আমাদের এখানে বরাবরের মতো সকাল ৭ঃ৩০ মিনিটে ঈদের জামাতের সময় নির্দ্ধারিত ছিলো। বড় কোনো ধরনের সমস্যা না হলে আমরা সব সময় নির্দ্ধারিত সময়েই ঈদের জামাত শুরু করি। না কিছু সময় আগে কিংবা পরে। একেবারে ছোটবেলা থেকেই দেখে আসছি এই বিষয়ে কখনো কোনো রকম ব্যত্যয় ঘটতে খুব একটা দেখিনি। সেক্ষেত্রে অমুক বিশিষ্ট জন আসতে আরো দুই মিনিট লাগবে ওনার জন্য দুই মিনিট অপেক্ষা করেন কিংবা আকাশের অবস্থা ভালো নয় পাঁচ মিনিট আগেই শুরু করে দিন এরকম কোনো তাড়াহুড়ো কিংবা কিছুটা বিলম্ব করা কোনোটাই আমাদের এখানে প্রচলিত নয়। ভোরে আবহাওয়া বেশ ভালো ছিলো। আকাশে কিছুটা মেঘের ঘনঘটা থাকলেও বেশ সুন্দর বাতাস ছিলো। ঈদগাহে মুস্ললীদের নামায আদায়ের জন্য বিশেষ বিছানার ব্যবস্থা করা ছিলো বলে সময় মতোই আমরা দুটো জায়নামায নিয়ে চারজনে ঈদগাহে গিয়ে জড়ো হয়েছিলাম। রোদমুক্ত আর বাতাসযুক্ত পরবেশ থাকায় নামায শুরু হবার আগে পর্যন্ত বেশ আরামদায়ক একটা পরিবেশে সময় পার করছিলাম। পাশেই মসজিদে মহিলাদের জন্য ঈদের নামাযের ব্যবস্থা ছিলো। যেহেতু বৃস্টির সম্ভাবনা থাকলেও সেটা তখন পর্যন্ত প্রবল ছিলো না সে জন্যই মহিলাদেরকে নামায আদায় করার জন্য বরাবরের মতো মসজিদটা আমরা ছেড়ে দিয়েছিলাম। যদিও গতো কুরবানী ঈদ সহ কয়েকটা ঈদের নামাজে বৃস্টির কারনে আমরা মহিলাদের ঈদের নামাজ পড়ার সুযোগ করে দিতে পারিনি। আমাদের পুরুষদের জন্যই তখন মসজিদে নামাযের ব্যবস্থা করতে হয়েছিলো। যাই হোক। নির্দ্ধারিত সময়ে তাকবিরে তাহরিমার ঠিক পর পরই প্রথমে হালকা চালে ও পরে রুকুতে যাবার আগেই মুশল ধারে বৃস্টি শুরু হয়ে যায়। ঠিক এক রাকাতের পরই আবার বৃস্টির ধমকটা বেশ কমে এসে ঠিক নামায শেষে বৃস্টি প্রায় সেরে যায়। যদিও পুরো খুৎবাতেই ঝিরি ঝিরি বৃস্টিতে ভিজে খুৎবা শুনেছিলাম। বৃস্টিতে ভিজে এবারের নামাজ আদায়টা আমার কাছে খুব ভালো লেগেছে। নামাযের পর পরই ছেলেকে বাড়িতে পাঠিয়ে দিয়ে খুৎবার পর পর্যন্ত মাঠেই ছিলাম। অনেক বন্ধুদের সাথে খুৎবা শেষে কোলাকুলি করে নামাজ শেষে আমাদের ঘনিষ্ঠ কয়েকজনের নির্দ্ধারিত জায়গায় আধা ঘন্টা মতো আড্ডা দিয়ে বাড়ি ফিরেছিলাম। ঐ আধাঘন্টা সময় সব সময়ই আমাদের জন্য খুব স্পেশাল হয়। কিন্তু এবছর এই সময়টা বেশ বিষাদে কেটেছে। এই আড্ডার অন্যতম সদস্য আমাদের এক বন্ধু কিছুদিন আগে মারা যাওয়াতে আড্ডাটা তার স্মৃতিচারণ করেই পার করেছি।