What's new
Nirjonmela Desi Forum

Talk about the things that matter to you! Wanting to join the rest of our members? Feel free to sign up today and gain full access!

আমার স্বপ্ন তুমি by Mr fantastic (1 Viewer)

[HIDE]


কিচেনে গিয়ে পাউরুটি টোস্ট করে জ্যাম মাখাচ্ছি এমন সময় পিঠের উপর থেকে নীচে অবধি নরম কোমল মাংসল ছোঁয়া পেলাম। ঘাড় ঘুরিয়ে দেখি দেবিকা পিছন থেকে দুহাতে আমার বুক আঁকড়ে জড়িয়ে ধরেছে আমাকে। ওর ভরাট স্তনযুগল লেপ্টে আছে আমার পিঠের ওপর, জামার উপর দিয়েও ওর নুড়ির মতো স্তনবৃন্তের স্পর্শ টের পেলাম।

আমি হেসে বললাম, কি ব্যাপার এতো খিদে পেয়েছে যে আর তর সইছে না ?
আমার কাঁধের নিচে গাল চেপে আদুরে গলায় বলল, উমম আপনাকে একটুও ছেড়ে থাকতে ভালো লাগছে না।
-তাহলে এক কাজ করি চলো, তোমার বিড়ালে আমার মোরগটা ভরে রেখে দিই সবসময়, আর আলাদা থাকতে হবে না !
দেবিকা আমাকে ছেড়ে কোমরে হাত রেখে কটমট করে বললো, দিলে তো মুডটা নষ্ট করে, সবসময় মাথায় খালি ওই ঘোরে তোমার ?
পরক্ষনেই মুখে হাত চাপা দিয়ে চোখ বড়ো বড়ো করে বললো, এই যাঃ, আপনাকে ভুল করে 'তুমি' সম্বোধন করে ফেললাম। সরি।
আমি হেসে বললাম, আরে ঠিক আছে সরি বলতে হবে না, আমি কিছু মনে করিনি।
দেবিকা উৎফুল্ল হয়ে বললো, তাহলে 'তুমি' করে ডাকতে পারি ? আপনি আপনি করে বলতে ভালো লাগছে না।
- বেশ তো, বলতেই পারো। 'তুমি' ডাকটা অনেক বেশি আপন।
দেবিকা খুশি হয়ে আমার গালে আলতো করে একটা চুমু দিয়ে বললো, আচ্ছা কি বানাচ্ছো ? আমি কিছু হেল্প করবো ?
বললাম, জ্যাম-টোস্ট, ওমলেট আর ফলের রস। তুমি পেঁয়াজ, লঙ্কা, টমেটো কাটতে থাকো তাহলে, ওই ওখানে রাখা আছে সব।

টেবিলে খেতে খেতে দেখলাম দেবিকা মাঝে মাঝেই খাওয়া ফেলে আমার দিকে তাকিয়ে আছে।
হেসে জিজ্ঞেস করলাম, খাবার ভালো লাগছে না ? ঝাল বেশি হয়েছে ? নুন কম?
দেবিকা মাথা নাড়িয়ে বললো, একদমই না, দারুন হয়েছে।
- তাহলে খাওয়া থামিয়ে তাকিয়ে আছো যে।
- আসলে তোমাকে দেখছি, খুব ভালো লেগে গেছে তোমাকে, তাকিয়েই থাকতে ইচ্ছে করে।
- ভ্রু নাচিয়ে বললাম, একটা কথা বলো তো, কলেজে সমবয়সী ছেলেদের কাউকেই তোমার ভালো লাগে না? দেবিকা ঠোঁট উল্টে বললো, নাহ কাউকে ভালো লাগে না, সবাই বড্ডো ছেলেমানুষীতে ভরা আর কেমন হ্যাংলা মতো।
আমি হেসে বললাম, তোমার আমাকে ভালো লাগে ? আমি তো আধবুড়ো, পঁয়ত্রিশ বছর হবে এবার।
দেবিকা চোখ পাকিয়ে বললো, কোন স্টুপিড তোমাকে আধবুড়ো বলে হ্যাঁ ? কত্তো হ্যান্ডসাম, শক্তপোক্ত নির্মেদ চেহারা, আর তোমার গলার স্বর খুব আকর্ষণীয়।
ওর হাতটা ধরে করতলে একটা ছোট্ট চুমু খেয়ে বললাম, আর তুমি খুব মিষ্টি, তোমার গলার স্বর ঝরনার শব্দের মতো সুমধুর।
দেবিকার টোপাপোনা গাল দুটো একটু রাঙা হয়ে উঠলো।
- আর একটা কথা, কলেজের বাইরে আমাকে স্যার বলতে হবে না, শুধু উজান বলেই ডেকো কেমন ? আনন্দে দেবিকার চোখদুটো উজ্জ্বল হয়ে গেল, বললো, সত্যি ? আমি তো এটাই চাইছিলাম কিন্তু বলতে বাধো বাধো ঠেকছিল।
ওর তুলতুলে গালে আলতো করে টোকা মেরে বললাম, নাও ইউ হ্যাভ দ্য পারমিশন। দেবিকা চেয়ার ছেড়ে উঠে আমার কোলের ওপর এসে দুহাতে আমার গলা-কাঁধ জড়িয়ে ধরে আমার ঠোঁটে ওর রসালো পুরুষ্ট ঠোঁটজোড়া মেলে দিয়ে গভীর চুম্বন করলো।


ঠোঁট ছেড়ে আমার নাকের ডগায় চুমু খেয়ে দেবিকা বললো, যাও এবার স্নানটা সেরে নাও। গা থেকে গন্ধ ছাড়ছে তোমার, সাবান মাখো না ঠিক করে নাকি ? আমি চোখ নাচিয়ে বললাম, না গো পিঠে হাত যায় না।

দেবিকা ভ্রু কুঁচকে হেসে বললো, খুব না ? মাথায় দুষ্টু বুদ্ধি তো ভালোই খেলে, ঠিক আছে চলো আমি সাবান মাখিয়ে দেবো।
অগত্যা জামা খুলে কোমরে গামছা জড়িয়ে বাথরুমে গেলাম আর দেবিকা ওর টিশার্টটা খুলে ব্রেসিয়ার পরা অবস্থায় ঢুকলো আমার আগে আগে।
আমার গায়ে মাথায় জল ঢেলে দিয়ে হাতে-পায়ে, বুকে, বাহুসন্ধিতে, কোমরে, পিঠে সাবান মাখিয়ে দিতে লাগল। শুধুমাত্র অন্তর্বাসে ঢাকা দেবিকার উদ্ভাসিত দেহবল্লরী দেখে আর সারা শরীরে ওর নরম হাতের স্পর্শ পেয়ে আমার পুরুষাঙ্গ কাঁপতে লাগল গামছার ভেতর থেকে। দেবিকা সযত্নে হাত দিয়ে ঘষে ঘষে ফেনা করে সাবান মাখিয়ে দিতে লাগল আমার বুকে-পিঠে। খুব কাছে থাকায় ওর নিঃশ্বাসের উষ্ণতা আমার মুখের উপর টের পেলাম বারংবার।
ওর কালো স্যাটিন ব্রায়ে ঢাকা সুডৌল স্তনযুগলের ওঠানামা আর গিরিখাতের মতো গভীর স্তনবিভাজিকায় আমার নজর দেখে দেবিকা ঠোঁট টিপে হেসে বললো, থাক অতো দেখতে হবে না। এবার চোখটা বন্ধ করে পিছন ফিরে দাঁড়াও মাথায় শ্যাম্পু করে দেবো, চুলটাও তো আঠা আঠা হয়ে গেছে।
দেবিকার এই স্নেহপূর্ণ সাহচর্য আমার ভালো লাগছিল।

পিছনে ঘুরে দাঁড়াতে দেবিকা আমার মাথায় ভালো করে শ্যাম্পু মাখিয়ে ধীরে ধীরে জল ঢেলে সারা গা থেকে ফ্যানা গুলো ধুয়ে দিতে লাগল। মাথার চুল, পিঠ সযত্নে জলে ধুয়ে পরিষ্কার করে তোয়ালে দিয়ে গা মুছিয়ে দিল।
হঠাৎ এক টানে দেবিকা আমার গামছাটা কোমর থেকে খুলে নিয়ে খিলখিল করে হাসতে লাগল।
আমি চোখ পাকিয়ে বললাম, অ্যাই এটা কি হচ্ছে ? দেবিকা আদুরে গলায় বললো, বাঃ রে তোমার একারই খালি দুষ্টুমি করতে ইচ্ছে করে ? আমার করতে পারে না ?
তারপর আমার পূর্ণমাত্রায় দন্ডায়মান লিঙ্গের দিকে তাকিয়ে চোখ বড়ো করে বললো, ও মা তোমার ধোনবাবাজি তো ক্ষেপে গেছে পুরো।
আমি চোখ মেরে বললাম, ওকে একটু আদর করে ঠান্ডা করে দাও তাহলে !
বলা মাত্র দেবিকা নিজের হাতের নরম মুঠির মধ্যে আমার লিঙ্গ ধরে ওঠা-নামা করতে লাগলো আর সেই সাথে আমার ঠোঁটে ওর পেলব ঠোঁটজোড়া চেপে গভীর চুম্বনে মেতে উঠল। কামঘন চুম্বনের সময় যত বাড়তে লাগল ততো আমার লিঙ্গের ওপর ওর হস্তচালনার তীব্রতাও বাড়তে লাগল।
এবার ঠোঁট ছেড়ে আমার চিবুক, গলা, বুকের আর পেটের পেশীতে ভেজা চুম্বন এঁকে দিয়ে হাঁটু গেড়ে বসে তলপেটের নীচে নামলো।
ওর ঠোঁটের সামনে আমার ঝুলন্ত উত্থিত পুরুষাঙ্গ দেখে কামুকি ভঙ্গিমায় বললো, উমমম ছোট খোকা তো আরও ফুলেফেঁপে উঠলো আমার আদরে। এর মনে হচ্ছে আরও বেশি কিছু চাই !, এই বলে লিঙ্গমুন্ডির উপরে ছিদ্রটা ওর নরম জিভ দিয়ে চেটে দিয়ে দেবিকা ওর গোলাপি পেলব ঠোঁটজোড়া চেপে ধরলো আমার ধোনের গোল মুন্ডি বরাবর।
সেখান থেকে শুরু করে লিঙ্গের গোরা পর্যন্ত চুমু খেলো। পরশুই আমার ধোনের চারপাশের অবাঞ্ছিত চুল কামিয়েছি তাই দেবিকার কোনো অসুবিধা হচ্ছে না।
আবার লিঙ্গের অগ্রভাগে ওর সুপুষ্ট অধরযুগল গোল করে চেপে বসিয়ে চুষতে লাগল, যেন কোনো ললিপপ পেয়েছে। দেখতে দেখতে পুরুষাঙ্গের প্রায় অর্ধেকটা দেবিকার মুখের ভেতর হারিয়ে গেল।
নিপুণ কায়দায় ব্লোজব দিতে লাগল দেবিকা মাথা নাড়িয়ে নাড়িয়ে, সেই সাথে স্লপ স্লপ করে চোষনের শব্দে ভরে উঠল বাথরুম। আমি কামসুখে দেয়ালে পিঠ দিয়ে উপভোগ করতে লাগলাম দেবিকার উষ্ণ ভিজে মুখের ভেতরে আমার লৌহকঠিন লিঙ্গের চলাচল।
মাঝে মাঝে আমার দিকে ওর আয়ত দীঘল চোখের কামাতুরা দৃষ্টি নিয়ে তাকিয়ে লিঙ্গমেহন করছে দেবিকা। ওর রসালো গোলাপি পুরু ঠোঁটের ভেতর আমার কঠিন দৃঢ় লিঙ্গের চলাচল বড়োই কামোত্তেজক আর তৃপ্তিদায়ক হয়ে উঠছে যখনই আমার দিকে দেবিকা ঐভাবে কামুকি নয়নে তাকাচ্ছে।
এভাবে প্রায় মিনিট দশেক মুখমৈথুনের পর আমি বুঝলাম আমার চরম সময় আসন্ন।
যৌনসুখে কাঁপা গলায় দেবিকাকে বললাম, আমার হবে দেবিকা, বেরোবে একটু পরে...দেবিকা বোতল থেকে ছিপি খোলার মতো শব্দ করে দন্ডায়মান দৃঢ় লিঙ্গ থেকে ওর ঠোঁটটা সরাতেই দেখলাম লিঙ্গের আগা থেকে একটা সুতোর মতো লালা ওর ঠোঁটের মাঝে হারিয়ে গেছে।
সেটাকে হাত দিয়ে পেঁচিয়ে নিয়ে ওর লালারসে সিক্ত আমার পুরুষাঙ্গটা হস্তমৈথুন করতে করতে দেবিকা মিহি গলায় বললো, বের করে দাও সবটা, কাল তোমার বীর্য টেস্ট করা হয়নি, আজ এর স্বাদ নেবো পুরোটা।
পুনরায় "উমমম মমম স্লপ গ্লপ" ইত্যাদি কামুক শব্দ করে রতিপটিয়সী দেবিকা চুষতে লাগল হাঁসের ডিমের মতো গোল মুন্ডিসহ লিঙ্গের আগাটা। ঘনিয়ে এলো আমার অর্গাজমের চরম মুহূর্ত। দেবিকার মাথা দুহাতে ধরে কোমর নাড়িয়ে ওর নরম গরম ভেজা মুখের ভেতর লিঙ্গ সঞ্চালন করতে করতে গরম লাভাস্রোতের মতো বীর্যস্খলন করতে লাগলাম। দেবিকার ঠোঁটের পাশ দিয়ে কিছু ঘন বীর্য গড়িয়ে পড়ল।
দেবিকা তৃপ্তির সঙ্গে পুরোটা পান করে কাম মদির ভাবে হেসে হাঁপাতে হাঁপাতে বললো, ডেলিশিয়াস, উজান তোমার টাটকা বীর্যের স্বাদ পুরো দইয়ের ঘোলের মতো !



[HIDE][/HIDE]
[/HIDE]


[/HIDE]
 
[HIDE]

প্রেমাবেশে মাখা স্নানপর্বের পর দেবিকা ঘরদোর পরিষ্কার করা নিয়ে লেগে পড়ল। ওর মতে ঘরে জিনিসপত্র সব এদিক ওদিক ছড়ানো ছেটানো আছে, দেয়ালে ঝুল এতোই জমেছে যে নতুন ঝুল পড়ার জায়গা নেই, মেঝের শ্বেতপাথর ময়লা জমে চ্যাটচ্যাটে হয়ে গেছে। যদিও অবস্থা এতটাও খারাপ না, দেবিকাকে বারণ করলাম এতো খাটতে হবে না, ও ঠিকই আছে।
কিন্তু শুনলো না, বরং ঝামটা মেরে বললো, হয় ঘর গুছিয়ে ঝাড়পোঁছ করবো নয়তো ছুঁতে দেবো না তোমাকে। ব্যাস, আমার কোনো ওজরই টিকলো না। শেষে দুজনে মিলেই লেগে পড়লাম ঘর সাফাইয়ের কাজে।
এরই ফাঁকে দেবিকাকে জিজ্ঞেস করলাম দুপুরে কি খাবে ?
দেবিকা হাসিমুখে বললো বিরিয়ানী খাওয়াবে ?
ব্যস সঙ্গে সঙ্গে ফোন করে আমিনিয়াতে দু'প্লেট মাটন বিরিয়ানীর হোম ডেলিভারি অর্ডার করে দিলাম।
এটা মানতেই হবে দেবিকার ছোঁয়ায় অগোছালো ঘরের পুরো ভোল পাল্টে গেল, বেশ শ্রী ফিরে এলো।

যথারীতি সময় মতো ডেলিভারি বয় বিরিয়ানী নিয়ে হাজির হল। দেবিকা খুব তৃপ্তি ভরে খেলো।
জিজ্ঞেস করলাম, তোমার বিরিয়ানি খুব পছন্দ ?
ঘাড় কাত করে হেসে বললো, হ্যাঁ ভীষণ প্রিয় তবে এক প্লেট অনেক সময় পুরো শেষ করতে পারি না।
আমি হেসে ওকে খাইয়ে দিতে লাগলাম। তাই দেখে দেবিকাও নিজের হাতে আমাকে খাইয়ে দিতে লাগল। এতক্ষন ধরে ঘর ঝাড়ামোছার পরিশ্রমে দুজনেরই খুব খিদে পেয়ে গেছিল, গোগ্রাসে খেয়ে নিলাম সব।
খাওয়া শেষে দেবিকা আঙুলে লাজবাব চিহ্ন দেখিয়ে বললো, উল্ল্স দারুন বানিয়েছিল কিন্তু !
ওর এই উচ্ছল ভাবভঙ্গি দেখে আমারও ভালো লাগল।

খাবার পর দুপুরে খাটে হেলান দিয়ে আধশোয়া হয়ে খবরের কাগজ পড়ছি। দেবিকা আমার বাঁপাশ ঘেঁষে জড়িয়ে ধরে বুকে মাথা রেখে রয়েছে, মাঝে মাঝে খবরের কাগজের পাতায় চোখ বোলাচ্ছে। ঠোঁটে নয়নাভিরাম হাসি আর চোখে খুশীর উজ্জ্বলতা লেগে আছে। বলা বাহুল্য একটু আগেই আমাদের মধ্যে সুদীর্ঘ সময় ব্যাপী তীব্র প্রেমময় মিলন হয়েছে। সেই মিলনের সুখানুভূতির রেশ এখনও আমাদের দুজনের শরীরে আবিষ্ট হয়ে আছে। দেবিকার মাখনসম কোমর বেষ্টন করে থাকা আমার হাতের আঙ্গুল মাঝে মাঝে খেলা করে বেড়াচ্ছে ওর পেটের নরম মেদের মসৃণ ভাঁজের ওপর।
দেবিকা আমার খোলা বুকে ওর তর্জনী দিয়ে আঁচড় কাটতে কাটতে বললো, তোমার নাকটা খুব সুন্দর টিকালো, ইসস এরকম নাক যদি আমার থাকতো। আমি মুচকি হেসে ওর নাকে নাক ঘষে দিয়ে বললাম, মোটেই না, তোমার এই একটু বোঁচা নাকটা আমার খুব প্রিয়, এই বলে ওর নাকের ডগায় একটা চুমু খেয়ে নিলাম আলতো করে। দেবিকার মুখটা লজ্জায় একটু আনত হয়ে গেল, আরও নিবিড় ভাবে জড়িয়ে ধরলো আমাকে। লাজে রাঙা হয়ে ওঠা দেবিকার টোপা টোপা গালে একটা মিষ্টি করে চুমু দিতেই দেবিকা প্রত্যুত্তরে আমার গালে ওর নরম রসগোল্লার চেয়েও মিষ্টি ঠোঁটজোড়া চেপে ধরল।



খেলার পাতায় যেতেই চোখে পড়ল আজ ডার্বি খেলা, ইস্টবেঙ্গল -মোহনবাগান ডার্বি খেলা।
দেবিকা চোখ বড়ো বড়ো করে বললো, এ মা ভুলেই গেছিলাম, আজকে তো বড়ো ম্যাচ ! টিভিটা চালাও তাড়াতাড়ি।
আমি অবাক হয়ে শুধোলাম, তুমি ফুটবল দেখো নাকি?
-হ্যাঁ খুব দেখি, ফুটবল দেখতে দারুন লাগে। আমি ইস্টবেঙ্গলের ডাই হার্ড ফ্যান, তুমি কোন দলে ? বিছানার একদিকে পড়ে থাকা রিমোর্টটা নিয়ে টিভি অন করে বললাম, আমি জাত মোহনবাগানী।
দেবিকা ভেংচি কেটে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে বললো, ওই কথাটা মনে আছে তো ? "যত বার ডার্বি তত বার হারবি ", এই বলে খিল খিল করে হেসে উঠল।
চোখ নাচিয়ে বললাম, সেটা সময়ই বলবে, দেখা যাক কি হয় !
খেলা অনেক আগেই শুরু হয়ে গেছিল, দুটো দলই ডিফেন্সিভ খেলছে। ওপেন ফুটবল যে হবে না এটা জানাই ছিল। আড়চোখে তাকিয়ে দেখলাম দেবিকা একমনে চোখ বড়ো করে টিভির দিকে ঠায় ভাবে তাকিয়ে। প্রথম অর্ধ গোলশূন্যই থাকলো। দ্বিতীয়ার্ধের ষাট মিনিটের মাথায় মোহনবাগান কর্নার থেকে একটা গোল করে দেয়।
দেবিকা হতাশ সুরে জোর গলায় বলে উঠল, এটাআআ কি হলওও ?
তাকিয়ে দেখলাম ওর চোখ ছলছল করছে। বুঝলাম দেবিকা খেলা নিয়ে বেশ আবেগপ্রবণ।
ওকে জড়িয়ে ধরে বললাম, আরে এখনও খেলা বাকি আছে তো। দেখো ইস্টবেঙ্গলও ঠিক গোল করবে। দেবিকা খুশি হয়ে বললো, সত্যি বলছো? এই নাও উমমমমআহহ !
কিন্তু আমার কথাকে ভুল প্রমান করে মোহনবাগান ছিয়াশি মিনিটে আরেক গোল দিয়ে দিল ইস্টবেঙ্গলের জালে। খেলা শেষ হল 2-0 ফলাফলে। অন্যদিন হলে আমার খুশি হওয়ারই কথা কিন্তু দেবিকার থমথমে চেহারা দেখে আমারই খারাপ লাগল।
ফ্যালফ্যাল করে ভাসা ভাসা চোখে তাকিয়ে বললো, যাঃ হেরে গেল, একটা গোলও করতে পারল না।
ওকে সান্ত্বনা দিয়ে বললাম, এতো ভেঙে পড়ো না, খেলায় তো হার-জিত থাকবেই। তবে দেখো, পরের খেলায় ইস্টবেঙ্গলi জিতবে।
-ঠিক বলছো ?
-একদম ঠিক বলছি দেখে নিয়ো।
দেবিকা আদুরে গলায় থ্যাঙ্ক ইউ বলে আমার গলা জড়িয়ে চুমু খেলো।

দেখতে দেখতে কথায়-ইয়ার্কিতে সময় কিভাবে কেটে গেল বুঝতেই পারলাম না আমরা। দেবিকার যাবার সময় এসে গেল আর আমার মনটাও কেমন হু হু করে উঠল।
বিদায়বেলায় দেবিকা আমার গালে হাত বুলিয়ে বললো, তোমাকে ছেড়ে যেতে একদম ভালো লাগছে না। খুব ভালো লাগে তোমার সান্নিধ্য উপভোগ করতে।
ওকে জড়িয়ে ধরে নিজের বুকের মাঝে এনে বললাম, আমারও ছাড়তে ইচ্ছে করছে না সোনা। পরে আবার আসবে তো ?
দেবিকা ওর পায়ে ভর দিয়ে উঁচু হয়ে আমার কপালে আর ঠোঁটে প্রেমচুম্বন করে বললো, নিশ্চয়ই আসবো উজান, যখন বলবে তখনই আমি আসবো।
সিঁড়ি দিয়ে দেবিকার নেমে যাওয়ার দিকে তাকিয়ে থাকলাম, বুকটা নিজের অজান্তেই কেঁপে উঠল। আচ্ছা, যাবার সময় দেবিকার চোখের কোনায় কি একটু জলের আভাস ছিল ?

এরপর দিন সাতেক কেটে গেছে। দেবিকার সাথে ফোনে রোজই দিনে অনেকবার করে কথা হয়।

সেদিনের দেবিকার পরা টিশার্টটা আমি আর ব্যবহার করিনি বা কাচি নি। রাতে শোবার সময় টিশার্টটাকে জড়িয়ে ঘুমোই, নাক টেনে গভীর শ্বাস নিলেই দেবিকার শরীরের সুবাস পাই ওতে। মনে হয় দেবিকা যেন পাশেই আছে আমার। আর প্রতিদিন সকালে ঘুম ভাঙে ফোনের ওপ্রান্ত থেকে দেবিকার মিষ্টি মধুঢালা কণ্ঠের "গুড মর্নিং ডার্লিং" শুনে।
এছাড়া দুপুরে টিফিনের সময় "লাঞ্চ করেছো ? এখনও খাও নি ? তাড়াতাড়ি খেয়ে নাও" এসব তো আছেই। তবে আমি ওর পড়াশোনার ব্যাপারে খোঁজ নিলেই গলার স্বর কাঁচুমাচু হয়ে যায়, দায়সারা গোছের জবাব দেয়। বুঝতে পারি ও বিষয়ে ওর এলাৰ্জি আছে।
মাঝে একদিন দেবিকার আবদারে ওকে নিয়ে সিনেমায় গিয়েছিলাম। খুব ভালো লেগেছিল সেদিন। নিজে সিনেমা দেখে যতো না আনন্দ পেয়েছি তার থেকেও বেশি খুশি হয়েছি দেবিকার প্রাণোচ্ছল হাসিমাখা উজ্জ্বল মুখটা দেখে।

আজ কলেজে একটা মিটিং থাকায় সন্ধ্যে অবধি সবাই ছিলাম। মিটিং শেষে কয়েকজন কলিগ মিলে ক্যান্টিনে একটু আড্ডা মারছিলাম চা-সিগারেট সহযোগে।
হঠাৎ দেখি দেবিকার ফোন। এই সময় তো সাধারণত ফোন করে না।
বাকিদের থেকে একটু আড়ালে গিয়ে ফোন তুলে বললাম, হ্যালো, বলো আমার মিষ্টি ময়নাপাখি।
ফোনের ওপাশ থেকে ভেসে এলো দেবিকার কাঁপা কাঁপা ভয়ার্ত গলা, আ-আমাকে বাঁচাও উজান, বাঁচাও আমাকে !
ভ্রু কুঁচকে গেল আমার, বুঝলাম কোনো বিপদ হয়েছে। উদ্বিগ্ন কণ্ঠে জিজ্ঞেস করলাম, কি হয়েছে তোমার ? এরম করছো কেন ?
দেবিকা চাপা গলায় কান্নায় ভেঙে পড়ে বললো, ওরা আমার সর্বনাশ করে দেবে প্লিজ বাঁচাও আমাকে !
-হ্যালো, তুমি কোথায় আছো বলো আমাকে জলদি।
-পার্ক স্ট্রিটের হোটেল ব্লু প্যারাডাইজের থার্ড ফ্লোরে 56 নং রুমে !
-ঠিক আছে একদম ঘাবড়াবে না, পারলে কোথাও লুকিয়ে পড়ো, আমি এক্ষুনি আসছি !, এই বলে ফোন রেখে ঘুরে আমার কলিগ সুমনকে বললাম, তোর বাইকের চাবিটা দে কুইক, ইমার্জেন্সি আছে !

প্রাণপনে যতো জোরে চালানো যায় চালাচ্ছি, শালা পুরোনো বাইক, গিয়ার উঠতে চায় না, তার ওপর এই সন্ধেবেলার কলকাতার ট্রাফিক ! প্রতিটি মিনিট যেন একঘন্টার সমান।



[/HIDE]
 
[HIDE]

হঠাৎ দেখি দেবিকার ফোন। এই সময় তো সাধারণত ফোন করে না।
বাকিদের থেকে একটু আড়ালে গিয়ে ফোন তুলে বললাম, হ্যালো, বলো আমার মিষ্টি ময়নাপাখি।
ফোনের ওপাশ থেকে ভেসে এলো দেবিকার কাঁপা কাঁপা ভয়ার্ত গলা, আ-আমাকে বাঁচাও উজান, বাঁচাও আমাকে !
ভ্রু কুঁচকে গেল আমার, বুঝলাম কোনো বিপদ হয়েছে। উদ্বিগ্ন কণ্ঠে জিজ্ঞেস করলাম, কি হয়েছে তোমার ? এরম করছো কেন ?
দেবিকা চাপা গলায় কান্নায় ভেঙে পড়ে বললো, ওরা আমার সর্বনাশ করে দেবে প্লিজ বাঁচাও আমাকে !
-হ্যালো, তুমি কোথায় আছো বলো আমাকে জলদি।
-পার্ক স্ট্রিটের হোটেল ব্লু প্যারাডাইজের থার্ড ফ্লোরে 56 নং রুমে !
-ঠিক আছে একদম ঘাবড়াবে না, পারলে কোথাও লুকিয়ে পড়ো, আমি এক্ষুনি আসছি !, এই বলে ফোন রেখে ঘুরে আমার কলিগ সুমনকে বললাম, তোর বাইকের চাবিটা দে কুইক, ইমার্জেন্সি আছে !

প্রাণপনে যতো জোরে চালানো যায় চালাচ্ছি, শালা পুরোনো বাইক, গিয়ার উঠতে চায় না, তার ওপর এই সন্ধেবেলার কলকাতার ট্রাফিক ! প্রতিটি মিনিট যেন একঘন্টার সমান।

পনেরো মিনিটের মধ্যে শোভাবাজার থেকে পার্ক স্ট্রিটে পৌঁছে গেলাম শর্ট কাট নিয়ে। হোটেলের সামনে এসে বাইক থামিয়ে সোজা ঢুকে গেলাম ভেতরে।
সস্তা হোটেল। একতলাটা বার কাম নাইটক্লাবের মতো। যারা বসে আছে তাদের দেখে সম্ভ্রান্ত ঘরের মনে হয় না। অদূরে বারসিঙ্গার কোমর দুলিয়ে টেবিলে টেবিলে গিয়ে অশ্লীল ভঙ্গিতে গান গেয়ে বিনোদনের খোরাক যোগাচ্ছে। বারের ডানদিকে দৌড়ে গিয়ে লিফট আর সিঁড়ি দুটোই দেখতে পেলাম।
লিফট বিকল, অগত্যা সিঁড়ি দিয়ে উপরে উঠতে লাগলাম দ্রুত বেগে। থার্ড ফ্লোরের কাছাকাছি আসতে একটা চিৎকার-গর্জনের শব্দ পেলাম।
সজাগ হয়ে গেলাম। রুমের দরজার ওপরে নম্বরের ফলক দেখে দেখে যত 56 নং রুমের দিকে এগোচ্ছি ততই আওয়াজ প্রকট হচ্ছে।
একটা করিডোরের বাঁক ঘুরতেই দেখলাম সামনের রুমের বন্ধ দরজার ওপর একটা পঁচিশ-ছাব্বিশ বছরের ছেলে সমানে পা দিয়ে লাথি মেরে যাচ্ছে আর মুখে অকথ্য গালিগালাজ। পরনে রংচঙে একটা টাইট ফিটিংস জামা, কালো জিন্স আর মাথার চুলে সোনালী রং করা। তার পাশে অপেক্ষাকৃত ভদ্রস্থ ঈষৎ স্থূল একটা লোক চেঁচিয়ে বলছে, শালী দরওয়াজা খোল নেহিতো তোরকে ঘুস জায়েঙ্গে ! কমবয়সী ছেলেটা দরজায় লাথি মেরে বলছে দরওয়াজা খোল, আজ তুঝে লে কারহি রাহেগে ! পরিস্থিতি কিছুটা বুঝতে পারলাম।
কাছে গিয়ে বজ্রকঠিন গলায় বললাম, কি হচ্ছে এখানে ? চলে যা ভালোয় ভালোয়।



আমার আওয়াজ শুনে ছেলেটা ঘুরে তাকালো। নেশার চোটে চোখ লাল হয়ে আছে।
আমার দিকে বিকৃত ভাবে তাকিয়ে বললো, তু কৌন হ্যায় বে ? ইস রেন্ডিকা নেয়া আশিক ?
-চোপ শালা মুখ সামলে কথা বল, রাগে আমার কপালের শিরা দপদপ করছে।
ছেলেটা কুটিল হেসে বললো, ফির তো তুঝে পেহেলে খাতাম কার না পড়েগা !, এই বলে কোমরে গুঁজে রাখা পিস্তলটা বের করে আমার দিকে তাক করলো। জীবনে প্রথম পিস্তলের খোলা নলের সামনে দাঁড়িয়ে। কিন্তু আমি চন্দননগরের মাল। পড়াশোনাটা মন দিয়ে করলেও কাঁচা বয়সে পাড়ায় মস্তানগিরি কম করিনি। চকিতে আমার বুকপকেটে রাখা পেনটা তুলে নিলাম ডানহাতে। আমার পেনটা একটু অন্যরকম। পেনের মাথার ঢাকনাটার নীচে একটা পেপার কাটার ছুড়ি লাগানো আছে। বুড়ো আঙুল দিয়ে ঢাকনাটা সরিয়ে বিদ্যুতের গতিতে পেনটা সোজা ছুঁড়ে দিলাম ছেলেটার পিস্তল ধরা হাত লক্ষ্য করে।
মুহূর্তের মধ্যে পেনের ছুরির অংশটা ছেলেটার হাতের আঙুলে বিঁধে গেল। ফলে ছেলেটা একটা "আঁক " শব্দ করে গুড়ুম করে গুলি চালালে গুলিটা আমার মাথার ওপর দিয়ে চুল ঘেঁষে বেরিয়ে যায়। এইটুকু অবকাশই আমার কাছে যথেষ্ট। ক্ষিপ্র গতিতে ছুটে গিয়ে ছেলেটার মালাইচাকিতে আমার বুট সজোরে বসিয়ে বাঁহাতে ওর কলার ধরে ডানহাতের মুষ্টিবদ্ধ হাতে অনবরত ঘুষি মেরে চললাম নাকের ওপর যতক্ষণ না শুয়োরের বাচ্চাটা জ্ঞান হারায়। মালটা লুটিয়ে পড়লে ক্রুদ্ধ চোখে পাশে হতভম্ব হয়ে দাঁড়িয়ে থাকা লোকটার দিকে তাকালাম।
ওর দিকে ঘুষি বাগিয়ে এগোতেই কেঁদে উঠে বললো, মুঝে কুছ নেহি মালুম, ইয়ে আদমি কাহা থা উস লাড়কি কো বন্দি বানানে কেলিয়ে !
ওর গালে একটা ঘুষি মারতেই একটা দাঁত ভেঙে বেরিয়ে পড়ল। কলার ধরে ধাক্কা মেরে ঠেলে চোয়াল শক্ত করে চিবিয়ে চিবিয়ে বললাম, ভাগ শুয়ার এখান থেকে ! ফের যদি দেখি তো মেরে পুঁতে দেবো শালা কেউ বডি খুঁজে পাবে না। লোকটা ধড়মড়িয়ে সিঁড়ি দিয়ে নেমে পালিয়ে গেল।
দেরি না করে বন্ধ দরজায় করাঘাত করে বললাম, দেবিকা দরজা খোলো আমি এসেছি।
ভেতর থেকে আতঙ্কিত গলায় উত্তর এলো, কে ? কে এসেছো ?
গলা নরম করে বললাম, আমি উজান। কোনো ভয় নেই আর, দরজা খোলো দেবিকা।
কয়েক সেকেন্ড পর দরজা খুলে গেল, সামনে উশকো খুসকো চুলে আতঙ্কিত পাংশু চেহারার দেবিকা। ঘরে ঢুকতেই আমার বুকের ওপর ঝাঁপিয়ে এসে কান্নায় ভেঙে লুটিয়ে পড়ল।


লাল স্লিভলেস ওয়েস্টার্ন ড্রেস পরিহিতা দেবিকার মাথায় পিঠে সস্নেহে হাত বোলানোর পর ওর কান্না কিছুটা ধরে এলো।

কান্নাভেজা গলায় আমার বুকের ওপর নরম মুঠির কিল মেরে বলল, তুমি এতো দেরি করলে কেন? ভয়ে, চিন্তায় আমি মরে যাচ্ছিলাম।
দুই হাতের করতলে ওর কাঁপতে থাকা গাল ধরে কপালে একটা প্রেমচুম্বন এঁকে আস্বস্ত গলায় বললাম, এইতো আমি এসে গেছি, কোনও ভয় নেই আর, তাকাও আমার দিকে।
দেবিকা মুখ তুলে চাইলো। চোখের জলে ওর কালো কাজল আর আইশ্যাডো ঘেঁটে গেছে।
দু’হাতের বুড়ো আঙ্গুল দিয়ে ওর নরম গাল বেয়ে নেমে আসা অস্রুধারা মুছিয়ে বললাম, তুমি ঠিক আছো তো ?
দেবিকা শঙ্কিত স্বরে বললো, হ্যাঁ ঠিক আছি তবে সেন্সলেস হয়ে গিয়েছিলাম, দুর্বল লাগছে। জানো আমি এখানে... কথা শেষ হওয়ার আগেই দেবিকাকে থামিয়ে বললাম, ঠিক আছে পরে শুনবো সব কথা, এখন শীঘ্রই আমার বাড়ি চলো আগে। বাইরে একজনকে মেরে অজ্ঞান করে রেখেছি, সে জেগে ওঠার আগে বা অন্য কেউ এসে যাবার আগে আমাদের বেরোতে হবে এখান থেকে।
দরজার বাইরে পড়ে থাকা ছেলেটার দিকে ক্রুদ্ধ দৃষ্টিতে তাকিয়ে ওর রক্তাক্ত মুখের ওপর থুতু ছিটিয়ে দিল দেবিকা। আর সময় নষ্ট না করে দ্রুত দেবিকাকে নিয়ে হোটেলের বাইরে এসে বাইকে উঠে স্টার্ট দিলাম। গন্তব্য সোজা আমার দমদমের আপার্টমেন্ট।


ফ্ল্যাটে ঢুকে দরজা বন্ধ করে দেবিকাকে এক গ্লাস ঠান্ডা জল দিলাম। ঢকঢক করে এক চুমুকে পুরোটা খেয়ে নিয়ে সোফায় বসে পড়ল। ওর মুখের ফ্যাকাশে আতঙ্কিত ভাবটা অনেকটা কেটেছে।
একটা চেয়ার টেনে ওর সামনে বসে বললাম, হ্যাঁ এবার বলো।
দেবিকা বড়ো করে একটা শ্বাস নিয়ে আমার দিকে তাকিয়ে বলতে শুরু করলো, কয়েক মাস আগে একজন বিজনেসম্যানকে এসকর্ট দিতে একটা পার্টিতে যেতে হয়েছিল। সেখানে উনি মিঃ তেবরেওয়ালের সঙ্গে আমার পরিচয় করান। সে ফিল্ম প্রোডিউসারের লোক। আমাকে বলেছিল সিনেমায় নতুন মুখের দরকার হলে আমার সাথে যোগাযোগ করবে। আমি তো বেশ অবাক হয়েছিলাম শুনে।
একটু থেমে দেবিকা বললো, আর এসব কথা তোমার সাথে আলাপ হওয়ার অনেক আগের ঘটনা। ভুলেও গেছিলাম লোকটার ব্যাপারে। তোমাকে কিছু বলাও হয়নি তাই ওই নিয়ে।
জিজ্ঞেস করলাম, ওই তেবরেওয়াল কি একটু স্থূল, বেঁটে আর পাতলা চুলের ?
দেবিকা অবাক হয়ে বললো, হ্যাঁ, তুমি কি করে জানলে ?
মুচকি হেসে বললাম, ওর একটা দাঁত ভেঙে দিয়েছি। বেচারার কেঁদেকেটে একশা অবস্থা।

দেবিকার ঠোঁটে একটা হাসি ফুটে উঠলো। গর্বের হাসি, যা দেখে আমার ভালো লাগল।


[/HIDE]
 
[HIDE]

সময় নিয়ে চোখের পলক ফেলে দেবিকা বললো, আজকে সকালে সেই তেবরেওয়াল ফোন করেছিল। বললো যে অভিনয়ের জন্য এখন ওরা ফ্রেশ নায়িকা খুঁজছে তাই আমার সাথে কথা বলতে চায়।
আমি জিজ্ঞেস করলাম, তা এটা তুমি আমাকে জানালে না তখন ?
দেবিকা আর্ত চোখে তাকিয়ে করুন সুরে বললো, আমি তোমাকে সারপ্রাইজ দিতে চেয়েছিলাম উজান। আমি এই কলগার্লের পেশা ছাড়তে চেয়েছিলাম মনে প্রাণে। তাই বিকেলবেলা সময় মতো দেখা করতে যাই ওর সাথে। জানতে পারি একটা ওয়েবসিরিজে অভিনয়ের জন্য ওরা নতুন মুখ চাইছে। একটু সাহসী দৃশ্যে অভিনয় করতে হবে। জিজ্ঞেস করলো আমি রাজি কিনা। আমি বললাম ডিরেক্টরের সাথে কথা বলবো এ বিষয়ে। ও বললো ডিরেক্টর আধ ঘন্টার মধ্যে আসছে। কিন্তু আমি কি আর তখন জানতাম যে এসব আসলে সুরজের কারসাজি।
ভ্রু কুঁচকে জিজ্ঞেস করলাম, এই সুরজটা আবার কে ?
-প্রায় বছর খানেক আগে ক্লায়েন্ট ছিল এই সুরজ। রুলিং পার্টির ভাড়াটে ক্যাডার। অত্যন্ত নোংরা আর বাজে ব্যবহার। বেশ কয়েকদিন ধরে আমাকে ফোন করে বিরক্ত করছিলো। আমি এড়িয়ে গেছি, পাত্তা দিই নি।
উত্তেজিত গলায় বললাম, এসব কথা তুমি চেপে গেছো আমার থেকে ? আগে জানলে তোমাকে সাবধান করে দিতাম।
দেবিকা ছলছল চোখে বললো, তোমাকে আমার অতীত বলে আর ঘাঁটাতে চাইনি ওই সব দুর্বিসহ দিনের কথা, যখন আমি এই লাইন ছেড়ে দিয়েছি। আমি তাও রাগত ভাবে বলে গেলাম, আর তোমার কোনো আক্কেল হল না ? অভিনয়ের জন্য এতো ড্রামা ইনস্টিটিউট আছে, সেখানে না গিয়ে কেউ কেন তোমাকে ডাকবে ? তাও আবার স্টুডিওতে না ডেকে কোনো হোটেলের রুমে দেখা করতে বলবে ?
দেবিকা আমার বুকে মুখ গুঁজে ফুঁপিয়ে কেঁদে বললো, আমি কি করে বুঝবো যে ওই শয়তান সুরজের সাথে এসবের যোগসাজশ থাকবে ? তেবরেওয়াল আমাকে ড্রিঙ্কস অফার করছিলো, আমি নিতে চাইনি। কিন্তু খুব পিড়াপিড়ি করায় খেলাম। খাওয়ার পরেই চোখের পাতা ভারী হয়ে এলো। মাথা ঘুরতে লাগল। বুঝলাম ঘুমের ওষুধ মেশানো ছিল পানীয়তে। আবছা ভাবে শুনতে পেলাম ফোনে কথা বলছে, হ্যালো সুরজ ভাইয়া, কাম হো গ্যায়া, আপ আজাইয়ে। তেবরেওয়াল বাইরে থেকে দরজা আটকে চলে যেতেই আমি টলতে টলতে রুম লাগোয়া বাথরুমে গিয়ে গলায় আঙুল ঢুকিয়ে বেসিনে বমি করলাম। তারপর কিছুটা ধাতস্ত হয়ে দরজা ভেতর থেকে ছিটকিনি দিয়ে তোমাকে ফোন করি।
দেবিকা কাঁদতে কাঁদতে বললো, আর তুমি আমাকে ভুল বুঝলে, আমাকে বকলে। বুঝলাম সরল মনের দেবিকা ওদের ষড়যন্ত্র বিন্দুমাত্র আন্দাজ করতে পারে নি, তাই ফাঁদে পা দিয়ে ফেলেছে। ক্লান্ত বিধ্বস্ত সদ্য বিপদ থেকে মুক্ত হওয়া আমার মিষ্টি প্রেয়সীর সাথে আমি একটু বেশিই জোরে কথা বলেছি। আমারই অনুতাপ হচ্ছে এ জন্য।
দেবিকার মাথায় হাত বুলিয়ে আদর করে বললাম, ঠিক আছে দেবিকা এখন চুপ করো আর কাঁদে না। আমি সব বুঝতে পেরেছি, আর কোনো দুর্বৃত্ত তোমার ক্ষতি করতে পারবে না। আমি আছি তো।
দেবিকা মাথা তুলে দুই দীঘল আঁখির সজল দৃষ্টিতে আমার দিকে তাকিয়ে বললো, তুমি এই নিয়ে তিনবার আমাকে রক্ষা করলে। তোমার কাছে আমি চিরঋণী, কিভাবে এই ঋণ শোধ করবো আমি জানি না।
আমি অবাক হয়ে দেবিকাকে বললাম, একবার সেই বৃষ্টির রাতে আর দ্বিতীয়বার আজকে সন্ধ্যায়। তাহলে তিনবার কি করে হল ?

দেবিকা আমার দিকে গভীর ভাবে তাকিয়ে ব্যাকুল কণ্ঠে বলল, তুমি সত্যিই জানো না ?
আমি অবাক হয়ে বললাম, না তো, তোমাকে তিনবার কোথায় বাঁচালাম বুঝতে পারছি না।

দেবিকা কিছু একটা বলতে যাচ্ছিল তখনই কলিংবেলটা বেজে উঠলো। আমি চোখের ইশারায় দেবিকাকে ভেতরের ঘরের দরজার পিছনে লুকোতে বলে ডাইনিং টেবিলের উপর রাখা ফল কাটার ছুরিটা নিয়ে দরজার কাছে এসে দাঁড়ালাম। পুরনো ফ্ল্যাট, দরজায় আইহোল নেই, কে এসেছে বোঝা যায় না। দরজার হাতলটা ধরে চকিতে খুলে ছুরিটা উঁচিয়ে ধরতেই দেখলাম শ্যামলী মাসি হাতে খাবার নিয়ে দাঁড়িয়ে। আসার সময় পাড়ার গলির মুখে বাইক থামিয়ে মাসির দোকানে দু’প্যাকেট পরোটা-চিকেন কারি বাড়িতে পৌঁছে দিতে বলেছিলাম। আমাকে ওইভাবে ছুরি হাতে দেখে মাসি ঘাবড়ে গেছে। মাসিকে আস্বস্ত করে হেসে খাবারের প্যাকেটটা নিয়ে দাম মিটিয়ে দরজা বন্ধ করে দিলাম। দেবিকা বেডরুমের দরজার পিছন থেকে উঁকি মেরে দেখছিল। বিপদ নেই দেখে বেরিয়ে এসে মিটিমিটি হাসছে।
প্যাকেট দুটো টেবিলে রেখে দেবিকাকে বললাম, তোমার কথা পরে শুনবো বিছানায় বসে। আগে খেয়ে নাও, সন্ধ্যে থেকে তো কিছুই পেটে পড়ে নি, না তোমার না আমার। চটপট বাথরুম থেকে ফ্রেশ হয়ে আসো।
দেবিকা বাধ্য মেয়ের মতো মৃদু হাসি টেনে মাথা নাড়িয়ে সম্মতি জানিয়ে বাথরুমে গেল। ওর মত্ত চালে সুডৌল নিতম্ব দুলিয়ে হেঁটে যাবার দিকে তাকিয়ে রইলাম মুগ্ধ চোখে, ভারী মিষ্টি আর সেক্সি আমার দেবিকা, হেসে উঠলাম মনে মনে।

খাওয়ার পর রাতে বিছানায় দেবিকাকে পাশে নিয়ে বসে বললাম, হ্যাঁ এবার বলো তো তখন কি বলছিলে, আমি তো কিছুই বুঝতে পারছি না।
দেবিকা একটা লম্বা শ্বাস নিয়ে আমার দিকে আয়ত চোখে তাকিয়ে বলতে থাকলো, তেরো বছর আগে মালদার একটা অজ গ্রাম থেকে এক অতি গরিব মাঝবয়সী দম্পতি তাদের একমাত্র মেয়েকে নিয়ে কলকাতায় আসে তার চিকিৎসার জন্য। মেয়েটির তখন মাত্র আট বছর বয়স, কিন্তু এরই মধ্যে সে লিভারের এক দুরারগ্য ব্যধিতে আক্রান্ত। থেকে থেকেই পেটে প্রচণ্ড যন্ত্রণা হতো ওর। গ্রাম আর সদরের ডাক্তার জানিয়ে দেয় নিরাময়ের একমাত্র উপায় অপারেশন, কিন্তু সেই বিশেষ অপেরেশনের ব্যবস্থা ওখানকার হাসপাতালে নেই। তাই কলকাতায় আসা ওদের। কিন্তু কলকাতার কোনো হাসপাতালে জায়গা পাওয়া যায় না। দু’দিন ধরে শহরের সব সাধ্যের মধ্যে থাকা হাসপাতাল ঘুরেও কোনো লাভ হয় না। এদিকে যাতায়াতের ধকলেই হোক বা অন্য কোনো কারনে, মেয়েটির শারীরিক অবস্থার অবনতি হতে থাকে।

একটু থেমে বিরতি নিয়ে দেবিকা আবার বলতে শুরু করে, পরদিন এক বেসরকারি হাসপাতাল এডমিট নেয়। পুনরায় পরীক্ষা হয় মেয়েটির লিভারের। তারপর ডাক্তাররা জানায় অপারেশনের খরচ হবে নয় লক্ষ টাকা। মেয়েটির বাবা-মায়ের তো মাথায় হাত। এতো টাকার নাম পর্যন্ত তারা কোনোদিন শোনেনি, চোখে দেখা তো দূর। টাকা পয়সা যা এনেছিল তারা সেসব এই ক’দিনে থাকা-খাওয়া আর আলট্রাসনগ্রাফিতেই জলের মতো বেরিয়ে গেছে। তাদের অনেক কাকুতি-মিনতিতে একটুও কর্ণপাত করলো না ব্যবসা করতে আসা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। ব্যর্থ মনোরথে চরম হতাশ হয়ে তারা বেরিয়ে আসে রাস্তায়। আসলে মেয়েটির লিভারে একটা টিউমার হয়েছিল যা সময় মতো অপারেশন না করতে পারলে ক্যানসার হয়ে যাবে। এই অচেনা শহরে কার কাছে সাহায্য চাইবে তারা বুঝতে পারে না। সবাই অবজ্ঞার চোখে মুখ ফিরিয়ে নেয়। অগত্যা মানসিক ভাবে ভেঙ্গে পড়া দুই অসহায় বাবা-মা মেয়েটিকে রাস্তার ধারের এক দোকানের বেঞ্ছিতে বসিয়ে রেখে মাঝরাস্তায় এক চলন্ত বাসের সামনে দাঁড়িয়ে পড়ে স্বেচ্ছা মৃত্যু গ্রহণ করে। মেয়েটি কিছু বুঝে ওঠার আগেই ভিড় জমে যায় রাস্তায়। পথচারীরা সবাই বলাবলি করে, নাহ স্পট ডেড।

[/HIDE]
 
[HIDE]

সময় নিয়ে চোখের পলক ফেলে দেবিকা বললো, আজকে সকালে সেই তেবরেওয়াল ফোন করেছিল। বললো যে অভিনয়ের জন্য এখন ওরা ফ্রেশ নায়িকা খুঁজছে তাই আমার সাথে কথা বলতে চায়।
আমি জিজ্ঞেস করলাম, তা এটা তুমি আমাকে জানালে না তখন ?
দেবিকা আর্ত চোখে তাকিয়ে করুন সুরে বললো, আমি তোমাকে সারপ্রাইজ দিতে চেয়েছিলাম উজান। আমি এই কলগার্লের পেশা ছাড়তে চেয়েছিলাম মনে প্রাণে। তাই বিকেলবেলা সময় মতো দেখা করতে যাই ওর সাথে। জানতে পারি একটা ওয়েবসিরিজে অভিনয়ের জন্য ওরা নতুন মুখ চাইছে। একটু সাহসী দৃশ্যে অভিনয় করতে হবে। জিজ্ঞেস করলো আমি রাজি কিনা। আমি বললাম ডিরেক্টরের সাথে কথা বলবো এ বিষয়ে। ও বললো ডিরেক্টর আধ ঘন্টার মধ্যে আসছে। কিন্তু আমি কি আর তখন জানতাম যে এসব আসলে সুরজের কারসাজি।
ভ্রু কুঁচকে জিজ্ঞেস করলাম, এই সুরজটা আবার কে ?
-প্রায় বছর খানেক আগে ক্লায়েন্ট ছিল এই সুরজ। রুলিং পার্টির ভাড়াটে ক্যাডার। অত্যন্ত নোংরা আর বাজে ব্যবহার। বেশ কয়েকদিন ধরে আমাকে ফোন করে বিরক্ত করছিলো। আমি এড়িয়ে গেছি, পাত্তা দিই নি।
উত্তেজিত গলায় বললাম, এসব কথা তুমি চেপে গেছো আমার থেকে ? আগে জানলে তোমাকে সাবধান করে দিতাম।
দেবিকা ছলছল চোখে বললো, তোমাকে আমার অতীত বলে আর ঘাঁটাতে চাইনি ওই সব দুর্বিসহ দিনের কথা, যখন আমি এই লাইন ছেড়ে দিয়েছি। আমি তাও রাগত ভাবে বলে গেলাম, আর তোমার কোনো আক্কেল হল না ? অভিনয়ের জন্য এতো ড্রামা ইনস্টিটিউট আছে, সেখানে না গিয়ে কেউ কেন তোমাকে ডাকবে ? তাও আবার স্টুডিওতে না ডেকে কোনো হোটেলের রুমে দেখা করতে বলবে ?
দেবিকা আমার বুকে মুখ গুঁজে ফুঁপিয়ে কেঁদে বললো, আমি কি করে বুঝবো যে ওই শয়তান সুরজের সাথে এসবের যোগসাজশ থাকবে ? তেবরেওয়াল আমাকে ড্রিঙ্কস অফার করছিলো, আমি নিতে চাইনি। কিন্তু খুব পিড়াপিড়ি করায় খেলাম। খাওয়ার পরেই চোখের পাতা ভারী হয়ে এলো। মাথা ঘুরতে লাগল। বুঝলাম ঘুমের ওষুধ মেশানো ছিল পানীয়তে। আবছা ভাবে শুনতে পেলাম ফোনে কথা বলছে, হ্যালো সুরজ ভাইয়া, কাম হো গ্যায়া, আপ আজাইয়ে। তেবরেওয়াল বাইরে থেকে দরজা আটকে চলে যেতেই আমি টলতে টলতে রুম লাগোয়া বাথরুমে গিয়ে গলায় আঙুল ঢুকিয়ে বেসিনে বমি করলাম। তারপর কিছুটা ধাতস্ত হয়ে দরজা ভেতর থেকে ছিটকিনি দিয়ে তোমাকে ফোন করি।
দেবিকা কাঁদতে কাঁদতে বললো, আর তুমি আমাকে ভুল বুঝলে, আমাকে বকলে। বুঝলাম সরল মনের দেবিকা ওদের ষড়যন্ত্র বিন্দুমাত্র আন্দাজ করতে পারে নি, তাই ফাঁদে পা দিয়ে ফেলেছে। ক্লান্ত বিধ্বস্ত সদ্য বিপদ থেকে মুক্ত হওয়া আমার মিষ্টি প্রেয়সীর সাথে আমি একটু বেশিই জোরে কথা বলেছি। আমারই অনুতাপ হচ্ছে এ জন্য।
দেবিকার মাথায় হাত বুলিয়ে আদর করে বললাম, ঠিক আছে দেবিকা এখন চুপ করো আর কাঁদে না। আমি সব বুঝতে পেরেছি, আর কোনো দুর্বৃত্ত তোমার ক্ষতি করতে পারবে না। আমি আছি তো।
দেবিকা মাথা তুলে দুই দীঘল আঁখির সজল দৃষ্টিতে আমার দিকে তাকিয়ে বললো, তুমি এই নিয়ে তিনবার আমাকে রক্ষা করলে। তোমার কাছে আমি চিরঋণী, কিভাবে এই ঋণ শোধ করবো আমি জানি না।
আমি অবাক হয়ে দেবিকাকে বললাম, একবার সেই বৃষ্টির রাতে আর দ্বিতীয়বার আজকে সন্ধ্যায়। তাহলে তিনবার কি করে হল ?

দেবিকা আমার দিকে গভীর ভাবে তাকিয়ে ব্যাকুল কণ্ঠে বলল, তুমি সত্যিই জানো না ?
আমি অবাক হয়ে বললাম, না তো, তোমাকে তিনবার কোথায় বাঁচালাম বুঝতে পারছি না।

দেবিকা কিছু একটা বলতে যাচ্ছিল তখনই কলিংবেলটা বেজে উঠলো। আমি চোখের ইশারায় দেবিকাকে ভেতরের ঘরের দরজার পিছনে লুকোতে বলে ডাইনিং টেবিলের উপর রাখা ফল কাটার ছুরিটা নিয়ে দরজার কাছে এসে দাঁড়ালাম। পুরনো ফ্ল্যাট, দরজায় আইহোল নেই, কে এসেছে বোঝা যায় না। দরজার হাতলটা ধরে চকিতে খুলে ছুরিটা উঁচিয়ে ধরতেই দেখলাম শ্যামলী মাসি হাতে খাবার নিয়ে দাঁড়িয়ে। আসার সময় পাড়ার গলির মুখে বাইক থামিয়ে মাসির দোকানে দু’প্যাকেট পরোটা-চিকেন কারি বাড়িতে পৌঁছে দিতে বলেছিলাম। আমাকে ওইভাবে ছুরি হাতে দেখে মাসি ঘাবড়ে গেছে। মাসিকে আস্বস্ত করে হেসে খাবারের প্যাকেটটা নিয়ে দাম মিটিয়ে দরজা বন্ধ করে দিলাম। দেবিকা বেডরুমের দরজার পিছন থেকে উঁকি মেরে দেখছিল। বিপদ নেই দেখে বেরিয়ে এসে মিটিমিটি হাসছে।
প্যাকেট দুটো টেবিলে রেখে দেবিকাকে বললাম, তোমার কথা পরে শুনবো বিছানায় বসে। আগে খেয়ে নাও, সন্ধ্যে থেকে তো কিছুই পেটে পড়ে নি, না তোমার না আমার। চটপট বাথরুম থেকে ফ্রেশ হয়ে আসো।
দেবিকা বাধ্য মেয়ের মতো মৃদু হাসি টেনে মাথা নাড়িয়ে সম্মতি জানিয়ে বাথরুমে গেল। ওর মত্ত চালে সুডৌল নিতম্ব দুলিয়ে হেঁটে যাবার দিকে তাকিয়ে রইলাম মুগ্ধ চোখে, ভারী মিষ্টি আর সেক্সি আমার দেবিকা, হেসে উঠলাম মনে মনে।

খাওয়ার পর রাতে বিছানায় দেবিকাকে পাশে নিয়ে বসে বললাম, হ্যাঁ এবার বলো তো তখন কি বলছিলে, আমি তো কিছুই বুঝতে পারছি না।
দেবিকা একটা লম্বা শ্বাস নিয়ে আমার দিকে আয়ত চোখে তাকিয়ে বলতে থাকলো, তেরো বছর আগে মালদার একটা অজ গ্রাম থেকে এক অতি গরিব মাঝবয়সী দম্পতি তাদের একমাত্র মেয়েকে নিয়ে কলকাতায় আসে তার চিকিৎসার জন্য। মেয়েটির তখন মাত্র আট বছর বয়স, কিন্তু এরই মধ্যে সে লিভারের এক দুরারগ্য ব্যধিতে আক্রান্ত। থেকে থেকেই পেটে প্রচণ্ড যন্ত্রণা হতো ওর। গ্রাম আর সদরের ডাক্তার জানিয়ে দেয় নিরাময়ের একমাত্র উপায় অপারেশন, কিন্তু সেই বিশেষ অপেরেশনের ব্যবস্থা ওখানকার হাসপাতালে নেই। তাই কলকাতায় আসা ওদের। কিন্তু কলকাতার কোনো হাসপাতালে জায়গা পাওয়া যায় না। দু’দিন ধরে শহরের সব সাধ্যের মধ্যে থাকা হাসপাতাল ঘুরেও কোনো লাভ হয় না। এদিকে যাতায়াতের ধকলেই হোক বা অন্য কোনো কারনে, মেয়েটির শারীরিক অবস্থার অবনতি হতে থাকে।

একটু থেমে বিরতি নিয়ে দেবিকা আবার বলতে শুরু করে, পরদিন এক বেসরকারি হাসপাতাল এডমিট নেয়। পুনরায় পরীক্ষা হয় মেয়েটির লিভারের। তারপর ডাক্তাররা জানায় অপারেশনের খরচ হবে নয় লক্ষ টাকা। মেয়েটির বাবা-মায়ের তো মাথায় হাত। এতো টাকার নাম পর্যন্ত তারা কোনোদিন শোনেনি, চোখে দেখা তো দূর। টাকা পয়সা যা এনেছিল তারা সেসব এই ক’দিনে থাকা-খাওয়া আর আলট্রাসনগ্রাফিতেই জলের মতো বেরিয়ে গেছে। তাদের অনেক কাকুতি-মিনতিতে একটুও কর্ণপাত করলো না ব্যবসা করতে আসা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। ব্যর্থ মনোরথে চরম হতাশ হয়ে তারা বেরিয়ে আসে রাস্তায়। আসলে মেয়েটির লিভারে একটা টিউমার হয়েছিল যা সময় মতো অপারেশন না করতে পারলে ক্যানসার হয়ে যাবে। এই অচেনা শহরে কার কাছে সাহায্য চাইবে তারা বুঝতে পারে না। সবাই অবজ্ঞার চোখে মুখ ফিরিয়ে নেয়। অগত্যা মানসিক ভাবে ভেঙ্গে পড়া দুই অসহায় বাবা-মা মেয়েটিকে রাস্তার ধারের এক দোকানের বেঞ্ছিতে বসিয়ে রেখে মাঝরাস্তায় এক চলন্ত বাসের সামনে দাঁড়িয়ে পড়ে স্বেচ্ছা মৃত্যু গ্রহণ করে। মেয়েটি কিছু বুঝে ওঠার আগেই ভিড় জমে যায় রাস্তায়। পথচারীরা সবাই বলাবলি করে, নাহ স্পট ডেড।

[/HIDE]
 
[HIDE]

তখন সেই অসহায় ভাবে বাবা মায়ের রক্তাক্ত মৃতদেহকে আঁকড়ে ধরে সমানে কেঁদে চলা ছোট্ট মেয়েটিকে সাহায্য বা সহানুভুতির হাত বাড়িয়ে দেয় লম্বা, পেটানো চেহারার ঝকঝকে চোখের এক যুবক। সে ওই সদ্য মা-বাবা হারানো মেয়েটিকে কোলে তুলে নিয়ে পরম স্নেহের সঙ্গে কান্না ভুলিয়ে চোখ মুছিয়ে দিয়ে ওকে নিয়ে যায় এক স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনে। যুবকটি নিজে দাঁড়িয়ে থেকে মৃত দম্পতির সৎকার সম্পন্ন করে। - এতটা বলে দেবিকা থামল। ওর দু’চোখ দিয়ে অশ্রুধারা গাল বেয়ে অঝোরে গড়িয়ে পড়ছে।
থেমে থেমে সজল চোখে আমার দিকে তাকিয়ে বললো, সেই যুবকটি এখন পরিপূর্ণ মানুষ একজন। চেহারায় সামান্য কিছু পরিবর্তন এলেও সেই দুই উজ্জ্বল দৃঢ় চোখ একটুও পাল্টায় নি।

উত্তেজনায় স্তম্ভিত আমি দরদর করে ঘামছি। এই দেওয়াল ফুঁড়ে কোনো জিন-দানব বেরিয়ে এলেও এতো হতবাক হতাম না।
মুহূর্তের মধ্যে আমি স্মৃতির সরণীতে হাঁটতে হাঁটতে পৌঁছে গেলাম তেরো বছর আগের সেই দিনে। তখন আমি এমএ ফার্স্ট ইয়ার। বাড়ি বাড়ি টিউশনি করে পার্ট টাইম আয় করি আর কলেজ স্ট্রিটের একটা মেসবাড়িতে থাকি। এরকমই লেকটাউনের একটা বাড়িতে পড়িয়ে রাস্তার ধারের একটা কচুরির দোকানে বসেছিলাম টিফিন করতে। দেখি বেঞ্চিতে আমার পাশে অদুরে বসে একটি আট-দশ বছরের ফুটফুটে বাচ্চা মেয়ে আমার হাতে ধরা কছুরি-আলুর দমের শালপাতার দিকে জুলজুল করে তাকিয়ে। মেয়েটির পরনে একটা ময়লা ফ্রক, মেয়েটা রোগা হলেও বেশ ফর্সা আর চোখদুটো বেশ ডাগর, মায়াভরা। ওকে দেখে আমার করুনা হল।
হেসে নরম স্বরে জিজ্ঞেস করলাম, তোমার খিদে পেয়েছে ? কচুরি খাবে ?
মেয়েটি একটু লজ্জা পেয়ে মাথা নাড়িয়ে হ্যাঁ বলল।
আমি আরও দুটো কচুরি চেয়ে ওকে দিলাম খেতে। বেশ ক্ষুধার্ত ছিল, গোগ্রাসে খেতে লাগল। সহসা একটা ধরাম শব্দ আর সেই সাথে লোকজনের কোলাহল শুনে রাস্তার দিকে চোখ গেল। একটা এক্সিডেন্ট হয়েছে। সবাই বলাবলি করছে দুজন স্বামী-স্ত্রী বাসের সামনে দাঁড়িয়ে আত্মহত্যা করেছে। মেয়েটি ছুটে গেল সেদিকে। আমিও গেলাম।
মেয়েটি ক্রমাগত রাস্তায় লুটিয়ে থাকা দুটো মৃতদেহকে জড়িয়ে ধরে কাঁদতে কাঁদতে বলছে, ও মা, ও বাবা চোখ খোলো না ! আমার মনটা ভারাক্রান্ত হয়ে গেল। হৃদয় ভীষণই কেঁপে উঠল এই দৃশ্য দেখে। ফুলের মতো নিষ্পাপ মেয়েটিকে কোলে তুলে নিয়ে বিভিন্ন ভাবে সান্ত্বনা দিতে লাগলাম আর ভাবছিলাম ভগবান তুমি এতো নিষ্ঠুর কেন ? এই ছোট্ট মেয়েটিকে এভাবে কষ্ট দিলে ?
ওকে নিয়ে আমার চেনাজানা এক এনজিওতে চলে গেলাম। নাম জিজ্ঞেস করায় মেয়েটি বলেছিল কিছু একটা, কিন্তু সেটা এখন আমার মনে নেই। ওর মা-বাবার শেষকৃত্য সম্পন্ন করে মেয়েটিকে ওই স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনে ভর্তি করে দিই। ওকে বিদায় জানিয়ে চলে আসি, আর কোনো খোঁজ নেওয়া হয়নি আর।

আমি বিস্মিত চোখে ধরা ধরা গলায় বললাম, তুমিই সেই মেয়েটি ? দেবিকা তুমিই সেই দিনের... আমার কথা শেষ হওয়ার আগে দেবিকা আমার বুকে ঝাঁপিয়ে পড়ে কেঁদে উঠে বললো, হ্যাঁ হ্যাঁ আমি উজান, আমিই সেই ছোট্ট মেয়েটি।



কম্পিত হাতে আমার বুকে মাথা রেখে ফুঁপিয়ে ওঠা দেবিকাকে জড়িয়ে ধরে কাঁপা কাঁপা মোহাচ্ছন্ন গলায় বললাম, তারপর কি হল ?

দেবিকা ঘোর লাগা স্বরে বলে চলল, তিনদিন পর ওই স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন জানতে পারে আমার অসুস্থতার কথা। পেটব্যথায় কুঁকড়ে থাকতাম দেখে ওদের সন্দেহ হয়। একটা ক্লিনিকে আবার হোল অ্যাবডোমেন ইউএসজি করানো হয় আমার। রিপোর্টে জানা যায় লিভারে একটা সিস্ট হয়েছে কিন্তু ওটা কোনো ম্যালিগন্যান্ট টিউমার নয়। আসলে গ্রামের ডাক্তাররা রোগ নির্ধারণে ভুল করেছিল। শহরের ওই বেসরকারি হাসপাতালও বড়ো দাও মারবার লোভে আসল কথা চেপে যায়। আসল চিকিৎসা শুরু হতেই আমি সুস্থ হতে থাকি, সব খরচ ওই এনজিও থেকেই দেওয়া হয়। মাঝখান দিয়ে প্রাণ দিতে হয় আমার মা-বাবাকে – এতটা বলে দেবিকা থামল। ওর দুচোখ ভরে উঠেছে জলে।
প্রচণ্ড রাগ হতে থাকে আমার এইসব মিথ্যাচারী মানুষদের ওপর যারা চিকিৎসাজগতে ভদ্রতার মুখোশ পরে আসলে ডাকাতি করছে।ওর পিঠে স্নেহের পরশে হাত বুলিয়ে পরের ঘটনা জানতে চাওয়ায় দেবিকা আবার বলল, এরপর সম্পূর্ণ সুস্থ হয়ে উঠলে আমাকে হাওড়ার একটা অনাথ আশ্রমে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। সেখানে আমার মতো আরও দশটা বাপ-মা মরা ছেলেমেয়ের সাথে হেসে-খেলে বেড়ে উঠতে থাকি। সবাই একটা পরিবারের মতো ছিলাম।

আমার যখন তেরো বছর বয়স তখন একদিন দুই স্বামী-স্ত্রী আসে আশ্রমে দত্তক নিতে। সবার মধ্যে থেকে আমাকেই ওদের পছন্দ হয় আর দত্তক নেয়। আমার নতুন ঠিকানা হয় আহিরিটোলার একটা বাড়িতে। কিন্তু তখন থেকেই আমার জীবনে নেমে আসে কালো আঁধার। ওই দম্পতি আসলে নিজেদের বাড়িতে মধুচক্র চালাত। সেখানে দেখলাম আমি ছাড়াও নানা বয়সের আরও মেয়েদের ওখানে বন্দি করে রাখা হয়েছে। যারা পুরনো তাদেরকে দায়িত্ব দেওয়া হয় আমার মতো ‘নয়া চিড়িয়া’দের মগজধোলাই করতে, আদব কায়দা শেখাতে। রাত নামলেই দেখতাম মেয়েরা রাস্তায় দাঁড়িয়ে খদ্দের ধরার চেষ্টা করছে, সবার ঘর থেকে শীৎ্কারের আওয়াজ ভেসে আসছে, কোথাও বা মদ-নাচের আসর।
দেবিকা একটু থেমে দীর্ঘশ্বাস ফেলে বলল, ষোল বছর বয়সে আমি কুমারীত্ব হারাই, কি বিভীষিকাময় যন্ত্রণাদায়ক ছিল সে রাত। ঘুমিয়ে থাকা এক গোলাপের কুঁড়িকে ভোর হওয়ার আগেই অকালে জোর করে পাপড়ি টেনে খুলে ফেলা হয়। বলতে বলতে দেবিকা দু’হাতে মুখ ঢেকে ডুকরে কেঁদে উঠলো। আমার চোয়াল শক্ত হয়ে গেল, বুকে চিনচিনে ব্যথা অনুভব করলাম।
দেবিকা বলে চলল, একদিন কলকাতা পুলিশ খবর পেয়ে রেড করে ওই বাড়িতে। আমি সবে এক নারীমাংসলোলুপ জানোয়ারকে সামলে ক্লান্ত হয়ে শুয়েছিলাম বিছানায়। হঠাৎ ‘পুলিশ পুলিশ!’ চিৎকারে বাইরে বেরিয়ে দেখি নীচে একতলায় সবার ঘরে পুলিশ হানা দিয়েছে। ভয় পেয়ে আমি একছুটে বারান্দায় গিয়ে রেলিং টপকে পাশের বাড়ির ছাদে চলে যাই। তখন আমার এই জ্ঞান ছিল না যে পুলিশ আসলে আমাদের উদ্ধার করতেই এসেছিল। পাশের বাড়ির ছাদ থেকে লোহার ঘোরানো সিঁড়ি দিয়ে নীচে রাস্তায় নেমে এসে উদ্দেশ্যহীন ছোটাছুটি করতেই রতনদার সামনে পড়ে গেলাম। রতন দালাল আমাকে নিয়ে গেল এক এসকর্ট এজেন্সিতে। ধীরে ধীরে হয়ে উঠলাম মোস্ট ডিজায়ারেবেল কলগার্ল।





[/HIDE]
 
[HIDE]


শুনে আমি বাকরুদ্ধ হয়ে পড়েছি। কিছুক্ষন বিহ্বল হয়ে থাকার পর নীরবতা ভেঙে ক্রন্দনরতা দেবিকার মাথায় হাত বুলিয়ে বললাম, এতো বছর পর তুমি চিনতে পারলে আমাকে ?
দেবিকা চোখ মুছে শুষ্ক হেসে বলল, হ্যাঁ বললাম না তোমার তীক্ষ্ণ উজ্জ্বল চোখদুটো আর এই নাক চিনতে আমার কোনো ভুল হয়নি। মনে আছে প্রথম যেদিন এখানে এসেছিলাম সেদিন তোমাকে দেখে আমি স্থানুর মতো থমকে গিয়েছিলাম ? কেন জানো ? আমাকে যে মানুষটা অসহায় পরিস্থিতিতে হাত বাড়িয়ে দিয়েছিল তার সাথে এতদিন পর দেখা করতে পেরেছি বলে, আমার দীর্ঘদিনের মনোবাঞ্ছা পূরণ হয়েছে বলে।
বাঁহাতে দেবিকার চিবুক ধরে ওর পানপাতার মতো মুখটা আমার দিকে তুলে ধরে আরেকহাতে সযত্নে ওর বেদনাশ্রু মুছিয়ে দিয়ে বললাম, তোমাকে এভাবে নতুন রুপে পাবো আমি ভাবতেই পারিনি দেবিকা।
আমার ঠোঁটে একটা চুম্বন এঁকে দিয়ে বুকে মাথা রেখে দেবিকা বলল, সেই জন্যই তোমার এই চওড়া বুকের মাঝে মাথা রাখলে বড়ো নিশ্চিন্ত মনে হয় নিজেকে। তুমি আমার কাছে দেবদূতের মতো। তুমি না থাকলে আজ যে কি হতো ভাবতেই আমার হাত-পা অবশ হয়ে আসছে উজান।
চোয়াল শক্ত করে মুষ্টিবদ্ধ হাতে বিছানায় একটা ঘুষি মেরে বললাম, ওই শালা সুরজকে আমি ছাড়বো না, খুঁজে বার করে গঙ্গায় ওর লাশ ফেলে দেবো! আর সেই হসপিটালের বিরুদ্ধেও কেস করে দেবো!
দেবিকা আমার মুখ ওর হাত দিয়ে চেপে আঁতকে উঠে বলল, একদম এমন গোঁয়ার্তুমি করবে না তুমি, একা পেয়ে ওকে শায়েস্তা করেছো, কিন্তু ওর দলবল বোমা-পিস্তল নিয়ে ঘোরে সবসময়।যদি কোনো ক্ষতি হয়ে যায় তোমার ? ওকে অজ্ঞান করে ফেলে রেখে এসেছো ব্যাস আর খুঁজে পাবে না আমাদের।

আমার ঠোঁটের ওপর থেকে দেবিকার নরম হাতটা সরিয়ে নিজের দু’হাতের মুঠোয় নিয়ে কিছুক্ষন একদৃষ্টিতে ওর দিকে তাকিয়ে গম্ভীর গলায় বললাম, দেবিকা, চলো আমরা বিয়ে করে নিই।
দেবিকা ঘোলাটে চোখে আমার দিকে চেয়ে অস্ফুটে জিজ্ঞেস করলো, বিয়ে ?
দু’হাতে ওর দুই পেলব গোল কাঁধ ধরে ওর চোখে চোখ রেখে গাঢ় স্বরে বললাম, হ্যাঁ বিয়ে করবো আমরা, তোমার গায়ে কোনো শয়তানের এতটুকু আঁচড় লাগতে দেবো না, খুব ভালবাসবো তোমাকে। তুমি ভালোবাসো আমাকে ?
দেবিকা দুই কাজলকালো সজল চোখের উদ্ভাসিত দৃষ্টিতে মধুর স্বরে বলল, হ্যাঁ বাসি উজান, খুব ভালোবাসি তোমায়।


দু’হাতে ওর দুই পেলব গোল কাঁধ ধরে ওর চোখে চোখ রেখে গাঢ় স্বরে বললাম, হ্যাঁ বিয়ে করবো আমরা, তোমার গায়ে কোনো শয়তানের এতটুকু আঁচড় লাগতে দেবো না, খুব ভালবাসবো তোমাকে। তুমি ভালোবাসো আমাকে ?
দেবিকা দুই কাজলকালো সজল চোখের উদ্ভাসিত দৃষ্টিতে মধুর স্বরে বলল, হ্যাঁ বাসি উজান, খুব ভালোবাসি তোমায়।
-তাহলে বিয়ে করবে আমায় ? যত্ন করে আগলে রাখবো তোমাকে চিরকাল।
আমার কাঁধ জড়িয়ে মিহি ভাবে প্রেমাস্পদ কণ্ঠে দেবিকা বলল, হ্যাঁ উজান, করবো বিয়ে। তোমাকে বিয়ে করলে আমার জীবন ধন্য হয়ে যাবে প্রিয়।
উদগ্রীব স্বরে বললাম, তাহলে কালকেই চলো বিয়ে করে নিই আমরা। তুমি সকালে গিয়ে তোমার মেস থেকে জিনিসপত্র নিয়ে আসবে, আমি মন্দিরে গিয়ে পুরোহিতের সঙ্গে কথা বলে ব্যবস্থা করে আসবো। তারপর সেখান থেকে বাগবাজারের ম্যারেজ রেজিস্ট্রি অফিসে গিয়ে রেজিস্ট্রি বিয়ে সেড়ে নেবো।
দেবিকা অবাক হয়ে বলল, কালকেই ?
ব্যকুল হয়ে বললাম, হ্যাঁ কালই, আমি তোমাকে ছেড়ে থাকতে পারছি না আর।
দেবিকা আমার কপালে ওর ঠোঁটের প্রেমস্পর্শ ছুঁইয়ে বলল, বেশ, তাই হবে। আমারও তোমাকে ছাড়া থাকতে একটুও ভাল্লাগছে না আর।

ওর কোমর জড়িয়ে নিজের কোলের কাছে টেনে নিয়ে কপালের পাশ দিয়ে নেমে আসা রেশমি চুলের গোছা আলতো করে সরিয়ে বললাম, আজকে খুব কষ্ট পেয়েছ সোনা ? অনেক চোখের জল ফেলতে হয়েছে তোমাকে।
-হুম, ঈষৎ মাথা নুইয়ে দেবিকার ছোট্ট উত্তর।
আমার দিকে মুগ্ধ দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকা দেবিকার গাল বেয়ে নেমে আসা অশ্রু আমার করতল দিয়ে সস্নেহে মুছে বললাম, এবার তোমাকে প্রেমের জোয়ারে ভাসিয়ে সুখের সাগরে নিয়ে যাবো দেবিকা, তোমার সব কষ্ট-যাতনা ভুলিয়ে দেবো।
আমার গালে নিজের তপ্ত কোমল হাত বুলিয়ে প্রেমাতুর স্বরে দেবিকা বলল, আজকের রাতটা স্মরণীয় করে রাখি চলো, আদর করো আমাকে উজান।– এই বলে দুহাতে আমার গলা জড়িয়ে আমার দেহের সাথে নিজের নরম গরম দেহলতা মিশিয়ে ঠোঁটে ঠোট ডুবিয়ে দিল। ওর ঈষৎ মেদের পরতে ঘেরা কোমর নিবিড় ভাবে জড়িয়ে পরম আশ্লেষে গভীর চুম্বন করতে লাগলাম। দেবিকার শর্ট ড্রেসের আবরণ ভেদ করে ওর জেগে ওঠা স্তনবৃন্তের ছোঁয়া অনুভব করছি আমার চওড়া কঠিন বুকের ওপর। চুম্বনরত অবস্থাতেই পাঁজাকোলা করে দেবিকাকে কোলে তুলে নিলাম। সযত্নে ওকে নরম গদির বিছানায় শুইয়ে দিয়ে আবারও দুজনে চুম্বনে আবদ্ধ হলাম। সময় যেন থমকে গেছে, তৃষ্ণার্ত চাতকের মতো একে অপরের ঠোঁটের পদ্মমধু পান করতে ব্যস্ত আমরা। দম নেবার জন্য দেবিকার রসালো টসটসে ভেজা ঠোঁট ছাড়তেই দেখলাম ওর টোপা টোপা গালে আপেলের মতো লালচে আভা, আনত চোখে আমার দিকে তাকিয়ে।
ওই রাঙা গালে চুপুস করে একটা চুমু খেয়ে বললাম, এই এতো লজ্জা পাচ্ছ কেন ?
দেবিকা স্মিত হেসে বলল, বাঃ রে, একটু লজ্জা পেতে পারি না আমি ? মেয়েদের কখন কি হয় ও তুমি বুঝবে না।
মুচকি হেসে ওর লাল স্লিভলেস শর্ট ড্রেস ঊরুর কাছ থেকে তুলে মাথার উপর উঠিয়ে চোখ টিপে বললাম, কোই বাত নেহি মহারানী, আস্তে আস্তে বুঝে যাবো!

হলদে জংলা ছাপার লেপার্ড প্রিন্টের ব্রেসিয়ার আর ম্যাচিং ডিজাইনের ছোট্ট প্যানটিতে ফর্সা নধর ভরাট দেহপল্লবের অধিকারিণী দেবিকাকে ঠিক যেন মিলনেচ্ছুক বাঘিনীর মতো লাগছে। দেবিকা বুক চিতিয়ে কনুই ভাঁজ করে পিছনে হাত নিয়ে গিয়ে ব্রায়ের হুক খুলে দিল, ওর হাতের সামনে দিয়ে স্ট্র্যাপ দুটো নামিয়ে ব্রেসিয়ারটা খুলে নিলাম। মুখ নামিয়ে ওর ঘাড়ের ত্বকে ঠোঁট ছোঁয়াতেই দেবিকা একটু কেঁপে উঠে আমার কাঁধ আঁকড়ে ধরল। মরালীর মতো গ্রীবার নরম ভাঁজ থেকে চুমু খেতে খেতে নেমে গেলাম বুকের কাছে। সৃষ্টির অপার বিস্ময় এই নারীশরীর আর দেবিকা যেন সেই সৃষ্টির শ্রেষ্ঠ প্রতীক। উত্তুঙ্গ মালভূমির মতো দুই সুডৌল পীনোন্নত ভরাট দুধে-আলতা রঙের নরম স্তনযুগলের কেন্দ্রস্থিত চকলেটের মতো খয়েরি বলয়ের মাঝে উত্তেজনায় জেগে আছে কিসমিসের মতো স্তনবৃন্তদ্বয়। স্তনবিভাজিকার নিচ থেকে মধ্যচ্ছদা বরাবর বিস্তীর্ণ অববাহিকার মতো ক্ষীণ কটির ভরাট দেহলতা, ঈষৎ মেদযুক্ত কমনীয় পেটের মাঝে পূর্ণিমার চাঁদের মতো গোল গভীর নাভিকুণ্ডলী, নাভির নীচে ফোলা পেলব চওড়া তলপেটের নিম্নাংশে আঁটসাঁট হয়ে চেপে আছে সংক্ষিপ্ত একফালি বস্ত্রখণ্ড।
ওর অপরুপ দেহসম্পদের দিকে একমনে মুগ্ধ হয়ে তাকিয়ে আছি দেখে দেবিকা মিহি গলায় বলল, এই কি দেখছ ওইভাবে ?
নিচু হয়ে ওর ঠোঁটে গভীর চুমু খেয়ে বললাম, তোমাকে দেবিকা। যতো দেখি ততই যেন মনে হয় নতুন করে আবিস্কার করছি। খুব মিষ্টি আর নরম তুমি। রমণীরত্ন তুমি।



[/HIDE]
 
[HIDE]

দেবিকা আমার কানের কাছে মুখ নিয়ে গিয়ে ফিসফিস করে বলল, তাহলে আবিস্কার করো হে পুরুষশ্রেষ্ঠ, আমাকে আদর করো সোনা।
প্রেয়সীর আবেদনে ডুবে গিয়ে ওর ভরাট মসৃণ মাখনের মতো নরম স্তনের উপরিভাগে চুমু খেতে খেতে স্তনকেন্দ্রে অগ্রসর হলাম। বাদামি বলয়টা মুখের মধ্যে নিয়ে একটু টেনে ধরতেই দেবিকা সুখে হিসহিসিয়ে উঠলো। নুড়ির মতো জাগ্রত বোঁটার উপর জিভ বুলিয়ে চেটে দিতেই দেবিকা ‘আউউউম্ম’ করে উঠলো। ময়দা মাখার মতো করে ওর কাদামাটির তালের মতো নরম ডানস্তন টিপে বামস্তনের বোঁটাসহ এরিওলা আর স্তনের অগ্রভাগের অনেকটা মুখে নিয়ে চুষতে লাগলাম। দেবিকা আমার মাথার ওপর ওর চাঁপাকলির মতো আঙ্গুলের চাপ বাড়িয়ে দিল আর ‘আহহহহ’ করে শীৎকার ছেড়ে বলল, হ্যাঁ সোনা, আদর করো তোমার এই দুটো পায়রাকে। পালা করে দুটো মাই-ই চুমু খেয়ে, মরদন-লেহনে আদর করে দুহাতের পাঞ্জায় দুই স্তন পরস্পরের কাছাকাছি এনে একসঙ্গে দুটো স্তনবৃন্ত চুষতে লাগলাম। দেবিকা গুঙ্গিয়ে উঠে আমার মাথা ওর বুকের ওপর শক্ত করে চেপে ধরল। ধীরে ধীরে স্তনবিভাজিকা থেকে নেমে গেলাম ওর নরম চর্বিতে ঘেরা পেটের ওপর। দুহাতে দেবিকার পেলব দেহবল্লরীকে আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে ধরে কোমরের বাঁকের পাশ থেকে শুরু করে পেটের প্রতিটা কোনায় আমার চুম্বনের আলপনা এঁকে দিয়ে নাভির চারপাশে গোল করে জিভ বুলিয়ে নিলাম। আমার জিভ ওর নাভির গভীরতা মাপতে সচেষ্ট হতেই দেবিকা সুখের চোটে ‘উম্মম্মমহহ’ করে উঠলো, তিরতির করে কেঁপে উঠলো ওর দেহলতা। তলপেটে মুখ ঘষে সেঁটে বসে থাকা প্যানটির ইলাস্টিকটা ধরে টেনে নামাতেই উন্মুক্ত হল দেবিকার ভেলভেটের মতো মসৃণ কামানো গোলাপি আভা যুক্ত যোনিদেশ। এতক্ষনের আদরে বেশ ভিজে উঠেছে দেবিকা। নিতম্বের নিচ দিয়ে দুহাত নিয়ে গিয়ে দেবিকার কদলীকাণ্ডের মতো সুগোল দীর্ঘ জঙ্ঘাদ্বয় জড়িয়ে ধরে মুখ নামিয়ে যোনির চেরা বরাবর চেটে দিলাম। দেবিকার ‘আহহহ উম্মম্মম’ শীৎকার কানে আসতেই আমার জিভ ঢুকিয়ে দিলাম যোনিছিদ্রের ভেতর। খানিকক্ষন চোষণের পরেই দেবিকা ছটফট করে উঠলো, কামসুখে শীৎকার ছেড়ে মিহি গলায় মিউ মিউ করে বলল, প্লিজ উজান এবারে আসো আমার ভেতরে, আর পারছি না।
ওর ডগাঙ্কুর ছেড়ে উঠে দেবিকার ডান পা আমার কাঁধে তুলে ওর যোনির লম্বাটে চেরার মুখে আমার উত্থিত পুরুষাঙ্গ ঘষে মৃদু ভাবে ঢুকিয়ে দিতেই দেবিকা তৃপ্তিসূচক ‘আহহহহ্মম’ করে উঠলো। ধীর লয়ের মন্থনের তালে দুলতে থাকা দেবিকার পীনপয়োধর বিশিষ্ট স্তনজোড়া থেকে যেন লাস্য ঝরে পড়ছে। বাঁহাত বাড়িয়ে ওর স্তন মর্দন করতে করতে ঠাপের গতি মধ্যম করলাম। দেবিকা আমার বাজুর ওপর ধরে টেনে ওর বুকের ওপর নিয়ে গেল। জড়িয়ে ধরে ওর চাপা উষ্ণ ভেজা যোনির ওপর লিঙ্গ চালনা বজায় রেখে ডুবিয়ে দিলাম আমার ঠোঁট ওর রসালো অধরযুগলে। দুজনের প্রেমঘন চুম্বনের লালায় আমাদের ঠোঁট মাখামাখি হয়ে গেল। দেবিকার সুমিষ্ট লালারসের স্বাদে মাতোয়ারা আমি লিঙ্গ সঞ্চালনের গতি বাড়িয়ে দিলাম। দেবিকার শীৎকার আমার মুখের ভেতর হারিয়ে গেল। ঠোঁট ছেড়ে দেবিকার কাঁধে মাথা গুঁজে লম্বা লম্বা স্ট্রোকে মাঝারি গতিতে ঠাপ দিতে লাগলাম ওর আঁটোসাঁটো যোনির অভ্যন্তরে। দেবিকা আমার গলা ওর পেলব দুই বাহু দিয়ে জড়িয়ে যৌনসুখের আতিশয্যে "আহঃ আহহ" করে সুরেলা গলায় শীৎকার দিতে লাগল। দেবিকার দেহের মন মাতানো ঘ্রাণে আমি নেশাচ্ছন্ন হয়ে ওর বাঁহাত মাথার ওপর তুলে আমার ঠোঁট নামিয়ে আনলাম ওর কামানো নির্লোম ফর্সা মসৃণ বাহুমূলে। নাক টেনে গভীর শ্বাস নিয়ে ওর নারীসুলভ ঘ্রান নিলাম। দুই বাহুমূলের বেদি ছোট ছোট চুম্বনে ভরিয়ে দেবিকার নিটোল ভরাট ময়দার তালের মতো নরম স্তনজোড়া চুষতে চুষতে পুনরায় মৈথুনের গতি বাড়িয়ে দিলাম। দেবিকার দিকে তাকিয়ে দেখলাম ওর চোখের কোণে টলমল জল। ব্যথিত হয়ে ওর কাছে ঝুকে বললাম, কি হল দেবিকা তুমি কাঁদছো কেন ? দেবিকা আমার ঠোঁটে চুমু দিয়ে বললো, এটা আনন্দের অশ্রু উজান, আজ আমার খুব ভালো লাগছে। আমার রূপ-যৌবন সার্থক তোমাকে পেয়ে। ওর টোপাপোনা গালে চুম্বনের পরশ বুলিয়ে বললাম, কাঁদে না সোনা, তুমি কাঁদলে আমার যে কষ্ট হয়। দুঃখের দিন শেষ, সামনে অপেক্ষা করে আছে আমাদের নতুন জীবন



একসময় আমাদের দুজনেরই শৃঙ্গারলীলার চরম সময় ঘনিয়ে আসে। যোনি মন্থনের গতি তীব্র থেকে তীব্রতর হতে থাকে। মুহুর্মুহু ঠাপে রতিসুখে দিশেহারা দেবিকা আমার গলা জড়িয়ে আমার চোখে ওর কামাতুরা চাহনি দিয়ে আদুরে গলায় বললো, আমার হবে উজান, আয়াম কামিং, আহ্হ্হ...বলতে বলতে দেবিকার রাগমোচন ঘটলো। অনুভব করতে পারছি আমার দৃঢ় কঠিন লিঙ্গের চারপাশে দেবিকার খাঁজকাটা যোনিপেশি কামড়ে ধরে দেবিকা রাগমোচন করছে। একই সঙ্গে আমারও বীর্যপাতের সময় চলে আসে। দেবিকার নরম দেহপল্লব নিবিড় ভাবে প্রেমালিঙ্গন করে ওর টসটসে গোলাপি অধর প্রবল আবেগে চুষে ভলকে ভলকে গরম লাভার মতো বীর্যস্খলন করছি ওর যোনিগহ্বরে। দুজনের একত্রিত শৃঙ্গার রসে ভেসে যাচ্ছে আমাদের মিলনস্থল। একসময় ঝড় থেমে যায়। শান্ত হয় আমাদের দুই প্রেমে-কামে মত্ত হয়ে ওঠা শরীর। তখনও ওর রতিক্রীড়ায় ঘর্মাক্ত স্তনবিভাজিকার মাঝে মুখ চুবিয়ে রয়েছি। দুহাতে আমার মাথা ধরে দেবিকা গভীর ভাবে পরম আশ্লেষে আমার ঠোঁটে ওর পেলব ঠোঁটজোড়া চেপে চুমু খেয়ে বললো, লাভ ইউ উজান, খুব ভালোবাসি তোমায়। প্রতিদানে ওর কপালে আলতো করে ঠোঁট ছুঁইয়ে বললাম, লাভ ইউ টু, কতটা ভালোবাসি আমি বলে বোঝাতে পারবো না। রতিক্লান্ত আমরা সারা দেহে সুখানুভূতির রেশ নিয়ে পরস্পরকে বাহুপাশে নিবিড় ভাবে বেঁধে ঢলে পড়লাম ঘুমের কোলে।



" যত ব্যাথা ছিলো গো আমার

তোমার পরশে দূর হলো
হৃদয়ের মনো-বীনা
নিমেষে গানের সুর হলো,
নিমেষে গানের সুর হলো
তোমার দেওয়া সে গান আজ
তোমাকেই গেয়ে যে শোনাই।
তুমি আছো এতো কাছে তাই
পৃথিবীতে স্বর্গকে পাই
তোমার চোখে যে স্বপ্ন
তাই দেখি যেদিকে তাকাই।
তুমি আছো এতো কাছে তাই।





[/HIDE]
 
[HIDE]

পরদিন সকাল সকাল উঠে পড়লাম। অনেক কাজ আছে আজ। কাল সন্ধ্যে থেকে একের পর এক যা ঘটে চলেছে মনে হচ্ছে স্বপ্নের মধ্যে আছি। দেবিকাকে ট্যাক্সিতে উঠিয়ে দিলাম, ও মেসে গিয়ে ওর দরকারি লাগেজ যা আছে সব গুছিয়ে নিয়ে ট্যাক্সিতে উঠে সোজা ঠনঠনিয়া চলে আসবে মায়ের মন্দিরে। আমি ওখানেই অপেক্ষা করবো ওর জন্য, তারপর সেখানে প্রথা মেনে বিয়ে সম্পন্ন হলে রেজিস্ট্রি অফিসে চলে যাবো দেবিকাকে নিয়ে। আইনত বিয়েটাও সেরে নেবো আজকেই।

বুড়ো সুখবিন্দরকে ফোন করে ডেকে নিলাম। চেনাজানা বিস্বস্ত ট্যাক্সিওয়ালা, আজকে বড়ো উপকারে আসবে। দেবিকার চোখে-মুখে একটা স্মিত হাসি লেগেই আছে। ট্যাক্সি ছাড়ার আগে অবধি আমার হাত ধরে একদৃষ্টিতে তাকিয়ে ছিল ও। চোখের কোণে একটু জল, না জল নয়, ওটা আনন্দের বারিধারা।
দেবিকা বেরিয়ে গেলে আমিও একটু পরেই বাইক নিয়ে রওনা দিলাম। সুমনের বাইকটা ভালো কাজে এসেছে কাল থেকে।
সাড়ে ন'টার মধ্যেই ঠনঠনিয়া পৌঁছে গেলাম। পুরুত মশাইয়ের সাথে কথা বলে প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র পাশের দোকান থেকে কিনে নিলাম। দশটার সময় দেবিকার আসার কথা।
সাড়ে দশটা বেজে গেল এখনও আসছে না। আমি মন্দির চত্বরে ইতস্তত পায়চারি করতে লাগলাম। এগারোটা বাজার পর ফোন করলাম। ফোন বেজে বেজে থেমে গেল, হয়তো কাছাকাছি এসে গেছে তাই তুলল না ফোন।
কব্জি উল্টে ঘড়ি দেখলাম, বারোটা বাজে। কপালে চিন্তার ভাঁজ পড়ল। এবার ফোন করলে রিংও হচ্ছে না, নট রিচেবল বলছে।
সুখবিন্দরকে ফোন করে উত্তেজিত স্বরে জিজ্ঞেস করলাম, কি হল এতক্ষণে তো এখানে এসে যাবার কথা তোমাদের ?
-হাঁ দাদা লেকিন ম্যাডামজী বললেন কি, উনার কিছু দরকারি কাম আছে তাই আমাকে চলে যেতে বললেন।
আমি অবাক হয়ে গেলাম, এখন আবার কিসের দরকারি কাজ ? তাহলে কি ও আইনত বিয়েটা আগে সেরে নিতে চায় ? কিন্তু জানালো না কেন ! আবার দেবিকাকে ফোন লাগালাম, এবারও কোনো সাড়া এলো না।
একটু ভেবে বাইক স্টার্ট দিয়ে বাগবাজারের রেজিস্ট্রি অফিসের দিকে রওনা দিলাম, যদি দেবিকা ওখানে যায়। ওখানে গিয়ে দারোয়ান আর উকিলের সঙ্গে কথা বলে জানতে পারলাম নাহ এখানে কোনো অল্পবয়সী মহিলা একা আসে নি সকাল থেকে। এবার আমার নিজেকে অসহায় লাগল। অস্বস্তি হতে লাগল। ইতিমধ্যে সকাল থেকে আধ প্যাকেট সিগারেট শেষ হয়ে গেছে। কপালের ঘাম মুছে দেবিকার মেসের দিকে বাইক ছোটালাম।
কাঁকুড়গাছির একটা ছোট গলিতে ওর মেস। একতলার কেয়ারটেকারকে জিজ্ঞেস করে ওর ঘর কোনটা জেনে নিলাম। সিঁড়ি দিয়ে উঠে ডানদিকের ঘরটাই দেবিকার। কিন্তু দরজায় তালা দেওয়া। আবারও হতাশ হলাম। নীচে নেমে কেয়াটেকারকে জিজ্ঞেস করতে বললো, দিদিমনি ঘন্টা দেড়েক আগে বেরিয়ে গেছে।
চরম হতাশায়-দুশ্চিন্তায় ক্লান্ত বিধ্বস্ত আমি বাড়ি ফিরে এলাম সর্বস্বান্তের মতো। রাগও হচ্ছে প্রবল দেবিকার ওপর। এভাবে ঠকালো ! আমার ভালোবাসার এই প্রতিদান !
চুপচাপ সোফায় বসে আছি মাথায় হাত দিয়ে এমন সময় কলিং বেলের আওয়াজ। বড়ো আশা নিয়ে তড়িঘড়ি ছুটে গিয়ে দরজা খুলতেই দেখি শ্যামলী মাসি।
আমার দিকে ওর হাতে ধরা একটা ভাঁজ করা কাগজ এগিয়ে দিয়ে বললো, একটি মেয়ে এসে চিঠিটা দিয়ে গেছিল একঘন্টা আগে, বলেছিল স্যারকে দিয়ে দিতে।
চিরকুটটা নিয়ে দরজা বন্ধ করে ঘরের মাঝে এলাম। সাদা চিরকুটটা ভাঁজ খুলে পড়তে শুরু করলাম -----



প্রিয়,

খুব রাগ করে আছো না ? জানি খুব রেগে আছো আমার উপরে। এই রাগটুকু সারাজীবন আমার কথা তোমাকে মনে করিয়ে দেবে। কাল সারারাত ঘুমোতে পারিনি জানো ? তোমার ঘুমন্ত সৌম্য মুখের দিকে তাকিয়ে অনেক কিছু ভেবেছি। আমি তো একটা নষ্টা নারী তাই না ? অপর দিকে তুমি একজন সম্মানীয় অধ্যাপক, তোমার একটা সামাজিক স্টেটাস আছে। সবাইকে কি বলে পরিচয় করাবে, আমার স্ত্রী বলে ? যদি কেউ আমার পূর্ব পরিচয়ের কথা জেনে যায় তাহলে ? আমি কিছুতেই তোমার অসম্মানে মাথা কাটা যাক চাই না। তোমার মা-বাবাও মেনে নেবেন না আমাকে।আর ওই সুরজও যদি দলবল নিয়ে এসে যায় পড়ে আমার খোঁজে, তখন ? তোমার কোনো ক্ষতি হয়ে গেলে যে আমি সইতে পারবো না উজান। তাই ক্ষমা করে দাও আমাকে প্রিয়তম, আমি এই শহর ছেড়ে চলে যাচ্ছি। কালকে এই কথা শত চেষ্টা করেও মুখ ফুটে বলতে পারিনি, বেদনায় বুক ফেটে যাচ্ছিলো, এখনও লিখতে গিয়ে কষ্টগুলো গলার কাছে দলা পাকিয়ে উঠছে। কিন্তু তোমার কথার অমর্যাদা আমি করবো না, নতুন জায়গায় গিয়ে মানুষের সেবার কাজে নিয়োজিত হবো ঠিক করেছি, ছোট ছোট অনাথ শিশুদের জন্য কিছু করবো। ওই নরকের পথে ভুলেও পা মাড়াবো না আর। এ ক্লেদাক্ত গ্লানিময় জীবন বহন করে মৃত্যু পর্যন্ত নিয়ে যেতে হলে একটা স্বপ্ন চাই, তোমাকে স্বপ্ন করে নিলাম। চিরজীবন আমার বুকের বাঁদিকে তোমার স্থান থাকবে।
কি জানাবো তোমায় ? ভালোবাসা, প্রণাম, শুভেচ্ছা সবটাই উজাড় করে দিলাম।
ভালো থেকো উজান। আমি আসি।


চিঠিটা পড়তে পড়তে আমার চোখের দৃষ্টি ঝাপসা হয়ে এসেছিলো। চিঠিটা দুমড়ে মুচড়ে ফেলে দিতে পারতাম, কিন্তু পারলাম না। এটা আরও অনেকবার পড়তে হবে আমাকে - গভীর রাতে, শীতে বা বৃষ্টিতে, দুঃখে বা আনন্দে - একটা মানুষ যে কতো সাবলীল ভাবে চিঠি হয়ে যায়।



[/HIDE]
 
[HIDE]


চিঠিটা পড়তে পড়তে আমার চোখের দৃষ্টি ঝাপসা হয়ে এসেছিলো। চিঠিটা দুমড়ে মুচড়ে ফেলে দিতে পারতাম, কিন্তু পারলাম না। এটা আরও অনেকবার পড়তে হবে আমাকে - গভীর রাতে, শীতে বা বৃষ্টিতে, দুঃখে বা আনন্দে - একটা মানুষ যে কতো সাবলীল ভাবে চিঠি হয়ে যায়।

কপালের রগ দপদপ করছে। বুকের ভেতর যেন দামামা বাজছে। চিরকুটটা হাতের মধ্যে নিয়ে দুই মুষ্টিবদ্ধ হাত শূন্যে তুলে উপরের দিকে তাকিয়ে চিৎকারে ফেটে পড়লাম, এ হতে পারে না, নাআআ…কিছুতেই নাআআআ…। সঙ্গে সঙ্গে আমার চারপাশের সবকিছু ঘুরতে লাগলো, মাথার ওপর যেন অজস্র আলোর ঝলকানি একসাথে ঘূর্ণির মতো পাক খেতে লাগলো আর আমি কোনো অতল গহ্বরে তলিয়ে যেতে লাগলাম। দূর থেকে ভেসে আসছে একটা ডাক, কেউ আমার নাম ধরে ডাকছে, সহসা চারদিক নিকষ অন্ধকার। ধড়মড় করে উঠে চোখ খুলতেই নিজেকে বিছানায় আবিস্কার করলাম। সকালের নরম কাঁচা রোদে ঘর ভেসে যাচ্ছে। হাতের চেটো ভালো করে দেখলাম, নাহ কোনো চিরকুট নেই।
দেবিকা দেখি পাশে বিছানার ধারে দাঁড়িয়ে উদ্বিগ্ন চোখে বলছে, কি হল তোমার ? ঘুমের মধ্যে হাত-পা ছুঁড়ে এমন ‘না নাআ’ করে চিৎকার করছিলে কেন ? কি হয়েছিল ?
বুঝলাম এতক্ষণের ঘটনা তাহলে একটা স্বপ্ন ছিল, না স্বপ্ন নয়, এ যে দুঃস্বপ্ন। কোনো দুঃস্বপ্ন এতো জীবন্ত, এতো ভয়াবহ হয় ?
সঙ্গে সঙ্গে দেবিকাকে দুহাতে নিবিড় ভাবে জড়িয়ে ধরে ওর বুকে মাথা গুঁজে গার স্বরে বললাম, তুমি কোথাও যাবে না আমাকে ছেড়ে, একদম যেতে দেবো না তোমাকে।
দেবিকা একহাতে আমার কাঁধ বেষ্টন করে আরেক হাতে আমার মাথার চুল ঘেঁটে দিয়ে নরম গলায় বলল, আমি কোথাও যাবো না, এই তো আমি। তোমাকে ছেড়ে কোথায়ই বা যাবো, তুমি তো আমার সব।
দেবিকা নিশ্চয়ই সকালেই স্নান করে নিয়েছে, ওর গা থেকে জুঁই ফুলের মতো সুবাস ভেসে আসছে আমার নাকে। আবেশের সাথে ওকে নিজের বাহুডোরে বেঁধে ওর নরম ভরাট বুকে মাথা রেখে হৃদধ্বনি অনুভব করছি। দেবিকা মুখ নামিয়ে আমার কপালে আলতো করে চুমু দিয়ে বলল, দুঃস্বপ্ন দেখে ছেলেমানুষি করে না উজান।
- তুমি জানো আমি কি দেখেছি, তুমি আমাকে ছেড়ে চলে গেছো আর…আমার মুখে নিজের হাত চাপা দিয়ে দেবিকা তাড়াতাড়ি করে বলল, যাই দেখে থাকো প্লিজ ভুলে যাও, দুঃস্বপ্ন মনে রাখতে নেই।
তারপর মুখ নামিয়ে নিচু স্বরে বলল, আমিও ঠিক এরকমই একটা স্বপ্ন দেখেছি তোমাকে নিয়ে, আচ্ছা কেন হল এরকম ?
শুকনো হেসে বললাম, কে জানে, ভালবাসলে এরকম নাকি হয় শুনেছি। পেয়েও হারিয়ে ফেলার একটা ভয় অবচেতন মনে কাজ করে।

কিছুক্ষন চুপ থাকার পর গম্ভীর ভাবে জিজ্ঞেস করলাম, আচ্ছা দেবিকা একটা কথা বলো তো, আমাকে বিয়ে করা নিয়ে তোমার মনে কোনো সংকোচ নেই তো ? তোমার পূর্ব পরিচয় নিয়ে তোমার মধ্যে কোনো হীনমন্যতা বা নতুন জীবন মিয়ে সংশয় নেই তো ? থাকলে প্লিজ সেসব চিন্তা ঝেড়ে ফেলে দাও।
দেবিকা আমার দিকে ভ্রু কুঁচকে তাকিয়ে বলল, আগে তুমি বল তো, আমার ওই বিষাক্ত অতীত জেনেও আমাকে নিয়ে তোমার কখনও অনুশোচনা বা আক্ষেপ হবে না তো ?
আমি জোরে মাথা নাড়িয়ে বললাম, না একেবারেই নেই। শরীরের ছুৎমার্গে আমি বিশ্বাস করি না। সেরকম দেখতে হলে তো আমারও কতো কলগার্লের সাথে শারীরিক সম্পর্ক ছিল। শরীরের থেকেও মন অনেক দামি আর বড়ো জিনিস। তোমাকে আমি মন আর শরীর দুই দিয়েই ভালোবাসি।
দেবিকা আমার ঠোঁটে একটা গাঢ় চুম্বন করে আমার চওড়া বুকে নিশ্চিন্তে মাথা রেখে বলল, আর আমি তো আমার মন, প্রাণ, দেহ সব তোমাকেই দিয়ে বসে আছি সেই কবে থেকে। অতীত জীবন আমি মাথা থেকে সম্পূর্ণ মুছে ফেলেছি। কোনো সংশয় নেই তোমাকে বিয়ে করতে। তোমাকে ছেড়ে যাবার কথা ভাবতেই পারি না।

কিছুক্ষন ওইভাবে জড়াজড়ি করে থাকলাম। তারপর দেবিকা আমার কাঁধে ঠেলা দিয়ে বলল, এই যে মিস্টার, এভাবে প্রেম করলে চলবে ? কতো কাজ আছে আজকে জানেন না ?
আমি মাথা চুলকে হেসে বললাম, হ্যাঁ উঠতে হবে এবার। স্নানে যাই, তোমার তো স্নান হয়ে গেছে মনে হচ্ছে।
দেবিকা আমার চুল ঘেঁটে দিয়ে বলল, হ্যাঁ সকাল সকাল ঘুম থেকে উঠে স্নান করে নেওয়া আমার অভ্যাস।
আড়মোড়া ভেঙে বললাম, আচ্ছা শোনো, তুমি তোমার মেসে গিয়ে দরকারি লাগেজ প্যাক করে সোজা কালীঘাটে চলে যাবে। আমি ওখানে আগে গিয়ে সব ব্যবস্থা করে রেখে তোমার জন্য অপেক্ষা করবো। পরিচিত এক ট্যাক্সিওয়ালা আছে, ওই ট্যাক্সিতেই তোমাকে উঠিয়ে দেবো। তারপর বিয়ে হয়ে গেলে মন্দির থেকে সোজা ম্যারেজ রেজিস্ট্রি অফিসে চলে যাবো আমরা। সাক্ষী হিসেবে আমার দু-তিনজন কলিগ থাকবে।
দেবিকা একটু চুপ থেকে বলল, আচ্ছা তোমার মা-বাবাকে জানাবে না ? ওঁদের আশীর্বাদ নেবো না আমরা ?
কাঁধ ঝাঁকিয়ে বললাম, নাহ এখন কিছু জানানো যাবে না। আমার বাড়ির লোকেরা একটু সেকেলে মানসিকতার। তোমার বিস্তারিত পরিচয়, ঠিকুজী-কুষ্ঠি না জেনে, গ্রহ-নক্ষত্র না মিলিয়ে কিছুতেই রাজি হবে না। একেবারে তোমাকে বিয়ে করে বাড়িতে নিয়ে যাবো, মেনে নিলে ভালো না হলে তাও ঠিক আছে…একবার বিয়ে হয়ে গেলে কিছু বলতে পারবে না, কিন্তু বিয়ের আগে গেলে নানাভাবে বাধা দেবার চেষ্টা করবে।

দেবিকা মাথা নাড়িয়ে বলল, আচ্ছা তুমি যা ভালো বুঝবে সেরকমই করো, আমি তাই শুনবো।

সকালের জলখাবার খেয়ে ন’টার সময় আমরা বেরবো বলে উদ্যত হলাম। ড্রাইভার নীচে এসে গেছে। দেবিকা যাবার জন্য দরজার বাইরে পা ফেলেছে এমন সময় কি মনে হল বললাম, দাঁড়াও ! দেবিকা ঘাড় ঘুরিয়ে আমার দিকে জিজ্ঞাসু চোখে তাকিয়ে বলল, কি হল ?
- আমিও যাবো তোমার সঙ্গে, তারপর একসাথেই মন্দিরে যাবো।
দেবিকা মাথা নাড়িয়ে মিষ্টি করে হেসে বলল, তাড়াতাড়ি রেডি হয়ে এসো।








[/HIDE]
 

Users who are viewing this thread

Back
Top