যখন কোন রোগী কে হিস্ট্রি নেয়ার সময় LMP(শেষ পিরিয়ডের ডেট) জিজ্ঞেস করি তখন অলমোস্ট সব রোগীই তার স্বামীর দিকে তাকায়!
তখন স্বামী বলা শুরু করে-এই তো ম্যাডাম অমুক তারিখে হইছিলো!
প্রথম প্রথম খুব বিরক্ত হতাম!এই বৌ রা সারাদিন রান্না ..খাওয়া..শপিং আর পরনিন্দা-পরচর্চা ছাড়া তেমন কিছু করে না..তাও নিজের LMP কেন মনে রাখতে পারবে না!!!আজব..! যত্তসব ডং..!
পরে যখন দেখলাম- শিক্ষিত..অশিক্ষিত..গৃহিনী..চাকরিজীবি অলমোস্ট সবাই এমন..তখন থেকে আর বিরক্ত লাগে না!নিজেকে বুঝালাম- স্বামীরা এই ডেট মনে রাখে স্ত্রীর প্রতি ভালবাসা থেকে!উনারা বৌয়ের প্রতি খুব কেয়ারিং!স্বামীদের এত কেয়ার দেখে বৌ রা আর এই ডেট মনে রাখার প্রয়োজন মনে করে না..!মনে রাখার জন্য স্বামী তো আছেই!
স্বামীদের এত কেয়ার দেখে মাঝে মাঝে ভাবতে বাধ্য হই- পত্রিকায় ঘোড়ার আনডার নিউজ দেয়..কিসের ঘন্টায় এক ডিভোর্স..কিসের পরকিয়া...??সমাজে তো সব “পত্নীব্রতা” স্বামী! আলহামদুলিল্লাহ্!!
এমনই একজন কেয়ারিং স্বামী তার বৌ কে নিয়ে চেম্বারে এসেছিলেন কিছুদিন আগে!তার কমপ্লেইন-
: ম্যাডাম,গতমাসে ওর পিরিয়ড হয়েছিলো অমুক তারিখে..এই মাসে ৬ দিন আগে হয়ছে..বলুন তো এটা সমস্যা না??
আমি তার কেয়ার দেখে আবেগে কাইন্দা দেবার মত অবস্থা!বৌ কে জিজ্ঞেস করলাম -আপনার কি কি সমস্যা বলেন তো!
বৌ বলে- আমার তো কোন সমস্যা নাই!কোন মাসে ৫/৬ দিন আগে হয়..কোন মাসে ডেট পার হয়ে ২/৩ দিন পরে হয়!
হাসিমুখে বললাম- ঠিকই তো আছে!এটা তো সমস্যা না!
কিন্তু ২/৩ মাস পার হয়ে যাচ্ছে ..হচ্ছে না..বা হলে ভাল হচ্ছে না..প্রচন্ড পেট ব্যাথা..বা ব্লিডিং খুব বেশি এমন কোন সমস্যা নাই তো?
বৌ এদিক ওদিক মাথা নাড়িয়ে বুঝালো এমন প্রবলেম নেই।মুখে স্বামীর মুখের দিকে তাকিয়ে বলল-ওই তো বলল..এটা নাকি সমস্যা!
হাসবেন্ড কে প্রশ্ন করলাম-
: আপনার কেন মনে হচ্ছে এটা সমস্যা?
কেয়ারিং স্বামী বললেন- অন্য কোন মহিলার তো এমন হয় না...!তাদের তো যেদিন ডেট সেদিনই হয়....!
আমি মুখ ফসকায়ে বলে ফেল্লাম- ভাইজান,অন্য মহিলার খবর আপনি কেমনে জানলেন?
স্বামী বেচারা আমতা আমতা শুরু করলেন..!বৌ তীর্যক দৃষ্টিতে স্বামীর দিকে তাকিয়ে চিবিয়ে চিবিয়ে বলা শুরু করল-
: ইয়া মাবুদ....!ঠিকই তো আমি তো এভাবে ভাবিনি..! রাশিদা ভাবীর বাসায় তোর এত ঘন ঘন যাওয়ার কাহিনী তাইলে আমি ঠিকই ধরেছিলাম...!
অন্য মহিলার ডেটের হিসাব বের করতাছি তোর....চল বাসায়...!
খবর আছে তার!!
তয় এখানে আমার কি কোনো দোষ আছে...?
বিশ্বাস করেন রাশিদা ভাবীকে আমি চিনি না.......!
আরো কিছু ব্যাপার আছে... ধরেন এই কিটটা বাজারজাত করার জন্য বাজারমূল্য নির্দ্ধারন হইছে আড়াইশো টাকা ! এখন যদি এমন হয়, যে আড়াইশো টাকায় বিক্রি না করে এটা বিক্রি হবে চারশো টাকায়... টাকাটা গণস্বাস্থ্যই পাবে। কিন্তু কিছুতেই সেই টাকা আড়াইশোর সাথে মিলাতে পারবে না। প্রতি কিটের সাথে বাড়তি পাওয়া দেড়শো টাকা নির্দিস্ট একটা একাউন্টে জমা করে দিতে হবে... হিসাবটা খুব সহজ ! যদিও আমি অঙ্ক জানি না !! প্রাথমিক উৎপাদনের হিসাব মতে... (একলক্ষ পিস গুনন দেড়শো টাকা )= নির্দ্ধারিত একাউন্টে চলে যাওয়া অর্থ !