দুঃখ কম হলে হাসি দিয়ে আড়াল করা যায়্ দুঃখ বেশি হলে তাকে কোন ভাবেই লুকানো যায় না
আমার বাবার বেলায় ওনার মানসিকতা কোন পর্যায়ে আছে সেটা নির্ণয় করা বেশ কস্টসাধ্য ব্যাপার ছিলো। অনেক কস্টেও ওনি নিজেকে স্বাভাবিক রাখার যে দৃঢ়তা বা প্রত্যয় রাখতেন তা সচাররাচর কারো মাঝে দেখিনি। আমার বড় আপা যখন মারা যান তখন বাবা তার শিয়রে বসা ছিলেন। বড় মেয়েকে খুব আদর করতেন বাবা। অন্তিম মূহুর্তে স্নেহের কন্যার মুখের দিকে এক দৃস্টিতে তাকিয়েছিলেন। চোখ দিয়ে যেনো অসহায় বাবার অসহায়ত্ব ঝরে ঝরে পড়ছিলো। যখন সব শেষ হয়ে গেলো, সবাই কান্নায় ভেঙ্গে পড়েছে, চারিদিকে কান্নার মাতম চলছে বাবাকে দেখলাম একটা দীর্ঘ শ্বাস ত্যাগ করে চোখ দুটো বন্ধ করে নিলেন। বসে থাকা অবস্থায় ভর দেয়া লাঠিতে এক হাতের উপর অন্য হাতটি স্থাপন করে মাথাটা নুইয়ে আনলেন সেই হাত দুটির উপর ! এই অবস্থায় ছিলেন প্রায় মিনিট দুয়েক। এরপর সোজা হয়ে আরেকটি দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে স্বাভাবিক ভঙ্গিতে বললেন- যার যাবার কথা সে থেকে গেলো,আর যার থাকার কথা সে চলে গেলো ! বাবার চেহারাটা তখন শোকে একেবারে কালো হয়ে গিয়েছিলো। এটাই ছিলো আমাদের জন্য বাবার কস্ট বুঝার সব থেকে উত্তম মাধ্যম। বাবা যখন খুব বেশী কস্ট পেতেন তখন ওনার চেহারা বেশ কিছুটা কালো হয়ে যেতো। লেখক সাহিত্যিকরা যাকে মলিন চেহারা হিসাবে আখ্যা দিয়েছেন...
আজ আমার মনোকস্টের এটাও একটা কারন, আর কোনোদিন আমি আর বাবার সেই করুণ মুখটা দেখে বাবার কস্টের পরিমাপ করতে পারবো না...