What's new
Nirjonmela Desi Forum

Talk about the things that matter to you! Wanting to join the rest of our members? Feel free to sign up today and gain full access!

কঠিন প্রশ্নের মজাদার সব উত্তর (1 Viewer)

"হাওয়াই চপ্পল পায়ে সিরাজ তো উঠে পড়লেন ঘোড়ায়। তারপর তরোয়াল নিয়ে সাঁই সাঁই সাঁই! কী যুদ্ধু, কী যুদ্ধু! " -- সিরাজ সত্যিসত্যি এমন করেছিলেন কিনা, জানি না। সিরাজ নিজেও মনে হয় জানতেন না। তবে মালিপাঁচঘড়ার ক্লাস এইটের ছাত্র এসব দিব্যচক্ষে দেখেছে। 'পলাশীর যুদ্ধ' নিয়ে কোশ্চেনের উত্তরে খাতায় লিখেও দিয়েছে। লেখা পড়ে মাস্টারমশাই সিরাজোচিত ধামের উদ্দেশ্যে রওনা দিয়েছেন কিনা জানা নেই। আপনারা অবাক হতেই পারেন, স্কুল শিক্ষার সঙ্গে জড়িত মানুষজন কিন্তু হন না। তাঁরা মজ্জায় মজ্জায় জানেন, ভুল লজ্জার বিষয় নয়। ঠিকের চেয়ে ভুল দিয়েই মানুষকে চেনা যায় বেশি। ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে যে কত প্রতিভা সুপ্ত থাকে, তা জানতে গেলে উত্তরপত্রে লেখা তাদের ভুলগুলো পড়তেই হবে।
আলেকজান্ডার একদিন সকালবেলা পুরুর বাড়ির দরজায় কড়া নাড়লেন। পুরুর মা দরজা খুলে দিতে বললেন, "মাসিমা, পুরু আছে?" 'মাসিমা' বললেন, "না বাবা, পুরু খেলতে গেছে।" আলেকজান্ডার বললেন, "এলে বলে দেবেন, বিকেলে যুদ্ধ আছে।" এমন ইতিহাস লিখতে ঐতিহাসিক রমেশচন্দ্র পারেননি, এডাম স্মিথও না। এ আমাদের বাংলা মিডিয়ামের কিশোরকিশোরীদের পাকা হাতের কাজ। তাদের প্রতিভার কি আর কমতি আছে? একবার প্রশ্ন এল, "রবি ঠাকুর 'নাইট' উপাধি ত্যাগ করেন কেন?" ক্লাস এইটের এক প্রাজ্ঞ ছাত্রী লিখল, জালিয়ানওয়ালাবাগে প্রচুর মানুষকে হত্যা করেছিলেন বলে নাকি রবি ঠাকুরের 'নাইট' কেড়ে নেওয়া হয়েছিল। বিশ্ব সাহিত্যের ইতিহাস 'খুনি' কবিবরের এই সংবাদে কেঁপে উঠতে পারত। ভাগ্যিস শিক্ষিকা বাকরুদ্ধ হয়ে গিয়েছিলেন!
কোনো ব্যাকরণবিদ কি স্বপ্নে ভেবেছিলেন, 'উত্তম' শব্দের বিপরীত 'সুচিত্রা' হতে পারে? অথবা 'আজানুলম্বিত' শব্দের অর্থ 'হাফপ্যান্ট'? আর 'রামায়ণে'র লেখক যে 'মহাভারত', তাই নিয়ে বাল্মীকি বেদব্যাসের ইগো ক্ল্যাশ থাকলেও এ বাংলার অভাগা শিক্ষক শিক্ষিকারা নির্বিকারই থাকেন। কারণ এসব তাঁদের গা সওয়া হয়ে গেছে। প্রাথমিকের শেষ পর্বে এক ছাত্রী লিখল, "আমার দিদিমণিদের আমি খুব শ্রাদ্ধ করি।" 'শ্রদ্ধা'কে 'শ্রাদ্ধে' পৌঁছে দেওয়া তো শুধু একটা আ-কারের ব্যাপার। হাহাকার করে হবে কী? ক্লাস সিক্সে এক মাই ডিয়ার টাইপ শিক্ষিকা ছাত্রীদের বললেন 'এওয়ে' দিয়ে বাক্যরচনা করতে। এক পুঁচকি উঠে দাঁড়িয়ে বিজ্ঞ হেসে বলল, "মিস, ইউ পাস্'ড এওয়ে।" পৃথিবীতে নিজের মৃত্যু সংবাদ শোনার অভিজ্ঞতা খুব কমজনেরই আছে। সেই বিরল প্রাপ্তির ঘায়ে চেয়ারশায়ী শিক্ষিকা আর্তনাদ করে উঠলেন, "কখন?" উত্তর এল, " ফার্স্ট পিরিয়ডে, মিস। আপনি আমাদের ক্লাসরুমের পাশ দিয়ে হেঁটে চলে গেলেন তো!" কে জানে, শিক্ষিকা নিজেই নিজের শ্রাদ্ধাদি সেরেছিলেন কিনা।
এক ইতিহাসের শিক্ষক টীচার্সরুমে বসে মাধ্যমিকের খাতা দেখছিলেন। হঠাৎ বুকে হাত দিয়ে পাহাড়ি সান্যাল স্টাইলে ঝুঁকে পড়লেন। কী হয়েছে? ব্যাপার কী? পরীক্ষায় প্রশ্ন ছিল, "ইতিহাসে কণিষ্ক'র অবদান সম্পর্কে লেখ।" ছেলে লিখেছে ভালোই। ক্লাইম্যাক্সটা শেষকালে। সুন্দর হস্তাক্ষরে লেখা হয়েছে, "মাথা না থাকতেই কণিষ্ক এতকিছু করেছেন। মাথা থাকলে না জানি তিনি কতকিছু করতেন!" মুণ্ডহীন সম্রাটের অমর কীর্তি বেচারা শিক্ষককে প্রায় মেরেই ফেলেছিল। এক শিক্ষিকাও এমনই উত্তর পাঠ করে হৃদয়ঘটিত সমস্যায় পড়েছিলেন। তাঁর ছাত্রী লিখেছিল, "মীরা বাই ইতিহাসে একজন মাওবাদী হিসাবে বিখ্যাত।" বাদী বিবাদীর চক্করে পড়ে ভাববাদীকে 'মাওবাদী' বানানোর মূলে কোন কিষেণজির ভূমিকা আছে, শিক্ষিকা ভেবে আকুল। 'বৃষ্টিচ্ছায় অঞ্চল' মানে যে "ছায়ার মধ্যে বৃষ্টি", সেটাই বা কতজন পণ্ডিত জানেন? আর 'গদাইলস্করি চাল' দিয়ে বাক্যরচনা? হুঁহুঁ, সে একেবারে ফাটাফাটি। "বাজারে অনেক রকম চাল আছে। কিন্তু গদাইলস্করি চালের জবাব নেই!"
ভুলের ভুলভুলাইয়ায় ঢুকলে বেরোনো মুশকিল। তবু এত মজাদার উদ্ভাবনের কথা ভাবতে ভাবতে ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিকে একটু বেহালাও কি বাজে না? ভুল করা স্বাভাবিক। আমরা সবাই করে থাকি। কিন্তু এই ভুল যদি শিক্ষার্থীর বৌদ্ধিক বিকাশ বা বিবেক নিয়ে প্রশ্ন তুলে দেয় , সে বড় চিন্তার কথা। মাথা না থাকলে যে মানুষের ভবলীলা সাঙ্গ হয়ে যায়, লেখার আগে একবারও ছাত্র সেকথা ভাবল না? বিশ্ববরেণ্য কবি বন্দুক হাতে জালিয়ানওয়ালাবাগে শয়ে শয়ে মানুষকে হত্যা করছেন, একথা ভাবতে ছাত্রীর বিবেকে বাধল না? তবে কি শিক্ষা জীবন বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ছে? তবে কি লেখাপড়া বুদ্ধি, অনুভূতিহীন এক আনুষ্ঠানিক ব্যাপার মাত্র? পাঠ্য বইয়ের বাইরের বই না পড়ে পড়ে কি শিক্ষার্থীর হৃদয়রাজ্যে চড়া পড়ে যাচ্ছে? সে শুধু টিক দিচ্ছে, শূন্যস্থান পূরণ করছে, ‘ঠিক ভুল’ বের করছে । সে ভাবছে না, বিশ্লেষণ করছে না, সিদ্ধান্তে পৌঁছাচ্ছে না।
বুদ্ধি নেই, তাই বা বলি কীকরে? এক বুদ্ধিমান ছাত্রীর কাণ্ড দিয়েই শেষ করব। ড্রইং পরীক্ষায় বেড়াল আঁকতে দেওয়া হয়েছে। ক্লাস ফাইভের কুচি মেয়ে গম্ভীর মুখে বিরাট এক বেড়াল আঁকছে খাতার পাতা জুড়ে। নিচের ডানদিকে লিখেছে "পি টি ও"। দিদিমণি তো অবাক। জিজ্ঞেস করলেন, " ড্রইং খাতায় পি টি ও কেন?" ছাত্রী জানাল তার মা বলে দিয়েছেন, উত্তর এক পাতায় না আঁটলে পরের পাতায় যেতে হলে ঐ কথা লিখতে হয়। তার বেড়াল এত বড় হয়েছে, যে সেই অনুপাতে একটি পেল্লাই লেজ দরকার।সেই লেজ এই পাতায় আঁটবে না। তাই সে ঠিক করেছে "পি টি ও" লিখে পরের পাতায় মনের সাধ মিটিয়ে লেজখানা আঁকবে। এমন ভাবনা ভাবতে পারতেন লিওনার্দো?
----------------------------------------
( সংগৃহীত )..
পড়ে খুব হাসলাম, আশা করি আপনারাও হাসবেন, তাই দিলাম সকলের জন্য । এখন প্রাণখোলা হাসি খুব দরকার 🙏🙏..
----------------------*****-----------------.:)
পিচ্চির অনেক বুদ্ধি !!
 

Users who are viewing this thread

Back
Top