What's new
Nirjonmela Desi Forum

Talk about the things that matter to you! Wanting to join the rest of our members? Feel free to sign up today and gain full access!

আসুন নির্জনে আড্ডা মারি-২০২০ (7 Viewers)

Status
Not open for further replies.
ফেস অ্যাপ
বিয়ে বাড়িতে এসেছি ৷ আরাম করে চেয়ারে বসে আছি ৷ হঠাৎ কিউট একটা বাচ্চা এসে উচ্চস্বরে বলল, “আব্বু, আমাকে টাকা দাও!"
বাচ্চাটার কথা শুনে আঁতকে উঠলাম ৷ চোখ কপালে তুলে বাচ্চা ছেলেটার দিকে তাকিয়ে রইলাম ৷ পেটের নাড়িভুঁড়ি কেমন কেমন করে যেন নড়ছিল?৷ হতবুদ্ধি আমি এদিক সেদিক তাকিয়ে দেখতে লাগলাম ৷ আর মনে মনে বললাম, “বাচ্চাটা কার হতে পারে? সত্যি সত্যি আমাকেই কি আব্বু বলে ডাকছে সে? বিয়েই করতে পারলাম না, এর আগে বাবা হলাম কেমনে?"
টাকা দিচ্ছিনা দেখে ছেলেটা আমার গায়ে মৃদ্যুভাবে আঘাত করছিল ৷ আর উ উ উ করে কান্না করছিল ৷ ছেলেটার কান্না দেখে একটা লোক আমার নিকট এসে বলল,
“ভাই, টাকা দিয়ে দেন, বিয়ে বাড়িতে এমনিতে গ্যাঞ্জাম তার উপর বাচ্চা ছেলের কান্না, সহ্য করা যায়না ভাই ৷ টাকাটা দিয়ে দেন!"
লোকটাকে কি জবাব দিব বুঝতেছিলাম না! এরমধ্যে একটা রুপবতী মেয়ে এলো ৷ তাকে কেন যেন চেনা চেনা লাগছিল? বাকা চোখে তাকিয়ে উত্তেজিত গলায় আমাকে বলল, “এই তুমি এখনো বাবুকে টাকাটা দাওইনি! কেমন মানুষ তুমি? শুধু শুধু আমার ছেলেটাকে কাঁদাচ্ছ!
মাথার উপর বাজ পড়লো বলে মনে হলো ৷ নিজেকে মানসিক রোগী মনে হলো ৷ ভাবলাম কবে পাবনা থেকে ছাড়া পেয়েছি? কবেই বা পাগল হয়েছিলাম? নাকি মেয়েটা আর ছেলেটা সহ পাগল?
মেয়েটাকে কিছু না বলে চেয়ার ছেড়ে বন্ধুর রুমে গেলাম ৷ কিন্তু একটু পরই দেখি সেই মেয়েটা এসে হাজির ৷ এসেই ক্ষ্যাপা বাঘিনীর মত রুপ নিয়ে চেঁচিয়ে বলতে লাগল,
“কিপ্টামী কবে দূর হবে তোমার? সব জায়গায় কিপ্টামা কিন্তু চলেনা বললাম ৷ তাড়াতাড়ি টাকা বের করতে বলছি বের করো!"
আমার হয়ে বন্ধু বলে উঠল, “আপু কি শুরু করছিস এগুলা?"
বন্ধুকে ধমক দিয়ে চুপ করিয়ে দিল মেয়েটি ৷ এরপর বলল, “তুই চুপ থাক! আমার স্বামীকে যা ইচ্ছা তাই বলব, তোর কি তাতে?
আমি বন্ধুর দিকে ভূত দেখার মত করে তাকিয়ে রইলাম, বন্ধুও আমার দিকে!
বাধ্য হয়ে পকেট থেকে ১০ টাকা বের করে দিলাম ৷ টাকা দেখে মেয়েটি যেভাবে চোখ বানিয়ে তাকিয়ে রইলো, দেখে মনে হলো এখনই আমাকে কাঁচা গিলে খাবে ৷ মানিব্যাগ থাবড়ি দিয়ে ১হাজার টাকার কচকচা নোট নিয়ে নিলো! এরপর ভেংচি কেটে চলে গেল!
বিকেলে খেতে দেওয়া হলো বন্ধুর ঘরে ৷ বন্ধুকে নিয়ে খাচ্ছিলাম ৷ তখন সেই মেয়েটা রুমে এসে আমাকে নরম স্বরে বলল, “এই তোমার না গরুর গোশত খাওয়া মানা? দাওতো গোশতগুলো দাও, তুমি মাছ দিয়ে খাও!"
এটা বলেই সে প্লেট থেকে সবগুলো গোশত তার প্লেটে নিয়ে নিলো ৷ আর আমার প্লেটে মাছের দুটা টুকরো দিলো!
মেয়েটার আচরণ দেখে আমার বন্ধু হা হয়ে গেল ৷ আর আমি হতভম্ব ও নির্বাক হয়ে প্লেটের মাছের দিকে তাকিয়ে রইলাম ৷ ভাবলাম বিয়ে খেতে তো আসিনি, ফেক বউয়ের জ্বালাতন সহ্য করতে আসছি ৷ এটা যে কোন গন্ডারের বউ? আল্লাহই ভাল জানেন! সেই ব্যক্তি এই পিসকে সহ্য করে কেমনে?
সন্ধ্যা পর মেয়েটা আমার হাত ধরে বরপক্ষের মেয়েদের আত্মীয়দের সাথে পরিচয় করিয়ে দিল ৷ বলল, “এটা আমার স্বামী, ৬ মাস হলো বিয়ে করেছি ৷ সে আমেরিকাতে ইঞ্জিনিয়ারিং কাজে ব্যস্ত থাকে ৷ আমার খালাত বোনের বিয়ে খেতে আসছে ছুটি নিয়ে!"
মেয়েটার চাপাবাজি শুনে মাথা ভনভন করছিল ৷ চরকির মত করে ঘুরছিল ৷ মনে হচ্ছিল আকাশে উড়ছি পাখা ছাড়া ৷ কখন যে আকাশ থেকে ঠাস করে পড়বো কে জানে?
পড়লাম, যখন মেয়েটি বলল,
“জানেন, তাকে ভালবেসে পালিয়ে বিয়ে করেছিলাম ৷ কিন্তু বাবা, মা শুরুতে মেনে নিতে চাইনি ৷ যখন তারা জানলো সে ইঞ্জিনিয়ার তখন আমাদের দুজনকে মেনে নিলো ৷ আমরা হানিমুন করেছিলাম সুইজারল্যান্ডে গিয়ে!"
এটা শোনা মাত্র বিষম খেলাম ৷ মেয়েটি আমার হাত ধরে নিয়ে গেল বন্ধুর রুমে ৷ পানি খেয়ে শান্ত হবার চেষ্টা করলাম ৷ এরপর গলা ঝেড়ে মেয়েটাকে ক্ষিপ্ত স্বরে বললাম, “এই মেয়ে তোমাকে বিয়ে করেছি কবে? সেই যে আবল তাবল বকছো থামার খবর নেই! কি শুরু করছো হুম?
তখনই একটা লোক এসে মেয়েটাকে বলল, “মায়া, তোর কাছে ৫ হাজার টাকা হবে? মলির জামাইকে একটা ফোন গিফটি করব কিন্তু আমার কাছে তো টাকা নেই!"
মেয়েটা হাসি মুখে বলল “বাবা, চিন্তা করোনা ৷ তোমার মেয়ের জামাই থাকতে কিসের টাকার চিন্তা?"
লোকটা ভরকে গেল মেয়েটার কথা শুনে ৷ কপালে ভাঁজ ফেলে লোকটা তাকিয়ে রইলো তার মেয়ের দিকে!
এবার মেয়েটা আমাকে বলল, “ওগো, দাও! ৫ হাজার টাকা দাও তো?"
আমি ক্ষ্যাপা স্বরে জবাব দিলাম, “আমি কেন এতগুলো টাকা দিব আপনাকে?
এবার সে আদুরে গলায় বলল, “দাও বৱছি!"
আমি বললাম, “কক্ষনো না!"
সে চেঁচিয়ে উঠে বলল, “বলছি দাও"'
কেঁপে উঠলাম তার হুংকারে!
মেয়েটিই আমার পকেট থেকে মানিব্যাগ বের করে গুনে গুনে ৫ হাজার টাকা নিয়ে তার বাবার হাতে ধরিয়ে দিলো!
আমি কাঁদবো নাকি হাসবো বুঝতেছিলাম না ৷ বুঝলাম মেয়েটা আমার থেকে টাকা খসাতেই এই নাটক করছে!
মেয়েটার বাবা নরম গলায় বিস্ময়বোধ নিয়ে বলল, “কিন্তু মায়া, সে কবে তোর স্বামী হলো? তুই কবে তাকে বিয়ে করলি?"
মায়া বলল, “আর বলোনা বাবা, সেদিন ফেসবুকে লগিং করে দেখি অনিকের আইডিতে ট্যাগ করে এই লোকটি আমার একটা ফটো আপলোড করে পোস্ট করছে, ওতে লিখেছে “এটা আমার বউ, কেমন লাগছে বন্ধুরা?" তার স্ট্যাটাস দেখে শপথ করেছিলাম লোকটাকে উচিত শিক্ষা দিব ৷ অপরিচিত কাউকে বউ বলার স্বাদ মিটাব".
মেয়েটার কথা শুনে মনে পড়লো অনিকের দুষ্টুমির কথা ৷ ও তার খালাত বোনের ফটো দিয়ে বলেছিল ওর সাথে প্রেম করতে চাইলে নম্বর দিব ৷ ফটোটা দেখে ওর বোনকে পছন্দ হয়েছিল ৷ এজন্য দুষ্টুমি করে পোস্টটা করেছিলাম ৷ কিন্তু এতকিছু হবে কখনো ভাবিনি!
মেয়েটাকে বললাম, “দুঃখিত, আমি বুঝতে পারিনি, সেদিনের কাজটার জন্য লজ্জিত আমি!"
মায়া ঝাঁড়ি মেরে বলল, “রাখ তোর সরি, সাতদিনের মধ্যে তোর বাবা, মা কে আমাদের বাসায় বিয়ের প্রস্তাব নিয়ে আসতে বলবি! নাহলে তোর খবর করে দিব! তোকে আমারও ভাললেগে গেছে ৷ একবার যেহেতু বউ বলেছিস, সেহেতু সেটা বাস্তবে পরিণত করতেই হবে তোকে!"
মায়াকে ছেলের বউ করতে বাবা, মা প্রস্তাব পাঠালো মায়ার বাবা, মায়ের নিকট ৷ তারা বিয়েতে রাজিও হলো ৷ বিয়ের দিন তারিখ ধার্য্য হলো!
আজ বিয়ে করতে যাচ্ছি! যেই মায়াদের বাসার নিকট পৌঁছলাম তখনই মায়ার ফোন এলো ৷ ফোনটা রিসিভ করলে মায়া বলল, “ফেসবুকে ঢুকে আইডিটা চেক করো!"
আইডিতে ঢোকা মাত্র যা দেখলাম তার জন্য মানসিক ভাবে প্রস্তুত ছিলাম না ৷ মায়া আমাকে ট্যাগ দিয়ে তার সাথে একটা লোকের পিকচার অ্যাড করে পোস্ট করে লিখছে, “এটা আমার বর, কেমন লাগছে বন্ধুরা?"
মেজাজটা গরম তো হলোই, কান্না করতে মন চাচ্ছিল ৷ গাড়ি থেকে নেমে সোজা শ্বশুর আব্বার নিকট গেলাম ৷ পিকচারটা দেখালাম, ওনার মাথা নষ্ট তো হলোই মুখটাও কালো হয়ে গেল ৷ ওনাকে নিয়ে মায়ার রুমে গেলাম ৷ দেখি সে বউ সেজে বসে থেকে আরামে মোবাইল টিপছে! রেগে গিয়ে মায়াকে পিকচাকটা দেখিয়ে বললাম,
___“এসব কি?"
মায়ার সরল সহজ জবাব,
___“কি আবার পিকচার?"
___“লোকটা কে?"
____“আমার হবু বর"
____তাহলে আমি কে?
____হবু বর!
ক্ষ্যাপা স্বরে বললাম,
__মাথা ঠিক আছে তোমার? এই লোকটাও হবু বর, আমিও হবু বর? বুঝলাম না, বয়স্ক লোকটা তোমার হবু বর হয় কেমনে?
মায়া মিষ্টি হেসে বলল,
___বোকা, এই যে ফোনের দিকে তাকাও!"
মায়া তার ফোন দিয়ে আমার একটা ফটো ফেস অ্যাপ সফটওয়্যারে অ্যাড করে মুহূর্তে বয়স্ক লোকের পিকচার বানিয়ে ফেলল ৷ বুঝতে পারলাম ব্যাপারটা ৷ তাহলে ঐ ফটোর লোকটা আমিই ছিলাম ৷ ফেস অ্যাপের কারসাজী ছিল!
মায়ার কাছ থেকে লাজুক চেহারা নিয়ে রুম থেকে বের হচ্ছিলাম ৷ রুম থেকে বের হতেই ফোন এলো ৷ আমার এক বন্ধু ফোন দিয়েছে, এবং সে বলছে,
___কি রে তোর বউ নাকি বুড়া ব্যাডার লগে পালিয়ে গেছে?"
লও ঠ্যালা অলরেডি ভাইরাল হয়ে গেছে! কেমনডা লাগে!
হাসির, তবে লেখাতে যথেষ্ঠ জিলাপির উপস্থিতি ছিলো !!
 
পরবর্তী মিলন মেলায় প্রমান দি‌য়েন।
কবে যে আসবে সেদিন...
এবারই প্রথম রোজা পার করলাম যে রোজাতে নির্জন মেলার ইফতার পার্টি ছিলো না !
 
নাম লেখা থাকুক, মানুষ দুইটা‌রে আবার প্লা‌টিনাম দিয়া দি‌য়েন না মামা।
কি আশ্চর্য্য !
এর পর থেকে এই মানুষ দুইটারে আর দেখাই যাইতেছে না !
 
খুজ‌তে থা‌কেন, দে‌খেন কোন ললনা পান কিনা।
পাইলেও কোনো কামে লাগাইতে পারবো বইল্যা তো মনে হয় না !
মানে কারো সাথে আড্ডা জমাতে পারবে বলে মনে হয় না আরকি !!
 
আমার না নুতন কোট কোট নাই, দি‌বেন না‌কি একটা, মামা?
অপেক্ষায় থাকেন।
অপু মামার নেয়া এই নোটটা আপনেরেই কোট দেওনের লাইগ্যা...
 
‌রেজ‌গি‌তে ম‌নে হয় কম পড়‌ছে।
রেজগি দ্যাশ থেকে উঠে গেছে, মামা।
এগুলার অবস্থান এখন বুড়িগঙ্গা সহ দেশের বিভিন্ন নদীর তলদেশে।
ফকিরেরা বস্তাবন্দি করে এগুলো নদীতে ছেড়ে দিয়েছে, যাতে এর বোঝা আর তাদের বইতে না হয় !!
 
Status
Not open for further replies.

Users who are viewing this thread

Back
Top