What's new
Nirjonmela Desi Forum

Talk about the things that matter to you! Wanting to join the rest of our members? Feel free to sign up today and gain full access!

আমার দেখা শ্রেষ্ঠ শিক্ষিকা,পাঠদানে যিনি দেহ ও মন উজাড় করে দিয়েছেন 🙏 (3 Viewers)

এই সেকশন এ অন্যরকম। সঙ্গে আছি। এগিয়ে চলুন। আপডেট দিলে notify করবেন ।
 
4___picsboxofficial_1.jpeg
 
সাবধান আপনি এখন যা পড়ছেন, তা কেবলই আমার অলস মস্তিষ্কের কল্পনা প্রসূত ফসল।দয়াকরে বাস্তবতার সামনে দাড় করাবেন না।
আত্মপ্রকাশঃ
কলেজে যোগদান করেছি প্রায় আড়াই বছর হলো।কিন্তু এখনো মনে হয়, এই তো যেদিন যোগদান করলাম।মনে পড়ে, প্রথম সেদিন প্রিন্সিপাল স্যার ক্লাস ভরা ছাত্র ছাত্রীদের সামনে পরিচয় করিয়ে দিচ্ছিলেন,লজ্জায় নাকি ভয়ে জানিনা, শরীরটা এতো কাঁপতে ছিলো- মনে হচ্ছিলো আচমকা মেঝেতে পড়ে যাবো।হঠাৎ হাতের কাছে থাকা ডায়াস টা একেবারে খামছে ধরেছিলাম।স্যার তার লেকচার শেষ করে যখন বললেন ম্যাডাম.."উইশ ইউ গুড ডে,কেরি অন প্লিজ " আমি আচমকা সামনে তাকিয়ে যেনো কালো মাথার সমুদ্রের মাঝে নিজেকে আবিষ্কার করলাম। প্রায় তৎক্ষনাৎ আমার চোখ বন্ধ হয়ে গিয়েছিল।চোখ বুজে শুধু একটা কথাই স্বরণ করছিলাম, আমার ছাত্রজীবনে প্রিয় ম্যাথ স্যার বলতেন,শোন বুড়ী;দাড়িয়ে কথা বলার সময় মনে করবি তোর সামনে কেউ নেই। না হয় ভাববি সামনে যারা আছে তারা সবাই তোর থেকে কম বুদ্ধিসম্পন্ন মানুষ।যা বলবি পুরা কনফিডেন্সের সাথে বলবি।নিজেকে সামলে নিয়ে, আমি বুকভরা সাহস নিয়ে,পুরা কনফিডেন্সের সাথে বলতে আরম্ভ করলাম "কেমন আছেন আপনারা সবাই? " মোটামুটি সবাই প্রায় হু হু করে হেঁসে উঠলো।আমি আমার আত্মবিশ্বাস যেন পুনরায় হারাতে বসেছিলাম।সেই মুহূর্তেই মাথাভর্তি চুল,নতুন গজানো হালকা চাপদাড়ি, হাসি হাসি মুখ নিয়ে একজন তরুণ বলে উঠলো,"দিদি আমারা ভালো আছি, আপনি কেমন আছেন? " আমি প্রথমে ভাবলাম ছেলেটি মনে হয় দিদি মনি বলতে গিয়ে ভুলে দিদি বলে ফেলেছে।আমার ভুল ভাঙ্গলো যখন একজন ছাত্রী উঠে বললো ম্যাম আমি ফাস্ট ইয়ারের ছাত্রী। আর পেছনে বসা ওই দাদারা সেকেন্ড ইয়ারের।তখন বুঝলাম ওরা মূলত আমার নার্ভাসনেস এর সুযোগ নিচ্ছে।তারপর কিভাবে যে ওই ঘন্টা পার করেছিলাম তা বলা আমার পক্ষে সম্ভবপর নয়।
শিক্ষার্থীদের কাছে এখন আমি অতি প্রিয় ম্যাম।আমার ক্লাস টিফিন পিরিয়ডের পর,অথচ একজন ছাত্রও ক্লাস মিস দেয় না।প্রায়ই স্টাফরুমে অন্য শিক্ষকেরা প্রিন্সিপাল স্যারের কাছে কমপ্লেন করে। ছাত্ররা নাকি ঠিকঠাক ক্লাস করে না।ক্লাস নাকি ফাকা হয়ে যায়।অথচ আমার ক্লাসে এমনও পরিস্থিতি হয়েছে, ক্লাসে গেছি,দেখি এতো স্টুডেন্ট বেঞ্চে সংকুলান হয় না। ছাত্র ছাত্রীরা গাদাগাদি করে এক বেঞ্চে পাঁচজন বসে ক্লাস করেছে।তাই এখন ও যখন প্রথম দিনটির কথা মনে পড়ে, হাসি থামাতে পারি না।ভাবি কোথায় ছিলাম, কেমন ছিলাম আর এখনই বা কোথায় যাচ্ছি? মানুষ কি কখনো মানুষের নিয়ন্ত্রণ করতে পারে? প্রকৃতির টান কি মানুষ উপেক্ষা করতে পেরেছে কখনো?আজ যখন আমি শিক্ষক।তখন আমার ভালোমন্দ,চালচলন দেখার কতো মানুষ আশেপাশে দেখছি। না চাইতেই কতো শত প্রশংসা।কতো শত পরামর্শ দাতা।অথচ এই আমি নাকি ছিলাম সবচেয়ে ব্রিলিয়ান্ট আন সোশাল সুন্দরী।হবোই বা না ক্যানো?বলি যার পেটে ক্ষুধা তার মুখে মধু আশে কোথা থেকে?ডিভোর্সি সিঙ্গেল মা আমার। হাই প্রেশারের রোগী। একমাত্র মেয়ের খাবার খরচ যুগিয়ে পড়ার খরচ,পোশাক-পরিচ্ছদ,কাগজ-কলম নানাবিধ খরচ সামলাতে টালমাটাল হয়ে যেতেন তিনি।কই সেদিন তো একজন শুভাকাঙ্খী ও পাই নি।একজন পরামর্শ দাতা পাই নি। আর্থিক সাহায্য তো দূরের কথা বরং মেয়েটি মিশুক না,ভালো কথা বলতে পারে না।এমন কানাঘুষা চলতেই থাকতো।মা শুধু বলতো বুড়ী আর যা করিস মা ক্লাসে ফাস্ট হওয়া চাই।আমিও কম জেদি ছিলাম না,ওদের কানাঘুষোর জবাব মুখে দিতে পারতাম না ঠিকি। কিন্তু কাগজে কলমে হাড়ভাংগা জবাব দিয়ে দিতাম। সেই তখন থেকেই একটা জিনিস শিখে ফেলেছিলাম।মানুষ অন্যের সমালোচনার সুযোগ পেলে নিজের শব্দ ভান্ডার শেষ করে দিতে পারে।অথচ সেই মানুষটি ভালো কোনো অবস্থানে পৌঁছালে তার প্রসংশায় পঞ্চমুখ হয়ে যায়।তখন থেকেই নিজের যা ভলো লাগে সেটাই আমি করি।অনেক সমালোচনা শুনতে হয় কিন্তু তাতে অদ্ভুত সুখ খুঁজে পাই আমি।এই গত বৈশাখে মা চলে গেলেন না ফেরার দেশে।পুরো একা হয়ে গেছিলাম আমি।চাকরি পাওয়ার পর কতো বলতাম মা,এবার আর পানের দোকান করতে হবে না তোমার।শুনতেই পারতো না এই কথা।বলতো আমি ওই দোকানে না বসলে দম বন্ধ হয়ে মারা যাবো বুড়ী। তুই আমার মেয়ে আর ওই দোকানটা আমার মা।কাকে ছেড়ে আমি বাঁচি বল? তারপর থেকে আমিও আর জোর করতাম না।খুব হাসিখুশী দিন কাটছিলো মা-ঝি মিলে।
 
উপযুক্ত শিক্ষক। তার জন্য শুভকামনা। দর্শক গ্যালারিতে বসলাম।
সকল শ্রদ্ধাভাজন শিক্ষক ও শিক্ষিকার প্রতি এমন বিনয় বোধ তৈরি হোক,যেন তাদের জ্ঞান বিতরণে কোনো দ্বিধা বা বাধা না পোহাতে হয়।
 
এই সেকশন এ অন্যরকম। সঙ্গে আছি। এগিয়ে চলুন। আপডেট দিলে notify করবেন ।
আপনি অভিজ্ঞতায় অনেক ভারী।আমার কল্পনা জগত অতি নিচুস্তরের।আপনাদের কমেন্ট আমাকে সমৃদ্ধ করবে আশা করি।
 
বানানের ভুলের জন্য ক্ষমাপ্রার্থী 🙏
♪♪♪♪♪♪♪♪♪♪♪♪♪♪♪♪♪♪♪♪♪♪♪♪♪♪♪♪♪♪♪♪♪♪♪♪♪♪♪
আজ মা নেই।এই সংসারে দুটি মানুষের জন্য আজ আমি এখানে।একজন আমার মা আর অন্য জন হলেন নরেন মামা।আমার জন্মের পর শুধু একবার বাবাকে দেখেছিলাম। সম্ভবত বছর কুড়ি বা তারাও আগে।যতোদূর মনে পড়ে তখন আমি স্কুলে পড়তাম।মা আমাকে নরেন মামার হাতে দিয়ে বলেছিলো,যাও নরেন দা ওরে ওর বাবা দেখার শখ মিটিয়ে আনো।শুনে আমি তো খুশিতে আটখানা।মামার সাথে কাঁচা রাস্তা ধরে হেটে ট্রেন ধরি।মামা আমাকে নিয়ে গেলেন শহরের এক কোলাহলপূর্ণ এলাকায়।চারিদিকে মানুষ আর মানুষ।পথে মামা বলেছিলেন বুড়ী তোর বাবা কিন্তু খুব রাগী মানুষ।যদি কিছু প্রশ্ন করে স্পষ্ট জোরে উত্তর দিবি।আমি মাথা নাড়িয়ে সম্মতি জানালাম। কিছুসময় চুপ থেকে মামাকে প্রশ্ন করলাম, মামা বাবা আামাদের ছেড়ে এতো দূরে একা থাকে ক্যান? আমাদের কি সে অপছন্দ করে?
মামা অনেকক্ষণ চুপ থেকে,গলা খাকড়িয়ে নিচুস্বরে বললেন,শোন বুড়ী তোর বাবা এখানে তার নতুন স্ত্রীর সাথে থাকে।তার শশুরের ব্যাবসা সামলান।তোর বাবা এখন বিরাট মানি লোক,পয়সাওয়ালা মানুষ।শশুরের একমাত্র কন্যার উপযুক্ত ঘরজামাই।তুই এখন বড় হচ্ছিস, তোর জানা দরকার। তোর বাবা তোর মায়ের সাথে প্রতারণা করেছে,তোর মাকে ঠকিয়েছে। তোর মা তাকে বিশ্বাস করে সর্বস্ব দিয়ে ভালোবেসেছিল।কিন্তু তোর বাবা অর্থ লোভে নিজেকে বিকিয়ে দিয়েছে।আজ তার বাড়ি,গাড়ী, টাকা কি নেই?অথচ তোর মা পড়ে রয়েছে গ্রামের ওই এককোনায়, একলা।তোর জন্মের পর কতো বলেছি বুন্ডি বিয়ে কর।নতুন সংসার পাত।কতো মানুষ ই তো সন্তান সাথে নিয়ে নতুন করে সংসার গড়ে দিব্যি চালিয়ে যাচ্ছে। তুই ও পারাবি।তখন তোর মা শুধু বলতো, দাদা যার হয় শুরুতেই হয়।আমার কপালে এই মেয়ে ছিলো,আমি ওরে নিয়েই বাকীটা জীবন কাটিয়ে দিতে পারবো। কই তুমি ও তো আবার সংসার পাতো নাই।বৌদির বাচ্চা হয় নাই,তবুও তো তার জীবদ্দশায় একটা বিয়ে করো নাই।তার চলে যাওয়ার পরও তো একলা রয়ে গেলে।নরেন দা তুমি আমাদের দেখবে না বলো?সেই থেকে আজ পর্যন্ত ওমনি হাড়ভাংগা খেটে চলছে তোর মা। কথা বলতে বলতে আমারা চলে এলাম এক বিশাল বিল্ডিং এর সামনে।সামনে থেকে দেখে মনে হলো আকাশ ছুয়ে গেছে ওর মাথা।মামা আমাকে নিয়ে লিফটে চেপে বারো তলায় পৌঁছালো। সেখানে গিয়ে এক ভদ্রমহিলাকে জিজ্ঞেস করলোঃ শশোধর কাপালি আছেন? মহিলা জবাব দিলেন, স্যার মিটিং এ আছেন।কে আপনি?মামা বললেন আমি নরেন্দ্রনাথ কাপালি। দয়াকরে আপনার স্যারকে বলবেন নরেন কাপালি নামের একজন লোক এসেছে গ্রামের বাড়ি থেকে।মহিলা ফোন করে কি যেনো বললেন।মিনিট দশেক পড়েই বললেন, স্যার আপনাদের ডেকেছেন ভিতরে চলুন। আমরা তার পিছুপিছু চললাম। ভিতরে গিয়ে দেখলাম একজন বিশাল লম্বা ও ফর্সা সামান্য টাক মাথা ওয়ালা ভদ্রলোক দাড়িয়ে সিগারেট খাচ্ছেন।ভদ্রমহিলা বললেন আপনারা থাকুন আমি আসছি।মামা মাথা নাড়িয়ে গলা খাঁকড়ি দিয়ে বললেন, ক্যামন আছো শশো?ভদ্রলোক সিগারেটে একটা বড় টান দিয়ে ধোয়া ছাড়তে ছাড়তে মামার দিকে তাকালেন।পরোক্ষণেই কিছুটা আড় চোখে একপলক আমাকেও দেখে নিলেন। তারপর একটানে বাকী সিগারেট শেষ করে ফেলতে ফেলতে বললেন, নরেন তুমি আবার এসেছো?তোমাদের লজ্জা নেই তা জানতাম কিন্তু অপমান বোধ ও যে নেই তা তো জানতাম না।তা সাথে আবার এ কে হে বাপু? তোমার মেয়ে নাকি? ওহ তোমার আবার মেয়ে কোত্থেকে আসে!কি সমাচার বলো? মামা বললেন এবারই শেষবার শশো।আর আসবো.....বলা শেষ করার আগেই ভদ্রলোক বললো থামো।যেবার ই এসেছো এই এক মন্ত্র পাঠ করেছো।নতুন কিছু থাকলে বলো না হলে কিছু খেয়ে বিদায় হও বাপু।মামা লজ্জায় মাথা নিচু করে নির্লজ্জের মতো আবার বলতে লাগলো। শশো এই মেয়ে তোমার নিজের মেয়ে।সবসময় জেদ করে বাবাকে দেখবে বলে।অনেক বুঝিয়ে সুজিয়ে এতোদিন রেখেছি ভাই।আর পারলাম না।তাই বাধ্য হয়ে.....কথা শেষ হবার আগেই ভদ্রলোক বললো, আস্তে কথা বলো নরেন।তোমাদের সম্মানবোধ না থাকতে পারে কিন্তু আমার একটা স্টাটাস আছে।মেয়ে বললো আর নাচতে নাচতে রথ দেখাতে নিয়ে এলে।এজন্যই আমি তোমাদের দেখতে পারি না দু চোখে।হঠাৎ আমার দিকে রক্ত চক্ষু করে চেয়ে ভদ্রলোক বললেন, কি হে রাজকন্যা, কি দ্যাখা হয়েছে?জবাবে আমি কিছু বলতে পারলাম না।শুধু মামার হাতটা শক্ত করে ধরলাম। আর মাথা নিচু করে মামার পিছনে এসে দাড়ালাম।মামা বললো বুড়ী, মা আমার বাবাকে প্রণাম করো।আমি কিছুতেই সাহস পেলাম না।ঠিক সঙ্গে সঙ্গেই ভদ্রলোক ধমক দিয়ে বললো, নরেন যথেষ্ট হয়েছে।আদিক্ষেতা ছাড়ো।আমি বলে দিচ্ছি। নিচে গিয়ে কিছু খেয়ে বিদায় হও।আমার আবার মিটিংয়ের দেরি হয়ে যাচ্ছে।পারলে আর কখনো এমুখো হইয়ো না।বলতে বলতে জুতার শব্দ করে সামনে এগিয়ে গেলেন ভদ্রলোক। মামা আমার দিকে তাকিয়ে বললো, এই বুড়ী বাবাকে প্রণাম করলি না ক্যানো? কিছু বললি না ক্যান? আমি শুধু একটা কথাই বলতে পেরেছিলাম মামা এখান থেকে আমাকে নিয়ে চলো।আর কোনোদিন এখানে আনবে না আমাকে।আর কোনোদিন ও না।
 

Users who are viewing this thread

Back
Top