যাকাত ও ছাদাক্বা : আর্থিক পরিশুদ্ধির অনন্য মাধ্যম
ভূমিকা :
'যাকাত' ইসলামের পঞ্চস্তম্ভের একটি অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ স্তম্ভ। আরবী 'যাকাত' (زكوة) শব্দের বাংলা অর্থ হচ্ছে- পবিত্রতা, প্রবৃদ্ধি, কোন বস্ত্তর উত্তম অংশ, বরকত ইত্যাদি। সম্পদশালী ব্যক্তিগণের উপরই কেবল যাকাত ফরয। যারা নির্ধারিত পরিমাণ সম্পদের মালিক হবেন, বছরান্তে তারা নির্দিষ্ট অংশ শরী'আত নির্ধারিত খাত সমূহে বণ্টন করবেন। অপরদিকে 'ছাদাক্বা' বলা হয় স্বেচ্ছা প্রদত্ত ঐ দানকে, যার দ্বারা আল্লাহর নৈকট্য লাভ হয়। শারঈ পরিভাষায় যাকাত ও ছাদাক্বা একই মর্মার্থে ব্যবহৃত হয়। যেমন আল্লাহ বলেন, خُذْ مِنْ أَمْوَالِهِمْ صَدَقَةً تُطَهِّرُهُمْ وَ تُزَكِّيْهِمْ بِهَا. 'আপনি তাদের মাল-সম্পদ হ'তে ছাদাক্বা (যাকাত) গ্রহণ করুন, যা তাদেরকে পবিত্র ও পরিশুদ্ধ করবে' (তওবা ১০৩)। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেন, لَيْسَ فِيْمَا دُوْنَ خَمْسَةِ أَوْسُقٍ مِّنَ التَّمَرِ صَدَقَةٌ 'পাঁচ অসাক্ব খেজুরের নীচে কোন ছাদাক্বা (যাকাত) নেই'। (বুখারী ও মুসলিম, আলবানী মিশকাত হা/১৭৯৪; ঐ, বঙ্গানুবাদ হা/১৭০২ 'যেসব মালে যাকাত ফরয' অনুচ্ছেদ।) উপরোক্ত আয়াত ও হাদীছে যাকাত ও ছাদাক্বাকে একই অর্থে বুঝানো হয়েছে। তবে প্রচলিত অর্থে যাকাত অপরিহার্য দান এবং ছাদাক্বা স্বেচ্ছা দান বা নফল দান হিসাবে পরিচিত। (আত-তাহরীক, ৩/৩ সংখ্যা ডিসেম্বর'৯৯, পৃ: ১১।) পবিত্র কুরআন ও ছহীহ হাদীছে যাকাত আদায়ের পুরস্কারের কথা যেমন বর্ণিত হয়েছে, তেমনি যাকাত আদায় না করার কঠোর শাস্তির কথাও বিধৃত হয়েছে। বক্ষ্যমাণ নিবন্ধে যাকাত ও ছাদাক্বা আদায়ের শারঈ বিধান ও তা অনাদায়ের পরিণতি সস্পর্কে আলোকপাত করা হল-