What's new
Nirjonmela Desi Forum

Talk about the things that matter to you! Wanting to join the rest of our members? Feel free to sign up today and gain full access!

অনিক এবং আনিকা (4 Viewers)

কিছুদিন আগে , ছোট্ট একটা বাই সাইকেল এক্সিডেন্ট এর কারনে লেখা লেখি বন্ধ ছিলো , নেক্সট আপডেট কিছুটা তৈরি করা আছে , বাকিটা লিখে আমি পোস্ট করে দেবো । গুটি কতেক পাঠক যারা গল্পটি পড়ছেন তাদের কাছে দেরি হওয়ার জন্য দুঃখ প্রকাশ করছি ।
 


প্রায় সপ্তাখানেক হয়ে গেছে অনিক বাড়িতে এসেছে । যত দিন যাচ্ছে ততো বোর হচ্ছে অনিক , কারন করার মতো কিছুই খুঁজে পাচ্ছে না আনিকা আজকাল বেশিরভাগ সময় নিজের ঘরেই কাটাচ্ছে । ইভাও গত দুই দিন যাবত আসছে না , কারন পাশের গ্রামে কিছু লোকের সংক্রামণ এর খবর ছড়িয়ে পড়েছে । তাই বাইরে বেরুনো সবাই কমিয়ে দিয়েছে । আর বন্ধুদের সাথে চ্যাট করে কত সময় ব্যায় করা যায় । কিছুক্ষন চ্যাট করার পর আর ভালো লাগে না । NETFLIX এ একটা আকাউন্ট খুলে নিয়েছে যদিও , তবে বেশিক্ষণ সেটাও ভালো লাগছে না । বাইরে যেতে হবে আড্ডা দেয়া অনিকের অভ্যাস । কিন্তু এখন বাইরেও বেশি যাওয়া যাচ্ছে না । গ্রামে কিছু পুরনো বন্ধু আছে , যদিও তাদের সাথে তেমন যোগাযোগ নেই , তাদের সাথে যে একটু আড্ডা দেবে সেটাও হয়ে উঠেছে না । অনিক ভেবেছিলো শহরের মতো এতো কড়াকড়ি গ্রামে হবে না , কিন্তু এখন উল্টো চিত্র দেখা যাচ্ছে , গ্রামের মানুষ আরও বেশি সচেতন ।

কি করা যায় , বসে বসে যখন এই ভাবছে ঠিক তখনি , মোবাইলের নোটিফিকেশন এর টোন বেজে উঠলো , অনিক মোবাইল হাতে নিয়ে স্ক্রিন অন করতেই ওর মনটা একটু ভালো হয়ে গেলো । ইভা টেক্সট করেছে সুধু মাত্র একটা ছোট “হাই” লেখা আর তেমন কিছুই নেই । এই প্রথম টেক্সট করলো ইভা , যদিও অনেক আগেই ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট একসেপ্ট করেছে , কিন্ত অনিক ও কোন টেক্সট করেনি ইভাও করেনি । হয়ত ইভাও অনিক এর মতো অপেক্ষা করছিলো , ভেবেছিলো অনিক আগে কিছু একটা করবে ।

“হাই” লিখে সেন্ড করে দিলো অনিক , মনে মনে ভাবল অনেক হয়েছে , একটু কথা বললে এমন কি দোষ হবে । প্রেম না করলেই হলো।

“ কি করছো”

“শুয়ে আছি , খুব বোরিং লাগছে”

“ হা হা হা বলেছিলাম আগেই , থাকতে পারবে না”
“ বন্দি দশার জন্য বোরিং লাগছে , এমনি তো ঠিক আছে সব”

“ আমদের বাড়ি চলে আসো , আর বোরিং লাগবে না “

“ কেন তোদের বাড়ি কি আছে ?”

“ আমি আছি”

অনিক এর হার্ট একটা বিট মিস করে গেলো , কিছু একটা লিখতে গিয়েও থেমে গেলো ওর আঙুল গুলো । ইচ্ছা করছে কিছু একটা লিখতে যেটা পরে ইভাও ওর মনের কথা বুঝতে পারবে । কিন্তু সেরকম কিছু লিখলো না লিখলো । “ বাচ্চাদের সাথে কথা বলে মজা নেই”

অপর পাশ কিছুক্ষন চুপ চাপ , টাইপ ও করছে না , তবে দেখছে । অনিক ভাব্লাও ইভা মনে হয় মাইন্ড করেছে । অনিক দ্রুত লিখলো “ কিরে মাইন্ড করলি নাকি “ কিন্তু সেন্ড করলো না , মুছে দিলো । ঠিক তখনি ও দেখতে পেলো অপর দিক থেকে কিছু একটা টাইপ হচ্ছে । তাই ঠিক করলো কি লিখছে ইভা সেটা আগে দেখার । বেশ অনেক্ষন পর উত্তর এলো

“ মনে হচ্ছে চোখের ছানি এখনো ঠিক মতো কাটেনি” ।

কথাটা ইভা রাগ করে বলেছে নাকি মজা করে সেটা বোঝা গেলো না । আসলে এই হচ্ছে সামনা সামনি কথা বলা আর টেক্সট এর মাধ্যমে কথা বলার পার্থক্য । ইমোশান ঠিক মতো বোঝা যায় না ।

“ চোখের সামনে তো আর বেশিক্ষণ ছিলি না যে ভালো করে দেখবো”

“ সুযোগ তো দিয়েছিলাম , তখন তোমার কাছে ডিম বেশি পছন্দ হয়েছিলো” সাথে সাথেই ইভার উত্তর এলো ।

অনিক বুঝতে পারছে ও ধিরে ধিরে জড়িয়ে পড়ছে , হয়ত আর কিছুদুর এগিয়ে গেলে আর ফিরে আসা যাবে না । কিন্তু ওর আঙুল গুলি ওর শাসন মানছে না কিছুতেই , দ্রুত টাইপ করে চলছে , টাইপ শেষে সেন্ড বাটনে চাপ দিয়েই অনিক নিঃশ্বাস বন্ধ করে ফেলল ।

অনিক লিখেছে “ আর একবার দেখার সুযোগ হলে মনেহয় আগের ভুল হবে না”

দম আঁটকে বসে আছে ইভার উত্তর এর জন্য । অনিক যানে ও উত্তাল সমুদ্রে যাত্রা শুরু করার জন্য নৌকা ভাসিয়েছে । এখন আর ফিরে আসার সুযোগ নেই । সহজ হবে না এই সম্পর্ক , সবচেয়ে বড় যে বাধা আসবে সেটা আসবে অভির দিক থেকে । রুম মেট হওয়ার কারনে অভি অনেক কিছুই দেখছে যা অনিকের প্রতি খুব ভালো মনভাব তৈরি করেনি ওর মনে ।

“ কি ভাবে দেখতে চাও” বেশ কিছুক্ষন পর উত্তর এলো

“তুই যেভাবে দেখাবি সেভাবেই” দ্রুত টাইপ করে সেন্ড করে দিলো অনিক ।

অনিকের হাতের তালু ঘামছে , বেশ চিন্তা হচ্ছে , সত্যি বলতে প্রথমের প্রেমেও এতো এংজাইটি ফিল করেনি অনিক । শেষ টেক্সট টি পাঠানোর পর ইভা অফলাইন হয়ে যাওয়ার পর থেকেই অনিক ভেবে পাচ্ছে না কি ভুল বলল ও । ইভা কি মাইন্ড করেছে ? কিন্তু মাইন্ড করার মতো কিছুই তো বলেনি ও । আর ইভা নিজেই শুরু করেছে এই ধরনের কথার চালাচালি ।

ইচ্ছা হচ্ছে ইভার সাথে গিয়ে দেখা করে । কিন্তু সেটা সম্ভব হচ্ছে না , কারন ইভাদের বাড়িতে যেতে হলে আনিকাকে নিয়ে যেতে হবে , নইলে এক একা যাওয়া সম্ভব নয় । আর আনিকা কে নিয়ে গেলেও একা ইভার সাথে কথা বলা যাবে না , আনিকা কি মনে করে । হঠাত একটা চিন্তা মাথায় এলো অনিক এর । আনিকা ওর সব গার্ল ফ্রেন্ড এর কথাই যানে । তাহলে আনিকার সাথে কি একটু কথা বলবে?

আসলে আনিকার সাথে কথা বলতেও একটু বাধছে , আনিকা কি ভালো ভাবে নেবে কথাটা ? ওর বান্ধবীর সাথে বড় ভাই প্রেম করতে চাইছে , ভালো ভাবে নাও নিতে পারে । গেলো কয়েকদিন আনিকার সাথেও তেমন দেখা কথা হচ্ছে না । আনিকা নিজের ঘরেই এসি সময় পার করছে । নতুন মোবাইল পেলে যা হয় আরকি । এক দিক থেকে ভালোই হয়েছে অন্য দিক থেকে ভীষণ একেকিত্ত্ব বোধ আরও বেরেছে । অনিক ঠিক করলো আনিকার সাথে একটু কথা বলবে ।





আনিকা নিজের ঘরের দরজা লাগিয়ে বিছানায় শুয়ে , এক হাত পাজমার ভেতরে অন্য হাতে মোবাইল ধরা । মোবাইল এর স্ক্রিনে একটি কালো লোক একটি চিকন স্বর্ণকেশীর উপরে চড়ে বসেছে , এক হাতে চুলের মুঠি ধরে রেখছে অন্য হাতটি দিয়ে কিছুক্ষন পর পর স্বর্ণকেশীর নরম পাছায় চড় বসাচ্ছে ।

আজকাল এই নিয়ে থাকে বেশি আনিকা , একদম নেশার মতো হয়ে গেছে । আগে বেশিরভাগ সময় ইভার পছন্দ করা ভিডিও দেখত আনিকা , কিন্তু আজকাল এসব teen on black এবং teenfedility এর পর্ণ ভিডিও দেখতে দেখতে নেশার মতো ধরে গেছে । মাঝে মাঝে মনে হয় এসব এতো বেশি দেখা ঠিক নয় । কিন্তু যখনি সময় পায় একটু দেখে নিতে ইচ্ছা হয় । পর্ণ দেখার পাশাপাশি আজকাল গোপনাঙ্গ নিয়ে খেলার পরিমান ও বেড়ে গেছে । আজ সকাল থেকে এই পর্যন্ত ছোট বড় মিলিয়ে প্রায় ডজন খানেক অরগাসম হয়ে গেছে । আরও একটি হওয়ার প্রায় কাছা কাছি , ঠিক সেই সময় দরজায় টোকা পড়লো ।

আনিকার হাত থেমে গেলো , বাড়িতে এখন অনিক একাই আছে , আনু খালা রান্না করে দিয়ে আজ অনেক আগেই চলে গেছে । দ্রুত নিজের জামা কাপড় ঠিক করে নিয়ে উঠে দরজা খুলে দিলো আনিকা । দরজা লাগিয়ে রাখার অভ্যাস না থাকার করনে একটু হরবরিয়ে গেছে ও , তাই জামা কাপড় ঠিক করলেও বাকি সব কিছুতে একটা এলোমেলো ভাব রয়েই গেলো , ফর্সা মুখটা হালকা লাল হয়ে আছে , চুল গুলি আলিথালু এছাড়া সবচেয়ে বড় যে ব্যাপার সেটা হচ্ছে ঘরে যোনি নিস্রিত তরল এর গন্ধ । এই গন্ধ সবাই বুঝবে না কিন্তু যারা এই গন্ধের সাথে পরিচিত একটু চেষ্টা করলেই বুঝে ফেলবে ।

অনিক এর ক্ষেত্রে তাই ঘটলো , প্রথমে কিছু না বুঝলেও , সেই সুক্ষ গন্ধটা নাকে এসে লাগতেই আনিকার দিকে একটু ভালো করে তাকালো। মুখটা ঈষৎ লাল হয়ে আছে , শ্বাস এখনো দ্রুত পড়ছে , কপালের উপর এলোমেলো কিছু চুল এখনো ঘামের সাথে লেপটে আছে। আনিকা কি করছিলো সেটা বুঝতে আর কষ্ট হলো না অনিকের । আর সাথে সাথে একটি রক্তিম আভা অনিকের চেহারাতেও প্রকট হলো । দ্রুত চোখ নামিয়ে নিলো অনিক । অনেক কষ্টে আনিকার নতুন বাড়ন্ত শরীর দেখে নিজের মাঝে যে কাম ভাব উদ্রেক হতো সেটাকে নিয়ন্ত্রণ করছে ও । পুনরায় আর তার পুনরাবৃত্তি চায় না অনিক ।

“কিছু বলবি ভাইয়া” খুব সাধারন ভাবে জিজ্ঞাস করলো আনিকা , আসলে ভাই যে বুঝতে পেরেছে সেটা ওর মাথায় ই আসেনি ।

“ এক কাপ চা করে দে” আনিকার দিকে দৃষ্টিপাত না করেই বলল অনিক , তারপর দ্রুত চলে গেলো ।

মোবাইল এর ব্রাউসিং হিস্টোরি ডিলিট করে আনিকা চলে গেলো চা করতে

আজ দুপুরে ওদের বাবা বাড়ি আসেনি , চালের বড় চালান এসেছে আজ , চারিদিকে চাল বিতরনের যে হিরিক পড়েছে সেই চালের জগান দেয়ার জন্য এই চালান । তাই আজ সন্ধ্যা হয়ে যাবে । লক ডাউনে অন্য সব কিছু বন্ধ থাকলেও ঔষধ আর চাল এই দুই দোকান বন্ধ হয়নি । আর পুরো এলাকার এক মাত্র বড় চালের আড়ত করিম সাহবের হওয়ায় ওনার উপর বেশ চাপ যাচ্ছে আজকাল । তাই সময় মতো বাড়ি আসতে পারছেন না ।

তাই দুপুরে সুধু অনিক আর আনিকা খেতে বসেছে । আনিকা লক্ষ করছে অনিক ঠিক মতো ওর দিকে তাকিয়ে কথা বলছে না । কেমন জানি অন্যমনস্ক অবস্থায় আছে । যেদিন অনিক এলো তার পর দুই তিনদিন এমন অবস্থায় ছিলো অনিক । তারপর ধিরে ধিরে স্বাভাবিক হয়ে গিয়েছিলো । কিন্তু আজ আবার সেই এক রকম আচরন করছে । আনিকার কাছে এই ব্যাপারটা খুব খারাপ লাগে । একবার ইভার সাথে খুব ঝগড়া হয়েছিলো ওর , তখন প্রায় মাস খানেক দুজনের মাঝে কথা বন্ধ ছিলো , স্কুলে দেখা হলেও একজন আর একজনের সাথে কথা বলতো না । এক সাথে বসে সব বান্ধবীরা যখন আড্ডা দিতো তখন ও একজন অন্যজন কে এড়িয়ে যেত । সরাসরি তাকাতো না একে অপরের দিকে । তখন আনিকার খুব খারাপ লাগতো ।

অনিকের আচরনেও ঠিক সেই রকম লাগছে আনিকার কাছে । একবার ইচ্ছা হলো জিজ্ঞাস করে এমন করছে কেনো । কিন্তু জিজ্ঞাস করলো না একটা অভিমান এসে জড় হলো । দ্রুত খাবার সেরে থালা বাসন রেখে দিয়েই চলে গেলো নিজের ঘরে ।

ঘরে এসেই মোবাইল নিয়ে পড়লো , নাহ এখন আর পর্ণ নয় । ফেসবুক খুলে বসলো , ইভা অফলাইন এ আছে । কিন্তু একটা নতুন ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট দেখতে পেলো আনিকা ,একটা ছেলে হালকা পরিচিত ওদের কলেজে ই পরে । তেমন কথা হয় না , আনিকা রিকোয়েস্ট একসেপ্ট করলো । প্রায় সাথে সাথেই প্রাইভেট ম্যাসেজ এলো

“ হাই , চিনতে পেরেছো”

আমিকা প্রথমে ভাবল রিপ্লে দেবে না , জীবনের একটা বড় সময় ছেলেদের কাছ থেকে তেমন পাত্তা না পাওয়ায় এক ধরনের জড়তা কাজ করে আনিকার মাঝে । তাই যখন ছেলে গুলি ওকে নোটিস করা শুরু করলো তখন আনিকা কেমন জানি গুটিয়ে গেলো , অনেকটা মনের ভেতরকার জমানো ক্ষোভ থেকে । স্কুল কলেজে নিজে বান্ধবীদের যখন আলোচনা করতে শুনত যে আজ অমুক ছেলে তাকিয়ে ছিলো কাল অমুক ছেলে প্রেম নিবেদন করেছে , তখন নিজের ভেতর গুটিয়ে যেত আনিকা । এক ধরনের হীনমন্যতা কাজ করতো নিজের মাঝে । আজো সেই হীনমন্যতা থেকে বেড়িয়ে আসতে পারেনি ও , তাই এখনো যখন কোন ছেলে ওকে এপ্রচ করে তখন খুব অভিমান হয় , মনে হয় ওর বুকের উপর সদ্য গজিয়ে ওঠা মাংস পিণ্ডের জন্য ছেলেটি ওকে নোটিস করেছে । তাই তেমন ভাবে সাড়া দেয় না আনিকা । বান্ধবীরা জিজ্ঞাস করলে বলে , বাবার ভয়ে এমন করে । আসল কথা কোনদিন কাউকে বলেনি , এমনকি অনিককে ও না ।

তবে আনিকার ওই সব দিনে ওর দুঃখ অনেকটাই লাঘব করতো অনিক , অন্য বান্ধবীরা যখন ছেলে বন্ধুদের সাথে মজা করতো , তখন আনিকা অনিকের সাথে সময় কাটাত । ছেলে বন্ধুর অভাব অনিক পুরন করতো , অবশ্য অনিক সেটা বুঝত না আনিকা কোনদিন ওকে বুঝতে দেয়নি । যে সব চাহিদা মেয়ে বন্ধুদের দ্বারা পুরন না হতো সেটা অনিক এর দ্বারা পুরন হতো , ঘুরতে যাওয়া , নানা ধরনের বাহানা করা , বান্ধবীরা যা বয় ফ্রেন্ড এর কাছে করতো , আনিকা করতো অনিক এর কাছে । আজকাল সেই ভাই ও কেমন আলগা আলগা আচরন করছে । তাই অনেকটা জেদের বসে আনিকা উত্তর দিলো , যেহেতু অনিক দূরে সসরে যাচ্ছে তাই কাউকে না কাউকে তো সেই যায়গায় বসাতে হবে ।

“ হ্যাঁ চিনবো না কেন , তুমি অরুপ আমাদের ক্লাসেই তো ”

ছেলেটি মনে হয় এতটা আসা করেনি , তাই কয়েক মুহূর্ত কোন রিপ্লে এলো না । তারপর এলো “ আমারা কি বন্ধু হতে পারি?”

“ আমরা তো অলরেডি বন্ধু হয়ে গেছি” আনিকা লিখলো একটু পস্রয় দেয়ার জন্য

“ হ্যাঁ , তা হয়েছি , আমি বলছিলাম , বাস্তবে , আই মিন সুধু ফেসবুক এ না “

ছেলেটির এমন হাব্লা মার্কা কথায় আনিকার মুখে একটু হাঁসি ফুটে উঠলো । বেশ মজা পাচ্ছে ও , আনিকা লিখলো “ হয়ত , তবে এখনি নয়” একটু আশা দিয়ে রাখলো আবার ঝুলিয়েও রাখলো

“ অবশ্যই , অবশ্যই , এখন চাইলেও আমরা দেখা করতে পারছি না , কলেজ ও বন্ধ , কিন্তু ভিডিও চ্যাট করতে পারি”

আনিকা মুচকি হাসল , তাপর লিখলো “ হয়ত” মনে মনে ভাবল ছেলেটি বেশ ফাস্ট তো

“ এখন???”

“ নাহ” আনিকা লিখে পাঠাল , যদিও ওর একবার ইচ্ছে হয়েছিলো হ্যাঁ বলার , কিন্তু নিজেকে সামলে নিয়েছে । কারন আনিকা এমনি মজা করছিলো ছেলেটির প্রতি ওর তেমন কোন ফিল নেই ।

চ্যাট আরও কিছুক্ষন এগিয়ে চলল ,এর মাঝে ইভার কল এলো , আনিকা সেটা রিসিভ করে ইভার সাথে কথা বলতে লাগলো ।





এদিকে আনিকা চলে যাওয়ার পর অনিক বেশ অবাক হয়েই থালা বাটি গুলর দিকে তাকিয়ে ছিলো , সাধারনত আনিকাই এসব করে , অনিক হাজার হেল্প করতে চাইলেও করতে দেয় না । আজ সব কিছু ফেলেই এবাভে কেন চলে গেলো , সেটা ভেবে পাচ্ছে না । ধিরে ধিরে সব কত প্লেট ধুয়ে জায়গা মতো রেখে দিলো অনিক । তারপর নিজের ঘরে চলে এলো , একটা চিন্তা মাথায় অনেক ক্ষন যাবত ঘুরছে ওর । সেটা হচ্ছে আনিকা কে মোবাইল এনে দিয়ে কি ভুল করলো নাকি ?

অবশ্য এই বয়সে এসব নিজেও অনেক দেখছে । কিন্তু ঢাকা যাওয়ার আগে মেয়েরা এসব দেখে কিনা তা জানতো না । ঢাকা বিভিন্ন মেয়েদের সাথে বন্ধুত্ব হওয়ার পর জানতে পেরেছে আজকাল মেয়েরাও ছেলেদের সাথে পাল্লা দিয়ে দেখছে এসব । অনিক অবশ্য অনেক আগেই এসব এর অভ্যাস ত্যাগ করেছে । কিন্তু ভাই এর স্বভাবজাত বৈশিষ্ট্য থেকে মাথা থেকে দুশ্চিন্তা দূর করতে পারছে না । একবার ভাবে এই নিয়ে আলোচনা করবে আনিকার সাথে , আবার ভাবে কি ভাবে আলোচনা করবে , আজকাল আর আনিকার সাথে আগের মতো সহজ হতে পারছে না ও । আগে আনিকার সাথে এমন অনেক বিষয় নিয়ে আলোচনা করেছে যা এক ভাই তার বোন এর সাথে করে না । কিন্তু এখন আর সেই পরিস্থিতি নেই । সেই স্বাচ্ছন্দ্য আর পায় না অনিক যখন আনিকা আশেপাশে থাকে ।

এমন সময় ইভার কল এলো , সরাসরি কল করেছে , অনিক এর মাথা থেকে সাথে সাথে আনিকার চিন্তা উধাও হয়ে গেলো ।

“ ওরে বাবা একেবারে কল করলি যে” ফোন রিসিভ করে বলল অনিক

“ বন্দোবস্ত করলাম এতখন “ ইভা হেঁসে হেঁসে বলল

ইভার কথা বুঝতে পারলো না অনিক , তবে ইভার অফ লাইন হয়ে যাওয়ার কারনে যে দুশ্চিন্তা এসেছিলো সেটা অনেকটা কেটে গেছে , কারন ইভার কণ্ঠে রাগের কোন লক্ষন দেখা যাচ্ছে না । “ কিসের বন্দোবস্ত” অনিক কৌতূহল নিয়ে জিজ্ঞাস করলো

“ দেখা করার বন্দোবস্ত” লজ্জা মিশ্রিত কণ্ঠে বলল ইভা

অনিকের মনটা আনন্দে নেচে উঠলো । “ তাই নাকি “

“ হ্যাঁ মশায় , সব কাজ তো আমাকেই করতে হবে”

বাকি ঘটনা খুলে বলল ইভা , ওর বাবা মা কে বলেছে যে আনিকার কাছে যেতে হবে এক জরুরী কাজে , তাই অনিক যেন ওকে এসে নিয়ে যায় । আনিকাকেও জানিয়েছে ইভা । আর বলতে বলতেই আনিকা এসে দরজায় হাজির

“ ভাইয়া , তোকে.........” কথাটা বলেই আনিকা থেমে গেলো । অনিক হেঁসে হেঁসে তখন ইভার সাথে কথা বলছিলো সেটা আনিকা দেখে ফেলেছে । “ওহ তুই তো জেনেই গেছিস” এই বলে আনিকা আবার চলে গেলো ।

অনিক এতো খুসি হলো যে আনিকার চলে যাওয়া লক্ষ করলো না , ইভা কে জানালো যে আনিকা এসেছিলো , তারপর কল কেটে দিয়ে ভালো একটা টি শার্ট আর প্যান্ট পরে নিলো , গাঁয়ে একটি সুগন্ধি ও লাগলো ।

দশ মিনিট এর রাস্তা অনিক মনেহয় তিন মিনিট এর চলে এলো । এসেই দেখা ইভার মায়ের সাথে । কুসল বিনিময় করতে করতে ইভা চলে এলো । “তোমাকে কষ্ট দিলাম বাবা , বোঝোই তো লক ডাউন এর সময় , রাস্তা ঘাট খালি “ ইভার মা দুঃখ প্রকাশ করে বলল , যদি জানতো যে অনিক কতটা উতলা হয়ে আছে ওনার মেয়ে কে সঙ্গে নিয়ে যাওয়ার জন্য ।

“ না না চাচি , আপনি ঠিক বলেছেন , আমি আবার দিয়ে যাবো” অনিক যতটা সম্ভব নিজের ভেতরকার উল্লাস চেপে রেখে বলল ।


ফিরতি পথ পাড়ি দিতেও সময় লাগলো না । পুরো পথ দুজনেই চুপ চাপ এসেছে , তবে চাপা একটা উত্তেজনা যে কাজ করছে সেটা বোঝা যাচ্ছে । অনিকদের বাড়িতে ঢুকতেই দুজন আর আলাদা রইলো না , দু জোড়া হাত একে অপর কে জড়িয়ে ধরল , দু জোড়া ঠোট একে অপরের সাথে মিশে গেলো । আর এক জোড়া চোখ দূর থেকে সেটা লক্ষ করলো ।





শীতল দৃষ্টিতে আনিকা তাকিয়ে আছে ইভা আর অনিক এর দিকে । মুল ফটক পেড়িয়ে ভেতরে ঢোকার পর এক সেকেন্ড সময় ও নষ্ট করেনি ওরা । এর আগে ইভা অনেকবার আনিকার কাছে অনিক সমন্ধে এমন কথা বলেছে । আনিকা তখন খুসিই হতো , নিজের বান্ধবীর সাথে ভাইয়ের সম্পর্ক হলে ভালোই হয় , এমন ভাবত । কিন্তু আজ যখন ব্যাপারটা সত্যি সত্যি ঘটছে তখন কেন জানি মেনে নিতে পারছে না আনিকা । এই পৃথিবীতে ওর সবচেয়ে কাছের দুই জন মানুষ একে অপরের কাছা কাছি আসছে এই দৃশটি আনিকার মনে প্রচণ্ড এক ভয়ের সৃষ্টি করছে । মনে হচ্ছে ও একা হয়ে যাবে , যে দুজন মানুষ এর কাছা কাছি ছিলো তারা একে অপরের কাছে এসে ওর কাছ থেকে দূরে সরে যাবে । তখন ওর আপন বলতে আর কেউ থাকবে না । দ্রুত জানালা থেকে সরে গেলো আনিকা , ও চায় না ওরা দেখুক যে পুরোটা ব্যাপার ও দেখছে ।


চুম্বন শেষে , একে অপরের বাহুবন্ধন থেকে মুক্ত হয়ে , লজ্জায় একজন আর একজনের দিকে তাকাতে পারছে না । দুজনের কারো জন্যই এটা নতুন কিছু নয় । দুজনেই আগে এক বা একাধিকবার এই অনুভুতির মধ্য দিয়ে গিয়েছে । কিন্তু দুজনেই এই হঠাত চুম্বনে বেশ বিব্রত , কারন এতটা হয়ে যাবে দুজনের কেউ ভাবেনি । কিন্ত এসব তো আর ভেবে বলে কয়ে হয় না হঠাত হয়ে যায় । প্রথম নিরবতা ভাংলো অনিক, কারন দুজনের মাঝে অনিক বেশি অভিজ্ঞ “ ভালো ঔষধ দিয়েছিস তো, ছানি একদম কেটে গেছে”

“ এখন দেখতে পাচ্ছো” ইভা মস্তক নত রেখেই জিজ্ঞাস করলো , তবে মিষ্টি হাঁসিটি অনিক এর দৃষ্টি এড়ালো না ।

“ হ্যাঁ দারুন দেখতে পাচ্ছি , সুধু বড় নয় , একেবারে অনেকটাই বড় হয়ে গেছিস , পেকে টস টস করছে” ইভা কে সহজ করার জন্য একটু রসিকতা করে বলল অনিক ।

“ ঔষধ মনে হয় একটু বেশি পরে গেছে “ চোখ পাকিয়ে বলল ইভা , তবে কপট রাগ উপচে চুম্বন পরবর্তী আনন্দ আর লাজ দুটোই ভেসে উঠছে ।

“ উহু খুব দ্রুত দ্বিতীয় ডোজ দরকার হবে “ অনিক হাসতে হাসতে বলল

“ তার আগে আমার বান্ধবীর সাথে দেখা করে আসি” এই বলে ইভা প্রায় দৌড়েই চলে গেলো , অনেকটা পালিয়েই গেলো বলতে গেলে ।


আনিকা বিছানায় আধ শোয়া হয়ে মোবাইল ঘাঁটছিলও , ইভা ঘরে ঢুকেই ওকে এসে জড়িয়ে ধরলো “ আমার আদরের ননদি , কি করছিস , এবার তর জন্য একটা খুঁজে দেখতে হবে”

ইভা যতটা উস্নতার সাথে আনিকাকে আলিঙ্গল করলো , আনিকা ঠিক ততটাই শীতলতার সাথে ইভার আলিঙ্গন কে উপেক্ষা করলো । কিন্তু ইভার আনন্দ সেটা ওকে বুঝতে দিলো না । এতেটাই খুসি যে , ইভা বুঝতেই পারলো না ওর ছোট বেলার বান্ধবির গাল ফুলে আছে ।

“ আমার কাছে তো আর আসিস নি , যার কাছে এসেছিস তার কাছে যা” নির্বিকার ভাবে বলল আনিকা , কিন্তু এবারো ইভা আনিকার নিরলিপ্ততা উপেক্ষা করলো । হেঁসে বলল “ সে তো যাবই , কিন্তু আগে ননদীর সাথে দেখা না করলে যদি রাগ হয় আমার ননদীনির”

‘ বড় এসেছে আমার ভাবি হতে , আগে দেখ কয়দিন টেকে” চোখ মুখ কঠিন করে বলল আনিকা। “ভাইয়া তো দুইদিন পর পর গার্ল ফ্রেন্ড পাল্টায় ,“

আনিকার কথা শুনে ইভা একটু চমকে গেলো , অবাক হয়ে তাকাল বান্ধবীর দিকে , অন্য দিন হলে হয়ত আনিকার এমন আচরণে ঝগড়া হয়ে যেত । কিন্তু ইভা আজকে পাত্তা দিলো না কারন আজ কোন রকম মন মালিন্য করার ইচ্ছে ওর নেই । যতটা উষ্ণতার সাথে বান্ধবীর সাথে দেখা করতে এসেছিলো , ততোটা উষ্ণতা নিয়ে বিদায় হতে পারলো না ইভা । তবে এতে ওর আনন্দের নদিতে একটুও ভাটা পড়লো না। আজ যে বড় আনন্দের দিন ওর বুঝ হওয়ার পর থেকেই অনিকের প্রতি ওর এক ধরেনের আকর্ষণ ছিলো । একের পর এক প্রেম করতে দেখেছে , তাতে ইভার আগ্রহ এক চুল কমেনি , বরং বেরেছে । মনে মনে সংকল্প বেরেছে , যে একদিন যে করেই হোক এই ছেলেটিকে নিজের করে নেবে ।
<><>

অনিক নিজের বিছানায় বসে হঠাত অমন চুমুর ব্যাপারটা ভাবছে । , হঠাত করে যে ও ইভা কে চুমু খায়ে বসবে সেটা আগে থেকে ভেবে রাখেনি । এমনকি এখনো বিশ্বাস হচ্ছে না যে ব্যাপারটা সত্যি সত্যি ঘটেছে । তবে হুট করে হয়ে গেলেও চুমু ব্যাপারটা নিয়ে একটুও অনুশোচনা নেই ওর মাঝে । বরং একটা ভালো লাগা কাজ করছে । আজকে ইভাকে অন্যরকম লাগছিলো , এমনিতেই ইভা দেখতে অনেক মিষ্টি কিন্তু আজ যেন রাজ্যের মিষ্টতা আর মায়া এসে ভর করেছিলো ওর মুখে । নরম একটি হাঁসি সারাক্ষন লেগে ছিলো ঠোঁটে , তাই অনিক নিজেকে সংবরণ করতে পারেনি । ভাগ্য ভালো ইভাও ওকে পাল্টা চুমু খেয়েছিলো , নয়তো আজ জন্ম নেয়া নতুন সম্পর্কের এখানেই ইতি হয়ে যেত । খুব লজ্জা কর হতো জিনিসটা , এসব ভাবতে ভাবতে ইভা এসে ঢুকল অনিক এর ঘরে ,

“ কিরে দেখা করে এলি আনিকার সাথে?” অনিক জিজ্ঞাস করলো

“ হ্যাঁ ... এলাম...” আসলে আনিকার আচরণে এখনো মেজাজ খিটখিটে হয়ে আছে ওর , কিন্তু অনিক কে বুঝতে দিতে চায় না ও ।

যেমন করে ঠোট বাকিয়ে ‘হ্যাঁ’ বলল ইভা সেটা অনিকের কাছে বেশ আকর্ষণীয় মনে হলো , ঠোট দুটো একটু বাঁকা করে হ্যাঁ শব্দটা বলেছে ইভা , এতে এর সুন্দর ঠোট দুটো আরও বেশি আকর্ষণীও হয়ে উঠেছিলো , আর একবার চুমু খাওয়ার জন্য প্ররোচিত করছে যেন অনিক কে , কিন্তু অনিক নিজেকে সংবরণ করলো , কারন এক দিনে বেশি বেশি হয়ে যাবে ।

“ কি দেখছো” অনিক কে নিজের দিকে তাকিয়ে থাকতে দেখে জিজ্ঞাস করলো ইভা ।

“ তোকে”

‘ উহু এখন থেকে তুমি বলতে হবে”

“ সেটা করতে মনে হয় একটু সময় লাগবে “ অনিক হেঁসে বলল

“ চলবে না” রাগি গলায় বলল ইভা ,” চুমু খেতে তো এক সেকেন্ড ও সময় লাগে নি “

হা হা হা করে হেঁসে উঠলো অনিক , তারপর বলল “ আমি মনে হয় জোড় করে খেয়েছি “

“ আমি কি সে কথা বলেছি , আচ্ছা ঠিক আছে আগে বলো , যা দেখলে তা পছন্দ হয়েছে? “ এই বলে এক পাক ঘুরল ইভা

“ অনে.........কে , ইচ্ছে হচ্ছে চিবিয়ে খেয়ে ফেলি “ কথাটা বলে অনিক ভাবল একটু বেশি হয়ে গেলো কিনা , শত হলেও মফঃস্বল এর মেয়ে ইভা ,

“ ঈশ সখ কত , তোমার মাথায় কি সুধু খাওয়া দাওয়ার কথা ঘোরে , অন্য কিছু ভাবতে পারো না “

“ কি ভাববো তুই ই বল “

“ একটু রোমান্টিক ভাবে বলতে পারতে , যে আমাকে অনেক সুন্দর লাগছে “ ইভা ঠোট ফুলিয়ে বলল

“ চল বাইরে গিয়ে আম গাছের নিচে বসে কথা বলি , আনিকাকেও ডাক , নয়তো মাথায় সুধু খাওয়া দাওয়ার কথা আসছে”

সত্যি বলতে একা ঘরে ইভার সাথে নিজেকে বিশ্বাস করছে না অনিক , অন্য কেউ হলে হয়ত অনিক এতো কিছু ভাবত না । কিন্তু এই মেয়েকে বিশেষ ভাবে ট্রিট করতে চায় অনিক । না বোনের বান্ধবি আর বন্ধুর বোন হিসেবে নয় , ইভা নিজেই বিশেষ কিছু ।
 
অনেক অপেক্ষায় ছিলাম। জলদি সুস্থ হয়ে উঠুন।
 
ভাইয়া দ্রুত সুস্থ হোন আর গল্প নিয়ে ফিরে আসেন শুভ কামনা।
 
আগামী কয়েক দিনের মাঝেই নতুন আপডেট নিয়ে ফিরছি , সবাই কে ধন্যবাদ ।
 

Users who are viewing this thread

Back
Top