What's new
Nirjonmela Desi Forum

Talk about the things that matter to you! Wanting to join the rest of our members? Feel free to sign up today and gain full access!

তাহার নামটি রঞ্জনা (1 Viewer)

MOHAKAAL

Mega Poster
Elite Leader
Joined
Mar 2, 2018
Threads
2,280
Messages
16,017
Credits
1,461,723
Thermometer
Billiards
Sandwich
Profile Music
French Fries
তাহার নামটি রঞ্জনা পর্ব – ১ - by miss_malini

রঞ্জনার সদ্য বিয়ে হয়েছে পদ্মনাভের সঙ্গে। পদ্মনাভ পেশায় সার্জেন। রঞ্জনা গৃহবধূ এবং বয়েসে বেশ ছোটোই তার স্বামীর চাইতে। ডাক্তারবাবুর ইচ্ছা ছিল তার বৌ একাধারে সুন্দরী শিক্ষিতা হোক আবার বাড়িতেই থাকুক সবসময়। অর্থাৎ গৃহবধূই চেয়েছিলেন তিনি। এব্যাপারে বেশ প্রাচীনপন্থীই বলা চলে। তার মতে বৌ বাইরে কেন বেশি বেরোবে? তার ভোগের সম্পদ শুধু সেই সুখলাভ করবে। এখানে বলে রাখা ভালো, ডাক্তারের বয়েস প্রায় ৩৫ আর রঞ্জনার ২৫। রঞ্জনা বিয়ের আগে বাংলা নিয়ে পড়াশোনা করেছিল…এম.এ পাশ করার পরপরই সম্বন্ধ আসে। উ: ২৪ পরগণার এক গ্রামে ছিল তাদের বাড়ি। বাবা পেশায় ছিলেন সরকারি অফিসের কেরানি। মাস গেলে যেকটা মাইনে পেতেন বাপ বেটিতে চালে ডালে ফুটিয়ে খেয়ে নিতো। রঞ্জনার মা বেশ ছোটোবেলায় মারা যান বলে মাতৃস্নেহ থেকে বঞ্চিত হলেও তার বাবা কোনো খেদ রাখেননি। স্বল্প সামর্থ্যের মধ্যেই তার আবদার পূরণ করতেন। যদিও রঞ্জনা যে খুব আহ্লাদী ছিল তা না সে বাবার কষ্টটা বুঝতো। সে চেয়েছিল পড়াশোনা করে একটা চাকরি পেতে যাতে বাবাকে সুখে রাখতে পারে। কিন্তু সব স্বপ্ন কি আর পূরণ হয়? ভালো সম্বন্ধ দেখে বাবা বিয়ে দিয়ে দিলেন। বয়েসে প্রায় বছর দশেকের বড়। তাতে কী? শহুরে পরিবার সেরম পণের দাবিদাওয়াও করেনি। কী চাই আর?

রঞ্জনার কলেজে একটি ছেলেকে ভালো লাগতো। যদিও তার সাথে বেশি কথা সেরম হতো না। সাইকেল নিয়ে ছেলেটি পড়তে আসতো। তারও বাড়ি দূর গ্রামে। কলেজ করে কারুর সাথে সেভাবে কথা না বলেই চলে যেতো। দ্বিতীয় রো এর কোনার দিকে বসতো। বান্ধবহীন ঐ শান্ত মানুষটাকে আড়চোখে দেখতে রঞ্জনার বেশ ভালো লাগতো। তাকে নিয়ে সেভাবে কখনোই সে কিছু ভাবেনি শুধু মনে হতো মাঝেমাঝে যেচে কথা বললে কি খারাপ দেখাবে?

রঞ্জনা এখন পুরোপুরিই ঘরের কাজকর্মে নিজেকে সঁপে দিয়েছে। পদ্মনাভ ১০ টা নাগাদ বেরোন পরপর ২ টো চেম্বার করে বাড়ি আসেন সাড়ে ৩ টে নাগাদ। লাঞ্চ খেয়ে আবার চলে যান চেম্বারে। সেখান থেকে ফিরতে ফিরতে ১০ টা বেজে যায়। তারপর ডিনার খেয়েদেয়ে বই পড়তে পড়তে ঘুমিয়ে যান। এই কর্মব্যস্ত জীবনে রঞ্জনার কর্তব্য ঐ রাতের শয্যাসঙ্গিনী হওয়াটুকু মাত্র। সারাদিন তার কাটে ঘর গুছিয়ে, সিনেমা দেখে, সেলাই ফোঁড়াই করে। হারমোনিয়ামটা গ্রামের বাড়ি থেকে ভাগ্যিস নিয়ে এসেছিল। কখনো সখনো সেটা নিয়েও বসে, চর্চা হয়। মাঝে একদিন সে তার স্বামীকে বলেছিল যে বাচ্চাদের টিউশন পড়ায় যদি, পদ্মনাভের তাতে রিয়াকশন ছিল-
-তুমি দাশগুপ্ত বাড়ির বৌ হয়ে টিউশন করাবে?
-কেন তাতে খারাপ কী? তোমার বাবাও তো শিক্ষক ছিলেন। শিক্ষকতা কি খারাপ নাকি?
-না তা না। তবে এই টিউশন পড়ানো ব্যাপারটা আমার ঠিক পছন্দ না।

আদপে পরোক্ষে বারণই করে দিল তাকে। নিজে রোজগার করেনা বলেই তো বরের কথার উপরে কোনো কথা রাখতে পারেনা।
বাবা তাকে বলতো নিজে কিছু করার চেষ্টা করিস। আর সেই বাবা ই তাকে ভালো সম্বন্ধ এর জন্য শুধুমাত্র এভাবে বিয়ে দিয়ে দিল। হিপোক্রেসি নাহ এটা? ভেবে রাগ হয় বাবার উপর রঞ্জনার। পরে ভাবে যে হয়তো রিটায়ারের পর পেনশন যা পাচ্ছিল তা দিয়ে চলছিল না সংসার সেভাবে তাই বাধ্য হয়েই কতকতা বিয়ে দিতে হয়েছে। কে জানে…যার যা কপালে থাকে আর কী ভাগ্যের লিখন আর খন্ডাবে কে?
এসব সাতপাঁচ ভাবতে থাকা রঞ্জনা সারাদিন ধরে। কখনো আবার ভাবে তাদের হানিমুনের কথা। হানিমুনে তারা গিয়েছিল সিমলা। ভারী সুন্দর জায়গা। বরফ পড়ছিল। খুব মজা হচ্ছিল তার। এত দূরে কখনো সে যায়নি আগে। বাঙালির দীপুদা মানে দীঘা পুরী দার্জিলিং গেছে যদিও। এরেঞ্জড ম্যারেজ ছিল তাই ফুলশয্যার রাতেও সেভাবে কিছুই তাদের মধ্যে হয়নি।
পদ্মনাভ ঘরে ঢুকে দরজা লাগিয়ে কেবলুশের মতো হেসেছিল তাকে দেখে। পরমা সুন্দরী লাগছিল রঞ্জনাকে সেদিন নীল বেনারসীতে। যদিও বিয়ের ধকল ছিল মুখে চোখে স্পষ্ট।

পদ্মনাভ গ্লাসের দুধটা খেয়ে বিছানায় বেশ আরাম করে পা মুড়িয়ে বসে বলেছিল- তোমায় আমার পছন্দ হয়েছে তো রঞ্জনা?
এ কথা শুনে রঞ্জনা তো ব্লাশ করেছিল রীতিমতো। এভাবে কেউ কখনো তাকে বলেনি। ভালোবাসা জিনিসটা যে কী কখনো সে সেভাবে বোঝেইনি। ডানাকাটা পরী সে না, তবে চেহারা আঁটসাঁটো। পাড়ার উটকো ছেলেদের দু চারটে মন্তব্যে গা করতো সে কখনোই। প্রেম প্রস্তাব এসেছিল একবার বেনামী চিঠিতে কিন্তু সে তোয়াক্কা করেনি তার৷ আসলে কাপুরুষদের সে পছন্দ করে। যা বলার সামনাসামনি বলতে পারলে বলো নাহয় কাটো এই নীতিতে বিশ্বাসী।

তো পদ্মনাভের এই কথাটা শুনে একটু ধীরলয়ে ঘাড় নেড়েছিল রঞ্জনা। দীর্ঘদেহী (প্রায় ৫'৮") শ্যামলবরণ মুখ, চুল ঈষৎ কম। তবে টাক না। সোনালি ফ্রেমের চশমা, হাল্কা চাপ দাড়ি। মোহিনীরঞ্জন চেহারা না হলেও ভালোই দেখতে বলা চলে। তার উপরে ডাক্তার মানুষ। রঞ্জনা একটু ভয়েই ছিল। বিয়ের আগে সেভাবে দেখাসাক্ষাৎ ও হয়নি। ফোনে ৩-৪ বার কথা হয়েছে খালি তাতে সে হ্যাঁ না আচ্ছা ও এর বাইরে কোনো শব্দই উচ্চারণ করেনি। পদ্মনাভ ই বলে গিয়েছিল তার কথা যে তাকে দেখে সে কতোটা মুগ্ধ, পাকা দেখার দিন গান শুনিয়েছিল তা শুনে সবাই প্রশংসা করেছিল। পদ্মনাভ এও বলেছিল এমবিবিএস পড়াকালীন তার এক সহপাঠিনীর সাথে বেশ ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক গড়ে উঠেছিল কিন্তু তা ৪ বছর পর ভেঙে যায়। বলা ভালো মেয়েটিই ভেঙে দেয় প্রেম করাতে তার কেরিয়ারের ক্ষতি হচ্ছে এই অজুহাতে। এই ঘটনার পর ড: দাশগুপ্ত ভীষ্মের পণ করেছিল আর প্রেম করবে না, বাবা মা এর সম্মতিক্রমেই একেবারে ছাদনাতলায় গিয়ে বসবে। তো অনেক উচ্চশিক্ষিতা মেয়েই দেখা হচ্ছিল যারা ঐ তথাকথিত সম্ভ্রান্ত পরিবারের তাই কিছুটা উন্নাসিক ও বলা চলে আর এদিকে পদ্মনাভের তো চাকুরিজীবী মেয়ে নাপসন্দ ঐ ধাক্কাটা খাওয়ার পর থেকেই (তার মনে হয়েছে বেশি বাইরে মেলামেশা মানেই প্রেম বিয়ে সব মায়ের ভোগে যায়, ৩য় ব্যক্তির আগমণ ঘটে আর কী!) এসবই ফোনে বলতো রঞ্জনাকে। রঞ্জনা একটু ইন্ট্রোভার্ট প্রকৃতির এসব গল্প শুনে তার কিছুই বলার থাকতো না বিশেষ তবে সে এটা জানিয়েছিল তার পূর্বের কোনো সম্পর্ক ছিলনা।এটা জেনে পদ্মনাভ কিছুটা খুশিও হয়েছিল বলা যায়। কুমারী মেয়ের সাথে সঙ্গম হোক এ তো যেকোনো ছেলেরই স্বপ্ন থাকে তাই না?

বৌভাতের রাতে পদ্মনাভ একটা হীরের আংটি উপহার দিয়েছিল। রঞ্জনার অনামিকায় সেটা পরিয়ে দিয়ে হাতটা চুমু খেয়ে নিয়েছিল বুকের মাঝে। খুব রোমান্টিক লেগেছিল রঞ্জনার। সে বাকরুদ্ধ হয়ে গিয়েছিল। তারপর ঘোর কাটলে তার স্বামীর চোখের দিকে তাকিয়ে বলেছিল থ্যাংকিউ ডাক্তারবাবু।
শুনে পদ্মনাভ হেসে উঠেছিল হা হা করে। থুতনি নাড়িয়ে বলেছিল অ্যাই তুমি বুঝি সিরিয়াল দেখো অনেক?
-না কেন বলো তো?
– না মানে ওখানে ঐ উচ্ছেবাবু পটলবাবু এসব ডাকে বরেদের। তুমিও সেভাবে ডাকছো কিনা তবে শুনতে মিষ্টি লাগলো।
লজ্জা পেয়ে রঞ্জনা মাথা নামিয়ে নিয়ে বলেছিল না চাইলে থাক ডাকবোনা।
পদ্মনাভ বাধা দিয়ে বলল আরে না অবশ্যই ডাকবে। আমার মন্দ লাগেনি শুনতে? আমিও তোমায় রঞ্জা নামে ডাকবো কেমন?
সহমত জানায় রঞ্জনা। এরম একটা ডাকনাম পেয়ে মনটা খুশি হয়ে উঠেছিল। আস্তে আস্তে কথা বলার জড়তা কেটেছিল তার মধ্যে। পাশাপাশি শুলেও জোর জবরদস্তি কখনোই করেনি। পদ্মনাভবাবু সত্যিই নিপাট ভদ্রলোক। একদিন ভোররাতে টের পেয়েছিল রঞ্জনা পদ্মনাভ এক হাত দিয়ে জড়িয়ে ধরে শুয়েছে পাশবালিশের মতো করে। ভালোই লেগেছিল তার। বিয়ের পরেই তারা উঠে আসে পদ্মনাভের নিউটাউনের ফ্ল্যাটে৷ 3BHK flat বেশ সুন্দর সাজানো গোছানো। পদ্মনাভের বাকি পরিবার থাকে বেহালায়৷ বিয়ের চার পাঁচদিনের মাথাতেই সারপ্রাইজ হানিমুনের
টিকিট কেটে আনে৷ এক অসাধারণ রোমাঞ্চ বোধ হতে থাকে দুজনের মনেই। পাশাপাশি থাকলেও এতদিন স্বামী স্ত্রী সুলভ আচরণ করেনি তারা। পাহাড়ের শীতল পরিবেশে দুজনেই হয়তো চাইবে একে অপরের সান্নিধ্যে উষ্ণতা কুড়োতে।

জানতে হলে অপেক্ষা করতে হবে পরবর্তী পর্বের জন্য…😊
 

Users who are viewing this thread

Back
Top