকিপিডিয়া
সয়াবিন হয় তিন রকম, যা ভিন্ন ভিন্ন পদ্ধতিতে অনেকে খেয়ে থাকেন। সবুজ রঙের সয়াবিন সেদ্ধ করে শুধু খাওয়া যায়। আবার সালাদ, তরকারি বা স্যুপে দিয়েও অনেকে খেতে পছন্দ করেন। হলুদ সয়াবিন থকে সয়া দুধ, টফু বা বেকিংয়ের জন্য ময়দা তৈরি করা হয়ে থাকে। আর একধরনের সয়াবিন হয় কালো রঙের। এটি এশিয়ায় ট্র্যাডিশনাল খাবারে ব্যবহার করা হয়।
ভেজিটারিয়ানদের প্রোটিন
নিরামিষাশীদের জন্য সয়াবিন কিন্তু প্রোটিন। তার মানে সয়া থেকে মাছ, মাংস ও ডিমের প্রোটিন পাওয়া যায়। এ ছাড়া সয়াবিনে থাকে ৯ ধরনের অ্যামিনো অ্যাসিড, যা পেশি ও হাড়ের শক্তি বাড়ায়। আমাদের শরীর নিজ থেকেই এই উপাদানগুলো তৈরি করতে পারে না। তাই যারা আমিষাশী তারা মাছ, মাংস ও ডিম থেকে এই চাহিদা পূরণ করে থাকেন। এ ছাড়া শরীরের পেশি গঠনে যে ৯টি অত্যাবশ্যকীয় অ্যামিনো অ্যাসিড প্রয়োজন হয় এর সব কটিই আছে সয়াবিনে।
হার্টের জন্য উপকারী
সয়াবিনে থাকা মোট ফ্যাটের শুধু ১০ থেকে ১৫ শতাংশ ফ্যাট স্যাচুরেটেড। অন্যদিকে গরু বা খাসির মাংসে এই মাত্রা অনেক বেশি; যা হার্টের অনেক বেশি ক্ষতি করে থাকে। তাই বলা যায় সয়াবিনের তৈরি টফু মাংসের বিভিন্ন খাবার থেকে হার্টের জন্য অনেক বেশি উপকারী।
টোফু
জিরো কোলেস্টেরল
অন্য যেকোনো সবজির মতো সয়াবিনও প্রাকৃতিকভাবে কোলেস্টেরলমুক্ত। নানা গবেষণায় দেখা গেছে, সয়াবিন শরীরের ৪ থেকে ৬ শতাংশ খারাপ কোলেস্টেরল কমাতে সাহায্য করে। তাই বোঝাই যাচ্ছে সয়াবিন হতে পারে একটি স্বাস্থ্যকর পছন্দ।
ফাইবারে পরিপূর্ণ
এক কাপ সয়াবিনে ১০ গ্রাম ফাইবার আছে। যেখানে সমপরিমাণ মাছ, মাংস ও ডিম ফাইবারের পরিমাণ খুবই কম। এ ছাড়া সয়াবিন আরও যে উপকার করে তা হলো অন্য খাবার থেকে যে অতিরিক্ত কোলেস্টেরল পাই, তা কমাতে সাহায্য করে।
সয়া মিল্কছবি: পেকজেলসডটকম
অনেক বেশি পটাশিয়াম
এক কাপ সয়াবিনে থাকে ৮৮৬ মিলিগ্রাম পটাশিয়াম। একটি মাঝারি আকারের কলার তুলনায় এই পরিমাণটি দ্বিগুণ। এ ছাড়া শরীরের সারা দিনের চাহিদার এক-তৃতীয়াংশ পূরণ করতে পারে এই এক কাপ সয়াবিন।
ব্লাডপ্রেশার কমায়
ব্লাডপ্রেশার কমাতে আপনার প্রতিদিনের খাবারের তালিকায় যুক্ত করা যেতে পারে সয়াবিন; যা স্ট্রোকের আশঙ্কা ১৪ শতাংশ কমায়।
হাড়ের জন্য উপকারী
পুরুষদের থেকে নারীরা হাড়ের সমস্যায় ভোগেন অনেক বেশি। চিকিৎসকেরা হাড়ের চিকিৎসায় সয়া দিয়ে তৈরি খাবারগুলো খেতে পরামর্শ দিয়ে থাকেন। এমনকি অনেক গবেষণায় দেখা গেছে, নারীদের শরীরের হাড় মজবুত করতে দারুণভাবে কাজ করে সয়াবিন।
সয়াবিন তেল, ছবি: উইকিপিডিয়া
ব্রেস্ট ক্যানসার প্রতিরোধের জন্য
শিশু বয়সে বা টিনএজার থাকতে অনেক বেশি সয়াবিন খেলে তা নারীদের ব্রেস্ট ক্যানসারের ঝুঁকি কমায় প্রায় অর্ধেক। এমনকি প্রাপ্তবয়স্করাও যদি প্রচুর পরিমাণে সয়াবিন খান তাদের ব্রেস্ট ক্যানসারের ঝুঁকি কমবে। বিজ্ঞানীরা বলেন, সয়াতে থাকা ইসোফ্লাভন ও ফিটনউট্রিয়েন্ট ক্যানসার টিউমার কমাতে সাহায্য করে।
প্রোস্টেট ক্যানসার
সারা পৃথিবীতে দ্বিতীয় সাধারণ একটি ক্যানসার হলো প্রোস্টেট ক্যানসার। এশিয়ার যে দেশগুলোতে বেশি সয়াবিন খাওয়া হয় তারা এই ক্যানসারে কম ভোগেন। বিজ্ঞানীরা বলেন, সয়াবিনের উপকারী উপাদান টিউমার গ্রোথ কমাতে সাহায্য করে।
তথ্যসূত্র: ওয়েবএমডি, মেডিকেল নিউজটুডে
স্বাস্থ্যকর উপাদানের জন্য সয়াবিন বা সয়া পৃথিবীজুড়েই জনপ্রিয় খাবার। যদিও বলা হয় সয়াবিনের আদি জন্ম পূর্ব এশিয়ায়। তবে এখন দক্ষিণ ও উত্তর আমেরিকাতেও জন্মায়। মজার বিষয় হলো, সয়াবিন খাওয়ার ধরন কিন্তু একেক দেশে একেক ধরন। এশিয়ায় বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই সয়াবিন আস্ত খাওয়া হয়। কিন্তু বাইরের দেশগুলোতে সয়া অনেক বেশি প্রসেস করেই খাওয়ার প্রচলন দেখা যায়। সয়াবিনের আরেকটি বৈশিষ্ট্য হলো এটি থেকে শুধু এক ধরনের পণ্য হয় না। বরং ময়দা, সয়া প্রোটিন, টফু, সয়া দুধ, সয়া সস, সয়াবিন তেলসহ আরও অনেক রকম পণ্য উৎপন্ন হয়।
সয়াবিনের রকম
নানা ধরনের সয়াবিন, ছবি: উইকিপিডিয়া
সয়াবিন হয় তিন রকম, যা ভিন্ন ভিন্ন পদ্ধতিতে অনেকে খেয়ে থাকেন। সবুজ রঙের সয়াবিন সেদ্ধ করে শুধু খাওয়া যায়। আবার সালাদ, তরকারি বা স্যুপে দিয়েও অনেকে খেতে পছন্দ করেন। হলুদ সয়াবিন থকে সয়া দুধ, টফু বা বেকিংয়ের জন্য ময়দা তৈরি করা হয়ে থাকে। আর একধরনের সয়াবিন হয় কালো রঙের। এটি এশিয়ায় ট্র্যাডিশনাল খাবারে ব্যবহার করা হয়।
ভেজিটারিয়ানদের প্রোটিন
নিরামিষাশীদের জন্য সয়াবিন কিন্তু প্রোটিন। তার মানে সয়া থেকে মাছ, মাংস ও ডিমের প্রোটিন পাওয়া যায়। এ ছাড়া সয়াবিনে থাকে ৯ ধরনের অ্যামিনো অ্যাসিড, যা পেশি ও হাড়ের শক্তি বাড়ায়। আমাদের শরীর নিজ থেকেই এই উপাদানগুলো তৈরি করতে পারে না। তাই যারা আমিষাশী তারা মাছ, মাংস ও ডিম থেকে এই চাহিদা পূরণ করে থাকেন। এ ছাড়া শরীরের পেশি গঠনে যে ৯টি অত্যাবশ্যকীয় অ্যামিনো অ্যাসিড প্রয়োজন হয় এর সব কটিই আছে সয়াবিনে।
হার্টের জন্য উপকারী
সয়াবিনে থাকা মোট ফ্যাটের শুধু ১০ থেকে ১৫ শতাংশ ফ্যাট স্যাচুরেটেড। অন্যদিকে গরু বা খাসির মাংসে এই মাত্রা অনেক বেশি; যা হার্টের অনেক বেশি ক্ষতি করে থাকে। তাই বলা যায় সয়াবিনের তৈরি টফু মাংসের বিভিন্ন খাবার থেকে হার্টের জন্য অনেক বেশি উপকারী।
টোফু
জিরো কোলেস্টেরল
অন্য যেকোনো সবজির মতো সয়াবিনও প্রাকৃতিকভাবে কোলেস্টেরলমুক্ত। নানা গবেষণায় দেখা গেছে, সয়াবিন শরীরের ৪ থেকে ৬ শতাংশ খারাপ কোলেস্টেরল কমাতে সাহায্য করে। তাই বোঝাই যাচ্ছে সয়াবিন হতে পারে একটি স্বাস্থ্যকর পছন্দ।
ফাইবারে পরিপূর্ণ
এক কাপ সয়াবিনে ১০ গ্রাম ফাইবার আছে। যেখানে সমপরিমাণ মাছ, মাংস ও ডিম ফাইবারের পরিমাণ খুবই কম। এ ছাড়া সয়াবিন আরও যে উপকার করে তা হলো অন্য খাবার থেকে যে অতিরিক্ত কোলেস্টেরল পাই, তা কমাতে সাহায্য করে।
সয়া মিল্কছবি: পেকজেলসডটকম
অনেক বেশি পটাশিয়াম
এক কাপ সয়াবিনে থাকে ৮৮৬ মিলিগ্রাম পটাশিয়াম। একটি মাঝারি আকারের কলার তুলনায় এই পরিমাণটি দ্বিগুণ। এ ছাড়া শরীরের সারা দিনের চাহিদার এক-তৃতীয়াংশ পূরণ করতে পারে এই এক কাপ সয়াবিন।
ব্লাডপ্রেশার কমায়
ব্লাডপ্রেশার কমাতে আপনার প্রতিদিনের খাবারের তালিকায় যুক্ত করা যেতে পারে সয়াবিন; যা স্ট্রোকের আশঙ্কা ১৪ শতাংশ কমায়।
হাড়ের জন্য উপকারী
পুরুষদের থেকে নারীরা হাড়ের সমস্যায় ভোগেন অনেক বেশি। চিকিৎসকেরা হাড়ের চিকিৎসায় সয়া দিয়ে তৈরি খাবারগুলো খেতে পরামর্শ দিয়ে থাকেন। এমনকি অনেক গবেষণায় দেখা গেছে, নারীদের শরীরের হাড় মজবুত করতে দারুণভাবে কাজ করে সয়াবিন।
সয়াবিন তেল, ছবি: উইকিপিডিয়া
ব্রেস্ট ক্যানসার প্রতিরোধের জন্য
শিশু বয়সে বা টিনএজার থাকতে অনেক বেশি সয়াবিন খেলে তা নারীদের ব্রেস্ট ক্যানসারের ঝুঁকি কমায় প্রায় অর্ধেক। এমনকি প্রাপ্তবয়স্করাও যদি প্রচুর পরিমাণে সয়াবিন খান তাদের ব্রেস্ট ক্যানসারের ঝুঁকি কমবে। বিজ্ঞানীরা বলেন, সয়াতে থাকা ইসোফ্লাভন ও ফিটনউট্রিয়েন্ট ক্যানসার টিউমার কমাতে সাহায্য করে।
প্রোস্টেট ক্যানসার
সারা পৃথিবীতে দ্বিতীয় সাধারণ একটি ক্যানসার হলো প্রোস্টেট ক্যানসার। এশিয়ার যে দেশগুলোতে বেশি সয়াবিন খাওয়া হয় তারা এই ক্যানসারে কম ভোগেন। বিজ্ঞানীরা বলেন, সয়াবিনের উপকারী উপাদান টিউমার গ্রোথ কমাতে সাহায্য করে।
তথ্যসূত্র: ওয়েবএমডি, মেডিকেল নিউজটুডে